নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নানা দেশ কত কথা

শোভন শামস

আমার দেখা নানা দেশের কথা সবার জন্য - পাঠকের ভাল লাগাতেই আনন্দ

শোভন শামস › বিস্তারিত পোস্টঃ

বই মেলা আর বই পড়া -দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ভ্রমনের গল্প চাই

০৬ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:৪১



এবারের বইমেলা থেকে বেশ কিছু ভ্রমনের বই সংগ্রহ করলাম। ভ্রমন গল্প, ট্রাভেলগ, কিংবা ভ্রমন সাহিত্য মনে আনন্দের সঞ্চার করে। বইয়ের পাতা উল্টানোর মাঝে পৃথিবী ভ্রমনের মজা পাওয়া যায়। বাংলা ভাষায় একনন পৃথিবীর অনেক দেশ ভ্রমনের গল্প আছে, তবে দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো সম্পর্কে বইয়ের সংখ্যা অনেক কম। আমাদের দেশী মানুষরা হয়ত সেসব দেশে অনেক কম বাস করে, যারাও সেখানে থাকে তারা ও হয়ত তেমন লেখালেখি করে না বা বই প্রকাশ করে না। বই প্রকাশ বেশ শ্রমসাধ্য, ব্যয়বহুল এবং অলাভজনক অনেক ক্ষেত্রে। তাই অনেকের সময় সুযোগ হয় না।

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরু সম্পর্কে প্রথম বই পড়েছি ব্রজ মাধব ভট্টাচার্যের লিখা ‘পেরুতে সূর্য লাল’ বইটা। তাঁর লিখা তিন খণ্ডের ‘কারিবিয়ানের সূর্য’ ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের দেশগুলো সম্বন্ধে লিখা বই সংগ্রহ করতে পারছিনা। অরুনা প্রকাশনী কোলকাতা থেকে বইটা প্রকাশিত হয়েছিল বেশ আগে। অনেকের সংগ্রহে হয়ত থাকতে পারে। এছাড়া শাকুর মজিদের নেরুদার দেশ, চিলি সম্পর্কে লিখা আছে। মইনুস সুলতান নিকারাগুয়া ভ্রমন ও অবস্থান নিয়ে দুইটা বই লিখেছেন, পড়ে ভাল লেগেছে এবং সংগ্রহে আছে। বই মেলায় ইরাকী কুর্দিস্থান সম্বন্ধে ‘কুর্দিস্থানের দিনগুলো’, ‘আইভরিকোস্ট- পশ্চিম আফ্রিকার জনপদ’, সাউথ সুদান- সোনালী দিনের প্রত্যাশায়’ বই গুলো জাতিসংঘ মিশনে যাওয়ার সুবাদে লিখিত এ প্রকাশিত হয়েছে অনন্যা প্রকাশনী থেকে। আইভরিকোস্ট নিয়ে আরও কিছু বই আছে। আফ্রিকার কঙ্গো, সিয়েরালিয়ন, মিসর নিয়ে লিখা বই আছে, তবে মোজাম্বিক, চাঁদ, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, লিবিয়া, মালি, মৌরিতানিয়া, তিউনিসিয়া নিয়ে বাংলায় তেমন কোন বই পাইনি। আফ্রিকার একটা বড় দেশ আলজেরিয়াতে বাংলাদেশী ভ্রমণকারী কিংবা বসবাসকারী হয়ত নেই, থাকলেও বই লিখা হয়ে উঠেনি। এখন ইউ টিউবে গেলে ট্র্যাভেল ভ্লগ এ নানা দেশ ভ্রমনের কথা জানা যায়, তবে ছাপা কাগজে বই পড়ার আনন্দ আলাদা।

ইংরেজিতে প্রায় সারা পৃথিবী ভ্রমনের এবং তাঁর সাথে ইতিহাস সম্বন্ধে জানার অনেক বই আছে। আমাদের বাংলা ভাষার পাঠক অনেক, তবে অনুবাদ সাহিত্যে সেসব দেশ ভ্রমনের কথা তেমন উঠে আসেনি। পশ্চিম বাংলা থেকে ভ্রমন ও ভ্রমন সাহিত্যের অনেক বই বের হয়েছে এবং সেখানে ভ্রমন বিষয়ক বাংলা ম্যাগাজিন ও প্রকাশিত হয়। সুনীলের ‘পায়ের তলায় সর্ষে’, নবনিতা দেবসেনের ভ্রমন সমগ্র, শঙ্করের ভ্রমন সমগ্র, সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের ভ্রমন সমগ্র – এ ধরনের অনেক বই আছে। সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের বইতে মেক্সিকো ভ্রমন নিয়ে বেশ সুন্দর লিখা আছে।

এছাড়া রাশিয়াতে বা আগের সোভিয়েত ইউনিয়নে অনেক ভারতীয়র যাতায়াত ছিল, তারা সে দেশ সম্পর্কে বেশ কিছু বই লিখেছেন, অনুবাদেও এরকন কিছু বই আছে। সেন্ট্রাল এশিয়ার পাঁচটা দেশ – তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, কাজাকস্থান, তুর্কমেনিস্থান এবং কিরগিজিস্থান ভ্রমনের উপর বাংলায় বইয়ের সংখ্যা খুব কম। ইংরেজিতে এই দেশগুলো ভ্রমন সম্পর্কে অনেক বই আছে। আমাদের কাছের দেশ আফগানিস্থানে বাংলাদেশিদের যাতায়াত অনেক কম, সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখনীতে আমরা প্রথম সে দেশ সম্পর্কে জানতে পেরেছিলাম। তারপর বহু বছর আর কোন লিখা নেই, দেশটাতে ও যুদ্ধ চলছিল।

বলকান রাষ্ট্রগুলো সম্পর্কে ও আমরা খুব কম জানি যেমন কম জানি বাল্টিক দেশগুলো সম্পর্কে। এবার বইমেলা থেকে সঞ্জয় দে’র লিখা বলকান, পূর্ব ইউরোপ ও রাশিয়ার কিছু অঞ্চলের উপর ভ্রমন অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ বই সংগ্রহ করেছি, ভাল লিখা। লেখকের ও মনে সেসব দেশ দেখার শখ ছিল সেই ছোট বেলা থেকে। দেশ ভ্রমন এখন কঠিন না, অনেকেই ভ্রমন করেন, তবে ভ্রমন অভিজ্ঞতা লিখা ও পাঠকের সাথে তা ভাগ করে নেয়া হয়ত এই তীব্র প্রতিযোগিতামূলক সময়ে হয়ে উঠে না।

ব্রিটিশ, ফরাসী, জার্মান, রাশিয়া ও আমেরিকার অনেক মানুষ বহু বছর আগে পৃথিবীর নানান দেশ ভ্রমন করে তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন তাঁদের দেশবাসী ও পৃথিবীকে। লরেন্স অব এরাবিয়ার লিখা ‘সেভেন পিলারস অব উয়িজডম’ সেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পূর্ব সময়কালের আরবদের মাঝে থাকা ও সেখান থেকে নেয়া অভিজ্ঞতার আলোকে লিখা একটি মূল্যবান বই। রবার্ট কাপলান তাঁর ভ্রমনের পাশাপাশি ভু-কৌশল গত দৃষ্টি ভঙ্গি এবং ইতিহাস সুন্দরভাবে সমন্বয় করে তাঁর বইগুলো সমৃদ্ধ করেছেন। বলকান ঘোস্ট, ইস্ট অব টারটারী, দি এন্ড অব দি আর্থ বই গুলো পড়ে মানস ভ্রমনে সেই হাঙ্গেরি থেকে রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, তুরস্ক হয়ে ইরান, আজারবাইজান, আর্মেনিয়া ঘুরে আসার স্বাদ পাওয়া যায়। এই বিশাল অঞ্চল জুড়ে কত কিছু আছে টা জানা যায় বইগুলো পড়ে।
শুরু করেছিলাম দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো সম্পর্কে ভ্রমন বই বাংলায় পাওয়া যায় কিনা দিয়ে। যদি পাওয়া যায় সংগ্রহ করে পড়ার ইচ্ছা আছে। এই ব্লগের সদস্যদের কাছে ও অনেক বই বা তথ্য থাকতে পারে, শেয়ার করলে ভাল লাগবে।

আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে বই পড়ার পাশাপাশি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ গুলোতে পড়ার বিষয়ে কিছুটা স্বপ্ন যদি দেখানো যায়। তাদেরকে অক্সফোর্ড, ক্যামব্রিজ, হাভার্ড, আইভি লীগ এসব সম্বন্ধে ধারনা দেয়ার ও স্বপ্ন দেখানোর দরকার। ইংরেজি মাধ্যমে পড়া বাচ্চারা অনেকেই জানে তবে বাকী বাচ্চাদের ও এই স্বপ্ন দেখাতে হবে। আমাদের নতুন প্রজন্মকে পড়তে হবে, তাই বই পড়াকে করথে হবে আলোকিত ও আনন্দময়। এখন বইয়ের বদলে ট্যাব, কিন্ডেল বা ই বুক রিডারে ও বই পড়ে অনেকে। বই পাওয়া ও অনেক সহজ। বড় হতে হলে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতেই হবে। পড়ার পাশাপাশি কিছু কিছু লিখার অভ্যাস যদি চালু করা যায় এবং আস্তে আস্তে এ ধরনের চর্চা যদি বাড়তে থাকে তবে আমরা উন্নয়নের পথে আরও এগিয়ে যেতে সমর্থ হব।

এতক্ষণ ধৈর্য নিয়ে লিখাটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:১৯

ভুয়া মফিজ বলেছেন: বর্তমানে দেশে প্রকাশিত ভ্রমন বইগুলোতে ছবি কেমন থাকে? নাকি একেবারেই থাকে না, শুধুই বর্ণনা? আপনার কেনা বইগুলো থেকে যা মনে হয়, সেটাই জানতে চাচ্ছি।

পেরু আর মেক্সিকো যাওয়ার প্ল্যান ছিল। করোনা ভাই (রাস) না আসলে যে কোনও একটাতে অবশ্যই যাওয়া হতো। কপাল খারাপ। কবে কপাল খুলবে, তাও জানি না।

লেখাটা পড়ে ভালো লাগলো। ব্লগে আমার কোন ভ্রমন পোষ্ট পড়েছেন? জাস্ট কিউরিওসিটি থেকে জানতে চাইলাম। :)

০৬ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:৩১

শোভন শামস বলেছেন: ধন্যবাদ, মন্তব্যের জন্য
ভালই ছবি থাকে, তবে অনেক সময় সমগ্র গুলোতে থাকে না।
দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোতে গেলে লিখবেন ও সুযোগ পেলে প্রকাশ করবেন।
অনেকদিন ব্লগে ছিলাম না, দু একটা প্রিয়তে আছে আপনার লিখা।

২| ০৬ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:৩২

রাজীব নুর বলেছেন: ভ্রমন কাহিনী সবচেয়ে মজা।
সুনীল, হুমায়ূন আহমেদ সবচেয়ে সুন্দর ভ্রমন কাহিনী লিখেছেন।

০৬ ই এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০০

শোভন শামস বলেছেন: ঠিক বলেছেন
হুমায়ুন আহমেদের হোটেল গ্রেভার ইন পড়ে আস্তে আস্তে ভ্রমন গল্পের উপর আগ্রহ হয়েছে, সুনীলের ছবির দেশে কবিতার দেশে অপূর্ব বই।
ধন্যবাদ, সাথে থাকবেন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.