নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অমরত্বের লোভ কখনো আমাকে পায়না। মানব জীবনের নশ্বরতা নিয়েই আমার সুখ। লিখি নিজের জানার আনন্দে, তাতে কেউ যদি পড়ে সেটা অনেক বড় পাওয়া। কৃতজ্ঞতা জানানো ছাড়া আর কিছুই নেই।

শের শায়রী

হৃদয়ের কাছে বুদ্ধির বাস ভাল কথা। কিন্তু মাঝে মঝে হৃদয়ের ওপর থেকে বুদ্ধির শাসন তুলে দিতে হয়, হৃদয়কে স্বাধীন করে দিতে হয়, মুক্ত করে দিতে হয়। স্বাধীন মুক্ত হৃদয়ের ধর্মকে সব সময় বুদ্ধি দিয়ে বিচার করতে নেই।।

শের শায়রী › বিস্তারিত পোস্টঃ

খোলাফায়ে রাশেদিন হযরত উসমান ইবনে আফফান (রাঃ)

০২ রা মার্চ, ২০২০ রাত ৯:৫১


উসমান (রা) এর আমলে ইসলামি বিশ্ব। ছবিসূত্রঃ Wikimedia Commons

আগের পোষ্টঃ খোলাফায়ে রাশেদিন হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)

হযরত উসমান (রাঃ) এর খেলাফতকাল নিয়ে আলাপ করার আগে কিছু ব্যাপার আপনার স্মরনে রাখতে হবে কারন না হলে এমন কিছু ব্যাপারের অবতারনা হবে যা স্বাভাবিক ভাবে অনেকেই নিতে পারবে না , যারা এগুলো না জানে। তবে সত্য সত্যই। আমি ধর্মীয় দৃষ্টি কোন দিয়ে না দেখে পুরো ব্যাপারটা ঐতিহাসিক দৃষ্টি কোন দিয়ে দেখার চেষ্টা করব। প্রথমেই আপনাকে জানতে হবে ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা উমর (রাঃ) তার চরিত্রগত ভাবে ভীষন কঠোর ছিলেন তা তিনি নিজের ক্ষেত্রেও যেমন অন্যের ব্যাপারে তেমনি সে তুলনায় ইসলামের তৃতীয় খলিফা উসমান (রাঃ) অনেক কোমল এবং শান্ত চরিত্রের অধিকারী ছিলেন।


খোলাফায়ে রাশেদিনদের ফ্যামিলি ট্রি

দ্বিতীয়তঃ হযরত উসমান (রাঃ) এর আগের দুই জন খলিফা কুরাইশ বংশের বনু হাশমী গোত্রের (উপরের খলিফাদের ফ্যামিলি ট্রি দেখুন), সেখানে উসমান (রাঃ) বনু উমাইয়া গোত্রের। মহানবীর ওফাতের পর হযরত আবু বকর (রাঃ) দুই বছর এবং উমর (রাঃ) ১০ বছর টোটালি ১২/১৩ বছর খেলাফত প্রতিষ্ঠা হয়েছে। গোত্রীয় বিভাজন তখনো হিংস্র বেদুঈন আরবদের রক্তে মিশে আছে। এই ১২/১৩ বছরের মাঝে ইসলাম যেন মরু ঝড়ের মত সমগ্র চেনা পৃথিবী দখল করে ফেলছে। এইটুকু স্মরনে রেখে চলুন আমরা হযরত উসমানের খেলাফত কাল নিয়ে আলোচনায় যাই।

হযরত উমর (রাঃ) যেহেতু হযরত আবু বকরের মত উত্তরাধিকারী রেখে যান নি, আবার তিনি চাচ্ছিলেন ও না যেন খেলাফতের দাবী নিয়ে যেন কোন রক্তারক্তি ঘটানোর মত পরিস্থিতির উদ্ভব হোক তাই তিনি ছয় জন সাহাবার একটা প্যানেল তৈরী করেন যাদের নাম হযরত আলী ইবনে আবু তালিব (রাঃ), হযরত উসমান ইবনে আফান (রাঃ), হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রাঃ), হযরত সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রাঃ), হযরত যুবাইর ইবনে আউয়াম (রাঃ), হযরত তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ (রাঃ)। এদের মাঝ দিয়ে যে কোন একজনকে সংখ্যাধিক্যের মতামতের ভিত্তিতে খলিফা নির্বাচিত করা হবে, কোন কারনে যদি এই ছয় জন সমান ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন তবে উমর (রাঃ) ছেলে আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর তার মতামত যুক্ত করে যে কোন এক দিক সংখ্যাধিক্য ঘটিয়ে খলিফা নির্বাচন করবে।

বাস্তবে দেখা গেল এই ছয় জন খলিফা উমর (রাঃ) এর ইন্তেকালের দুই দিন পরো কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারছে না, এ ক্ষেত্রে এই ছয় জনের একজন হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রাঃ) বাকী পাচ জনকে জানালেন তারা যদি তার কথা মেনে নেয় তবে তিনি খলিফার পদ থেকে নিজের দাবী প্রত্যাহার করে নিয়ে বাকী পাচ জনের মাঝ থেকে একজন কে খলিফা বানাবেন। অনেকেই মনে করছিলেন তিনি হয়ত হযরত আলী (রাঃ) নাম ঘোষনা করবেন কারন ওই ছয়জনের মাঝে হযরত তালহা এবং হযরত যুবাইর ছিলেন হযরত আলীর পুরানো মিত্র, যারা প্রথম খলিফা হযরত আবু বকরের নির্বাচনের সময় হযরত আলীর পাশে দাড়িয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রাঃ) হযরত আলীর নাম না ঘোষনা করে তার থেকে ২৫ বছরের বড় হযরত উসমান (রাঃ) নাম ঘোষনা করছেন এবং তার হাতে বাইয়াত গ্রহন করছে। দিনটি ছিল ৬৪৪ খ্রিষ্টাব্দের ৬ ই নভেম্বর। ইসলামের তৃতীয় খলিফা হিসাবে তার ১২ বছরের শাসনকাল শুরু হয়। হযরত আলী (রাঃ) তার হাতে বাইয়াত গ্রহন করেন।

হযরত উসমান (রাঃ) ১২ বছর খেলাফত কালকে দুই ভাগে বিভক্ত করা যায়। স্বভাবগত ভাবে প্রচন্ড শান্তশিষ্ট বয়োবৃদ্ধ এই খলিফা প্রথম ছয় বছর খুবই জনপ্রিয় শাসক হিসাবে সবার কাছে গ্রহন যোগ্য ছিলেন। পরবর্তী ছয় বছর ছিল এর উল্টো। এই সময় তিনি একের পর এক বাধার সন্মুখীন হন। খেলাফতের প্রথম দিকে পারস্যর পলাতক সম্রাট ইয়াজদিগার্দের প্রভাব পুরোপুরি খর্ব করেন এবং ৬৫১ খ্রিষ্টাব্দের ইয়াজদিগার্দ অজ্ঞাত আততায়ীর হাতে নিহত হন। মুসলমানরা কাবুল ও গজনী পর্যন্ত তাদের সাম্রাজ্য বিস্তার করে।

ওদিকে ৬৪৬ সালে হযরত উমর (রাঃ) মৃত্যুর পর বাইজান্টেনিয়ান সম্রাট খ্রিষ্টান সেনাপতি মানাভীলের নেতৃত্ব ৩০০ জাহাজের এক নৌবহর পাঠিয়ে আলেকজান্দ্রিয়া পুনরায় দখল করে, মিশরের মুসলমান গভর্নর আমর ইবনুল আস তৎকালীন মিশরের রাজধানী ফুসতাত থেকে এগিয়ে এসে পুনরায় নিম্ন (Lower) মিশরের নীল নদের তীরে নাকয়ুস শহরের পাশে খ্রিষ্টান বাহিনীকে পরাজিত করেন এবং আলেকজান্দ্রিয়ায় পৌছে সেনাপতি মানাভীলকে পরাজিত করে আলেকজান্দ্রিয়া পুনুরুদ্ধার করে। (আত তাবারী, ৪:২৫০)। এরপর খলিফা উসমান আমরের স্থলে আব্দুল্লাহ বিন সাদ বিন আবি সারাহ কে মিশরের নতুন গভর্নর নিয়োগ করেন।

আব্দুল্লাহ মিশর থেকে পশ্চিম থেকে তিউনিসিয়া পর্যন্ত বিজয় প্রতিষ্ঠা করেন। ওদিকে সিরিয়ার শাসন কর্তা খলিফা উসমানের চাচাতো ভাই মুয়াবিয়া বিন আবু সুফিয়ান সফলতার সাথে বাইজান্টাইনদের প্রতিহত করে মুসলমানদের প্রথম নৌবহর তৈরী করেন এবং এই নৌবহরের দ্ধারা সাইপ্রাস দ্বীপ দখল করেন। এরপর রোডস দ্বীপও মুসলমানদের দখলে আসে। ৬৪৭ সালে এশিয়া মাইনর থেকে আগত এক বিশাল স্থল বাইজান্টাইন বাহিনীকে খলিফার বাহিনী পরাজিত করে। হযরত উসমানের আমলে “ব্যাটল অভ মাষ্ট”র নৌ যুদ্ধে মুসলিম নৌ বাহিনী বাইজান্টাইন নৌ বাহিনীকে পুরোপুরি পরাজিত করে নৌ পথে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা অর্জন করে।

খলিফা উসমানের এই সব বিজয় কৃতিত্ব সব কিছু বিষাদময় হয়ে যায় তার নিহত হবার ঘটনার মধ্যে দিয়ে, ভালো মানুষী, গোত্র রাজনীতি, ক্ষমতার ষড়যন্ত্রের কাছে পরাজিত হয় ইসলামের তৃতীয় খলিফা। ৮২ বছরের এই বৃদ্ধ খলিফার যে নিষ্ঠুর ভাবে নিহত হয়েছিল তার সাথে এক মাত্র কারবালার ঘটনা তুলনীয়। কিন্তু সেভাবে কোন দিন ইতিহাসে খিলাফতের এই তৃতীয় খলিফার মৃত্যু নিয়ে মানুষকে প্রচার করা হয় নি, কারন কারবালার ঘটনা নিয়ে যারা মাতামাতি করে তাদের কাছে হযরত উসমান (রাঃ) এবং মুয়াবিয়া ছিল সম্পূর্ন শত্রুপক্ষ। তারপরো আমার কাছে অবাক লাগে ভাবতে সাধারন মানুষের কাছে উসমান (রাঃ) মৃত্যু ঘটনা অনেকাংশে এড়িয়ে যাওয়া হয়। তার মৃত্যুর ঘটনায় যাবার আগে ধাপে ধাপে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত ভাবে উসমান (রাঃ) শেষ ছয় বছরের ঘটনার দিকে দৃষ্টিপাত করব, যদিও পুরা ঘটনা অনুধাবন করতে এত স্বল্প পরিসরে লেখা হয়ত অনেক ধোঁয়াশা তৈরী করবে, তবে আমি চাইব এ থেকে কেউ যদি মুল ঘটনা আরো বিস্তারিত জানতে আগ্রহী হয় তবেই স্বার্থকতা।

উসমান (রাঃ) এর খিলাফত কালে পুর্ব পশ্চিম সব দিকে বিজয় অর্জিত হওয়ায় সব দিক দিয়ে গনীমতের মাল রাষ্ট্রীয় কোষাগারে আসতে থাকল এবং উদার হৃদয় উসমান (রাঃ) সেগুলো সবাইকে বিলি বন্টন করা ছাড়াও মুসলিম সৈন্যরাও যথেষ্ট সম্পদের মালিক হয়ে দাড়ায়, যার কারনে তারা ভোগ বিলাসে মত্ত হয়ে ওঠে এবং ইসলামের খেদমত বাদ দিয়ে নিজেদের দিকে নজর দেয়া শুরু করে। পাশাপাশি উসমান (রাঃ) কোমল আচরন বিভিন্ন প্রাদেশিক শাসনকর্তাদের উচ্চাকাঙ্খী হতে সাহায্য করে। পাশাপাশি উসমান (রাঃ) শাসনামলের শেষ দিকে অনেক বড় বড় বিজ্ঞ সাহাবী ইন্তেকাল করেন, আবার অনেক বড় বড় সাহাবী উসমান (রাঃ) অনুমতি নিয়ে মদিনা ত্যাগ করেন। ফলে তারা কোন স্থানে গমন করলে তাদের কেন্দ্র করে তাদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও এক সুক্ষ্ম বিভক্তির তৈরী হয় (দেখুন আমীরুল মোমেনিন উসমান ইবনু আফফান লেখক ডঃ যুবাইর মুহাম্মদ এহসানুল হক পৃঃ ৩৩৪)



ওদিকে হযরত উসমান ছিল কুরাইশ বংশের বনু উমাইয়া গোত্রের আর হযরত আলী ছিল বনু হাশিম গোত্রের। এছাড়াও পূর্ববর্তী দুই খলিফা বনু হাশিম গোত্রের লোক হওয়ায় আরবীয় গোত্র বিভেদ ধুমায়িত হতে শুরু করে। ওদিকে প্রথম দুই খলিফাকে অকুরাইশ নেতৃত্বের চ্যালেঞ্জে পড়তে না হলেও হযরত উসমানের কোমল স্বভাবের কারনে অকুরাইশ নেতৃত্বও চাঙ্গা হতে শুরু করে যা শুরু হয়েছিল হযরত আবু বকরের খেলাফতের সময় মদিনার খাযরাজ গোত্রের নেতা সাদ বিন উবাইদাকে খলিফা না করার মধ্যে দিয়ে। এক পর্যায়ে এই কুরাইশ শাসনের বিরোধিতা কেবল উমাইয়া শাসনের বিরোধিতায় রূপ নেয় যার মাধ্যমে অকুরাইশ এবং কুরাইশ বংশের উমাইয়া গোত্র বাদে সবাইকে এক ছাতার নীচে নিয়ে আসে।

খলিফা উসমানের বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহের সুচনা হয়েছিল তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরন হয়ত কোন দিন পাওয়া যাবে না, তবে বেশির ভাগ ঐতিহাসিকের মতে উসমানের শাসনের মাঝামাঝি সময় থেকে যুদ্ধ প্রিয় বেদুঈন আরবদের সামনে দখল করার মত আর কোন উল্লেখ্য যোগ্য দেশ না থাকায় তারা যেমন অলস হয়ে পড়ছিলো তেমনি গনীমতের প্রাপ্তি থেকেও বঞ্চিত হচ্ছিল যা তাদেরকে খলিফার বিরুদ্ধ চারনে উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রেখেছিলো।


যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম মিউজিয়ামে গত বছর থেকে সযত্নে সংরক্ষিত হচ্ছে পৃথিবীর প্রাচীনতম হাতে লেখা কোরআনের অংশবিশেষ। বিশেষজ্ঞদের মতে, ওই হস্ত-লিখন কোরআন লিখিত হয় হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবদ্দশাতেই।

খলিফা যখন বিভিন্ন প্রাদেশিক শাসনকর্তাদের ডাকলেন তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অসন্তোষ এবং বিদ্রোহের কারন জানতে তখন বসরার শাসনকর্তা আব্দুল্লাহ বিন আমেরের উক্তি থেকে এর সত্যতা পাওয়া যায়, তিনি বলেন, আমার মতে এই সব লোকদের জিহাদে নিয়োজিত রাখাই শ্রেষ্ঠতর প্রতিকার। নিষ্কর্মা বসে থাকার দরুন তাদের মাথায় এ ধরনের ফাসাদ এবং কুবুদ্ধির উদয় হয়েছে। তারা যখন জিহাদে লিপ্ত হবে তখন আপনা আপনিই এই সব বিক্ষোভ বিশৃঙ্খলার অবসান হবে (দেখুন ইসলামের ইতিহাস, প্রথম খন্ড, ইসলামিক ফাউন্ডেশান বাংলাদেশ, ইবনুল কাসির খন্ড ২ পৃঃ ৪২৭)



ওদিকে খলিফা কর্তৃক নিযুক্ত মিশরের শাসনকর্তা আব্দুল্লাহ বিন সাদ বিন আবি সারাহ ৬৫১ সালে দুজন প্রভাবশালী মানুষের সাথে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন এদের একজন হল হযরত আবু বকরের ছেলে মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর অন্যজন হুজায়ফা। এক পর্যায়ে তারা প্রকাশ্যে গভর্নরের বিরুদ্ধচারন করে এবং খলিফার প্রতি দোষারোপ করেন যাদের প্রতি খোদ রাসুলুল্লাহ অসন্তুষ্ট ছিলেন তাদের কে তিনি (উসমান রাঃ) বিভিন্ন প্রদেশের গভর্নর নিয়োগ করছেন। (দেখুন ইসলামের ইতিহাস, প্রথম খন্ড, ইসলামিক ফাউন্ডেশান বাংলাদেশ)

খলিফার বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ ছিল যা ঐতিহাসিক মাসুদী, অধ্যাপক পি কে হিট্টী, উইলিয়ম মুইর, ভন ক্রেমার এরা সমর্থন করেন। বাস্তবতা হল সে সময় উমাইয়া বংশের কিছু মানুষ ক্ষমতাধর হয়ে উঠছিলো বিভিন্ন ভাবে যদিও তাদের যোগ্যতা ছিল, কিন্তু তারা কেউ কেউ কোন না কোন ভাবে খলিফার আত্মীয় ছিলেন (অবশ্য সিরিয়ার শাসনকর্তা মুয়াবিয়া খলিফার আত্মীয় হলেও সে হযরত উমরের সময় থেকেই নিয়োগপ্রাপ্ত ছিল)। ওদিকে কুফায় মালিক আশতার খলিফার বিরোধিতায় মাঠে নামেন। হাশেমীদের পক্ষে কথা বলা শুরু করে। কুফা এবং বসরায় খলিফার বিরোধিতায় হযরত আলীর সমর্থকরা দিন দিন শক্তিশালী হয়ে ওঠে। অনেকেই হযরত আলীকে খিলাফতের প্রকৃত হকদার দাবী করে। এভাবে কুরাইশ শাসনের বিরুদ্ধবাদীরা কুরাইশ গোত্রের অভ্যান্তরীন রাজনীতির ভেতর থেকে অকুরাইশ প্রতিপক্ষ এবং কুরাইশ প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক মাঠের এক কাতারে এসে আশ্রয় নেয়।


১৯৭২ সালে সানায় প্রাপ্ত হাতে লেখা কোরানের অংশ বিশেষ যা ৬৭১ সালের পূর্বে লেখা

এই খানে রাজনীতির খেলা নতুন দিকে মোড় নেয়, এই মতবাদের মুল কথা হল প্রত্যেক নবীই একজন “অসি” বা প্রতিনিধি রেখে যান। আর এ অনুযায়ী ইসলামের নবীর প্রতিনিধি হল হযরত আলী। অথচ মুসলমানরা হযরত আলীকে রেখে ইতিমধ্যে তিন জন খলিফা নিয়োগ করেছেন, এখন সবার উচিত হযরত আলীকে সাহায্য করা এবং বর্তমান খলিফাকে পদচ্যুত করা। এই মতবাদের মুল প্রবক্তার নাম আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা। এ মতবাদ প্রচারের উদ্দেশ্যে সাবা মদীনা থেকে কুফা এবং বসরা ভ্রমন করে। কুফার মালিক আশতার এ মতবাদ লুফে নেন, বসরার খলিফা বিরোধীরাও সাবার সাথে যোগ দেয় এর পর সাবা সিরিয়া গেলে সেখানে সুবিধা করতে পারে না কারন সিরিয়ার মানুষরা খলিফার অনুগত ছিল। সাবা এরপর মিশর ভ্রমন করলে সেখানে সে খলিফা বিরোধীদের পেয়ে সেখানে অবস্থান করে।

সাবা প্রচার করতেন, “আমি তাদের প্রতি আশ্চর্য বোধ করি, যারা বলে ঈসা ফিরে আসবে কিন্তু মুহাম্মদ ফিরে আসবে না। অথচ আল্লাহ তা‘আলা বলেন : “নিশ্চয় যিনি আপনার উপর কুরআনকে বিধানস্বরূপ দিয়েছেন, অবশ্যই তিনি তোমাকে প্রত্যাবর্তনস্থলে ফিরিয়ে নেবেন”। সুরা কাসাস: (৮৫) অতএব ঈসার তুলনায় মুহাম্মদ ফিরে আসার বেশী হকদার। এক হাজার নবী ও এক হাজার ওসি ছিল, আলী হচ্ছে মুহাম্মদের ওসি। অতঃপর সে বলে : মুহাম্মদ সর্বশেষ নবী আর আলী সর্বশেষ ওসি”। (“তারিখে তাবারি” : খঃ ৪ পৃঃ ৩৪০) (পাঠক খেয়াল করুন শিয়া ধারার উৎপত্তি কিন্তু শুরু হল)


বাংলাদেশের জাতীয় জাদুঘরে মূল্যবান নিদর্শনের তালিকায় এবার যোগ হলো- হজরত উসমান (রা.)-এর সময়ের হাতে লেখা পবিত্র কোরআন ‘মাসহাফে উসমানি’র একটি ছায়ালিপি।

খলিফা উসমানের বিরুদ্ধে আরো কতগুলো অভিযোগ বিস্তার লাভ করে তার মাঝে অন্যতম ছিল পবিত্র কুরান ধ্বংস করা (নাউজুবিল্লাহ)।হযরত উসমান খলিফা হবার পর বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করেন খিলাফতের বিভিন্ন অঞ্চলে কুরান পাঠের ভিন্নতা দেখা দিয়েছে। হযরত হুযায়ফা ইবনে ইয়ামন নামে জনৈক সাহাবী উসমান (রাঃ) কে জানান যে তিনি বসরা, কুফা, রাই, সিরিয়া প্রভৃতি অঞ্চল ভ্রমন করে দেখছেন যে একেক অঞ্চলের লোক এক এক রকম ভাবে কুরান তেলাওয়াত করছে। হযরত উসমান (রাঃ) প্রমাদ গুনলেন। তিনি বিভিন্ন অঞ্চলের কুরানের পান্ডুলিপি তলব করলেন এবং দেখেন যে সত্যিই একটির সাথে অন্যটির যথেষ্ট অমিল। তিনি হযরত আবু বকরের সময়ের সংগৃহিত হযরত যায়িদ বিন সাবিত (রাঃ) সংকলিত কুরানের পান্ডুলিপি অনুসরনের নির্দেশ দেন (দেখুন খোলাফায়ে রাশেদীন, জীবন ও কর্ম লেখক মোহাম্মদ নাছের উদ্দীন অধ্যায় ৭)


কোরআনটির দৈর্ঘ্য ১০ ইঞ্চি। প্রস্থ ১ ফুট। উচ্চতা ৩ ইঞ্চি। ওজন সাড়ে ৭ কেজি। পৃষ্ঠা সংখ্যা ৩৭২।

এর সব কিছুই হযরত যায়েদের নেতৃত্বে একটি কমিটির মাধ্যমে করা হয়। ৬৫১ সালে তিনি সব হযরত যায়িদের পান্ডুলিপি রেখে বাকী সব পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দেন, এবং সব জায়গায় হযরত যায়িদের পান্ডুলিপির নকল পাঠানোর ব্যাবস্থা করেন। এক মাত্র কুফার হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ খলিফার পাঠানো পান্ডুলিপি গ্রহন করেনা তিনি নিজস্ব সংগৃহিত কিরাতের ওপর অনঢ় থাকেন। বিদ্রোহীরা এক্ষেত্রে খলিফাকে ব্লাসফেমী আইনে অভিযুক্ত করেন এবং গোড়া এবং ধর্মান্ধ সমর্থকদের সমর্থন লাভ করে।

প্রসঙ্গতঃ এখানে খুব জরুরী একটা বিষয় উল্লেখ্য করি, অনেক জায়গায়ই দেখবেন এই প্রসঙ্গে যারা ইসলাম নিয়ে বিতর্ক টানতে পছন্দ করে তারা দেখবেন কোথাও কোথাও বলে কোরানের নাকি ৭ টি ভার্সন আছে, মুলত এটা ৭ টি ভার্সন না একে আরবীতে হারফ বলে হারফ মানে উপভাষা। তারা বলতে চান যে কুরআন ঠিকভাবে সংরক্ষিত হয়নি এবং সাহাবীগণ আল কুরআনকে পরিবর্তন করে ফেলেছেন (নাউযুবিল্লাহ)। এই ৭ হারফ নিয়ে কোন বিভ্রান্তিতে পড়বেন না। হাদীসে আছে “নিশ্চয়ই কুরআন কে সাত হারফে নাযিল করা হয়েছে, সুতারাং সেটি তোমার কাছে সহজ মনে হয়, সেভাবে তিলওয়াত কর।” (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৪১৯) এখানে এ ব্যাপারে বিস্তারিত লেখার সুযোগ নাই, বিভিন্ন তাফসীরে এর বিশদ বর্ননা আছ। অন লাইনেও বেশ কিছু আর্টিকেল পাবেন এ ব্যাপারে।

৬৫৫ সালে খলিফা উসমান হজ্ব সমাপনান্তে মদিনায় অভিযোগকারীদের নিয়ে এক বৈঠকে বসেন সেখানে হযরত আলী, হযরত তালহা, হযরত যুবাইর হযরত মুয়াবিয়া উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে মুয়াবিয়া সর্বপ্রথম উঠে দাড়িয়ে তার বক্তব্যে বলেন, “তার (খলিফা) সম্পর্কে মানুষের মুখে নানা কথা শোনা যায়, যদি আপনারা এব্যাপারে কোন সিদ্ধান্তে পৌছান তবে প্রকাশ্যে বলেন, আমি তার জবাব দেব। হ্যা আমি এ কথাও বলে দিতে চাই যদি কারো খলিফা হবার সাধ জাগে তবে তার বা তাদের মনে রাখা উচিত যে, শেষ পর্যন্ত পেছন ফিরে পালানো ছাড়া তাদের ভাগ্যে আর কিছুই জুটবে না।" হযরত আলী মুয়াবিয়ার শেষ কথাটির ওপর কড়া হুশিয়ারি দিয়ে আর কোন কথা না বলে বসে পড়েন। (দেখুন ইসলামের ইতিহাস, প্রথম খন্ড, ইসলামিক ফাউন্ডেশান বাংলাদেশ)। বৈঠকে কোন সিদ্ধান্ত হয় না। হযরত উসমান নিজের পক্ষে বিভিন্ন অভিযোগকারীদের অভিযোগের জবাব দেন। কিন্তু তা কতজনকে কতটুকু সন্তুষ্ট করে তা বুঝা যায় না।

বৈঠক শেষে হযরত মুয়াবিয়া সিরিয়া গমনের আগে হযরত উসমান কে তার সাথে সিরিয়া যেতে বলেন কিন্তু তিনি মদিনা ছেড়ে সিরিয়া যেতে অস্বীকার করেন কারন সেটা হত তার নৈতিক পরাজয়। এব্যাপারে অনেক আলোচনা বিভিন্ন জায়গায় দেখবেন (দেখুন খোলাফায়ে রাশেদীন, জীবন ও কর্ম লেখক মোহাম্মদ নাছের উদ্দীন)

ওই সময় তৎকালীন ইসলামী দুনিয়া পাঁচটি গুরুত্বপূর্ন কেন্দ্রে বিভক্ত ছিল। সেগুলো হল ইরাকের কুফা, সিরিয়া জর্ডান ফিলিস্তিনের প্রানকেন্দ্র দামেস্ক, মিশরের রাজধানী ফুসতাত, ইরাকের আর এক সমৃদ্ধ নগরী বসরা এবং আরব উপদ্বীপের প্রান কেন্দ্র মদীনা। এক মাত্র সিরিয়া ছাড়া খিলাফতের অন্যান্য কেন্দ্র গুলো খলিফাকে অপসারনে অথবা হত্যায় বদ্ধ পরিকর হয়। এই সময় “হুব্বে আলী” বা "আলী প্রেম" কথাটি একটি স্লোগানে পরিনত হয়। লেখার এই পর্যায়ে এসে আমাকে লেখা আরো সংকুচিত করতে হচ্ছে, যদিও প্রথম থেকেই সেটা হচ্ছিল। কারন আমাকে খেয়াল রাখতে হচ্ছে আমি কোন বই বা প্রবন্ধ লিখছি না আমি ব্লগে লিখছি। সেক্ষত্রে অনেক ঘটনা বাদ দিয়ে হযরত উসমানের মৃত্যুর দিকে দৃষ্টি দেই।


লেইডেন ইউনিভার্সিটির লাইব্রেরীতে রক্ষিত কোরান শরীফের পাতা ৬৫০-৭০০ খ্রিঃ

কুফা, বসরা ও মিশর থেকে তিনটি সেনাবাহিনী খলিফাকে উৎখাতের লক্ষ্যে মদিনার দিকে অগ্রসর হয়, এই তিন ভাগে হযরত আলী, হযরত যুবাইর ইবনুল আওয়াম আর এক দল ছিল হযরত তালহার অনুসারী। তিনটি দল মদিনার উপকন্ঠে পৌছে তিন দলের প্রতিনিধিরা মদীনায় অবস্থানরত যার যার পছন্দের নেতাকে খলিফা হতে অনুরোধ করে। কিন্তু ওই রকম পরিস্থিতিতে উপরোক্ত তিন জনের কেউই বাইয়াত গ্রহনে রাজী হন না। এরপর কিছু ঘটনা ঘটে যার পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্রোহীরা যে যার এলাকায় ফেরত যেতে শুরু করে কিন্তু কিছু দূর যাবার পর এক চক্রান্তের কারনে আবার মদিনা ফেরত আসে এবং হযরত আলীকে খলিফা হবার জন্য চাপ দেয়। হযরত আলী রেগে গিয়ে বলেন, “এরূপ কাজে আমি কি করে তোমাদের সাহায্য করতে পারি” তখন তারা বললঃ “কিন্তু আপনিই তো পত্র দিয়ে আমাদের জানিয়েছিলেন যে আমরা যদি ফিরে আসি তবে আপনি আমাদের খলিফা উৎখাতে সাহায্য করবেন।” হযরত আলী উপস্থিত জন সাধারনের কাছে এ ধরনের কোন চিঠি লেখা অস্বীকার করেন এবং রাগ করে মদিনা ছেড়ে “আহজারুয যায়ত” নামক স্থানে চলে যান।

এক পর্যায়ে বিদ্রোহীরা তাকে (খলিফাকে) অবরোধ করে প্রায় ত্রিশ দিন খলিফাকে পদত্যাগের জন্য চাপ দেয় কিন্তু খলিফা রাজি হয় না। (কেন হয় না তার নানা বিধ কারন আছে যা এখানে স্থানাভাবে আলোচনা করা সম্ভব না) এর পর টানা দশ দিন তাকে গৃহে অবরুদ্ধ করে ফেলে এমন কি তার খাবার এবং পানি সরবারহ বন্ধ করে দেয়।

উসমান (রা) গৃহবন্দী হয়ে পড়লেন। ঘরের চারপাশে বিদ্রোহীরা। যত দিন যেতে লাগলো, তত বিদ্রোহী জড়ো হতে লাগলো বাহিরে, আগুনও ধরিয়ে দিল। মদিনা থেকে অনেক স্থানীয় মানুষ মক্কায় হজ্ব করতে গিয়েছে আগেই। তাই কাছের মানুষও কম উসমান (রা) এর। বিদ্রোহীরা বুঝতে পারলো, হজ্ব শেষ হয়ে গেলেই পুরো সাম্রাজ্য থেকে আসা হাজিরা উসমান (রা) এর পক্ষে মদিনা ছুটে আসবে, এর আগেই যা করবার তা করতে হবে। উসমান (রা) এর অনুসারীরা তাদের বিরুদ্ধে লড়ার অনুমতি চাইলো। কিন্তু তিনি মানা করলেন। এক মুসলিম আরেক মুসলিমের রক্ত ঝরাতে পারে না। কিন্তু আব্দুল্লাহ ইবনে জুবাইর (রা) এবং আলী (রা) এর দুই পুত্র হাসান (রা) ও হুসাইন (রা) গেট বন্ধ করে পাহারা দিতে লাগলেন।


উসমান (রাঃ) বলে এই কোরান শরীফকে মনে করা হয়

৬৫৬ সালের ১৭ জুন। যখন বিদ্রোহীরা দেখলো গেটে ভালোই পাহারা আছে, তখন মিসরীয় বিদ্রোহীরা প্রতিবেশীর বাড়ির দেয়াল বেয়ে উপরে উঠে ভেতরে নেমে পড়ল। গেটের পাহারা দেয়া সাহাবীরা জানলেনও না কী হলো। বিদ্রোহীরা উসমান (রা) এর কক্ষে চুপে চুপে ঢুকে পড়ল। তখন রোজা রাখা উসমান (রা) কুরআন পড়ছিলেন (উপরে সে কুরআনের ছবি আছে), তিনি যখন সুরা বাকারার ১৩৭ নং আয়াতে পৌঁছালেনঃ “অতএব তারা যদি ঈমান আনে, তোমাদের ঈমান আনার মত, তবে তারা সুপথ পাবে। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে তারাই হঠকারিতায় রয়েছে। সুতরাং এখন তাদের জন্যে আপনার পক্ষ থেকে আল্লাহই যথেষ্ট। তিনিই শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী। [ সুরা বাকারা ২:১৩৭ ]

খলিফার কক্ষে সর্ব প্রথম ঢুকেন হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা)এর সন্তান । এই একজন মাত্র সাহাবী কি কারণে যেন এই ফিতনায় জড়িয়ে পড়েছিল, তা বোধগম্য নয়। মুহাম্মদ বিন আবু বকর হযরত উসমান (রা)এর দাড়ি ধরে জিজ্ঞেস করে- হে মূর্খ বুড়ো! কোন ধর্মের উপর আছো তুমি? উসমান (রা)উত্তরে বলেন, ইসলাম ধর্মের উপর আছি। আমি মূর্খ বুড়ো নই। আমি আমীরুল মুমিনিন।

তখন মুহাম্মদ বিন আবু বকর বললেন, তুমি আল্লাহর কিতাবের হুকুম পরিবর্তন করে দিয়েছ।

হযরত উসমান বললেন, এই যে কিতাবুল্লাহ আমাদের সামনেই আছে, ভালো করে পড়ে দেখো।

তখন সে সজোরে দাড়ি টেনে ধরে বলল, আমরা কেয়ামতের দিবসে একথা বলতে চাই না ‘হে আল্লাহ! আমরা আমাদের নেতাদের অনুসরণ করেছি। তারা আমাদেরকে বিভ্রান্ত করেছে।’

আসলে মুহাম্মদ বিন আবু বকর ও তার কিছু বন্ধু মনে করেছিল আমীরুল মুমিনিনকে হত্যা করা বড় পুণ্যের কাজ এবং এই দায়িত্ব পালন করলে নাজাত পাওয়া যাবে। তখন মুহাম্মদকে উদ্দেশ্য করে উসমান (রা) বললেন, বেটা! তুমি যে দাড়ি ধরে টানাটানি করছ সে দাড়িকে তোমার পিতা সম্মান করতেন। এই কথা শোনার সাথে সাথে মুহাম্মদ বিন আবু বকর লজ্জিত হয়ে সরে গেলেন।

এরপর বিদ্রোহীরা তার ঘরে প্রবেশ করে সজোরে মাথায় আঘাত করল। উসমান (রা) এর স্ত্রী নাইলা নিজের দেহ দিয়ে উসমান (রা)-কে রক্ষা করতে গেলেন, হাত উঁচু করে তরবারির আঘাত ঠেকাতে গেলেন। নাইলা-র আঙুলগুলো কেটে গিয়ে মাটিতে পড়ে গেল। এরপরের আঘাতেই শহিদ হলেন উসমান (রা)। তাঁর দাসেরা তাঁকে বাঁচাতে গেলে একজন নিহত হয়, আর আরেকজন এক বিদ্রোহীকে মারতে সক্ষম হয়। [কথিত আছে, উসমান (রা) এর রক্তে ভেজা কুরআন তাশখন্দের মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে।]

বিদ্রোহীরা উসমান (রা) এর লাশ বিকৃত করতে চেষ্টা করল। কিন্তু তাঁর স্ত্রী নাইলা আর উম্ম আলবানিন লাশের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে রক্ষা করতে চাইলেন, তারা চিৎকার করতে থাকলেন। বিদ্রোহীরা পালিয়ে যাবার সময় ধনী উসমান (রা) এর বাসা লুট করে যায়, এমনকি মেয়েদের নেকাব পর্যন্ত নিয়ে যায়। যখন গেট থেকে সাহাবীরা এসে পৌঁছালেন ততক্ষণে সব শেষ, তারা কিছু করতে পারলেন না। মাঝখান দিয়ে হাসান (রা) ও মারওয়ান আহত হন।

টানা তিন দিন উসমান (রা) এর লাশ পড়ে ছিল বাসায়। অবশেষে মহানবীর এক জন স্ত্রী উম্মে হাবীবা মসজিদে নববীর সিড়িতে দাঁড়িয়ে বিদ্রোহীদের উদ্দেশ্যে বললেন “হে বিদ্রোহীরা তোমরা যদি উসমানকে সমাহিত করার অনুমতি না দাও তবে আমি রাসুলের পত্নী ঘোষনা করছি যে আমি আমার মাথার চুল উন্মুক্ত করে রাস্তায় নেমে পড়ব এবং আমিই উসমানের লাশ সমাহিত করব।” নবী পত্নীর এই ঘোষনার পর বিদ্রোহীরা কিছুটা নমনীয় হয় এবং লাশ দাফনের অনুমতি দেয়। নাইলা তখন কয়েকজন সমর্থকের সহায়তায় তাঁর দাফন দেবার চেষ্টা করলেন। মাত্র ১২ জন কাছের মানুষ পাওয়া গেল। গোধূলির সময় লাশ নিয়ে যাওয়া হলো, কোনো কফিন বা খাটিয়া পাওয়া যায়নি। তাঁকে কোনো গোসল দেয়া হয়নি, কারণ ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী শহীদদের কোনো গোসল নেই। কাফনের কাপড়ও পরানো হয়নি। যে কাপড়ে তিনি মারা যান, সে কাপড়েই তাঁকে কবরে নিয়ে যাওয়া হয়।


উসমান (রা) এর কবর। ছবিসূত্রঃ Wikimedia Commons

আলী (রা), হাসান (রা), হুসাইন (রা) ও অন্যরা লাশ বহন করলেন। রাতের আঁধারে নাইলা পেছন পেছন আসছিলেন একটি কুপিবাতি নিয়ে। কিন্তু সেটাও নিভিয়ে দিতে হলো যেন বিদ্রোহীরা টের না পায়। মদিনার জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে পৌঁছানোর পর দেখা গেলো বিদ্রোহীরা টের পেয়ে সেখানে হাজির। তারা মুসলিম কবরস্থানে উসমান (রা)-কে দাফন করতে দেবে না। নিরুপায় হয়ে তাঁকে দাফন করা হলো পেছনের ইহুদী কবরস্থানে। পরবর্তীতে উমাইয়া খলিফারা এই দুই কবরস্থানের প্রাচীর ভেঙে দুই কবরস্থান এক করে ফেলেন, যেন উসমান (রা) মুসলিম কবরস্থানে শায়িত হতে পারেন।জানাজা পড়ালেন জাবির (রা)। কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া লাশ কবরে নামানো হলো। দাফনের পর নাইলা কিছু বলতে চাইলেন, কিন্তু নীরবতা বজায়ে রাখবার জন্য তাকে চুপ থাকতে হলো। নীরবেই চলে গেলেন উসমান (রা)। (দেখুন এবং চাইলে ডাউন লোড করে এই মুল্যবান বই দুটো পড়তেও পারেন The Biography of Uthman Ibn Affan (R.A) লেখক Dr. Ali Muhammad Sallaabee এবং Uthman bin Affan (R.A) History of Islam )

হযরত আনাস (রা) বললেন, “হযরত ওসমানের জীবদ্দশা পর্যন্ত আল্লাহর তরবারি কোষবদ্ধ ছিল। তার শাহাদাতের পর অদ্য এই তরবারি কোষমুক্ত হবে এবং কেয়ামত পর্যন্ত উহা কোষমুক্তই থাকবে।” বাস্তবিকই সেই যে তরবারি কোষমুক্ত হয়ে নিজের ভাইদের রক্ত ঝড়ানো শুরু হয়েছে যা অদ্যাবদি চলছে।

নোটঃ এই লেখা গুলো লিখতে গিয়ে আমি ধর্মীয় দৃষ্টিকোন ব্যাবহারের থেকে ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোনের প্রতি বেশী খেয়ালা রেখেছি, তারপরো কোথাও যদি কোন ভুল কারো কাছে পরিলক্ষিত হয় দয়া করে রেফারেন্স সহ জানালে কৃতজ্ঞতার সাথে ঠিক করে দেব। পরিসরের কারনে অনেক কিছুই বাদ দিয়ে যেতে হয়েছে যা আমার ইচ্ছা কৃত না একান্ত অনিচ্ছাকৃত।

পরবর্তী পর্বঃ খোলাফায়ে রাশেদিন হযরত আলী ইবনে আবু তালিব (রাঃ)

মন্তব্য ৪৮ টি রেটিং +১৯/-০

মন্তব্য (৪৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মার্চ, ২০২০ রাত ১০:১৬

করুণাধারা বলেছেন: প্রথম অনুচ্ছেদ পড়ে আর ছবিগুলো দেখে লাইক। পুরোটা সময় নিয়ে পড়তে হবে, পড়ে আসব আবার।

০২ রা মার্চ, ২০২০ রাত ১১:০৯

শের শায়রী বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ বোন।

২| ০২ রা মার্চ, ২০২০ রাত ১০:২৬

রাজীব নুর বলেছেন: মহামূল্যবান ঘটনাবলি সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় তুলে ধরেছেন।
যে ঘটনাগুলো কোনো ব্যক্তির জীবনকে সুন্দর করে সাজানোর ক্ষেত্রে পরশ পাথরের মতো কাজ করবে।

০২ রা মার্চ, ২০২০ রাত ১১:১০

শের শায়রী বলেছেন: পাঠে এবং মন্তব্যে অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা প্রিয় ভাই

৩| ০২ রা মার্চ, ২০২০ রাত ১১:০০

করুণাধারা বলেছেন: শেষ দিকের কয়েক অনুচ্ছেদ ( দাফন সংক্রান্ত) দুবার লেখা হয়েছে।

০২ রা মার্চ, ২০২০ রাত ১১:১১

শের শায়রী বলেছেন: অশেষ কৃতজ্ঞতা সহকারে ঠিক করে দেয়া হয়েছে বোন।

৪| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ রাত ১:৩৬

নিভৃতা বলেছেন: কী নির্মম! কী করে মানুষ এত নিষ্ঠুর নির্বোধ হতে পারে!
অনেক কিছুই জানতাম না ওসমান (রা: ) সম্পর্কে। আজ জানলাম আপনার কল্যাণে।

পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায়।

০৩ রা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৫:২৫

শের শায়রী বলেছেন: হ্যা বোন উনার মৃত্যু কারবালার ঘটনার থেকে কোন অংশে কম হৃদয় বিদারক না। অথচ কেন যেন অধিকাংশ ধর্মবেত্তারাও ইগনোর করে যায়। আমি অনেক সংক্ষেপে লিখছি। মুল ব্যাপারটা এর থেকেও রূঢ়। আর একটা পর্ব লেখার ইচ্ছা আছে হযরত আলীকে নিয়ে তবে কয়েকটা দিন সময় লাগবে তাকে নিয়ে লিখতে।

পাঠে এবং মন্তব্যে অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।

৫| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ রাত ৩:১৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



গণীমতের মালামাল মদিনায় আসছিলো ও সৈনিকেরা ভাগ করে নিচ্ছিল; ইহা ধর্ম নাকি লুন্ঠন?

০৩ রা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৫:৪৫

শের শায়রী বলেছেন: মুরুব্বী আপনি কি একটা প্রশ্নও করতে পারেন না ঠিক মত? আবার ব্লগে তো ডেইলি দুই চারটা পোষ্ট দেন দেশ আর বিশ্বকে উদ্ধার করে। গনীমতের মালের সাথে ধর্মের সম্পর্ক কি? আসেন আপনারে কিছু জ্ঞান দেই, কিন্তু আপনার মাথায় কতটুকু ডুকবে তা নিয়ে আমার বিরাট সংশয় আছে গনিমতের মাল হচ্ছে যুদ্ধে শত্রুপক্ষের স্থাবর অস্থাবর সব সম্পদ যা বিজয়ী দলের সদস্যদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে দেয়া হয়। এ ব্যাপারে বিস্তারিত মাসালা আছে, সেদিকে না যাই।

পৃথিবীর কোন যুদ্ধে বিজয়ী পক্ষ বিজিতের সম্পদ নেয় না দেখাতে পারেন? নাকি এক মাত্র এটা মুসলমানরাই নিত? আপনার সাধের আমেরিকাকে যখন ইরাকীরা বলল আর আমেরিকান সৈন্যদের খরচ দিতে পারবে না নগদে চোখ পালটি দিয়ে আসল রূপ দেখাইয়া দিল কয়দিন আগে কি তা চোখে পড়ে না? আপনার তো আবার চোখের সমস্যা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সারা বিশ্ব জার্মানীর কাছ থেকে ক্ষতি পুরনের নামে যা নিছে আরবীতে তাই গনীমত। কি বুজে আসছে? ধর্ম আর গনিমত এক না, এই সেন্স টুকু মাথায় নাই আপনার আবার প্রশ্ন রাখেন। আরো পরিস্কার করে দেই, দুইশত বছর বৃটিশরা এদেশ লুন্ঠন করছে, পাকিরা করছে ২৫ বছর। এখন কি বুজে আসছে লুন্ঠন আর গনীমত আর ধর্ম কি? অবশ্য ধর্ম কি সেটা আপনার মাথায় যে ঢুকবে না তা নিশ্চিত কিন্তু লুন্ঠন আর বিজিতের মালের অধিকার যা জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবাই করে এই সুক্ষ্ম পার্থক্য বোজার মত জ্ঞান সবার হয় না। খালি আমেরিকান নিউজ পেপার পইড়া ব্লগে পোষ্ট দিয়েন না। বাইরের পড়াশুনাও কিছু কইরেন।

৬| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ ভোর ৬:২৭

কাছের-মানুষ বলেছেন: অনেক কিছুই জানতাম না, এগুলো কখনো ওয়াজেও সেভাবে আলোচনা করতে দেখিনি।
আপনি চালিয়ে যান, অনেক কিছু জানা হল।

০৩ রা মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৪

শের শায়রী বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা প্রিয় ভাই পাঠে এবং মন্তব্যে।

৭| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:২৮

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: পাঠে এবং মন্তব্যে অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা প্রিয় ভাই

ভালোবাসা নিরন্তর।

০৩ রা মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৬

শের শায়রী বলেছেন: আমার তরফ থেকেও ভালোবাসা নিরন্তর প্রিয় ভাই।

৮| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:৩১

রানার ব্লগ বলেছেন: যা দেখছি তা হোল নবী মুহাম্মাদ (সঃ) এর মৃত্যুর পর সাহাবিরা রাজনৈতিক সুবিধায় আদায়ে বেশি ব্যাস্ত ছিল ।

০৩ রা মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৮

শের শায়রী বলেছেন: রাইট রানার ভাই, রাসুলের ওফাতের পর প্রজন্ম থেক প্রজন্ম প্রবাহিত গোত্রীয় রাজনীতির বাইরে তারা তখনো যেতে পারে নি।

৯| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:১৭

নীল আকাশ বলেছেন: ভালো লিখেছেন। উনাকে নিয়ে আমার তেমন কোন পড়াশুনা নেই। লেখা চালিয়ে যান। সাথেই আছি।
খুব সুন্দর লিখেছেন। বিস্তারিত ভাবে। অভিনন্দন।

০৩ রা মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৮

শের শায়রী বলেছেন: মন্তব্যে অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রিয় ভাই। কিন্তু বিস্তারিত ভাবে লিখা আর হয়ে ওঠে নি, আসলে এত ঘটনা সামারি করে লেখা মারাত্মক কষ্ট সাধ্য একটা ব্যাপার এই সিরিজটা লিখতে গিয়ে আমি টের পেয়েছি। অনেক অনেক ঘটনা আমাকে বাদ দিতে হয়েছে স্থানাভাবের জন্য। তবে সেটা আমার ইচ্ছাকৃত না একান্ত অনিচ্ছাকৃত। আল্লাহ আমাকে মাফ করুক আমার এই অনিচ্ছাকৃত লেখার কৃচ্ছতার জন্য। উনাদের জীবনের ভালো কাজ গুলো তো আমি উল্লেখ্যই করিনি। করিনি কারন সেগুলো মোটামুটি সবার জানা চেষ্টা করছি মোটামুটি অজানা বিষয় গুলোকে ধারনা দেবার। আর সেকালের পরিস্থিতি বুজতে গেলে পুরো ঘটনাগুলোকে বিস্তারিত আলোচনায় না আনলে অনেক কিছুই ধোঁয়াশা থেকে যাবে। আমার বিশ্বাস কেউ কেউ হয়ত পুরো ব্যাপারগুলো বিস্তারিত জানতে উৎসাহী হবে এই লেখা পড়ে। সেটাই আমার পাওনা। নিশ্চয়ই সাহাবীরা রাসুলের সকল উম্মতের মধ্যে শ্রেষ্ঠতর।

১০| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:৩৬

নতুন নকিব বলেছেন:



একটু বড় লেখা বিধায় সময় নিয়ে পড়ার ইচ্ছে। বিষয় নির্বাচনে সাধুবাদ। পাঠান্তে পুনরায় মন্তব্যে আসার প্রত্যাশা। +++

০৩ রা মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩০

শের শায়রী বলেছেন: অশেষ কৃতজ্ঞতা জানবেন। আপনার মুল্যবান মন্তব্যের জন্য সাগ্রহে অপেক্ষা করছি প্রিয় ভাই।

১১| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:০৯

ভুয়া মফিজ বলেছেন: একটু চোখ বুলাইলাম। বুলাইতে গিয়া দেখলাম.....কতোকিছুই জানি না। স্বীকার করতে আপিত্তি নাই, আমি হইলাম গিয়া অকামের মুসলমান। নিজের ধর্ম সম্মন্ধেই জানি খুবই কম। সময় নিয়া মনোযোগ দিয়া পড়তে হইবো।

আপনেরে দেখলে হিংসা হয়। এতো সময় পান কই? আমি তো এদিকে আমার ব্যাকাত্যারা লাইফটারে সোজাই করতে পারতাছি না। কুত্তার ল্যাজের মতো হয়া গ্যাছে গা ইদানীং! :((

০৩ রা মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৬

শের শায়রী বলেছেন: মফিজ ভাই, আমাকে দেখলে হিংসা না করুনা করবেন। আল্লাহ যেন আমার মত অবস্থায় আমার শত্রুকেও না ফালায়। তবে শুকুর আলহাদুলিল্লাহ, আল্লাহ যে অবস্থায় রাখছে তাতেই খুশী। আর এত সময় পাওয়ার এক বিরাট রহস্য আছে, সে রহস্য না অমীমাংসিতই থাকুক :P অনেক ভালো আছেন আপনারা, হিংসা হয় কেন যে সুযোগ থাকা অবস্থাতেও বিদেশে সেটেল হওয়ার সুযোগ হেলায় হারালাম? তবে এটার, মানে সেটেল না হওয়ার কারন টা বলি সেটা হল মুর্খের মত সো কল্ড "দেশ প্রেম" =p~

১২| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৫:১৭

আখেনাটেন বলেছেন: বেশ সময় নিয়ে পড়তে হল। ভালো লিখেছেন। একটি প্রশ্ন, হযরত আলী (রা:) যদি বিদ্রোহী হয়ে কুফা থেকে খলিফাকে অপসারণের জন্যই আসেন, তাহলে উনি ও উনার ছেলেরা আবার খলিফার দাফনে সাহায্য করছেন এর বিস্তারিত জানতে পারলে ভালো হত।

০৩ রা মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৯

শের শায়রী বলেছেন: প্রথমেই ধন্যবাদ মিশররাজ ফারাও আখেনাটেন ভাইকে। আসলে হযরত আলী (রাঃ) বিদ্রোহের সময় কুফা ছিলেন না, তিনি মদীনাতেই ছিলেন, কুফা থেকে তার অনুসারীরা আসছিলো। দেখুন আমি পোষ্টে কি লিখছি কুফা, বসরা ও মিশর থেকে তিনটি সেনাবাহিনী খলিফাকে উৎখাতের লক্ষ্যে মদিনার দিকে অগ্রসর হয়, এই তিন ভাগে হযরত আলী, হযরত যুবাইর ইবনুল আওয়াম আর এক দল ছিল হযরত তালহার অনুসারী। তিনটি দল মদিনার উপকন্ঠে পৌছে তিন দলের প্রতিনিধিরা মদীনায় অবস্থানরত যার যার পছন্দের নেতাকে খলিফা হতে অনুরোধ করে। কিন্তু ওই রকম পরিস্থিতিতে উপরোক্ত তিন জনের কেউই বাইয়াত গ্রহনে রাজী হন না। এরপর কিছু ঘটনা ঘটে যার পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্রোহীরা যে যার এলাকায় ফেরত যেতে শুরু করে কিন্তু কিছু দূর যাবার পর এক চক্রান্তের কারনে আবার মদিনা ফেরত আসে এবং হযরত আলীকে খলিফা হবার জন্য চাপ দেয়। হয়ত সার সংক্ষেপ লেখার কারনে বুজতে সমস্যা হয়েছে ভাই, সেটা একান্ত আমার ব্যার্থতা।

আর আলী (রাঃ) যদিও খলিফা হতে চেয়েছিলেন কিন্তু তিনি কোন দিনই ওসমান (রাঃ) এর এমন পরিনতির বিনিময়ে খলিফা হতে চান নি যার কারনে দেখা যায় আলী (রাঃ) নিজে উপস্থিত না থাকলেও নিজের ছেলেদের খলিফার পাহারায় নিযুক্ত করেছিলেন। আপনি এব্যাপারে ভালো যে কোন একটা বই পড়লেই পরিস্কার ধারনা পাবেন। আসলে ব্লগের এই স্বল্প পরিসরে এত বিরাট পরিব্যাপ্তি আটানো প্রায় অসম্ভব যার কারনে ব্যাখ্যা দিতে পারিনি।

আপনি চমৎকার একটা পয়েন্টে আলোকপাত করছেন। আবারো অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা।

১৩| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৫:২৯

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:

কত কিছুই যে অজানা। এসব নিয়ে কোথাও আলোচনা হয়না।
মহা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আপনি এগুচ্ছেন। চমৎকার লাগছে আমার।
চলতে থাকুন। সাথেই থাকবো।
অনেক ধন্যবাদ অসাধারণ পোস্টের জন্য। ++

০৩ রা মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৬

শের শায়রী বলেছেন: প্রিয় ভাই, চেষ্টা করতেছি কিছু অজানা বিষয়ে আলোকপাতের। অজানা বললাম এই কারনে আমি নিজেও এত দিন প্রায় কিছুই জানতাম না এই ব্যাপারে, ইদানিং লিখতে গিয়ে জানছি।

ভালো লাগায় অশেষ কৃতজ্ঞতা আর এক পর্ব লিখব হযরত আলী (রাঃ) কে নিয়ে তবে সে পর্ব লিখতে কয়টা দিন লাগবে এখন পড়াশুনা করছি উনাকে নিয়ে।

১৪| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১১

চাঁদগাজী বলেছেন:


লেখক বলেছেন, "কিন্তু আপনার মাথায় কতটুকু ডুকবে তা নিয়ে আমার বিরাট সংশয় আছে গনিমতের মাল হচ্ছে যুদ্ধে শত্রুপক্ষের স্থাবর অস্থাবর সব সম্পদ যা বিজয়ী দলের সদস্যদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে দেয়া হয়। এ ব্যাপারে বিস্তারিত মাসালা আছে, সেদিকে না যাই। "

-ইসলামের রাজত্বের শুরুতে বেদুইনরা রাজত্বের কিছুই বুঝতো না; অন্যের যায়গা দখল, সম্পদ দখল, নারী দখলই বেদুইনদের জীবনের অংশ ছিলো। ওরা মদীনায় আশ্রয় নিয়ে, মদীনার ইহুদীদের হত্যা করে, রাজত্বের বীজ বপন করেছিলো।

০৩ রা মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৫

শের শায়রী বলেছেন: কিসের মধ্যে কি মুরুব্বী? যেই আপনারে গনিমতের ব্যাখ্যা দিলাম অমনি বাইন মাছের মত পিছলাইয়া চইলা গেলেন "ইসলামের রাজত্বের শুরুতে বেদুইনরা রাজত্বের কিছুই বুঝতো না; অন্যের যায়গা দখল, সম্পদ দখল, নারী দখলই বেদুইনদের জীবনের অংশ ছিলো। ওরা মদীনায় আশ্রয় নিয়ে, মদীনার ইহুদীদের হত্যা করে, রাজত্বের বীজ বপন করেছিলো।" এই বিখ্যাত ইতিহাসটা আপনি কোথায় পাইছেন? নিজে নিজে বানাইলেন নাকি? উমর (রাঃ) কে হত্যা করে এক অগ্নি উপাসক পারসিক এর মানে হইল ইসলামের চুড়ান্ত শিখরে থাকা অবস্থাতেও সেখানে প্রচুর অমুসলিম বাস করত। আর ইসলামের শুরুতে মুসলমানরা মদীনায় কি করছে না করছে তার আপনি কিছুই জানেন না কারন ইতিহাসে আপনার জ্ঞান শুন্য। আপনি নজরুলের কবিতাকে বলেন নূরু ভাইর কবিতা =p~



তো ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ ধর্ম বাদ দেন। আপনার প্রিয় স্বদেশ দেবালয় আমেরিকা কি করছে তা কি জানেন? আমেরিকায় উপনিবেশ শুরুর সময় কাতারে কাতারে নেটিভ আমেরিকান দের (যাদের কে চলিত ভাষায় "রেড ইন্ডিয়ান" বলা হয়) হত্যা করে, নারীদের ধর্ষন করে আজকের সো কল্ড আপনার আমেরিকা বানাইছে, কি দেব নাকি এক খান পোষ্ট দিয়া ওই সব কাহিনী নিয়া? ইজ্জত কিন্তু তাইলে কিছু থাকবে না ব্লগে ;)

১৫| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


ইসলামের অধীনে ১ম আরব সাম্রাজ্য গড়ে উঠে মদীনা দখল করে; ওরা মদীনায় আশ্রয় নিয়ে, মদীনার ইহুদীদের হত্যা করে, তাদের ভুমি, সম্পদ, নারীশিশু দখল করে রাজত্বের স্বাদ পেয়েছিলো; সেটাই তাদের শক্তি হয়ে উঠেছিলো।

০৩ রা মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৭

শের শায়রী বলেছেন: একই প্রশ্ন কয়বার করেন মুরুব্বী? আবারো কি একই উত্তর দিমু? উপ্রে কিন্তু হাল্কা দিছি :P

১৬| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৫

ইসিয়াক বলেছেন: অনেক কিছুই জানতাম না । জেনে ভালো লাগলো।
আপনার পোষ্টগুলোর পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করে রেখেছি। অফ লাইনে পড়বো বলে ।কারণ এই পোষ্টগুলো বেশ কয়েকবার না পড়লে মাথায় ঠিকমতো ঢুকবে না। =p~
প্রতিটা পোষ্টই অসাধারণ।
একটু দেরী হয়ে গেলো কমেন্ট করতে ।বেশ কিছু গল্প ও একটি উপন্যাসে হাত দিয়েছি তাই ব্লগে ঠিত মতো সময় দিতে পারছি না।
শুভেচ্ছা ও শুভকামনা নিরন্তর।

০৩ রা মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৫

শের শায়রী বলেছেন: প্রিয় কবি এখন আর শুধু কবি না, গল্পকার ও বটে। লেখা গুলো সিরিজ আকারে ব্লগে দিয়েন তাইলে আমরাও দেখতে পাব। তবে একটা ব্যাপার বইলা যাই আপনি পছন্দ করেন আর না করেন আপনারে আমি কিন্তু কবি হিসাবেই কেন যেন দেখতে ভালো লাগে :) পাঠে এবং মন্তব্যে অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রিয় ভাই।

১৭| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫০

ভুয়া মফিজ বলেছেন: সেটেল না হওয়ার কারন টা বলি সেটা হল মুর্খের মত সো কল্ড "দেশ প্রেম" আপনে কইছেন, ঠিক আছে....বুঝছি। কিন্তু অনেকেই মিন কইরা বলে যে, যারা বিদেশে সেটল্ড, তাগো দেশপ্রেম কম! অত্যন্ত হাস্যকর কথা। ভাবখানা এমন যে হ্যারা দেশে থাইক্কা দেশরে ভালোবাইস্যা উল্টাইয়া ফালাইতাছে। সরকারী লোকজনের মধ্যে এই মনোভাব আরো প্রবল। কিন্তু এরাই আবার প্রবাসীদের রেমিটেন্স এর টাকা মাইরা বিদেশে বাড়ী কিনে। এই ফাউলগুলার জন্যই দেশটার এই দুরবস্থা।

আর সব বাদ দ্যান। ভালো-মন্দ আপেক্ষিক ব্যাপার, বিরাট আলোচনা-সাপেক্ষ। তয়, এক কথায়.....দেশের তুলনায় স্ট্রেসহীন লাইফ। শান্তিতে আছি! :)

যাউকগ্গা, কোন পোষ্টে ব্যাক্কলের মতো কি কইতাছি! স্যরি। :(

০৩ রা মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৪

শের শায়রী বলেছেন: মফিজ ভাই, প্লীজ ভুল বুজবেন না, কর্ম উপলক্ষ্যে জীবনের একটা বিরাট সময় কাটছে বিভিন্ন দেশে দেশে ইন ফ্যাক্ট জব ন্যাচারের জন্য আমার কর্মক্ষেত্রই ছিল দেশের বাইরে অতি সামান্য কিছু সময় দেশে। আমি দেখছি বিদেশে যারা আছে তাদের অধিকাংশ যদি বলেন আরো স্পেসিফিক হইলে আমার দেখা ৮০% মানুষই যারা বিদেশে থাকে তারা যথার্থ দেশের জন্য ভাবে এবং বিভিন্ন ভাবে অবদানের চেষ্টা রাখে সেটা যে শুধু রেমিট্যান্স দিয়া তা কিন্তু না। আর ২০% আছে যারা যথার্থ রাজাকার টাইপের বিদেশে গিয়ে দেশের নিজের আত্মীয় স্বজন ইভেন মা বাবা ভাই বোন কেও ভুলে গেছে। আমি আসলে ওই লাইনটা লিখছি নিজের নির্বুদ্ধিতাকে উপহাস করে।

আর আমার জন্য দোয়া রাখবেন। যে ব্যাপারটা আমার খুব প্রয়োজন এখন প্রিয় ভাই। আপাতত এইটুকুই থাকুক :) আমাগো (মানে প্রোপিক) প্রজাতি তো আবার সিরিয়াস হইতে পারে না, দরকারো নাই। জীবন টাকে হেসে খেলে উড়িয়ে দেই কি বলেন :P

১৮| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৫

ইসিয়াক বলেছেন: প্রিয় ভাইজান, কবিতা লেখা আমি কোন দিনই ছাড়বো না। আপনাকে কথা দিলাম।
ছোটবেলার থেকে আমার গল্প লেখার খুব শখ । অনেক প্লট ছোট আকারে লেখা ছিলো। আলসেমীতে কোন লেখাই শেষ করা হয়নি তখন।একদিন বাতিল বই খাতার সাথে আমার পাঁচশো কবিতা ও ছোট গল্পের প্লটের খাতা , আমার গিন্নি বিক্রি করে দিলেন। কি যে মনের কষ্ট কি আর বলবো । আমি এখনো ভুলতে পারিনা সেই কথা।
তাই নতুন করে আবার গল্প লিখছি।
শুভকামনা।

০৩ রা মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৪

শের শায়রী বলেছেন: প্রিয় কবি, একটু পার্সোনাল হই, আপনি নির্ধিদ্ধায় আমার থেকে বয়সে অনেক ছোট, সে হিসাবে বড় ভাইর অনুরোধ আপনি কবিতা কোন দিন ছাড়বেন না। আপনাকে কবিতাতে ভালো মানায় এর মানে এই না যে সাহিত্যের অন্য শাখায় আপনি বিচরন করবেন না, অবশ্যই করবেন।

আপনাকে ছোত একটা কাহিনী বলি, যদিও এর সত্যতা কতটুকু জানি না তবে খুব সম্ভবতঃ সত্য নিউটন যখন তার বিখ্যাত মহাকর্ষ সুত্র খাতায় লিখছিলো এক দিন তার পোষা বিড়াল সেই খাতার পাশে রাখা মোমবাতি অথবা ল্যাম্প উল্টাইয়া খাতায় ফালাইয়া দেয়, নিউটনের সব লেখা এক নিমিষে পুড়ে ছাই। কিন্তু সে একবারো না ভেবে আবার প্রথম থেকে সেই কষ্ট সাধ্য হিসাব নিকাষ লেখা শুরু করে।

এদিয়ে আমি বুজাতে চেয়েছি ভাবী যাই করুক তাতে খুব একটা ক্ষতি বৃদ্ধি হবে না, আপনি আবার নতুন করে লিখুন দেখবেন আগের থেকে ভালো হয়েছে।

ভালোবাসা নিরন্তর প্রিয় কবি।

১৯| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ রাত ৮:০৭

আলামিন১০৪ বলেছেন: প্রকৃত ঘটনা আল্লাহ ভালো জানেন। তিনি কিয়ামত দিবসে ফয়সালা করে দিবেন।

০৩ রা মার্চ, ২০২০ রাত ৮:২৯

শের শায়রী বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যে। এখানে যা লেখা হয়েছে তা যথাযথ রেফারেন্স সহকারেই লেখা হয়েছে, তবে হ্যা এর বাইরেও কিছু নিশ্চয়ই আছে যা ইতিহাসে আসবে না এত দিনপর পর স্বাভাবিক ভাবেই তার ফয়সালা এক মাত্র আল্লাহ দিবেন। আর আমি বলি এগুলো জানা অজানায় কিছু আসে যায় না, আল্লাহর রাসুল বলছেন তার উম্মতদের মাঝে সাহাবীরাই শ্রেষ্ঠ। এটাই শেষ কথা আমার কাছে তখন যাই ঘটুক না কেন। তবে জানতে আমার আপত্তি নেই।

আবারো ধন্যবাদ আপনাকে।

২০| ০৪ ঠা মার্চ, ২০২০ সকাল ৭:১৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


ব্লগার ইসিয়াক বলেছেন, " একটু দেরী হয়ে গেলো কমেন্ট করতে ।বেশ কিছু গল্প ও একটি উপন্যাসে হাত দিয়েছি তাই ব্লগে ঠিত মতো সময় দিতে পারছি না। "

এই ব্লগার ১০০০ গল্প ও ৫টা উপন্যাসে হাত দিলে ভালো হতো, সামু একটু শ্বাস নিতে পারতো; ব্লগে অক্সিজেনের অভাব হয়ে যাচ্ছে।

০৪ ঠা মার্চ, ২০২০ সকাল ৭:৫৩

শের শায়রী বলেছেন: ব্লগে আপনার কামডা কি? ঘুইরা ঘুইরা মাইনষের লগে মানুষের সাথে কাইজ্জা করা? কাম না থাকলে ঘরে বইসা কাইজ্জা করেন।

২১| ০৪ ঠা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:৫৪

হাসান রাজু বলেছেন: পোস্ট গুলো পড়ছি আর ভাবছি কি পরিমান কষ্ট করছেন । পোস্ট পড়ে একটা মন্তব্য না করলে স্বার্থপর স্বার্থপর লাগে।

০৪ ঠা মার্চ, ২০২০ রাত ৮:২৩

শের শায়রী বলেছেন: প্রিয় হাসান ভাই, বিশ্বাস করেন এই ধরনের মন্তব্য পাওয়ার পর আর কোন কষ্ট, কষ্ট মনে হয় না। অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রেরনা দায়ক মন্তব্যে।

২২| ০৫ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:৪২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আত্মসমপর্ণের যে সত্যটা মহানবী দিয়ে গেছেন অতি অল্প সময়েই সেই মূল জ্ঞান অন্তর্হিত হয়ে গেল!

সেই আয়াত প্রনিধান যোগ্য- আমি চলে গেলে কি তবে তোমরা পূর্ব ধর্মে ফিরে যাবে?
আক্ষরিক না গেলেও চেতনায় ঠিকই ফিরে গেছে! ক্ষমতা, স্বার্থ, অজ্ঞানতা আর অন্ধু অনুসরনে!

মোহাম্মদ সা: এর হাকীকত যে সমর্পিত চেতনা- সেই হাকীকতে আজো খুব অল্প প্রকৃত মুসলিম পৌঁছতে পেরেছন।
সেখানে পৌছলে খিলাফত বোঝা মনে হবে। হুব্বে ইলাহী তাকে সর্বদা সোজা সরল পথে রাখবে।
দায়িত্ব পালনে সর্বদা কম্পমান থাকবে ইনসাফ রক্ষায়।

পোষাকী ইসলামে যার ছিটেফোটাও দেখিনা। তাদের চেহারায় সেই সমপর্ণের নূর খেলে না।
তাদের গায়ে সেই জান্নাতি সুবাস তৈরী হয় না।
তাদের আচরণে সেই প্রেমালোক ফোটানা- যা দেখে আমজনতা ঝাপিয়ে পড়বে সত্যান্বেষনের প্রেমে।

মাওলা আলী ক: - এর নিরবতা, বাইয়াত গ্রহণইতো সেই মোহাম্মদী হাকীকতী আনুগত্যের শ্রেষ্ঠ প্রমাণ। তিনি যদি বিদ্রোহ করতেন, যার নামে যুদ্ধের ময়দান কাঁপতো.. অবশ্যই একটা আলাদা স্তর পেতেন কিন্তু ইসলামের হয়তো রুপ হতো ভিন্ন।

তবে আপনার ঐতিহাসিক সূত্র এবং তথ্যভিত্তিক উপাত্তের মাঝে একটু প্রেমোপাত্ত রাখতে চাই- আইনের জন্য যেমন মানুষ নয়, মানুষের জন্যই আইন, তেমনি শরিয়তের জন্য মুসলিম নয়, মুসলমানের জন্যই শরীয়ত। সেই মুসলমানের প্রথম বিশ্বাসের প্রথম প্রেম যে রাসূল সা: তেমনি উনার অংশ পাক পাঞ্জাতন । তাদের ভালবাসায় কোন শর্ত থাকতে নেই। নিরংকুশ প্রেমের হকদার তিনারা। যা ঈমানেরও অংশ।
শিয়াইজমে ক্ষমতা এবং গোত্রীয় আধিপত্যবাদীতা থাকলে থাকতেও পারে, কিন্তু পাক পাঞ্জাতনের প্রেমে যেন আমরা শিয়া ট্যাগিং না করি বা সে ভয়ে পিছিয়ে না পড়ি।

অনন্য সিরিজের প্রতিটি পর্বেই মুগ্ধতা।
হয়তো মন্তব্য বা প্লাস তা যথাযথ বহন বা প্রকাশ করতে পারে না। কিন্তু অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস ম্যা; ভাই অন্তর দিয়ে তা ঠিকই অনুবভ করতে পারেন। :)

অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা, ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা

++++++++++++




০৫ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:২০

শের শায়রী বলেছেন: দারুন এক মন্তব্যে প্রথমেই কৃতজ্ঞতা ম্যা'ভাই।

এই লেখা গুলো লিখতে গিয়ে অন্তত আমার যেটুকু উপকার হয়েছে তা হল মনে যেটুকু সংশয় ছিল তা কেটে গেছে, যার কারনে আমি অন্ততঃ কিছু বিতর্কিত বিষয় যা বিভিন্ন সময়ে ইসলাম নিয়ে গাত্রদাহ কারী গোত্রের দ্ধারা অনেকটা অর্ধসত্য বা মিথ্যা ভাবে উপস্থাপিত তার জবাব দিতে সক্ষম। এর পাশাপাশি এই সব ব্যাপার বিস্তারিত না জানলে শুধু মাত্র এই টুকু একটা পোষ্ট দিয়ে বিচার করতে যাওয়াও এক ধরনের মুর্খামি। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন আসে আমি কেন এই মুর্খামি করলাম লিখে, আমি আসলে এই সব পোষ্টের মাধ্যমে সত্য (অন্তত আমার জানা মতে) উপস্থাপনের পাশাপাশি চেয়েছি কিছু বিতর্কিত ব্যাপারে সবাই যেন ক্লিয়ার ধারনা পায় এবং কোণ কারনে যেন গাত্রদাহ কারী গোত্র দ্ধারা প্রভাবিত না হয়, তার থেকেও বড় কথা এই সব ব্যাপারে আরো ক্লিয়ার জানার জন্য উদ্ভুদ্ধ করা। জানি না কতটা পারছি।

কিন্তু এই টুকু আমার নিজের অন্তত লাভ হয়েছে ইসলাম সে তো পরশপাথর যদি তাকে যথার্থভাবে জানা যায়। কিন্তু আমি যে এখনো নবীশ কিছুই জানি না। সেদিনই নিজেকে আত্ন তৃপ্তি দিতে পারব যেদিন পরশ পাথরের উপলদ্ধি আরো ভালো ভাবে পাব।

এই যে উসমান (রাঃ) এর নির্মম হত্যাকান্ড, যা পড়তে পড়তে চোখে পানি চলে আসে আবার সেই হত্যাকান্ডের বিবরন পড়তে গিয়ে বুকটা ভরে ওঠে কতটা আত্ম বিশ্বাসী উসমান মৃত্যুর পূর্ব মুহুর্তে তার পাজামার রশি কষে বেধেছিল কারন বিদ্রোহীরা যেন তাকে উলঙ্গ করতে না পারে। মৃত্যুর ঠিক পূর্ব মুহুর্তে কি নিদারুন বিশ্বাস, বিশ্বাসে অবিচল থেকে গেছেন এনারা। কারন কি? কারন ইনারাই পরশ পাথরের দেখা পেয়েছে। আমরা তো কিছুই জানি না ইসলাম নিয়ে পাচ ওয়াক্ত নাময আর রোযাই রাখি শুধু বেহেশতের লোভ। বেহেশত এর লোভ বা দোযখের আগুন যেন আমাকে ভয় না পাওয়ায়, আমাকে যেন আল্লাহর প্রতি এবং তার রাসুলের প্রতি ভালোবাসাটাই উজ্জীবিত রাখে এই দোয়ার আবেদন রেখে গেলাম ম্যা'ভাই।

২৩| ০৫ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:৪৬

রানার ব্লগ বলেছেন: একটা অফ টপিক মন্তব্য করি, আমার মনে হচ্ছে সৌদি ইসলাম ধর্ম আর বাংলাদেশের ইসলাম ধর্মের মধ্যে বিস্তর ফারাক আছে, কিছুটা মৌলিক মিল আছে যেটা না হলেই নয়।

০৫ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১১:০৭

শের শায়রী বলেছেন: রানার ভাই, আমার সৌদী যাবার অভিজ্ঞতা নাই, তাই আমি জানি না আসলে সেখানকার ধর্ম চর্চা কেমন। তবে এটুকু নিশ্চিত এই সৌদ রাজবংশ মক্কা মদীনার হেফাযতকারী হয়ে যেভাবে জীবন যাপন করছে তা ইসলামের নবী বা খোলাফায়ে রাশেদীনদের জীবন যাপনের সাথে যায় না। উনারা টয়লেট করেন সোনার তৈরী কমোডে আর খলিফাদের জীবনালোচনা করলে দেখা যায় উনাদের একটা বেশী দুটো কিছু থাকলে সাধারন জনগনের কাছে জবাবদিহী করতে হত।

অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনার পাঠে এবং মন্তব্যে।

২৪| ০৫ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১০:৫৭

ভুয়া মফিজ বলেছেন: প্লীজ ভুল বুজবেন না[/s এই প্রসঙ্গ আইলো কেমনে! আমি তো কইছিই, আপনের কথা আমি বুজছি। না বুজলে এক কথা আছিল। :)

আপনের সাথে আমার কিছুটা মিল আছে। ‘কিছুটা‘ এই জন্য কইলাম, আমিও বহুতদিন দ্যাশে খুটি গাইরা বইসা ছিলাম, বিদেশে সেটেল হমুনা কয়া। বন্ধুরা ব্যাকতে এক এক কইরা গেল গা। পরে, একটা বিশেষ কারনে বহুদিন দোনোমোনো কইরা শ্যাষে মন বদলাইছিলাম। এখন বুঝি, সিদ্ধান্তটা তহন মনঃপূত না হইলেও সঠিক সিদ্ধান্তই নিছিলাম।

০৫ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১১:০৯

শের শায়রী বলেছেন: বাইচ্চা গ্যাছেন মনঃপূত হীন সিদ্ধান্তের কারনে। আর আমি .......... বাদ দেন। কোন দিন দ্যাশের দিকে আইলে এক খান আওয়াজ দিয়েন দেখা কইরা দুঃখের গীত গামু নে :P

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.