নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাউথ সুদান এখন স্বাধীন, নতুন দেশে নানা রকম সমস্যা আছে, এই দেশে অনেক গুলো গোত্র আছে তাদের মধ্যে দিঙ্কা, নুয়ের আর শিল্লুক হোল মেজরিটি। দিঙ্কারা এদেশের সব গুরুত্ব পূর্ণ পদে এখন বসে গেছে, তারাই দেশটাকে চালাচ্ছে। বহু বছরের গৃহ যুদ্ধ তাদের সমাজে অনেক সমস্যার সৃষ্টি করেছে, এতদিন এগুলো চাপা পড়ে ছিল এখন স্বাধীন দেশে তা আস্তে আস্তে প্রকাস পাচ্ছে। দিঙ্কা সমাজে স্ত্রীরা তাদের স্বামীর পরিবারের সদস্য হয়ে যায়, তাদের বাচ্চারা স্বামীর পরিবারের সন্তান হয়। বিবাহ বিচ্ছেদ হলে সন্তানের দাবিদার তাদের পিতা, সন্তানের উপর মায়ের কোন অধিকার দিঙ্কা সমাজে স্বীকৃত না। এই দেশে পারিবারিক এইসব বিচার সামাজিক নিয়ম মেনে করতে হয়। এখন ও সার্বজনীন কোন আইন হয়নি, কবে হবে তা বলা যাবে না।
একুশ বছরের গৃহ যুদ্ধ পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে নানা ধরনের জটিলতা সৃষ্টি করেছে এদেশে। অনেক পুরুষ যুদ্ধে গিয়ে মারা গেছে, কেউ আশেপাশের দেশে রিফিউজি জীবন কাটিয়েছে অনেক দিন, কেউ মারা গেছে যুদ্ধে, সন মিলিয়ে অনেক সমস্যা। মহিলারা বহু বছর স্বামী ছাড়া থাকার পর কার ও কার ও পুনবিবাহ হয়েছে, তাদের বাচ্চা হয়েছে নতুন ঘরে। এসব মহিলাদের আগের স্বামী ফিরে এলে অধিকার আগের স্বামীর থাকে, এখন মহিলা আগের স্বামীকে তালাক দিলে বাচ্চারা সেই স্বামীর অধিকারে রেখে যেতে হবে। মহিলার আগের স্বামীকে প্রতি বাচ্চার জন্য পাঁচটা করে গরু দিতে হবে স্ত্রীর পরিবারকে, বিয়ের সময় যদি এই লোক মেয়ের পরিবারকে তাদের প্রাপ্যের চেয়ে অনেক বেশি গরু দিয়ে থাকে তবে তালাকের সময় মেয়ের পরিবারকে সেই বাড়তি গরু ফেরত দিতে হবে।
কোন মহিলার যখন দুজন স্বামী থাকে এবং দুজনের ঘরেই বাচ্চা থাকে সেই মহিলার, তখন সে মহিলার ডিভোর্সের সময় দিঙ্কাদের সামাজিক নিয়ম অনুযায়ী পরের স্বামী বাচ্চা ও স্ত্রী কাউকেই পায়না। প্রথম স্বামী যদি বিয়ের সময় গরু দিয়ে একটা ষাঁড় মেরে বিয়ে বন্ধ করে দেয় তখন পরের বিয়ে অবৈধ হয়ে যায় এবং সে সময়ের সব কিছু এবং বাচ্চারা প্রথম স্বামীর হয়ে যায়।
কোন বিবাহিত মহিলার স্বামী মারা গেলে স্বামীর গোত্র, স্বামীর ভাই বা একই পরিবারের কাউকে মহিলার দায়িত্ব দেয়, এই মহিলা নতুন ঘরে যেসব বাচ্চার জন্ম দেয় তারা তার মৃত স্বামীর বাচ্চা হিসেবে পরিবারে প্রতিপালিত হয়।গোত্রের পছন্দের মানুষকে মহিলা নাও পছন্দ করতে পারে, এক্ষেত্রে মহিলাকে গোত্রের অন্য কোন পুরুষকে অবশ্যই বাছাই করতে হয়। স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীরা স্বামীর রেখে যাওয়া সম্পত্তি পায় না, তার নতুন স্বামী এসব তার বাচ্চাদের জন্য খরচ করে।নতুন স্বামী যদি সেই সম্পদ ঠিকমত ব্যাবহার না করে তখন সেই মহিলা এব্যাপারে পরিবারের মুরুব্বীদের কাছে বিচারের জন্য জানাতে পারে।এখন মানুষ তাদের গোত্রপতিদের উপর আস্থা রাখতে পারছে না তাই তারা কোর্টে আসছে। ওদিকে আবার দেশের আইন এখন ও তেমন ভাবে প্রণীত হয়নি তাই বিচারে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।
বাইরের কোন বিচারকের পক্ষে এই ধরনের সমস্যা মিটানোর জন্য রায় দেয়া কঠিন হয়ে পড়ে। তাঁকে সামাজিক আচার জেনেই কেবল রায় দিতে হবে। এসব ক্ষেত্রে পরিবারকে এগিয়ে আসার জন্য সবাই উৎসাহ দিচ্ছে।এদেশে আরও যেসব গোত্র আছে তাদের ও নিয়মগুলো জানতে হবে। এরা এসব নিয়মের পরিবর্তন এখন ও চায় না।
যানবাহন সমস্যা – উগান্ডার বোদা বোদা রাইডার
উগান্ডাতে মোটর সাইকেল ট্যাক্সি হিসাবে ব্যাপক ভাবে ব্যাবহার হয় । এগুলোকে স্থানীয়রা বোদা বোদা বলে। সাধারন মানুষজন যাদের ট্যাক্সি বা বাসে চড়ার পয়সা নেই তারা খুব কোন খরচে বোদা বোদা চড়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গাতে যায়। এটা বেশ জনপ্রিয় বাহন আফ্রিকার অনেক দেশে। উগান্ডা এটার মূল উৎপত্তি স্থল। স্বাধীনতার পর একটা দেশে হাজার সমস্যা থাকে।রাজধানি জুবাতেও চলাচলের জন্য যানবাহনের খুব অভাব ছিল।
এই অভাব পুরন করতে পাশের দেশ উগান্ডা থেকে হাজার খানেক বোদা বোদা রাইডার জুবা ও সাউথ সুদানের অন্যান্য শহরে চলে আসে। এখানে তাদের আয় উপার্জন বেশ ভালই হচ্ছিল।প্রায় দুই বছর তারা বেশ ভালভাবে ছিল এখানে। এর মধ্যে কিছু লোকজন বেশি লাভের আশায় স্থানীয়দের সাথে মিশে ছিনতাই ও অন্যান্য শৃঙ্খলা জনিত কাজে জড়িয়ে পড়ে।
এর মধ্যে দেশে বেকার সমস্যা ও প্রকত হয়ে দেখা দেয়, স্থানীয় লোকজন এই কাজে নেমে পড়ে। তবে তারা উগান্ডার সংঘবদ্ধ দলের সাথে পেরে উঠছিল না। এরা না পেরে বোদা বোদা ছিনতাই করত। অবশেষে দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রী শুধুমাত্র সাউথ সুদানিজদের জন্য বোদা বোদা ব্যবসা করার আদেশ জারি করে। বিদেশীদের জন্য এই ব্যবসা নিষিদ্ধ করা হয়। কোন বিদেশিকে বোদা বোদা চালাতে দেখলে তার মোটর সাইকেল আটক করে তাঁকে বিচারের সম্মুখীন করা হবে এই মর্মে আইন পাশ হয়।
প্রেস কনফারেন্সে এদেশীয়দের জন্য চাকুরীর বাজার বাড়াতে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানান হয়।অপরাধ কমানোর জন্য ও এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে ও এখানে জানানো হয়। উগান্ডা থেকে অনেক দাগী আসামী পালিয়ে এদেশে আশ্রয় নিয়েছে বলে তাদের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছে। এই সব দাগী অপরাধীরা ছিনতাই কিংবা খুন করে বোদা বোদা করে নাকি পালিয়ে যায়।
এখন উগান্ডার বোদা বোদা রাইডাররা দেশে ফিরে যাচ্ছে। যে কোন সময় তাদের মোটর সাইকেল আটক হতে পারে এই ভয়ে। যাওয়ার পথেও তাদের অভিজ্ঞতা সুখের নয়। জুবা নিমুলে রোডে পুলিশের পোষাকে অনেক স্থানীয় সন্ত্রাসী মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এখন তাই তারা তিরিশ চল্লিশ জনের একটা দল করে উগান্ডাতে ফিরে যাচ্ছে।
অন্যায় ভাবে যেসব বোদা বোদা ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে, উগান্ডা থেকে এদেশের প্রশাসনের উপর সেইগুলো ফিরিয়ে দেবার জন্য চাপ দেয়া হচ্ছে।প্রায় পাঁচশত রাইডার দেশে ফেরত চলে গেছে। এখন জুবা শহরে যাতায়াত ব্যয় বহুল হয়ে গেছে। স্থানীয়রা এত কষ্ট করতে নারাজ , কাজেই এরা বোদা বোদা কম চালায় এতে অল্প যে কয়েকটা বাস আছে সেগুলোর উপর চাপ পড়ছে। একন দিগুন ভাড়া গুনতে হচ্ছে জনগণকে, তাই স্থানিয়রাও কিছুটা অসন্তুষ্ট।
লোকজন যাতায়াতের ভাড়ার উপর সরকারের নজরদারি বাড়ানোর জন্য এখন জোর দাবি জানাচ্ছে।
১৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:১৪
শোভন শামস বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই,
বেশ কিছুদিন তো হয়ে গেল এদেশে।
ভাল থাকবেন।
২| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:০৮
ইমরান হক সজীব বলেছেন: চমৎকার লেখা আর ছবি । নিয়মিত লিখবেন আশাকরি ।
.....ভাই কি সাংবাদিক?
©somewhere in net ltd.
১| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৪
কান্টি টুটুল বলেছেন:
ভাল লাগল ভাই আপনার লেখা,কতদিন আছেন ওই দেশে?