নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হৃদয়ের কাছে বুদ্ধির বাস ভাল কথা। কিন্তু মাঝে মঝে হৃদয়ের ওপর থেকে বুদ্ধির শাসন তুলে দিতে হয়, হৃদয়কে স্বাধীন করে দিতে হয়, মুক্ত করে দিতে হয়। স্বাধীন মুক্ত হৃদয়ের ধর্মকে সব সময় বুদ্ধি দিয়ে বিচার করতে নেই।।
আজকে ভাগনার বিয়েতে ঢাকা অফিসার্স ক্লাব গিয়েছিলাম। অনেক স্মৃতি বিজাড়িত অফিসার্স ক্লাব। গত শতাব্দীর নব্বই দশকের প্রথম দিক, সবে মাত্র ইন্টার পরীক্ষা দিয়ে ঢাকা শহরের এন্ট্রি নিছি। ভার্সিটিতে ভর্তি পরীক্ষা দেবার জন্য ফার্মগেটে সানরাইজ কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়েছি। খুব সম্ভবতঃ আড়াই হাজার টাকা নিয়েছিল। সে সময় আড়াই হাজার অনেক টাকা। পুরা টাকাটাই জলে গেছে, কারন সাকুল্যে তিন দিন কোচিং ক্লাশ করছিলাম। থাকতাম নয়া পল্টনে, ছোট মামার বাসায়। কিন্তু ভালো লাগত না, কারন মামা মামী দুজনে চাকুরী করত বিধায় সারা দিন একা একা বাসায় থাকা মফস্বলের মুক্ত বিহঙ্গের জন্য বড়ই বেদনা দায়ক। তাই সুযোগ পেলেই ইস্কাটন গার্ডেন অফিসার্স কোয়ার্টারে চলে যেতাম।
কারন ওখানে মেজ খালু থাকত আমার দুই খালাতো ভাইকে নিয়ে। মেজ খালাম্মা ছিল আমদের মফস্বল শহরের আবার কলেজের টিচার। বড় খালাতো ভাই সে সময় জাহাঙ্গীর নগরের থার্ড ইয়ারের ছাত্র আর ছোট টা শুভ্র ছিল এক দম আমার সম বয়সী। সেও ইন্টার পাশ করছে তবে নটরডেম দিয়ে। সে হিসাবে শুভ্র ঢাকা শহরের ভিসা অনেক আগেই পেয়ে গেছে বলা চলে। ইস্কাটন গার্ডেন রোড টা চিনছেন নিশ্চয়ই। ওইযে হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল যে রাস্তায়। ওই রাস্তায় অনেক গুলো বিল্ডিং আছে, যেখানে সে সময় সরকারী আমলারা থাকত। এখনো থাকে। খালুও মাঝারী গোছের সরকারী আমলা থাকায় সেও ওখানে ফ্লাট পেয়েছিল। খালুর বাসা ছিল ইস্কাটন রোডের যে মাথায় হলি ফ্যামিলি তার অন্য মাথায় মানে যেখানে এসে বাংলা মটরের দিকে মিশেছে সেই দিকে দুটো ছয় তলা বিল্ডিং আছে তার একটা কোয়ার্টার। সে সময় নেভী চীফের বাসা ছিল ওই ছয় তালা বিল্ডিং এর উল্টা দিকে।
সকাল হলেই মামার বাসা থেকে মানে নয়া পল্টন থেকে বের হয় ওই ইস্কাটন গার্ডেন ছয় তলা বিল্ডিং চলে আসতাম, আমাদের বয়সী একটা গ্রুপ তখন ওখানে বেশ জমিয়ে আড্ডা দিত। তাজ, সাব্বু, মিঠু, রঞ্জন, ঠাকুর, টিংকু, রবার্ট সহ কমপক্ষে জনা পনেরজন একটা গ্রুপ। সারা দিন ঘুরে ফিরে সাত/ আট জন পাওয়া যেতই আর সন্ধ্যার পর পনের ষোল জন বা তারো বেশী জমত। যাকে বলে ম্যারাথন আড্ডা। এদের সবার বাবাই সরকারী চাকুরী করত বলে ওখানে যে কোয়ার্টার আছে সেখানে থাকত।
মুল ব্যাপারে আসি, সন্ধ্যা লাগলেই কারো যদি খিদে লাগত সেক্ষেত্রে আমাদের ভরসা ছিল ইস্কাটন অফিসার্স ক্লাব আর ওদিকে বাংলা মটর সোহাগ কম্যুনিটি সেন্টার, সেটা কি রকম? একটু ব্যাখ্যা করতে হয়। অফিসার্স ক্লাবে প্রতিদিনই কিছু না কিছু অনুষ্ঠান লেগে থাকত।
হয়ত রঞ্জন গেঞ্জিটা পেটের ওপর তুলে বলত “দ্যাখ কতদিন ভালো মন্দ খাওয়া হয় না, তোরা যাবি কিনা বল?” বলতে যেটুকু দেরী কারো রাজী হতে দেরী হত না।
অথবা পেটুক মিঠু বিনা কারনেই তাল উঠাত চল “দোস্তরা আজকে আসার সময় অফিসার্স ক্লাবে অনেক গুলো গাড়ী দেখছি, জম্পেশ কোন বিয়া হচ্ছে বোধ হয়, জামাই বঊকে দোয়া করে আসি” তো সে দোয়া করার জন্য কেউ দ্বিধা করত না।
যে যে অবস্থায় আছে সেই অবস্থায় ইস্কাটন অফিসার্স ক্লাবে চলে যেতাম, দুইজন এক জন করে সুড়ুৎ করে গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকে কোন টেবিলে বসে পড়তাম, তবে তার আগে খেয়াল করে নিতাম ওটা বিয়ে নাকি বৌ ভাত। এভাবে প্রায় প্রায়ই আমরা নব বধু বর কে দোয়া দিয়ে আসতাম খেয়ে দেয়ে। এক পর্যায়ে ক্লাবের বয়রা আমাদের পরিচিত হয়ে গেল, আর ওখানকার মহল্লার পোলাপান হিসাবে আমাদের তো একটা দাবী ছিলই। আমার এখনো মনে আছে বাবুরাম বলে এক বেয়ারা আমাকে খুব খাতির করত, গেলেই ওর টেবিলে বসতাম, আমাকে দেখলেই এক গাল হেসে দিয়ে বলত, “দাদা, এসেছেন, বসেন আপনার জন্য বড় রোষ্ট টা নিয়ে আসছি।”
যাই হোক এই বিয়া খাওয়ার একটা কোড নেম ছিল আমাদের “হাকুইল্লা” পার্টি। একবার তো রঞ্জন এই রকম এক হাকুইল্লা বিয়ে খেতে গিয়ে কনে পক্ষের হয়ে গেট টেট ধরে বরের কাছ থেকে চাওয়ার বেশী টাকা আদায় করে ফেলছিল, ওর মুখটা এত ইনোসেন্ট ছিল দেখলে মনে হত ওর মত ভালো মানুষ আর নাই, আর হাল্কা তোতলা হওয়ায় মানুষের সহানুভুতি ভালোবাসা খুব অল্পতেই পেত।
আমাদের গ্রুপটার নাম ছিল “ওল্ড বয়েজ হাকুইল্লা পার্টি”। একবার অবশ্য অল্পের জন্য কেলঙ্কারি দিয়ে বেচে গেছিলাম, সেলিম ছিল আমাদের গ্রুপের সব থেকে ক্যাবলাকান্ত, তিনবার মেট্রিক দিয়েও পাশ করতে পারে নাই, ওকে বার বার বলা হত হাকুইল্লা বিয়াতে গিয়ে ও যেন কোন কথা না বলে, কারন ওই যে বললাম ও ছিল বলদ কিসিমের। তো বলদের বাচ্চা বলদের কি খেয়াল চাপল একবার হাকুইল্লা খেতে গিয়ে পাশের চেয়ারের মুরুব্বীর সাথে খুব গল্প শুরু করে দিল ও ছেলের চাচাতো ভাইয়ের মামাতো ভাই এই টাইপের। ভাবী নাকি খুব সুন্দর হইছে। এই সব আর কি। ওর সাথে ওই টেবিলে মুন্না আর মিঠু বসছিলো।
আগেই বলছি হাকুইল্লার কিছু নিয়ম আছে, প্রথম নিয়ম এক টেবিলে সব হাকুইল্লা বসা কোন অবস্থাতেই যাবে না তাতে ধরা পড়তেই হবে তাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে খেয়ে আসতে হবে। দ্বিতীয় নিয়ম সাধারনতঃ খেতে হবে সেকেন্ড ব্যাচে, তৃতীয় নিয়ম জামা কাপড়ে খুব স্বাভাবিক থাকা চাই, তবে পায়ে স্পঞ্জ টাইপের কিছু থাকলে অবশ্যই ড্রাইভারের সাথে বসতে হবে এই টাইপের আর কি। চতুর্থ নিয়ম ঢুকতে ঢুকতেই বুজতে হবে এটা কিসের অনুষ্ঠান বিয়ে, বৌভাত নাকি মুসলমানি? যাই হোক দুচার কথা বলতেই আস্তে আস্তে ওই টেবিলের সবার খাওয়া বন্ধ করে বলদা সেলিমের দিকে তাকালো। মুন্না ততক্ষনে বুজে গেছে কেস গড়বড় হয়ে গেছে, নিজেদের অর্ধ খাওয়া রেখেই আস্তে আস্তে উঠে খুব স্বাভাবিক ভাবে বেসিনের দিকে হাত ধুতে গেল যাবার আগে অবশ্য সেলিম কে আস্তে করে উঠিয়ে নিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে চম্পট দিল। আসলে ওটা কোন বিয়াই ছিল না ওটা ছিল মুসলমানির অনুষ্ঠান। যাই হোক সেদিন খুব অল্পের ওপর দিয়ে পার পেয়েছিলাম, ধরা পড়লে…… যাক ওনিয়ে আর কথা না বাড়াই।
এভাবেই ওল্ড বয়েজ হাকুইল্লা গ্রুপের সন্ধ্যাগুলো কেটে যাচ্ছিল মাঝে মাঝে রুচি চেঞ্জের জন্য বাংলা মটর সোহাগ কম্যুনিটিতে যেতাম, কখনো ইস্কাটন গার্ডেন লেডিস ক্লাবে। এক দিন সবাই মিলে সন্ধ্যায় সন্ধ্যাকালীন বৈঠক চলছিলো, এমন সময় তাজ হন্তদন্ত হয়ে আসল, “ তোরা এখানে বসে আছিস ওদিকে আফজাল ভাইর বিয়ে, যাবি কিনা বল?”
ক্যাবলা সেলিম, বলদের মত জিজ্ঞেস করল, “কোন আফজাল ভাইরে তাজ?”
তাজ দাত মুখ খিচিয়ে প্রায় মারতে গেল সেলিম কে, “তোকে না বলছি চুপ থাকতে, আফজাল ভাইকে চেনে না, আরে টিভিতে অভিনয় করে, আফজাল সুবর্নার “আফজাল ভাই”র সোহাগে বিয়ে, তাড়াতাড়ি চল।”
সবাই তো এক পায়ে খাড়া, কিন্তু ছোট একটা সমস্যা দেখা দিল সে সময়ে আফজালের যে নাম ডাক তাতে তো পায়ে হেটে ঢুকতে গেলে ধরা খাবার সমুহ সম্ভাবনা, কারন সব হাই ক্লাশ লোকজন আসছে। সমস্যার সমাধান ও হয়ে গেল, তাজের বাবা ছিল সে সময়ে সরকারী কোন ডিপার্টমেন্টের যেন জয়েন সেক্রেটারী। চব্বিশ ঘন্টা গাড়ী পেত। তাজ ড্রাইভিং জানত। মোটামুটি বড় গাড়ী। সেই গাড়ীতে করে দুই ট্রিপে আমরা প্রায় তের জন সোহাগ কম্যুনিটি সেন্টারে ঢুকলাম, গোল বাধল তাজের পায়ে ছিল স্যান্ডেল আর আর শুভ্রর (আমার খালাতো ভাই) পরনে ছিল ছিল একটা জিন্স তাও ছেড়া আর বাসায় পড়ার গেঞ্জী। ওই নিয়ে তো সুটেড বুটেড সাহেবদের সাথে এক টেবিলে খাওয়াতে পারি না। ওদের কে ড্রাইভার দের সাথে এক টেবিলে বসিয়ে খাইয়ে নেয়া হল আমরা হাকুইল্লা সিষ্টেমে বিভিন্ন টেবিলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে খেয়ে আসলাম। আর রঞ্জন সব থেকে হাড় হারামী (কিন্তু দেখতে সব থেকে ইনোসেন্ট) সে এক্কেবারে আফজাল ভাইর সাথে ষ্টেজে বসে খেয়ে আসছে, পরদিন কোন পেপারে যেন দেখলাম আফজাল ভাইর বিয়ের ছবিতে এক কোনা দিয়ে রঞ্জনকেও দেখা যাচ্ছে।
দিন ভালোই কাটছিলো, এর মাঝে এক হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটল, ফয়সাল আমার ছোট বেলার বন্ধু একই কলেজ থেকে ইন্টার করে সেও ঢাকায় আসছে কোচিং এর জন্য (বুয়েট থেকে পাশ করে এখন আমেরিকার নাগরিক আর সেদেশের সরকারের অনেক বড় পজিশানে সরকারী চাকুরী করছে) একদিন বলল এই সব অফিসার্স ক্লাব আর সোহাগ কম্যুনিটি সেন্টারের খাওয়া খেয়ে পেটে চর পরে গেছে স্বাধ পাল্টানোর জন্য হলেও আমাদের উচিত অন্যন্য কম্যূনিটি সেন্টারে খাওয়া। ( এখানে উল্লেখ্য ফয়সাল থাকত শাহবাগে এক মেসে, প্রায়ই ইস্কাটন চলে আসত আমাদের আড্ডায়,) সেও প্রায় নিয়মিত মেম্বার হিসাবে হাকুইল্লার একজন মেম্বার হিসাবে স্বীকৃতি পেয়ে গেছে।
যেই কথা সেই কাজ, বাসে চেপে শুক্রাবাদ কম্যুনিটি সেন্টারে “ওল্ড বয়েজ হাকুইল্লার” মেম্বারেরা হাজির। সবাই যে যার মত ফাক বুজে ঢুকে যাচ্ছি, কিন্তু ফয়সাল ঢুকতে গিয়ে ভুত দেখার মত চমকে উঠে বের হয়ে আসল, পরে কারন শুনলাম ওই বিয়েতে সে তার ঢাকায় মেসের সব থেকে ক্লোজ ফ্রেন্ড কে দেখে গেটে এবং হাবেভাবে ওর ধারনা হয়েছে ওই বিয়ে ফয়সালের ওই ফ্রেন্ডের ভাই অথবা বোনের। ফয়সাল ওইদিন আর বিয়ে খেতে পারে নি এবং খুব দুঃখ পেয়েছিল, যার সাথে এত বন্ধুত্ব সেই কিনা তার ভাই বা বোনের বিয়েতে ওকে দাওয়াত দিল না!!! আমরা অবশ্য সবাই উদরপূর্তি করে বের হয়ে এসে ফয়সাল কে অনেক স্বান্ত্বনা দিয়েছিলাম, বন্ধুত্বের এহেন বেঈমানী সরল মনের ফয়সালের বুকে দাগ কেটে গিয়েছিল।
আর একবার এক পুরানো ঢাকাইয়ার বিয়ে খেয়েছিলাম আহা সে রকম আইটেম আর খাওয়ার স্বাধ এখনো জিভে লেগে আছে। আজকে যখন ইস্কাটন অফিসার্স ক্লাবে খেতে বসছি, বাবুরামের কথা সহ অনেকের কথাই খেয়াল পড়ল। তাজ মারা গেছে, মুন্না ব্যাবসায়ী, রঞ্জন অষ্ট্রেলিয়া, টিংকু পুরা হুজুর, সেলিম কি যেন ব্যাবসা করে অনেক টাকার মালিক, বছর কয়েক আগে বিদেশের কোন এক কান্ট্রি থেকে দেশে ফেরার পথে মুন্নার সাথে দেখা প্লেনে সেও ব্যাবসা করে, ঠাকুর আমেরিকা, রবার্টের কি যেন মানসিক সমস্যায় এখন এক রকম উন্মাদ প্রায়। কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই, শুধু আছে সোনালী বিকাল গুলোর স্মৃতি।।
১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:১৬
শের শায়রী বলেছেন: প্রবাস জীবনে এই এক কষ্ট সোনালী ভাই, আমার ও জব উপলক্ষ্যে মাঝে মাঝে দেশের বাইরে থাকতে হয়, হাজীর বিরিয়ানী, বিহারী ক্যাম্পের চাপ অথবা বগুড়ার দই চাইলেই খাওয়া যায় না....
তবুও এভাবে জীবন কেট যায় জীবনের নিয়মে।
২| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৩:২৪
সোহানী বলেছেন: হায় আল্লাহ......... এইগুলা সিনেমায় দেখতাম কিন্তু সত্যিই আপনার এমন কাজ করতেন!!! ধরা পরে মাইর টাইর খান নাই!!!!!!!!
জীবনে মনে হয় হাতে গোনা বিয়েতে উপস্থিত থাকতে পেরেছি। আর দেশের বাইরে থাকার কারনেতো আরো মিস........। তবে কেন যেন আমার বিয়ের বাড়ির খাওয়া দাওয়া একটু পছন্দ নয়। সবার সামনে হাপুস হুপুস করে খেতে একেবারেই পছন্দ করি না। তারউপর খাওয়া নিয়ে আমার একটু আদিখ্যেতা নেই। বরং না খেয়ে থাকতে পারলে বাচিঁ । তারপরও পুরান ঢাকার খাওয়া পছন্দ করি কিন্তু বছরে একবার শুধু....।
১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৩০
শের শায়রী বলেছেন: ওরে বইন, এই হাকুইল্লা পার্টির আমাদের সেই গ্রুপের যা অভিজ্ঞতা আছে তা যে কোন সিনেমা ফেল না আমি বা আমাদের গ্রুপ ধরা প্রে নাই, ওই বলদা সেলিমের জন্য যা একটু হাল্কা ধরা তবে বেইজ্জতি বা মাইর তো অনেক দূর। তবে সার্কিট হাউজে আমাদের সিনিয়র গ্রুপের শামীম ভাই ধরা পড়ছিলো। তবে সে আর পিস মাল ছিল। সে ধরা পড়ার পর এমন কাহিনী ফাদছে যে তাকে আদর করে খাইয়ে তারপর হাতে ১০০ টাকা দিয়ে বিদায় করছে ওই অনুষ্ঠানের লোকেরা ( সে কাহিনী শুনলে আপনি হাসতে হাসতে ফিট হবেন)।
বোন, খাওয়া দাওয়ার প্রতি আমারো কোন ইন্টারেষ্ট নাই, আমি আলু ভর্তা, ডাল ভাত পেলেই সব থেকে খুশী। ওই বয়সের এ্যাডভেঞ্চারিজমই এগুলো করাত। ইস্কাটন গার্ডেনের অফিসার্স কোয়ার্টারে যারা থেকে তাদের বাপের সর্ব নিম্ন ষ্ট্যাটাস ছিল ডেপুটি সেক্রেটারি, তাই খাওয়া দাওয়া নিয়ে কোন ইচ্ছা অনিচ্ছা থাকার কথা না, ওই স ময়টাই ছিল অন্য রকম, এখন কার মত ইয়াবা বা ফেন্সিডিলের চল ছিল না, মোবাইল ফোন তখনো বাংলাদেশে জন্ম গ্রহন করতে ৮ বছর বাকী, তাই জীবন ছিল ভিন্ন মাত্রার আনন্দের উপকরন ছিল অন্য ধরনের। ওখানে আমার এমন সব স্মৃতি আছে বিশ্বাস করেন এখনো হাসতে আছি আপনাকে লিখতে গিয়ে মনে পড়ে। জীবন ছিল নিস্কলুস
৩| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ ভোর ৪:৪৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
অষ্টম শ্রেণীর আগেই, মানুষের ব্যক্তিত্ব গড়ে না উঠলে, উহা একটা সমস্যা।
১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৪০
শের শায়রী বলেছেন: মুরুব্বী শরীরটা ভালো?
অনেকের ব্যাক্তিত্ব কিন্তু সেই ছোট বেলায় গড়ে ওঠে, ছোট বেলা বলতে আমি সেই কাথায় মল মুত্র ত্যাগের বয়সটা বুহজাতে চেয়েছি, বুজে না বুজে সেই একই কাজ বয়সের বেলায় ও করে যায় আর দুর্গন্ধ তৈরী করে (কথাটাকে আক্ষরিক ভাবে না রূপক অর্থে নিলেই বুজবেন কত সত্যি )
শরীরের দিকে খেয়াল রাখবেন মুরুব্বী।।
৪| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ ভোর ৫:০২
খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা পড়তে ভালই লাগলো, কিন্তু কাজটা তারুণ্যের সঙ্গদোষে হলেও, ভাল ছিলনা।
১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৪৫
শের শায়রী বলেছেন: সালাম খায়রুল ভাই। মানুষ বিভিন্ন বয়সে বিভিন্নভাবে নিজেকে প্রকাশ করে, এক বয়সে যা এ্যাডভেঞ্চারিজম পরিনত বয়সে তাই বোকামি হয়ত। অথবা ভুলও। আবার বৃদ্ধ বয়সে যা স্বাভাবিক সেই স্থবিরতা যৌবনে প্রকাশ পেলে ডেপোমি। হ্যা আপনার কথা স্বীকার করে নিতে আমার কোন দ্বিধা নেই এই বয়সে এসে বুজি এটা ঠিক ছিল না কিন্তু ওই বয়সে আমাদের সময় পরিবেশ পরিপ্রেক্ষিতে ওটা ছিল এ্যাডভেঞ্চার।
অনেক কৃতজ্ঞতা। আপনার অনেক সুনাম শুনছি ব্লগে, খুব ইচ্ছা কোন এক দিন দেখা করে আলাপ করব।
৫| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:২৩
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হাকুইল্লা পার্টি
নামকরণটা কেমতে হইছিল
খুব ডেয়ারিং টাইপ হাকুইল্লা ছিলেন বোঝা গেল!
শেষটায় আসল জীবনের ফ্লেভারে মন বিষন্ন হয়ে গেল!
কফি হাউজের আড্ডাটা কত দ্রুতই না শেষ হয়ে যায়!!!!!
১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৪৯
শের শায়রী বলেছেন: মগবাজারে ছিল নিউ বয়েজ হাকুইল্লা পার্টি। তবে ওরা ছ্যাচড়া ছিল। ছ্যা ছ্যা ওরা হাকুল্লা নামের কলংক। আমাদের ব্যার্থ অনুকরন করতে গিয়ে ওরা অনেক জায়গায় ধরা খেয়ে আমাদের অভিযান গুলোকে অনেক কঠিন করে ফেলছিলো
নামকরনের ইতিহাস আমারো ঠিক মনে নাই ম্যাভাই।
তবে সব শেষে কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই, এটাই বাস্তবতা।।
৬| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৪৪
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো লাগলো আপনার সৃতিকথা।
১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৫০
শের শায়রী বলেছেন: স্মৃতিগুলো ইদানিং খুব পীড়া দেয় রাজীব ভাই।
৭| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:০৬
ইসিয়াক বলেছেন: চমৎকার স্মৃতি কথা ।
খুব ভালো লাগলো।
১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:০১
শের শায়রী বলেছেন: ভালো থাকুন প্রিয় কবি।
৮| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:২৫
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
দারুণ সময় গিয়েছে আপনাদের। কিন্তু শখের বসে কাজটা করলে নিয়মিত িএসব করা ঠিক হয়নি।
১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:১২
শের শায়রী বলেছেন: মাইদুল ভাই, ছয় তলায় (ইস্কাটন সার্কিট হাউজ কে এই নামেই ডাকতাম আমরা) শুধু শত ঘটনার একটা বলছি, এটা অতি সামান্য একটা পার্ট। এটা নিয়মিত কিছু ছিল না, এ্যাডভেঞ্চারিজমের একটা পার্ট, হয়ত এক বা দুই সপ্তাহে এক দিন। অসাধারন মজার কিছু স্মৃতি ওই সময়ে জমা আছে, সেগুলো আমাদের বড় সুখ স্মৃতি অন্তত এই বয়সে আমার কাছে।
মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা।
৯| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:০৮
রানার ব্লগ বলেছেন: ভালো লাগলো !!! আমারও এমন খেতে ইচ্ছে হয় মাঝে মাঝে কিন্তু আমার বন্ধু গ্রুপের সব গুলা ভিতুর ডিম সেই সাথে আমি তাদের হেড মাস্টার।
১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:১৭
শের শায়রী বলেছেন: এই যুগে হাকুইল্লা পার্টির সম্ভবতঃ বিলুপ্তি ঘটছে, আর এইটা করতে বুকের পাটাও লাগে , আপনার উদ্যেম আছে, নতুন করে দল গুছান, ঝাপিয়ে পড়ুন, কিন্তু ধরা পড়লে হাটুরে মাইর কিন্তু একটাও নীচে পড়বে না বইলা রাখলাম
১০| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:১১
পদ্মপুকুর বলেছেন: মজার অভিজ্ঞতা।
আমার এ রকম সাহস হওয়াতো দুরেই থাক, দাওয়াত পাওয়া প্রোগ্রামগুলোতেই যেতে ইতস্তত করি...
১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:২১
শের শায়রী বলেছেন: ওই সময়ে আমাদের জীবনটা ছিল এমন, জানি না আপনার বয়স কত কিন্তু সে সময় যান্ত্রিকতা মানে ইলেকট্রনিক গ্যাজেটের এত প্রসার না থাকায় নিজেদের মাঝে যে আন্তরিকতা দেখা যেত সেটা এই সময়ে অচল।
হ্যা এখন কেউ দাওয়াত দিলেও মনে হয় অত্যাচার, অথচ মাসে প্রায়ই এগুলো থাকে, একান্ত না ঠেকলে আমি কোন পাব্লিক গ্যাদারিং এড়িয়ে চলি। সময় তার দাগ রেখে যাচ্ছে।
পাঠে কৃতজ্ঞতা সিনিয়র ব্লগার।
১১| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৪৪
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: হাকুইল্লারা ভালো থাকুক আর আপনিও ।হাকুইল্লা সেলিম কিন্তু আমি নই । কয়েকদিন আগে বিয়ের দাওয়াত মিস হয়েছে । আমিও কাছাকাছি এলাকার বাসিন্দা ।
১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৫৮
শের শায়রী বলেছেন: ভালো কথা মনে করছ, তুমি কি মেট্রিকে তিন বার ফেল নাকি? ওই সেলিম কিন্তু তিনবার মেট্রিক ফেল
১২| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৪৫
টারজান০০০০৭ বলেছেন: আহা মধুর কৈশোরে ঘুরিয়া আসিলাম ! আপনার কাছাকাছিই ছিলাম ! প্রায় একই সময়ে !!
১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:৫৯
শের শায়রী বলেছেন: খাইছে আপনিও কি কোন হাকুইল্লা পার্টির সদস্য ছিলেন ..... তাইলে দেখাও হয়ে গেছে মনে হয়
১৩| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৩৪
পদ্মপুকুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: ওই সময়ে আমাদের জীবনটা ছিল এমন, জানি না আপনার বয়স কত....
নব্বুই দশকের মাঝামাঝি আমি ঢাকায় এসেছিলাম এসএসসির পর.... বুঝলে বুঝপাতা, নাইলে তেজপাতা...
১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:০১
শের শায়রী বলেছেন: বুজপাতা..... বড় জোর এক বছর এদিক সেদিক হবে হিসাবে
১৪| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৪৮
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আহা! কি দারুণ কাটিয়েছেন সে সমস্ত দিনগুলো। বেচারা ফয়সাল। সেদিন তাহলে তার আর খাওয়া হলো না?
হাইকুল্লা মেম্বারদের সাথে এখনো নিয়মিত যোগাযোগ আছে আপনার ?
শুভকামনা শ্রদ্ধেয় শায়রী ভাইকে।
১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:০৩
শের শায়রী বলেছেন: প্রিয় ভাই সবার সাথে নাই অল্প দু এক জনের সাথে আছে, তবে ফয়সাল আমার ছোট কালের বন্ধু ওর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ আছে।
আসলে জীবন এখন ভিন্ন ধারায় অনেকটা সময় আর কালের কারনে।
অনেক কৃতজ্ঞতা প্রিয় ভাই।
১৫| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:৫৬
সাাজ্জাাদ বলেছেন: হাঁ হাঁ
চমৎকার দিন কাটিয়েছেন। গতানুগতিকের বাইরে গিয়ে কিছু করেছেন বলে সেইটা আজ স্মৃতি হয়ে বেঁচে আছে।
বাই দ্য ওয়ে, আফজাল ভাই কিন্তু ব্লগ পড়লে আপনার খবর আছে।
১৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৩২
শের শায়রী বলেছেন: হ ভাই মিনিমাম তের প্লেট খাবারের দাম উনার বেশী দিতে হইছে ভাবী কিন্তু উনার তুলনায় বেশ অল্প বয়স্ক ছিল, ভুল না হলে সে সময়ে ঢাবিতে ইংরেজীতে অনার্স করছিলো
১৬| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৪৯
ভুয়া মফিজ বলেছেন: নব্বই দশকের শুরুর দিক!!!........আপনি আর আমি তো দেখি সমসাময়িক! একটু উনিশ-বিশ হবে আর কি!!
তবে, এই বিন বুলায়ে মেহমান হওয়ার ক্ষেত্রে আপনি আমার জুনিয়র। আমরা শুরু করেছিলাম ম্যাট্রিক পরীক্ষা দেয়ার পর, রেজাল্টের অপেক্ষায় থাকার সময়!!
আমাদের মূল ভেন্যু ছিল আজিমপুর কমিউনিটি সেন্টার। আহা, কি সব দিন ছিল......কি সব খানা-খাদ্য!!
১৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৩৬
শের শায়রী বলেছেন: জয় গুরু। তবে আপনার সাথে আমাদের অপারেশনাল এরিয়া ভিন্ন হওয়ায় দেখা হবার সম্ভাবনা ছিল না
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ২:৫০
সোনালী ডানার চিল বলেছেন:
আপনার লেখাটি পড়তে পড়তে হারিয়ে গিয়েছিলাম, যৌবনের প্রারম্ভের ঢাকায়-
আহা কতদিন বিয়ে খাইনি, বহুদিন! মাঝে মাঝে আজকাল ইউটিউবে বিয়ে বাড়ীর
খানাপিনা দেখে হাহাকার করি- প্রবাসে থাকার এই এক কষ্ট-
তবুও জীবন যাচ্ছে কেটে জীবনের নিয়মে.....