নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হৃদয়ের কাছে বুদ্ধির বাস ভাল কথা। কিন্তু মাঝে মঝে হৃদয়ের ওপর থেকে বুদ্ধির শাসন তুলে দিতে হয়, হৃদয়কে স্বাধীন করে দিতে হয়, মুক্ত করে দিতে হয়। স্বাধীন মুক্ত হৃদয়ের ধর্মকে সব সময় বুদ্ধি দিয়ে বিচার করতে নেই।।
উইলবার স্মিথের রিভার গড, দ্যা কোয়েষ্ট, দ্যা সেভেন স্ক্রৌল, ডেজার্ট গড এই বইগুলো যারা পড়ছেন তারা জানেন প্রাচীন মিশরের পটভুমিতে কি এক অসাধারন মহাকাব্যিক উপন্যাস রচনা করছেন। শুধু অসাধারন বললেও কম বলা হয়, নিশ্চিত পড়তে পড়তে হারিয়ে যাবেন প্রাচীন মিশরে। বাংলায়ও এই বইগুলোর অনুবাদ করা হয়েছে, সেগুলোও দারুন। যারা পড়ছেন তারা জানেন এই বইগুলোর আবর্তিত হয়েছে এক প্রাচীন মিশরীয় খোজা ক্রীতদাস টাইটাকে কেন্দ্র করে।
টাইটা একজন খোজা ক্রীতদাস। যাকে ছোটকালে মিশরের বিকৃত রুচির উজির ইনটেপের মনোরঞ্জনের জন্য কিনে আনা হয়, এক পর্যায়ে কিশোর বয়সে টাইটা উজিরের এক দাসীর প্রেমে পরে, রাগে অন্ধ হয়ে উজির ইনটেপ টাইটাকে খোজা বানিয়ে দেয়। এক পর্যায়ে এই টাইটার ওপর ভার পড়ে উজিরের প্রিয় মেয়ে লসট্রিসকে মানুষ করার। যাই হোক এই খোজা টাইটা একাধারে ছিল, কবি, চিকিৎসক, সেনা প্রধান, ওরাকল এবং সর্বোপরি রানী লসট্রিসের প্রেমিক। তবে এই প্রেমও স্বাভাবিক প্রেম ছিল না কারন টাইটা ছিল খোজা। স্মিথের ওই সব মহাকাব্যিক উপন্যাস নিয়ে আলোচনার জন্য এই পোষ্ট না, আজকে লিখতে বসেছি খোজাদের নিয়ে। ইংরেজীতে যাদের বলে “ইউনাখ”।
চীনা খোজা
খোজা বা ইউনাখ [Eunuch] শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ [Eunoukhos] থেকে যার অর্থ হচ্ছে শয়নকক্ষের পাহারাদার। গ্রীক শব্দ Eune অর্থ বিছানা এবং Ekhein অর্থ হচ্ছে পাহারা দেয়া। ঠিক একইরকমভাবে ল্যাটিন ভাষায় স্প্যাডো, ক্যাস্ট্রাটাস শব্দগুলোর মানেও খোজা। বাংলায় আমরা ইউনাখদের বলি ‘খোজা’। খোজা শব্দটি উর্দু, পুরো শব্দটি হল খোজা সারাহ। তবে ইউনাখ কিংবা খোজাকৃত পরুষরা কেবল মধ্যপ্রাচ্যে ছিল তা নয়। প্রাচীন চীনের অভিজাত সমাজেও এদের বিশেষ ভূমিকায় দেখা গেছে। চীনে শিশ্নচ্ছেদ (castration) বা ক্যাস্ট্রেশন ছিল একাধারে শাস্তি এবং ইউনাখ করার অন্যতম পদ্ধতি। ষোড়শ সপ্তদশ শতকে চীনে সম্রাট কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত ইউনাখের সংখ্যা ছিল প্রায় ৭০,০০০!
খোজাকরন ইতিহাস খুজতে গেলে দেখা যায়, আর্কিওলজিষ্টরা খ্রিষ্টপূর্ব ৭৫০ বছর আগে দক্ষিন আনাতোলিয়ার ক্যাথালৌক নামক শহরে সিবেল নামক দেবীর সামনে খোজাদের প্রার্থনার প্রমান খুজে পায়। আর এক ইতিহাসে খোজাদের আবির্ভাব হয়েছিলো মেসোপটেমিয়ায়। খ্রিস্টপূর্ব ৮১১ থেকে ৮০৮ অব্দের আসিরিয়ার রাণীমাতা সামুরামাত নিজ হাতে তার এক ক্রীতদাসকে খোজা করেছিলেন। একটি উপকথায় তাকে সেমিরা মিস বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আসিরিয়ার রাণী মাতা কেন তার ক্রীতদাসকে খোজা করেছিলেন ইতিহাসে তার বিবরণ না থাকলেও অনেক গবেষক মনে করেন রাণীর বিকৃত যৌন লালসা নিবৃত্ত করার জন্য হতভাগ্য ক্রীতদাসকে বিকলাঙ্গ করা হয়েছিলো
হেরোডেটাস লিখছেন পারসিকরা আইওনিয়ানদের ধরে তাদের পুরুষত্ব কেড়ে নিতে লাগল, তারপর সুন্দরী মেয়েদের মত সাজিয়ে এদের নিয়ে চলল রাজার দরবারে। ঐতিহাসিক হেরোডোটাস-এর বর্ণনায় এই ধরনের একটি কাহিনী থেকে এটা পরিষ্কার হয়ে যায়। হেরোডোটাস বলেছেন, সম্রাট জারেক্সেস-এর প্রিয় খোজা ছিলো হারমোটিমাস। বাল্যকালে তাকে অপহরণ করে দাস ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হয়। এরপর দাস ব্যবসায়ীরা ভাল দাম পেয়ে তাকে এক ধনাট্য ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেয়। ঐ ব্যাবসায়ীর নাম ছিলো পানিওনিয়াস। সে ছিলো খোজাকরণে দক্ষ উস্তাদ। পানিওনিয়াস বালক হারমোটিমাসকে খোজা করে বাজারে নিয়ে আসে- এর পর আরেক ব্যবসায়ীর হাতে তুলে দেয়। এইভাবে হাত বদল হতে হতে হারমোটিমাস একদিন জারেক্সেস-এর দরবারে এসে পৌঁছে যায় এর পরের ইতিহাস- হারমোটিমাসের ভাগ্য বদলের ইতিহাস। ক্রমে ক্রমে সে সম্রাটের বিশ্বস্ত হয়ে ওঠে এবং সম্রাট তাকে নিজের অনুচর হিসেবে গ্রহণ করে নেন।
হারমোটিমাস হয়ে উঠে প্রভূত ক্ষমতার মালিক। সে স্বাধীনভাবে যে কোনো জায়গায় যেতে পারে-যখন যা ইচ্ছা করতে পারে। একদিন ঘটনাচক্রে সেই ব্যবসায়ীর সাথে তার দেখা হয়ে গেলো- যে নিজ হাতে তাকে খোজা করেছিলো। হারমোটিমাস ব্যবসায়ীকে দেখেই চিনতে পারলো- তার মনে প্রতিশোধের আগুন জ্বলে উঠলো- ব্যবসায়ীকে তার মনোভাব বুঝতে না দিয়ে বিনীতভাবে বললো- আপনি যদি ইচ্ছা করেন আমাদের সার্ভিসে চলে আসুন, এখানে আপনার যে মাল দৌলত আছে এর চেয়ে দ্বিগুণ হবে আপনার ধনভান্ডার। মান ইজ্জত শান শওকত বেড়ে যাবে, সুখে থাকবেন। পানিওনিয়াস রাজি হয়ে গেলেন। সে ঘূনাক্ষরে জানতে পারেনি যে তাকে সোনালী স্বপ্ন দেখাচ্ছে- সেই হবে তার যমদূত। ব্যবসায়ী লোভে পড়ে হারমোটিমাসের ফাঁদে পা দিলো। এবার প্রতিশোধের পালা, সার্ভিসে অন্যতম প্রভাবশালী খোজা হারমোটিমাস। সবাই তার কথা শোনে তাকে মান্য করে। পানিওনিয়াসের মুখোমুখি হয়ে একদিন হারমোটিমাস জানতে চাইলো “তোমার কি মনে পড়ে সেই বালকটিকে, যাকে নিজ হাতে খোজা করে বাজারে বেঁচে দিয়েছিলে? নিজ হাতে একজন বালকের সর্বস্ব কেড়ে নিয়েছিলে?”
পানিওনিয়াস বিস্ময় দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে রইলো।
-হ্যা, আমিই সেই বালক, ঐ দিন আমার কিছুই করার ছিলো না, কিন্তু আজ আমি যা আদেশ করবো তাই তোমাকে করতে হবে।
পানিওনিয়াস বললো- “আমাকে কি করতে হবে?”
“আমার আদেশ নিজ হাতে তোমার পুত্রদের খোজা করতে হবে।”
পানিওনিয়াসের চার পুত্র ছিলো। বিনাবাক্য ব্যয়ে সে নিজ পুত্রদের সে খোজা করলো।
হারমোটিমাস ফিরে এলো রাজ দরবারে- আবার কিছুদিন পর সেই ব্যবসায়ীর বাসভবনে গিয়ে হাজির হয়ে ঐ চার পুত্রদের জানালো- “এবার তোমাদের পিতাকে খোজা করতে হবে।”
পুত্ররা হতবাক- কিন্তু আদেশ অমান্য করার উপায় নেই। একটু এদিক ওদিক করলেই গর্দান যাবে। চারপুত্র মিলে পিতাকে ধরে খোজা করে দিলো। খোজার কারিগর এবার নিজেই খোজা হলো।
এভাবেই একজন বালক বয়সে পুরুষত্ব হারানো খোজা, পরবর্তী সময় প্রতিশোধ নিয়েছিলো।
খ্রিষ্টান ধর্মীয় খোজা
খোজা করনের বীভৎস রূপটি সর্বোচ্চতা লাভ করে তুর্কী সুলতানদের আমলে তবে ইতিহাস ঘটালে দেখা যায় এই নির্মম প্রথার প্রচলন অনেক প্রাচীন কাল থেকেই প্রচলিত ছিল নানাবিধ ধর্মীয় কারনে। ম্যাথুর গসপেলে দেখা যায় Gospel of Matthew 19:12, which says: "For there are some eunuchs, which were so born from their mother's womb: And there are some eunuchs, which were made eunuchs of men: And there be eunuchs, which have made themselves eunuchs for the kingdom of heaven's sake. He that is able to receive it, let him receive it" (King James Version). মানে (‘একদল পুরুষত্বহীন মানুষ আছে যারা মাতৃগর্ভ থেকেই অসম্পূর্ণ অবস্থাতে ভূমিষ্ট হয়েছে। আর একদল আছে যাদের অন্য মানুষ খোঁজা করেছে। তৃতীয় দলের খোজা যারা তারা স্বর্গের কামনায় স্বেচ্ছায় পুরুষত্বহীন হয়েছে।)
খ্রিস্টানদের মধ্যে স্বর্গ কামনায় শুধু খোজাত্ব বরণ করতো তা কিন্তু নয়- গির্জায় প্রার্থনা সংগীত গাওয়ার জন্য খোজাদের কদর করা হতো। সিসটান চ্যাপেলে প্রার্থনা সংগীত গাওয়ার জন্য স্বয়ং পোপ তাদের আহ্বান করতেন। খোজাদের আহ্বান করার পিছনে যুক্তি ছিলো, খোজাদের কণ্ঠস্বর সমান তেজী, সমান গভীর এবং সমান নিখাদ। খ্রিস্ট সম্প্রদায় এই সংগীত আগ্রহভরে শ্রবণ করতো, তাদের বিশ্বাস ছিলো ঈশ্বরকে মুগ্ধ করার জন্য খোজা কণ্ঠের সংগীত সব থেকে ভালো এদের কে “কাসরাতি” বলা হয়। এই ধারণা থেকে ইতালীর অনেক বিখ্যাত গায়ক স্বেচ্ছায় খোজা হয়ে গিয়েছিলেন। এদের মধ্যে নিকোলিনি গ্রিমলডি, সেনেসিনো, ফারিনেসিসহ অনেক গায়ক ছিলেন যারা শুধু চ্যাপেলে নয়- নাবলিক গ্লেমেও সংগীত পরিবেশন করতেন।
তুর্কী খোজা
খ্রিষ্টীয় পঞ্চদশ শতকের মাঝামাঝি বাইজান্টাইন শাষকদের দেখা দেখি তুর্কিরা খুজে পেল খোজা নামক এক নতুন প্রানী (!)। ইতিহাসে তাদের তখন প্রচন্ড গৌরবের কাল, চারিদিক দিয়ে তাদের বিজয় নিশান উড়ছে, বুলগেরিয়া, ক্রোয়েশিয়া, গ্রিস, এশিয়া মাইনর, সিরিয়া, মিশর থেকে তখন আসছে ঝাকে ঝাকে বন্দী। মহান সুলতান প্রথম মাহমুদ, এবং দ্বিতীয় মুরাদ এদের মাঝ থেকে কিছু খোজা নিযুক্ত করলেন প্রাসাদের বিভিন্ন অংশের প্রহরী হিসাবে। এরা শেতাঙ্গ খোজা। তুরস্কে তাদের নাম ছিল “কাপু আগাসি”। এদের প্রধানকে বলা হত “কাপি আগা”। ইনি ছিলেন প্রাসাদের রক্ষী বাহিনীর শীর্ষে। প্রচন্ড ক্ষমতার অধিকারী ছিল এই কাপি আগা কোন কোন ক্ষেত্রে সুলতানের উজিরের থেকেও বেশী। দ্বিতীয় প্রধান শেতাঙ্গ খোজাকে বলা হত “হাজিনেদার বাসি” যার অধীনে থাকত রাজকোষ, তৃতীয় প্রধানকে বলা হত “কিলারজী বাসি” যার কাজ ছিল সম্রাটের রান্নাঘরের খাদ্য নিয়ন্ত্রন করা থেকে খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এভাবে এক সময় অটোম্যান সাম্রাজ্যের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ন পদে নিয়োগ পায় খোজারা।
শ্বেতাঙ্গ খোজাদের এই একচেটিয়া অধিকারে এক সময় ভাটা পড়ে যখন দেখা যায় এদের থেকে কৃষ্ণাঙ্গ খোজারা অধিক সবল, এবং বিশ্বস্ত। ক্রমে তুরস্কের কৃষ্ণাঙ্গ দাসের বাজার চাঙ্গা রাখতে নীল নদের তীর ভুমি শুন্য করে পুরুষদের ধরে আনা শুরু হল। এই সব দাসের মাঝে সব থেকে মুল্যবান দাস ছিল খোজারা। হারেম যদি কান্নার ইতিবৃত্তি হয় তবে খোজারা সেখানে কান্নার তীব্র আর্তনাদ। হারেমের সুন্দরীদের কান্নার ইতিবৃত্তি নিয়ে অসংখ্য গল্প, গাঁথা, বই, গবেষনা হয়েছে সে অনুযায়ী হারেমের আর্তনাদ খোজাদের সুতীব্র আর্তনাদ নিয়ে প্রায় কিছুই লেখা হয় নি, কারন খোজারা ছিল পুরুষ। নারীদের কান্না দেখা যায় কিন্তু জোর করে পৌরষত্ব নষ্ট করে দেয়া পুরুষ গুলোর বোবা আর্তনাদের খবর কোন কালেই খুব একটা খবর হয় নি।
মোগল হেরেমে খোজা
১২৯০ সালের দিকে বিশ্ব বিখ্যাত পর্যটক মার্কোপোলো তৎকালীন বাংলা প্রদেশ সফর করেন। তার ভ্রমন কাহিনী থেকে জানা যায় বাংলা মোগল অধিকৃত হওয়ার আগেই এখানে খোজা ব্যবসায়ের রমরমা বাজার গড়ে ওঠে। প্রথম দিকে খোজাদের পুরোটাই আসতো যুদ্ধবন্দিদের শিবির থেকে। মার্কোপোলো উল্লেখ করেছেন “to purchage which the merchants from varius parts of India resort thither. They likewise make purchases of eunuchs, of whom there are numbers in the country, as slaves; for all the prisoners taken in war are presently emasculated; and as every prince and person of rank is desirous of having them for the custody of their women,the merchants obtain a large profit by carrying them to their kingdom, and there disposing of them. যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর যুদ্ধ শিবির থেকে মানুষের আমদানিও বন্ধ হয়ে যায়। আগে শুধু সুলতানরাই খোজা রাখলেও এ আমলে উজিরদের সাথে সাথে তৈরি হয় নতুন নতুন আমির ও ওমরাহ্। তারাও অনেকটা আভিজাত্যের প্রমাণ দিতে খোজা কেনা শুরু করে। এর ফলে বাংলায় খোজা বাণিজ্যের জনপ্রিয় বাজার গড়ে ওঠে। কলকাতার খোজা বাজারে আফ্রিকান হাবশি এবং দেশীয় খোজা বেচাকেনা হতো।
দেশি এই খোজাদের প্রধান সরবরাহক ছিল সিলেট এবং ঘোড়াঘাট। প্রাচীন তথ্য উপাত্তে সিলেটের নামটিই বিশেষভাবে এসেছে। স্যার যদুনাথ সরকার সম্পাদিত The India of Aurangzib (topography, statistics and roads গ্রন্থে বলা হয়েছে “In this province (Sylhet) they make many Eunuchs” আবুল ফজলের বিখ্যাত ‘আইন-ই-আকবরীতে বলা হয়েছে ‘In the Sarkar of Sylhet there are nine ranges of hills. It furnishes many Eunuchs. স্যার এডওয়ার্ড এলভার্ট গেইট প্রনীত ‘A History of Assam’ গ্রন্থে বলা হয়েছে “ In the early times the Sylhet district supply India with eunuchs but Jahangir issued an edict forbidding it’s inhabitants to castrate boys. খোজা সরবরাহের একচেটিয়া বাণিজ্য করত সিলেট ও ঘোড়াঘাটের সরকারেরা। প্রাচীন কাল থেকেই সিলেট একটি বাণিজ্য বন্দর হিসেবে সুপরিচিত ছিল।
তুজুক ই জাহাঙ্গীরী থেকে জানা যায় মুসলমান আমলের বিস্তৃত সময়ে খোজাকরণ বা খোজা ব্যবসা বৈধ বলেই গণ্য ছিল। জাহাঙ্গীর প্রথমবারের মতো এর অমানবিক দিক বিবেচনা করে এ ঘৃণ্য প্রথা ফরমান জারি করে নিষিদ্ধ করে দেন। তারপরো বিভিন্ন সময় আবার বিভিন্ন শাসকদের সুবিধার্থে এই প্রথা নির্মম চালু হয়।
১৮৩৬ সালে সালে মুর্শিদাবাদে প্রাসাদে অনুসন্ধানে দেখা যায় সেখানে খোজা আছে ৬৩ জন, নাসিরুদ্দীনের আমলে (১৮৩৬-৩৭) লক্ষ্মৌর বেগম মহলে খোজা ছিল ১৫১ জন। হয়ত সংখ্যাটা বড় কিছু না, কিন্তু এর ভয়াবহতা বোঝা যাবে ১৯৫৬ সালে কার্ডিন্যাল ল্যাভিগেরাই মরক্কো থেকে ইউ এন ও সদর দপ্তরে জানিয়েছিলেন সুলতানের হারেমের জন্য সরকারী হাসপাতালে সম্প্রতি ৩০ টি শিশুকে অস্ত্রপচার করা হয়েছে তাদের কেউ বাঁচে নি। ইরাকের এক চিকিৎসক জানিয়েছেন সৌদী আরবের হাসপাতালে কুড়িটি শিশুকে খোজা করার জন্য অপারেশান করা হয়েছে বেঁচে ছিল মাত্র দুই জন। সেকালে পশ্চিম এশিয়া বা আফ্রিকায় আজকের মত হাসপাতাল ছিল না, এই হিসাব দিয়ে একটা আনুপাতিক হিসাব বের করতে পারেন একজন খোজা করতে কি পরিমান শিশুকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হত। তাও এই হিসাব বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝিতে। মধ্যযুগের হিসাবটা নিজে নিজে এক বার কল্পনা করুন।
তিউনিশিয়ায় হারেমের পাহারারত অস্ত্রধারী খোজা। ছবিটি ১৯৩১ সালে তোলা।
আবিসিনিয়ার কুখ্যাত রাজা জন এর আমলে হিকস পাশার ইঙ্গ মিশরীয় সৈন্যবাহিনী থেকে একশ সুদানী সৈন্যকে ধরে খোজা বানিয়ে পাঠানো হয়েছিল খার্তুমে। উপহারের সাথে ছোট্ট একটা বার্তা মহামান্য সম্রাট যদি কিছু মনে না করে তবে এই সামান্য ডালিটি গ্রহন করতে পারেন। উপহারের ডালিটি যখন তার নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌছে তখন একশ খোজার মাঝে একজনও জীবিত ছিল না। অতএব প্রতিটা খোজা শুধু জীবন্ত হাহাকার না, প্রতিটা খোজার পেছনে অসংখ্য বিলাপ।
চীনা পদ্ধতিতে শিশুদের খোজা করন
খোজা করনের সাথে চৈনিক সাংস্কৃতির সম্পর্কও ছিল ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। প্রাচীন চৈনিক সাম্রাজ্যে খোজাকরণের কাজটি করা হতো মূল প্রাসাদের বাইরে বিচ্ছিন্ন কোনো স্থানে। রাজ প্রাসাদের চারদিকে দেয়ালঘেরা সীমানা থাকে। এই সীমানার কোনো একটি স্থানে ব্যবহার করা হয় না এমন একটি পাহারা কক্ষ থাকে, যা দরকার পড়ে না বলে ব্যবহার করা হয় না। এই ধরনের পরিত্যক্ত ঘরকে ব্যবহার করা হতো খোজাকরণের অপারেশন কক্ষ হিসেবে।
প্রথমে ব্যক্তিটিকে ঐ কক্ষে নিয়ে একটি কাঠের পাটাতনে শুইয়ে দেয়া হতো। তারপর হালকা গরম পানি দিয়ে যৌনাঙ্গ ও যৌনাঙ্গের আশেপাশের স্থান ধুয়ে নেয়া হতো। এরপর অবশ করতে পারে এমন উপাদানের প্রলেপ দিয়ে যৌনাঙ্গকে অবশ করে ফেলা হতো। তখনকার সময়ে অবশকারী হিসেবে প্রচণ্ড ঝালযুক্ত মরিচ বাটা ব্যবহার করা হতো। যিনি খোজা করবেন তিনি হচ্ছেন অপারেশনের প্রধান। প্রধানের পাশাপাশি কয়েকজন সহকারী থাকতো। অবশ করার পর সহযোগীরা মিলে দেহটিকে কাঠের পাটাতনের সাথে শক্ত করে বেঁধে ফেলতো। তারপর দুইজন সহকারী দুই পা ফাঁকা করে ধরে রাখতো যেন যৌনাঙ্গ কাটার সময় পায়ের দ্বারা কোনো অসুবিধা না হয়। দুইজন তো দুই পায়ে শক্ত করে ধরে রাখতোই, তার উপর আরো দুইজন কিংবা ক্ষেত্রবিশেষে একজন হাত দুটি বেঁধে চেপে ধরে রাখতো।
কর্তক ব্যক্তি সুবিধা করে দুই পায়ের মাঝখানে দাঁড়িয়ে শুক্রথলী ও পুরুষাঙ্গ হাতের মুষ্টির ভেতর ধরতো। যৌনাঙ্গ মুষ্টির ভেতরে রেখে চোখের পলকেই ধারালো ছুরি দিয়ে একসাথে কেটে ফেলা হতো মুষ্টির ভেতরে থাকা অণ্ডকোষ ও পুরুষাঙ্গ। এই অবস্থায় প্রচুর রক্তপাত হতো। এই ধাপ শেষ করার পর থাকে বড় চ্যালেঞ্জটি। রোগীটিকে এই ধাক্কা কাটিয়ে তুলে বাঁচানো যাবে কিনা। কর্তন প্রক্রিয়া শেষ করার পর পরই একটি মূত্রনালিতে একটি নল প্রবেশ করিয়ে দেয়া হতো। প্রস্রাব বের হবার রাস্তা যেন বন্ধ হয়ে না যায় সেজন্য এই নল প্রবেশ করানো হতো। নল ছিল অনেকটা আজকের যুগের স্যালাইনের পাইপের মতো, এর ভেতর দিয়ে প্রস্রাব বের হতো।
এরপর প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে রোগীকে ঐ কক্ষে তিন দিন রেখে দেয়া হতো। ঐ সময়ে রোগীকে কোনো প্রকার খাবার দেয়া হতো না। এই ধাপ পার হতে পারলে চতুর্থ দিনে রোগীকে প্রস্রাব করতে বলা হতো। যদি প্রস্রাব করতে পারতো তাহলে অপারেশন সফল হয়েছে বলে ধরে নেয়া হতো, আর যদি প্রস্রাব করতে না পারতো তাহলে ধরা হতো এই অপারেশন সফল হয়নি। এক্ষেত্রে রোগী ব্যথা ও ইনফেকশনে মারা যেত।
মুলতঃ কেন এই অমানবিক খোজা প্রথা চালু হয়েছিল? খোজা শব্দটির সাথে হারেম শব্দটি ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। এই উপমহাদেশে হারেম নামে পরিচিত হলেও ইউরোপীয়দের কাছে হারেম হচ্ছে ‘সেরালিয়ো’। এখানে ইতালিয়ান ও ফারসি ভাষার অদ্ভুত এক সম্মিলন ঘটেছে। ইতালিয়ান ভাষায় ‘সেররালিয়োন’ অর্থ হলো ‘বন্য প্রাণীর খাঁচা’। ‘সেররালিয়ো’ এসেছে ফারসি ‘সেরা’ থেকে। তবে ফারসি ‘সরা’ ও ‘সরাই’ অর্থ হলো ভবন বা প্রাসাদ বিশেষ। মূলত এই শব্দের সঙ্গে মিলিয়েই এমন অদ্ভুত নামকরণ। অবশ্য ১৬৩৪ সালে হারেম শব্দটি ইংরেজি ভাষার অন্তর্ভুক্ত হয়। সব শব্দের অর্থ মোটামুটি একই ধরনের, যার অর্থ নিষিদ্ধ। অন্যভাবে বললে এর অর্থ হচ্ছে নিষিদ্ধ বা গোপনীয় স্থান। রাজপ্রাসাদের যে আলাদা অংশে শাসকের মা, বোন, স্ত্রী, কন্যা, নারী কর্মচারী, উপপত্নী প্রমুখ বাস করতেন তা হারেম, হারিম বা হেরেম নামে অভিহিত হতো। বহিরাগতদের হারেমে প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। যেহেতু এসব হারেমে প্রবেশাধিকার খুবই সংরক্ষিত ছিল সেহেতু এসব মহলে নারীদের রক্ষী ও বিভিন্ন কাজের জন্য বিশেষ এক অমানবিক প্রথা চালু করা হয়। যার নাম হচ্ছে খোজা প্রথা।
খোজারা কেবল শাসকের নিকটই অনুগত ছিল। সরাসরি শাসক ব্যতিত রাজ্যের অন্য কোনো উঁচু পদের কর্মচারী বা প্রশাসক হলেও খোজাদের নিকট খুব বেশি পাত্তা পেতো না। খোজারা রাজা বা প্রভু অন্তঃপ্রাণ থাকতো। এমনকি কোনো কোনো খোজা কোনো কোনো রাজার জন্য জীবন দিতেও প্রস্তুত ছিল। তারা তাদের বিশ্বস্ততার গুণটিকে খুবই সম্মান এবং মর্যাদার মনে করতো। যেহেতু এদের জৈবিক চাহিদা বলতে কিছুই ছিল না, সেহেতু এদর ব্যক্তিগত বংশ প্রতিষ্ঠা বা সংসার স্থাপনের ব্যাপারে কোনো ইচ্ছা ছিল না। তাদের শারীরিক অক্ষমতার কারণেই সমাজে তাদের অবস্থান ছিল খুব দুর্বল। এই দুর্বলতার কারণে তাদেরকে প্রচুর নির্যাতন সহ্য করতে হতো। কখনো কখনো খুব তুচ্ছ কারণে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হতো এমনকি হত্যাও করা হতো। তারা এতই সহনশীল ছিল যে এরপরও খোজাদের মধ্যে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হতো না।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, অস্বাভাবিক মানুষ গড়তে গিয়ে নিজেদের অজান্তে অনেক সময় সত্যিই অস্বাভাবিক মানুষ গড়ে ফেলছিলেন সেকালের সুলতান, রাজা বাদশাহরা। রোমান লেখক মারসিয়াল ব্যাঙ্গচ্ছলে বন্ধুকে বলেছিলেন – পানিকাস তুমি জানতে চাও তোমার সিলিয়া কেন খোজাদের নামে এত পাগল হয়ে গিয়েছে? কারন আর কিছু না সিলিয়া বিবাহিত জীবনের ফুল চায় - ফল নয়। কৃত্রিম ভাবে পুরুষদের পুরুষত্বহীন করে নারীদের সুরক্ষা দেবার জন্য খোজাদের প্রহরী হিসাবে নিয়োগ দিয়ে রাজারা যে নিশ্চিত থাকত তাতে কি এই খোজা নামের পুরুষদের দেহে কামের আগুন জ্বলত না? রোমান লেখক জুভেনাল এর লেখায় তার বর্ননা পাবেন। জাহাঙ্গীরের আমলে দিদার খাঁ নামে এক খোজা এবং বাদীর করুন কাহিনী লিপিবদ্ধ আছে পরিব্রাজক বার্নিয়ের বর্ননায়। হারেম প্রভু সুলতান বা রাজারা তাদের নারী মহলে সুন্দরীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এই সব পুরষত্বহীন পুরুষদের নিয়োগ দিতেন, এদের হাহাকার নিয়ে কোন কালজয়ী লেখা কেউই লিখে নাই, কে জানে পুরুষ হয়ে এই সব নপুংশকদের নিয়ে লেখায় হয়ত শিভালরি নেই, কিন্তু এদের হাহাকার ইতিহাসের পাতা দিয়ে কিভাবে মোছা যাবে?
ছবিঃ অন্তর্জাল।
সূত্রঃ লেখায় অন্তর্জালের বিভিন্ন প্রবন্ধ ব্যাবহার করা হয়েছে তার কিছু নীল রং এর শব্দে লিংক যোগ করা হল। এর বাইরে শ্রীপান্থের হারেম, আইন ই আকবরী- আবুল ফজল ভলিউম-১, ট্রান্সলেটেড বাই এইচ ব্লচম্যান, দি অটোমান সেঞ্চুরিজ- লর্ড কিনারস, হারেমের কাহিনী- জীবন ও যৌনতা- সাযযাদ কাদির এর বইগুলোর সহায়তা নেয়া হয়েছে।
২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:৩০
শের শায়রী বলেছেন: না ব্রাদার হারেমের মহিলারা রাজার সন্তানের মা হলেও খুব কমই রাজ পুত্র হিসাবে স্বীকৃত পেত। সব রাজাদের বেলায়ই একই নিয়ম ছিল। এক মাত্র বিবাহিত রানীরা এবং খুব রেয়ার ক্ষেত্র বিশেষ উপপত্নীদের সন্তান রাজ পুত্র হিসাবে স্বীকৃতি পেত। আপনি যদি সুনীলের প্রথম আলো পড়েন দেখবেন সেখানে এমন এক চরিত্র আছে ভরত নামে।
রাজাদের যুগ শেষ। রাজাদের নির্মমতাও শেষ। হ্যা ইসলামের পতনের জন্য অবশ্যই এই সব রাজাদের এবং বর্তমান ইসলামী দেশ যেগুলো আছে তাদের রাজাদের মদ এবং হারেম কালচার দায়ী। তবে সেদিন আর বেশি দূরে নাই যেদিন বর্তমান এই সব ইসলামী দেশের রাজারা ভিক্ষার থলি নিয়ে রাস্তায় নামবে কারন তেলের দাম যেভাবে পড়ছে তাতে তাদের জৌলুস বেশি দিন রাখতে পারবে না।
পাঠে এবং মন্তব্যে অশেষ কৃতজ্ঞতা ব্রাদার।
২| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:৪৮
স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: ভয়াবহ ও নিষ্ঠুর একটি পদ্বতি | আমরা খুবই ভাগ্যবান যে সমাজ এখন এই পৈশাচিক যুগ পেরিয়ে এসেছে | এজন্য অবশ্যই আমরা ঋণী হয়ে থাকবো সেই সকল সামাজিক বিপ্লবীদের প্রতি যারা খোঁজা, দাসত্ব, সামন্ততান্ত্রিক ও রাজতন্ত্র উচ্ছেদে নেতৃত্ব দিয়েছেন | তাদের আত্বত্যাগের কারণেই অন্তত বিশ্বের অনেক দেশ মানবতাকে প্রাধিকার দিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্র পরিচালনা করছে |
২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫১
শের শায়রী বলেছেন: নির্ধিদ্ধায় এটা স্বীকার্য্য যে এই সব বর্বরতা পেরিয়ে আমরা আপাত দৃষ্টিতে একটা সুস্থ্য সমাজ ব্যাবস্থায় জন্ম নিয়েছি। তবে এই সুস্থ্য সমাজ ব্যাবস্থাও কিন্তু একটি আপেক্ষিক ব্যাপার স্বামীজি। কারন কে জানে হয়ত আগামী ১০০ বছর পর আজকে যে সমাজে আমরা বসবাস করছি তার কিছু ব্যাপার নির্মম বা অমানবিক ব্যাপার হিসাবে পরিগনিত হবে না?
৩| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:০৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: খোঁজা করণ পদ্ধতি যেখান থেকে বর্ণনা শুরু হয়েছে, ওখান থেকে আর নীচে পড়ি নাই।
এই নির্মম, বীভৎস ইতিহাস পড়ার পর মানসিক অবস্থা ঠিক রাখা যাবে না।
আপনি এখানে মোগল সম্রাটদের খোজার ব্যবহার সম্বন্ধে লিখেছেন কিনা জানি না। ঐ আমলে তো বৈদ্যুতিক পাখা ছিল না। খোজারা শুধু খোজাই ছিল না, তাদের অন্ধ এবং বধিরও করা হতো। যৌন মিলনের সময় এদের দিয়ে পাখার সাহায্যে বাতাস করার কাজে ইমপ্লয় করা হতো বলে শুনেছি।
ব্যাপক গবেষণা খোজাদের নিয়ে।
২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:০৩
শের শায়রী বলেছেন: সোনাবীজ ভাই আমিও লিখতে গিয়ে ইচ্ছা কৃতভাবে বেশ কিছু নির্মম বর্ননা বাদ দিয়ে বা এড়িয়ে গেছি, কারন এত নির্মমতা আমারো ভালো লাগে না। তারপরো তথ্য উপাত্তের কারনে কিছু লিখতে হয়েছে।
তবে সোনাবীজ ভাই, আমি কিন্তু মোগল বা অন্য কোন ইতিহাসে খোজাদের অন্ধ বা বধির করার কোন ইতিহাস খুজে পাই নি, খোজাদের নির্জীব করানোতেই তাদের যৌন আকাঙ্খা প্রায় মুক্ত করানো হত, এবং যেহেতু প্রায় খোজাই শিশু বয়সে খোজা করানো হত তাই তাদের মাঝে সে ভাবে যৌন আকাঙ্খা কাজও করত না, তাদের দিয়ে ভারবাহীর পশুর মত কাজ করানো হত। সেক্ষেত্রে অন্ধ বা বধির করার কোন দরকার হত না, উপরন্ত তাদের অন্ধ বধির করলে তারা নিজেরাই অন্যের বোঝা হয়ে যেত। হাতে টানা পাখা দিয়ে বাতাস করানো তো সামান্য ব্যাপার অনেক খোজার কাজই ছিল রাজার রানী বা উপপত্নীদের গোসলে সহায়তা করানো। শ্রীপান্থের হেরেম বইটা এব্যাপারে অনেক ক্লিয়ার ধারনা দেবে যদি পড়ে দেখেন।
আমার কাছে অমানবিক লাগছে যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এদের কে নির্জীব করে পুরুষত্বহীন করে জীবন মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিত সেটা এবং কিছু কিছু (যদিও খুব সামান্য) খোজার যৌন মানবিক না পাওয়ার অতৃপ্ততা।
পাঠে এবং মন্তব্যে অশেষ কৃতজ্ঞতা ভাই।
৪| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:০৫
নতুন বলেছেন: মানুষ বড়ই অদ্ভুত জাতী। এরা পারেনা বা করেনাই এমন জিনিস দুনিয়াতে নাই।
ক্ষমতা মানুষকে অমানুষ করে তোলে।
২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:০৬
শের শায়রী বলেছেন: নতুন ভাই, এই ক্ষমতা জিনিসটাই আমার কাছে খুব অদ্ভুত লাগে। এবং এই জিনিসটাই মানুষকে অমানুষ করে তোলে যেমনটা আপনি বলছেন, সে সব যুগে হয়ত ধরনটা ভিন্ন।
৫| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:৫০
রাজীব নুর বলেছেন: পড়তে পড়তে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলাম।
২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:০৯
শের শায়রী বলেছেন: হ্যা ঠিকই বলছেন, আমিও এই লেখাটা লিখতে গিয়ে কিছু পড়াশুনা করতে হয়েছে এই ব্যাপারে, আমিও সে সময়ে ওই সব মানুষগুলোর উপলদ্ধি অনুভব করে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলাম।
৬| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:৫২
নেওয়াজ আলি বলেছেন: বর্বর ছিলো মানুষ তখন। ভাই একটু ছোট করে দিবেন । মোবাইলে রাতে শুয়ে শুয়ে পড়তে সুবিধা হয়। হা হা
২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:১৫
শের শায়রী বলেছেন: ভাই আজকে যা বর্বরতা বলছেন, তখন সেটা ছিল প্রথা, আবার আজকে যা প্রথা হয়ত সামনে কোন দিন হয়ত সেটা বর্বরতা হিসাবে পরিগনিত হবে
আইচ্চা ভাই আর একটু ছোট কইরা দেব নে যাতে মোবাইলে রাতে শুয়ে শুয়ে পড়তে পারেন
৭| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ ভোর ৪:০৩
এস.কে.ফয়সাল আলম বলেছেন: কি বর্বর প্রথা ছিল!!
কিছু অংশ পড়তে গিয়েই নিজের কাছে কেমন জানি লাগছে!
২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৩০
শের শায়রী বলেছেন: সেটাই স্বাভাবিক ব্রাদার আমার নিজেরও অনেক অস্বস্তি এবং ক্ষেত্র বিশেষ কষ্ট লাগছে ওই অসহায় মানুষগুলার অবস্থা উপলদ্ধি করে।
৮| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ ভোর ৪:৫০
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: সৌদি রাজতন্ত্র টিকেআছে হজ্ব আর তেলের জন্য।আসে পাসের কয়েকটা টিকে আছে শুধু তেলের জন্য।এই ধাক্কার পর দেখেন কয়টা থাকে।তেল কিনলে নাকি এখন টাকা দিতেহয়না।উল্ট টাকা দেয়।
মানুষতো শৃষ্টির সেরা জীব,আল্লাহ নিজ হাতে তাকে বানিয়েছেন,তাই সে সব কিছু পারে।
২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৩২
শের শায়রী বলেছেন: শুধু সৌদী না ভাই, তেল নির্ভর ফুটানি দেখানো কান্ট্রি গুলার অবস্থা অচিরেই হয়ত আগামী ১০/১৫ বছরে অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে।
৯| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৮:২১
সোহানী বলেছেন: মানুষ কেন এতো নৃশংস আর বিভৎস হয়। পড়তে পড়তে শিউরে উঠছিলাম। অবশ্য নৃশংসতা একই আছে শুধু রুপ পাল্টিয়েছে এখন।
২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৩৩
শের শায়রী বলেছেন: আপনার মন্তব্যের শেষ লাইনে সুপার লাইক অবশ্য নৃশংসতা একই আছে শুধু রুপ পাল্টিয়েছে এখন।
১০| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:০৩
ইসিয়াক বলেছেন: কি নির্মম! কি বিভৎস!
পোষ্ট পড়ে মাথা ধরে গেলো।মানুষ কি করে এতো নিষ্ঠুর হতে পারে নিজের প্রয়োজনে।আর কিছু ভাবতে পারছিনা।
ভালো থাকুন প্রিয় ব্লগার।শুভকামনা।
২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৩৬
শের শায়রী বলেছেন: বীভৎসতা কি এই যুগে কিছু কম আছে প্রিয় কবি? হয়ত প্রথা ভেবে এর অনেক কিছুই আমাদের চোখে লাগছে না, হয়ত একশত বছর পর মানুষ বর্তমান কোন কোন প্রথাকে বলবে কি নির্মম!!
অনেক অনেক ধন্যবাদ কবি।
১১| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:১১
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
প্রাচীন আমলের কাহিনী পড়লেই খোজাদের দেখা মিলে। কি ভয়াভহ নির্যাতন।
আজকের যুগে এই প্রথা নাই । ভাবতেই গা শিউরে উঠে।
শুধু অন্ডকোষ কর্তন করেও নাকি খোজা করা হতো কতটুকু সত্যি ?
২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৪৩
শের শায়রী বলেছেন: কারেক্ট ভাই, খোজা করনের তিনটি পদ্ধতি দেখা যায়ঃ
(১) পুরুষ জননাঙ্গের অপসারন;
(২) কেবল অন্ডকোষের অপসারন; এবং
(৩) একত্রে পুরুষাঙ্গ ও অন্ডকোষের অপসারণ।
তবে শুধু অন্ডকোষের অপসারন করে খোজা করনে অনেক সময় রিস্ক থেকে যেত মানে এদের অনেকেই পূর্ন খোজা বা যৌন ক্ষমতাহীন হত না, সেক্ষেত্রে পরবর্তীতে এমন প্রমান পাওয়া গেলে দ্বিতীয়বার আবার তাদের খোজা করন করা হত, যাতে তাদের মৃত্যু প্রায় অবশ্যাম্ভাবী বলা চলে।
১২| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:২৮
শেহজাদ আমান বলেছেন: কি ভয়ানক বর্বর ছিল মানুষ! আজকের দিনেও মৃত্যুদণ্ড নামে ভয়াবহ প্রথার বাস্তবায়ন চলছে!
২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৪৬
শের শায়রী বলেছেন: শুধু কি মৃত্যুদন্ড ভাই! আরো কিছু প্রথা আছে, যেগুলো হয়ত অভ্যস্ততার কারনে আমরা নির্মমতা দেখিনা, যেমন দেখত না সেযুগের মানুষেরা। কে জানে ১০০ বছর পর আমাদের কোন কোন প্রথা সে কালের মানুষের কাছে বর্বরতা হিসাবে চিহ্নিত হবে।
১৩| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:৫১
ক্ষুদ্র খাদেম বলেছেন: সুপার লেখা, সরাসরি প্রিয়তে
২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৫১
শের শায়রী বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ কৃতজ্ঞতা সহকারে ভাই।
১৪| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ২:১১
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: খোজা ক্রীতদাস সম্পর্কে ইতিহাসে সামান্য কিছু পড়ে এসেছি। সাধারণতঃ হারেমে মহিলাদেরকে সুরক্ষার মধ্যে রাখার জন্য রাজপুরুষদের পছন্দের পাত্র ছিল এই সমস্ত খোজা ক্রীতদাস। কিন্তু খোজাকরনের পদ্ধতি সম্পর্কে কোন ধারণা ছিল না। আপনার সৌজন্যে এ সম্পর্কে বিশদে জানলাম। কি ভয়ঙ্কর নির্মম প্রথা এই খোজাকরণ যা পড়তে পড়তে গা শিউরে উঠলো।
খুঁজা শব্দের ব্যুৎপত্তিগত ইতিহাস পদ্ধতিটি আদিম ইতিহাস ধরে বিশ্ব বিভিন্ন দেশের সঙ্গে এক্কেবারে মোঘল সময়কাল পর্যন্ত টেনে আনলেন অত্যন্ত সুন্দরভাবে। জাহাঙ্গীর ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রথম রুখে দাঁড়ালেও ওরঙ্গজেব সময়েও তাদের অস্তিত্বের নমুনা মেলে। সম্ভবত ব্রিটিশ পিরিয়ডে সংখ্যাটা একেবারে কমে আসে। সংগত কারনেই মনে প্রশ্ন জাগে, এই নিয়ে কোন দেশেরই বোধহয় আইন করে নিষিদ্ধ করার মতো কোনো নজির নেই।
গ্রিক বর্ণনায় হারমোটিয়াসের মধুর প্রতিশোধের ঘটনাটি পড়ে পুলকিত হলাম।
শুভেচ্ছা প্রিয় শায়রী ভাইকে।
২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৫
শের শায়রী বলেছেন: পাঠে এবং মন্তব্যে অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রিয় পদাতিক ভাই। না এই প্রথা আইন করে নিষিদ্ধ করার নজির এক মাত্র জাহাঙ্গীরই দেখিয়েছে তার রাজত্বকালে। যদিও তার রাজত্বকালের পরই তা অকার্যকর হয়ে যায়।
১৫| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৩:০১
নতুন নকিব বলেছেন:
গবেষণাধর্মী আপনার এই ধরণের লেখাগুলো অসাধারণ। +++ সহ প্রিয়তে পোস্ট।
২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২১
শের শায়রী বলেছেন: পাঠে, মন্তব্যে এবং প্রিয়তে নেয়ায় অশেষ কৃতজ্ঞতা জানবেন প্রিয় ভাই।
১৬| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৫:১০
রাজীব নুর বলেছেন: আমার এক সময় ধারনা ছিলো ক্রীতদাস শুধু মধ্যপ্রাচ্যেই ছিলো।
২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২২
শের শায়রী বলেছেন: ক্রীতদাস প্রথা সারা পৃথিবীতেই প্রচলন ছিল।
১৭| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৪
জাফরুল মবীন বলেছেন: শব্দের শান-ই-নযুল জানার আগ্রহ বরাবরই বেশি।খোজা করার কারণ জানা থাকলেও এর ইতিহাসের সুনির্দিষ্ট ঘটনাগুলো জানা ছিলো না।জানার আনন্দ, খোজা প্রক্রিয়ার বর্বরতা এবং তাদের বাকি জীবনের মনোজাগতিক অবস্থা কল্পনা করে এক অদ্ভূত অনুভূতি আপনার লেখাটি পড়লাম এবং প্রিয়তে নিয়ে গেলাম।ধন্যবাদ ও শুভকামনা জানবেন।
২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৯
শের শায়রী বলেছেন: আমি সন্মানিত বোধ করছি জাফরুল মবীন ভাই। আপনার লেখার সাথে আগে পরিচয় হয় নি, তবে এই পাঁচ বছর পর প্রথম পোষ্টেই আপনার লেখার গভীরতা পেয়েছি। আমিও প্রায় ছয় বছর পর দ্বিতীয় কিস্তিতে লেখা শুরু করছি।
পাঠে মন্তব্যে এবং প্রিয়তে নেয়ায় অশেষ কৃতজ্ঞতা ভাই।
১৮| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৩
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: মানুষের মানুস হবার সাধনা জনম জন্মান্তরের...
আজো কি মানুষ, হতে পেরেছে সেই মানুষ?
হেরেম এবং খোজা নিয়ে হালকা ধারনা ছিল। আজ বৈশ্বিক চর্চা এবং বিশদ বিবরনে শংকিত হলাম। শিহরিত হলাম। হতাশ হলাম।
ক্ষমতার মদমত্ততা মানুষকে কত অমানুষ করে দেয় খোজা করণ তার এক বিশাল বিষাদময় অধ্যায়।
পোষ্টে +++
২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৯
শের শায়রী বলেছেন: ক্ষমতার মদমত্ততা মানুষকে কত অমানুষ করে দেয় খোজা করণ তার এক বিশাল বিষাদময় অধ্যায়। ম্যা'ভাই আগে হয়ত দুই চার জনকে খোজা করে রাখা হত, এখন কিন্তু বর্তমান বিশ্বের দিকে তাকান দেখবেন কোন কোন জাতিকেই খোজা করে রাখা হয়েছে।
১৯| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:০৫
ভুয়া মফিজ বলেছেন: কয়দিন আগে জী এস ভাই উনার 'কপাল পোড়া পুরুষ ........ নপুংসক?' শীর্ষক পোষ্টে কইছেন, অন্ডকোষ একটি ভয়ঙ্কর জায়গা! এইবার আপনে ওইটা কাইট্টা ফালানোর খবর লয়া আইছেন। আপনেরা পাইছেন টা কি?
খোজা সম্পর্কে এতোদিন ততোটুকুই জানতাম, যতোটুকু আমার মতো সাধারন আম-আদমী জানতে পারে।
বিস্তারিত দেইখা ডরাইছি। এতোই ডরাইছি যে, ভাবলাম....আপনের এই পোষ্ট পড়তে পড়তে আমি আবার খোজা হয়া গেলাম কিনা? ; নাহ্, খুইজা, খাউজায়া দেখলাম ঠিকাছে......খোজা নিয়া টেনশানের কিছু নাইক্যা!!
২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫২
শের শায়রী বলেছেন: জী এস ভাইর ওই লেখাটা পইড়াই আবার এই লেখার ইচ্ছা চাগাইয়া উডছে, আমনেরে বেশ কিছু দিন ধইরা দেখি নাই, খুব টেনশানে ছিলাম..... যাউজ্ঞা বাচলাম যে এখনো ..... আছেন
২০| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:১৮
আহমেদ জী এস বলেছেন: শের শায়রী,
যে কান্নার কোনও শব্দ নেই, রং নেই যে কান্না শুধু বোবা আর্তনাদ হয়ে গুমরে গুমরে মরে; তেমনই এক বোবা কান্নার অসহায় ইতিহাসই তুলে ধরেছেন।
ভালো লাগলো।
২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০১
শের শায়রী বলেছেন: অশেষ কৃতজ্ঞতা জানবেন শ্রদ্ধেয় জী এস ভাই।
২১| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৪৭
মা.হাসান বলেছেন: কিছুদিন আগেও বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যে বাচ্চাদের পাচার করা হতো উটের জকি হিসেবে। বাচ্চারা ভয় পেয়ে কাদতো, উট এতে জোরে দৌড়াতো। অনেক সময়ে বাচ্চারা পড়ে যেয়ে উটের পদপিষ্ঠ হয়ে মারা যেতো শুনেছি।
সবল দূর্বলের উপর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার করেছে। বর্তমান সময়ে খোজা করন অমানবিক মনে হয়। কিন্তু আমাদের সময়েও এমন অনেক অমানবিক ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে। সিমেন্ট বা টিউবলাইট কারখানায় শ্রমিকদের কাজ কে আজ থেকে দুশ বছর পর মানুষ কিভাবে মূল্যায়ন করবে বলা মুশকিল। আমাদের চারপাশে যে সভ্যতা গড়ে উঠেছে, এর পিছনে শুধু যে ঘাম আছে তাই না, অনেক রক্ত, অনেক কান্না আছে।
The Magdalene Sisters সিনেমাটি সত্য ঘটনার উপরে নির্মিত। আয়ারল্যান্ডে কুমারি মায়েদের সাথে কি আচরন করা হতো জানতে পারবেন।
Tuskegee syphilis experiment সার্চ করলে জানবেন আমেরিকানরা ৫০ বছর আগেও কালোদের সাথে কি আচরন করেছে, মধ্য যুগ পর্যন্ত যাওয়া লাগবে না।
খলিল ভাইয়ের মতো আমিও পড়েছি , খোজাদের অনেকের কানে গলিত সিসা ঢেলে বধির করে দেয়া হতো, এ মুহূর্তে কোনো রেফারেন্সের কথা মনে পড়ছে না ।
এত কষ্টের কাহিনী না লিখলেই কি না ? ভালোবাসার কথা লিখুন।
অনেক পরিশ্রম করে লেখা। অনেক অজানা জিনিস তুলে আনলেন।
সামুর বাগের কারনে অনেক প্লাস দেয়া যাচ্ছে না, আপাতত একটাই দিলাম।
২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৩
শের শায়রী বলেছেন: এই কিছু দিন আগেও গার্মেন্টস শ্রমিকদের তাদের কারখানায় ঢুকিয়ে নীচ থেকে কলাপসিবল তালা লাগিয়ে দেয়া হত, তারপর আগুন লাগলে গেটের কাছে এসে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ত, কয়েক বছর আগেও এমন সিষ্টেম ছিল বিভিন্ন পত্রিকায় দেখছি, এখন হয়ত সিষ্টেম চেঞ্জ হয়েছে। হয়ত আপনারো খেয়াল আছে।
যে সভ্যতা নিয়ে আমরা বড়াই করি সে সভ্যতায় আনতে যে কত মানুষের ঘাম আর কান্না জড়িত তার জবাব আমরা কোন দিনই পাব না হাসান ভাই।
প্লাস পাইছি। ধইন্যা।
২২| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:১২
রাজীব নুর বলেছেন: আপনার পোষ্ট পড়লেই বুঝা যায়, আপনি অনেক খাটাখাটনি করে পোষ্ট তৈরি করেন।
২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৫
শের শায়রী বলেছেন: রাজীব ভাই এই টুকু খাটা খাটনি আমি আনন্দের সাথেই করি, আমি জাষ্ট বিভিন্ন বই পত্র নিবন্ধ প্রবন্ধ এক করে একটা জোড়াতালি দেই এই আর কি । মন্তব্যে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
২৩| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:২৬
এইচ তালুকদার বলেছেন: নির্মম,বীভৎস। অটোম্যান আর চাইনিজ সম্রাজ্য তো বটেই।মোগল দরবারেও নাকি নাচ গান জানা বাংলামুলকের খোজাদের বিশেষ চাহিদা ছিল। এমনকি ক্ষয়িষ্ণু মুঘল সম্রাজের সম্রাট শাহ আলম নাকি সুদর্শন গোলাম কাদিরকে খোজা করে দিয়েছিলেন যার প্রতিশোধ নিতে গুলাম কাদির শাহ আলমকে অন্ধ করে দেয়,গূলাম কাদিরের সৈন্যরা নিপীড়ন চালায় শাহ আলমের স্ত্রী আর কন্যাদের উপর।সম্ভ্রম বাচাতে যাদের অনেকেই যমুনা নদীতে ডুবে আত্মহত্যা করে
২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:১৮
শের শায়রী বলেছেন: আসলে দাস প্রথার পাশাপাশি সারা বিশ্বে এই খোজা করন প্রক্রিয়া সেকালে একটা সাধারন প্রথায় পরিনত হয়েছিল। ভাগ্যিস আমরা সে সময়টা পেরিয়ে এসেছি। হ্যা খুব কম সংখ্যক খোজার উদাহরন আছে যারা রাজার বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারন করেছিল।
পাঠে এবং মন্তব্যে অশেষ কৃতজ্ঞতা জানবেন।
২৪| ২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৬
জুন বলেছেন: শের শায়েরী আমি উইলবার স্মিথ এর উপরেল্লিখিত বইগুলো পড়ি নাই তবে এই লেখকের এঞ্জেলস উইপ আমাকে মন্ত্রমুগ্ধ করেছিল। এতে জিম্বাবুয়ের ইতিহাস বর্নিত আছে। আছে জিম্বাবুয়ের বর্তমান শাসক দলের (Zanu) উত্থান পর্ব। জসুয়া এনকোমো, রবার্ট মুগাবে ঔপনিবেশিক শাসকদের হটিয়ে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলো তার ইতিহাস।
তবে খোজাদের নিয়ে স্মিথের বই পড়া হয়নি। কিন্ত খোজাদের কিছু কিছু আবাস দেখা হয়েছে যার মাঝে আছে ভারতবর্ষের বিভিন্ন কেল্লায় মুগল বাদশাহদের নারীদের জন্য তৈরি হেরেম, চাইনিজদের নিষিদ্ধ নগরীর হেরেম যাতে আছে রাজার আনন্দের জন্য বিভিন্ন প্রদেশ থেকে ধরে আনা অপরূপা সুন্দরী কন্যাদের রাখা হতো ছোট ছোট ঘরে। এখানে পাহারা দিতো সেই সব হতভাগ্য খোজারা।
সাবলীল বর্ননায় লেখা পোস্টটি পড়ে অনেক না জানা তথ্য জানা হলো। ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকুন সবসময়।
+
২৯ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:৪২
শের শায়রী বলেছেন: জুন আপা, আফ্রিকা নিয়ে লেখকদের মাঝে এক নাম্বারে আমার কাছে হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড দুই নাম্বারে উইলবার স্মিথ। আপনাকে অনুরোধ করছি রিভার গড বইটা পড়ে দেখবেন। গ্যারান্টি ভালো লাগবে। এই সব অপুরুষদের কত বড় দুর্ভাগ্য ভাবতেই খারাপ লাগে, হয়ত কারো কারো মানবিক অনুভুতি থেকে গেছে, শারীরিক অনুভুতি নষ্ট করে দেবার পরো। কি কষ্ট একটা অকেজো শরীরের মাঝে অনুভুতি গুলো জীবন্ত। ভাবতেও নিজেকে অসুস্থ্য লাগে।
পাঠে এবং মন্তব্যে অনেক ধন্যবাদ। সুস্থ্য থাকুন। ভালো থাকুন।
২৫| ২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:৩১
ভুয়া মফিজ বলেছেন: আমনেরে বেশ কিছু দিন ধইরা দেখি নাই, খুব টেনশানে ছিলাম..... যাউজ্ঞা বাচলাম যে এখনো ..... আছেন তিনমাসের আগে টেনশানের কিছু নাই, এইটা তো আপনেগো আগেই কইছি। সময়ের টাইম পাই না; ব্লগে আসুম ক্যামনে? হোম থেইকা অফিস শুনতে যতোই সুইট লাগুক না ক্যান, আসলে এইটাতে ঝামেলা বেশী। অফিসের কাম, বউয়ের ক্যাটক্যাটানি, ঘরের কাম....সব কইরা কোন কুল-কিনারা পাই না।
এহন আবার রোযা। অফিস শ্যাষ করনের পরে আর এনার্জি থাকে না (বুজেনই তো, হাজার হইলেও কুমীর প্রজাতি, ইফতারের পরে গা এলাইতেই হয় )। আরো বিপদ আছে। ইফতারের পরে যেই বিড়িটা টানি, হেইটা শ্যাষ করনের পরে আর দাড়ানো তো দুরের কথা, বইতেও পারি না; মাথা এমুন চক্কর দেওন শুরু করে।
সমস্যা আরো আছে........কতো কমু? এর ফাকেই সামু'তে আহোন লাগে, কিন্তু চান্স খুবই কম পাই!
২৯ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:৪৫
শের শায়রী বলেছেন: না না আর সমস্যা কইতে হবে না, সব বুইজা গেছি, তয় এইডা কিন্তু আমারো হয়, ইফতারের পর বিড়িডায় টান দিলেই মাথাডা চক্কর দিয়া উডে.... লগে তো বউর ক্যাটক্যাডনি উপরি পাওনা।
যাউজ্ঞা অহন থিক্কা তিন মাস কোন টেনশান নিমু না।
২৬| ২৯ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:০৫
সজল_ বলেছেন: দারুন লিখেছেন।+++++
২৯ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:৫০
শের শায়রী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
২৭| ০৪ ঠা মে, ২০২০ রাত ২:১৭
Rajibrpsoft বলেছেন: আবার হ্রদয়বিদারক কাহিনী..... আল্লাহ দোযখ কেন সৃষ্টি করেছেন এখন হাড়ে হাড়ে বুঝি....ভেবে গায়ে কাটা দিচ্ছে আমরা যদি ঐ সময় জন্মায়তাম আর আমাদের সাথে এ অমানবিক আচরন হত ... আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি ..... আবারো অসংক্ষ্য ধন্যবাদ প্রাচীন নির্মম ইতিহাস তুলে ধরার জন্য
০৪ ঠা মে, ২০২০ ভোর ৫:১০
শের শায়রী বলেছেন: প্রিয় ভাই আমারো এগুলো লিখতে ভালো লাগে না কারন এই সব ঘটনার নৃশংসতা। তারপরো কেন লেখি জানেন উই মে ফরগীভ বাট উই মে নট ফরগেট।
পাঠে এবং মন্তব্যে অশেষ কৃতজ্ঞতা জানবেন।
২৮| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:৩৩
জহিরুল ইসলাম সেতু বলেছেন: সভ্যতার ইতিহাসের অন্তরালে কতো যে অসভ্যতা, নৃশংসতা লুক্কায়িত তার কিছুটা প্রমাণ এখানে পেলাম। পড়তে গিয়ে গা শিউরে উঠে, কি বর্বরতা !!!
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:৪৫
ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: হারেমের মহিলারা রাজার সন্তানের মা হতে পারলে নাকি তাদের রাণীর মর্যাদা দেয়া হতো। সবার বেলাতেই কি একই নীতি ছিলো?
যেই রাজরক্তের বিশুদ্ধতা বজায় রাখতে রাজারা এমন কাজ করতো, তারা এখন কোথায়?
ইসলামের পতনের পেছনে মদ আর হারেমই প্রধান ভুমিকা পালন করেছিলো। আমি চাই ওই বদমাশগুলোর কঠিন বিচার হোক।
যাহোক, অনেক কিছু শিখতে পারলাম। লাইক