নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

এম টি উল্লাহ

উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী। কর্মস্থল- হাইকোর্ট।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah

এম টি উল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাতীয় নির্বাচন ২০১৮: রাজনৈতিক ঐক্যতা ও বিভ্রান্তির নানা সমীকরণ!

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:০৩

ভোটের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে রাজনৈতিক হিসাব নিকাশ ও গুঞ্জনের মাত্রা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। সবকিছুকে ছাড়িয়ে এক কথায় বলতে গেলে এখন সবচেয়ে আলোচ্য ইস্যু হলো নির্বাচন কেন্দ্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য প্রক্রিয়া। ক্ষমতাসীন মহাজোট ও বিশ দলীয় জোটের বাহিরে সবার নজর কেড়ে এবং মিড়িয়াতে বেশ কাটতি রয়েছে যুক্তফ্রন্ট বা নির্বাচনী ঐক্যজোট প্রক্রিয়াকে নিয়ে। ভারসাম্যমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার স্লোগান তুলে মূলত গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে জেএসডিএর আসম বর, কৃষক শ্রমিক-জনতার কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্য’র মাহমুদুর রহমান মান্না, এলডিপি’র কর্ণেল (অবঃ) অলি আহমদ রা ভালোই আলোচনায় আছেন অন্যদিকে সিপিবি’র উদ্যোগে গঠিত ৮ টি বাম দলের সমন্বয়ে গঠিত জোটও রয়েছে আলোচনায়। কেউ কেউ বলছেন পালা বদলের স্বাদ নিতে পরীক্ষিত ব্যর্থদের সমন্বয়ে গঠিত বুড়োদের এই ঐক্য প্রক্রিয়া নির্বাচন কেন্দ্রিক বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার জন্যই তৈরী হয়েছে, আবার কেউ বলছেন ফেস ভ্যালু সমপন্ন এই রাজনৈতিক ফিগারদের দ্বারা পরিবর্তন সম্ভব এই সংকটকালীন সময়ে। আবার কেউ কেউ বলছেন যাদের মাথায় ঘিলু সংকট রয়েছে তারাই এসব রাজনৈতিক জুয়িাড়িদের পাল্লায় নাচতেছেন কারণ যে কোন ধরনের ভোট-ই হোক না কেন ধান/নৌকার বিকল্প এই মাটিতে নাই|

তবে যে যাই বলুক না কেন এরা এখন একটা ফ্যাক্ট হয়ে দাঁড়িয়েছেন অনন্ত আলোচনার দিক দিয়ে। তাইতো বিএনপি এ সংকট থেকে উত্তরণের জন্য বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐক্য প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা বার বার বলতেছে আর সরকার নানাভাবে তাদের আপোষে আনার চেষ্টা করতেছে।বিশেষ করে সিপিবি’র উদ্যোগে গঠিত ৮ টি বাম দলের সমন্বয়ে গঠিত জোটকে টানতে তারা মরিয়া হয়ে ওঠেছে ।কারণ তারা মনে করেতেছে ড.কামাল আর ডা. বি চৌধুরীর ভারসাম্যমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার স্লোগান নিয়ে ঐক্য প্রক্রিয়া মূলত সরকার বিরোধী কথাবার্তা বলার কারণেই জনপ্রিয়তা লাভ করতেছে বিএনপি’র রাজনৈতিক সংকটের সুযোগ নিয়ে।

তবে রাজনৈতিক ঐক্য প্রক্রিয়ার এ প্লার্টফর্মের সাথে বিএনপির বোঝাপড়াটা এখনো দোদুল্যমান অবস্থায় কারণ বিএনপির’র সমন্বয়ে গঠিত ২০ দলীয় জোটের শরিকদের মাঝে এই নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অন্যদিকে জামায়াত ইস্যুতে যুক্তফ্রন্ট বা নির্বাচনী ঐক্যজোট প্রক্রিয়ার দলগুলোর রয়েছে যথেষ্ট এলার্জি। আবার পুরাতন শরীকদের প্রতি উদাসীনতা দেখিয়ে নতুনদের কাছে টানার জন্য বিএনপি বেশী আগ্রহ দেখাচ্ছে আসছে অভিযোগ। একদিকে বিএনপির চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে অবস্হান করায় দলটির প্রধান ইস্যু বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি করা তারপর নির্বাচনে যাওয়া। বর্তমান শরীকরাও বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে বিএনপির পাশে থেকে বিএনপির এই অবস্হানের প্রতি সহমত পোষণ করলেও ড.কামাল আর ডা. বি চৌধুরীর যুক্তফ্রন্ট বা নির্বাচনী ঐক্যজোট প্রক্রিয়ার এই বিষয়ে কোন প্রতিক্রিয়া নাই বরং তারা এটাকে সুযোগ হিসাবেই নিতে চাচ্ছে বলে অনুমেয়!এমন অবস্হায় আসলে পরিস্হিতি আসলে কোন দিকে গড়াবে তাই সবার মনে প্রশ্ন। কারণ অন্য আরেকটা বড় ইস্যু এখানে কাজ করছে তা হলো ড.কামাল আর ডা. বি চৌধুরীর যুক্তফ্রন্ট বা নির্বাচনী ঐক্যজোট প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে বিএনপির বৃহত্তর ঐক্য প্রক্রিয়ায় সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা ডা. জাফরুল্লাহর নিকট জানিয়ে দিয়েছে তাদের ১৫০ আসন দিতে হবে সমঝোতায় আনতে হলে!সর্বশেষ মেসেজ হলো অন্তত ১২০ টি আসন তাদের ছেড়ে দিতে হবে। তাহলে হয়তো সরাসরি জোট না হলেও রাজনৈতিক সমঝোতা সম্ভব। কারণ আর যাই হোক তারা জামায়েত সাথে থাকলে জোটে বিড়াবে না। অন্যদিতে ২০ দলীয় জোটে থাকা শরীকরাও আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে এখনো আসনের ভাগ-ভাটোয়ারা না করায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে!। তাহলে বিষয়টা কি দাঁড়াচ্ছে, বিএনপি’র সাথে নয় বরং বিএনপি’ই জোট প্রক্রিয়ায় অংশ হতে যাচ্ছে! কারণ ২০ টা শরীক দলকে ৪০ টা আসল ছাড়লেও বিএনপির ছাড়তে হবে ১৬০ টি আসন। আর মাঠের রাজনীতিক শক্তি সহায়তার জন্য আপাতত জামায়াতকে যে বিএনপি ছাড়তেছে না তা পরিষ্কার।

এমন অবস্হায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মালেশিয়া স্টাইলে ‘আর্ট অব কম্প্রোমাইজ’ এর ভিত্তিতে সরকার গঠনের আভাস পাচ্ছেন যার নাকি আপাতত প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন ড. কামাল! কারণ আমরা মালেশিয়ার নির্বাচনে দেখেছি,
মালেশিয়ার ৬০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা বারিসান ন্যাশনাল(Barisan Nasional -BN) কে হারানোর জন্য সমকামিতার অভিযোগে দন্ডিত কারাগারে থাকা আনোয়ার ইব্রাহিমের সমর্থনে মাহাথির মোহাম্মদের নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট পাকাতুন হারাপান (Pakatan Harapan -PH) নামক জোট গঠন করে নির্বাচন করা এবং নির্বাচনে ২২২টি আসনের মধ্যে তারা ১২১টি আসন পেয়ে সরকার গঠন করা যেখানে ক্ষমতাসীন বারিসান ন্যাশনাল ৭৯টি আসন লাভ করেছে মাত্র।তাহলে বিষয়টা কি দাঁড়ালো, মাহাথির নিজ জোট বারিসান ন্যাশনাল ত্যাগ করে ( যে জোটের হয়ে তিনি ১৯৮১-২০০৩ প্রায় ২২ ধরে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন) এক সময়ে তারই "বিরোধী দলে " যোগ দিয়ে , সেই বিরোধী দল থেকে নির্বাচন করেছেন এবং এক সময়ে তারই বিরোধী দলকে এখন ক্ষমতায় নিয়ে আসলেন! এখানে উল্লেখ্য যে মাহাথিরের নিজের দল কিন্তু পেয়েছে মাত্র ১২ টি আসন বাকি মেজরিটি আসন পেয়েছে অন্য শরীকরা কিন্তু সামনের কাতারে তাকে রেখেই নির্বাচন করা হয়েছে।তাই বলা হচ্ছে ৯২ বছর বয়সী বুড়ো ভেলকি দেখালে ৮১ বৎসর বয়সী ড. কামাল কেন পারবেন না! আবার কেউ কেউ সেনা বাহিনীর ব্যাক-আপে এই বুড়োদের নিয়ে পাকিস্তানের ইমরান খানীয় মডেলের বিষয়টিকেও কথা বলতেছেন!

কিন্তু সবকিছুর পরও কথা থেকে যায়। রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছু নেই।তবে বিএনপির জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ ও সংকট হলো, সরকার বিরোধী যে ম্যানডেট টা এখন তার ঘরে রয়েছে সেটাকে ভাগাভাগির হিসাবে এতো বৃহৎ আকারে বিলিয়ে দিতে পারবে নাম সর্বস্ব জোটের তরে? না পারলে এর বিকল্পও কি আছে? অন্যদিকে সরকারের জন্য গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিকল্প কি আর অবশিষ্ট হাতে রয়েছে কিনা তাও দেখার বিষয়। সবচেয়ে বড় কথা হলো তারুণ্য কি পারিবে ভিশন বিহীন এই বুড়োদের প্রতি আস্হা রাখতে কিংবা নেতৃত্বে তারুণ্যের সংকট যে প্রকট তা কি সম্পষ্ট করে দিচ্ছে এই সংকট! সব কিছুকে ছাড়িয়ে এসব জুয়া খেলা নয় যোগ্য, তারুণ্যদীপ্ত নেতৃত্বের দ্বারাই প্রকৃত পক্ষেই ভারসাম্যমূলক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা দরকার।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:০৯

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: দেখা যাক কি হয়

২| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১:০৭

আলআমিন১২৩ বলেছেন: বিএনপি বা আওয়ামী লিগের সমর্থন ছাড়া ডঃকামাল বা বি চৌধুরী নিজেরাই পাশ করতে পারবেন না এদেশে। এমন কি জামানতও হারাতে পারেন। মিডিয়া এদের নিয়ে যা করছে তা একেবারেই অবাস্তব। হয়তো অন্য কোন উদ্দেশ্য থাকতে পারে। এর মধ্যে সরকারের কোন ট্রিক্সও থাকতে পারে।

৩| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: রাজনীতি নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।
বিএনপি'র কোমর ভেঙ্গে গেছে।

৪| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৫৬

আলআমিন১২৩ বলেছেন: বিএনপির যে কোমর আগের চেয়ে অনেক শক্তি বৃদ্বি পেয়েছে তার প্রমান আমরা কিছুদিন পরপর ই পাচ্ছি। সবশেষ প্রমান পেলাম ১লা নভেম্বর প্রতিষ্ঠা দিবসে।যারা চোখ থাকিতেও অন্ধ তারা অন্ধ দলকানাই থাকবেন। (রাজীব নুরের মন্তব্যের জবাবে।)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.