নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ থেকে প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগের কথা। বর্তমানের মিয়ানমার বা বার্মা ছিল তিন দিক থেকে দুর্গম পাহাড় দিয়ে ঘেরা আর আরেক দিকে সাগর বেষ্টিত একটা অঞ্চল। মধ্য বার্মায় পাওয়া নানা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন থেকে জানা যায় যে ইরাবতী উপত্যকায় সে সময় ও লোকজন বসবাস করত। তবে কারা ঠিক তখন সেখানে বাস করত তা নিশ্চিত বোঝা না গেলেও ধারনা করা হয় যে সেখানে ইন্দোচীন ও আসামের জনগোষ্ঠীর মানুষজন বসবাস করত। আসাম এবং ইন্দোচীনের মধ্যে এই পথে যাতায়াত ছিল এবং এদেরই কেউ কেউ হয়ত যাতায়াত পথের এই মধ্যবর্তী অঞ্চলে বসতির পত্তন করেছিল।
পরবর্তীতে ইন্দোনেশীয় কোন কোন গোত্র বার্মার উপকূলীয় অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে। মনরা যীশু খ্রিস্টের জন্মের অল্প কিছু আগে এই এলাকার পূর্ব অঞ্চল যা এখন থাইল্যান্ড নামে পরিচিত সেখান থেকে নিম্ন বার্মায় প্রবেশ করে। একই সময়ে বার্মিজ গোত্রের মানুষ তিব্বত মালভূমির দক্ষিণ পূর্ব অঞ্চল থেকে আরও দক্ষিণে বর্তমান বার্মায় এসে বসতি স্থাপন করে। তখন চীন এবং তিব্বত দুটো আলাদা রাজ্য ছিল। এই সময় সেই এলাকার প্রতিবেশী চীনারা তাদের এলাকায় আগ্রাসন চালায় এর ফলে কিছু মানুষ দেশান্তরী হয়ে দক্ষিণের পাহাড় ঘেরা এই অঞ্চলে ঢুকে পড়ে। পাইয়ুসরা প্রথম এই এলাকায় বসতি স্থাপন করে এবং পরবর্তীতে বাকিরা তাদের অনুসরন করে। নবম শতাব্দীতে বারমানরা উচ্চ বার্মায় প্রবেশ করে এবং তারা প্রোমে এক সমৃদ্ধ রাজ্য গড়ে তোলে। কয়েক শতাব্দী পর মনরা পায়ুসদেরকে উত্তরে ঠেলে দেয়। তখন তারা মধ্য অঞ্চলের বার্মিজদের সাথে মিশে যায়। পরবর্তীতে বার্মিজরা ৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে পাগানে তাদের রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে। (অং, ১৯৬৫)। বার্মিজ সমাজ ব্যবস্থা ছিল শ্রেণীবিভাগহীন সমাজ। বার্মিজদের সবচেয়ে মূল্যবান বিষয় ছিল তাদের সামাজিক অবকাঠামো। শত বাধা বিপত্তি স্বত্বেও তারা তাদের মুল সামাজিক কাঠামো ধরে রাখতে পেরেছিল। সময়ের সাথে সাথে এই অঞ্চলে আস্তে আস্তে বার্মিজ সংস্কৃতি এবং থেরাভেদা বুদ্ধিজম প্রবেশ করে ও বিস্তার লাভ করে।
বার্মা সম্বন্ধে লিখতে গেলে এর রাজবংশ গুলোর কথা বাদ দেয়া যায় না। এই অঞ্চলকে সুসংহত করে পরিচালনা করেছিল এই রাজারা। বার্মার ইতিহাসে তিনটা প্রধান রাজবংশের শাসন উল্লেখ যোগ্য, এগুলো হল,পাগান রাজবংশ (১০৪৪-১৩২৫),টংগু রাজবংশ (১৪৮৬- ১৭৫২) এবং কোনবং রাজবংশ (১৭৫২-১৮৮৫)। রাজা আলুংপায়া (১৭৫২-১৭৬০) ছিল কোনবং রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। (সিকিন্স, ২০০৬)। ১ জানুয়ারী ১৮৮৬ সালে ব্রিটিশরা বার্মা দখল করে এবং ৪ জানুয়ারি ১৯৪৮ সালে বার্মা ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। ৩০ মার্চ ২০১১ সাল থেকে বার্মার নতুন সংবিধান চালু হয়। ততদিনে বার্মার নাম বদলে মিয়ানমার হয়ে যায়।
বর্তমানে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট, স্টেট কাউন্সিলার অং শান সু কি, ভাইস প্রেসিডেন্ট- ১ মিন্ট সয়ে, ভাইস প্রেসিডেন্ট- ২ হেনরি ভন থিও এবং সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইন। বর্তমান বার্মায় ৬৮ শতাংশ বামার , ৯ শতাংশ শান, ৭ শতাংশ ক্যারেন , ৪ শতাংশ রাখাইন, ২ শতাংশ মন এবং ১০ শতাংশ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর লোক বাস করে।
৩১ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১০:২৯
শোভন শামস বলেছেন: মিয়ানমার সম্বন্ধে জানা যেতে পারে বেশ কিছু বইতে। সুন্দর ভাবে লিখা আছে এসব বইতে।
ডোনাল্ড এম সিকিন্স, (২০০৬), হিস্টোরিকাল ডিকশনারী অব মিয়ানমার, দি স্কেয়ারক্রো ইনক, লেনহাম, মেরিল্যান্ড।
বার্মা /মায়ানমার , হোয়াট এভরি ওয়ান নিড টু নো , ডেভিড আই স্টেইনবার্গ।
দি রিভারস অব লস্ট ফুটস্টেপস, থান্ট মিন্ট উ, ফেরার, স্ট্রাউস অ্যান্ড জিরউক্স, নিউ ইয়র্ক, ২০০৮।
দি মেকিং অব মডার্ন বার্মা, থান্ট মিন্ট উ, ২০০৪, কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস, কেমব্রিজ।
আশা করি পড়তে ভাল লাগবে।
সাথে থাকবেন, ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৯:৪৭
রাজীব নুর বলেছেন: তথ্যে ভুল আছে।