নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অমরত্বের লোভ কখনো আমাকে পায়না। মানব জীবনের নশ্বরতা নিয়েই আমার সুখ। লিখি নিজের জানার আনন্দে, তাতে কেউ যদি পড়ে সেটা অনেক বড় পাওয়া। কৃতজ্ঞতা জানানো ছাড়া আর কিছুই নেই।

শের শায়রী

হৃদয়ের কাছে বুদ্ধির বাস ভাল কথা। কিন্তু মাঝে মঝে হৃদয়ের ওপর থেকে বুদ্ধির শাসন তুলে দিতে হয়, হৃদয়কে স্বাধীন করে দিতে হয়, মুক্ত করে দিতে হয়। স্বাধীন মুক্ত হৃদয়ের ধর্মকে সব সময় বুদ্ধি দিয়ে বিচার করতে নেই।।

শের শায়রী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আর্যদের উৎপত্তি এবং ভারতীয় এবং জার্মান আর্যদের সুলুক সন্ধানে

১২ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:১৫


The 4th edition of Meyers Konversationslexikon (Leipzig, 1885–1890) shows the Caucasian race (in various shades of grayish blue-green) as comprising Aryans,Semites, and Hamites. Aryans are further subdivided into European Aryans and Indo-Aryans (the term "Indo-Aryans" was then used to describe those now called "Indo-Iranians").

আর্য নিয়ে আমার কৌতুহল অনেক আগে থেকেই। আর্য মানে কি? এটা নিয়েও মত ভেদ আছে, ভারতীয় হিন্দু শাস্ত্রজ্ঞদের মতে সংস্কৃত ভাষায় লিখিত প্রাচীন শ্লোক অনুসারে “সর্বে গত্যর্থাঃ জ্ঞানার্থাঃ প্রাপ্ত্যর্থাশ্চ” - সমূদায় গমনার্থক জ্ঞানার্থক ও প্রাপ্ত্যর্থক। সুতরাং, যারা জ্ঞানশীল অথবা যারা (শাস্ত্রসীমায়) গমন করেন কিংবা যারা (শাস্ত্রের পার) প্রাপ্ত হন, তারাই আর্য। সোজা বাংলায় যারা সদ্ববংশজাত তারাই আর্য।

কিন্তু বিশেষজ্ঞরা এই ব্যাপারে ভিন্ন মত দেন, তারা বলেন, আর্যগণ প্রথমে পশুপালন করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তারা দলবদ্ধ হয়ে অনেকগুলো পশু সাথে নিয়ে ঘাস আচ্ছাদিত অঞ্চল বা প্রদেশে গমন করতেন। পরে সে স্থানের ঘাস পশু খাদ্য হিসেবে নিঃশেষিত হলে তারা পুনরায় অন্য অঞ্চল বা প্রদেশে যেতেন। এভাবে তারা প্রতিনিয়ত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গমন করতেন বলে আর্য (অর্থাৎ গমনশীল) নামে পরিচিত হয়েছেন। পরবর্তী সময়ে আর্যগণ নিরন্তর এরূপ স্থান পরিবর্তন খুবই কষ্টদায়ক বিবেচনায় এনে এক স্থানে অবস্থানের উপর গুরুত্ব আরোপ করে এবং এ সমস্যা সমাধানের উপায় বের করার চেষ্টা চালায়। উপায় হিসেবে কৃষিকাজকেই তারা অধিক গুরুত্ব দিয়ে ফসল উৎপাদনে নিযুক্ত হয়। এজন্যই তারা আর্য (অর্থাৎ কৃষিজীবি) নামে প্রসিদ্ধ হন। শেষোক্ত পক্ষের মতবাদে আর্য শব্দের অর্থ দাঁড়ায় কৃষিকর্মকারী।


Adolf Hitler - The Rise of Evil

হিটলারের নাৎসি পার্টি ‘আর্য' শব্দটিকে জার্মান শব্দ ‘এহরে' এর অর্থের সমতুল্য ধরতেন, যার মানে সম্মান। এর সুবাদে ‘আর্য’ শব্দটির অর্থ সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ। জাতিগত বিশুদ্ধতায় বিশ্বাসী হিটলার আর্যকে ‘বিশুদ্ধ জার্মান জাতি' হিসেবে ঘোষণা করার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। কেননা তার মতে, বিশ্বে আর্য জাতির মানুষদের রক্তই সবচেয়ে বেশি পবিত্র। হিটলারের মতে, আর্যরা লম্বা, ফর্সা এবং নীল চোখের অধিকারী ছিলেন। তিনি দাবি করেন, আর্যরা নর্ডিক হলেও তারা মূলত জার্মানির অধিবাসীই ছিলেন। উল্লেখ্য, নর্ডিক বলতে মূলত নরওয়ে, সুইডেন, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড ও আইসল্যান্ডের অধিবাসীদের বোঝানো হয়। অবশ্য মাঝে মাঝে জার্মানির কিছু অংশও নর্ডিকের অন্তর্ভুক্ত ধরা হয়।


Behistun Inscription - Vici.org

কিন্তু এই কাল্পনিক তত্ত্বের ফানুস ফুটো হয়ে যায় ইরান থেকে বেহিস্তান শিলালিপি আবিষ্কৃত হওয়ার পর।যীশুর জন্মের প্রায় ৪৮৬ বছর আগে উৎকীর্ণ এই লেখতে পারস্য সম্রাট দারায়ুস নিজকে দাবী করেন-‘’ A Persian, a son of a Persian and an Aryan of Aryan Descent’’ হিসেবে। ব্যাস এরপরই ঐতিহাসিক মহলে তীব্র আলোড়নের সৃষ্টি হল এবং আর্য জাতির সাথে সম্পৃক্ত দেহসৌষ্ঠব সংক্রান্ত তত্ত্ব এক লহমায় বাতিলের খাতায় চলে গেল।


The True Aryans: Who Were They Really and How Were Their Origins

হিন্দু আর্য এবং জার্মান আর্যদের মাঝে সংজ্ঞাগত মিল খুজে পাওয়া যায়, দেখুন উভয়েই “আর্য”দের উচ্চ বংশীয় বলে সংজ্ঞায়িত করেন। ম্যাক্সমুলার, স্যার উইলিয়াম জোন্স প্রভৃতি পন্ডিতের মতে আর্য একটি ভাষাগোষ্ঠীর নাম। যারা আর্য ভাষায় কথা বলে তারাই আর্য জাতির অন্তর্ভুক্ত বলে বিবেচিত।


Filippo Sassetti – Wikipedia

ফিলিপ্পো স্যাসেটি নামক ফ্লোরেন্সের একজন বণিক গোয়াতে পাঁচবছর অবস্থানের (১৭৮৩-১৭৮৮ খ্রিঃ) পর প্রথম সংস্কৃতের সঙ্গে ইউরোপের প্রধান কয়েকটি ভাষার সাদৃশ্যের কথা ঘোষণা করেন। ১৭৮৬ খ্রিস্টাব্দে এশিয়াটিক সোসাইটি অব বেঙ্গলে প্রদত্ত তাঁর বক্তৃতায় তিনি বলেন যে, একই উৎস থেকে উৎপত্তির কারণে এ সাদৃশ্য। তাঁর মতে, গ্রিক, ল্যাটিন, গথিক, কেল্টিক, সংস্কৃত, পারসিক, জার্মান ইত্যাদি একই উৎস থেকে উদ্ভুত। এ ভাষাগুলো পন্ডিতদের কাছে ইন্দো-ইউরোপীয় বা ইন্দো-জার্মান ভাষা রূপে পরিচিত। ভাষাগত সাদৃশ্যের কারণে প্রশ্ন দাঁড়িয়েছে যে, এই আর্য ভাষা যে জাতিগোষ্ঠী ব্যবহার করতো তাদের আদি বাসভূমি কোথায় ছিল? এ সম্পর্কে পন্ডিতগণ বিভিন্ন মতামত ব্যক্ত করেছেন। একদল পন্ডিত মনে করেন যে, আর্যরা আদিতে ভারতবাসী ছিল। পরবর্তীকালে তারা ভারতের বাইরে পশ্চিম এশিয়া ও ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে। অন্যদের মতে, আর্যরা বাইরে থেকে এসে ভারতে বসতি স্থাপন করেছিল। যাঁরা মনে করেন যে আর্যদের আদি বাসভূমি ছিল ভারতবর্ষ, তাঁরা নিম্ন লিখিত যুক্তি দেখানোর চেষ্টা করেছেন :

(ক) আর্যদের প্রাচীনতম গ্রন্থ বেদ ভারতে রচিত হয়েছিল। বেদে সপ্তসিন্ধু অঞ্চলের উল্লেখ রয়েছে। বৈদিক সাহিত্যে যে সকল গাছ ও পশু-পাখির উল্লেখ আছে তা ভারতের এই অঞ্চলে দেখা যায়।

(খ) যারা দেশ ত্যাগ করে অন্য দেশে গিয়ে বসবাস করে তারা তাদের আদি বাসভূমির কথা স্মরণ করে। কিন্তু বৈদিক সাহিত্যে সপ্তসিন্ধু ছাড়া অন্য কোন দেশের নাম পাওয়া যায় না।

(গ) পারগিটারের মতে, উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আর্যদের অভিপ্রয়াণের কোন প্রমাণ ভারতের ইতিহাসে নেই, বরং উত্তর-পশ্চিম হতে আর্যদের ভারতের বাইরে যাওয়া সম্ভব। ঋগ্বেদের নদী স্তোত্রে যে নদীগুলোর উল্লেখ আছে তা গঙ্গা দিয়ে শুরু হয়ে উত্তর-পশ্চিমে সরস্বতী দিয়ে শেষ হয়েছে। এই নদী স্তোত্র থেকে ধারণা করা যেতে পারে যে আর্যরা পূর্ব থেকে উত্তর-পশ্চিমে গিয়েছিল।

(ঘ) আর্যরা বহিরাগত হলে তাদের আদি বাসভূমিতে বেদের মত কোন গ্রন্থ রচিত হয়নি কেন? এসব যুক্তির মাধ্যমে কিছু ঐতিহাসিক দাবী করেন যে, আর্যদের আদি বাসভূমি ছিল ভারতবর্ষ।

কিন্তু কোনো কোনো পন্ডিত এ মতের বিপক্ষে বেশ কিছু যুক্তি দেখিয়েছেন। তাঁদের যুক্তিগুলো নিম্নরূপঃ

(ক) বেদে উল্লেখিত গাছপালা ও পশুপাখির নাম থেকে নিশ্চিতভাবে বলা যায় না যে সপ্তসিন্ধু অঞ্চলই ছিল আর্যদের আদি বাসভূমি। ভারতে প্রবেশ করে প্রমে তারা ঐ অঞ্চলে বসতি স্থাপন করায় ঐ এলাকার গাছপালা ও পশুপাখির সঙ্গে তাদের প্রথম পরিচয় ঘটে। এ কারণেই এগুলোর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বেদও রচিত হয়েছিল ঐ এলাকাতেই।

(খ) এমনও হতে পারে যে দীর্ঘকাল সপ্তসিন্ধু অঞ্চলে বাস করার ফলে আর্যরা তাদের আদি বাসভূমির সব স্মৃতি হারিয়ে ফেলেছিল বলেই বেদে তার উল্লেখ পাওয়া যায় না।

(গ) নদী স্তোত্র দিয়ে আর্যদের উত্তর-পশ্চিম ভারত থেকে বাইরে অভিপ্রয়াণ প্রমাণ করা যায় না। বৈদিক সাহিত্যে ৩৯ টি নদীর নাম পাওয়া যায়। তার মধ্যে ঋগ্বেদই পাওয়া যায় ২৫টি নদীর নাম, কিন্তু গঙ্গা নদীর নাম শুধুমাত্র একবার উল্লেখিত হয়েছে। আর্যরা ভারতের আদিবাসী হলে এবং পূর্ব থেকে পশ্চিমে অভিপ্রয়াণ ঘটে থাকলে গঙ্গা নদীর সাথে তাদের নিবিড় সম্পর্ক থাকার কথা এবং সে ক্ষেত্রে গঙ্গার নাম বারবার উল্লেখিত হওয়া উচিৎ ছিল।

(ঘ)ঋগ্বেদের মত কোন গ্রন্থ অন্য কোন দেশে রচিত হয়নি বলেই বলা যায় না যে ভারতই ছিল আর্যদের আদি বাসভূমি। এমনও হতে পারে যে ভারতে আসার আগে বেদের মত গ্রন্থ রচনা করার মত বুদ্ধিবৃত্তিক ও সামাজিক উন্নয়ন তাদের ঘটেনি।

(ঙ) তাছাড়া বলা যায় যে ভারতবর্ষ আর্যদের আদি বাসভূমি হলে তারা ভারত ত্যাগের আগেই গোটা ভারতবর্ষে আর্য বসতি ও সংস্কৃতি বিস্তার করতো। কিন্তু উত্তর ভারতের বেশ কিছু এলাকা এবং দক্ষিণ ভারত ছিল আর্য সংস্কৃতির বাইরে।

(চ) সংস্কৃত ভাষায় তালব্য বর্ণের (ন, ং, ৎ) প্রাধান্য দেখা যায় যা ইউরোপীয় অন্য কোন ইন্দো- ইউরোপীয় ভাষায় নেই। পন্ডিতেরা মনে করেন যে, ইউরোপ থেকে ভারতে আসার পর দ্রাবিড় ভাষার প্রভাবে এরকম হয়েছে।

(ছ) বৈদিক সাহিত্যে সিংহের উল্লেখ থাকলেও বাঘ ও হাতির উল্লেখ নেই। আর্যরা ভারতের আদিবাসী হলে ভারতের এই দুটি প্রাণীর নামের উল্লেখ বৈদিক সাহিত্যে অবশ্যই থাকা উচিৎ ছিল।

এসব যুক্তির বলে পন্ডিতেরা প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন যে আর্যদের আদি বাসভূমি ছিল ভারতের বাইরে।

অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন যে, আর্যরা ইউরোপ থেকে ভারতে এসেছিল। তাঁদের যুক্তিগুলো নিম্নরূপঃ

(ক) আর্য ভাষাগোষ্ঠীর সাতটি ভাষার মধ্যে পাঁচটি এখনও ইউরোপের ভাষা, শুধু সংস্কৃত ও পারসিক ইউরোপের বাইরের।ইউরোপে গ্রিক, ল্যাটিন, জার্মান প্রভৃতি আর্য ভাষাগুলোর যে রকম ঘন সন্নিবেশ দেখা যায় ভারতে তা দেখা যায় না। ইউরোপে আর্য গোষ্ঠীভুক্ত ভাষার আধিক্যের কারণে পন্ডিতেরা মনে করেন যে, আদিতে আর্যরা ইউরোপেই বাস করতো।

(খ) বৈদিক সাহিত্যে ওক, উইলো, বার্চ ইত্যাদি গাছ এবং ঘোড়া, গাভী, ষাঁড়, শুকর প্রভৃতি জন্তুর উল্লেখ পাওয়া যায়। প্রাচ্য দেশের জন্তু হাতি, বাঘ, উট ইত্যাদির কোনো উল্লেখ বৈদিক সাহিত্যে নেই।

(গ) অধ্যাপক গাইলস মনে করেন যে, আর্যদের আদি বাসভূমি ছিল দক্ষিণ পূর্ব ইউরোপ। আদি ইন্দো- ইউরোপীয় ভাষায় সমুদ্রের কোন উল্লেখ না থাকায় ধরে নেওয়া যায় যে আর্যদের আদি বাসভূমি কোন দ্বীপে বা সমুদ্র তীরে ছিলনা। তারা যেসব গাছপালা ও পশুপাখির নাম উল্লেখ করেছে সেগুলো নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের।আর্যরা তখন স্থায়ীভাবে বসবাস এবং কৃষিকাজ শুরু করেছিল। তাদের গৃহপালিত পশুর মধ্যে গরু, ঘোড়া ও ভেড়ার জন্য ভিন্ন ভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক পরিবেশ প্রয়োজন ছিল। তাহলে মনে করতে হবে যে আর্যদের আদি বাসস্থান এমন একটি স্থানে ছিল যেখানে কৃষি ও চারণযোগ্য পরিবেশ কোনটিরই অভাব ছিলনা । সেখানে কৃষিযোগ্য জমি, ঘোড়ার জন্য বিস্তীর্ণ স্তেপ এবং ভেড়া চরানোর জন্য উঁচু জমিই সবই ছিল। এসবের দিকে লক্ষ রেখে ড. গাইলস বর্তমান অষ্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি অঞ্চলকেই আর্যদের আদি বাসভূমি হিসাবে চিহ্নিত করেছেন।


Kyrgyz Steppe

অধ্যাপক ব্র্যান্ডেস্টাইন মনে করেন যে, উরাল পর্বতের দক্ষিণে কিরঘিজ স্তেপ অঞ্চলই ছিল আর্যদের আদি বাস ভূমি । এ সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার জন্য তিনি শব্দতত্ত্বের সাহায্য নিয়েছেন। তাঁর মতে, প্রথম দিকের ইন্দো - ইউরোপীয় শব্দাবলীতে কোন পর্বতমালার পাদদেশে বিস্তীর্ণ স্তেপ ভূমিতে আর্যদের আদি বাসভূমির ইঙ্গিত পাওয়া যায়। পরবর্তীকালের ইন্দো-ইউরোপীয় শব্দাবলীতে সম্পূর্ণ ভিন্নতর ধরনের জমি, গাছপালা এবং জীবজন্তুর সন্ধান পাওয়া যায়। সেখানে শুষ্ক স্তেপভূমির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শব্দাবলীর পরিবর্তে জলাভূমির স্পষ্ট ইঙ্গিতবাহী শব্দাবলী পাওয়া যায়। বর্তমানে অধিকাংশ পন্ডিতই ব্র্যান্ডেস্টাইনের মতের সমর্থক এবং তাঁরা মনে করেন যে, কিরঘিজ অঞ্চলই আর্যদের আদি বাসভূমি।


Rigveda in Sanskrit, India early 19th century. ( Public Domain ) Sanskrit is a standardized dialect of Old Indo-Aryan.

আর্যদের আদি বাসভূমি সম্পর্কে পন্ডিতগণ বিভিন্ন মতামত ব্যক্ত করেছেন। তবে বর্তমানে অধ্যাপক ব্র্যান্ডেস্টাইনের মতানুসারে অধিকাংশ পন্ডিতই মনে করেন যে, ওরাল পর্বতের দক্ষিণে কিরঘিজ স্তেপ অঞ্চলই ছিল আর্যদের আদি বাসভূমি। বেদ হচ্ছে আর্যদের প্রাচীনতম সাহিত্য, যা প্রথমে লিখিত আকারে ছিল না। অনেক পরে বেদ লিপিবদ্ধ করা হয়। চারটি বেদের মধ্যে প্রাচীনতম হচ্ছে ঋগ্বেদ। আর্যদের ভারতে বসতি স্থাপন ও বিস্তার সম্পর্কে ঋগ্বেদ ও পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যে কিছু তথ্য পাওয়া যায়। সাধারণত পন্ডিতগণ মনে করেন আর্যরা ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে হিন্দুকুশ পর্বতের গিরিপথ দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে প্রথমে আফগানিস্তান ও উত্তর-পশ্চিম ভারতে বসতি স্থাপন করে। এই বিস্তীর্ণ অঞ্চলকে তারা ‘সপ্তসিন্ধু' নামে আখ্যা দিয়েছিল। পরবর্তীতে তারা পূর্ব ভারতের দিকে অগ্রসর হয়ে তাদের বসতি বিস্তার করে। দক্ষিণ ভারতে আর্য সভ্যতা বিস্তার সম্পর্কে সঠিক বিবরণ পাওয়া যায় না।


Andronovo culture

দক্ষিন রাশিয়ার কাজাখস্তান থেকে আবিষ্কৃত ‘আন্দ্রনোভো সংস্কৃতি’র ক্ষেত্রে দেখা যায় যে,এই সভ্যতার অন্তর্গত পশুপালক গোষ্ঠী অশ্বের সাথে সুপরিচিত ছিল এবং এই অঞ্চল থেকে প্রাপ্ত গবাদিপশুর দেহাবশেষের মধ্যে আশি শতাংশই অশ্বের।এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এলিনা কুজমিনা উল্লেখ করেছেন যে, পন্টিক-কাস্পিক অঞ্চল হল আর্য বা ইন্দো-ইউরোপীয় গোষ্ঠীর আদি বাসভূমি এবং এখান থেকেই একটি শাখা ইউরোপে চলে যায় ও আরকটি শাখা ইরানে চলে যায়।ইরানের শাখাটি থেকে ভেঙে আরেকটি শাখা আবার ভারতে প্রবেশ করে।ইউরোপে যে আর্যদের একটি শাখার অভিপ্রয়ান হয়েছিল তা নিয়ে কোন সন্দেহই নেই এবং পরবর্তীকালে হিটলারের সময়ে ‘জার্মানরা আর্য’ এই জাতীয় ধারনা গড়ে উঠেছিল।


A newly discovered Zoroastrian Avestan Yasna manuscript

সমস্যা হল আর্যদের যে শাখাটি ইরান বা তদানীন্তন পারস্যে প্রবেশ করেছিল তাদেরকে নিয়ে। প্রাচীন পার্সিদের প্রধান ধর্মগ্রন্থ হল ‘আবেস্তা’ যার সাথে বৈদিক সাহিত্য সম্ভারের প্রচুর সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। তবে যেখানে ‘দেব’ শব্দটি বেদে অত্যন্ত পবিত্র সেখানে আবেস্তাতে ‘দেব’ শব্দতি নেতিবাচক অর্থ বহন করে এবং ‘অসুর’ সত্ত্বার প্রতি স্তুতি বর্ষিত হয়েছে।সর্বোপরি বৈদিক দেবতা বরুণের সম্বন্ধে আবেস্তা ঋণাত্বক মনোভাব প্রকাশ করেছে।সম্ভবত ইরানে প্রবেশের পর আর্যদের মধ্যে ধর্মীয় বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছিল, তাই একটি গোষ্ঠী ভারতে চলে এসে ইরানীয় আর্যদের বিপরীত এক ধর্মীয় ব্যবস্থা পত্তন করে।যদিও এই বিষয়টি এতটা সরল নয়।কারণ বেদে অনার্য মুণ্ডারী ও দ্রাবিড় ভাষার প্রায় তিনশোটি শব্দের উল্লেখ পাওয়া যায়।তাই অনেকেই মনে করেন আর্যরা ভারতীয় এবং ভারত থেকেই তারা সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল। আবেস্তা ও ঋগ্বেদের সময়কাল প্রায় একই হওয়ায় এই প্রশ্নের সমাধান বেশ কঠিন।

আর্যরা খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ অব্দের দিকে ভারতবর্ষে আগমন করে। ক্রমে তারা এখানে গড়ে তোলে আর্যসভ্যতা। আর্যদের ধর্মগ্রন্থ বেদ (পৃথিবীর প্রাচীনতম গ্রন্থ) থেকে ভারতে তাদের জীবনযাত্রার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে কিছু ধারণা লাভ করা যায়। বেদ চারভাগে বিভক্ত ঋক্, সাম, যজুর এবং অথর্ব। ঋগ্বেদের সম্ভাব্য রচনাকাল ১৫০০-৯০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে এবং অন্য তিনটি ৯০০-৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে রচিত হয়েছে বলে অনুমান করা হয়। বেদের রচনাকালের ওপর নির্ভর করে আর্যসভ্যতাকে দুভাগে ভাগ করা হয় ঋগ্বেদে বৈদিক যুগের সভ্যতা এবং পরবর্তী বৈদিক সভ্যতা। উভয় যুগের মধ্যে সময়ের ব্যবধান ছিল বিধায় আর্যদের জীবনচর্চায় সুস্পষ্ট পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। ঋগ্বেদের যুগে পাঞ্জাব ছিল আর্য সভ্যতার কেন্দ্রভূমি। কালক্রমে তারা ভারতের পূর্বদিকে বসতি বিস্তার করে এবং মধ্যদেশ তাদের কর্মকান্ডের কেন্দ্রে পরিণত হয়। আমরা বলতে পারি, ঋগ্বেদের বৈদিক যুগে আর্য সমাজ, ধর্ম, অর্থনীতি, রাজনীতি ক্রমে সুস্পষ্ট রূপ পরিগ্রহণ শুরু করে, তবে পরবর্তী বৈদিক যুগে তা সুসংহত ও সুসংঘবদ্ধ হয়ে ওঠে।


The Origin of the Swastika - Oldest known Swastika found in Ukraine ca 10,000 BCE

আর্য বিতর্ক ইতিহাসের এমন এক অধ্যায় যা’র সঠিক সমাধানসূত্র নির্ণয় অত্যন্ত দুরহ, তবে অসম্ভব নয়।সর্বপ্রথম সীমাবদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গি অতিক্রম করে এই সমস্যাকে আরও বৃহত্তর প্রেক্ষিতে যুক্তি-সংগতভাবে বিশ্লেষণ করতে হবে। আর্যরা যে অভারতীয় এই বিষয়টি বেশ স্পষ্ট। সেক্ষেত্রে মধ্য এশিয়ায় এদের উৎস অনুসন্ধান করলে তা সফল হবে। আর্য সমস্যার সমাধানের সবচেয়ে কার্যকরী পদ্ধতি হল নিরবিছিন্ন অনুভূমিক উৎখনন, বিশেষত তুরস্ক, ইরান, ইরাক এই সকল অঞ্চলে আর্য সভ্যতার প্রচুর উপাদান এখনও লুক্কায়িত রয়েছে।এটা কোন কাল্পনিক অবতারনা নয়, সাম্প্রতিক কালে তুরস্কের গোবেকেলি টেপে অঞ্চলে আবিষ্কৃত প্রায় সাত হাজার বৎসরের প্রাচীন মন্দির ও ইউক্রেনে প্রাপ্ত স্বস্তিকা প্রতীক আর্য ইতিহাসকে এক নতুন আঙ্গিকে দেখার সুযোগ করে দিয়েছে। সর্বোপরি হরপ্পা সভ্যতায় আর্য প্রভাব খোঁজার প্রয়াস বৃথা।কারন বেদে ইন্দ্রকে ‘পুরন্দর’ রূপে অভিহিত করা হয়েছে,কারন তিনি ‘হরি-গুপয়’ এর যুদ্ধে পুর বা নগর ধ্বংস করেছিলেন;আর এই হরি-গুপয় হল হরপ্পা।হরপ্পার বেশ কিছু সাইটে প্রাপ্ত কঙ্কালগুলির আঘাত পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে অতর্কিত আক্রমণে এদের মৃত্যু হয়েছে।তাছাড়া অনেক জায়গায় কঙ্কালের স্তুপ পাওয়া গেছে,যা থেকে বোঝা যায় যে এগুলির রীতি মেনে সৎকার হয়নি।হরপ্পার পতনের পশ্চাতে যে বৈদেশিক আক্রমণকে দায়ী করা হয়,সেই আক্রমণকারীরা আর অন্য কেউ নয়,তারাই হল আর্য।সুতরাং আর্যরা বিদেশী এবং শুনতে খারাপ লাগলেও মেনে নিতেই হয় যে বৈদিক সভ্যতার জন্মদাতারা ভারতের সুপ্রাচীন নগর সভ্যতার নির্মম ধ্বংসকারী ছিল এবং তারা কোনদিনই নগর সভ্যতার নিরিখে প্রাচীন ভারতীয়দের সাথে পাল্লা দিতে পারেনি।

আমি আসলে আর্য উৎস মানে ভারতীয় এবং জার্মান দাবীদারদের মাঝে কোনটা ঠিক তা বের করার চেষ্টা করতে গিয়ে কিছু বই পত্র এবং অন্তর্জাল ঘেটে দেখি। বাস্তবতা হল এখনো এব্যাপারে কোন ডিসিশান পাওয়া যায়নি। আর্য দের উৎস নিয়ে নানা মুনির নানা মত। তবে অধিকাংশই এখন এক মত যে আর্যরা ভারতীয় উদ্ভুত না যা বর্তমান ভাবতীয়দের একটা বড় অংশ দাবী করে আসছে।

ভারতীয় আর্যদের নিয়ে জানতে হলে আপনাকে ঋগ্বেদ সন্মন্ধ্যে পড়তে হবে, আমি ঋগ্বেদ পড়তেছি এই মুহুর্তে তার বিভিন্ন ব্যাখ্যা পড়ছি তাতে দেখতে পারছি ভারতীয় আর্যদের বিভিন্ন ইতিহাস, বেশ উৎসাহের সাথেই পড়ছি। হয়ত সামনে ভারতীয় আর্যদের নিয়ে লেখব। আমি ইতিহাসের ছাত্র না, কিন্তু ইতিহাস নিয়ে আমার অসীম কৌতুহল।

এলেখা লিখতে গিয়ে সায়ন দেবনাথ, এম ফিল, প্রথম বর্ষ প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এর একটা নিবন্ধ থেকে অনেক কিছু জানতে পারছি তার প্রতি কৃতজ্ঞতা তার লেখা থেকেই পোষ্টের বিভিন্ন জায়গায় উদ্ধৃতিও দিয়েছি।

হিটলার যেমন আর্যদের জার্মান বলে দাবী করছেন তেমনি কিছু ভারতীয় আর্যদের ভারতীয় বলে দাবী করছেন যা কোনমতেই ধোপে ঠেকে না, আমার সামান্য পড়াশুনা থেকে আমি যেটুকু উপলদ্ধি করছি তাতে আর্যদের উৎপত্তি মধ্য এশিয়ার কোন এক এক জায়গা থেকে হয়ত কিরগিজ স্তেপ বা নিকটস্থ কোথাও থেকে কিন্তু তাও এখনো শক্ত কোন ভিতের ওপর দাড়ায় নি।

রিলেটেড পোষ্টঃ ইতিহাসের হারিয়ে যাওয়া জাতি ( হিতাইত জাতি)

এবং ইতিহাসের হারিয়ে যাওয়া জাতি ( মিতান্নী জাতি)

সুত্রঃ R.C. Majumdar, The History and Culture of the Indian People (Vol-1), Vedic Age.
প্রভাতাংশু মাইতী, ভারত ইতিহাস পরিক্রমা, ১ম খন্ড।
রোমিলা থাপার, ভারতবর্ষের ইতিহাস।
Andronovo culture
আর্য রহস্যের অনুসন্ধান
আর্য ও হিন্দু
The Origin and History of the Aryans of Ancient India
The True Aryans: Who Were They Really and How Were Their Origins Corrupted?
Filippo Sassetti
bioRxiv/Screenshot It’s a long story. THE BURNING QUESTION(S) Who was here first? A new study explains the origins of ancient Indians

এছাড়া আরো অনেক।

মন্তব্য ৪৪ টি রেটিং +১১/-০

মন্তব্য (৪৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৫৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনার ভাবসাব দেখে মনে হয়, বাংগালীদের(দ্রাবিড়) মাঝে আপনি এক বড় আর্ষ

১২ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৪০

শের শায়রী বলেছেন: মুরুব্বী শরীরটা ভালো, হাপানি, টাপানির সমস্যা আশা রাখি নাই। পর সমাচার এই যে, আপনার মন্তব্য "আপনার ভাবসাব দেখে মনে হয়, বাংগালীদের(দ্রাবিড়) মাঝে আপনি এক বড় আর্ষ" দেখে আমি পুরা লেখাটা আবার পাঠ করিলাম। তাহাতে আমার উপকার এই হইয়াছে যে কিছু টাইপো ঠিক করিয়াছি (হয়ত এখনপ কিছু আছে)। আপনি "আর্য" লিখতে গিয়ে লিখেছেন "আর্ষ"। হয়ত আমেরিকায় থাকার কারনে আপনার এই সব ভুল হইতেছে।

যাই হোক আমি, বাংগালীদের মাঝে বড় আর্ষ কিনা সেটা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারেই তবে আপনি যে আমেরিকায় থাকা বাংগালীদের মাঝে সব থেকে বড় আমেরিকান তাতে কোন সন্দেহ নাই।

মুরুব্বী শরীরটার দিকে খেয়াল রাখবেন।

২| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:০২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
এত দীর্ঘ লেখা পাঠকের ধৈর্যচ্যুতি ঘটাবে!!

১২ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৪৭

শের শায়রী বলেছেন: আস সালামু আলাইকুম নূর ভাই।

আসলে এই জাতীয় কিছু লেখতে গেলে তা কমিয়ে ছোট করা কঠিন একটা কাজ। তাতে অনেক প্রশ্নের উদয় হয় যা লেখাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে। এই লেখাতেই ছোট করার কারনে অনেক প্রশ্নের জবাব বা আলোচনা আমাকে এড়িয়ে যেতে হয়েছে।

দ্বিতীয়তঃ আমি সাধারনতঃ লিখি নিজের জানার জন্য। নিজে আগে না জানলে আর একজন কে কিভাবে জানাব। তারপরো কেউ কেউ পড়ে, যা অল্প কয়েক জন পড়ে তাতেই আমার আনন্দ, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। অবশ্যই বড় লেখা পড়তে গেলে অনেকের ধৈর্য্য চ্যুতি ঘটে কিন্তু নিজে বই পড়ে অভ্যস্থ বিধায় আসলে ছোট লেখা লিখতে কিছুটা কষ্ট হয়। আমি আমার এই ব্যার্থতা স্বীকার করে মার্জনা প্রার্থনা করি।।

৩| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৩৬

জুন বলেছেন: জার্মান পন্ডিত ম্যাক্স মুলার ভারতীয়দের একটি অংশকে আর্য্য বলে দাবী করেছেন। তা নিয়ে বরিশালের কীর্তিপাশায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত পন্ডিত অধ্যাপক তপন রায় চৌধুরীর রোমন্থন বইতে ভারতবাসীদের অলসতার কথা বলতে গিয়ে একজনের রসিকতাপূর্ণ একটি উদ্ধৃতি আছে যা অত্যন্ত লাগসই মনে হয়েছে আমার কাছে। সেটা হলো,
" মোক্ষ মুলার বলেছে আর্য্য, সেই থেকে মোরা ছেড়েছি কার্য্য"

১২ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৫১

শের শায়রী বলেছেন: জুন আপা, অত্যন্ত লাগসই উদ্ধৃতি। " মোক্ষ মুলার বলেছে আর্য্য, সেই থেকে মোরা ছেড়েছি কার্য্য" তপন বাবুর বইটির নাম জানালে কৃতজ্ঞ থাকব সংগ্রহ করার ইচ্ছা আছে, অতি শিঘ্রী বরিশাল যাব।

আসলেই আমরা অলসতার চুড়ান্ত যদিও আমরা বাংলাদেশী এবং আর্য ও নই।

পাঠে কৃতজ্ঞতা।।

৪| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:০৫

জুন বলেছেন: বইটার নাম রোমন্থন বা ভীমরতিপ্রাপ্ত চরিতকথা লেখক তপন রায় চৌধুরী। নামটা একটু কনফিউজড তবে লেখক আর রোমন্থন মিললেই হবে। ঢাকার পিজি হাসপাতালের সামনে যে বই এর বড় মার্কেট ( নামটা মনে করতে পারছি না) আছে সেখানে পাবেন। বইটা না পড়লে অনেক মিস করবেন শের শায়েরী। পড়ে আমাকে একটা বিশাল ধন্যবাদ দিবেন সেটা কনফার্ম :)

১২ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:১৪

শের শায়রী বলেছেন: আজিজ মার্কেট আপা। অতি শিঘ্রী খোজ নেব। আর না পেলে বরিশালের "বুক ভিলা" নামে একটা বইর দোকান আছে আমি নিশ্চিত ওখানে অবশ্যই পাওয়া যাবে। বাংলাদেশে ওই বুক ভিলার সমকক্ষ বইর কালেকশান দু একটা দোকানে থাকতে পারে, আপা পড়ার পর বড় থ্যাঙ্কস দেবার আগে খোজ দেবার জন্য ছোট করে ধন্যবাদ :)

৫| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:০৬

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনি বলেছেন, "তাহাতে আমার উপকার এই হইয়াছে যে কিছু টাইপো ঠিক করিয়াছি (হয়ত এখনপ কিছু আছে)। "

-টাইপো আপনার ছোট সমস্যা, আপনার বড় সমস্যা হচ্ছে সিমানটিক, ধারণায়। "কিরগীজ"রা হলো মুলত আধা-তাতার ও মংগিলিয়ানদের মিশ্রণ; আপনি উহাদেরও আর্য বানায়ে ফেলেছছেন।

১২ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:২৩

শের শায়রী বলেছেন: ধুরো মুরুব্বী, আপনার জ্ঞান এই ব্লগ পর্যন্ত এর বাইরে আপনি যে কিছু পড়েন না সে আপনি আপনার নিজের পোষ্টেই আমার এক কমেন্টে স্বীকার করছেন, সেখানে লিখছেন



ইতিহাস বা গবেষনায় আমার নিজস্ব কোন উক্তি খাটে না, এখানে যারা বিভিন্ন গবেষক তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে শেষে আমার ধারনা লিখছি "হিটলার যেমন আর্যদের জার্মান বলে দাবী করছেন তেমনি কিছু ভারতীয় আর্যদের ভারতীয় বলে দাবী করছেন যা কোনমতেই ধোপে ঠেকে না, আমার সামান্য পড়াশুনা থেকে আমি যেটুকু উপলদ্ধি করছি তাতে আর্যদের উৎপত্তি মধ্য এশিয়ার কোন এক এক জায়গা থেকে হয়ত কিরগিজ স্তেপ বা নিকটস্থ কোথাও থেকে কিন্তু তাও এখনো শক্ত কোন ভিতের ওপর দাড়ায় নি। " এর আগে পিছে কি লিখছি কাদের উদ্ধৃতি দিয়েছি দেখছেন? না থাকলে দেখেন। না বুজে সব জায়গায় সর্দিওয়ালা নোংরা নাক গলান কেন? আর কিরগীজ কারা আপনার থেকে সেটা কম জানি না। এখানে আলোচনা হচ্ছে কয়েক হাজার আগের কথা নিয়ে। নোংরা নাক না গলিয়ে স্বাভাবিক কিছু কি বলতে পারেন না?

৬| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে কোনো বানান ভুল খুজে পেলাম না।
আর্যদের অনেক আগে কিছু পড়াশোনা করেছিলাম। সেসব আজ কিছুই মনে নেই। মাথা আমার গেছে।

১২ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:৪৯

শের শায়রী বলেছেন: রাজীব ভাই, যদি না পান তবে সেটার কৃতিত্ব মুরুব্বী চাদ্গাজী সাহেবের। উনার প্রথম কমেন্টের পর অনেক গুলো বানান ঠিক করছি :) মাথা আপনার যায় নি মোটেই আগের মতই আছে, পুরানো ছবি আর নতুন ছবি কম্পেয়ার করে দেখলাম মাথায় চুল ভরে গেছে, এইটুকুই পার্থক্য :P

৭| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:৪২

চাঁদগাজী বলেছেন:



লেখক বলেছেন, "এর আগে পিছে কি লিখছি কাদের উদ্ধৃতি দিয়েছি দেখছেন? না থাকলে দেখেন। "

-যাদের উদ্ধৃতি দিয়েছেন, তারাও আপনার মতো; ওদের উদ্ধৃতির ভুলটুকু আপনি ধরতে পারেননি। আমার লেখায় কারো উদ্ধৃতি থাকে না।

১২ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:২৮

শের শায়রী বলেছেন: আপনি লিখেছে "যাদের উদ্ধৃতি দিয়েছেন, তারাও আপনার মতো; আপনার জ্ঞানহীন জ্ঞান আমাকে মুগ্ধ করছে। উনাদের সাথে আমার তুলনা B:-) ভালো ভালো।।

আপনি লিখছেন ওদের উদ্ধৃতির ভুলটুকু আপনি ধরতে পারেননি। উনাদের এত দিনের গবেষনার ভুল ধরার মত জ্ঞান যে আমার নাই তা নির্ধিদ্ধায় স্বীকার করছি। এখানে আপনি রাইট।

আপনি লিখেছেন আমার লেখায় কারো উদ্ধৃতি থাকে না। থাকবে কোথা দিয়ে আমেরিকান পেপারের কপি পেষ্ট মেরে ডেইলি তিনটা পোষ্ট প্রসব করলে থাকার কথাও না ;)

৮| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:২১

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আর্য বিতর্ক আজও অমীমাংসিত প্রশ্ন। যদিও তার মধ্যে তাদের আদি বাসস্থান সম্পর্কে ঐতিহাসিক ব্র্যান্ডেন্টাইনের তত্ত্ব অনুযায়ী কিরঘিজ তৃণভূমিকে অধিকাংশ পণ্ডিতরা মেনে নিয়েছেন। আপনার সুলুক- সন্ধান মূলক লেখাতেও তার ইঙ্গিত পেলাম। যদিও সব যুক্তি একেবারে অকাট্য নয়।

আর্যদের ভারতে আগমন কাল সম্পর্কেও ঋকবেদে রচনাকারের উপরে গুরুত্ব দেওয়া হয়। আপনি পোষ্টের আপনার পোস্টে উল্লেখিত ঋকবেদের রচনাকাল পনেরশো থেকে 1000 খ্রিস্ট পূর্বাব্দে।

তাদের ভারতে বিস্তারের কতগুলো পর্যায়ে ছিল।
১-প্রথম থেকে আর্যরা কোন খানে সে ভারতে প্রবেশ করেনি। শান্তিপূর্ণভাবে নিজেদের গৃহপালিত পশু, জীবনযাত্রার উপকরণ দেবদেবী নিয়ে ভারতে আসে। ক্রমশ তারা আক্রমণকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়।
২-ঋকবেদের প্রথম দিকে আফগানিস্তানের সীমান্ত থেকে পাঞ্জাব পর্যন্ত বিস্তৃত ভূখণ্ডে বসতি স্থাপন করলেও দ্বিতীয় পর্বে তারা ভারতের পূর্ব দিকে গঙ্গা যমুনার অববাহিকা অঞ্চলে প্রবেশ করে।
৩-পরবর্তী বৈদিক যুগে তারা 'ব্রাহ্মণ' রচনার যুগে সরস্বতী নদী থেকে গাঙ্গেয় পত্রিকা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ ভূখণ্ডে যেমন কৌশল, কাশী, বিদেহ, মগধ , অঙ্গ ( বিহার পর্যন্ত) প্রভৃতি আঞ্চলিক সংস্কৃতির বিস্তার ঘটেছিল।
৪-দক্ষিণ ভারত ও বাংলাদেশ আরজে সংস্কৃতির বিস্তার ঘটেছিল আরো অনেক দেরিতে।

চমৎকার বিশ্লেষণধর্মী পোস্ট।++
আপনার জ্ঞানান্বেষণ এভাবে চলতে থাকুক।

শুভেচ্ছা শ্রদ্ধেয় শায়রী ভাইকে।

১২ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৩৪

শের শায়রী বলেছেন: প্রিয় পদাতিক ভাই, ভারতে আর্যদের আগমন, বিস্তার, ধর্ম, রাজনীতি, রাষ্ট্রীয় কাঠামো এগুলো নিয়ে বেশ কয়েকটি বই দেখছি। যার কয়েকটির উল্লেখ্য সুত্রে দিয়েছি। সেগুলোর সব নিয়ে বিষদ আলোচনায় গেলে পুরা বই হয়ে যাবে তাই যত খানি পারি শর্টে লিখছি, তারপরো পোষ্ট অনেক বড় হয়ে গেছে। ইচ্ছা আছে সামনে ভারতে আর্যদের আগমন তাদের বিস্তার এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে একটা ধারাবাহিক দেব।

আপনার মন্তব্য আমাকে সব সময়ই উদ্দীপনা দেয় কৃতজ্ঞতা জানবেন।।

৯| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:২৫

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আবার একটু আসতে হলো-
সব যুক্তি অকাট্য নয়, আর্যদের আদি নিবাস কোথায় ছিল সে সম্পর্কে কিরঘিজ স্তেপি তৃণভূমি অঞ্চলকে চিহ্নিত করার প্রসঙ্গে বোঝাতে চেয়েছি।

১২ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৩৭

শের শায়রী বলেছেন: এনিয়েও কোন দ্বিমত নেই যার কারনে আমি কিন্তু পোষ্টের লাষ্ট লাইন লিখছি আমার সামান্য পড়াশুনা থেকে আমি যেটুকু উপলদ্ধি করছি তাতে আর্যদের উৎপত্তি মধ্য এশিয়ার কোন এক এক জায়গা থেকে হয়ত কিরগিজ স্তেপ বা নিকটস্থ কোথাও থেকে কিন্তু তাও এখনো শক্ত কোন ভিতের ওপর দাড়ায় নি। সবই এখনো হাইপোথিটেক্যাল।।

আবারো কৃতজ্ঞতা জানবেন।

১০| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:২৬

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
আর্য, দ্রাবিড়, মংগল, নিগ্রো ইত্যাদি।
এরা কালচারালি পৃথক না, দেহের গঠন রং অনুযায়ী ভিন্নতা।
এরা কেউই জাতিগত বা মেধাগত শ্রেষ্ঠত্ব দাবি করতে পারে না। অনেক বেকুব একনায়ক করতো। যা ভুল প্রমানিত হয়েছে।

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:১৬

শের শায়রী বলেছেন: একজাক্টলি হাসান ভাই এই সব জাতিগত শ্রেষ্ঠতা দাবী করেই বেকুব এক নায়ক রা তাদের জনগনকে যুগে যুগে ঘোল খাইয়ে ছাড়ছে।

পাঠে কৃতজ্ঞতা।।

১১| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:৫৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনি বলেছেন, "আপনি লিখেছেন আমার লেখায় কারো উদ্ধৃতি থাকে না। থাকবে কোথা দিয়ে আমেরিকান পেপারের কপি পেষ্ট মেরে ডেইলি তিনটা পোষ্ট প্রসব করলে থাকার কথাও না "

-আপনার জ্ঞান কম, যে কোন ব্লগার বুঝতে পারবেন, আমার লেখা আমারই। মানুষের কথা বাদ, আমি আল্লার বাণীও কপিপেষ্ট করি না।

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৫২

শের শায়রী বলেছেন: জ্বি বুজলাম, অল্প জ্ঞানে।

১২| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:৫১

নীল আকাশ বলেছেন: আমি যতদূর জানি আর্যরা পারশ্য জাতির একটা ভাগ। জরুরস্থ্রষ্ট ছিল এদের ধর্মীয় গ্রন্থ। মহাভারত পড়লে কিছুটা টের পাওয়া যায়। আমার কাছ এই বিষয়ে কিছু লেখা আছে। খুজে পেলে পরে এসে দিয়ে দিবো।
সুন্দর লেখা। ভালো থাকুন।

নীচে একটা লেখা পেলাম। আপনার লেখার সাথে মিল আছে দেখে এখানেই দিয়ে দিলাম।
সুত্রঃ Click This Link
আপনি আর্য? না অনার্য?
আমি ভারতীয়!
বুঝলাম! কিন্তু সঙ্ঘ পরিবার দীর্ঘ দিন ধরে আমাদের জানিয়ে আসছে, ভারতীয় মানে আর্য হিন্দু রক্ত। এটাই শেষ কথা। আর্যরা বিদেশি নয়। তারা বাইরে থেকেও আসেনি। রক্তের বিশুদ্ধতা নিয়ে সঙ্ঘ পরিবার বড় বেশি উদ্বিগ্ন! একদা জার্মানিতে হিটলার আর্য রক্তর বিশুদ্ধতা নিয়ে এ ভাবে রাজনীতি করেছিলেন! সে তো আজ ইতিহাস!

আজ এত বছর পর হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের জিনতত্ত্ববিদ গবেষণা করে ঘোষণা করলেন যে, ডিএনএ পরীক্ষা থেকে জানা যাচ্ছে, ভারতীয়দের উৎস সম্পূর্ণ অন্যত্র! হরপ্পা সিন্ধু সভ্যতার অবসানের পর জনসমাজে এক ব্যাপক পরিবর্তন আসে। এ ব্যাপারে গবেষণা চলছে|

রোমিলা থাপারের মতো ঐতিহাসিক চিরকাল বলে এসেছেন, সিন্ধু সভ্যতা প্রাথমিক ভাবে শহুরে এবং শিক্ষিতদের সভ্যতা ছিল! বৈদিক যুগের মানুষ ছিল মূলত কৃষক। বৈদিক মানুষদের কোনও লিপি ছিল না আর তারা শহুরে ছিল না!

এই পরিস্থিতিটি হল পটভূমি!

এ বার বোমা ফাটিয়েছেন পুনে ডেকান কলেজের উপাচার্য এবং পুরাতত্ত্ববিদ বসন্ত শিন্ডে। দীর্ঘ দিন একটি টিম এই এলাকায় গবেষণা চালিয়ে এখন যে সিদ্ধান্তে এসেছেন তাতে সঙ্ঘ পরিবার ক্ষিপ্ত! প্রথম প্রশ্ন, সংস্কৃত ভাষা এবং বৈদিক হিন্দুবাদের উৎস কি হরপ্পা সভ্যতা? জবাব: না! ভারতীয় জনসমাজে কি এখনও হরপ্পা জিন টিকে আছে? জবাব: হ্যাঁ! নিশ্চয়ই! তা হলে ভারতীয়রা আজ বেশি আর্য? না দ্রাবিড়? মানে জনপ্রিয় অর্থে? জবাব: ভারতীয়রা অনেক বেশি দ্রাবিড়! সায়েন্স নামক জার্নালে এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। আর সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় সমাজে রাজনৈতিক তোলপাড়!

১৯২০ সালে যখন হরপ্পা সভ্যতা আবিষ্কৃত হয় বিতর্ক তখন থেকে শুরু! ব্রিটিশ ঐতিহাসিকরা বললেন, মহেঞ্জোদড়ো হরপ্পার পর বৈদিক সভ্যতা এবং তারা এসেছিল বাইরে থেকেই।

ম্যাক্স মুলারের মতো জার্মান ভারততত্ত্ববিদ বলেছিলেন, আর্যরা বাইরে থেকে আসে এবং এখানে এসে তারা সংস্কৃত শেখে! আরএসএস এ কথা মানে না!

হিন্দুত্ব লবি চাইছে, ভারতের ইতিহাস নতুন করে লেখা হোক। তারা সিন্ধু সভ্যতাকেও বৈদিক সভ্যতা হিসেবে দেখতে চায়! ৪৫০০ বছরের প্রাচীন রাখিগড়ি এলাকার কঙ্কালের ডিএনএ পরীক্ষা করে দেখা যাচ্ছে, সঙ্ঘ পরিবারের যুক্তি ভ্রান্ত! আবার এই গবেষণাও কি নির্ভেজাল?

আর্য কারা? আর্য কি কোনও ভাষাগোষ্ঠী? নাকি কোনও জাতি? এই ভাষাগোষ্ঠী বা জাতির আর্যরা কি বিদেশি বা বিদেশি ও ভারতীয়?

ভারতীয় কিছু কিছু লেখক এটা প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন যে, আর্য একটা জাতির নাম। এবং তারা বিদেশি নয়। উদাহরণস্বরূপ তাঁরা দেখাতে চেয়েছেন যে, অম্বেডকরও বলেছেন আর্যরা বিদেশি নয়।

প্রকৃত সত্য তবে কী? আর অম্বেডকর কোন আর্যদের বিদেশি বলেননি, সে বিষয়ে আমরা আলোকপাত করব।

প্রথমে আমরা দেখি আর্য কারা?

আর্য হচ্ছে একটি ভাষাগোষ্ঠীর নাম। আর একাধিক মানবগোষ্ঠীই এই ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। ভাষাগত দিক দিয়ে ভারতবর্ষে দু’টি আর্য জাতির অস্তিত্ব মেলে। আর গোষ্ঠীগত দিক দিয়ে যাদের একটি হল

আলপাইন মানবগোষ্ঠীভুক্ত এবং অন্যটি নর্ডিক মানবগোষ্ঠীভুক্ত। এই আলপাইন মানবগোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা যেমন অসুর নামে পরিচিত, তেমনই নর্ডিক মানবগোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা ছিল ব্রাহ্মণ নামে পরিচিত।

নর্ডিক আর্য আগমনপূর্ব ভারতীয় আলপাইন বা অসুর মানবগোষ্ঠীর ভাষাও ছিল আর্য। এই দিক দিয়ে, অর্থাৎ ভাষাগোষ্ঠী হিসেবে এরাও আর্য বলে গণ্য। ঋগ্বেদে এর প্রকৃষ্ট প্রমাণ আছে। অন্য দিকে, নর্ডিক মানবগোষ্ঠীর বৈদিক ব্রাহ্মণদের ভাষা যেহেতু আর্য ছিল তাই তারা আর্যজাতি হিসাবেই পরিচিত। অতএব, ভাষাগত দিক দিয়ে বিচার করলে ভারতবর্ষে দু’টি আর্য জাতির সন্ধান মেলে। প্রথমটি হল, আলপাইন মানবগোষ্ঠীভুক্ত প্রাগার্য জাতি এবং অন্যটি হল নর্ডিক মানবগোষ্ঠীভুক্ত বৈদিক ব্রাহ্মণ বলে স্বীকৃত বৈদিক যুগের আর্য জাতি।

অনেক চিন্তাশীল লেখকই ব্যাপারটাকে গুলিয়ে ফেলেন। তাঁরা বলেন, অম্বেডকর বলেছেন বৈদিক আর্যরা বহিরাগত বা অনুপ্রবেশকারী নন। আসলে তাঁরা অম্বেডকরের ব্যাখ্যাকে সঠিক ভাবে বুঝতে পারেননি বলে মনে হয়। আসলে অম্বেডকর বলেছেন, আলপাইন বা অসুর মানবগোষ্ঠীর আর্যভাষীরা বহিরাগত নয়। কিন্তু নর্ডিক মানবগোষ্ঠীভুক্ত আর্যভাষীরা হলেন বহিরাগত। যদিও বর্তমানে আর্য বলতে আমরা কেবল নর্ডিক মানবগোষ্ঠীভুক্ত আর্য ব্রাহ্মণদেরই বুঝে থাকি। যাঁরা হলেন ভারতবর্ষে অনুপ্রবেশকারী বা বহিরাগত।

‘বেদে আর্যজাতি নামে প্রকৃতপক্ষে কোনও জাতি নেই।’ কারণ, বেদে আর্য শব্দটি কখনওই জাতি অর্থে ব্যবহৃত হয়নি। তাই বেদে দু’টি মানবগোষ্ঠীর ভাষাকেই আর্য হিসেবে সনাক্ত করা হয়েছে। যার একটা হল নর্ডিক মানবগোষ্ঠীর আর্যভাষী ব্রাহ্মণ এবং অন্যটা আলপাইন মানবগোষ্ঠীর আর্যভাষী অসুর, যা অম্বেডকর তাঁর গবেষণা দ্বারাই প্রমাণ করেছেন।

আসলে ব্যাপারটা হচ্ছে যে, নর্ডিক মানবগোষ্ঠীর ব্রাহ্মণেরা এবং আলপাইন মানবগোষ্ঠীর অসুরেরা যেহেতু আর্য ভাষাগোষ্ঠীভুক্ত, তাই সম্ভবত ব্রাহ্মণেরা অসুরদের ইতিহাস চিরতরে মুছে দেওয়ার জন্য নিজেদেরকে আর্য মানবগোষ্ঠী বলে প্রচার দিয়ে দেশীয় অসুরদের অনার্য মানবগোষ্ঠী বলে প্রচার করেছেন। আর অসুররা অনার্য মানবগোষ্ঠী হিসেবে প্রচার পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একেবারেই মাটিচাপা পড়ে গেছে আসল সত্যটি যে, ‘দেশীয় অসুররাও প্রকৃতপক্ষে আর্য ভাষাগোষ্ঠীরই মানুষ।’ যদিও উভয়ের মধ্যে, অর্থাৎ আলপাইন ও নর্ডিক মানবগোষ্ঠীর মধ্যে বিরাট পার্থক্য রয়েছে।

প্রশ্ন হচ্ছে, অসাম্যের পূজারী অত্যাচারী হিটলারের বংশধর নর্ডিক মানবগোষ্ঠীর ব্রাহ্মণেরা তবে কেন নিজেদেরকে আর্য মানবগোষ্ঠী বলে পরিচয় দিলেন? অথচ, একই মানবগোষ্ঠীভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও হিটলারের গোষ্ঠীটি তো আর্যমানবগোষ্ঠী বলে সনাক্ত নয়। তারা তো নর্ডিক মানবগোষ্ঠী বলে পরিচিত। আর ভাষাগোষ্ঠীকে যদি মানবগোষ্ঠী বলা হয় তবে তো মূলনিবাসী আলপাইন বা অসুর মানবগোষ্ঠীর ভাষাও তো আর্য ছিল। তারা কেন তবে আর্য মানবগোষ্ঠী বলে গণ্য হলেন না? আর কেনই বা ঋগ্বেদে দেখা যায় নর্ডিক আর্যভাষী এবং আলপাইন আর্যভাষী নামে এই দুই আর্যভাষীদের মধ্যে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করতে?

নর্ডিক মানবগোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা যেহেতু ব্রাহ্মণ নামে পরিচিত, তাই তাঁরাই মূলনিবাসীদের মধ্যে অত্যন্ত সুকৌশলে বিভেদ সৃষ্টি করে ইন্দো-ইরানি দাস এবং দস্যু-সহ দেশীয় আলপাইন মানবগোষ্ঠীভুক্ত আর্যদেরও যুদ্ধে পরাজিত করে ভারতবর্ষে আধিপত্য বিস্তার করেন। কারণ ইন্দো-ইরানী দাস এবং দস্যু ও দেশীয় আলপাইন মানবগোষ্ঠীভুক্ত আর্যরা ছিলেন অযাজকীয় বা ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদে বিশ্বাসী। কিন্তু নর্ডিক মানবগোষ্ঠীভুক্ত আর্যরা ছিলেন যাজকীয় মতবাদে বিশ্বাসী। আর জয়ের পরিকল্পনাটি ঠিক এ কারণেই।

কিছু কিছু পশ্চিমী লেখক যথেষ্ট প্রমাণ ছাড়াই অনুমান করেছেন যে বৈদিক নর্ডিক আর্যরা দেশীয় দাস এবং দস্যুদের জয় করেছিলেন, যা নিতান্তই ভুল ধারণা। কারণ, দাস এবং দস্যুরা হলেন যেমন দু’টি আলাদা জাতি, তেমনই তারা আবার মূল ভারতীয়ও নয়। তারা ইন্দো-ইরানি এক সম্পদশালী মানবগোষ্ঠী। এখানে পশ্চিমী লেখকরা দাস ও দস্যু নামের অপব্যাখ্যা করে তাদের যেমন মূলনিবাসী বলে চালিয়ে দিয়েছেন, তেমনই মূলনিবাসী আলপাইন মানবগোষ্ঠীভুক্ত আর্যদের দিয়েছেন মাটিচাপা। এখানে বিশেষ ভাবে লক্ষ্যণীয় যে, সে যুগে ভারতবর্ষ ছিল এক বহুজাতিক দেশ। ঋগ্বেদে তাই অবৈদিক দেশীয় আলপাইন মাববগোষ্ঠীভুক্ত আর্যদের পাশাপাশি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ইন্দো-ইরানি দাস এবং দস্যুদেরও অনুপ্রেবেশকারী বৈদিক নর্ডিক আর্য ব্রাহ্মণদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে দেখা যায়। তাই পশ্চিমী লেখকদের নর্ডিক আর্য ব্রাহ্মণদের জয়ের মতবাদকে প্রতিষ্ঠিত করতে ঋগ্বেদের উদাহরণ দিয়ে অবশ্যই বলতে হত, ইউরোপীয় নর্ডিক আর্য ব্রাহ্মণেরা দেশীয় আলপাইন আর্য অসুর এবং ইন্দো-ইরানি দাস এবং দস্যুদের জয় করে ভারতবর্ষে আধিপত্য বিস্তার করেন। কিন্তু অম্বেডকর বলেছেন, ‘এই দুই আর্য জাতির মধ্যে কারা দাস এবং দস্যুদের জয় করেছিল যদি তারা আদৌ তাদের জয় করে থাকে।’ এ কথার সমর্থনে বলা যায় যে নর্ডিক আর্যরাই দাস এবং দস্যু-সহ মূলনিবাসী আলপাইন আর্যদেরও জয় করেছিল। যার প্রমাণ ঋগ্বেদের উদাহরণ থেকেই পাওয়া যায়। অর্থাৎ, ঋগ্বেদে দেখা যায়, দাস এবং দস্যুরা আলপাইন আর্যদের পক্ষ নিয়ে নর্ডিক আর্যদের বিরুদ্ধে সর্বদাই যুদ্ধে লিপ্ত ছিলেন। আর নর্ডিক আর্য ব্রাহ্মণেরা যে সত্যিই দাস, দস্যু এবং আলপাইন আর্যদের জয় করেছিলেন তা অনুপ্রবেশকারী বৈদিক নর্ডিক আর্য ব্রাহ্মণের নিত্যনতুন বৈদিক আইন প্রণয়ন এবং বৈদিক ধর্মের উপর পরবর্তীকালীন প্রাধান্য থেকেই পরিষ্কার। অতএব, অম্বেডকরের সিদ্ধান্ত থেকে প্রমাণিত নর্ডিক আর্য ব্রাহ্মণেরা বিদেশী ইউরোপিয়ান অনুপ্রবেশকারী। কিন্তু আলপাইন আর্যরা দেশীয় অসুর জাতি বলেই পরিচিত । যে আলপাইন বা অসুর জাতি নর্ডিক আর্য আগমনের অনেক পূর্বেই নগরকেন্দ্রিক সিন্ধু সভ্যতা গড়ে তুলেছিলেন।

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:০২

শের শায়রী বলেছেন: নীল আকাশ ভাই প্রথমেই কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি। এই লেখাটা আমার চোখ এড়িয়ে গিয়েছিল। অনেক অনেক ধন্যবাদ লেখাটার লিঙ্ক সহ পোষ্ট দেয়ায়। আসলে এই আর্য বিতর্ক কেন এটাও আমার কাছে এক অবাক ব্যাপার লাগে। আর্যরা যদি "ব্লু ব্লাড" হয়েও থাকে তাতে বর্তমান প্রজন্মের কি? উপরের একটা কমেন্টে জুন আপার মন্তব্য ভালো লাগছে

" মোক্ষ মুলার বলেছে আর্য্য, সেই থেকে মোরা ছেড়েছি কার্য্য"

ইতিহাসের নিরিখে আর্যদের বিচার বা অবস্থান নির্নয় করা উচিত, কিন্তু তাদেরকে নিজেদের উত্তরপুরুষ দাবী করে জার্মান বা ভারতীয়রা কি বুজাতে চায় আমার অনেকটা বোধের অগম্য? আর্যরা যদি সে সময়ের তুলনায় উন্নত সভ্যতা হয়েও থাকে তাতে বর্তমান যুদ্ধবাজ বা অকমর্ন্য উত্তরপুরুষ হয়ে কি হবে? এই প্রশ্নের জবাব আমি পাই না।

বর্তমান যুগে মানুষ নিজস্ব চিন্তা চেতনা মানবিকতা দিয়ে বিচার করা হয় অতীতের "নীল রক্ত" এক্ষেত্রে শুধুই শ্লাঘা দিতে পারে আর কিছুই না।

১৩| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:৩৭

রাতুল_শাহ বলেছেন: আর্যদের নিয়ে পড়তে ভালো লাগলো। হালকা হালকা জ্ঞান পাইলাম।

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৫৪

শের শায়রী বলেছেন: আমার কৃতজ্ঞতা জানুন।

১৪| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৩৫

রিফাত হোসেন বলেছেন: পড়লাম

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৮

শের শায়রী বলেছেন: ধন্যবাদ।

১৫| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৫৮

রিফাত হোসেন বলেছেন: মন্তব্য আর আলোচনা ভাল লেগেছে। আমার প্রশ্ন আর উত্তরগুলো এর মধ্যে নিহিত আছে। তবে কিছু উত্তর ঝুলে থাকবেই, যেহেতু ব্যাপারটা প্রকল্পিত।

আমি মন্তব্য না করলেও আপনার লেখা এবং মোটামোটি সব ব্লগার এর লেখা পড়া হয়। (তবে সব বিষয়ে নয়)
সাথে আছি।

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:১২

শের শায়রী বলেছেন: অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা জানবেন ভাই। অনেক ধন্যবাদ এভাবে পাশে থেকে উৎসাহ দেবার জন্য।

১৬| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৪

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আপনার লেখা খুব আগ্রহ নিয়ে পড়ি আমি। এসব ইতিহাসে আমার প্রচন্ড আগ্রহ, তবে সেই আগ্রহ থাকা সত্বেও আপনার মতো সিস্টেম্যাটিক্যালী পড়তে পারি না, ছাড়া ছাড়া ভাবে পড়ি।
একটা জায়গায় একটু খটকা লাগলো। লিখেছেন, অধ্যাপক গাইলস মনে করেন যে, আর্যদের আদি বাসভূমি ছিল দক্ষিণ পূর্ব ইউরোপ। তারা যেসব গাছপালা ও পশুপাখির নাম উল্লেখ করেছে সেগুলো নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের। এসবের দিকে লক্ষ রেখে ড. গাইলস বর্তমান অষ্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি অঞ্চলকেই আর্যদের আদি বাসভূমি হিসাবে চিহ্নিত করেছেন।

আমার কথা হলো, অষ্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি অঞ্চল তো নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল না। হিসাব মতে, ৩/৪ হাজার বছর পূর্বেও বড় ধরনের পরিবর্তন (বরফ যুগের মতো) সম্ভবতঃ হয়নি আবহাওয়ায়।

ইতিহাসবিদরা ইতিহাস জানতে চান শেকড়ের সন্ধানের জন্য। আর রাজনীতিবিদরা পবিত্র রক্ত, অভিজাত বা বিশুদ্ধ রক্ত এসব বলে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য। হিটলার আর মোদীর পশ্চাদ্দেশের উৎপত্তি রসুনের মতো, একই গোড়া থেকে। জাত-পাত, বিভেদ না থাকলে এদের অসুবিধা, তাই এরা এসব জিইয়ে রাখে। বারো জাতের রক্ত মিশতে মিশতে মানুষের রক্তের কি এখন কোন ঠিক আছে? ধান্দাবাজদের কথা বাদ দেন!! B-)

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৫২

শের শায়রী বলেছেন: মফিজ ভাই ভালো একটা পয়েন্ট ধরছেন। প্রথমেই বলে নেই ব্যাপারটা এত বিশাল যে তা যদি যথাযথ এক্সপ্লেইন করতে যাই তবে দুই চার খন্ডের বই হয়ে যাবে। আমি যেটুকু দেখছি তাতে আর্য বলতে যাদের বুজায় তারা আসলে যাযাবর সম্প্রদায় ছিল। অনেক যুগ ধরেই তারা যাযাবর জীবন কাটায়, এখানে আসলে প্রায় সবই সংক্ষিপ্ত আকারে দেয়া হয়েছে। গাইলস যেটা বুজাতে চেয়েছে তা হল এই যাযাবর জাতি হয়ত নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে একদা ছিল (ভ্রমন করছিলো) সেখান থেকে এসে পূর্ব ইউরোপে স্থায়ী হয়েছিল চাষাবাদ আর চারন ভুমির জন্য যার কারনে ঋগ্বেদে উল্লেখিত গাছ পালা নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের উল্লেখ্য পাওয়া যায়, যদিও ব্যাক ট্রেইল করে গাইলস সন্দেহ করছে তারা পূর্ব ইউরোপের। আপনি এই লিঙ্কটা দেখলে দেখবেন The Origin and History of the Aryans of Ancient India কত জন কত থিওরী দিয়েছে। ইন্ডিয়া, অষ্ট্রিয়া, পাঞ্জাব, জার্মান, সাইবেরিয়া, সেন্ট্রাল এশিয়া এমনকি কেউ কেউ আর্কটিক থেকে এদের উৎপত্তি হয়েছে বলে মত দিয়েছে। এদের উৎপত্তির ব্যাপারটা আসলে এখনো জগা খিচুড়ি। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় কোন এক দিন কেউ যদি দাবী করে এদের উৎপত্তি এই বাংলাদেশ অবাক হবার মত কিছু হবে না। পুরা অন্ধের হস্তী দর্শন যাকে বলে।

ইতিহাসবিদরা না নৃতাত্ত্বিক রা যা খুশী তাই বলুক এদের নিয়ে কিনে কিন্তু হিটলার বা মোদীদের এদের নিয়ে টা হ্যাচড়ার কারন আমার মাথায় আসে না। একটা যাযাবর জাতিকে নিজেদের পূর্ব পুরুষ প্রমান দিয়ে এরা কি চায়? অবশ্য হিটলার তো একটা বিশ্বযুদ্ধই চালাইয়া গেল এই আরিয়ান আরিয়ান কইরা।

১৭| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:০৯

এইচ তালুকদার বলেছেন: এখনো কত কিছু যে জানার বাকী

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:০৭

শের শায়রী বলেছেন: আমি নিজেও এখনো জানছি ভাই।

১৮| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: সবার মন্তব্য গুলো পড়তে আবার এলাম।

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:০৮

শের শায়রী বলেছেন: এনি টাইম প্রিয় রাজীব ভাই।

১৯| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:৫০

টারজান০০০০৭ বলেছেন: আর্যরা কোথা হইতে আসিয়াছিল তাহা জানার খুব সহজ উফায়টাই কৈলেন না মেবাই ! টাইম মেশিনে চইড়া "Back to the past" এ গেইলেই দেখিতে পাইবেন তাহারা কোথা হইতে আসিয়াছিল, কেমতে দেবতা হইয়া গেল, অসুর কাহারা ছিল............ সব !

এতো পন্ডিতের ভীড়ে রাহুল সাংকৃত্যায়নের কথা হারাইয়া গেল ! তিনিও বিশ্বাস করিতেন আর্য জাতি ভারতীয় নহে, বাহির হইতে আসিয়াছিলো !

ইতিহাস ফিরে ফিরে আসে ! জাতিগত বিশুদ্ধতায় বিশ্বাসী জাতীয়তাবাদ আবারও জনপ্রিয়তা পাইতেছে।

ইতিহাসে অন্যদের যে পরিণতি হইয়াছিল আরএসএস, সংঘ পরিবার , বিজেপিরও একই পরিণতি হইবে ! তবে জাপান , জার্মানির মতনই মারা খাওয়ার পরে !

১৫ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৩:০৮

শের শায়রী বলেছেন: টাইম মেশিনে যাইতে পারুম না, আপাতত টাইম ভ্রমন ক্যান্সেল করছি সব :P তয় শেষের কথা ঠিক ভবিষ্যত নিয়া যা কইছেন ইতিহাসে অন্যদের যে পরিণতি হইয়াছিল আরএসএস, সংঘ পরিবার , বিজেপিরও একই পরিণতি হইবে ! তবে জাপান , জার্মানির মতনই মারা খাওয়ার পরে !

২০| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৫৫

ভুয়া মফিজ বলেছেন: হিটলার বা মোদীদের এদের নিয়ে টা হ্যাচড়ার কারন আমার মাথায় আসে না। এইটা একটা কথা কইলেন। সহজ ব্যাপারটা আপনের মাথায় আসে না!! :D

নিজেদেরকে অন্যদের থেকে অভিজাত প্রমাণ করতে পারলে সাধারন মানুষের কাছে দ্রুত জনপ্রিয় হওয়া যায়। একজন অতি সাধারন মানুষ যখন নিজেকে অসাধারন সৃষ্টি ভাবার সুযোগ পায়, তখন সে খুব সহজেই অন্যদেরকে নীচু ভেবে নির্দ্বিধায় অত্যাচার করতে পারে। জাত-ভেদের উৎপত্তি তো এখান থেকেই! সুপিরিওরিটি কমপ্লেক্সের মতো মানসিক বিকৃতি থেকেই তো পৃথিবীর অধিকাংশ অশান্তির সূত্রপাত। নাকি ভুল বললাম!!! ;)

১৫ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৩:১৩

শের শায়রী বলেছেন: কতা ঠিকই কইছেন, ত্য় আমার মাথায় ঢুকে না কারন এই বড় জাত আর বংশের দুই পয়সার পাত্তা নাই আমার কাছে। ব্রিটেনের মহারানী বা আম্রিকান ট্রাম্প বা এই টাইপের বড় রাজা মহারাজাদের আমি যেন ক্যা আলাদাভাবে দুই পয়সা বেশী পাত্তা দিতে রাজী না, মাইনষে কেমতে দেয় ভাইবা পাই না, দেয় দেইখাই এই সব বাঁশ খাওয়া খাওয়ি চলে।। :) :)

২১| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:০৩

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: আর্য আর অনার্য নিয়ে পড়তে আমারও বেশ লাগে।

ইতিহাস টানে তোমারে আমারে
তাইতো পড়তে ভাললাগে।

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৩১

শের শায়রী বলেছেন: বাহ দুজনেরই দেখি ভালো লাগাটা অন্তত এক জায়গায় এসে ঠেকছে।

মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা জানবেন।

২২| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ রাত ১০:১২

আলামিন১০৪ বলেছেন: অনেক তথ্যবহুল এবং গবেষণাধর্মী রচনা। প্রিয়তে নিলাম।

০৩ রা মার্চ, ২০২০ রাত ১১:১০

শের শায়রী বলেছেন: বহুত বহুত শুকরিয়া প্রিয় ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.