নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হৃদয়ের কাছে বুদ্ধির বাস ভাল কথা। কিন্তু মাঝে মঝে হৃদয়ের ওপর থেকে বুদ্ধির শাসন তুলে দিতে হয়, হৃদয়কে স্বাধীন করে দিতে হয়, মুক্ত করে দিতে হয়। স্বাধীন মুক্ত হৃদয়ের ধর্মকে সব সময় বুদ্ধি দিয়ে বিচার করতে নেই।।
অদ্ভুত এক রমযান পার করছি। কোথা দিয়ে রোযা আসল, কিভাবে সেহেরী খাচ্ছি, কিভাবে ইফতার করছি আবার কিভাবে যেন বিছানায় গড়াগড়ি খেয়ে সেহেরীর সময় পার করে দিচ্ছি। এর মাঝে নিয়ম করে নামায পড়া। সবই যেন কেমন অদ্ভুত লাগছে। আসলে কিছুই ভালো লাগছে না, শীতের সময় যদি গরম লাগে আরে গরমের সময় যদি সারা দিন বৃষ্টি পরে তবে খুব স্বাভাবিক ভাবেই কিছুটা অস্বস্তি লাগে। সেই রকম এক অস্বস্তি নিয়েই এবারের রোযার অর্ধেক পার হয়ে গেল।
রমযান মানে তো ইফতার আর সেহেরী খেয়ে বাসায় নামায পড়ে দিন কাটানো না। রমযান মুসলিম উম্মাহর এক আনন্দের সময় তা যে কোন দিক দিয়েই দেখুন না কেন। আফ্রিকান বা আরব মুসলিম দেশ গুলোতে সাধারনতঃ ইফতারি করে ফ্যামিলি নিয়ে কোন রেষ্টুরেন্ট বা খোলা ময়দান অথবা মসজিদ চত্বরে ফ্যামিলি মেম্বারদের নিয়ে নিয়ে আড্ডায় সময় পার করে সেহেরী করে এক সাথে ঘরে ফেরার একটা কালচার দেখছি। আমাদের দেশেও ইদানিং এই কালচারটা কিছুটা দেখা যাচ্ছিল কিন্তু এই রোযায় …….
সারা বছর অনেক বন্ধু বান্ধবের সাথে দেখা হত না, প্রতিবার ইফতারিতে তাদের সাথে দেখা হবার একটা উপলক্ষ্য হয়ে দাড়াত। অনেক দিনের পুরানো সব মুখ, দেখ হলে “বন্ধু কি খবর বল?” বলে এক জন আর একজনকে জড়িয়ে ধরা, অনেক অনেক মিস করছি এই আড্ডাটা। ভার্সিটির হল মেটদের সাথে হাকিম চত্বরে প্রতি বছর অন্তত একবার ইফতারের একটা রেওয়াজ ছিল এখন মনে হয় সেটা দূর কোন অতীত কালের স্মৃতি। ডিপার্টমেন্টের বন্ধুদের নিয়ে বিভিন্ন ভাবে অন্তত দুটো ইফতারে এক সাথে জমায়েত হওয়া হত। উচ্ছ্বল আনন্দে কোথা দিয়ে যে কিছু সময় পার হয়ে যেত টেরই পেতাম না। কিন্তু এই রোযায়…..
আবার প্রতি রোযায় বাসার কথা বাদ দিলাম, অন্তত বন্ধুদের সাথে একদিন পুরানো ঢাকার ইফতারি এক সাথে না করলে মনে হত রোযা বোধ হয় পরিপূর্ন হয় নি। বিশ শতকের গোড়ার দিকে যেমন, এখনও তেমনি রমজানে ইফতারীর সময় চকবাজারে প্রচন্ড ভিড় হয়। ইতিহাস থেকে জানা যায়, মুঘল আমলে চকবাজারের পত্তন হয়। মুঘল আমলে সেনাপতি মানসিংহ পূর্ববঙ্গে এসেছিলেন বিদ্রোহ দমন করতে। ১৬০২ সালে তিনি ভাওয়াল থেকে সদর দফতর স্থানান্তর করেছিলেন বর্তমান কেন্দ্রীয় কারাগারের জায়গায়। সেখানেই মুঘল দুর্গ স্থাপিত হয়েছিল। মুঘল দুর্গের পাশেই গড়ে উঠে চকবাজার। তবে, একসময় এই চকবাজারকে বহুলোক চৌক বন্দর নামে ডাকতেন। মানসিংহের আমল থেকে চকবাজার যাত্রা শুরু করলেও এটি পূর্ণতা লাভ করেছিল মুর্শীদকুলি খাঁর সময়ে। মুর্শিদ কুলি খাঁর পর ওয়াল্টার সাহেব নতুন করে চকবাজার তৈরি করেন। সে সময় তিনি কোমর পর্যন্ত উচু দেওয়াল দিয়ে চকবাজার ঘিরে দিয়েছিলেন এবং বাজারে প্রবেশের জন্য ১৬ টি গেট করে দিয়েছিলেন। পুরান ঢাকার চকবাজারের ইফতারির খ্যাতি আর ঐতিহ্যের কথা এখন আর কারও অজানা নেই। রমজান উপলক্ষে প্রতিবারই জমে ওঠে এ ইফতার বাজার। রোজার শুরুতেই বাহারি ইফতারের পসরা সাজানো হয় ঢাকার এ প্রাচীন স্থানটিতে, যা থাকে মাসজুড়েই। এই বারো কি তেমন আছে? আমার সন্দেহ আছে।
যদিও ব্যাক্তিগতভাবে আমার তারাবীর নামায পড়া হয়ে ওঠে না, কিন্তু যারা বছরের পর বছর খতম তারাবী অথবা সুরা তারাবী পড়ে এই রমযানে নিশ্চয়ই তাদের বুক হু হু করে কেঁদে উঠছে কারন প্রায় কেউই তারাবীর নামায জামাতে পড়তে পারে নি। আমি না পড়লেও যারা রেগুলার এই নামায পরে তাদের জন্য বুকের কোথায় যেন এক ব্যাথা অনুভব করছি।
সেহেরীর আগে আমি সাধারনতঃ অনেক বছরই ঘুমাই না, এক সাথে সেহেরী খেয়ে তারপর ম্যারাথন ঘুম, এবারো সে নিয়মের ব্যাতয় ঘটছে না, কিন্তু তারপরো কি যেন একটা মিস করছি, কি মিস করছি? হ্যা মনে পড়ছেঃ
এল রে দেখ ওই মাহে রমজান
জাগো রে মুসলমান।
অথবা
আমরা কাসিদাওয়ালা
যাই ডেকে যাই
ওঠ ওঠ মমিন
সেহরির সময় নাই।
কাসিদা। প্রতি বছর পাড়ার কিছু পোলাপান সুর করে গানের শব্দে রাত আড়াইটা পৌনে তিনটা থেকে ডেকে যেত। এবার নেই সেই কাসিদা। যদিও কাসিদা কালচার এখন মৃত প্রায়। তাও এই সুর শুনতে শুনতে এটাকেও রোযার একটা অঙ্গ হিসাবে মনে হত। কাসিদা গেয়ে রোজাদারদের ঘুম ভাঙানোর কাজটি সাধারণত তরুণরাই করত। উৎসবের আমেজে। মোগলদের হাত ধরে এ অঞ্চলে, মানে বাংলায় কাসিদার প্রবেশ। তখন কাসিদা লেখা হত ফার্সিতে। কারণ মোগলদের দরবার আর প্রশাসনিক ভাষা ছিল ফার্সি। পূর্ববঙ্গে কাসিদার প্রাচীনতম তথ্যটি পাওয়া যায় মির্জা নাথানের ‘বাহারিস্তান-ই-গায়বি’ গ্রন্থে। তিনি ছিলেন একজন মোগল সেনাপতি। ১৬০৮ সালে ইসলাম খান চিশতির সঙ্গে মোগল নৌবহরের সেনাপতি হিসেবে বঙ্গে এসেছিলেন নাথান। এক সামরিক অভিযানে গিয়েছিলেন যশোরে। তাঁর সেই যশোরের আস্তানায় সে সময় এক বিশাল আনন্দোৎসবের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে কবিরা নিজেদের লেখা কবিতা বা কাসিদা পরিবেশন করেন। সবার অনুরোধে যশোরের আবহাওয়া নিয়ে স্বরচিত কাসিদা আবৃত্তি করেন কবি আগাহি।
রমজানে সেহরির সময় গাওয়ার জন্যই কেবল কাসিদা রচনা করা হত না। কোনো বিষয়ের প্রশংসা করেও কাসিদা রচনা করা হত। লেখা হত বিশেষ কোনো উৎসবকে আরও বেশি আনন্দময় করার জন্যও। প্রাক-ইসলামি যুগ থেকেই কাসিদার শুরু। তবে কাসিদার পরিচিতি আসে ‘কাসিদা বারদা’ থেকে। ইমাম আর বাসিরি এবং ইবনে আরাবির সংগ্রহ করা ধ্রুপদী কাসিদার সংকলন এটি।
কাসিদার একদম প্রাচীন যে রূপটি, যেটাকে বলা যায় কাসিদার ধ্রুপদী রূপ। সেটি মূলত এ রকম- যে কোনো একটি বিষয়কে কবিতার মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। কবিতার প্রতিটা লাইনে ছন্দ-অন্ত্যমিল থাকবে। আকারে পঞ্চাশ লাইনেরও বেশি হবে। কখনও কখনও ছাড়িয়ে যাবে একশ’ লাইনও। কাসিদার বিস্তার একশ’ লাইনেরও বেশি ছাড়িয়ে যাওয়ার এ রীতিটি মূলত পারস্যের কবিদের। আর যাই হোক, কাসিদার মূল উৎস তো পারস্য থেকেই। আরবের লেখক ইবনে কুতাইবাহ আরবি কাসিদাকে তিনটি অংশে বিভক্ত করেছেন। কাসিদা নিয়ে তিনি একটি বই লেখেন নবম শতকে; নাম- ‘কিতাব আল-শির ওয়া-আল-শুয়ারা’ বা ‘বুক অব পোয়েট্রি অ্যান্ড পোয়েটস’। এখানেই রয়েছে তাঁর নিজস্ব কাসিদার গঠনতত্ত্ব।
কিছুদিন আগেও পত্রিকায় দেখতাম, পুরানো ঢাকায় রোযার শেষের দিকে বিভিন্ন মহল্লার মাঝে কাসিদা প্রতিযোগিতা হত। সে এক উৎসব আমেজ। এবার কোথায় যেন মৃত্যুর বিষন্নতায় এই কাসিদা হারিয়ে গেছে। সেহরী খাওয়ার সময় এখনো কিভাবে যেন মহল্লার ছেলেপেলের বেসুরো গলায় গাওয়া সেহরী খাওয়ানোর জন্য ঘুম ভাঙ্গানী কাসিদার শোনার জন্য মনটা আনচান করে।
মুসলিম উম্মাহর সব থেকে বড় আনন্দ উৎসব ঈদ। এইবার ঈদ যে কত পরিবারের জন্য আনন্দ আর কত পরিবারের জন্য স্বজন হারানোর বেদনায় সিক্ততা আনে তা এক মাত্র মহান আল্লাহ তায়ালা জানে। মনে হয় না এবার ঈদের জামাতও সেই জৌলুসের সাথে অনুষ্ঠিত হবে। হয়ত নিয়ম রক্ষার নামায হিসাবে পালিত হলেও ঈদের যে মুল সুর কোলাকুলি করা দোস দুসমান ভুলে গিয়ে তা বোধ হয় সম্ভব হবে না। বড় কষ্ট। জাতীয় কবি নজরুলের রচিত গত ৮৯/৯০ বছর যে গানটা ঈদের আগে আমাদের উদ্বেলিত করত এই বার তা কতটা তা করবে তা সময়ই বলে দেবে।
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ
তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে, শোন আসমানী তাগিদ।
তোর সোনা-দানা, বালাখানা সব রাহে লিল্লাহ
দে যাকাত, মুর্দা মুসলিমের আজ ভাঙাইতে নিঁদ
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ।
আজ পড়বি ঈদের নামাজ রে মন সেই সে ঈদগাহে
যে ময়দানে সব গাজী মুসলিম হয়েছে শহীদ।
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ।
আজ ভুলে যা তোর দোস্ত-দুশমণ, হাত মেলাও হাতে,
তোর প্রেম দিয়ে কর বিশ্ব নিখিল ইসলামে মুরিদ।
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ।
যারা জীবন ভরে রাখছে রোজা, নিত্য উপবাসী
সেই গরিব ইয়াতীম মিসকিনে দে যা কিছু মুফিদ
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ
আপনাকে আজ বিলিয়ে দে শোন আসমানী তাগিদ।
ঢাল হৃদয়ের তশতরীতে শিরনি তৌহিদের,
তোর দাওয়াত কবুল করবেন হজরত হয় মনে উম্মীদ।
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ।
তোরে মারল' ছুঁড়ে জীবন জুড়ে ইট পাথর যারা
সেই পাথর দিয়ে তোলরে গড়ে প্রেমেরই মসজিদ।
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ
আপনাকে আজ বিলিয়ে দে শোন আসমানী তাগিদ।
রোযাগুলো কোথা দিয়ে কিভাবে যাচ্ছে কিছুই বুজতে পারছি না, আনন্দের থেকে মৃত্যু আর অসুস্থ্যের সংখ্যা গুনতে গুনতে আল্লাহর কাছে মাগফেরাত কামনা করাই এখন একমাত্র চাওয়া হয়ে দাড়িয়েছে। সবাই সুস্থ্য থাকুন।
১৪ ই মে, ২০২০ রাত ৮:০০
শের শায়রী বলেছেন: আসলে কিভাবে যে এই রোযা যাচ্ছে কিছুই বুজছি না বোন। মনটা বেশ উচাটান হয়ে আছে। আল্লাহ সবাইকে সুস্থ্য রাখুক এই কামনায়।
২| ১৪ ই মে, ২০২০ রাত ২:০৬
সোহানী বলেছেন: সত্যিই তাই, এবারের ২০ টা রোজা কিভাবে যে পার করলাম কিছুতেই হিসেব মিলাতে পারি না। আকাজে থাকার ফল এটা!! গত বছরেও অনেক গরম ছিল তাই ১৮/১৯ ঘন্টা রোজা রেখে অফিস করে বাসায় ফিরে জীবন ত্রাহি ত্রাহি হয়ে যেত। গুনতে থাকতাম কয়টা রোজা গেল। আর এবার, আরামে আয়েশে শুয়ে বসে রোজা রাখছি। ইউটিউব দেখে ইফতারের রান্না করি আধাবেলা। দিন রাত দ্রুত কেটে যাচ্ছে।
দেশে পুরোন ঢাকা আর ধানমন্ডী এরিয়া নিয়ে থাকতাম তাই চকের ইফতার আর আধুনিক ধানমন্ডির ইফতার দুইটাই বাসায় আসতো। যেহেতু দেশে কখনো রান্না ঘরে ঢোকার সুযোগ হয়নি তাই দোকানের ইফতারেই ছিল ভরসা। মনে করিয়ে দিলেন সেই ধুলা বালি মাখা ভীড় ধাক্কাধাক্কির সেই ইফতার। সেই সব দিন। আর ইফতার পার্টির কথা কি আর বলবো.... রমজানের ১০ এর পর থেকে শুরু হতো সেই পার্টি।
আমরা এখানেও করতাম বাট এবার সবই বাদ। .......
হ্যাপি রমজান।
১৪ ই মে, ২০২০ রাত ১০:১৬
শের শায়রী বলেছেন: আসলেই বোন কেমন যেন এক রোযা যাচ্ছে কোন কিছুই মিলছে না, সব কিছুর মাঝেই কি যেন নাই, কি যেন নাই।
৩| ১৪ ই মে, ২০২০ রাত ২:৪৩
নতুন বলেছেন: এবার পৃথিবি একটু রেস্ট নিচ্ছে। কিন্তু এই কিছু দিনের ফলে মানুষ অনেক কিছুই পাল্টে নেবে।
হ্যান্ডশেক, কোলাকুলি কমিয়ে দেবে।
ইন্টারনেটে মানুষ আরো বেশি সময় কাটানো শুরু করবে।
অনেক রেস্টুরেন্ট, ছোট ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে, অনলাইনের ব্যাবসা বাড়বে।
রমজানের এই কাশিদার প্রচলন বন্ধ হবার সম্ভবনা বেশি।
১৪ ই মে, ২০২০ রাত ১০:১৭
শের শায়রী বলেছেন: কাসিদা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে নতুন ভাই। সব থেকে বেশী প্রভাব পড়বে, মানুষের আন্তরিক অভিব্যাক্তি প্রকাশে
৪| ১৪ ই মে, ২০২০ রাত ৩:০১
রাজীব নুর বলেছেন: জন্মের পর এরকম রোজা, সেহেরি বা ইফিতার আসেনি জীবনে।
১৪ ই মে, ২০২০ রাত ১০:১৭
শের শায়রী বলেছেন: আসলেই তাই রাজীব ভাই।
৫| ১৪ ই মে, ২০২০ ভোর ৪:৪৩
নেওয়াজ আলি বলেছেন: ঈদের দিন মধ্যপাচ্যে কার্ফু থাকবে। আমরাওস নজরুলের ঈদের গান গাইতে পারবো না।
১৪ ই মে, ২০২০ রাত ১০:১৯
শের শায়রী বলেছেন: আসলে এই পরিস্থিতিতে মানুষ নিজে নিজেই নিজেদের কার্ফ্যুতে আবদ্ধ রাখছে।
৬| ১৪ ই মে, ২০২০ সকাল ১০:০৩
জাফরুল মবীন বলেছেন: মৃত্যুভয়ে প্রতিক্ষণ কাটানোর মধ্যেও আত্মোপলব্ধির এবং আত্মশুদ্ধির বিরাট একটা সুযোগ রয়েছে।আমি কষ্ট পাচ্ছি বেশিরভাগ মানুষই উদাসীনতায় সময় পার করছে।
কাসিদার ব্যাপারে বলি ছোটকালে যেসব কাসিদা শুনে বড় হয়েছি তার মধূরতার ছিটেফোঁটাও এখন পাই না 'ওঠো রোজাদারো,আল্লাহকে ডারো...' এখনও কানে বাজে।
সমসাময়িক বাস্তব অনুভূতির সুন্দর প্রকাশের জন্য ধন্যবাদ ভাই।
অনেক অনেক শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
১৪ ই মে, ২০২০ রাত ১১:২০
শের শায়রী বলেছেন: জাফরুল ভাই আপনার পোষ্ট গুলো যে কত উপকার করতেছে কিভাবে বুঝাই। কৃতজ্ঞতা জানানো ছাড়া আর কোন ভাষা নেই। হ্যা কাসিদার মধুরতা প্রতি বছরই বিলীন হয়ে যাচ্ছে এটা এখন অনেকটা চাদা উঠানোর একটা পন্থা হয়ে দাড়িয়েছে।
পাঠে এবং মন্তব্যে অশেষ কৃতজ্ঞতা জানবেন।
৭| ১৪ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:২৬
ঢাবিয়ান বলেছেন: বেঁচে থাকাটাই এখব সবচেয়ে বড় চ্যলেঞ্জ। রমজান, ঈদ এর আনন্দ সবকিছু এখন বড় অর্থহীন।
১৫ ই মে, ২০২০ রাত ৯:১৪
শের শায়রী বলেছেন: আদিম মানুষ কিভাবে বেচে ছিল এখন কিছুটা মানুষ উপলদ্ধি করছে ঢাবিয়ান ভাই।
৮| ১৪ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:৫৭
নতুন নকিব বলেছেন:
আল্লাহ পাক পৃথিবীবাসীর উপর রহমত নাযিল করুন।
১৫ ই মে, ২০২০ রাত ৯:১৫
শের শায়রী বলেছেন: আল্লাহ সবাইকে রহম করুক এই ই এক মাত্র কামনা।
৯| ১৪ ই মে, ২০২০ দুপুর ২:২৩
তারেক ফাহিম বলেছেন: কাসিদার বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানা দরকার।
১৫ ই মে, ২০২০ রাত ১০:৪৫
শের শায়রী বলেছেন: প্রথমেই আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই, আপনার জানতে চাওয়ার জন্য। অন লাইন খুজে কাসিদা নিয়ে এই ফিচার টা পেলাম যেটা সব থেকে ভালো। এর বাইরেও যদি আপনি কাসিদা নিয়ে জানতে চান তবে “কাসিদা ই বুরদা” লেখক রুহুল আমিন খানের বইটি পড়ার অনুরোধ জানালাম। পাঠে এবং মন্তব্যে অশেষ কৃতজ্ঞতা জানবেন।
‘কাসিদা’ শব্দটি ফার্সি। অর্থ কবিতার ছন্দে প্রিয়জনের প্রশংসা করা। তবে এর মূল শব্দটি আরবি, ‘ক্বাসাদ’। এই ‘ক্বাসাদ’ বিবর্তিত হয়ে ফার্সিতে এসে হয়েছে ‘কাসিদা’।
কাসিদা গেয়ে রোজাদারদের ঘুম ভাঙানোর কাজটি সাধারণত তরুণরাই করত। উৎসবের আমেজে। মোগলদের হাত ধরে এ অঞ্চলে, মানে বাংলায় কাসিদার প্রবেশ। তখন কাসিদা লেখা হত ফার্সিতে। কারণ মোগলদের দরবার আর প্রশাসনিক ভাষা ছিল ফার্সি। পূর্ববঙ্গে কাসিদার প্রাচীনতম তথ্যটি পাওয়া যায় মির্জা নাথানের ‘বাহারিস্তান-ই-গায়বি’ গ্রন্থে। তিনি ছিলেন একজন মোগল সেনাপতি। ১৬০৮ সালে ইসলাম খান চিশতির সঙ্গে মোগল নৌবহরের সেনাপতি হিসেবে বঙ্গে এসেছিলেন নাথান। এক সামরিক অভিযানে গিয়েছিলেন যশোরে। তাঁর সেই যশোরের আস্তানায় সে সময় এক বিশাল আনন্দোৎসবের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে কবিরা নিজেদের লেখা কবিতা বা কাসিদা পরিবেশন করেন। সবার অনুরোধে যশোরের আবহাওয়া নিয়ে স্বরচিত কাসিদা আবৃত্তি করেন কবি আগাহি।
রমজানে সেহরির সময় গাওয়ার জন্যই কেবল কাসিদা রচনা করা হত না। কোনো বিষয়ের প্রশংসা করেও কাসিদা রচনা করা হত। লেখা হত বিশেষ কোনো উৎসবকে আরও বেশি আনন্দময় করার জন্যও। প্রাক-ইসলামি যুগ থেকেই কাসিদার শুরু। তবে কাসিদার পরিচিতি আসে ‘কাসিদা বারদা’ থেকে। ইমাম আর বাসিরি এবং ইবনে আরাবির সংগ্রহ করা ধ্রুপদী কাসিদার সংকলন এটি।
কাসিদার একদম প্রাচীন যে রূপটি, যেটাকে বলা যায় কাসিদার ধ্রুপদী রূপ। সেটি মূলত এ রকম- যে কোনো একটি বিষয়কে কবিতার মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। কবিতার প্রতিটা লাইনে ছন্দ-অন্ত্যমিল থাকবে। আকারে পঞ্চাশ লাইনেরও বেশি হবে। কখনও কখনও ছাড়িয়ে যাবে একশ’ লাইনও। কাসিদার বিস্তার একশ’ লাইনেরও বেশি ছাড়িয়ে যাওয়ার এ রীতিটি মূলত পারস্যের কবিদের। আর যাই হোক, কাসিদার মূল উৎস তো পারস্য থেকেই। আরবের লেখক ইবনে কুতাইবাহ আরবি কাসিদাকে তিনটি অংশে বিভক্ত করেছেন। কাসিদা নিয়ে তিনি একটি বই লেখেন নবম শতকে; নাম- ‘কিতাব আল-শির ওয়া-আল-শুয়ারা’ বা ‘বুক অব পোয়েট্রি অ্যান্ড পোয়েটস’। এখানেই রয়েছে তাঁর নিজস্ব কাসিদার গঠনতত্ত্ব।
কাসিদার প্রথম অংশ হচ্ছে ‘নসিব’। শুরুটা হতো নস্টালজিক। পরের অংশ ‘তাখাল্লাস’। এখানেও নস্টালজিক বর্ণনা থাকত। আর এই নস্টালজিয়ায় আচ্ছন্ন থেকেই বর্ণনা থাকত অভিযাত্রার। অভিযাত্রার এ অংশের নাম ‘রাহিল’। একই সঙ্গে গোষ্ঠীর জীবনযাত্রা, প্রকৃতির বর্ণনাও থাকত। আর কাসিদার শেষ অংশে থাকত উপদেশ বা মেসেজ। এই শেষ অংশেরও তিনটা ভাগ। প্রথমটুকু হচ্ছে গোষ্ঠীর গুণকীর্তন। এর নাম ‘ফাখর’। পরের অংশ হচ্ছে গোষ্ঠীর স্যাটায়ার। এর নাম ‘হিজা’। আর শেষটুকুতে থাকে কিছু নৈতিক বাণী। এর নাম ‘হিকাম’।
এদিকে দশম শতাব্দীতে ইরানের কবিদের লেখা কাসিদা ছিল বৈচিত্র্যময়। কারণ ওসব কাসিদা লেখা হত ভিন্ন ভিন্ন উদ্দেশ্যে। যেমন নাসির খসরুর কাসিদায় দর্শনতত্ত্ব, ঈশ্বরতত্ত্ব এবং নৈতিকতা মিলেমিশে একাকার। অন্যদিকে আভিসেন্নার কাসিদায় কেবল দর্শনতত্ত্বেরই অস্তিত্ব মেলে। সম্ভবত প্রথম ধরনটা হচ্ছে বসন্তের কবিতা। ফার্সিতে যাকে বলে ‘বাহারিয়াহ’। আর পরের ধরনটা ‘খাজানিয়াহ’। এটা হচ্ছে শরতের কবিতা। শুরুটা প্রকৃতির বর্ণনা দিয়েই হত। সঙ্গে মৌসুম, প্রাকৃতিক দৃশ্য অথবা মজার দৃশ্যকল্প থাকত। ‘তাখাল্লাস’ অংশে কবি নিজের লেখক নাম ধরেই শুরু করতেন। আর শেষ অংশে থাকত কেন কবিতাটা লেখা হয়েছে, সে উদ্দেশ্যের কথা।
পারস্যে মহাকাব্য রচিত হয়েছে অনেক। কবি ফিরদৌসির ‘শাহনামা’ তো দুনিয়াখ্যাত মহাকাব্য। তবে কাসিদা মহাকাব্যের চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। এই ধাঁচে প্রথম কবিতা লিখেছিলেন কবি রুদাকি। রুদাকির জন্ম ৮৫৮ সালে। ওই সময় বেশিরভাগ কাসিদাই ছিল প্রশস্তিগাথা। কিছু কিছু ছিল শোকগাথা। নীতিকথার ঘরানাতেও বেশ কিছু কাসিদা রচিত হয়েছিল। এসব কাসিদায় কখনও দর্শন কখনও আত্মজীবনীমূলক বক্তব্যও ছিল। ফার্সি কাসিদার বৈশিষ্ট্য হল এর অন্ত্যমিলে। পুরোটা কাসিদায় অন্ত্যমিল একই থাকবে। তবে মাত্রা ভিন্ন হতে পারে। গড়পড়তায় কাসিদার দৈর্ঘ্য ছিল ৬০-১০০ লাইন। ২০০ লাইনের বেশি দীর্ঘ কাসিদাও লেখা হত।
কাসিদার প্রথম দিকের কবিরা ছিলেন ফিরদৌসির সমসাময়িক। এদের মধ্যে উনসুরি (আনুমানিক মৃত্যু ১০৪৯), আসজাদি এবং ফাররোখির নাম উল্লেখযোগ্য। বলা হয়ে থাকে, গজনীর সুলতান মাহমুদের দরবারে যে ৪০০ কবি ছিলেন, তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ছিলেন ফাররোখি। কাজেই তখনকার ফার্সি ভাষায় সেরা কবিরাই কাসিদা লিখতেন। ফার্সি ভাষার দীর্ঘ ইতিহাসে প্রশস্তিগাথামূলক কাসিদা লিখেছেন অনেকে। তবে তাদের মধ্যে কবি আনভারিকে সর্বাগ্রে স্থান দেওয়া হয়। ওদিকে দার্শনিক কাসিদার লেখক হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন নাসির খসরু। নাসির খসরু মারা যান ১০৮৮ সালের দিকে। আর নাসির খসরুর সমসাময়িক ছিলেন ওমর খৈয়াম। হ্যাঁ, রুবাই বা চতুষ্পদী কবিতার শ্রেষ্ঠ কবি ওমর খৈয়াম।
১৪ শতকে এসে গজলের সঙ্গে সংঘাত শুরু হয় কাসিদার। কাসিদার তুলনায় গজল জনপ্রিয় হতে থাকে। এর কারণও আছে। কাসিদার মতো গজল এত দীর্ঘতর নয়। তার উপর কাসিদার প্রথম অংশকে ঘষামাজা করেই গজল রচনা করতেন কবিরা। কাজটা খুব একটা কঠিনও নয়। কাসিদার প্রথম অংশে আরও কিছু দৃশ্যকল্প ঢুকিয়ে সঙ্গে আরও কিছু সুমিষ্ট শব্দ ব্যবহার করে গজল রচনা করা যায়। ফার্সিতে কাসিদার কদর যখন পড়তির দিকে, তখনই উর্দুতে এর চর্চা শুরু হয়। উর্দু কাসিদা মূলত স্তুতিমূলক। কখনও বা ব্যঙ্গাত্মক। তবে বেশিরভাগই কোনো বিশেষ উপলক্ষ ঘিরে রচিত। উর্দু কাসিদা গজলের চেয়ে আকার আয়তনে বড় হলেও, ছন্দের নিয়ম ঠিকঠাক মেনে চলে।
এ অঞ্চলের কাসিদার ধারক বাহক আদি ঢাকাবাসীরা, মানে পুরান ঢাকার লোকজন। মাহে রমজানই শুধু নয়, ঈদ-উল-ফিতর ও মহররম উপলক্ষেও কাসিদা রচনা করা হত এ অঞ্চলে। এই ঢাকাবাসীদের মধ্যে আবার দুটো দল। এক দলে ছিল ‘সুব্বাসি’ বা ‘সুখবাসী’। তারা নিজেদের মধ্যে উত্তর ভারতীয় সংস্কৃতির চর্চা করতেন। ঢাকার মোগল ঘরানার শেষ ধারক বাহক ছিলেন এই সুব্বাসিরা। নিজেদের মধ্যে উর্দু আর ফার্সি চর্চা করতেন। আরেকটি দল হচ্ছে ‘কুট্টি’। এরা কথা বলতেন বাংলার সঙ্গে উর্দু ও হিন্দি শব্দ মিশিয়ে। তাদের কাসিদার ভাষাও উর্দু ও ফার্সি। যদিও ঠিক কবে থেকে ঢাকায় কাসিদার শুরু, সে সম্পর্কে কোনো তথ্য জানা যায়নি। মোগল আমল থেকে শুরু বলেই ধরে নেওয়া হয়। সায়লা পারভীনের লেখা ‘হারিয়ে যাওয়া কাসিদা’ বই থেকে জানা যায়, ঢাকার উর্দু রোড, কসাইটুলী, বকশীবাজার, হোসনি দালান ও বংশালে ভীষণ জনপ্রিয় ছিল কাসিদা। রমজানের সময় দলবেঁধে হেঁটে হেঁটে পাড়া-মহল্লায় কাসিদা গেয়ে শোনাতেন তরুণরা। তাদের হাতে থাকত হ্যাজাক বাতি আর কুকুরের উৎপাত থেকে বাঁচার জন্য লাঠি।
ঢাকায় গাওয়া কাসিদা কয়েক ধরনের। চাঁদ ওঠার খুশিতে গাওয়া হয় ‘চানরাতি আমাদ’। রমজান মাসকে স্বাগত জানিয়ে গাওয়া হয় ‘খুশ আমদেদ’ বা ‘সদা’। আর রমজানকে বিদায় জানিয়ে গাওয়া হয় ‘আল বিদা’। রমজানের প্রথম ১৫ দিন গাওয়া হয় ‘সদা’। আর শেষ ১৫ বা ১৪ দিন গাওয়া হয় ‘আল বিদা’। ঈদের পরদিন হয় বিখ্যাত ঈদ মিছিল। ওই ঈদ মিছিলে গাওয়া হয় কাসিদা ‘ঈদ মোবারক’।
সেহরির সময় রোজাদারদের ঘুম ভাঙানোর জন্য যে সব কাসিদা গাওয়া হয়, এগুলোর নির্দিষ্ট নিয়মনীতি নেই। এগুলোর অনেকগুলোই অনেক জনপ্রিয় গানের সুর অনুকরণে গাওয়া হয়।
এ অঞ্চলের কাসিদার ধারক বাহক আদি ঢাকাবাসীরা, মানে পুরান ঢাকার লোকজন। মাহে রমজানই শুধু নয়, ঈদ-উল-ফিতর ও মহররম উপলক্ষেও কাসিদা রচনা করা হত এ অঞ্চলে। এই ঢাকাবাসীদের মধ্যে আবার দুটো দল। এক দলে ছিল ‘সুব্বাসি’ বা ‘সুখবাসী’। তারা নিজেদের মধ্যে উত্তর ভারতীয় সংস্কৃতির চর্চা করতেন। ঢাকার মোগল ঘরানার শেষ ধারক বাহক ছিলেন এই সুব্বাসিরা। নিজেদের মধ্যে উর্দু আর ফার্সি চর্চা করতেন। আরেকটি দল হচ্ছে ‘কুট্টি’। এরা কথা বলতেন বাংলার সঙ্গে উর্দু ও হিন্দি শব্দ মিশিয়ে। তাদের কাসিদার ভাষাও উর্দু ও ফার্সি। যদিও ঠিক কবে থেকে ঢাকায় কাসিদার শুরু, সে সম্পর্কে কোনো তথ্য জানা যায়নি। মোগল আমল থেকে শুরু বলেই ধরে নেওয়া হয়। সায়লা পারভীনের লেখা ‘হারিয়ে যাওয়া কাসিদা’ বই থেকে জানা যায়, ঢাকার উর্দু রোড, কসাইটুলী, বকশীবাজার, হোসনি দালান ও বংশালে ভীষণ জনপ্রিয় ছিল কাসিদা। রমজানের সময় দলবেঁধে হেঁটে হেঁটে পাড়া-মহল্লায় কাসিদা গেয়ে শোনাতেন তরুণরা। তাদের হাতে থাকত হ্যাজাক বাতি আর কুকুরের উৎপাত থেকে বাঁচার জন্য লাঠি।
ঢাকায় গাওয়া কাসিদা কয়েক ধরনের। চাঁদ ওঠার খুশিতে গাওয়া হয় ‘চানরাতি আমাদ’। রমজান মাসকে স্বাগত জানিয়ে গাওয়া হয় ‘খুশ আমদেদ’ বা ‘সদা’। আর রমজানকে বিদায় জানিয়ে গাওয়া হয় ‘আল বিদা’। রমজানের প্রথম ১৫ দিন গাওয়া হয় ‘সদা’। আর শেষ ১৫ বা ১৪ দিন গাওয়া হয় ‘আল বিদা’। ঈদের পরদিন হয় বিখ্যাত ঈদ মিছিল। ওই ঈদ মিছিলে গাওয়া হয় কাসিদা ‘ঈদ মোবারক’।
সেহরির সময় রোজাদারদের ঘুম ভাঙানোর জন্য যে সব কাসিদা গাওয়া হয়, এগুলোর নির্দিষ্ট নিয়মনীতি নেই। এগুলোর অনেকগুলোই অনেক জনপ্রিয় গানের সুর অনুকরণে গাওয়া হয়।
কাসিদা গানের অনেক গুণী বিচারক আছেন। তাদের অনেকেই এক সময় ছিলেন বিখ্যাত কাসিদা গায়ক। তাদের অনেকেই এখন আর বেঁচে নেই। বিখ্যাত কাসিদা বিচারকদের মধ্যে এজাজ, হাফেজ জহুর, মাওলানা আবদুস সালাম, ক্বারি সামসুল হক, মাওলানা আবু তাহের, আইয়ুব কাওয়াল, মাওলানা বশির আহমেদ, হাজী ফুরকান আহমেদ উল্লেখযোগ্য। আর কাসিদা গায়কদের মধ্যে বিখ্যাত কয়েকজন হচ্ছেন- জুম্মন মিয়া, মঞ্জুর আলম, আবদুস সামাদ, মানিক চাঁন, সৈয়দ ফাসীহ হোসেন।
১০| ১৪ ই মে, ২০২০ বিকাল ৪:৫৭
আহমেদ জী এস বলেছেন: শের শায়রী,
হ্যা... এ এক অদ্ভুত সময়!!!!!!!!!!
আনন্দ,উল্লাস পিছে ফেলে এক আতঙ্কের পিঠে সওয়ার হয়েছে পৃথিবী- আমরাও.................
১৫ ই মে, ২০২০ রাত ১০:৪৯
শের শায়রী বলেছেন: জ্বি ভাই এক অদ্ভুত পৃথিবী দেখছি। মৃত্যুতো অবশ্যাম্ভাবী, সেক্ষেত্রে এই দেখতে পাওয়াও অনেক কিছু। পাঠে এবং মন্তব্যে অশেষ কৃতজ্ঞতা ভাই।
১১| ১৪ ই মে, ২০২০ বিকাল ৪:৫৮
সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: কাসিদার নামে চাঁদাবাজির স্বীকার হয়েছিলাম ২০১৬-১৭ সালে, দু'বছর , জসিমুদ্দিন রোডে যখন ভাড়া থাকতাম। ১৫ - ১৬ রোজার দিকে বাসায় এসে পাঁচশো - বা হাজারের মত টাকা চাইলো। বাবা বললেন তিনি এতো টাকা দেবেন না। তাঁরা স্থানীয় এক নেতার নাম করে বলল যে তাঁরা তার ছেলেপেলে, এবং ঐ নেতার বেঁধে দেয়া রেট এটা। পরে বাবা সম্ভবত তাদের চাহিদা মতই পয়সা দিয়ে তারপর ঘরের দরজা বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু তাদের কথার উপর কথা বলার অপরাধে আমাদের দরজার সামনে পরদিন সাতসকালে তাদেরই কেউ পুরীষের স্তূপ রেখে যায়।
কাসিদার চাঁদা নিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনার সম্মুখীন হওয়ার অভিজ্ঞতা, মনে হয় না আমার একারই।
যে সংস্কৃতিকে ব্যবহার করে চাঁদাবাজির সূত্র তৈরি হয়, তার আমূল সংস্কার প্রয়োজন। সম্ভব না হলে বাদ দিলেও সমস্যা নেই। এটা ইসলামের মৌলিক কোন বিষয় নয়। মানুষে মানুষে সদাচরণ ইসলামের মৌলিক শিক্ষা, এবং যা কিছুই তার পক্ষে বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে, তা পুনর্বিবেচনা করে দেখতে হবে।
১৬ ই মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২১
শের শায়রী বলেছেন: ব্রাদার, অবশ্যই কাসিদা ইসলামের কোন বিষয় না, আর এটাও অনস্বীকার্য্য এই সব কেন্দ্র করে কিছু কিছু জায়গায় এক শ্রেনীর মানুষ চাদাবাজীতে নামে। অরিজিন্যাল কাসিদা কালচার এখন অল রেডি মৃত। বাকী যা আছে তা অনেকটা স্থানীয় ছেলেপেলের আনন্দ উদযাপনের বিষয়। এটা আসলে থাকা না থাকা কোন বিষয় না।
পাঠে এবং মন্তব্যে অশেষ কৃতজ্ঞতা।
১২| ১৪ ই মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৭
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হুমমম...
শুন্যতা আর হাহাকারে ভরা এবারের রমজান।
কি যে নেই কত কিছু যে নেই..... পোষ্টেও কি যেন মিস করে গেলাম......
হ্যা ম্যা’ভাই পেয়েছি
খতমে তারাবিহ। আহ্
একমনে নিবিষ্টতায় দাড়িয়ে থাকা। সুললিত কন্ঠের খতমে কোরআন....
হে আল্লাহ
ক্ষমা করো। দয়া করো। তুমিতো দয়ার সাগর
আমরা তওবাওতো করতে জানিনা। তবুও আমাদরে তওবা কবুল করে নাও
আসমানী জমিনি জাহিরী বাতেনী আজাব গজব বালা মুসিবত দূর করে দাও
পবিত্র শবে ক্বদরের উসিলায়, পাক পাঞ্জাতনের উসিলায়. তুমি আমাদের প্রার্থনা কবুল করো।
১৬ ই মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২১
শের শায়রী বলেছেন: হে আল্লাহ
ক্ষমা করো। দয়া করো। তুমিতো দয়ার সাগর
আমরা তওবাওতো করতে জানিনা। তবুও আমাদরে তওবা কবুল করে নাও
আসমানী জমিনি জাহিরী বাতেনী আজাব গজব বালা মুসিবত দূর করে দাও
পবিত্র শবে ক্বদরের উসিলায়, পাক পাঞ্জাতনের উসিলায়. তুমি আমাদের প্রার্থনা কবুল করো।
আমিন।
১৩| ১৪ ই মে, ২০২০ রাত ৮:৪৫
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: সত্যিই এ এক আলাদা রমযান। শেষ রাতে সেহেরি খাওয়ার জন্য পাড়ার মসজিদ মসজিদে কোন কোলাহল নেই।নেই ইফতারের আগে ইমাম সাহেবের দোয়াদানির মাইকের আওয়াজ। ছোট বেলায় মসজিদে যখন মাইক আসেনি তখন ইফতারের সময় হলে চকলেট বোমা ফাটিয়ে পাশ্ববর্তী এলাকায় ইফতারের সময় ঘোষণা করা হয়। সেই সঙ্গে মারাত্মক ভাবে মিস করছি খতম তারাবির। মূলত প্রথম দিকে বড়বড় সুরোতে ঘুম ঘুম চোখে সামনে হুমড়ি খেয়ে কোনক্রমে টাল সামলে রকু ও সেজদায় যাওয়া এবং খতম হওয়ার দিনে মসজিদের পক্ষ থেকে একপ্যাকেট বিরিয়ানি এসব এখন অতিত হয়ে গেছে। জানিনা আগামী বছর আর পাবো কিনা। তবে ঘরে একা একা সুরা তারবি যে মসজিদের জামাতের কোন বিকল্প হতে পারে না একথা হলফ করে বলতে পারি।
কাসিদা প্রসঙ্গে চাঁদ রাত্রি বা চাঁদাবাজি নিয়ে আমার অভিজ্ঞতা অত্যন্ত তিক্তকর।সে আর শেয়ার করতে চাই না।
শুভেচ্ছা প্রিয় শায়রী ভাইকে।
১৬ ই মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৩
শের শায়রী বলেছেন: আসলেই সব মিলিয়ে এক বিষন্ন রমযান দেখছি, সব সময় আতংকে কাটাতে হয় প্রিয় জন সবাই আজকে সুস্থ্য আছে তো?
ভালো থাকুন প্রিয় ভাই
১৪| ১৪ ই মে, ২০২০ রাত ৮:৪৭
রাজীব নুর বলেছেন: আগামী রমজান কি পাবো? এবার একটাও ইফিতার পার্টি হয় নাই।
১৬ ই মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৩
শের শায়রী বলেছেন: যে পরিস্থিতি তাতে এই রমযান কি শেষ করতে পারব কিনা এক আল্লাহ মাবুদ জানে।
১৫| ১৪ ই মে, ২০২০ রাত ১১:৫২
অগ্নিপাখি বলেছেন: আমার জন্ম আর বেড়ে ওঠা পুরাণ ঢাকায়। সত্যি বলতে কি রমজান এর পুরো মাসটা আমার কাছে একটা উৎসবের মতো। অফিস থেকে বাসায় ফেরবার পথে ইফতারি কিনে আনা, অফিস এর কিছু খুব কাছের মানুষদের সাথে ইফতার করা, ডিপার্টমেন্ট এর ইফতার, বন্ধুদের সাথে ইফতার, সহধর্মিণীকে নিয়ে একদিন ইফতার করতে যাওয়া, কাজিনদের সাথে ইফতার আর সবচেয়ে প্রিয় যে কাজটা সেটা হলো- আসরের নামাজ চকবাজার মসজিদে পড়ে ইফতার এর ৩০ মিনিট পূর্ব পর্যন্ত চকের বিখ্যাত ইফতার বাজার এর ব্যাস্ততা দেখা মসজিদ এর বারান্দা থেকে। এবারের রোজা নিয়ে অনেক অনেক প্ল্যান ছিল। কিছুই হলো না!!! গতবার আব্বু অসুস্থ ছিল রমজান মাসে; একটা অপারেশন হয়েছিলো তাই ঈদের দিনও হাসপাতাল এ ছিলাম। আর এবার তো ২ মাসের উপর বাসায় বন্দী। অফিস ও বাসা থেকে করছি। আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুন। আল্লাহ যেন শীঘ্রই এ মহামারী থেকে সমস্ত মানবজাতিকে রক্ষা করেন।
১৬ ই মে, ২০২০ রাত ৮:০২
শের শায়রী বলেছেন: আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুন। আল্লাহ যেন শীঘ্রই এ মহামারী থেকে সমস্ত মানবজাতিকে রক্ষা করেন। এটাই এখন এক মাত্র কামনা ভাই।
১৬| ১৫ ই মে, ২০২০ রাত ১:১২
বুরহানউদ্দীন শামস বলেছেন: কাসিদা সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে চাই..
অনেক অজানা তথ্য জানলাম পোস্ট থেকে । তবুও মনে হচ্ছে আরো জানতে এ ব্যাপারে ...
১৬ ই মে, ২০২০ রাত ৮:০৩
শের শায়রী বলেছেন: রথমেই আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই, আপনার জানতে চাওয়ার জন্য। অন লাইন খুজে কাসিদা নিয়ে এই ফিচার টা পেলাম যেটা সব থেকে ভালো। এর বাইরেও যদি আপনি কাসিদা নিয়ে জানতে চান তবে “কাসিদা ই বুরদা” লেখক রুহুল আমিন খানের বইটি পড়ার অনুরোধ জানালাম। পাঠে এবং মন্তব্যে অশেষ কৃতজ্ঞতা জানবেন।
‘কাসিদা’ শব্দটি ফার্সি। অর্থ কবিতার ছন্দে প্রিয়জনের প্রশংসা করা। তবে এর মূল শব্দটি আরবি, ‘ক্বাসাদ’। এই ‘ক্বাসাদ’ বিবর্তিত হয়ে ফার্সিতে এসে হয়েছে ‘কাসিদা’।
কাসিদা গেয়ে রোজাদারদের ঘুম ভাঙানোর কাজটি সাধারণত তরুণরাই করত। উৎসবের আমেজে। মোগলদের হাত ধরে এ অঞ্চলে, মানে বাংলায় কাসিদার প্রবেশ। তখন কাসিদা লেখা হত ফার্সিতে। কারণ মোগলদের দরবার আর প্রশাসনিক ভাষা ছিল ফার্সি। পূর্ববঙ্গে কাসিদার প্রাচীনতম তথ্যটি পাওয়া যায় মির্জা নাথানের ‘বাহারিস্তান-ই-গায়বি’ গ্রন্থে। তিনি ছিলেন একজন মোগল সেনাপতি। ১৬০৮ সালে ইসলাম খান চিশতির সঙ্গে মোগল নৌবহরের সেনাপতি হিসেবে বঙ্গে এসেছিলেন নাথান। এক সামরিক অভিযানে গিয়েছিলেন যশোরে। তাঁর সেই যশোরের আস্তানায় সে সময় এক বিশাল আনন্দোৎসবের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে কবিরা নিজেদের লেখা কবিতা বা কাসিদা পরিবেশন করেন। সবার অনুরোধে যশোরের আবহাওয়া নিয়ে স্বরচিত কাসিদা আবৃত্তি করেন কবি আগাহি।
রমজানে সেহরির সময় গাওয়ার জন্যই কেবল কাসিদা রচনা করা হত না। কোনো বিষয়ের প্রশংসা করেও কাসিদা রচনা করা হত। লেখা হত বিশেষ কোনো উৎসবকে আরও বেশি আনন্দময় করার জন্যও। প্রাক-ইসলামি যুগ থেকেই কাসিদার শুরু। তবে কাসিদার পরিচিতি আসে ‘কাসিদা বারদা’ থেকে। ইমাম আর বাসিরি এবং ইবনে আরাবির সংগ্রহ করা ধ্রুপদী কাসিদার সংকলন এটি।
কাসিদার একদম প্রাচীন যে রূপটি, যেটাকে বলা যায় কাসিদার ধ্রুপদী রূপ। সেটি মূলত এ রকম- যে কোনো একটি বিষয়কে কবিতার মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। কবিতার প্রতিটা লাইনে ছন্দ-অন্ত্যমিল থাকবে। আকারে পঞ্চাশ লাইনেরও বেশি হবে। কখনও কখনও ছাড়িয়ে যাবে একশ’ লাইনও। কাসিদার বিস্তার একশ’ লাইনেরও বেশি ছাড়িয়ে যাওয়ার এ রীতিটি মূলত পারস্যের কবিদের। আর যাই হোক, কাসিদার মূল উৎস তো পারস্য থেকেই। আরবের লেখক ইবনে কুতাইবাহ আরবি কাসিদাকে তিনটি অংশে বিভক্ত করেছেন। কাসিদা নিয়ে তিনি একটি বই লেখেন নবম শতকে; নাম- ‘কিতাব আল-শির ওয়া-আল-শুয়ারা’ বা ‘বুক অব পোয়েট্রি অ্যান্ড পোয়েটস’। এখানেই রয়েছে তাঁর নিজস্ব কাসিদার গঠনতত্ত্ব।
কাসিদার প্রথম অংশ হচ্ছে ‘নসিব’। শুরুটা হতো নস্টালজিক। পরের অংশ ‘তাখাল্লাস’। এখানেও নস্টালজিক বর্ণনা থাকত। আর এই নস্টালজিয়ায় আচ্ছন্ন থেকেই বর্ণনা থাকত অভিযাত্রার। অভিযাত্রার এ অংশের নাম ‘রাহিল’। একই সঙ্গে গোষ্ঠীর জীবনযাত্রা, প্রকৃতির বর্ণনাও থাকত। আর কাসিদার শেষ অংশে থাকত উপদেশ বা মেসেজ। এই শেষ অংশেরও তিনটা ভাগ। প্রথমটুকু হচ্ছে গোষ্ঠীর গুণকীর্তন। এর নাম ‘ফাখর’। পরের অংশ হচ্ছে গোষ্ঠীর স্যাটায়ার। এর নাম ‘হিজা’। আর শেষটুকুতে থাকে কিছু নৈতিক বাণী। এর নাম ‘হিকাম’।
এদিকে দশম শতাব্দীতে ইরানের কবিদের লেখা কাসিদা ছিল বৈচিত্র্যময়। কারণ ওসব কাসিদা লেখা হত ভিন্ন ভিন্ন উদ্দেশ্যে। যেমন নাসির খসরুর কাসিদায় দর্শনতত্ত্ব, ঈশ্বরতত্ত্ব এবং নৈতিকতা মিলেমিশে একাকার। অন্যদিকে আভিসেন্নার কাসিদায় কেবল দর্শনতত্ত্বেরই অস্তিত্ব মেলে। সম্ভবত প্রথম ধরনটা হচ্ছে বসন্তের কবিতা। ফার্সিতে যাকে বলে ‘বাহারিয়াহ’। আর পরের ধরনটা ‘খাজানিয়াহ’। এটা হচ্ছে শরতের কবিতা। শুরুটা প্রকৃতির বর্ণনা দিয়েই হত। সঙ্গে মৌসুম, প্রাকৃতিক দৃশ্য অথবা মজার দৃশ্যকল্প থাকত। ‘তাখাল্লাস’ অংশে কবি নিজের লেখক নাম ধরেই শুরু করতেন। আর শেষ অংশে থাকত কেন কবিতাটা লেখা হয়েছে, সে উদ্দেশ্যের কথা।
পারস্যে মহাকাব্য রচিত হয়েছে অনেক। কবি ফিরদৌসির ‘শাহনামা’ তো দুনিয়াখ্যাত মহাকাব্য। তবে কাসিদা মহাকাব্যের চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। এই ধাঁচে প্রথম কবিতা লিখেছিলেন কবি রুদাকি। রুদাকির জন্ম ৮৫৮ সালে। ওই সময় বেশিরভাগ কাসিদাই ছিল প্রশস্তিগাথা। কিছু কিছু ছিল শোকগাথা। নীতিকথার ঘরানাতেও বেশ কিছু কাসিদা রচিত হয়েছিল। এসব কাসিদায় কখনও দর্শন কখনও আত্মজীবনীমূলক বক্তব্যও ছিল। ফার্সি কাসিদার বৈশিষ্ট্য হল এর অন্ত্যমিলে। পুরোটা কাসিদায় অন্ত্যমিল একই থাকবে। তবে মাত্রা ভিন্ন হতে পারে। গড়পড়তায় কাসিদার দৈর্ঘ্য ছিল ৬০-১০০ লাইন। ২০০ লাইনের বেশি দীর্ঘ কাসিদাও লেখা হত।
কাসিদার প্রথম দিকের কবিরা ছিলেন ফিরদৌসির সমসাময়িক। এদের মধ্যে উনসুরি (আনুমানিক মৃত্যু ১০৪৯), আসজাদি এবং ফাররোখির নাম উল্লেখযোগ্য। বলা হয়ে থাকে, গজনীর সুলতান মাহমুদের দরবারে যে ৪০০ কবি ছিলেন, তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ছিলেন ফাররোখি। কাজেই তখনকার ফার্সি ভাষায় সেরা কবিরাই কাসিদা লিখতেন। ফার্সি ভাষার দীর্ঘ ইতিহাসে প্রশস্তিগাথামূলক কাসিদা লিখেছেন অনেকে। তবে তাদের মধ্যে কবি আনভারিকে সর্বাগ্রে স্থান দেওয়া হয়। ওদিকে দার্শনিক কাসিদার লেখক হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন নাসির খসরু। নাসির খসরু মারা যান ১০৮৮ সালের দিকে। আর নাসির খসরুর সমসাময়িক ছিলেন ওমর খৈয়াম। হ্যাঁ, রুবাই বা চতুষ্পদী কবিতার শ্রেষ্ঠ কবি ওমর খৈয়াম।
১৪ শতকে এসে গজলের সঙ্গে সংঘাত শুরু হয় কাসিদার। কাসিদার তুলনায় গজল জনপ্রিয় হতে থাকে। এর কারণও আছে। কাসিদার মতো গজল এত দীর্ঘতর নয়। তার উপর কাসিদার প্রথম অংশকে ঘষামাজা করেই গজল রচনা করতেন কবিরা। কাজটা খুব একটা কঠিনও নয়। কাসিদার প্রথম অংশে আরও কিছু দৃশ্যকল্প ঢুকিয়ে সঙ্গে আরও কিছু সুমিষ্ট শব্দ ব্যবহার করে গজল রচনা করা যায়। ফার্সিতে কাসিদার কদর যখন পড়তির দিকে, তখনই উর্দুতে এর চর্চা শুরু হয়। উর্দু কাসিদা মূলত স্তুতিমূলক। কখনও বা ব্যঙ্গাত্মক। তবে বেশিরভাগই কোনো বিশেষ উপলক্ষ ঘিরে রচিত। উর্দু কাসিদা গজলের চেয়ে আকার আয়তনে বড় হলেও, ছন্দের নিয়ম ঠিকঠাক মেনে চলে।
এ অঞ্চলের কাসিদার ধারক বাহক আদি ঢাকাবাসীরা, মানে পুরান ঢাকার লোকজন। মাহে রমজানই শুধু নয়, ঈদ-উল-ফিতর ও মহররম উপলক্ষেও কাসিদা রচনা করা হত এ অঞ্চলে। এই ঢাকাবাসীদের মধ্যে আবার দুটো দল। এক দলে ছিল ‘সুব্বাসি’ বা ‘সুখবাসী’। তারা নিজেদের মধ্যে উত্তর ভারতীয় সংস্কৃতির চর্চা করতেন। ঢাকার মোগল ঘরানার শেষ ধারক বাহক ছিলেন এই সুব্বাসিরা। নিজেদের মধ্যে উর্দু আর ফার্সি চর্চা করতেন। আরেকটি দল হচ্ছে ‘কুট্টি’। এরা কথা বলতেন বাংলার সঙ্গে উর্দু ও হিন্দি শব্দ মিশিয়ে। তাদের কাসিদার ভাষাও উর্দু ও ফার্সি। যদিও ঠিক কবে থেকে ঢাকায় কাসিদার শুরু, সে সম্পর্কে কোনো তথ্য জানা যায়নি। মোগল আমল থেকে শুরু বলেই ধরে নেওয়া হয়। সায়লা পারভীনের লেখা ‘হারিয়ে যাওয়া কাসিদা’ বই থেকে জানা যায়, ঢাকার উর্দু রোড, কসাইটুলী, বকশীবাজার, হোসনি দালান ও বংশালে ভীষণ জনপ্রিয় ছিল কাসিদা। রমজানের সময় দলবেঁধে হেঁটে হেঁটে পাড়া-মহল্লায় কাসিদা গেয়ে শোনাতেন তরুণরা। তাদের হাতে থাকত হ্যাজাক বাতি আর কুকুরের উৎপাত থেকে বাঁচার জন্য লাঠি।
ঢাকায় গাওয়া কাসিদা কয়েক ধরনের। চাঁদ ওঠার খুশিতে গাওয়া হয় ‘চানরাতি আমাদ’। রমজান মাসকে স্বাগত জানিয়ে গাওয়া হয় ‘খুশ আমদেদ’ বা ‘সদা’। আর রমজানকে বিদায় জানিয়ে গাওয়া হয় ‘আল বিদা’। রমজানের প্রথম ১৫ দিন গাওয়া হয় ‘সদা’। আর শেষ ১৫ বা ১৪ দিন গাওয়া হয় ‘আল বিদা’। ঈদের পরদিন হয় বিখ্যাত ঈদ মিছিল। ওই ঈদ মিছিলে গাওয়া হয় কাসিদা ‘ঈদ মোবারক’।
সেহরির সময় রোজাদারদের ঘুম ভাঙানোর জন্য যে সব কাসিদা গাওয়া হয়, এগুলোর নির্দিষ্ট নিয়মনীতি নেই। এগুলোর অনেকগুলোই অনেক জনপ্রিয় গানের সুর অনুকরণে গাওয়া হয়।
এ অঞ্চলের কাসিদার ধারক বাহক আদি ঢাকাবাসীরা, মানে পুরান ঢাকার লোকজন। মাহে রমজানই শুধু নয়, ঈদ-উল-ফিতর ও মহররম উপলক্ষেও কাসিদা রচনা করা হত এ অঞ্চলে। এই ঢাকাবাসীদের মধ্যে আবার দুটো দল। এক দলে ছিল ‘সুব্বাসি’ বা ‘সুখবাসী’। তারা নিজেদের মধ্যে উত্তর ভারতীয় সংস্কৃতির চর্চা করতেন। ঢাকার মোগল ঘরানার শেষ ধারক বাহক ছিলেন এই সুব্বাসিরা। নিজেদের মধ্যে উর্দু আর ফার্সি চর্চা করতেন। আরেকটি দল হচ্ছে ‘কুট্টি’। এরা কথা বলতেন বাংলার সঙ্গে উর্দু ও হিন্দি শব্দ মিশিয়ে। তাদের কাসিদার ভাষাও উর্দু ও ফার্সি। যদিও ঠিক কবে থেকে ঢাকায় কাসিদার শুরু, সে সম্পর্কে কোনো তথ্য জানা যায়নি। মোগল আমল থেকে শুরু বলেই ধরে নেওয়া হয়। সায়লা পারভীনের লেখা ‘হারিয়ে যাওয়া কাসিদা’ বই থেকে জানা যায়, ঢাকার উর্দু রোড, কসাইটুলী, বকশীবাজার, হোসনি দালান ও বংশালে ভীষণ জনপ্রিয় ছিল কাসিদা। রমজানের সময় দলবেঁধে হেঁটে হেঁটে পাড়া-মহল্লায় কাসিদা গেয়ে শোনাতেন তরুণরা। তাদের হাতে থাকত হ্যাজাক বাতি আর কুকুরের উৎপাত থেকে বাঁচার জন্য লাঠি।
ঢাকায় গাওয়া কাসিদা কয়েক ধরনের। চাঁদ ওঠার খুশিতে গাওয়া হয় ‘চানরাতি আমাদ’। রমজান মাসকে স্বাগত জানিয়ে গাওয়া হয় ‘খুশ আমদেদ’ বা ‘সদা’। আর রমজানকে বিদায় জানিয়ে গাওয়া হয় ‘আল বিদা’। রমজানের প্রথম ১৫ দিন গাওয়া হয় ‘সদা’। আর শেষ ১৫ বা ১৪ দিন গাওয়া হয় ‘আল বিদা’। ঈদের পরদিন হয় বিখ্যাত ঈদ মিছিল। ওই ঈদ মিছিলে গাওয়া হয় কাসিদা ‘ঈদ মোবারক’।
সেহরির সময় রোজাদারদের ঘুম ভাঙানোর জন্য যে সব কাসিদা গাওয়া হয়, এগুলোর নির্দিষ্ট নিয়মনীতি নেই। এগুলোর অনেকগুলোই অনেক জনপ্রিয় গানের সুর অনুকরণে গাওয়া হয়।
কাসিদা গানের অনেক গুণী বিচারক আছেন। তাদের অনেকেই এক সময় ছিলেন বিখ্যাত কাসিদা গায়ক। তাদের অনেকেই এখন আর বেঁচে নেই। বিখ্যাত কাসিদা বিচারকদের মধ্যে এজাজ, হাফেজ জহুর, মাওলানা আবদুস সালাম, ক্বারি সামসুল হক, মাওলানা আবু তাহের, আইয়ুব কাওয়াল, মাওলানা বশির আহমেদ, হাজী ফুরকান আহমেদ উল্লেখযোগ্য। আর কাসিদা গায়কদের মধ্যে বিখ্যাত কয়েকজন হচ্ছেন- জুম্মন মিয়া, মঞ্জুর আলম, আবদুস সামাদ, মানিক চাঁন, সৈয়দ ফাসীহ হোসেন।
১৭| ১৫ ই মে, ২০২০ রাত ২:৩৪
রাফা বলেছেন: ২১টি রোজা চলে যাচ্ছে । কিন্তু চারিদিকে শুধু বিষন্নতার অন্ধকার ছাড়া কিছুই অনুভব করছিনা। প্রতিদিন শুধুই মৃত্যুর সংবাদ আর শংকায় পার করি না জানি আরো কত আপনজন ও স্বদেশীর মৃত্যুর সংবাদ শুনতে শুনতে নিজেকেও চলে যেতে হয়।
২০২০ সালের মত রোজা আর ঈদ যেনো কখনই ফিরে না আসে এই ধরিত্রিতে। কাশীদা নিয়ে অনেক কিছুই জানলাম এই পোষ্টের সুবাদে।
সবাই যেনো করোনা মুক্ত থাকতে পারি এই কামনা রইলো।ধন্যবাদ,শে.শায়রী।
১৬ ই মে, ২০২০ রাত ৮:০৪
শের শায়রী বলেছেন: আল্লাহ যেন সবাইকে এই দুর্দশা থেকে মুক্ত রাখে এই কামনায় ভাই।
১৮| ১৫ ই মে, ২০২০ সকাল ৯:৫০
ভুয়া মফিজ বলেছেন: এই রমযান খালি অদ্ভু্ত না, এইবারের ঈদও হইবো অদ্ভুত। সামনে আরো অনেক কিছুই অদ্ভুত হইবো.......তৈরী থাহেন। পুরান ঢাকার মানুষ হিসাবে দ্যাশের রোযা, চকবাজারের ইফতার এমনেই অনেক মিস করি। বিতং কইরা আর কিছু কমু না।
তয় মাইনসের এডাপ্ট করনের ক্ষমতা অসীম। সব কিছুই দ্রুত মানায়া নিতে পারে। বেশী চিন্তা কইরেন না.......জাস্ট চিল!!!!!
১৬ ই মে, ২০২০ রাত ৮:০৫
শের শায়রী বলেছেন: চিল হইয়াই তো আছি, হাওয়ায় গা ভাসাইয়া কোন কিছুই গায় লাগাই না।
১৯| ১৬ ই মে, ২০২০ রাত ২:১৭
শুভ্রনীল শুভ্রা বলেছেন: রমজান মাস কীভাবে যে চলে গেল বুঝলাম ই না।
১৬ ই মে, ২০২০ রাত ৮:০৬
শের শায়রী বলেছেন: সেটাই বোন, কিভাবে রমযান মাস চলে গেল আল্লাহ জানে। আল্লাহ সবাইকে মাফ করুক।
২০| ১৭ ই মে, ২০২০ সকাল ১১:১০
অন্তরন্তর বলেছেন: শের শায়েরি ভাই কাসিদা যেটা আমরা ছোটবেলা শুনে বড় হয়েছি সেটা এখন নেই বললেই চলে। আর রমযান মাস এবার অন্য রকমভাবে শেষ হতে চলেছে। সমস্ত পৃথিবী কেমন যেন উলটপালট হয়ে গিয়েছে তবে প্রকৃতি কিছুদিন বেশ ভাল ছিল মানুষ নামের ভাইরাস থেকে। আল্লাহ পাক পৃথিবীর সকল মানুষকে হেফাজত করুন। শুভ কামনা।
১৮ ই মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩১
শের শায়রী বলেছেন: ভাই কাসিদা কালচারের অবস্থা মৃত। এই কালচার শেষ। এখন যা হয় তাকে কাসিদা বলে না। কেমন যেন অপরিচিত লাগছে সব। আল্লাহ পাক সবাইকে হেফাযত করুক।
পাঠে এবং মন্তব্যে অশেষ কৃতজ্ঞতা ভাই।
২১| ২২ শে মে, ২০২০ ভোর ৪:৪৭
Rajibrpsoft বলেছেন: রোজার প্রত্যেকবারের স্মৃতি এবার ভুলতেই বসেছিলাম বা বলতে পারেন ভোলার চেষ্টায় ছিলাম ..কিন্তু আপনার লেখা পড়ে আবারো সব ভেসে উঠল আর প্রচন্ড মন খারাপ হচ্ছে এর জন্য আপনি দায়ি । জানিনা আমাদের দেখা হবে কিনা আড্ডা দেয়ার জন্য তবে মন খারাপ করে দেয়ার জন্য হিসাবটা তোলা রইল দেখা হলে কখনও হিসাব পায় পায় করে বুঝে নেব
২২ শে মে, ২০২০ বিকাল ৫:৪৯
শের শায়রী বলেছেন: আল্লাহ চাহে তো নিশ্চয়ই দেখা হবে, এবং সেদিন সানন্দে হিসাব দেবার জন্য প্রস্তত থাকব প্রিয় ভাই । আল্লাহ আপনাকে এবং আপনার পরিবারকে ঈদে নিরাপদে রাখুক এই কামনায়।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই মে, ২০২০ রাত ২:০১
ওমেরা বলেছেন: সত্যি মন খারাপের মাঝেই রোজা গুলো শেষ হয়ে গেল। আজকে আমাদের বিশ রোজা শেষ হল।এবারের রোজা আমাদের অনেক ছোটই ছিল মাত্র ১৯ ঘন্টা। অবশ্য এবার আমরা সবাই মিলে বাসায় ইফতার করতে পারি মসজিদ বন্ধ থাকাতে আর সবাই মিলে বাসায় তারাবির নামাজ ও পড়া হয় ।তবু মনে কোন আনন্দ নেই ।
আমার জন্ম পুরান ঢাকাতে এখানে আসার আগ পর্যন্ত ওখানেই ছিলাম, রমজানে সেহেরীতে একজন টিনের কৌটাতে বাড়ি দিয়ে পচাঁ মালো , সেহেরী খাওয়ার সময় হলো , এরকম গান গেয়ে মানুষকে ঢাকতো আমার ভালো মত মনে নেই।
আল্লাহ আমাদের সহায় হোন, আমরা যেন তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আস্তে পারি।