নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

এম টি উল্লাহ

উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী। কর্মস্থল- হাইকোর্ট।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah

এম টি উল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

নবালক সন্তানের শরীর ও সম্পত্তির অভিভাবকত্ব নিয়ে আইনের বিধান/মামলা করার নিয়ম

১০ ই এপ্রিল, ২০২২ রাত ১২:৩০

বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গেলে কিংবা স্বামী/স্ত্রী কোন একজনের মৃত্যুর পর সন্তানেরা কার কাছে থাকবে বা কে হবে তাদের অভিভাবক/তত্ত্বাবধায়ক হবে তা নিয়ে প্রায়ই সমস্যা দেখা দেয়। নাবালক সন্তানের ত্বত্তাবধান, অভিভাবকত্ব ও ভরনপোষণের বিষয়গুলি পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ ১৯৮৫ ও গার্ডিয়ানস এন্ড ওয়ার্ডস অ্যাক্ট ১৮৯০ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। আইন অনুযায়ী, নাবালকের স্বাভাবিক ও আইনগত অভিভাবক হলেন বাবা। তার অনুপস্থিতিতে বা অভিভাবক হিসেবে তার অযোগ্যতায় মা, অথবা আদালতে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিয়োজিত ব্যক্তি নাবালকের ‘শরীর ও সম্পত্তির অভিভাবক’ হতে পারেন। তবে নাবালকের সার্বিক কল্যাণের গুরুত্বের ওপরে নির্ভর করে দেশে প্রচলিত মুসলিম আইন অনুযায়ী, মাকে নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত সন্তানের জিম্মাদারিত্বের অধিকার দেয়া হয়েছে।

পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ ১৯৮৫ অনুসারে, সাধারনত একজন শিশু সন্তানের ত্বত্তাবধানের অধিকার বা দায়িত্ব একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পেয়ে থাকে ঐ শিশু সন্তানটির মাতা। শিশুসন্তানের দেখাশোনার বিষয়ে (জিম্মাদারির ক্ষেত্রে )সবচেয়ে বড় অধিকারী হলেন মাতা। তিনি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সন্তানের জিম্মাদার হয়ে থাকেন; কিন্তু তিনি কখনও অভিভাবক হতে পারেন না।
নিম্নোল্লিখিত নির্দিষ্ট সময়ের জন্য একজন মাতা তার শিশু সন্তানের ত্বত্তাবধানের দায়িত্ব বা অধিকার পেয়ে থাকেন
ছেলে সন্তানের ক্ষেত্রে ৭ বছর আর মেয়ে সন্তানের ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধিকাল পর্যন্ত। অর্থাৎ স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটলে বা স্বামী মারা গেলে ছেলেসন্তান ৭ বছর পর্যন্ত এবং মেয়েসন্তান বয়ঃসন্ধিকাল পর্যন্ত মায়ের হেফাজতে থাকবে, এটাই আইন । এক্ষেত্রে মায়ের অধিকার সর্বাগ্রে স্বীকৃত। এ সময়ের মধ্যে মায়ের অগোচরে যদি বাবা জোরপূর্বক সন্তানকে নিজের হেফাজতে গ্রহণ করেন, সেক্ষেত্রে পিতার বিরুদ্ধে মামলা করা দেয়া যাবে।

জিম্মাদারিত্বের নির্দিষ্ট বয়স পার হলে সন্তান যে বাবার জিম্মায় যেতে বাধ্য হবে, তা নয়। নির্দিষ্ট বয়সের পরও তার সার্বিক কল্যাণের বিষয়টি বিবেচনা করে সন্তানের জিম্মাদারিত্বের দায় ফের মায়ের কাছে ন্যস্ত হতে পারে। ‘সার্বিক কল্যাণ’ বলতে আইন অনুযায়ী সন্তানের পার্থিব, নৈতিক এবং আধ্যাত্মিক কল্যাণকে বোঝানো হয়ে থাকে। তা শিশুটির নিরাপত্তার পাশাপাশি সুন্দর ও উত্তমরূপে তাকে প্রতিপালনের বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত করে।

অভিভাবকত্ব এবং নাবালক সন্তানের জিম্মাদারিত্বের জন্য পারিবারিক আদালতের মাধ্যমে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়।

কীভাবে আইনের আশ্রয় নেবেন

উভয় পক্ষ যেখানে বসবাস করে বা সর্বশেষ বসবাস করেছে এবং যে পারিবারিক আদালতের স্থানীয় সীমার মধ্যে সমস্যা উদ্ভূত হয়েছে, সেই আদালতে মামলা করতে হবে। পারিবারিক আদালতে আইন চর্চা করেন এমন একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে আবেদন করতে হবে। পারিবারিক আদালতের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এখানে নিজেদের মধ্যে আপস মীমাংসার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির সুযোগ রয়েছে। একবার মামলার বিচার শুরু হওয়ার আগে এক দফা এবং পরবর্তী সময়ে রায় ঘোষণার আগে দ্বিতীয় দফায় আপোসের সুযোগ রয়েছে। তাই পারিবারিক বিষয়ে আদালতে গেলেও নিজেদের মধ্যে আপস মীমাংসা করে নেওয়াই উচিত। আবার আপসমূলে আদালতের ডিক্রি নেওয়ার সুযোগও রয়েছে।

পারিবারিক আদালত অভিভাবকত্ব ছাড়াও নিম্নোক্ত চারটি বিষয়ের সবগুলোর বা যে কোনটির সাথে সর্ম্পকিত বা উদ্ভূত যে কোন মামলা গ্রহণ,বিচার ও নিস্পত্তি করতে পারে৷

১. বিবাহ বিচ্ছেদ

২. দাম্পত্য সর্ম্পক পুনরুদ্ধার

৩. মোহরানা

৪. ভরণপোষণ

এমন কোন একটি বিষয়ে পারিবারিক বিরোধ দেখা দিয়েছে? তাহলে আপনি পারিবারিক আদালতের আশ্রয় নিতে পারেন। পারিবারিক কোনো বিরোধ নিষ্পত্তির জন্যই দেশে পারিবারিক আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রতিটি জেলায় সহকারী জজ আদালত পারিবারিক আদালত হিসেবে গণ্য হয়। আবার কিছু এলাকায় সহকারী জজ আদালতকে পারিবারিক আদালত হিসেবে নির্দিষ্ট করা হয়েছে।


- মোহাম্মদ তরিক উল্যাহ
অ্যাডভোকেট
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
০১৭৩৩৫৯৪২৭০ ( কল করার পূর্বে হোয়াটস্অ্যাপে ম্যাসেজ দিন)

লেখক- আইন বিষয়ক উপন্যাস 'নিরু" এবং 'অসমাপ্ত জবানবন্দী', মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস 'মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ' এবং 'একাত্তরের অবুঝ বালক' ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.