নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

এম টি উল্লাহ

উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী। কর্মস্থল- হাইকোর্ট।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah

এম টি উল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধর্ষণের শিকার হলে যেভাবে আইনের আশ্রয় নিবেন এবং ধর্ষণের উপযুক্ত বিচার পেতে মামলা করার আগে যা করণীয়

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১২:২৬



দণ্ডবিধি ৩৭৫ ধারায় ধর্ষণের সংজ্ঞা:-

ধারা ৩৭৫। ধর্ষণ (Rape): কোন পুরুষ অতঃপর উল্লেখিত ব্যতিক্রম ভিন্ন অপর সকল ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত পাঁচটি যেকোন অবস্থায় কোন স্ত্রীলোকের সাথে যৌনসঙ্গম করলে সে ধর্ষণ করেছে বলে পরিগণিত হবে।

প্রথমত:- স্ত্রীলোকটির ইচ্ছার বিরুদ্ধে ।

দ্বিতীয়ত:- স্ত্রীলোকটির সম্মতি ব্যতিরেকে।

তৃতীয়ত:- স্ত্রীলোকটির সম্মতিক্রমেই, যেক্ষেত্রে মৃত্যু বা জখমের ভয় প্রদর্শন করে স্ত্রীলোকটির সম্মতি আদায় করা হলে।

চতুর্থত:- স্ত্রীলোকটির সম্মতিক্রমেই, যেক্ষেত্রে পুরুষটি জানে যে, সে স্ত্রীলোকটি স্বামী নয়, এবং পুরুষটি ইহাও জানে যে, স্ত্রীলোকটি তাকে এমন অপর একজন পুরুষ বলে ভুল করেছে, যে পুরুষটির সাথে সে আইন সম্মতভাবে বিবাহিত হয়েছে বা বিবাহিত বলে বিশ্বাস করে ।

পঞ্চমত:- স্ত্রীলোকটির সম্মতিক্রমে অথবা সম্মতি ব্যতিরেকে, যতি স্ত্রীলোকটির বয়স চৌদ্দ বৎসরের কম হয়।

ব্যতিক্রম (Exception):-কোন পুরুষের কর্তৃক নিজ স্ত্রীর সাথে যৌনসঙ্গম ধর্ষণ বলে পরিগণিত হবে না, যদি স্ত্রী তের বৎসরে নিম্ন বয়স্কা না হয়।

কেউ ধর্ষণের শিকার হলে করণীয়ঃ

১) সরাসরি থানায় গিয়ে মামলা করতে পারেন। থানা মামলা না নিলে কিংবা থানায় মামলা দায়ের আপনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ বা থানায় প্রতি আস্থাহীনতা হলে কোর্টে মামলা করতে পারেন।
২) কোর্টে বলতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মামলা দায়ের করতে পারেন। এক্ষেত্রে একজন আইনজীবীর সহযোগিতা নিন।

**ধর্ষণের উপযুক্ত বিচার পেতে মামলা করার আগে যা করণীয়ঃ

১. ধর্ষণের পর একা থাকবেন না, কোনো বান্ধবী বা আত্মীয়ার সাথে যোগায়োগ করুন, ঘটে যাওয়া ধর্ষণ নিয়ে কথা বলুন এবং তাঁর সাহায্য নিন৷

২. গোসল, খাওয়া-দাওয়া, ধূমপান, বাথরুম যাওয়া – সম্ভব হলে এ সব বন্ধ রেখে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের কাছে চলে যান৷ অর্থাৎ ধর্ষণের চিহ্ন মুঝে যাবার আগেই ডাক্তারি পরীক্ষা করান৷

৩. হাসপাতালে যাওয়ার পর যদি ‘এমারজেন্সিতে' কারো সাথে এ বিষয়ে কিছু বলতে না চান, তাহলে শুধু ‘‘আমাকে এক্ষুনি একজন স্ত্রী বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলতে হবে' – এ কথা বললেও চলবে৷

৪. ধর্ষণকারী যেসব জিনিসের সংস্পর্শে এসেছে, তার সব তুলে রাখুন৷ যেমন অন্তর্বাস, প্যাড ইত্যাদি৷ সম্ভব হলে এ সব জিনিসের ছবিও তুলে রাখুন৷

৫. নিজেকে দোষী ভাববেন না৷ কারণ যে ধর্ষণের মতো জঘণ্যতম কাজটি করেছে, শুধু সে একাই এর জন্য দায়ী, অপরাধী৷ আপনি নন৷

ধর্ষণের শাস্তিঃ

*** ধর্ষণ, ধর্ষণজনিত কারণে মৃত্যু, ইত্যাদির শাস্তি-
(১) যদি কোন পুরুষ কোন নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন, তাহা হইলে তিনি 1[মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে] দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন।

ব্যাখ্যা৷- যদি কোন পুরুষ বিবাহ বন্ধন ব্যতীত 2[ষোল বৎসরের] অধিক বয়সের কোন নারীর সহিত তাহার সম্মতি ব্যতিরেকে বা ভীতি প্রদর্শন বা প্রতারণামূলকভাবে তাহার সম্মতি আদায় করিয়া, অথবা 3[ষোল বৎসরের] কম বয়সের কোন নারীর সহিত তাহার সম্মতিসহ বা সম্মতি ব্যতিরেকে যৌন সঙ্গম করেন, তাহা হইলে তিনি উক্ত নারীকে ধর্ষণ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন।


(২) যদি কোন ব্যক্তি কর্তৃক ধর্ষণ বা উক্ত ধর্ষণ পরবর্তী তাহার অন্যবিধ কার্যকলাপের ফলে 4[ধর্ষণের শিকার] নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অন্যূন এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন।

(৩) যদি একাধিক ব্যক্তি দলবদ্ধভাবে কোন নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের ফলে উক্ত নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে বা তিনি আহত হন, তাহা হইলে ঐ দলের প্রত্যেক ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অন্যূন এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন।

(৪) যদি কোন ব্যক্তি কোন নারী বা শিশুকে-


(ক) ধর্ষণ করিয়া মৃত্যু ঘটানোর বা আহত করার চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি 5[মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে] দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন;


(খ) ধর্ষণের চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি অনধিক দশ বৎসর কিন্তু অন্যূন পাঁচ বৎসর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন।

(৫) যদি পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন সময়ে কোন নারী 6[ধর্ষণের শিকার] হন, তাহা হইলে যাহাদের হেফাজতে থাকাকালীন উক্তরূপ ধর্ষণ সংঘটিত হইয়াছে, সেই ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণ 7[ধর্ষণের শিকার] নারীর হেফাজতের জন্য সরাসরিভাবে 8[দায়িত্বপ্রাপ্ত] ছিলেন, তিনি বা তাহারা প্রত্যেকে, ভিন্নরূপ প্রমাণিত না হইলে, হেফাজতের ব্যর্থতার জন্য, অনধিক দশ বৎসর কিন্তু অন্যূন পাঁচ বৎসর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অন্যূন দশ হাজার টাকা অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন।


- আইনজীবী মোহাম্মদ তরিক উল্যাহ
০১৮১৬৫৫৭৫৮৩

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:০৩

নতুন বলেছেন: বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষনের বিষয়ের আইনের সংশধন দরকার।

পুরুষ বলতকারে উপরেও কি এই রকমের আইন আছে?

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ৯:০৫

এম টি উল্লাহ বলেছেন: বলাৎকারও ধর্ষণ

২| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ৮:৪১

সোহানী বলেছেন: এ আইন এর শাস্তির বিধান যত বেশী জানবে তত বেশী সচেতনতা বাড়বে। তবে ভিক্টিমের ছবি নিয়ে রিপোর্টের বিষয়টি আইনের আওতায় আনা উচিত বলে আমি মনে করি।

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ৯:০৪

এম টি উল্লাহ বলেছেন: ভিকটিমদের ছবি প্রকাশও আইনত অপরাধ

৩| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ৯:১৪

নতুন বলেছেন: লেখক বলেছেন: বলাৎকারও ধর্ষণ

কিন্তু পুরুষ ধর্ষনের স্বীকার হলে তার জন্য কি এই একই আইন চলবে? না কি তার জন্য আলাদা আইন আছে?

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ৯:২৩

এম টি উল্লাহ বলেছেন: পুরুষ যদি শিশু হয় তার জন্য নারী ও এই আইনই তথা শিশু নির্যাতন দমন আইন, প্রাপ্ত বয়স্ক হলে দন্ডবিধির ৩৭৬

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ৯:২৫

এম টি উল্লাহ বলেছেন: : পুরুষ যদি শিশু হয় তার জন্য নারী ও এই আইনই তথা শিশু নির্যাতন দমন আইন, প্রাপ্ত বয়স্ক হলে দন্ডবিধির ৩৭৭

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.