নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হৃদয়ের কাছে বুদ্ধির বাস ভাল কথা। কিন্তু মাঝে মঝে হৃদয়ের ওপর থেকে বুদ্ধির শাসন তুলে দিতে হয়, হৃদয়কে স্বাধীন করে দিতে হয়, মুক্ত করে দিতে হয়। স্বাধীন মুক্ত হৃদয়ের ধর্মকে সব সময় বুদ্ধি দিয়ে বিচার করতে নেই।।
আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্নিত হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর মৃত্যুর পর হযরত উমর ইবনে খাত্তাব (রাঃ) কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না যে তিনি মারা গেছেন, তিনি দাড়িয়ে বলতে লাগলেন, “ কতগুলো মুনাফিক বলে বেড়াচ্ছে যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু অলাইহি ওয়াসাল্লাম মারা গেছে গেছেন। আল্লাহর কসম তিনি মারা যান নি। তিনি কেবল মুসা (অঃ) এর মত সাময়িকভাবে আল্লাহর কাছে গেছেন। মুসা (অঃ) চল্লিশ দিনের জন্য আল্লাহর কাছে গিয়েছিলেন, তখন প্রচার করা হয়েছিল তিনি মারা গেছেন। অথচ তিনি তার পর ফিরে এসেছিলেন। আল্লাহর কসম, মুসা (অঃ) এর মত রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আবার ফিরে আসবেন। এখন যারা বলছেন তিনি মারা গেছেন তাদের হাত পা কেটে দেব।” তখন আবু বকর (রাঃ) দ্রুত এখবর পেয়ে আয়েশা (রাঃ) ঘরে গিয়ে দেখেন তিনি সত্যিই মারা গেছেন। এর পর বাইরে বের হয়ে এসে হযরত উমরকে স্বান্ত্বনা দিয়ে কোরানের আয়াত পাঠ করলেনঃ
"মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর রাসূল ব্যতীত অন্য কিছু নন। তাঁর আগেও অনেক রাসূল গত হয়েছেন। তাই যদি তাঁরও মৃত্যু হয়, তবে কি তোমরা পেছনে ফিরে যাবে? যারা পেছনে ফিরে যায় তারা আল্লাহর কোন ক্ষতিই করতে সক্ষম নয়। শীঘ্রই আল্লাহ কৃতজ্ঞদের পুরস্কৃত করবেন।" (সুরা আল ইমরান, আয়াতঃ১৪৪)
আবু হুরায়রা বলেন, উমর (রাঃ) বলেছেন, আবু বকরের মুখে এ আয়াত শোনার পর আমি হতবাক ও হতবুদ্ধি হয়ে পড়ে গেলাম। পায়ের ওপর দাড়িয়ে থাকতে পারলাম না, আমি তখনি অনুভব করলাম রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সত্যিই ইন্তেকাল করছেন। (সীরাতে ইবনে হিশাম ৩৫০-৩৫১)
বিভিন্ন বিষয়ে বই পড়া আমার নেশাই বলতে পারেন, হাতের কাছে যাই পাই তাই পড়ি, নিয়ম করে বই কিনি, যখন দেখি সে বইও শেষ হয়ে গেছে পড়া বই আবার রিভাইস দেই, নেটে বই পড়া আমার ভালো লাগে না, তবে ইদানিং অভ্যাস চেঞ্জ করছি, ইদানিং নেটেও বই পত্র ঘাটাঘাটি করা অভ্যাসে পরিনত করছি। একদিন অবাক দেখলাম, অন্যান্য বিষয়ে যত টুকুই জানি না কেন নিজ ধর্ম সন্মন্ধ্যে প্রায় কিছুই জানি না, অথচ আমার জন্মই হয়েছে এক মুসলিম পরিবারে, যারা মুসলমান রিচ্যুয়ালের স্বাভাবিক ধর্ম কর্ম পালন করে, সে অনুযায়ী আমি নিজে অনেকটা উদাসীন। চেষ্টা করি, কিন্তু হয়ে ওঠে না। তবুও চেষ্টা করি। এক সময় ভাবতাম যেটুকু জানি তাই যথেষ্ট। কিন্তু যখন ধর্ম নিয়ে সেটা শুধু নিজ ধর্ম না, বিভিন্ন ধর্ম নিয়ে জানতে শুরু করলাম নিজের সামনে এক মহাসমুদ্র আবিস্কার করলাম। আসলেই আমি কিছুই জানি না।
নিজ ধর্ম নিয়ে এখনো অনেক কিছু জানি না, তারপরো লেখার একটা প্রচেষ্টা চালালাম, যদি ভুল হয় তবে যারা জানে তারা যেন শুধরে দেয় এই বিশ্বাস নিয়ে। তবে সবার আগে এটা বলে নেই, ধর্ম তা সে যে ধর্মই হোক বিশ্বাসের ওপর স্থাপিত। আমি কোন দিন কোরান দিয়ে বিজ্ঞান কে জাষ্টিফাই করতে যাই না, আবার বিজ্ঞান দিয়ে কোরান কে মাপতে যাই না, না যাবার যে কারন সেটা হল মনের প্রশান্তি বা কষ্ট মাপার কোন যন্ত্র যেমন আবিস্কার হয় নি বা হবেও না তেমনি ধর্ম দিয়ে সামান্য আবিস্কার কে ধর্মের মধ্যে আবদ্ধ করারও কোন যুক্তি দেখি না।
আজকে আমি লিখব খোলাফায়ে রাশেদিনদের নিয়ে, কালের এবং কর্মের ব্যাপ্তির বিশালতার কারনে এক পর্বে দেয়া সম্ভব হবে না সেক্ষেত্রে চেষ্টা করব ভিন্ন ভিন্ন পর্বে দেবার। আমি মুলতঃ এই লেখা ইতিহাসের নির্মোহ অবস্থান দিয়ে লেখার চেষ্টা করব।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর ওফাতের পর খোলাফায়ে রাশেদিন যুগের আবির্ভাব ঘটে। খিলাফতের প্রথম চার জন খলিফাকে বলা হয় “খোলাফায়ে রাশেদিন।” খোলাফায়ে রাশেদিনদের নিয়ে লিখতে যাবার আগে ইসলাম পূর্ব আরবের অবস্থা সন্মন্ধ্যে আপনাকে কিছু জানতে হবে, না হলে কোন কোন ক্ষেত্রে এই সাড়ে চৌদ্দশ বছর পর আপনি হয়ত “মিস জাজ” করবেন। সে কালে আরব সমাজ ছিল গোত্র কেন্দ্রিক। রাষ্ট্র সন্মন্ধ্যে তাদের কোন ধারনাই ছিল না, সমস্ত কিছু কেন্দ্রীভুত ছিল গোত্রকে নিয়ে। মহানবী জীবিত থাকা অবস্থায় এই সব গোত্রগুলোকে এক করে নিজেদের মাঝে এক শক্তিশালী সমাজ ব্যাবস্থা গড়ে তোলে। এই সমাজ ব্যাবস্থা “উম্মাহ” নামে পরিচিত ছিল। উম্মাহ শব্দের আভিধানিক অর্থ “সম্প্রদায়”।
শেষ নবী যখন মক্কা থেকে মদীনায় “হিযরত” করেন তখন উম্মাহ সমাজ ব্যাবস্থা চালু করছিলেন। মদিনা শহরে তখন বনি আউস এবং বনি খাযরাজ নামে দুটো গোত্র ছিল, সেকালের প্রথা অনুযায়ী দুটো গোত্রে যদি কোন বিষয়ে মতানৈক্য তৈরী হত তবে একজন ব্যাক্তিকে শালিসী মানা হত। তো এই বনু আউস এবং বনি খাযরাজ গোত্রের মাঝে বিবাদে মহানবীকে শালিসী মানা হল এবং তিনি অত্যন্ত সুনিপুন ভাবে তাদের মাঝের বিরোধ নিস্পত্তি করেন। এ অবস্থায় উভয় গোত্র ভীষন খুশী হয় এবং মহানবীকে সর্বপ্রকার সহায়তা দেয়। আবার বনি আউশ এবং বনি খাযরাজ গোত্র প্রধানরা ভাই ছিলেন তাদের বাবার নাম হারেছা বিন ছা'লাবা৷ আর মায়ের নাম ক্বায়লাহ বিনতে কাহিল৷ মায়ের নামে এ দুগোত্র কে একত্রে “বনু ক্বায়লাহ” নামেও ডাকা হতো। এই বনু ক্বায়লাহ গোত্র কে খুশী হয়ে মহানবী “আনসার” উপাধিতে ভুষিত করেন। যার মানে হল “সাহায্যকারী”। এই আনসাররা ইসলামের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ন অধ্যায়।
এই “উম্মাহ” গঠনে আনসাররা মুখ্য এবং কার্যকর ভুমিকা রাখে। আইন না বরং চুক্তিই ছিল এই উম্মাহ সমাজের মুল ভিত্তি। মদীনায় তখন বেশ কিছু ইহুদী সম্প্রদায় ছিল তারাও প্রথমদিকে এই উম্মাহ সমাজের অন্তর্ভুক্ত ছিল, তিনি বুজতে পেরেছিলেন যে ইহুদী সমাজ কে বাদ দিয়ে মদীনায় কোন স্বস্তি ব্যাবস্থা কায়েম করা যাবে না। এখানে উম্মাহর তাৎপর্য ছিল রাজনৈতিক, ধর্মের সাথে এর কোন যোগাযোগ নেই। যে চুক্তির মাধ্যমে এই “উম্মাহ সমাজ” চালু হয় তাই পরবর্তীতে আমরা “মদীনা সনদ” নামে জানি। (muhammad at medina by Montgomery Watt W. page: 227-228, ইসলাম ও খিলাফত লেখক ডঃ মফীজুল্লাহ কবীর) গোত্রীয় আনুগত্য যা ছিল রক্ত সম্পর্কীয় তৎকালীন আরব সমাজের মুল চালিকাশক্তি বা সমাজ ব্যাবস্থা এই মদীনা চুক্তির মাধ্যমে তা অনেকটা গৌন হয়ে গেল। ইসলামী সমাজ ব্যাবস্থার প্রথম ধাপ ছিল এই মদীনা সনদ।
আরব উপদ্বীপে এক নতুন আলোর দিশা হিসাবে দেখা দিল মদীনা সনদ। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে মনে রাখতে হবে যুগ যুগ ধরে চালিত গোত্র ব্যাবস্থা এই মদীনা সনদের মাধ্যমে নবীর জীবিত অবস্থায় গৌন হয়ে গেলেও তার ওফাতের পর তা আবার অনেকটা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে, যার কারনে আমরা খোলাফায়ে রাশেদীনদের সময় পর্যালোচনা করতে গিয়ে দেখি যত বিভেদ, ভ্রাতৃঘাতী যুদ্ধ, অর্ন্তকোন্দল সব কিছুর মুলে কিন্তু গোত্র কেন্দ্রিকতা। আস্তে আস্তে যখন আমরা সেদিকে যাব তখন ব্যাপারটা বুজতে পারবেন।
এইবার আমরা অন্য দিকে একটু দৃষ্টি দেই, আপনি যদি খ্রিষ্টান ধর্ম বা ইহুদী ধর্মের দিকে তাকান তবে দেখবেন কয়েক শত বছর লাগছে এই ধর্মগুলোকে যথাযথভাবে আত্ম প্রকাশ করতে। ৮০০ খ্রিষ্টাব্দে পোপ তৃতীয় লিও খ্রিষ্টান সম্রাট শার্লমেনের মাথায় মুকুট তুলে দেবার মাধ্যমে প্রথম এই ধর্মকে একটি সাম্রাজ্যের অধীনে নিয়ে আসেন, যদিও খ্রিষ্টান ধর্মে রাষ্ট্র এবং পোপ প্রথা দুটি সামন্তরাল প্রথা হিসাবে দেখা যায়। মুসলিম সমাজ এত দ্রুত সম্প্রসারন ঘটে যে, সেখানে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর কোন ধারনাই ছিল না, গোত্র ভিত্তিক সমাজ ব্যাবস্থাকে দূরদৃষ্টি সম্পন্ন মহানবী একটা “উম্মাহ সমাজ” ব্যাবস্থা চালুর মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন যেটা তার জীবদ্দশায় সম্ভব হয়নি, তিনি শুধু ভিত্তি দিয়ে গিয়েছেন। তার দেখানো পথে সেই ভিত্তিকে কাঠামোতে আনতে শত শত বছরের প্রথা ভেঙ্গে খোলাফায়ে রাশেদিনদের দ্ধারাই সম্ভব হয়েছিল, কিন্তু এত দ্রুত পরিবর্ধনশীল মুসলিম বিশ্ব তার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে গিয়ে নিজেদের ভেতর অনেক রক্ত ঝড়াতে হয়েছে। আপনাকে স্বরন রাখতে হবে, শুরুতে খলিফা কোন রাষ্ট্র প্রধান ছিলেন না।
খলিফা মানে “প্রতিনিধি”। শব্দটির আভিধানিক অর্থ উত্তরাধিকারী, প্রতিনিধিত্বকারী, সেনাপ্রধান। ইসলামী পরিভাষায় খলীফা হলেন এমন ব্যক্তি যিনি যাবতীয় বিষয়ে শরীআত অনুযায়ী সমস্ত উম্মাতকে পরিচালিত করেন। আবার দেখুন খলিফা বলতে পবিত্র কোরানে আল্লাহর প্রতিনিধি হিসাবে কাউকে বুজানো হয়েছেঃ
"হে দাঊদ, নিশ্চয় আমি তোমাকে যমীনে খলীফা বানিয়েছি, অতএব তুমি মানুষের মধ্যে ন্যায়বিচার করো আর প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না, কেননা তা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করবে। নিশ্চয় যারা আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত হয় তাদের জন্য কঠিন আযাব রয়েছে। কারণ তারা হিসাব দিবসকে ভুলে গিয়েছিল।" (সুরা সা্দ, আয়াত ২৬)
পবিত্র কোরান বা হাদীসে রাষ্ট্রবাদের কোন স্পষ্ট নিদর্শন না থাকায় “রাষ্ট্রপ্রধানের” ধারনাটাও আসে না। তাই খলিফা শব্দটি কিন্তু ইসলাম স্বীকৃত কোন শব্দ না তবে সময়ের প্রয়োজনে তিনটি উপাধি ব্যাবহৃত হয়, আমিরুল মোমিনীন, ইমামুল মুসলিমুন এবং খলিফাতুল মুসলিমুন। এর মাঝে খলিফাতুল মুসলিমুন শব্দটি থেকে খলিফা শব্দটি ব্যাপক প্রচারিত হয়।
এখন আসি খলিফা নির্বাচন নিয়ে কিছু কথায়, পূর্ব উল্লেখিত ধর্মগুলোতে ধর্মপ্রচারক রা তাদের উত্তরসুরী রেখে গিয়েছিলেন, এমন কি খ্রিষ্টান ধর্মে ধরে নেয়া হয় সেইন্ট পিটার যীশুর উত্তরাধিকারী। কিন্তু শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) মৃত্যুর সময় কোন উত্তরাধিকারী নির্বাচিত করে যান নি। যেহেতু শেষ নবী তাই নেতৃত্ব নেবার জন্য অন্য কোন নবীর আগমনের অবকাশ ছিল না। এখানে এব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই যে, যদি মহানবী তার মৃত্যুর পুর্বে কোন উত্তরাধিকারী রেখে যেতেন তবে সেটা হত সুস্পষ্ট, যেহেতু তিনি সেটা রেখে যান নি, তাই মহানবীর অবর্তমানে নেতৃত্ব প্রদানের এখতিয়ার তিনি মুসলিম উম্মাহর হাতে দিয়ে গেছেন নিঃসন্দেহে। এখানে উত্তরাধিকার সুত্রের কোন সুযোগই নেই।
মহানবী কর্তৃক উত্তরাধিকারী না রেখে যাবার ব্যাপারটি ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমর (রাঃ) আরো পরিস্কার করে দিয়ে গেছেন। তার এ বিবৃতির আগে কেউ কেউ মনে করত মহানবী তার মৃত্যুর আগে হযরত আবু বকর (রাঃ) কে উত্তরাধিকারী মনোনীত করে গেছেন। কিন্তু হযরত উমর (রাঃ) তার মৃত্যুর পূর্বে উত্তরাধিকারীর প্রশ্নে বলেনঃ আমি যদি খলিফা নিয়োগ করে যাই, তাহলে বুজে নিও যে, যিনি (মহানবী) আমার থেকেও শ্রেষ্ঠতর ছিলেন তিনিও খলিফা নিয়োগ করে গিয়েছিলেন। আর আমি যদি ব্যাপারটা মুসলমানদের স্বাধীন বিবেচনার ওপর ছেড়ে দিয়ে যাই তাহলে বুজে নিও যে, যিনি (মহানবী) আমার থেকে শ্রেষ্ঠতর ছিলেন তিনিও ওটা তাদের স্বাধীন বিবেচনার ওপর সোপর্দ করে গিয়ে ছিলেন। (সীরাতে ইবনে হিশাম, পৃষ্ঠা ৩৪৯)।
মহানবীর মৃত্যু হয় মদীনায়, সেখানে তার দু ধরনের অনুসারী ছিল, এক দল যাদের “আনসার” হিসাবে অভিহিত করা হয়েছে এবং যাদের পরিচয় পূর্বেই দিয়েছি, আর একদল মহানবীর সাথে মক্কা থেকে বা অন্যত্র থেকে এসে মদীনায় বসবাস করত তাদের বলা হত “মুহাজির”। মহানবীর মৃত্যু পরবর্তী কে হবে ইসলামী উম্মাহর প্রধান এ নিয়ে তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে যায় যখন মহানবীর দাফন ও সম্পন্ন হয়নি।
বনু সায়েদা গোত্রের ছাদ যুক্ত চত্বরের বর্তমান চিত্র
প্রথম দলঃ আনসাররা খাজরাজ গোত্র প্রধান সাদ বিন উবাইদার নেতৃত্বে বনু সায়েদা গোত্রের ছাদ যুক্ত চত্বরে জমায়েত হন তাদের দাবী ছিল যেহেতু তারা ইসলামের দুর্দিনে মহানবী এবং মুহাজিরদের আশ্রয় দিয়েছিল তাই তাদের নেতা সাদ বিন উবাইদা মহানবী পরবর্তী নেতৃত্ব দেবার দাবীদার। দ্বিতীয় দলঃ মুহাজিরদের একটি দল হযরত আলীর (রাঃ) বাড়ীতে গিয়ে তাকে নেতৃত্ব দিতে অনুরোধ করে যেহেতু তিনি ছিলেন মহানবীর পুত্রতুল্য এবং এক মাত্র জীবিত সন্তান বিবি ফাতেমা (রাঃ) র স্বামী। তৃতীয় দলঃ মুহাজিরদের একটি বড় অংশ ঐক্যবদ্ধ হয় হযরত আবু বকর (রাঃ) এবং হযরত উমর (রাঃ) এর নেতৃত্বে।
এ অবস্থায় হযরত উমর এবং হযরত আবু বকর যখন এই খবর পেলেন তারা উদ্বিগ্ন হয়ে উঠলেন এই ভেবে যে মহানবীর মৃত্যুর সাথে সাথেই না ভ্রাতৃঘাতী কিছু একটা ঘটে যায়। তারা অতি সত্বর বনু সায়েদার চত্বরে যান এবং হযরত আবু বকরের চমৎকার প্রজ্ঞাপূর্ন বক্তৃতার মাধ্যমে সবাইকে প্রশমিত করেন, এ অবস্থায় হযরত উমর হযরত আবু বকর কে বলেন, “হে আবু বকর আপনার হাত খানি বাড়িয়ে দিন” তিনি হাত বাড়িয়ে দিলে হযরত উমর হযরত আবু বকরের হাতে বাইয়াত করলেন (ইসলাম ধর্মে অধিকাংশ সময়ে বাইয়াত বলতে শপথ পাঠ বা চুক্তিকেই বুঝানো হয়েছে) (দেখুন সীরাতে ইবনে হিশাম ৩৫৪-৩৫৬)। ৬৩২ সালের ৮ ই জুন মদীনার বনু সায়েদা চত্বরে ইসলামের প্রথম খলিফা নির্বাচিত হন।
হযরত আবু বকরের খলিফা হবার মধ্য দিয়ে মুসলমানদের নিজস্ব একটি রাষ্ট্র ব্যাবস্থা, ধর্মীয় ব্যাবস্থার সুরাহা হল মহানবীর মৃত্যুর পর। ৬৩২ সালে আরব উপদ্বীপে ইসলামী খিলাফতের মাধ্যমে একটি রাষ্ট্র ব্যাবস্থা চালু হলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে সমগ্র আরব উপদ্বীপ ইসলামের পতাকার নীচে চলে আসে। এরপর ৬৩৩ সালে অন্যতম সেরা দুই সম্রাজ্য পারস্য এবং বাইজেন্টিয়াম সম্রাজ্যের সাথে আনুষ্ঠানিক সংঘর্ষ শুরু হয়।
গোত্রীয় শক্তিতে বিভক্ত আরব গোষ্ঠীগুলো এতদিন তাদের তরবারির ধার পরীক্ষা করত এক গোত্র আর এক গোত্রের ওপর ইসলামের পতাকাতলে খিলাফত প্রতিষ্ঠা পাওয়ার পর নিজেদের এক বিশাল শক্তি হিসাবে আবির্ভুত হয়। যে শক্তি অচিরেই ৩০ বছরের কম সময়ে তিনটি মহাদেশে তাদের পূর্ন এবং আংশিক নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করবে।
পরবর্তী পর্বগুলোতে অনেক ভ্রাতৃঘাতী যুদ্ধ, পবিত্র কোরান সংকলন, হানাহানি, পাশাপাশি ইসলামের প্রসার নিয়ে আলোচনা করার ইচ্ছা আছে। যারা ধর্ম নিয়ে ইন্টারেষ্টেড না তারা অহেতুক বিতর্কিত কোন মন্তব্য দিয়ে কারো মনে আঘাত না দেবার সর্নিবন্ধ অনুরোধ রইল।
যথাযথ স্থানে রেফারেন্স ব্যাবহার করা হয়েছে।
পরবর্তী পর্বঃ খোলাফায়ে রাশেদিন হযরত আবু বকর (রাঃ)
২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৫০
শের শায়রী বলেছেন: সব নিয়ে লিখব, ইতিহাসের দৃষ্টি থেকে প্রিয় কবি, আশা রাখি সাথে পাব তোমাকে।
২| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৪৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
হজরত মোহাম্মদ (স: ) এর সময়ে, ও উনার আগে মক্কা কুরায়েশ ও আরো ২/৪ গোত্রের জমিদারী ছিলো; ইহা ছিলো দুর্গম ও অনুর্বর; পারসিক, গ্রীক, রোমান কেহ ওদিকে যায়নি; কিন্তু অদুরেই সিরিয়া, জেরুসালেম, আলেকসান্দ্রিয়ায় রোমানরা (বায়েজান্টাইন) ছিলো, ইহুদীরা ছিলো, গ্রীকেরা ছিলো। যাক, ইসলাম বেদুইনদের এক করে, এক নির্মম সেনা বাহিনী বানিয়ে ১ম আরব রাজ্য গঠন করে, ইহাই ইসলাম, ইহাই বেদুইনদের প্রথম ও শেষ রাজত্ব।
২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৫৯
শের শায়রী বলেছেন: প্রথমেই সালাম মুরুব্বী। মুরুব্বী আমাকে কি বলতে পারেন কোন সেনাবাহিনী ফুল নিয়ে যুদ্ধ করছে? হ্যা এটা অতীব সত্যি ইসলাম পুর্ব আরব ছিল দুর্গম অনুর্বর, বর্বর। কিন্তু পাথরেও ফুল ফুটানো যায়, এই সেনাবাহিনী নিয়ে এক সময় মাত্র ৩০ বছরের কম আর একজাক্টলি বললে মাত্র ২৩ বছরে তিনটা মহাদেশে পা রেখেছিল এবং এক পর্যায়ে জ্ঞানে বিজ্ঞানে শীর্ষেও এসেছিল যখন ইউরোপ ছিল ডাইনী পোড়ানোতে ব্যাস্ত। হ্যা বেদুইনদের ওটাই প্রথম এবং হয়ত শেষ রাজত্ব, তবে সেটা কাদেরই বা না? এই বেদুইন দ্ধারা প্রতিষ্ঠিত খিলাফত নামে মাত্র হলেও ১৯২৪ সাল পর্যন্ত বজায় ছিল। এই সব বলায় আবার ভেবে বসবেন না আমি বর্তমান আরবের চামচামি করছি। আমি যা লিখব ইতিহাসের দৃষ্টিতে লিখব। তাই আশা রাখি সেভাবেই জবাব দেবেন।
৩| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:২৮
নীল আকাশ বলেছেন: ভাই শুভ রাত্রী,
ভালোই লিখেছেন, তবে একটা জায়গা নিয়ে আমার আপত্তি আছে। আপনি বোধয় জানেন না মহানবী (সা.) জীবত থাকা অবস্থাতেই আবু বকর সিদ্দীক (রা.) কে ইমামতি করতে পাঠান। টানা ১৭ ওয়াক্ত নামায মুসলিম'রা উনার নেতৃত্বে পড়েন এবং সেই সময় মহানবী (সা.) জীবিত ছিলেন।
এছাড়াও আরও অনেক কিছু আছে। আপনি শুধু ইবন হিসামের বই থেকে লিখেছেন দেখেই এই সমস্যা হয়েছে। সবচেয়ে সুন্দর ভাবে দেয়া আছে ইবন ইসহাক এবং ইবন কাথীরের বইতে। আপনাকে এই বিষয়ে আরও অনেক স্ট্যাডি করতে হবে।
আমিও একই বিষয়ের উপর ২য় পর্ব লিখছি। সেখানে কিছু জিনিস পাবেন।
হিসাম এবং ইসহাক এর বই হাদিস গ্রন্থ নয়। সেক্ষেত্রে কোন হাদিস দিলে সেটার সূত্র আপনাকে হাদিসগ্রন্থের নাম্বার দেখে দিতে হবে।
ধনবাদ।
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:৫৪
শের শায়রী বলেছেন: নীল আকাশ ভাই, নাইট ইজ ষ্টিল ইয়াং এত তাড়াতাড়ি শুভ রাত্রি বইলেন না। আমি অনেকটা নিশাচর গোত্রের প্রানী। যাই হক মুল ব্যাপারে আসি। আমি শুধু ইবনে হিসামের বই পড়িনি, এর সাথে আরো বেশ কয়েকটি বই দেখছি বা দেখতে আছি। আপনার সমীপে এই বইটা নিবেদন করলাম muhammad at medina by Montgomery Watt W. এর পাশাপাশি এই বইটিও দেখবেন ইসলাম ও খিলাফত লেখক ডঃ মফীজুল্লাহ কবীর। জাষ্ট দেখার জন্য।
১৭ ওয়াক্ত নামাযের পাশাপাশি নবীজির ওফাতের সকালে ফযরের নামাযের সময় নবী (সাঃ) যখন নামাযের জন্য আসলেন তখন আবু বকর (রাঃ) ইমামতির জন্য দাড়িয়েছিলেন, ঘুরে দেখলেন নবী আসছে তিনি তখন মহানবীর জন্য ইমামের জায়গা ছেড়ে দিতে গেলে নবী তার পাশে দাড়িয়ে আবু বকর (রাঃ)কে বললেন তুমিই নামায পড়াও (আমি খুব শর্ট করে লিখলাম) এ গুলো জানি। কিন্তু আপনার আপত্তির জায়গাটা বুজলাম না। কোথায় ভুল হয়েছে? কাইন্ডলি স্পেসিফিক করলে সুবিধা হয়। এখানে ইতিহাস ভিত্তিক লেখা লিখছি যতদুর সম্ভব হাদীস বা কোরানের আয়াত উল্লেখ্য না করে। হ্যা কাথীর বা ইবনে ইসহাক আমার পড়া হয় নি, অবশ্যই পড়ব যখন শুরু করছি, একই সাথে পশ্চিমা লেখকদের লেখাও পড়ব তাদের দৃষ্টি দিয়েও দেখব, তারা কি বলছে, তবে যাই বলুক সেটা আমার বিশ্বাসের ওপর আসতে পারবে না। জানার জন্য পড়া এই আর কি।
আমি এখানে মুলতঃ সে সময়ের পরিস্থিতির ওপর লিখব। সেটা হবে ইতিহাসের দৃষ্টি দিয়ে, ধর্মীয় দৃষ্টি কোনের থেকে সেখানে ইতিহাস প্রাধান্য পাবে
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:৫৮
শের শায়রী বলেছেন: The Khilaafah Lasted for 30 Years Then There Was Kingship Which Allaah Gives To Whomever He Pleases
৪| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:২৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
লেখক বলেছেন, "কিন্তু পাথরেও ফুল ফুটানো যায়, এই সেনাবাহিনী নিয়ে এক সময় মাত্র ৩০ বছরের কম আর একজাক্টলি বললে মাত্র ২৩ বছরে তিনটা মহাদেশে পা রেখেছিল এবং এক পর্যায়ে জ্ঞানে বিজ্ঞানে শীর্ষেও এসেছিল যখন ইউরোপ ছিল ডাইনী পোড়ানোতে ব্যাস্ত। হ্যা বেদুইনদের ওটাই প্রথম এবং হয়ত শেষ রাজত্ব, তবে সেটা কাদেরই বা না? এই বেদুইন দ্ধারা প্রতিষ্ঠিত খিলাফত নামে মাত্র হলেও ১৯২৪ সাল পর্যন্ত বজায় ছিল। "
- খলীফা আলী হত্যার সাথে সাথে আরবদের মুল রাজত্বের অবসান হয়েছিলো। মুয়াবিয়ার থেকে শুরু করে যেটা হয়েছিলো, সেটা বেদুইনদের মুল রাজত্ব নয়।
অটোম্যানরা আরব ছিলো না, ওরা ছিলো তুর্কি; ওরা ইউরোপিয়ানদের মতো দেশ চালায়েছে, তবে মানুষকে অশিক্ষিত করে রেখেছিলো; জ্ঞান গরিমা তাবিজ লেখা অবধি।
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১:০২
শের শায়রী বলেছেন: হ আপনার কথাই ঠিক আপনার সাথে তর্কে যাব না মুরুব্বী, কারন সবার সাথে সব বিষয়ে আলোচনা চলে না। আমজাদ আলী খা র সরোদের সাথে আপনি যদি কাসার প্লেট বাজান তবে কি সেটা যায়? আপনি ঠিক
৫| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:৩৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
আরবদের লেখাপড়া শিখায়েছে বাংগালীরা, ১৯৭৬ সাল থেকে বাংগালীরা সৌদী, কুয়েত, ইরাক, লিবিয়ায় শিক্ষকতা করেছে।
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১:০৪
শের শায়রী বলেছেন: কিসের মইধ্যে কি পান্তা ভাতে ঘি। কি বলি আপনারে আপনি মুরুব্বী মানুষ। আরো কমেন্ট দিলে দিয়া যান যা মন চায় লিখেন, পোষ্ট খান কি এক বারো পড়ছেন?
৬| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১:২৬
নতুন বলেছেন: ধমের উত্থান আর পতনের ইতিহাসে রাজনিতি অতপ্রত ভাবে জড়িত।
আরবে গোত্রগুলিকে একত্র করেছিলো নতুন একটা ধম`, রাসুল সা: এর মারা যাবার পরেই ক্ষমতার দন্দের কারনেই অনেক রক্ত ঝরেছে। ৩ জন খলিফাকে হত্যা করা হয়েছে, রাসুল সা: এর ২ নাতীকে হত্যা করা হয়েছে, কন্যার সাথে খারাপ আচরন, অনেকে বলে আক্রমন, আয়শা রা: আর আলী রা: এর যুদ্ধ. যেই যুদ্ধে প্রায় ৩০-৫০ হাজার যোদ্ধা ছিলো দুই পক্ষে....
এতো কিছুর ভেতরে কিছু মানুষ সহী ইসলাম কিভাবে খুজে পায় তাই মাঝে মাঝে চিন্তা করি।
সাধারন মানুষ এতো কিছুই জানেনা, অনেকেই আবার তারা তাদের নারীদের পদা` নিয়ে চিন্তা করে, ঢিলা কুলুক নিয়ে ৪০ কদম হাটে আর কাশি দেয়ার মতন কাজেই ব্যস্ত থাকে।
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৩৫
শের শায়রী বলেছেন: নতুন ভাই প্রথমেই স্বাগতম। আমি আসলেই আনন্দ অনুভব করি যখন প্রজ্ঞা পূর্ন কেউ আমার সাথে কোন বিষয়ে আলোচনা করে, সেক্ষত্রে যদি আমার ভুলও হয় আমি স্বীকার করে নিতে দ্বিধা বোধ করিনা। আসি আপনার মন্তব্যের প্রসঙ্গে
আপনি লিখছেন ধমের উত্থান আর পতনের ইতিহাসে রাজনিতি অতপ্রত ভাবে জড়িত। সন্দেহাতীত ভাবে আমি এক মত।
আপনি লিখছেন আরবে গোত্রগুলিকে একত্র করেছিলো নতুন একটা ধম`, রাসুল সা: এর মারা যাবার পরেই ক্ষমতার দন্দের কারনেই অনেক রক্ত ঝরেছে। ৩ জন খলিফাকে হত্যা করা হয়েছে, রাসুল সা: এর ২ নাতীকে হত্যা করা হয়েছে, কন্যার সাথে খারাপ আচরন, অনেকে বলে আক্রমন, আয়শা রা: আর আলী রা: এর যুদ্ধ. যেই যুদ্ধে প্রায় ৩০-৫০ হাজার যোদ্ধা ছিলো দুই পক্ষে....
এতো কিছুর ভেতরে কিছু মানুষ সহী ইসলাম কিভাবে খুজে পায় তাই মাঝে মাঝে চিন্তা করি।
এখানে কন্যার সাথে খারাপ আচরন, অনেকে বলে আক্রমন এই অংশ টুকু বাদ দিয়ে বাকী অংশ ঐতিহাসিকভাবে বিভিন্ন ইসলামিক স্কলারের লিখিত বইতে প্রমানিত। কন্যার সাথে খারাপ আচরন বলতে আপনি কোন খলিফার কথা বলেছেন? এটা যদি হয় হযরত আবু বকরের সময় সেক্ষেত্রে সেটা আমি বলব হযরত আবু বকর নবীর বিধান দিয়েছিলেন শুধু এখানে খারাপ আচরনের কোন প্রমান আমি কোথাও দেখি নি, আপনি যদি কোথাও দেখেন তবে দয়া করে জানান।
হযরত আবু বকরের ব্যাপারটা আমি বুখারী এবং মুসলিম শরীফ থেকে উদ্ধৃতি দিচ্ছিঃ
ফাতিমা (রাঃ) ও আব্বাস (রাঃ) আবু বাকরের কাছে এলেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরিত্যক্ত সম্পত্তির উত্তরাধিকার চাইলেন। তারা উভয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ফাদাকের জমি ও খাইবারের জমির অংশ চাইছিলেন। আবু বকর (রাঃ) তাঁদেরকে বললেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ আমাদের সম্পত্তির কোন উত্তরাধিকারী হয় না। আমরা (নবীরা) যা রেখে যাই, তা সাদাকা। মুহাম্মাদের বংশধরগণ, স্বগোত্রীয়রা, আত্মীয়স্বজন ও সঙ্গী সাথীরা সবাই এ সম্পত্তি ভোগ করবে। আল্লাহর কসম! আমি প্রতিটি ব্যাপারেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যা করতে দেখেছি, তা ছাড়া অন্য কিছু করবো না।[বুখারী (৪০৩৫), মুসলিম (১৭৫৯), ও ইবনু হিব্বান (৪৮২৩) কর্তৃক সহীহ আখ্যায়িত]
এইবার আসি আপনার অন্য মন্তব্যে এতো কিছুর ভেতরে কিছু মানুষ সহী ইসলাম কিভাবে খুজে পায় তাই মাঝে মাঝে চিন্তা করি। এই প্রশ্নের জবাব আমি দেব এই ভাবে আপনি শুধু এই কথাতেই আপনি দরজার এই পাশ দেখেই এই মন্তব্য করেছেন, এর অন্য পাশে খোলাফায়ে রাশেদিনদের যে ন্যায় পরায়নতা, তৎকালীন প্রচলিত সমাজ ব্যাবস্থার বিপরীতে গিয়ে তাদের সাম্যতা, তাদের সাধাসিদে জীবন ব্যাবস্থা তাদের অন্যান্য গুন গুলোকে নিশ্চয়ই আপনার মত প্রজ্ঞাবান মানুষকে ডিটেইলসে বলে দিতে হবে না। সাধারন মানুষ তাদের গুন গুলো এবং বর্তমান প্রক্ষাপটে মানসিক প্রশান্তির জন্যই ইসলাম খুজে পায়।
আপনি নিশ্চিত থাকেন আমি যখন লিখতে বসছি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে সব মিলিয়ে সে কালের ইতিহাস উত্থাপন করা।
আর যারা কিছু জানে না, তাদের নিয়ে আমাদের এত ভাবনার কিছু নেই, তাদের কে তাদের মত চলতে দেয়াই আমার মত কারন আপনি আমি সবার সাথে সব কিছু আলোচনা করতে পারব না।
পাঠে এবং মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা।
৭| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১:২৯
নিভৃতা বলেছেন: নিজের ধর্ম সম্পর্কে কত অজ্ঞ যে এখনও রয়ে গেছি! স্কুলে যখন পড়েছি তখন কী পড়েছি এখন মনেও নাই। এখন ছেলেদের পড়াতে গিয়ে নতুন করে অনেক কিছু পড়তে হচ্ছে এবং বুঝতে হচ্ছে। এই ব্লগে আসার পর আপনাদের মত গুণী মানুষদের কল্যাণে অনেক বিষয়ে জ্ঞান লাভ করতে পারছি। যদিও সময়ের অভাবে সব পড়া হয়ে ওঠে না, তবু যা পড়তে পারছি তাতে জ্ঞানের পরিধি কিছুটা হলেও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এত সুন্দর তথ্যবহুল পোস্টের জন্য অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। আশা করছি পরবর্তীতে আরো বিস্তারিত জানতে পারবো।
অনেক শুভ কামনা আপনার জন্য।
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:০১
শের শায়রী বলেছেন: বোন নিভৃতা, প্রথমেই আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানুন। আপনি নিজে সুন্দর মনের মানুষ দেখে আর একজন কে এত উদারভাবে প্রসংশা করতে পারলেন, যদিও এই প্রসংশার প্রাপ্য কিনা তা নিয়ে আমার নিজের ঘোরতর সন্দেহ আছে। আসলে এই সব ঘটনা সবারই কম বেশী জানা হয়ত সময়ের ব্যাস্ততায় অনেক কিছু খেয়াল থাকে না।
পরবর্তী পোষ্ট দেবার জন্য লেখা শুরু করছি, জানিনা সব কিছু সুন্দরভাবে গুছিয়ে লিখতে পারব কিনা। অশেষ কৃতজ্ঞতা সহ আমার সালাম জানবেন। সাথে থাকার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। আপনি নিজে অনেক শক্তিমান ব্লগার যার প্রমান আপনার লিখিত ব্লগ গুলো।
৮| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১:৫০
নীল আকাশ বলেছেন: Offcourse night is still young.
সমস্যা একজায়গায় মাত্র। সহী বুখারী শরীফের হাদিস মতে একটা না আরও অনেক জায়গায় আপনি আবু বকর (রা.) এর ব্যাপারে সুস্পষ্ট নির্দেশ পাবেন। এমন কী একটা জায়গায় ওমর (রা.) ইমামতি করতে দাড়ালে মহানবী (সা.) আপত্তিও তুলেন। আমার লেখায় সবগুলি দেয়া আছে। আজকেই লিখছিলাম। ১ম, ২য় জন নিয়ে কোন আপত্তি নেই। আপনি একটা গুরুত্বপূর্ণ হাদিস মিস কতে গেছেন কুরাইস দের মাঝেই খলিফা হবে, মোহাজের দের মধ্যে থেকেই হবে। এটা দেয়া আছে।
আপনার দেয়া বই নামাচ্ছি। পড়বো।
উপরেই কনট্রোভারসি নিয়ে প্রশ্ন এসেছে। এখন সামলাবেন কীভাবে?
আমার সাজেশন হলো সহী হাদিস গ্রন্থ। এইগুলি আগে বিষয় ভিত্তিক পড়েন। বিদেশি লেখকদের ইতিহাস নির্ভর লেখা লিখতে গেলে কোন সার্পোট পাবেন না। কারণ এইগুলি সবার কাছে গ্রহনযোগ্য নয়। কিছু শিয়া কনসেপ্টও চলে আসবে। খুব ভালো এইসব বিষয় না জানলে টেরও পাবেন না।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর বাংলায় বুখারী, মুসলিম। তিরমিজী এবং সুনানে আবু দাউদ আছে। রেফারেন্স এর জন্য এদের ব্যবহার করুন। অনেক ঝামেলা থেকে বেচে যাবেন।
ধন্যবাদ।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৩:২৬
শের শায়রী বলেছেন: নীল ভাই মহানবী কোথাও সরাসরি কিন্তু হযরত আবু বকর (রাঃ) তার উত্তারাখিকারী নির্বাচিত করে যান নি। আমি লিখছি হযরতের (সাঃ) এর ওফাতের পর সেখানে হাদীসের সাথে সম্পর্কিত বিষয় কমই আছে, ঐতিহাসিক দৃষ্টি কোন দিয়ে লেখা গুলো আমি লিখব আগেই বলেছি।
যাই হোক অনেক ধন্যবাদ আপনার গুরুত্বপূর্ন মন্তব্যের জন্য দ্বিতীয় পর্বে যথাযথ রেফারেন্স দিবার চেষ্টা করছি, কোথাও যদি ক্রুতী চোখ পড়ে কাইন্ডলি জানাবেন। কৃতজ্ঞ থাকব।
৯| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ২:০৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
ইসলাম মৌলিক ধর্ম নহে, ইহা ইহুদী ও খৃষ্টান ধর্মের আরবী ভার্সন। নবী জীবিতকালে উনি মৌখিকভাবে আদেশ নির্দেশ যা দিয়েছেন, তার সাথে আরবদের সংস্কৃতি ও সামাজিক জীবনকে মিল রেখে খলীফা ওসমান(রা: ) তোরাহ ও নিউটেষ্টামেন্ট থেকে ইসলামের মুল বই লিখায়েছেন।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৩:২৭
শের শায়রী বলেছেন: মুরুব্বী লরেন্স অভ আরাবিয়া সিনেমাটা দেখছেন? দারুন সিনেমা না দেখলে দেখে নেবেন। আমেরিকার অবস্থা কি? চিন্তায় আছি।
১০| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৩:৩৯
সোহানী বলেছেন: কারো মনে আঘাত জনিত যে কথাখান বলিয়াছেন উহার মর্ম অনেকেই বুজিতে পারেন নাই । আর মন্তব্য আকারে মনে আঘাত দিলেই বরং একুল ওকুল দুই কলেই ভালো ফলাফল বহিয়া আনে। ইহাতে সর্বোচ্চ উপকারিতা হইলো আপনার মন পাস্তর ন্যায় শক্তিশালি হইয়া উঠিবে। এবং হাজার আঘাতেও ব্লগ ছাইড়া যাওয়ার ঘোষনা দিবেন না........
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৩:৩১
শের শায়রী বলেছেন: হা হা হা বোন আমার মন অনেক আগেই প্রস্তরীভুত হইয়া গেছে, কারো আঘাতে খুব বেশি কিছু যায় আসে না ব্লগ ছাড়ার আপাতত ইচ্ছাও নাই যদি না কেঊ পিডুনি দেয়
১১| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ভোর ৪:৩৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
খলীফা ওমর (রা: ) ভাবতেন যে, নবীর (স: )'এর মৃত্যু হতে পারে না; সেই ওমর (রা: ) ইসলামের রাজ্য চালায়েছেন; এবার বুঝেন এই রাজ্য কিভাবে চলেছে, কেন আরবের মানুষ পেছনে পড়েছিলো সব সময়।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৩:৩২
শের শায়রী বলেছেন: মুরুব্বী করোনা ভাইরাসের কি অবস্থা? আমেরিকা তো শুনলাম সাফ হইয়া যাইতাছে করোনায় এই চান্সে দ্যাশে চইলা আসেন
১২| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৮:০৯
নেওয়াজ আলি বলেছেন: লেখা খুবই ভালো লাগলো।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৩:৩৩
শের শায়রী বলেছেন: পাঠে ও মন্তব্যে অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রিয় ভাই
১৩| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৮:৫৭
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: জনাব চাঁদগাজী উনি বয়স্ক মানুষ। ওনার কথায় কিছু মনে করবেন না।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৩:৩৪
শের শায়রী বলেছেন: অবশ্যই না, উনার কথায় মাইন্ড খাইলে আমার ব্লগে থাকাই অসম্ভব হয়ে যাবে
১৪| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৩০
রাজীব নুর বলেছেন: আমার একটা প্রশ্নঃ
ইস্তামবুলের যাদুঘরে- নবিজির (সঃ) এর এক টা চুল আছে, পায়ের ছাপ আছে।
হযরত আলীর তলোয়ার আছে, নবিজির মেয়ের জায়নামাজ আছে। এই যাদু ঘরে মুসমনরা চিৎকার করে কান্না করে।
আমার প্রশব যাদুঘরে যা আছে তা কি আসলেই নবিজির? যদি নবিজির হয় তাহলে, যেমন ধ্রুন পায়ের ছাপ। পায়ের ছাপ আরো অনেক জাগায় আছে। পায়ের ছাপের মাপ গুলো সমান না।
যে তলোয়ার টা সে বিশাল। এই তলোয়ার সাথে বহন করা সম্ভব না। বিশাল তলোয়ার।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:৩৪
শের শায়রী বলেছেন: প্রথমেই আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি দেরীতে উত্তর দেবার জন্য। আপনার প্রশ্নের সাপেক্ষে আমাকে ইন্টার নেটে সহায়তা নিতে হল, ইস্তাম্বুলে নবীজির দাড়ি মোবারক, সীল মোহর, দন্ত মোবারক, পায়ের ছাপ সহ আরো কিছু জিনিস আছে। সেক্ষেত্রে আমার মুল কিউরিসিটি ছিল কিভাবে উনার দাড়ি মোবারক পাওয়া গেল, নেটে সার্চ দিয়ে দেখলাম ওই দাড়ি হযরতের প্রিয় ক্ষৌরকার সাহাবী হযরত সালমান ফারসী (রাঃ), হযরত আবু বকর (রাঃ), হযরত আলী (রাঃ) সহ আরো অনেকের উপস্থিতিতে কেটে নেয় এবং সেখান থেকে সংগ্রহ করে।
প্লাষ্টার অভ প্যারিসে যখন পায়ের ছাপ নেয়া হয় বাইরে থেকে তুলনামুলকভাবে সেটা অনেক বড় দেখায় এটা আপনি যে কোন জায়গায় দেখবেন, কিন্তু আমাকে যদি প্রশ্ন করেন এটা কতখানি সত্য তার জবাব আমি ব্যাক্তিগতভাবে দিতে অপারাগ, কিন্তু নেটে দেখলাম বিশ্বাসযোগ্য। আর তলোয়ারের ব্যাপারে সেক্ষেত্রে আমি বলব আপনি ঢাকা ন্যাশনাল মিউজিয়ামে গেলেই দেখবেন সেখানে যেসব বিখ্যাত বিভিন্ন ব্যাক্তির তলোয়ার প্রদর্শিত হচ্ছে তা কত বড়। প্রায় অবিশ্বাস্য! আমি নিজেও ওই গুলো দেখে প্রশ্ন করতাম নিজের কাছে কিভাবে একজন মানুষের এত বড় তলোয়ার ব্যাবহার করা সম্ভব! কিন্তু মিউজিয়ামে যেহেতু দেখছি এবং সেখানে তথ্য সহ আছে নিশ্চয়ই সেগুলো ঐতিহাসিক ভাবে সত্য।
সব শেষে যেহেতু আমি এই ব্যাপারে জানি না, তাই এব্যাপারে আমি নিশ্চিত জবাব দিতে সক্ষম না। আপনি চাইলে এই লিঙ্ক টা দেখতে পারেন Relics of Muhammad
পাঠে এবং মন্তব্যে অশেষ কৃতজ্ঞতা ভাই।
১৫| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৫৪
ইসিয়াক বলেছেন: বরাবরের মতো চমৎকার গোছানো পোষ্ট।
প্রিয় ভাইয়া/প্রিয় ব্লগার আপনি কি জানেন, আমি আপনার একজন একনিষ্ঠ ভক্ত। কেন জানি বলতে ইচ্ছা করলো্ কথাটা।
শুভকামনা সবসময়।
ভালো থাকুন।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:৫৩
শের শায়রী বলেছেন: এ আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া প্রিয় কবি আপনার মত একজন সব্যসাচী ব্লগার আমার প্রশংসা করছে। অনেক কৃতজ্ঞতা জানবেন।
১৬| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:২৯
কাছের-মানুষ বলেছেন: চালিয়ে যান, সাথে আছি। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:৫৪
শের শায়রী বলেছেন: ভাই আপনি কি পরের পর্ব দেখছেন? অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা জানবেন।
১৭| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:৩৯
রাশিয়া বলেছেন: তাবুকের যুদ্ধ হয়েছিল রাসূল (স) এর ইন্তেকালের আগের বছর। আর তার পরের বছরই আবু বকর (রা) কিভাবে বিশাল সৈন্যবাহিনী গঠন করলেন, যার ভয়ে বড় বড় শক্তিগুলোর থরহরি কম্প শুরু হয়ে গিয়েছিল?
আবু বকর (রা) কি ইতিহাসের কোন সুপার পাওয়ার ক্যারেক্টার ছিলেন, যিনি মাত্র দুই বছরের মধ্যে ভন্ড নবীর ফতোয়া, যাকাত অস্বীকার কারীদের শায়েস্তা এবং বহিঃ পরাশক্তিকে একসাথে দমন করেছিলেন?
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:৫৮
শের শায়রী বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা প্রিয় ভাই। উনার ব্যাপারে যা পড়লাম তাতে একথা নিঃসন্দেহ উনি সমর ইতিহাসে একজন অন্যতম শ্রেষ্ঠ কৌশলী। কারন যে অবস্থা থেকে মাত্র দুই বছরে মুসলিমদের শ্রেষ্ঠ সামরিক শক্তির ভীত এনে দিয়েছেন তা অনেকটা অকল্পনীয়। দ্বিতীয় পর্ব দিয়েছি। দেখছেন কি?
১৮| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:৫৭
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: খুবই সেনসিটিভ ইস্যু।
সিরিজ সমাপনীর অপেক্ষায়।
নির্মোহ ঘোষনার বাস্তবায়ন খুঁজবো সিরিজে
তারপর কথা হবে।
ম্যা'ভাই বলে কথা। ভরসাতো আছেই।
সত্য আবেগের পর্দা ছিড়ে সামনে আসুক। সেই সত্যের উপর ভিত গড়লেই তা হবে মজবুত।
অন্ধত্ব যদি বিশ্বাসে থকাে তার ফলও অন্ধই হবে্ বৈকি।
আলোর আসুক, বিশ্বাসে, চেতনায়- আলোতেই দূর হোক অজ্ঞনতা, দলান্ধতা, গোত্রপ্রীতির আঁধার।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:০২
শের শায়রী বলেছেন: অন্ধত্ব যদি বিশ্বাসে থকাে তার ফলও অন্ধই হবে্ বৈকি। ম্যা'ভাই দোয়া রাখবেন এই অন্ধত্ব যেন আমাকে কোন দিন গ্রাস না করে। দ্বিতীয় পর্ব দেখছেন?
১৯| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:১০
রানার ব্লগ বলেছেন: ধর্ম সম্পর্কে ওই ভাবে আমি বিজ্ঞ নই এবং অজ্ঞ ও নই। তবে আমার ছোট্ট মাথা বলে মুহাম্মাদ (স) এর মৃত্যুর পরের অনেক ইতিহাস ধামাচাপা দেয়া আছে। যা জানি তা পরিপুর্ন না। রাজিব নূর ভাই এর সাথে আমিও একমত, মুহাম্মাদ (স) এর দাড়ি চুল এই গুলা কে কালেক্ট করলো, যেখানে মুহাম্মাদ (স) নিজে মানা করে গেছেন এই গুলা সংরক্ষন করতে। পায়ের ছাপ কি করে পেলো , এবং কোঠা থেক এত পায়ের ছাপ পাওয়া গেলো ? ধর্মিয় অনুভূতিকে পুজি করে এটাও কি এক ধরনের ব্যাবসা নয় ?
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:১৭
শের শায়রী বলেছেন: রানার ভাই আমি উপরে রাজীব ভাইর পোষ্টে এ ব্যাপারে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছি। তবে আপনি যেটা বলেন তবে আমার ছোট্ট মাথা বলে মুহাম্মাদ (স) এর মৃত্যুর পরের অনেক ইতিহাস ধামাচাপা দেয়া আছে। আবার আপনি যখন বলেন যা জানি তা পরিপুর্ন না। এটা ১০০% ঠিক। কন কিছুই ধামাচাপা দেয়া হয়নি, সে সুযোগ ও নেই কারন সময়ের হিসাবে মাত্র ১৪০০ বছর এ ছাড়া সারা দুনিয়ার মুসলিম অমুসলিম স্কলাররা উনাকে নিয়ে এখনো বিশ্লেষান করছে সেক্ষেত্রে ধামাচাপা না, না জানার প্রধান কারন আমাদের নিজেদের অজ্ঞতা।
পাঠে এবং মন্তব্যে অশেষ কৃতজ্ঞতা।
২০| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:১২
রাজীব নুর বলেছেন: আমি দুঃখিত।
উপরে আমার মন্তব্যে বানান ভুল আছে বলে।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:১৮
শের শায়রী বলেছেন: ইটস ওকে রাজীব ভাই, আমার নিজেরও অসংখ্য বানান বা টাইপো হয়। এটা ব্লগে অতি সাধারন। অনেক ধন্যবাদ।
২১| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৪
চাঁদগাজী বলেছেন:
বেদুইন শাসকদের 'খোলাফায়ে রাশেদীন' বা আরো খেতাব দেয়া যেতে পারে; দিনের শেষ ওরা সামন্ত রাজা ছিলো, এর থেকে আলাদা কিছু নয়।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:২৯
শের শায়রী বলেছেন: মুরুব্বী বাংলা সিনেমা "মুরুব্বী কেন অবুজ" দেইখেন, দারুন কিন্তু
২২| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:০১
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি কোথায় ভাইজান?
মন্তব্যের উত্তর কখন দিবেন?
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:০৬
শের শায়রী বলেছেন: রাজীব ভাই, আমি আজকে সারাদিন ব্যাস্ত ছিলাম, এবং হযরত আবু বকর (রাঃ) কে নিয়ে লেখা শুরু করছি। অবশ্যই সব প্রশ্নের জবাব দেব আমার যদি জানা থাকে তবে কিছুটা সময় লাগবে। এই মুহুর্তে আমি লিখতে আছি, আমার এই দেরী ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য অনুরোধ রইল। লেখাটা শেষ হলেই আমি সিরিয়ালি উত্তর দেব। আবারো ক্ষমা প্রার্থনা করছি দেরী হবার জন্য।
২৩| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:০৩
অভি চৌধুরী বলেছেন: আমাদের বাগানে বসার জায়গায় দুটো চেয়ার আছে, আনুমানিক ১৯৬৫ এর দিকে কেনা।আব্বু থেকে জানা, তিনি বলেছেন অনেক শখ করে গাজীপুর মৌচাক থেকে কাঠ কিনে বানানো। সেই দুটো চেয়ারে আমরা বসতে পারিনা, কারণ তার খুঁটি গুলো অনেকটাই ভেঙে গেছে, ট্যাবিলটার উপরে কিছু রাখা যায়না কারণ কিছু রাখলেই এটা নড়ে উঠে আর অদ্ভুদ কিছু শব্দ করে। যেগুলো প্রচন্ড বিরক্তিকর, তবুও আব্বু সেগুলো ফেলে দেয়না, তিনি বলেন এখানে নাকি আমাদের মাতামহ বসতেন। আমরা ফেলে দেইনা বলে এগুলো এখনো আছে। আমদের এমন কোন আবেগ কাজ করেনা, কিন্তু আব্বুর আবেগের জায়গাটা আমরা শ্রদ্ধা ভরে দেখি বলেই এখনো সেগুলো আমদের সুন্দর বাগানে কুৎসিৎ ভাবেই পড়ে আছে। হয়তো আমার পর্যন্ত চেয়ার গুলো থাকবে, কিন্তু আমি নিশ্চিৎ আমার সন্তানেরা (যদি আসে কোনদিন) সেগুলোকে রাখবেনা, অযথা শব্দ দুষনের আর বাজে ব্যবহারের কারনে লাথি মেরে ছুড়ে ফেলবে এতে কোন সন্দেহ নেই,।
আপনি খুব চমৎকার পাঠক যত্নবান মানুষ এতে কোন সন্দেহ নেই, আপনার এখানে আমাদের আসবাবের মতই কিছু অযথা পুরোনো অপ্রিয় আসবাব ভিড় করে সন্মানের কারনে ফেলে দেয়া যায়না, কিন্তু জড় (অ)পদার্থ বলে সেই বিবেক বুদ্ধি নেই যে সন্মানের বিনিময়ে কি করা উচিৎ আর কি বলা উচিৎ। সে জানেনা বিশ্বাস কি কেন। সে জানেনা মানুষ কি মনুষত্ব্য কি। সে জানে শুধু বিকলাঙ্গের মত ঠেশ লাগিয়ে দাড়িয়ে থাকা আর এখনো পৃথিবীর জায়গা দখল করে রাখা। কিন্তু মহাপ্রলয়ের দিন এরা ধুলোর মত উড়ে যাবে একদিন ইনশাল্লাহ।
আপনার পর্ব গুলো পড়ছি, ধর্ম জ্ঞানের অভাবে শুধু পড়ে জেনে চুপ থাকা ছাড়া কিছু বলার নেই,
ধন্যবাদ আপনাকে
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:৩১
শের শায়রী বলেছেন: আল্লাহ আমাদের সবাই কে জ্ঞান দান করুক। পাঠে এবং মন্তব্যে অশেষ কৃতজ্ঞতা জানবেন ভাই।
২৪| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:২৫
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: লিখে যান। সুন্দর একটি জ্ঞানগর্ব বিষয় নিয়ে লিখতে বসেছেন।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:৩৫
শের শায়রী বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানবেন। তবে এব্যাপারে আমার নিজের জ্ঞান ও অতি সামান্য তাই এখনো পড়াশুনার পর্যায়ে আছি, সেখান থেকে লেখার চেষ্টা করছি।
২৫| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:৪৯
মহসিন ৩১ বলেছেন: গল্প জোতই বিস্তৃত হক তার কোন একটা দিক থাকবেই , নিশ্চিত ভাবেই সে দিকটা তার সেক্যুলার সাইড। অপার্থিব কোন গল্প ইতিহাস হলেও তার গন্ধ থেকে যাবে। ধর্ম এমন কোন বোকা বানানর উপায় হয়তো নয়; সময় বহুলাংশে এর পক্ষের সত্যতায় এই উভয় ধারার বহু কিছু সংজোজন রেখে গেছে। মানুষ নিজেরা ধার্য করে কখন কোনটার চল বেশি। তবে কোন কিছুর নিশ্চয়তার জন্য মৌলিক চিন্তার শুদ্ধতার দরকার বেশি হয় টেকনিক্যালিটির চেয়েও বেশি। পারথিব জীবন একেবারেই টিকসই হয় না তাহলে।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:৪১
শের শায়রী বলেছেন: আপনার মন্তব্য ভীষন দ্ব্যর্থ বোধক। তাই প্রতি উত্তরে যাওয়া থেকে বিরত থাকলাম। পাঠে এবং মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা জানবেন।
২৬| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১:১২
নিভৃতা বলেছেন: আপনিও আমার সালাম জানবেন ভাই। আপনার মত জ্ঞানী মানুষের প্রশংসা পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে করছি। আমি শুধু আপনাদের মত জ্ঞানী গুণীজনদের কাছ থেকে জ্ঞান আহরণের সামান্য চেষ্টা করছি মাত্র। এছাড়া আর কিছুই না।
আপনি শক্তিমান এবং ধৈর্য্যশীল লেখক। পরবর্তী পর্ব অবশ্যই অনেক সুন্দর হবে ইনশাআল্লাহ। অনেক অনেক দোয়া রইল। ভালো থাকবেন।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:৪৩
শের শায়রী বলেছেন: পরবর্তী পর্ব কি দেখছেন বোন? ফিরে এসে প্রতি মন্তব্য দেয়ায় আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানবেন।
২৭| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ২:৫০
কাতিআশা বলেছেন: এত সুন্দর তথ্যবহুল পোস্টের জন্য অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:৪৪
শের শায়রী বলেছেন: বোন আপনার মন্তব্য এবং পাঠে অশেষ কৃতজ্ঞতা জানবেন।
২৮| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৮:১৩
নীল আকাশ বলেছেন: আপনি ভুল ধারণার উপর এখনও আছেন। দেখুন সহী হাদিসে কী বলে?
১ম খলীফা হযরত আবুবকর (রাঃ রাসূলে করীম (ছাঃ) স্বীয় অনুপস্থিতিতে আবুবকর (রাঃ)-কে দায়িত্ব প্রদানের মাধ্যমে স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়ে গিয়েছিলেন (বুখারী হা/৭১৩, মুসলিম হা/৪১৮; মিশকাত হা/১১৪০)।
সাহাবীদের যেকোন ব্যাপারে ্সহী হাদিস সবচেয়ে বেশি গ্রহনযোগ্যতা পাবে। অন্য কিছু নয়।
ধন্যবাদ।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:০০
শের শায়রী বলেছেন: নীল আকাশ ভাই, আপনি ইঙ্গিত দেয়াকে সুস্পষ্ট হিসাবে ধরে নিয়েছেন। কিন্তু সুস্পষ্টতা আলাদা ব্যাপার। যদি ধরেও নেই স্পষ্ট ইঙ্গিত সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন থেকে যায় হযরত আবু বকর (রাঃ) ছাড়া বাকী তিন খলিফা সেই ইঙ্গিত কার্যকর করে নি। এখন আপনি বলতে পারেন তারাতো প্রত্যেকেই নিহত হয়েছেন, কিন্তু দেখুন উসমান (রাঃ) দশ দিন বাসায় গৃহবন্দী ছিলেন তার আগেই অসন্তোষ ধুমায়িত হচ্ছিল সে কি তখনো পারত না পরবর্তী খলিফা নির্বাচন করে যেতে? আবার যদি উমর (রাঃ) র দিকে তাকাই সে তো সুস্পষ্ট ভাবে এর বিরোধিতা নির্বাচনের করছে।
মহানবী কর্তৃক উত্তরাধিকারী না রেখে যাবার ব্যাপারটি ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমর (রাঃ) আরো পরিস্কার করে দিয়ে গেছেন। তার এ বিবৃতির আগে কেউ কেউ মনে করত মহানবী তার মৃত্যুর আগে হযরত আবু বকর (রাঃ) কে উত্তরাধিকারী মনোনীত করে গেছেন। কিন্তু হযরত উমর (রাঃ) তার মৃত্যুর পূর্বে উত্তরাধিকারীর প্রশ্নে বলেনঃ আমি যদি খলিফা নিয়োগ করে যাই, তাহলে বুজে নিও যে, যিনি (মহানবী) আমার থেকেও শ্রেষ্ঠতর ছিলেন তিনিও খলিফা নিয়োগ করে গিয়েছিলেন। আর আমি যদি ব্যাপারটা মুসলমানদের স্বাধীন বিবেচনার ওপর ছেড়ে দিয়ে যাই তাহলে বুজে নিও যে, যিনি (মহানবী) আমার থেকে শ্রেষ্ঠতর ছিলেন তিনিও ওটা তাদের স্বাধীন বিবেচনার ওপর সোপর্দ করে গিয়ে ছিলেন। (সীরাতে ইবনে হিশাম, পৃষ্ঠা ৩৪৯)।
এ ক্ষেত্রে আপনি বলবেন ইবনে হিশাম কোন হাদীস বেত্তা নয়, কিন্তু তিনি একজন প্রতিথযশা ইসলামিক ঐতিহাসিক এবং বিশ্লেষক নিঃসন্দেহে। ওদিকে হযরত আলী (রাঃ) যার পুরো খেলাফত কালটাই কেটেছে গৃহ যুদ্ধের মাঝে, তিনি নিশ্চয়ই তার পূর্ব সুরী দুই খলিফার অবস্থা দেখছেন এবং হয়ত নিজেও জানতেন তার ভাগ্যেও একই অবস্থা ঘটতে পারে সেক্ষেত্রে সে কেনো তার পরবর্তী খলিফার নাম দিয়ে যায়নি?
কেন আবু বকর (রাঃ) র খিলাফতের সময় তিনভাগ হয়ে গিয়েছিল সে সময়ের মুসলমান রা? যার একটা অংশের নেতৃত্বে ছিল হযরত আলী (রাঃ)? বা অন্যান্য যেসব সাহাবা হযরত আলীকে সমর্থন দিয়েছিল যেমন যুবাইর ইবনুল আওয়াম, তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহর মত সাহাবী? তারা কি মহানবীর নির্দেশের বাইরে গিয়ে এগুলো করছে?
ভাই আপনি আমাকে যে সব হাদীস দিয়েছেন হযরত আবু বকর (রাঃ) এর ব্যাপারে তার সাথে আমি আরো কিছু দিলাম, দেখেনঃ
আয়াত, হাদিস ও ইমামদের অভিমতে আবু বকর (রাঃ) এর খিলাফতের প্রতি ইশারা
হুযাইফা (রাঃ) থেকে তিরমিযী ও হাকিম বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমার পর আবু বকর ও উমরের অনুসরণ করবে। এ হাদিসটি আবুদ দারদা থেকে তাবারানী আর ইবনে মাসউদ থেকে হাকিম বর্ণনা করেছেন।
আবদুল্লাহ বিন উমর (রাঃ) থেকে আবুল কাসেম বাগাবী বর্ণনা করেছেন যে, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছেন, “আমার পর বারোজন খলীফা হবেন আর আবু বকর সিদ্দীক আমার পর সামান্য জীবিত থাকবেন।” এ হাদিসের প্রথম অংশের ব্যাপারে সকল মুহাদ্দিসই একমত। এটি কয়েক পদ্ধতিতে বর্ণিত হয়েছে, এ সম্পর্কে আমি অন্য ব্যাখ্যা গ্রন্থে আলোচনা করেছি।
বুখারি ও মুসলিম শরীফের এ হাদিস, যা আমরা আগেই উল্লেখ করেছি যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওফাতের আগে বক্তৃতায় বলেছিলেন, আল্লাহ তার এক বান্দাকে অবকাশ দিয়েছেন …। সেই বক্তৃতায় তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেছিলেন, “সব দরজাই বন্ধ হয়ে যাবে, কিন্তু আবু বকরের দরজা খোলা থাকবে।”
এক বর্ণনায় আছে, আবু বকরের জানালা ছাড়া মসজিদের সকল জানালা বন্ধ থাকবে। ওলামায়ে কেরাম লিখেছেন, এটা দিয়ে আবু বকরের খিলাফতের প্রতি ইশারা করা হয়েছে, কারন তিনি এ পথেই মসজিদে নামায পড়ানোর জন্য আসতেন।
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আবু বকরের দরজা ছাড়া সকল দরজা বন্ধ করে দাও।” এ হাদিসটি ইবনে আদী, ইমাম তিরমিযী হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) থেকে, যাওয়াইদুল মুসনাদ গ্রন্থে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে, তাবারানী হজরত মুআবিয়া বিন আবু সুফিয়ান (রাঃ) থেকে এবং বাযযার হজরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন।
জুবায়ের বিন মুতঈম থেকে বুখারি ও মুসলিম বর্ণনা করেছেনঃ একদিন এক মহিলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে উপস্থিত হলো। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে পুনরায় আসতে বললেন। সে বললো, “আমি আবার এলে হযরতকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাবো না, অর্থাৎ তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইন্তেকাল করবেন।” রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “তবে আবু বকর সিদ্দীকের কাছে এসো।”
আনাস (রাঃ) বলেছেনঃ “আপনার পর আমরা কার কাছে সদকা দিবো” – এ বার্তা দিয়ে বনু মুসতালিকের লোকেরা আমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে পাঠালে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “আবু বকরের কাছে।” (হাকিম)
ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে ইবনে আসাকির বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এক মহিলা এসে কিছু জানতে চাইলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে পরে আসতে বললেন। সে বললো, “আমি এসে যদি আপনাকে না পাই আর আপনার মৃত্যু হয়ে যায় ?” নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “তুমি এসে আমাকে না পেলে আবু বকরের কাছে যাবে, কারন আমার পর তিনি খলীফা হবেন।”
আয়েশা সিদ্দীকা (রাঃ) বলেছেনঃ মৃত্যুর সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “হে আয়েশা, তোমার পিতা আর তোমার ভাইকে আমার কাছে আসতে বলো, আমি তাদের দলীল লিখে দিতে চাই। কারন আমার আশংকা হয় যে, আমার পর কোন আশান্বিত ব্যক্তি খিলাফতের জন্য দাঁড়িয়ে যেতে পারে আর বলতে পারে – ‘আমি খিলাফতের উপযুক্ত’। কিন্তু আল্লাহ আর মুমিনগণ আবু বকরকে ছাড়া মেনে নিবে না।” (মুসলিম)
এ হাদিসটি আহমদ ভিন্ন পদ্ধতিতে বর্ণনা করেছেন। আয়েশা সিদ্দীকা বলেছেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত্যুর সময় আমাকে বললেন, “তোমার ভাই আবদুর রহমানকে ডেকে আনো, আমি আবু বকরের জন্য একটি দলীল লিখে দিবো, যাতে লোকেরা মতভেদ করতে না পারে।” এরপর নিজেই বললেন, “তাকে লাগবে না। আল্লাহ আবু বকরের ব্যাপারে মুসলমানদের মধ্যে মতানৈক্য রাখবেন না।”
আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) থেকে মুসলিম বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি আয়েশাকে জিজ্ঞেস করলো, “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যদি খলীফা নির্ধারণ করতেন, তবে কাকে (খলীফা) বানাতেন ?” তিনি বললেন, “আবু বকরকে।” সে বললো, “তার পর ?” তিনি বললেন, “উমর ফারুক।” সে বললো, “তার পর ?” তিনি বললেন, “আবু উবায়দা বিন জাররাহ।”
আবু মুসা আশআরী (রাঃ) থেকে বুখারি ও মুসলিম বর্ণনা করেছেনঃ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুমূর্ষ অবস্থায় বললেন, “হে জনতা, তোমরা আবু বকরের কাছে যাও। তিনি তোমাদের নামায পড়াবেন।” আয়েশা (রাঃ) বললেন, “ইয়া রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আবু বকর খুবই নরম মনের মানুষ। তিনি আপনার সাথে জায়নামাযে দাঁড়ালে নামাজ পড়াতে পারবেন না।” রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “তাকেই নামাজ পড়াতে বলো।” আয়েশা আবার একই আবেদন করলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “আবু বকরকেই বলো, তিনি যেন নামাজ পড়ান। তুমি তো ইউসুফ (আঃ) এর যুগের নবীর মতো।” এরপর লোকেরা আবু বকরের কাছে এলেন আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের জীবদ্দশাতেই (আবু বকর) লোকদের নামায পড়ান।
এ হাদিসটি মুতাওয়াতির। এটি আয়েশা, ইবনে মাসউদ, ইবনে আব্বাস, ইবনে উমর, আবদুল্লাহ বিন যামআ, আলি বিন আবু তালিব ও হাফসা (রাঃ) পৃথকভাবে বর্ণনা করেছেন। এদের পদ্ধতিও হাদিসে মুতাওয়াতির পদ্ধতির অনুরূপ।
আয়েশা (রাঃ) আরেকভাবে বর্ণনা করেছেন, “আমি এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এ জন্যই জিদ করেছিলাম যে, আমার অন্তর সাক্ষ্য দিচ্ছিলো – রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্থলাভিষিক্তকে মানুষ ভালবাসবে না। কারন আমি বুঝেছিলাম, যিনি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্থলবর্তী হবেন, লোকেরা তাকে হতভাগা মনে করবে। এজন্য আমি চাইছিলাম যেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবু বকরকে ছাড়া নামায পড়ানোর নির্দেশ দেন।”
ইবনে যামআ (রাঃ) বলেছেন, “যে সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লোকদের নামাজ পড়ার নির্দেশ দিচ্ছিলেন, তখনো আবু বকর আসেননি, এজন্য উমর এগিয়ে আসেন। কিন্তু নবী করীম সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন – ‘না না না (তিনবার), আবু বকরই নামাজ পড়াবেন।’ ”
ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদিসে রয়েছে, উমর (রাঃ) তাকবীরে তাহরীমা বললে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাগান্বিত হয়ে মাথা তুলে বললেন, “আবু কুহাফার ছেলে কোথায় ?” এ হাদিসের ব্যাপারে ওলামায়ে কেরামগণের অভিমত হলো, এটি সুস্পষ্ট দলীল যে, আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) সকল সাহাবার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বোত্তম। তিনিই সবচেয়ে বেশী খিলাফতের হকদার আর ইমামতের যোগ্য।
ইমাম আশআরী বলেন, “এটা প্রকাশ্য যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবু বকর সিদ্দীককে লোকদের নামায পড়াতে নির্দেশ দেন। সেখানে মুহাজির ও আনসার সাহাবীগণ উপস্থিত ছিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী – তিনিই ইমামতি করবেন, কুরআনের জ্ঞান যার সবচেয়ে বেশী। সুতরাং এ হাদিসের আবেদন হলো, আবু বকর গোটা উম্মত থেকে কুরআনের জ্ঞান বেশী রাখতেন। স্বয়ং সাহাবায়ে কেরাম রিদওয়ানুল্লাহি তাআলা আলাইহিম আজমাঈনও উক্ত হাদিস দিয়ে এ ফলাফল বের করেছেন যে, আবু বকর সিদ্দীকই খিলাফতের বেশী হকদার ছিলেন। (যারা ফলাফল বের করেছেন) তাদের মধ্যে উমর (রাঃ) আর আলি (রাঃ) অন্যতম।
আলী (রাঃ) এর বর্ণনা ইবনে আসাকির নকল করে বলেছেন, “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন আবু বকরকে নামায পড়ানোর নির্দেশ দিচ্ছিলেন, তখন আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম, অসুস্থ ছিলাম না, আমার জ্ঞান ও চৈতন্য ছিল। এরপর আমরা নিজেদের দুনিয়ার জন্য তার প্রতি রাজি হলাম, যার প্রতি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের দ্বীনের জন্য রাজি হয়েছিলেন।”
ওলামায়ে কেরাম বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগেই আবু বকর সিদ্দীক ইমামতি করেন আর পরামর্শদাতা হোন।
সহল বিন সাদ থেকে আহমাদ ও আবু দাউদ বর্ণনা করেনঃ একবার বনু বিন আউফ গোত্রে বিবাদ ও কলহ দেখা দিলে সংবাদ পেয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যোহরের পর মীমাংসার জন্য সেখানে যান, আর যাওয়ার সময় বলেন, “হে বিলাল, নামাযের সময় হলে এবং আমি না ফিরলে আবু বকরকে নামায পড়াতে বলবে।” সুতরাং যখন আসরের সময় হলো, বিলাল (রাঃ) ইকামত দিলেন আর তার কথায় আবু বকর (রাঃ) নামায পড়ালেন।
আবু বকর শাফেঈ গীলানিয়াত গ্রন্থে এবং হাফসা থেকে ইবনে আসাকির বর্ণনা করেছেন যে তিনি বলেছেন, “আমি আরয করলাম, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আপনি অসুস্থ থাকা অবস্থায় কি আবু বকরকে ইমাম বানিয়েছিলেন ?’ তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জবাব দিলেন, ‘না, বরং আল্লাহই তাকে ইমাম বানিয়েছেন।’ ”
দারা কুতনী ইফরাদ গ্রন্থে, খতীব এবং ইবনে আসাকির আলী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহ’র দরবারে তোমার ব্যাপারে তিনবার প্রশ্ন করেছি যে, তোমাকে ইমাম বানবো। কিন্তু সেখান থেকে তা প্রত্যাখ্যান করা হয় আর আবু বকর ইমামতির নির্দেশপ্রাপ্ত হোন।”
হাসান (রাঃ) থেকে ইবনে সাদ বর্ণনা করেছেনঃ আবু বকর সিদ্দীক বললেন, “ইয়া রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আমি স্বপ্নে নিজেকে অধিকাংশ লোকের আবর্জনা অতিক্রম করতে দেখেছি।” রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “তুমি অবশ্যই লোকদের কাজ করার সুযোগ পাবে।” আবু বকর বললেন, “আমি আমার বুকে দুটো চিহ্ন দেখেছি।” রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “তোমার খিলাফতের সময় দুই বছর।”
ইবনে আসাকির বর্ণনা করেছেন যে আবু বকর (রাঃ) বলেছেন, “আমি একদিন উমর ফারুকের কাছে গেলাম। সে সময় তার কাছে কিছু লোক খাবার খাচ্ছিলো। আমি পিছনের একজনকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘তোমরা কি পূর্ববর্তী নবীগণের কিতাবগুলো পড়েছো ?’ সে বললো, ‘এতে লেখা রয়েছে শেষ নবীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খলীফা হবেন সিদ্দীক।”
ইবনে আসাকির কর্তৃক বর্ণিত হয়েছে যে মুহাম্মদ বিন যুবায়ের বলেছেনঃ উমর বিন আবদুল আযীয (রাঃ) আমাকে কিছু প্রশ্ন করার জন্য হাসান বসরী’র কাছে পাঠালেন। আমি তাকে বললাম, “আবু বকরের খিলাফত নিয়ে লোকেরা মতভেদ করেছিলো। আপনি আমাকে পূর্ণাঙ্গ জবাব দিন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কি তাকে খলীফা বানিয়েছিলেন ?” তিনি রেগে বসে পড়লেন আর বললেন, “কেন ? এতে কি কোন সন্দেহ আছে ? আল্লাহ’র কসম, আল্লাহ তাআলাই তাকে খলীফা বানিয়েছেন। আল্লাহ কেন খলীফা বানাবেন না, তিনি সবচেয়ে বেশী জ্ঞানী আর মুত্তাকী লোকেরা তাকে খলীফা না বানানো পর্যন্ত তিনি মৃত্যুবরণ করতেন না।”
ইবনে আদী কর্তৃক বর্ণিত হয়েছে যে আবু বকর বিন আয়াস বলেছেনঃ হাকিম রশীদ আমাকে বললেন, “লোকেরা আবু বকরকে কিভাবে খলীফা বানিয়ে নিলো ?” আমি বললাম, “হে আমিরুল মুমিনীন, এ কাজে আল্লাহ, তার রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আর সকল মুসলমান নীরব ছিলেন।” খলীফা হারুন রশীদ বললেন, “একটু ব্যাখ্যা করে বলুন।” আমি বললাম, “হে আমিরুল মুমিনীন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আটদিন অসুস্থ ছিলেন। এ সময় বিলাল (রাঃ) আরয করলেন, “ইয়া রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, কে নামায পড়াবেন ?” তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “আবু বকরকে নামাজ পড়াতে বলো।” আবু বকর আট দিন পর্যন্ত নামাজ পড়ান আর এ দিনগুলোতে নিয়মিত ওহী নাযিল হয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ’র নীরবতার কারনে নীরব ছিলেন আর সকল মুসলমান রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নীরবতার কারনে নীরব ছিলেন।” খলীফা হারুন রশীদের কাছে এ অভিমতটি খুবই পছন্দনীয় মনে হলো আর তিনি বললেন, “বারাকাল্লাহু ফিক।”
ওলামায়ে কেরামের একটি দল আবু বকর (রাঃ) এর খিলাফতের প্রমাণ পেশ করেছেন। বায়হাকী বর্ণনা করেছেন, ইমাম হাসান বসরী এ আয়াত দিয়ে দলীল দিয়েছেন –
ا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا مَن يَرْتَدَّ مِنكُمْ عَن دِينِهِ فَسَوْفَ يَأْتِي اللَّـهُ بِقَوْمٍ يُحِبُّهُمْ وَيُحِبُّونَهُ
“হে মুমিনগণ, তোমাদের মধ্যে যে স্বীয় ধর্ম থেকে ফিরে যাবে,অচিরেই আল্লাহ এমন সম্প্রদায় সৃষ্টি করবেন,যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন এবং তারা তাঁকে ভালবাসবে।” (সূরাহ আল-মাইদাহ, ৫ :৫৪)
হাসান বসরী বলেন, “আল্লাহ’র কসম, আরব যখন ধর্মত্যাগী হয়, আবু বকর আর তার সাথীরাই মুরতাদদের বিরুদ্ধে জিহাদ করে তাদের ইসলামে ফিরিয়ে আনেন।”
কাতাদা (রাঃ) এর বরাত দিয়ে ইউনুস বিন বাকীর লিখেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওফাতের পর আরবের কিছু লোক মুরতাদ হয়ে যায়। তখন আবু বকর (রাঃ) তাদের সাথে জিহাদ করেছিলেন। সে সময় আমরা পরস্পরে বলতাম, “কুরআনের এই আয়াত – فَسَوْفَ يَأْتِي اللَّـهُ بِقَوْمٍ আবু বকর সিদ্দীক আর তার সাথীদের ব্যাপারে নাযিল হয়েছে।”
কুতায়বা থেকে ইবনে আবী হাতেম বর্ণনা করেছেন –
قُل لِّلْمُخَلَّفِينَ مِنَ الْأَعْرَابِ سَتُدْعَوْنَ إِلَىٰ قَوْمٍ أُولِي بَأْسٍ شَدِيدٍ
“পিছনে পড়ে থাকা (আরব) বেদুইনদের তুমি (আরো) বলো – অচিরেই তোমাদের একটি শক্তিশালী জাতির সাথে যুদ্ধ করার জন্য ডাক দেওয়া হবে …” (সূরাহ আল-ফাতহ, ৪৮ :১৬)
এ আয়াতে উল্লেখিত কঠোর লড়াইকারী দারা বনূ হুলায়ফা গোত্র উদ্দেশ্য। ইবনে আবী হাতেম ও ইবনে কুতাইবা বলেন, “এ আয়াতটি আবু বকরের খিলাফতের দলীল। কারন তিনিই লোকদের তীব্র থেকে তীব্রতরভাবে লড়াই করার আহবান জানান।”
শায়খ আবুল হাসান আশআরী (রহঃ) বলেছেনঃ আবু আব্বাস সুরাইহ থেকে শুনেছি যে তিনি বলেছেন, “আবু বকর সিদ্দীকের খিলাফত কুরআন শরীফের উপরোল্লিখিত আয়াত দিয়ে প্রমাণিত। কারন ওলামায়ে কেরাম এ বিষয়ে একমত যে, এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) ছাড়া যাকাত অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে কেউ জিহাদ করেননি।”
সুতরাং এ আয়াতটি আবু বকরের খিলাফতের দাবী রাখে আর তার আনুগত্য করা মানুষের জন্য ফরয, কারন যে তা মান্য করবে না, আল্লাহ অবশ্যই তাকে শাস্তি দিবেন।
ইবনে কাসির (রহঃ) বলেছেন, “কিছু মুফাসসিরীন রোম, শাম আর পারস্যের যুদ্ধ দিয়ে এ আয়াতের তাফসীর করেছেন। কিন্তু এ যুদ্ধগুলো প্রস্তুতি আবু বকরই গ্রহণ করেন, যদিও তা উমর ফারুক ও উসমান গনীর যুগে এসে শেষ হয়েছে। তারা দু’জনই আবু বকরের অনুসারী ছিলেন।”
ইবনে কাসির বলেন, এ আয়াতটি আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) এর খিলাফতের দলীল –
وَعَدَ اللَّـهُ الَّذِينَ آمَنُوا مِنكُمْ وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَيَسْتَخْلِفَنَّهُمْ فِي الْأَرْضِ
“তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে আর সৎকর্ম করে,আল্লাহ তাদেরকে ওয়াদা দিয়েছেন যে,তাদেরকে অবশ্যই পৃথিবীতে শাসনকর্তৃত্ব দান করবেন ” (সূরাহ আন-নূর, ২৪ :৫৫)
ইবনে আবী হাতিম তার তাফসীর গ্রন্থে আবদুর রহমান বিন আবদুল হামীদ আল মাহদি থেকে বর্ণনা করেছেন, “এ (উপরোক্ত) আয়াত দিয়ে আবু বকর (রাঃ) আর উমর (রাঃ) এর খিলাফত প্রমাণিত।”
আবু বকর বিন আয়াশ থেকে খতীব বর্ণনা করেছেনঃ আবু বকর সিদ্দীক হলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খলীফা আর তার খিলাফত কুরআন দিয়ে প্রমাণিত। এ প্রেক্ষিতে ইরশাদ হচ্ছে –
لِلْفُقَرَاءِ الْمُهَاجِرِينَ الَّذِينَ أُخْرِجُوا مِن دِيَارِهِمْ وَأَمْوَالِهِمْ يَبْتَغُونَ فَضْلًا مِّنَ اللَّـهِ وَرِضْوَانًا وَيَنصُرُونَ اللَّـهَ وَرَسُولَهُ ۚ أُولَـٰئِكَ هُمُ الصَّادِقُونَ
“(এ সম্পদ) সেসব অভাবগ্রস্ত মুহাজিরদের জন্য, যাদের (আল্লাহ’র উপর ঈমানের কারণেই) নিজেদের ভিটেমাটি ও সহায়-সম্পদ থেকে উচ্ছেদ করে দেওয়া হয়েছে, অথচ এ লোকগুলো আল্লাহ’র অনুগ্রহ ও তার সন্তুষ্টিই হাসিল করতে চায়, আল্লাহ ও তার রাসুলের সাহায্য সহযোগিতায় তৎপর থাকে, (মূলত) এ লোকগুলোই হচ্ছে সত্যবাদী।” (সূরা আল-হাশর, ৫৯ :৮)
এ আয়াতে الصَّادِقُونَ শব্দ দিয়ে সাহাবায়ে কেরাম উদ্দেশ্য। আর আল্লাহ যাকে “সাদিক” বলেছেন, তিনি কখনো মিথ্যা বলতে পারেন না। আর সাহাবাগণ আবু বকরকে সবসময় “হে রাসুলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর খলীফা” বলে সম্বোধন করতেন। ইবনে কাসির বলেন, “এ গবেষণাটি খুবই সুন্দর।”
যাফারানী বলেছেনঃ আমি ইমাম শাফেঈ (রহঃ) এর কাছে শুনেছি যে তিনি বলেছেন, “আবু বকরের খিলাফতের বিষয়ে ইজমা হয়েছিলো। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওফাতের পর লোকদের মধ্যে দুনিয়ায় আবু বকরের চেয়ে ভালো মানুষ না থাকায় লোকেরা তার হাতে বাইয়াত দেয়।” (বায়হাকী)
আসাদুস সুন্নাহ ফায়ায়েল গ্রন্থে মুয়াবিয়া বিন কাররাহ থেকে বর্ণনা করেছেন, “আবু বকরের খিলাফত সম্পর্কে সাহাবায়ে কেরামগণ কোন প্রকার সন্দেহ পোষণ করতেন না। তারা সবসময় আবু বকরকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খলীফা বলে সম্বোধন করতেন। আর সাহাবীদের ইজমা কখনো ভুল ও বিভ্রান্তকর হতো না।”
ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে হাকিম বর্ণনা করেছেন, “যে জিনিসকে সকল মুসলমান ভালো মনে করে সেটা আল্লাহ’র কাছেও ভালো। আর যা সকল মুসলমানদের কাছে মন্দ তা আল্লাহ’র কাছেও মন্দ। সকল মুসলমান আবু বকরের খিলাফতকে ভালো মনে করতো। সুতরাং তা আল্লাহ’র কাছেও ভালো আর উত্তম।”
হাকিম ও যাহাবী লিখেছেন, “আবু বকরের খিলাফতের পর একদিন আবু সুফিয়ান বিন হরব হযরত আলী (রাঃ) এর কাছে এসে বললেন, ‘লোকদের কাজগুলো দেখুন, তারা কুরাইশদের এক নগণ্য ব্যক্তির কাছে বাইয়াত দিয়েছে। আপনি চাইলে অশ্বারোহী ও পদাতিক সৈন্য দিয়ে মদিনা ভরে দিবো।” আলী (রাঃ) বললেন, “হে আবু সুফিয়ান, আপনি দীর্ঘ সময় ধরে ইসলামের শত্রুতা করে এসেছেন, আপনি কলহ প্রিয়। আমার দৃষ্টিতে আবু বকরের খিলাফতের কোন মন্দ বিষয় নেই। কারন তিনি প্রত্যেক বিষয়ে দক্ষ ও হকদার।”
ভাই যেহেতু এটা নির্দিষ্ট না তাই এব্যাপারে দ্বিমত থাকবেই। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
২৯| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৩৯
নীল আকাশ বলেছেন: ইসলামের চারজন খলিফার ব্যাপারে ৪ রকম পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। ১ম জন পছন্দনীয় ছিলেন নবীর। দেখুন আপনি একমাত্র উমর রা. এর সেই লাইন ছাড়া নবীর পছন্দের বিপরীত আর একটা কিছুও পাবেন ন। আমি তন্ন তন্ন করে দেখছি। আমাকে বলার দরকার নেই। নিজেই চিন্তা করুন।
আজকে ২য় পোস্ট দিয়েছি। পড়ার আমন্ত্রণ দিলাম।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৬
শের শায়রী বলেছেন: নিমন্ত্রন গ্রহন করলাম প্রিয় ভাই
অবশ্যই পড়ব ইনশাল্লাহ।
৩০| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ রাত ১:১১
আমি তুমি আমরা বলেছেন: ইসলাম নিয়া কুনু পুস্ট দেখলেই মুরুব্বীর মগজের ভিত্রে গ্যাশটিকের বেদনা ঊঠে আর আপনে খালি এই লুকটার সাথে মজা লন।আপনে খুব খ্রাফ
অঃ টঃ মুরুব্বি কেন অবুঝ মুভিটার ডাউনলোড লিংক কিন্তু আমারে দেয়াই লাগবে।
০৩ রা মার্চ, ২০২০ রাত ২:৩০
শের শায়রী বলেছেন: ভাই লিঙ্ক দিতে পারতাম না অশ্চীলতার অভিযোগে বিশেষ করে নায়কের উদাম ড্যান্সের কারনে, সেন্সর বোর্ড কয়দিন আগে ওই ছবির সব কপি বাজেয়াপ্ত করছে । ইশ কয়ডা দিন আগে চাইলেই দিতে পারতাম। আফসুস।
৩১| ০৪ ঠা মার্চ, ২০২০ রাত ৩:৫২
ভুয়া মফিজ বলেছেন: খোলাফায়ে রাশেদিনদের ইতিহাস (প্রথম পর্ব) পড়া শুরু করলাম। অত্যন্ত ধীরে ধীরে পড়ন লাগতাছে। খালি প্যাচ লাইগা যায়। এইসব ইতিহাস নিয়া অনেক বিতর্ক আছে জানি। অনেকে আবার ইচ্ছা কইরাও প্যাচ লাগানের চেষ্টা করে। যাই হোক, খুবই সাবধানে পড়তাছি।
১৪ নং মন্তব্যে রাজীব নূর কইছেন, এই যাদু ঘরে মুসমনরা চিৎকার করে কান্না করে। এই যাদুঘরটা আছে ইস্তান্বুলের টপক্যাপি প্রাসাদের ভিতরে। দেইখা আইছি, তয় কাউরে চিৎকার কইরা কান্তে দেহি নাই। ইন ফ্যাক্ট, ওইখানে চিৎকার করনের কোন পরিবেশই নাই। উনি চিৎকার শুনলেন কোইত্থে?? সময় কইরা পোষ্টটা দেইখেন। আপনের ভালো লাগতে পারে।
ইস্তান্বুলের অলি-গলিতে কয়েকটা দিন - তৃতীয় পর্ব
আপনের এই উদ্যোগের প্রশংসা না কইরা পারতাছি না। পিলিস এক্সেপ্ট মাই হার্টি কনগ্র্যাচুলেশনস।
০৪ ঠা মার্চ, ২০২০ ভোর ৫:০৯
শের শায়রী বলেছেন: অনার ইজ মাইন। মেনি মেনি থ্যাঙ্কস ব্রাদার। আমার এই সিরিজ টা লিখতে যাইয়া ছাইড়া দে মা কাইন্ধা বাচি সিচ্যূয়েশান তৈরী হইছে, এত বেশী একাডেমিক ওয়েতে পড়াশুনা করতে হইছে যে নিজেরে নিজে গাইলাইছি কির লাইজ্ঞা এই জিনিস শুরু করছিলাম? যাউজ্ঞা আর কুন রকম একটা পর্ব দিতে হবে আলী (রাঃ) রে নিয়া তাইলেই শ্যাষ। এই কাম আর করুম না। বেশ কয়েকটা বই কিনতে হইছে এই ব্যাপারে কাটাবন ইসলামিক বইর মার্কেট থোন
অবশ্য ই পোষ্টে যাব আপনের। আইজকা রাইতে আর ঘুম অইলো না এখনো থরঃর্যাগনাক মুভি দেখুম। পলাইয়া আইছি বেড রুম দিয়া। বউ ঘুমাইয়া উইঠাই এক গাদা চিল্লা পাল্লা করবে সারা রাত জাইজ্ঞা থাকার জন্য।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৪৬
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: হযরত আলী আর আবু উবা্য়দার দ্বন্দ্ব দুঃখ জনক । তথ্য বহুল পোস্ট ।