নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি লেখালিখি করি, মনের মাধুরী মিশিয়ে
শ্রদ্ধেয় গুরু শামস তাবরীজী,
আপনার কাছ থেকে শিখে একবার বলেছিলাম - "এবার নিজেকে এক টুকরো হাসি দাও! হীরার কি দাম আছে যদি সে হাসি দিতেই না পারে!" আমি আমার বন্ধু শাইয়্যানকে কিভাবে হাসি দিতে হয় তা শিখাতে চাই। তার চারদিকে এত্তো এত্তো দুঃখের ছড়াছড়ি! আন্তর্জাতিক বাজারে যুদ্ধের দামামা, দেশে খুন-রাহাজানি-রেপ লেগেই আছে! সাথে রয়েছে বাজারে পণ্যের দূর্মুল্য, সিন্ডিকেট! রাতের ঢাকা শহরে মাদকের ফেরিওয়ালার খবর আগেই চাউর হয়েছে বেশ! এর মাঝে সে হাসি দিবে কিভাবে!
তাই, একদিন শাইয়্যানের কানে কানে বললাম- চলো, কিছু হাসি কিনি! তা যদি পারি, আমাদের কেনা এই হাসিগুলো তোমাকে সারা জীবন পথ দেখিয়ে যাবে, এমনকি চারদিকে যদি দুঃখের পাহাড়ও থাকে! প্ল্যান মোতাবেক, তাঁকে সাথে নিয়ে বের হলাম ঢাকার পথে।
ঢাকার লালমাটিয়া এলাকা আগে কি সুন্দর ছিলো! এখন যেন ময়লার ভাগাড়! ছিঃ! যারা রাস্তায় থুথু আর ময়লা ফেলে এরা কেমন মানুষ! এলাকার কমিশনার সাহেব করছেন কি! শাইয়্যানকে জিজ্ঞাসা করতেই সে বললো - গুরু, কমিশনার সাহেবকে রাস্তায় ময়লার ছবি পাঠিয়েছিলাম। উনি বলেছেন যে, ব্যবস্থা নিবেন। আমি তার কথা শুনে হাসলাম আর বললাম-
"যা-ই ঘটুক না কেন, হেসে যাও এবং ভালোবাসার কাছে ধরা দাও! "
ঐ দেখো, শীতের মাঝেও খালি পায়ে কিছু শিশু মলিন মুখে রাস্তায় ঘুরছে। শাইয়্যান, ওদেরকে কিছু চকলেট বিলানো যাক! দেখি ওদের মুখের মলিনতা দুর হয় কি না! শাইয়্যান আমার কথা শুনে একগাদা চকলেট কিনলো পাশের একটি দোকান থেকে।
কিছুক্ষণ পরে শাইয়্যানের বিবিজানও আমাদের সাথে যোগ দিলো। বড় ভালো মেয়ে! শাইয়্যানের কথা সব সময় মেনে চলে। শাইয়্যানও তার বিবিজানের মজার মজার জোকস শুনে মুখ এতো বিরাট হা করে এমন ভাবে হাসে যে মাঝে মাঝে বুঝি তার মুখে মাছি ঢুকে যায়! শাইয়্যানের এমন চাপা শুনে আমি হাসি।
"আমি ফুলের মতো হাসি, সেই হাসি আমার ঠোঁটের সীমারেখা পেরিয়ে সারা স্বত্বায় ছড়িয়ে পড়ে!"
আমরা আবার ঢাকার রাজপথে নামলাম। সাথে এক হাঁড়ি চকলেট। ধানমণ্ডি ২৭ নাম্বারের স্বপ্ন চেইন শপের সামনে অনেক অবহেলিত শিশুর দাঁড়িয়ে আছে! আমি আমি শাইয়্যান ও তার স্ত্রীকে ওদের মাঝে কিছু চকলেট বিলিয়ে দিতে বললাম। চকলেট পেয়ে তাদের কি খুশি! তারা ক্যামেরার সামনে পোজ দিতে দিতে বললো - দাদু, তোমরা কি ভালো!
আমাদের চারপাশে ভীড় জমে গিয়েছিলো! স্বপ্ন দোকানটার দারোয়ান আমাদের বেশিক্ষণ সেখানে দাঁড়াতে দিলো না! আমার খুব রাগ হলো! কিন্তু, খুব শীঘ্রই রাগ সামলে উঠলাম। কারণ? আমি তো রুমী।
"আমার কাছে সত্যিকারের হাসির মতো মূল্যবান কিছুই পৃথিবীতে নেই, বিশেষ করে একটি শিশুর কাছ থেকে যদি তা আসে।"
আমরা আগে বাড়লাম। এবারে, আড়ং-এর সামনে যাওয়ার পালা! সেখানেও অনেক পথশিশু ভীড় করে থাকে! তাদেরকে চকলেট বিলিয়ে আসাদগেট বাস স্ট্যান্ডের সামনে এক ফোকলা দেঁতো শিশুকে তার বান্ধবীর সাথে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম। চকলেট পেয়ে তাদের সে কি হাসি!
ডেকচিতে উঁকি দিয়ে দেখলাম বেশ কিছু চকলেট রয়ে গিয়েছে। আসাদগেট বেহারী ক্যম্পের সামনে আসতেই, কিছু শিশু আমাদের ঘিরে ধরলো। তারাও চকলেট চায়।
শাইয়্যান বললো - এক মুঠোয় তোমরা যতগুলো নিতে পারবে, সব তোমাদের।
সবাই মুঠো মুঠো চকলেট হাতে নিলো। তাদের মাঝে একটা মেয়ে ছিলো কিছুটা দূর্বল। তার মুঠোয় বেশি চকলেট উঠলো না! শাইয়্যানকে বললাম- ওর হাতে আরও কিছু চকলেটে তুলে দাও।
আমাদের সব চকলেট শেষ হয়ে গেলো! এবারে বাড়ি ফেলার পালার। বাড়ি ফিরতে ফিরতে গুনগুন করে গেয়ে উঠলাম-
"খুব অল্প কিছু বাদে পৃথিবীর সব মানুষই শিশু। মুক্ত ইচ্ছা ছাড়া কেউ বড় হয় না।"
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৪
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
ঐদিন অনেক মজা হয়েছিলো!
ধন্যবাদ নিরন্তর।
২| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৭
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি ভালো কাজ করছেন।
আমারও আপনার মতো এরকম করার ইচ্ছা আছে।
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৭
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
সমাজে ১টি খারাপ কিছু দেখলে, আমি ২টা ভালো কাজ করার চেষ্টা করি।
ব্যালেন্সটা যাতে ভালোর দিকে থাকে সব সময়ে।
শুভেচ্ছা নিরন্তর।
৩| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫১
Sumiya Barkatullah বলেছেন: কী সুন্দর করে লিখলেন!
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:২৩
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
আমি এবং আমার স্ত্রী প্রায়ই এরকম কাণ্ড ঘটাই! সেসব নিয়ে আমি লিখে যাই।
শুভেচ্ছা নিরন্তর।
৪| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:২৯
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আজ কাল মানুষ আর ভালো কাজ করতে চায় না।
কেউ ভালো কাজ করছে শুনলে খুব ভালো লাগে।
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:১৬
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
ভালো কাজ করে যেতে হবে।
ধন্যবাদ নিরন্তর।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬
সোনাগাজী বলেছেন:
ভালো কাজ করেছেন।