নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবেলায় ২০২৩ সালে বেশ কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়। এসব কার্যক্রমের পরেও প্রায় সাত বছর ধরে চলা এই সংকট সমাধানের মুখ দেখছে না। এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি। তবে কিছু রোহিঙ্গা ছয় বছরেরও বেশী সময় পর মিয়ানমারের রাখাইনে চীনের উদ্যোগে নেয়া পাইলট প্রকল্প দেখে এসেছে। সব মিলিয়ে যা হয়েছে তাতে রোহিঙ্গারা এখনও অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্যে আছে আর বাংলাদেশের উপর চাপ বাড়ছে।
বছরের শুরুর দিকে চীনের উদ্যোগে মিয়ানমার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য পাইলট প্রকল্প হাতে নেয়। এর ধারাবাহিকতায় মিয়ানমার সরকার ১১ জন কূটনীতিককে মিয়ানমারের মংডু ও সিতওয়ে শহরে রোহিঙ্গাদের জন্য নির্মিত ক্যাম্পসহ আশপাশের এলাকা সরেজমিনে দেখাতে নিয়ে যায় । ১৫ মার্চ মিয়ানমারের ২২ সদস্যের প্রতিনিধি দল কক্সবাজারে এসে ১৭৭টি পরিবারের ৪৮০ জন রোহিঙ্গার তথ্য যাচাই করে । চীনের উদ্যোগে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের আবাসনের জন্য ১৫টি নতুন গ্রাম তৈরি করতে একটি পাইলট প্রকল্প হাতে নেয় । ২৩ মার্চ মিয়ানমার জানায় যে, এই পাইলট প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে আরও পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা ফেরত নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে । ১৮ এপ্রিল কুনমিংয়ে চীনের মধ্যস্থতায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং এর অংশ হিসেবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের তৃতীয় এই উদ্যোগ নেয়া হয়। রোহিঙ্গাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে এবং রাখাইন রাজ্যের পরিবেশ প্রত্যাবাসন উপযোগী কি না তা দেখার জন্য ২০ জন রোহিঙ্গাসহ ২৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলকে ৫ মে মিয়ানমারের উদ্যোগে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয় । মিয়ানমার দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে চায় বলে তাদেরকে জানানো হয়েছে । বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে তাদের নিজ গ্রামে ফিরতে ইচ্ছুক। নিজ গ্রামে ফেরত না যেতে পারলে তারা প্রত্যাবাসনে আগ্রহী নয়। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের ক্যাম্পে ফিরে যেতে অনীহা থাকায় রোহিঙ্গাদেরকে তারা যেসব এলাকায় বসবাস করত সেখানেই তাদের পুনর্বাসনে রাজি হয়েছে মিয়ারমার। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে গেলে তাদের প্রথম তিন মাসের ব্যয় বহন করা হবে এবং জীবিকার জন্য তাদের মাছ ধরা ও কৃষি কাজের সুযোগ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে মিয়ানমার।
চীনের এশিয়াবিষয়ক বিশেষ দূত পরীক্ষামূলক প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ১৭৬ রোহিঙ্গাকে দিয়ে প্রত্যাবাসন শুরু করার ইচ্ছা পোষণ করে । রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও কক্সবাজারের টেকনাফে পাঁচটি ট্রানজিট কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে পাইলট প্রকল্প নিয়ে চীনের ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হলেও বাংলাদেশ এবিষয়ে সবসময় আশাবাদী ।
রোহিঙ্গাদের অনুদান কমে যাওয়া:
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা ও সংকটের কারণে দাতারা অনুদান কমিয়ে দেওয়ায় ডব্লিউ এফ পি রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্যসহায়তা প্রায় ১৭ শতাংশ কমিয়েছে। রোহিঙ্গাদের খাবারের জন্য মাথাপিছু মাসিক বরাদ্দ ছিল ১২ ডলার, ১ মার্চ থেকে তা কমিয়ে ১০ ডলার এবং ১ জুন থেকে ১০ ডলার থেকে কমিয়ে ৮ ডলার করেছে। এর ফলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে খাদ্য সংকট বাড়বে এবং ক্যাম্পের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ত্রানকর্মীরা । রোহিঙ্গারা সম্পূর্ণভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অর্থায়নের ওপর নির্ভরশীল । রোহিঙ্গাদের খাদ্য বরাদ্দ কমানোর ফলে অপরাধ বেড়ে যাবে ।
বিভিন্ন দেশের সহায়তা:
জাপান সরকার মিয়ানমারকে ২০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি সাহায্য ও উন্নয়ন তহবিল দিয়েছে। দীর্ঘস্থায়ী রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে জাপান প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাজ্য রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দাতা বাংলাদেশি মানুষের জন্য ৩৬৫ মিলিয়ন পাউন্ড আর্থিক সহায়তা দিয়েছে । রোহিঙ্গা এবং আশ্রয়দাতা জনগোষ্ঠীর সহায়তার জন্য ইউএসএইড ৮৭ মিলিয়ন ডলার মানবিক সহায়তা প্রদান করেছে। ২০১৭ সাল থেকে রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র প্রায় দুই দশমিক চার বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছে । যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে রোহিঙ্গাদের যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসন অব্যাহত রাখার অঙ্গীকারের পাশাপাশি রোহিঙ্গা পুনর্বাসন করতে অন্য দেশগুলোকেও উৎসাহী করতে কাজ করছে। ২০২৪ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনাইটেড স্টেটস রিফিউজি অ্যাডমিশন প্রোগ্রামের (ইউএসআরএপি) আওতায় বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশ থেকে রোহিঙ্গাদের যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসন করা হবে। যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের স্বাক্ষরতা, কারিগরি প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সহায়তামূলক বিভিন্ন প্রচেষ্টা চালাবে এবং রোহিঙ্গাদের ও আশ্রয়দাতা দেশগুলোর সহায়তায় আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও সম্পৃক্ত করতে কার্যকরভাবে কাজ করবে ।
ক্যাম্প পরিস্থিতি:
নানা কারনে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো দিন দিন অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। সেখানে প্রতিনিয়ত হত্যা, মানব পাচার, মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান, গুম, অপহরণ ও মুক্তিপন দাবী এবং অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির প্রতিবেদন থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মিসহ (আরসা) ১০টি দুর্বৃত্ত দল ও সশস্ত্র গুষ্টি সক্রিয় রয়েছে বলে জানা যায়। ক্যাম্পগুলোতে বিভিন্ন কারনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ২০২১-২২ সালে সংগঠিত ২২২টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার মধ্যে ৬০টি ছিল নাশকতামূলক । রোহিঙ্গাদের একটি অংশ খুন, অপহরণ, ধর্ষণ, অস্ত্র, মাদক পাচার, চোরাচালান সহ নানা অপরাধে জড়িত। মিয়ানমার ও বাংলাদেশের উপকূল থেকে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড এবং ইন্দোনেশিয়ায় রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশীদের মানবপাচার এখন একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে উঠেছে। মিয়ানমার থেকে অন্যান্য প্রতিবেশী দেশে অবৈধ ভাবে মাদক ও ইয়াবা পাচার উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও সীমান্তের নিরাপত্তাহীনতা পুরো দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের জন্য নিরাপত্তার হুমকি তৈরি করছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে অস্ত্র, মাদক, ধর্ষণ, অপহরণ, ডাকাতি, পুলিশের ওপর হামলা, হত্যা ও মানব পাচারসহ নানা অপরাধে ২ হাজার ৪৩৮টি বিভিন্ন ধরনের মামলা হয়েছে। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে জুন ২০২৩ পর্যন্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১৬৪টি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে । ২০২৩ সালের এপ্রিল মাস থেকে এ পর্যন্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৬১টি সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় অন্তত ৭৪ জন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে । রোহিঙ্গাদের একটি অংশ এসব অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে ও নিরাপত্তার প্রতি হুমকি সৃষ্টি করছে এবং তাদের কারণে স্থানীয়রাও নিরাপত্তা হুমকিতে রয়েছে । বর্তমানে বাংলাদেশের আশ্রয়শিবিরগুলোতে সাড়ে ১২ লাখ নিবন্ধিত রোহিঙ্গা বসবাস করছে । ক্যাম্প এলাকায় প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৭০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছে। ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গা জনসংখ্যার ঘনত্বের কারনে ও এই সমস্যা সমাধান করা বেশ কষ্টসাধ্য। ক্যাম্পগুলোতে সন্ত্রাসীদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান চলছে ।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে বিভিন্ন ধরনের মানবিক সেবায় দেশ-বিদেশের শতাধিক সংস্থার ২০ হাজারের ও বেশি কর্মী কাজ করছে। পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হওয়ার কারনে ক্যাম্পে কাজ করতে যাওয়া এনজিও-আইএনজিওর কর্মীরা উদ্বিগ্ন এবং তাঁদের অনেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এসব কারনে ২০টির বেশি এনজিও ক্যাম্পগুলোতে তাঁদের সেবা কার্যক্রম সীমিত রেখেছে এবং কয়েকটি এনজিও তাদের কাজ বন্ধ করে দিচ্ছে যা আশঙ্কাজনক । দ্রুততম সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে না পারলে সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হবে । বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন এবং তাদের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা অব্যাহত রাখবে ইউএনএইচসিআর ।
ভাসানচর পরিস্থিতি:
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রন, পরিবেশ বিপর্যয় এবং কক্সবাজারের আশ্রয়শিবিরগুলোর ওপর থেকে চাপ কমাতে বাংলাদেশ সরকার ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর কার্যক্রম হাতে নিয়েছে যা একটি দূরদর্শী ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এ পর্যন্ত প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছে , সবমিলিয়ে এক লাখ রোহিঙ্গাকে সেখানে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এই স্থানান্তর ব্যয়বহুল এবং বাংলাদেশের একার পক্ষে এই ব্যয়বহন করা কষ্টসাধ্য। নতুন ক্যাম্প নির্মাণ করে দ্রুততম সময়ে যত বেশি রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া যাবে ততই তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। রোহিঙ্গাদেরকে কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে নিতে বন্ধুরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে নেওয়ার খরচ বহন করা এবং রোহিঙ্গাদের জন্য ভাসানচরে আরও নতুন অবকাঠামো নির্মাণে সহায়তা চেয়েছে । রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের জন্য বহুমাত্রিক সামাজিক, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত হুমকি সৃষ্টি করছে, সামনের দিনগুলোতে তা আরো জটিল হবে । বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রগুলো এই সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসলে ক্যাম্পের পরিস্থিতির উন্নতি হবে আশা করা যায়।
উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন:
মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর চালানো নির্যাতন-নিপীড়নের তথ্যানুসন্ধানে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান কৌঁসুলি করিম আসাদ আহমাদ খান ৬ জুলাই আইসিসির ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। তিনি ক্যাম্পের পরিস্থিতি, আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা ও তাদের সহায়তা নিয়ে আলোচনা করেন। খাদ্য সহায়তা কমিয়ে দেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এর ফলে ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির পাশাপাশি নারী ও শিশুদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে তিনি জানান । যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়ার নেতৃত্বে মার্কিন প্রতিনিধিদল ১২ জুলাই রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন । তিনি রোহিঙ্গাদেরকে নিজেদের মধ্যে সংঘাতে না জড়িয়ে প্রত্যাবাসন ও মিয়ানমারের নির্যাতনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিচারের জন্য ধৈর্য ধরতে আহ্বান জানান । উল্লেখ্য যে, বর্তমানে আইসিজে’তে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে চলমান মামলায় কানাডা ও ব্রিটেনসহ বিশ্বের ছয়টি প্রভাবশালী দেশ যুক্ত হয়েছে ।
২৪ জুলাই ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোর কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে । রোহিঙ্গারা নিরাপদ প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে নিজ দেশে ফেরত যেতে চায় বলে তাঁকে জানায় । তহবিল সংকটের কাটাতে ই ইউ সদস্য ও অন্যান্য দেশের সরকারের সঙ্গেও তাঁরা কাজ করে যাবে। রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় এবং মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে ই ইউ জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ ও অন্যান্য ফোরামে তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে ।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সাম্প্রতিক প্রস্তাবসমূহ:
বাংলাদেশের উদ্যোগে ওআইসি সদস্য রাষ্ট্রেগুলোর পক্ষ থেকে ‘রোহিঙ্গা মুসলিম ও মিয়ানমারের অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক প্রস্তাবটি জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ৫৩তম অধিবেশনে উত্থাপন করা হয়। চলমান সংকটটির টেকসই সমাধানের ওপর জোর দিয়ে ১৪ জুলাই জাতিসংঘে সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাবটি পাশ হয়েছে। প্রস্তাবে রোহিঙ্গাদের উপর চলা সব ধরনের নির্যাতন, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থার আওতায় আনা ও তদন্ত প্রক্রিয়া জোরদার করার প্রতি গুরুত্বারোপ করে আন্তর্জাতিক আদালতে চলমান বিচার প্রক্রিয়াকেও সমর্থন জানানো হয় । ২০ সেপ্টেম্বর, ১৮তম এশিয়া কোঅপারেশন ডায়লগ (এসিডি) পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চলমান রোহিঙ্গা সংকট ও মানবিক বিপর্যয় মোকাবেলায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে রোহিঙ্গা সঙ্কটের ইস্যু আলোচ্যসূচির শীর্ষে রাখতে অনুরোধ জানানো হয় ।
চলমান মিয়ানমার পরিস্থিতি:
২০২৩ এর অক্টোবরের শেষভাগে জাতিগত সংখ্যালঘু তিনটি গোষ্ঠীর সশস্ত্র সংগঠন মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ), তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) এবং আরাকান আর্মি (এএ) একত্রে থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স নামে জোট গঠন করে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত হামলা শুরু করে। এর ধারাবাহিকতায় এএ চলমান অনানুষ্ঠানিক যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে রাখাইনে হামলা চালানোর প্রেক্ষিতে জান্তা বাহিনী ও পুলিশ ৪০টি অবস্থান হারিয়েছে । রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘর্ষের কারনে স্থানীয় বাসিন্দারা আতংকে রয়েছে। এর পাশাপাশি সেখানে খাদ্য, ওষুধ এবং জ্বালানির ঘাটতি দেখা দিয়েছে। চলমান এই সংকটের কারনে সীমান্তের এপাশে যেন কোন প্রভাব না পড়ে সেদিকে আমাদেরকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
রোহিঙ্গাদের ঘরে ফেরা কর্মসূচী:
২৭ জুলাই রিইন্ট্রোডিউসিং উইম্যান’স লিডারশিপ শিরোনামে জোর পূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক (এফডিএমএন) রিপ্রেজেনটেটিভ কমিটি রোহিঙ্গা নারীদের নিয়ে সমাবেশের আয়োজন করে। রোহিঙ্গা নারী প্রতিনিধিরা জানায় যে, তারা আর আশ্রিত জীবন চায় না এবং নিজেদের দেশে ফিরে যেতে চায়, উল্লেখ্য যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মোট রোহিঙ্গার মধ্যে ৫২ শতাংশ নারী । এই প্রথম বারের মত তারা বাড়ি ফেরা কর্মসূচিতে যুক্ত হয়েছে এবং ঐক্যবদ্ধ হলে রোহিঙ্গা নারীদের যে থামানো যাবে না তারা সেটাই প্রমাণ করেছে ।
রোহিঙ্গা সংকটের অর্থনৈতিক, নিরাপত্তা, সামাজিক ও পরিবেশগত ব্যয় দিন দিন বেড়ে চলছে। মানবিক কার্যক্রমের জন্য ব্যয় ছাড়াও বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের ব্যবস্থাপনায় প্রচুর জনশক্তি ও অর্থ ব্যয় করছে। কক্সবাজারে মোট ২০ লাখ ৯২ হাজার ১৬ একর বনভূমির মধ্যে ৩ হাজার ৫০০ একর ইতোমধ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কারণে হারিয়ে গেছে। বন উজাড়ের ফলে জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্যহীনতা, ভূমিধ্বস, ভূগর্ভস্থ পানির দূষণ এবং প্রাপ্যতা হ্রাস পাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে প্রতিবছর ১০০ কোটি ডলারেরও বেশি ব্যয় করতে হচ্ছে । বাংলাদেশ সরকার তাদের প্রতি মানবিক সহায়তার দৃষ্টান্ত অব্যাহত রাখবে তবে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে দেবে না।
সামনের দিনগুলোতে প্রত্যাশা:
২০১৭ থেকে ২০২৩ সাল, এই দীর্ঘ সময়ে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান না হওয়ায় সংকটের মোকাবেলায় একটি দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা প্রনয়ন করতে হবে। যে কোন পরিস্থিতিতে ত্রান ও আর্থিক সাহায্য চলমান রাখতে জরুরী ভিত্তিতে আপতকালিন ব্যবস্থা গ্রহন ও রিজার্ভ গড়ে তোলার ব্যবস্থা নিতে হবে।
রাখাইনের স্থিতিশীল পরিস্থিতি নিশ্চিত পূর্বক চীনের উদ্যোগে নেয়া চলমান পাইলট প্রকল্পকে সফল করে সামনের দিনগুলোতে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া চলমান রাখার ব্যবস্থা নিতে হবে। এই কার্যক্রমে একটা সেইফ জোন সৃষ্টি করে ক্রমান্নয়ে প্রত্যাবাসন চলমান রাখা যেতে পারে।
রাখাইন প্রদেশের অবকাঠামো ও উন্নয়ন নিশ্চিত করে কর্ম সংস্থান ও মৌলিক সমস্যাগুলো উন্নয়নের জন্য কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে মিয়ানমার সরকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় ভুমিকা নিতে হবে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া গতিশীল ও টেকসই করতে মিয়ানমার সরকার, সেনাবাহিনী, বৌদ্ধ ভিক্ষু সংগঠন, রাখাইনের রাখাইন প্রদেশের জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ব্যবধান গুছিয়ে আন্তরিক পরিবেশ ও আস্থার জায়গা তৈরি করতে হবে। এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, জাতিসংঘ, অভিবাসী রোহিঙ্গা সংগঠন, এন ইউ জি ও এ এ এবং রোহিঙ্গা অধিকার নিয়ে সক্রিয় গ্রুপগুলোকে এই সমস্যা সমাধানে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে।
ক্যাম্পের জনঘনত্ব কমিয়ে দ্রুত রোহিঙ্গাদেরকে ভাসানচরে পাঠানোর কার্যক্রম নিতে হবে। ভাসানচরে অর্থায়নের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন আবাসন তৈরিতে সহায়তা করে তাদের জীবনমান উন্নয়নে ভুমিকা রাখতে পারে। তাদেরকে দ্রুত এই কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও দাতা সংস্থাগুলো ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গাদেরকে প্রয়োজনীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ভবিষ্যতে কর্মসংস্থান ও দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে মিয়ানমারের মুল জনস্রোতে মিশে যাওয়ার সক্ষমতা তৈরি করতে হবে। ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গাদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও কারিগরি প্রশিক্ষণের যুক্তরাষ্ট্রের নেয়া উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে রোহিঙ্গাদের মধ্যে অপরাধ প্রবনতা কমে আসবে বলে আশা করা যায়, এই প্রচেষ্টা যেন চলমান থাকে।
রোহিঙ্গাদের সাথে কক্সবাজারের স্থানীয় জনগণের সম্প্রীতির সম্পর্ক বজায় রাখতে যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে। দেশী ও আন্তর্জাতিক এন জি ও এবং অন্যান্য সাহায্য সংস্থা এই কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
ক্যাম্পের সামগ্রিক অপরাধ দমনে রোহিঙ্গাদের অবাধ চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বাড়াতে হবে। মাদক ও অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করতে হবে। নিরাপত্তা তল্লাসী ও টহলের পাশাপাশি সন্ত্রাসীদের আস্তানায় বিশেষ অভিযান চালাতে হবে।
এই সংকট দীর্ঘায়িত হলে তা আঞ্চলিক নিরাপত্তার উপর চাপ ফেলবে যা মোটেও কাম্য নয়। রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘিরে সশস্ত্র তৎপরতা আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে প্রত্যাবাসন শুরু করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কঠোর অবস্থান নিতে হবে। বাংলাদেশ আশা করে যে, জাতিসংঘ, দাতা দেশ ও মানবিক সাহায্য সহযোগিতা প্রদানকারীসংস্থা, রোহিঙ্গাদের স্বার্থ ও অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন এবং নারী অধিকার সুরক্ষা সংক্রান্ত ফোরাম ও সংগঠনগুলো এই প্রল্পম্বিত সমস্যা সমাধানে সক্রিয় ভূমিকা রেখে প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করবে।
যুক্তরাষ্ট্র তাদের দেশের পাশাপাশি অন্যান্য দেশে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পরিকল্পনা করছে যা নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। এই উদ্যোগ যেন দ্রুত বাস্তবায়িত হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
২০২৩ সালে রোহিঙ্গাদের জন্য প্রাপ্ত সাহায্য আশানুরূপ ছিল না, সামনের দিনগুলোতে এই ত্রান সহায়তা চলমান রাখতে হবে এবং রোহিঙ্গাদের মৌলিক চাহিদা মেটানোর দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের একার সমস্যা নয়, এটা একটা আঞ্চলিক সংকট। এই সংকট মোকাবেলায় ডিসেম্বর মাসে চীন প্রথবারের মত ত্রান সহায়তায় যুক্ত হয়েছে যা আশাব্যঞ্জক। আঞ্চলিক দেশগুলোকেও এই সংকট সমাধানে মানবিক, রাজনৈতিক এবং আর্থিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করে সংকট সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে হবে।
দীর্ঘ মেয়াদি এই সংকট নানা দিক দিয়ে বাংলাদেশের উপর চাপ বাড়িয়ে চলছে। বিশ্ব জুড়ে চলমান অস্থিতিশীল ও সংঘাতময় পরিস্থিতিতে এই সমস্যা যেন গুরুত্ব না হারায় সেদিকে সংশ্লিষ্ট সবপক্ষকে সজাগ থাকতে হবে। ২০২৪ সালে এই সংকটের সমাধান কার্যকর ও গঠনমূলক পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে আলোর মুখ দেখবে এটাই প্রত্যাশা।
ছবি নেট থেকে
১৭ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪
শোভন শামস বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
রোহিঙ্গাদের বিষয় নিয়ে অনেকে ভাবছে, এখন অনেকে এই জন গুষ্টির কথা জানতে পেরেছে।
আমাদের নিজেদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো দরকার।
রাজ্য দখল করা ও তা ধরে রাখা সহজ না।
ভু রাজনীতি অনেক প্রভাব থাকে। আমরা ইচ্ছে করলে সব কিছু করতে পারি না।
এই সমস্যা পরিকল্পিত ভাবে দশকের পর দশক ধরে করা হয়েছে, তারপর ধাপে ধাপে কার্যকর করা হয়েছে।
মন মানসিকতার পরিবর্তন, গ্রহণযোগ্যতা ইত্যাদি বাড়ানোর মাধ্যমে চিরতরে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।
২| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১:৩২
আহমেদ জী এস বলেছেন: শোভন শামস,
পরিস্থিতি যা বর্ণনা করলেন সেভাবে এগুলে ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠাতে একযুগ লেগে যাবে।
এ ব্যাপারে জ্যাক স্মিথ এর মন্তব্য অনুসরণ করা যেতে পারে। কারন ইতিমধ্যেই আরাকান আর্মি আমাদের সীমান্তের লাগোয়া একটি শহর জান্তা সরকারে হাত থেকে দখলে নিয়েছে। এখনই সুযোগ রোহিঙ্গাদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে আরাকান আর্মির হাতকে শক্তিশালী করার।
বিশ্ব কি বলবে ? এতোদিন বিশ্বের ভরসায় থেকে কি হয়েছে? রোহিঙ্গা নিয়ে আমাদের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থায় এখন বিশ্ব কি বলবে তার জন্যে আমাদের মাথা ব্যথা করার দরকার নেই।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৪৭
শোভন শামস বলেছেন: ধন্যবাদ
ঠিক বলেছেন
পরিস্থিতি কি হবে এখন ও বলা যাচ্ছে না।
আরাকান আর্মি ও রাখাইনরা এক সময় রোহিঙ্গাদেরকে তারিয়ে দিয়েছিল।
তাদের মধ্যে বৈরিতা বহু দশকের।
এই মনভাব দূর করা গেলে সবই সম্ভব হবে।
যত দ্রুত হয় ততই ভাল।
৩| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১:৪৬
রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: এত বিশাল সংখ্যা বাংলাদেশের মতন দেশের জন্য খুব শীঘ্র মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। রোহিঙ্গারা সবসময়ই আগ্রাসী আর অপরাধপ্রবণ। অর্থনৈতিক টানাপোড়নে সে প্রবণতা আরও প্রকট আকার নিবে এবং নিচ্ছে। এরা নিজেরা গ্যাং বানিয়ে, সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে, মাদক পাচারের মতন কাজ অবলীলায় করে যাচ্ছে। একটা সময় পর, একটা অস্ত্র হাতে নিয়ে নিজেদের এলাকা বলে শরণার্থী ক্যাম্প ও আশেপাশের এলাকাকে দাবী করবে না, তার নিশ্চয়তা কী?
পাহাড়ে এমনিতেই উত্তাল পরিবেশ, পাহাড়িরা সেনা-সেটেলার বিষয়ে কখনই সন্তুষ্ট ছিলো না। এর উপর রোহিঙ্গাদের ঝামেলা যদি বাধে তা বেশ খারাপ পরিস্থিতিই তৈরি করবে।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৫০
শোভন শামস বলেছেন: ধন্যবাদ
ঠিক বলেছেন
পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে
ক্যাম্প গুলো অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হচ্ছে
আমাদের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ফেলছে
ক্যাম্পের জনঘনত্ব কমানো দরকার
বাংলাদেশের একার পক্ষে তা সম্ভব না।
এই কাজে সহায়তা ও পাওয়া যাচ্ছে না
আমদেরকে সতর্কতার সাথে এই সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করে যেতে হবে।
৪| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
বার্মার পরিস্থিতি দ্রুত চেইঞ্জ হচ্ছে বার্মিজ আরাকান আর্ম্র নাটকিয় উত্থ্যান।
একের পর এক এলাকা দখল করে নিচ্ছে বিদ্রোহী আরাকান আর্মি । গুরুত্বপুর্ন বিভিন্ন জায়গায় নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে জান্তা সরকার।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৫৫
শোভন শামস বলেছেন: ধন্যবাদ, সঠিক
তবে মিয়ানমার সেনাবাহিনী এত সহজে কাবু হবার নয়
তারা ঠিক ই একটা পথ বের করে নিবে।
বহু বছর ধরে মিয়ানমারে গণতন্ত্র চর্চা না হওয়াতে তাদের সমাজে এর গ্রহনযোগ্যতা নিশ্চিত করতে সময় লেগেছে। ১৩৫ তার ও বেশী জাতি গুষ্ঠি, ৬৯ শতাংশ বামার সংখ্যা গরিষ্ঠ এই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে সময় লাগবে।
চলমান পরিস্থিতিতে কিছুটা আশার আলো দেখা যাচ্ছে, তবে এখনি কিছু বলা যাবে না।
৫| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:২৯
রাজীব নুর বলেছেন: শেখ হাসিনা ওদের জায়গা দিলো। কিন্তু নোবেল পেলো না। আফসোস।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪
শোভন শামস বলেছেন: ধন্যবাদ
রোহিঙ্গারা সবচেয়ে সংকটময় সময়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
তারা পরিকল্পিত জেনোসাইডের শিকার
বাংলাদেশ মানবিক কাজ করেছে, তবে তাদেরকে অবশ্যই মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে।
বিশ্ব সম্প্রদায়কে কাজে লাগাতে হবে এই সংকট সমাধানের জন্য।
৬| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:৩৮
বাউন্ডেলে বলেছেন: জগাখিচুরি জাতি - ভাষা বৈচিত্রের দেস বার্মা। কড়া একনায়ক ছাড়া এই রাষ্ট্র টিকবে না।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৩
শোভন শামস বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
ঠিক বলেছেন।
তবে সমঝোতার মাধ্যমে ঐক্য বদ্ধ হওয়া সম্ভব। এতে সবাইকে কিছুটা ছাড় দিতে হবে।
বামার সংখ্যা গরিষ্ঠ দেশে তাদের সদিচ্ছা দরকার, একই সাথে মিয়ানমার সেনাবাহিনী দেশের স্বাধীনতার সাথে সম্পৃক্ত।
সব কিছু মিলে পরিস্থিতি জটিল হলে ও সদিচ্ছা থাকলে শান্তি ও সমৃদ্ধি অর্জন সম্ভব।
৭| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪
বিজন রয় বলেছেন: আন্তর্জাতিক চাপ না হলে আমাদের দেশের একার পক্ষে এই সমস্যা সমাধার করা সম্ভব হবে না বলে মনে হয়।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৫৪
শোভন শামস বলেছেন: ধন্যবাদ, ঠিক বলেছেন
আন্তর্জাতিক সহায়তা ও টেকসই কার্যক্রম না হলে এই সমস্যা সমাধান দুরহ।
সাথে থাকবেন
৮| ২০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:৪২
মেঘনা বলেছেন: কক্সবাজারে মোট ২০ লাখ ৯২ হাজার ১৬ একর বনভূমির মধ্যে ৩ হাজার ৫০০ একর ইতোমধ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কারণে হারিয়ে গেছে।"---
A Proportionally it is very small
২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:৫১
শোভন শামস বলেছেন: বন বিভাগের তথ্যানুযায়ী, রোহিঙ্গাদের আবাসস্থল ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের জন্য প্রায় ১২ হাজার ২০০ একর বনভূমি সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হয়েছে। পাশাপাশি আরও তিন থেকে চার হাজার একর বনভূমির গাছপালা উজাড় করা হয়েছে রোহিঙ্গাদের জ্বালানি সংগ্রহের জন্য
ধন্যবাদ, সাথে থাকবেন
৯| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:৩০
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ, রোহিঙ্গাদের নিয়ে মোটামুটি কম্প্রিহেন্সিভ এই প্রতিবেদনটি এখানে পোস্ট করার জন্য। পরিস্থি্তি দ্রুত বদলাচ্ছে, সুতরাং পরিবর্তনশীল পরিস্থি্তির উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
পোস্টে দ্বিতীয় প্লাস। + +
১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৯
শোভন শামস বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
সাথে থাকবেন
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:৫৫
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: আমার মনে হয় না এসব নিরস আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। লোক দেখানো দুই/এক হাজার হয়তো নিতে পারে কিন্তু এই ১২ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর দায় কোন দেশই নিবে না। আবার ওরাও ওদের নিজ ভুমি ছাড়া অন্য কোথাও ফেরৎ যেতে চাচ্ছে না, সব মিলিয়ে এ সমস্যা সাহসাই সামাধান হবার নয়।
আমি বলছিলাম কি, পৃথিবীর কোন দেশই যেহেতু রোহিঙ্গাদের কোন একটা ব্যবস্থা করতে পারলো না, বংলাদেশ সরকার ওদের বসিয়ে বসিয়ে আর কতকাল খাওয়াবে? সময় এসেছে ওদের হাতে অস্ত্র তুলে দেয়ার, নিজেদের দেশ নিজেরা দখল করে নে, সাথে বাংলাদেশ সেনাবাহীনি হালকা পাতলা সাপোর্ট দিলেই ওরা পুরো আরাকান রাজ্য দখল করে নিতে পারবে ১০ লাখ লোকবল মোটেই কম কিছু না, শুধু ওদের একটু ট্রেইনিং দিতে হবে।