নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী। কর্মস্থল- হাইকোর্ট।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah
শআইনের বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করে তালাক প্রদান করতে হয়। তালাকের প্রকারভেদঃ-
১. স্বামী কর্তৃক তালাকঃ স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দিতে পারে যে কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখিয়ে, তবে অবশ্যই আইনী প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।
২. স্ত্রী কর্তৃক তালাকঃ তালাক দেওয়ার অধিকার বা ক্ষমতা স্ত্রীর সীমিত। আইনে উল্লেখিত কারণ ব্যতীত স্ত্রী তার স্বামীকে তালাক দিতে পারবে না।তবে কাবিন নামার ১৮ নং কলামে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে বিয়ে বিচ্ছেদের ক্ষমতা দেওয়া থাকলে (তালাক-ই-তৌফিজ) স্ত্রী তালাক দিতে পারবে।
৩. পারস্পারিক সম্মতিতে তালাকঃ
ক) খুলা – স্ত্রী তার স্বামীকে যেকোন কিছুর বিনিময়ে তালাক দেওয়ার জন্য রাজি করাবেন।
খ) মুবারত – স্বামী স্ত্রী উভয়ের পারস্পারিক সম্মতিতে তালাকের সিদ্ধান্ত নেওয়া।
৪. আদালত কর্তৃক বিচ্ছেদঃ আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করে ডিভোর্স নেওয়া।
** স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার নিয়মঃ
১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ৭(১) ধারায় বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে তালাক দিতে চাইলে যেকোন পদ্ধতির তালাক ঘোষনার পর যথাশীঘ্র সম্ভব তালাকের নোটিশ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিশোধ/পৌরসভা/সিটি কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানকে পাঠাতে হবে এবং উক্ত নোটিশের একটি অনুলিপি(নকল) স্ত্রীকে পাঠাতে হবে।
একই আইনের ৭(২) ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোন ব্যক্তি নোটিশ প্রদানের এ বিধান লংঘন করেন তবে তিনি এক বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় প্রকার দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন। তবে স্বামী যদি নোটিশ প্রদান না করে তাহলে শাস্তি পাবে ঠিকই কিন্তু তালাক বাতিল হবে না।
৭(৪) ধারা অনুযায়ী, নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে চেয়ারম্যান সংশিষ্ট পক্ষ দ্বয়ের মধ্যে পুনর্মিলন ঘটানোর উদ্দেশ্যে একটি সালিশী পরিষদ গঠন করবেন।সালিশী পরিষদ যদি সমঝোতা করতে ব্যর্থ হয় এবং স্বামী যদি ৯০ দিনের মধ্যে তালাক প্রত্যাহার না করে তবে ৯০ দিন পর তালাক কার্যকর হবে। এই ৯০ দিন স্বামী তার স্ত্রীকে ভরণপোষণ দিতে বাধ্য থাকবে।
৭(৩) ধারা মতে, চেয়ারম্যানের কাছে নোটিশ প্রদানের তারিখ হতে ৯০ দিন অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত তালাক কার্যকর হবে না। কিন্তু তালাক ঘোষণার সময় স্ত্রী যদি গর্ভবতী থাকে তাহলে ৭(৫) অনুযায়ী গর্ভাবস্থা অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত তালাক কার্যকর হবে না। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার ৯০ দিন পর তা কার্যকর হবে।
মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশন আইন ১৯৭৪ এর ৬ ধারা মতে বিয়ের তালাক ও রেজিষ্ট্রি করতে হয়। কাজী নির্ধারিত ফি নিয়ে তালাক রেজিষ্ট্রি করবেন ( আইনসম্মতভাবে কার্যকর করার ক্ষেত্রে আইনজীবীর সহায়তা নেওয়া উত্তম)
** যেসব কারণে স্ত্রী তার স্বামীকে তালাক দিতে পারবেন
১৯৩৯ সালের মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইনে অত্যান্ত সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যেসব কারণে স্ত্রী আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করতে পারবেন-
১. চার বছর পর্যন্ত স্বামী নিরুদ্দেশ থাকলে।
২. দুই বছর স্বামী স্ত্রীর খোরপোষ দিতে ব্যর্থ হলে।
৩. স্বামীর সাত বছর কিংবা তার চেয়ে বেশী কারাদণ্ড হলে।
৪. স্বামী কোন যুক্তি সংগত কারণ ব্যতীত তিন বছর যাবৎ দাম্পত্য দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে।
৫. বিয়ের সময় পুরষত্বহীন থাকলে এবং তা মামলা দায় করা পর্যন্ত বজায় থাকলে।
৬. স্বামী দুই বছর ধরে পাগল থাকলে অথবা কুষ্ঠ ব্যধিতে বা মারাত্মক যৌন ব্যধিতে আক্রান্ত থাকলে।
৭. বিবাহ অস্বীকার করলে। কোন মেয়ের বাবা বা অভিবাবক যদি ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগে মেয়ের বিয়ে দেন, তাহলে মেয়েটি ১৯ বছর হওয়ার আগে বিয়ে অস্বীকার করে বিয়ে ভেঙ্গে দিতে পারে, তবে যদি মেয়েটির স্বামীর সঙ্গে দাম্পত্য সম্পর্ক(সহবাস) স্থাপিত না হয়ে থাকে তখনি কোন বিয়ে অস্বীকার করে আদালতে বিচ্ছেদের ডিক্রি চাইতে পারে।
৮. স্বামী ১৯৬১ সনের মুসলিম পারিবারিক আইনের বিধান লংঘন করে একাধিক স্ত্রী গ্রহণ করলে।
৯. স্বামী নিষ্ঠুর ব্যবহার করলে।
উপরের যেকোন এক বা একাধিক কারণে স্ত্রী আদালতে বিয়ে বিচ্ছেদের আবেদন করতে পারে। স্ত্রী আভিযোগ প্রমাণ করতে পারলে আদালত বিয়ে বিচ্ছেদের ডিক্রি দিতে পারে। ডিক্রি প্রদানের সাত দিনের মধ্যে একটি সত্যায়িত কপি আদালতের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানের কাছে পাঠাবে। চেয়ারম্যান নোটিশকে তালাক সংক্রান্ত নোটিশ হিসাবে গণ্য করে আইনানুযায়ী পদক্ষেপ নিবে এবং চেয়ারম্যান যেদিন নোটিশ পাবে সেদিন থেকে ঠিক নব্বই দিন পর তালাক চূড়ান্তভাবে কার্যকর হবে।
** মোহাম্মদ তরিক উল্যাহ
আইনজীবী
০১৭৩৩৫৯৪২৭০
২২ শে অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৪:৫৮
এম টি উল্লাহ বলেছেন: রেফারেন্স টা দিবেন প্লিজ
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪৯
কামাল১৮ বলেছেন: ইসলামী আইনে স্ত্রী তালাক দিতে পারে না তালাক চাইতে পারে।