নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী। কর্মস্থল- হাইকোর্ট।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah
ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে ঋণের টাকা আদায়ের জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে মামলা করতে হয় বিশেষ আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত অর্থঋণ আদালতে। এসংক্রান্ত বাংলাদেশে বর্তমানে প্রচলিত আইনের নাম অর্থঋণ আদালত আইন, ২০০৩। এ আইনের দ্বারাই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে অর্থঋণ আদালত। যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ সমপর্যায়ের একজন বিচারক অর্থঋণ আদালতের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি জেলায় এক বা একাধিক অর্থ ঋণ আদালত আছে।
**কিন্তু অর্থঋণ মামলায় আপনার বিরুদ্ধে রায় কিংবা কোন আদেশে সংক্ষুদ্ধ হলে আপনার করণীয় কি? কিভাবে আপীল, রিভিশন এবং রীট দায়ের করবেন তা নিয়ে আজকের আলোচনা।
**আপীল, রিভিশন এবং অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ/রীট
এই আইনের ৪১, ৪২ এবং ৪৩ ধারায় যথাক্রমে আপিল ও রিভিশনের বিধানাবলি বর্ণিত আছে।
**আপীল করার নিয়মঃ
এ আইনের অধীনে ডিক্রীকৃত টাকার পরিমাণ ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা অপেক্ষা অধিক হয়, তাহলে হাইকোর্ট বিভাগে, এবং যদি ডিক্রীকৃত টাকার পরিমাণ ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা অথবা তদ্অপেক্ষা কম হয়, তাহলে জেলাজজ আদালতে আপীল দায়ের করতে হবে।
আপীলকারী, ডিক্রীকৃত টাকার পরিমাণের ৫০% এর সমপরিমাণ টাকা আদালতে জমা করে আপীল দায়ের করতে হবে। তবে বিবাদী-দায়িক ইতোমধ্যে ১৯(৩) ধারার বিধান মতে ১০% (দশ শতাংশ) পরিমাণ টাকা নগদ অথবা জামানত হিসাবে জমা করে থাকলে, অত্র ধারার অধীনে আপীল দায়েরের ক্ষেত্রে উক্ত ১০% (দশ শতাংশ) টাকা উপরি-উল্লিখিত ৫০% (পঞ্চাশ শতাংশ) টাকা হতে বাদ যাবে৷
তবে এক্ষেত্রে বাদী-আর্থিক প্রতিষ্ঠান এই ধারার অধীনে কোন আপীল দায়ের করলে, তাকে উপরি-উল্লিখিত নিয়মে কোন টাকা বা জামানত জমা দান করতে হবে না৷
**আপীল নিষ্পত্তির সময়সীমা
আপীল আদালত, আপীল গৃহীত হবার পরবর্তী ৯০ (নব্বই) দিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে এবং ৯০ (নব্বই) দিবসের মধ্যে আপীলটি নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হলে, আদালত, লিখিতভাবে কারণ উল্লেখপূর্বক, উক্ত সময়সীমা অনধিক আরো ৩০ (ত্রিশ) দিবস বর্ধিত করতে পারবে৷
**রিভিশন এর নিয়মঃ
এই আইনের অধীনে কোন আদালত, আপীলে প্রদত্ত রায় বা ডিক্রীর বিরুদ্ধে কোন রিভিশনের দরখাস্ত গ্রহণ করা যাবে না, যদি না দরখাস্তকারী, আপীল আদালত কর্তৃক প্রদত্ত বা বহালকৃত ডিক্রীর টাকার ৭৫% এর সমপরিমাণ টাকা, আপীল দায়ের কালে দাখিলকৃত ৫০% টাকাসমেত, উক্ত পরিমাণ টাকার স্বীকৃতি স্বরূপে সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানে, অথবা বাদীর দাবী স্বীকার না করলে জামানত স্বরূপে ব্যাংক ড্রাফট, পে-অর্ডার বা নগদায়নযোগ্য অন্য কোন বিনিমেয় দলিল (Negotiable Instrument) আকারে ডিক্রী প্রদানকারী আদালতে জমা করে উক্তরূপ জমার প্রমাণ দরখাস্তের সহিত আদালতে দাখিল করে৷
তবে বাদী-আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে এই ধারার অধীনে রিভিশন দায়ের করলে, তাকে উপরি-উল্লিখিত নিয়মে কোন টাকা বা জামানত জমা বা দাখিল করতে হবে না৷
**রিভিশন নিষ্পত্তির সময়সীমা
উচ্চতর আদালত, রিভিশনের দরখাস্ত গৃহীত হবার পরবর্তী ৬০ (ষাট) দিবসের মধ্যে ইহা নিষ্পত্তি করবে, এবং ৬০ (ষাট) দিবসের মধ্যে রিভিশন নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হলে, আদালত, লিখিতভাবে কারণ উল্লেখপূর্বক, উক্ত সময়সীমা অনধিক আরো ৩০ (ত্রিশ) দিবস বর্ধিত করতে পারবে।
**সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগে আপীল
এই আইনের ৪৩ ধারার অধীনে হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক আপীল বা রিভিশনে প্রদত্ত কোন রায়, ডিক্রী বা আদেশের বিরুদ্ধে আপীল বিভাগে আপীল দায়েরের জন্য ঋণ গ্রহীতা-বিবাদীকে আপীল বিভাগ অনুমতি প্রদান করার ক্ষেত্রে, সংগত মনে করলে, এই আইনের ৪২(১) ধারার অনুরূপ পদ্ধতিতে ডিক্রীকৃত টাকার অপরিশোধিত অবশিষ্টাংশের যে কোন পরিমাণ টাকা নগদ বাদী-আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অথবা জামানতস্বরূপ ডিক্রী প্রদানকারী আদালতে জমাদান করার আদেশ প্রদান করবে।
**অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের বিরুদ্ধ রীট মামলা
অর্থঋণ আদালতের অন্তর্বর্তী আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না, সে ক্ষেত্রে রিট মামলা দায়ের করা যাবে। মামলা দায়েরের পূর্বে
প্রত্রিকায় প্রকাশিত নিলাম বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধেও রীট দায়ের করা যাবে। তাছাড়া, ডিক্রির পরেও ক্ষেত্রে বিশেষ রীট দায়ের করে প্রতিকার পাওয়া যায়। রীটের বিষয়ে আইনে সুনির্দিষ্টভাবে কোন নির্দেশনা নাই কিন্তু বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষ করে নিলাম কার্যক্রম রোধ করার স্বার্থে
কিংবা অন্যায়ভাবে কোন বৈষম্যের সম্মুখীন কিংবা মৌলিক অধিকার খর্ব হলে রীট আনায়ন করা যায়।
সর্বোপরি অর্থঋণ আদালত কিংবা মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে শুরু থেকেই একজন আইনজীবীর সহিত পরামর্শ
করুন। ব্যাংক কর্তৃক নোটিশ করলেই আইনজীবীর শরণাপন্ন হোন। অন্যথায় আপনার অপূরণীয় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- মোহাম্মদ তরিক উল্যাহ
আইনজীবী
০১৭৩৩৫৯৪২৭০
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৭
এম টি উল্লাহ বলেছেন: হ্যা, আছে। আদালত চাইলে দিতে পারে
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:০৯
জুল ভার্ন বলেছেন: ভাইজান, অর্থঋণ মামলায় আসামীর ঋণ পরিশোধে আর্থিক অপরাগতায় নুণ্যতম কিস্তিতে ঋণ পরিশোধের সুবিধা কি আদালত আসামীকে দিতে পারেন/দেওয়ার কোন সুযোগ আছে?