নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

এম টি উল্লাহ

উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী। কর্মস্থল- হাইকোর্ট।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah

এম টি উল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিয়ে নিয়ে প্রতারণায় করণীয়

৩০ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ১:৫২

বিয়ে নিয়ে যদি প্রতারণা বা অন্য কোনো অপরাধ ঘটে তাহলে এর কি কোনো প্রতিকার পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। একাধিক বিয়ে করে আগের বিয়ের কথা গোপন রেখে, জাল দলিল / কাবিন বানিয়ে, আবার কিছু মানুষ প্রতারণা করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়, সে যাই হোক আইনে সব কিছুর জন্যই ব্যবস্থা আছে।

বিয়ে-সংক্রান্ত বিভিন্ন অপরাধের শাস্তির বিধান আছে দণ্ডবিধির ৪৯৩ ধারা থেকে ৪৯৬ ধারা পর্যন্ত , যার অধিকাংশ অপরাধই জামিন অযোগ্য।

১। নারীকে প্রতারণামূলক ভাবে আইনসম্মত বিবাহিত বলে বিশ্বাস করানোর শাস্তি ;

ধারা ৪৯৩ অনুযায়ী, কোন ব্যক্তি যদি কোন নারীকে প্রতারণামূলক ভাবে আইনসম্মত বিবাহিত বলে বিশ্বাস করান, কিন্তু আদৌ ওই বিয়ে আইনসম্মত ভাবে না হয় এবং ওই নারীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেন, তবে অপরাধী ১০ বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

২। স্বামী বা এক স্ত্রী জীবিত থাকা সত্ত্বেও পুনরায় বিয়ে করলে;

ধারা ৪৯৪ এ বলা হয়েছে, যদি কোন ব্যক্তি এক স্বামী বা এক স্ত্রী জীবিত থাকা সত্ত্বেও পুনরায় বিয়ে করেন, তাহলে দায়ী ব্যক্তি সাত বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।

৩। দ্বিতীয় বা পরবর্তী বিয়ে করার সময় প্রথম বা আগের বিয়ের তথ্য গোপন রাখলে;

৪৯৫ ধারা অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি দ্বিতীয় বা পরবর্তী বিয়ে করার সময় প্রথম বা আগের বিয়ের তথ্য গোপন রাখেন, তা যদি দ্বিতীয় বিবাহিত ব্যক্তি জানতে পারেন, তাহলে অপরাধী ১০ বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।

৪।আইনসম্মত বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা ব্যতীত প্রতারণামূলক ভাবে বিয়ে সম্পন্ন করলে;

৪৯৬ মতে, যদি কোনো ব্যক্তি আইনসম্মত বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা ব্যতীত প্রতারণামূলক ভাবে বিয়ে সম্পন্ন করেন, তাহলে অপরাধী সাত বছর পর্যন্ত সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এ ছাড়া কোনো মুসলমান ব্যক্তি ১ম স্ত্রী থাকলে সালিসি পরিষদের অনুমতি ছাড়া এবং প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া আরেকটি বিয়ে করেন, তিনি ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ৬ (৫) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করবেন। অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হলে ব্যক্তিকে এক বছর পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে।

**অন্তরঙ্গ ছবি প্রকাশঃ
কেউ যদি স্বামী বা স্ত্রীর পরিচয়ে নিজেদের অন্তরঙ্গ ছবি ফেসবুক বা অন্য কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে অথচ আদৌ কোনো বিয়ে সম্পন্ন হয়নি তাহলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলা করার সুযোগ আছে। থানায় কিংবা সাইবার ট্রাইবুনালে এ মামলা করা যায়।

**ভুয়া কাবিননামাঃ
ভুয়া কাবিননামা তৈরি করলে জালিয়াতির অভিযোগ আনা যায় আদালতে। বিয়ে যেভাবেই সম্পন্ন হোক না কেন কাবিননামা কিংবা বিয়ের সব দলিল নিজের কাছে রাখা উচিত। কাবিননামার ওপর কাজির সিল স্বাক্ষর আছে কি না যাচাই করে নিতে হবে এবং কোন কাজির মাধ্যমে বিয়েটি সম্পন্ন হলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে সত্যতা যাচাই করে নেওয়া ভালো।

**যেভাবে আইনের আশ্রয় নিতে হবেঃ
বিয়ে-সংক্রান্ত অপরাধের জন্য অভিযোগ থানা বা আদালতে গিয়ে চাওয়া যাবে। থানায় এজাহার হিসেবে মামলা দায়ের করতে হবে। যদি মামলা না নিতে চায় তাহলে সরাসরি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গিয়ে সরাসরি মামলা দায়ের করা যাবে। কেউ কেউ থানায় না গিয়ে সরাসরি আদালতে মামলা করে থাকেন। এতে কোনো সমস্যা নেই। আদালতে মামলা করার সময় যথাযথ প্রমাণসহ অভিযোগের স্পষ্ট বর্ণনা দিতে হবে এবং সাক্ষীদের নাম-ঠিকানাও দিতে হবে। আদালত অভিযোগকারীর জবানবন্দি গ্রহণ করে যেকোনো আদেশ দিতে পারেন। অনেক সময় অভিযোগ আমলে না নিয়ে প্রাথমিক তদন্তের জন্য নির্দেশ দিতে পারেন।

** এম টি উল্যাহ
আইনজীবী
০১৭৩৩৫৯৪২৭০

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৩:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: সরকার যদি প্রতিটা নারীকে শিক্ষিত করতে পারে তাহাওলে নারীরা প্রতারনার স্বীকার কম হবে।

২| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ৯:১৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: তথ্যবহুল উপকারী পোস্ট।

ব্যাচেলর পরিচয়ে স্বামী বিয়ে করলো। বিয়ের পর এক মেয়ে এসে স্ত্রীটিকে বললো, আমি উনার প্রথম স্ত্রী। তুমি তাকে ছেড়ে চলে যাও। স্বামী এটা অস্বীকার করলো। কিন্তু এখন স্বামী দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রীর ভরণপোষণ দিচ্ছে না, বিদেশে প্রবাসী জীবন অতিবাহিত করছে। ধারণা করা হচ্ছে, স্বামী তার প্রথমা স্ত্রীকে সাথে নিয়ে বিদেশে আছে।

এই শেষের স্ত্রী এখন কীভাবে স্বামীকে তালাক দিবে? মোহরানার টাকা কি সে দাবি করতে পারবে? সহজে কীভাবে এর সমাধান পাওয়া যাবে?

৩০ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১০:০১

এম টি উল্লাহ বলেছেন: তালাক দেওয়া যাবে এবং মোহরানাও পাবে দ্বিতীয় স্ত্রী। এতে আইনের আশ্রয় নিতে হবে। বিস্তারিত জানতে কল করুন

৩| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ৯:১৬

মরুর ধুলি বলেছেন: খোজ-খবর ভাল করে নিয়ে তবে বিয়ের পিড়িতে বসা উচিত। সঠিক তথ্য সংগ্রহ না করে শুধুমাত্র ভাল চাকরি, ভাল চেহারাকে উদ্দেশ্য বানিয়ে বিবাহ হলে সেগুলোতে এই সমস্যা দেখা দেয়। পারিবারিবভাবে খোজ খবর নিয়ে বিয়ে সাদি হলে সেখানে এই সমস্যাগুলো সাধারণত কম হয়।

০১ লা অক্টোবর, ২০২১ রাত ১:৫১

এম টি উল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.