নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী। কর্মস্থল- হাইকোর্ট।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah
দুদকের মামলা হলে যে কেউ ঘাবড়ে যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আসামীরা বিচার এড়িয়ে চলতে চায়। কিন্তু কেন এমনটা করে? হ্যাঁ, গত আট বছর যাবত দুদকের মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে দেখেছি দুদকের করা বেশিরভাগ মামলাই সাজা হচ্ছে। বিশেষ করে মানি লন্ডারিং মামলায় খালাসের নজির নাই বললেই চলে। তবে, এর পিছনে মূল একটি কারণ হলো বিচার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ না করা তথা পলাতক থাকা। কারণ, বিভিন্ন কারণে নিম্ন আদালতে সাজা হলেও যথাযথ প্রক্রিয়ায় ট্রায়াল করে মামলায় কনটেস্ট করতে পারলে উচ্চ আদালতে সাজার পরিমাণ কমে কিংবা বেকুসুর খালাসও হচ্ছে। আর নিম্ন আদালতে পলাতক থেকে কিংবা গুরুত্ব দিয়ে কনটেস্ট না করলে পরে উচ্চ আদালতে গিয়েও কিছু করার থাকে না।
তাই দুদকের মামলা হলে পলাতক না হয়ে অভিযুক্ত আত্মসমর্পণ করে কিংবা গ্রেফতার হলে জামিন চাইতে পারেন। অনেক সময় হাইকোর্ট বিভাগে উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে আগাম জামিন চাইতে দেখা যায়। হাইকোর্ট বিভাগ আগাম জামিন সাধারণত নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত দিয়ে থাকেন। এ মেয়াদের মধ্যেই নিম্ন আদালতে গিয়ে জামিননামা সম্পাদনের জন্য আবেদন করতে হবে।
জামিন নেওয়ার চেষ্টার পাশাপাশি অভিযোগপত্র দাখিল করার আগে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ দিয়ে আপনার বিরুদ্ধে যে অভিযোগটি দায়ের করা হয়েছে, তা যথাযথ নয় প্রমাণের চেষ্টা করুন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগটির সত্যতা না পেলে আপনাকে নির্দোষ দেখিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করবেন। চার্জশিট বা অভিযোগপত্র হয়ে গেলে আপনার মামলাটি বিচারিক আদালতে বদলি হবে। অভিযোগ গঠনের দিন আপনাকে হাজির হয়ে নতুন করে পূর্বশর্তে জামিন চাইতে হবে এবং জামিননামা সম্পাদন করতে হবে। তখন আপনি মামলা থেকে অব্যাহতির জন্য আবেদন করতে পারেন। অব্যাহতির আবেদন নাকচ হলে উচ্চ আদালতে প্রতিকার চাইতে পারেন।
যদি এমন হয় যে আপনি জানতে পারলেন না, আপনার বিরুদ্ধে এজাহার হয়েছে। পুলিশ এসে আপনাকে গ্রেপ্তার করল। আপনাকে থানায় নিয়ে গেল। গ্রেপ্তারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আপনাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে। তখন আপনার আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করতে হবে। যদি রিমান্ড চায় পুলিশ, তাহলে আপনার আইনজীবীর উচিত হবে রিমান্ড বাতিলের জন্য আবেদন করা। যদি জামিন দেন আদালত, তাহলে একজন পরিচিত জামিনদারের জিম্মায় আপনার জামিননামা সম্পাদন করতে হবে। যদি জামিন না হয়, তাহলে পর্যায়ক্রমে উচ্চ আদালতে আবেদন করতে হবে।
আর আপনি কোনো কারণে আদালতে হাজির না হলে আপনার নামে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি হতে পারে। এতে হাজির না হলে আপনার মালামাল ক্রোকের আদেশ হতে পারে এবং আপনার অনুপস্থিতিতেই বিচার হতে পারে। তাই মামলা হলেই আপনি অপরাধী নয়, আইনের সহায়তা নিন।
মনে রাখবেন, মামলা হলে তার পরের দিনই আদালতের জি.আর.ও অফিসে সকল মামলার নথি পাঠানো হয় এবং আসামীর আইনজীবী চাইলে সে নথির নকল সংগ্রহ করতে পারেন। সুতরাং আপনার আইনজীবী সহকারীর মাধ্যমে সে মামলার নকল এজাহার সংগ্রহ করতে হবে এবং পর্যালোচনা করে দেখতে হবে যে, আপনার নামে ঠিক কি কি অভিযোগ আনা হয়েছে।
এজাহারে বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া থাকে আপনাকে কি কি অপরাধে এবং তা কোন আইনের কোন ধারায় আর কে আপনার নামে অভিযোগ করেছে। সুতরাং এসব বিষয় আপনার বিজ্ঞ আইনজীবীর মাধ্যমে পর্যালোচনার পর পরামর্শ নিন।
যে মামলায় হোক না কেন অভিযুক্তরা সচরাচর জামিনে মুক্তি পেলে মামলার আর কোন খোঁজ-খবর রাখেন না যা মারাত্মক একটি ভূল। কারণ, মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আপনার বিপদ রয়েছে। জামিনে মুক্তি লাভের পর বিজ্ঞ আইনজীবী দ্বারা সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়ে মামলার চূড়ান্ত রায় পর্যন্ত সঠিকভাবে মামলা পরিচালনা করতে না পারলে স্থায়ী বিপদ হতে পারে। মামলায় অবেহেলার কারণে অনেক সময় অভিযুক্ত ব্যক্তির সাজাসহ জরিমানা হয়ে যেতে পারে যা ঝামেলার বিষয়।
যদিও নিম্ন আদালত থেকে মামলার সাজা হলে উচ্চ আদালতে আপিল, রিভিশন, রিভিউ করা যায় তা খুবই অনিশ্চিত এবং ঝামেলার ব্যাপার। সুতরাং মিথ্যা মামলায় ফেসে গেলে অবশ্যই জামিন নিয়ে বিজ্ঞ কৌশুলীর মাধ্যমে নিয়মিত মামলা পরিচালনা করুন।
নিজে নিজে সিদ্ধান্ত না নিয়ে কিংবা কোন দালাল না ধরে সরাসরি আপনার পরিচিত কোন আইনজীবীর পরামর্শ নিন তাতেই আপনার মঙ্গল। সবশেষ কথা হলো, দুদকের মামলা হলেই শাস্তি অবধারিত নয় বরং বিচার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ না করা তথা পলাতক থাকার কারণেই সাজা অবধারিত হয়!
- মোহাম্মদ তরিক উল্যাহ (এম টি উল্যাহ)
আইনজীবী
01733 594 270
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই মে, ২০২২ রাত ১২:১৮
প্রতিদিন বাংলা বলেছেন: চোরদের পক্ষপাতিত্ব (মেজরিটি চোর )