নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অন্যদের সেভাবেই দেখি, নিজেকে যেভাবে দেখতে চাই। যারা জীবনকে উপভোগ করতে চান, আমি তাঁদের একজন। সহজ-সরল চিন্তা-ভাবনা করার চেষ্টা করি। আর, খুব ভালো আইডিয়া দিতে পারি।

সত্যপথিক শাইয়্যান

আমি লেখালিখি করি, মনের মাধুরী মিশিয়ে

সত্যপথিক শাইয়্যান › বিস্তারিত পোস্টঃ

যেভাবে মাত্র ৫ বছরে বাংলাদেশের যে কোন সরকার ১৮ লক্ষ বস্তিবাসী\'র জীবনে পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:২৭



সময় টিভির ২০২২ সালের একটি অনলাইন রিপোর্ট অনুযায়ী পুরো দেশ জুড়ে গড়ে উঠা বস্তিগুলোতে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা প্রায় ১৮ লক্ষ। যদিও এ,ডি,বি'ত তথ্যমতে তা অনেক বেশি। একটি বেসরকারী গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এই বস্তিগুলোতে বসবাসকারীদের গড় আয় দিনে ৭০-১৫০ টাকা, মাসে ২,১০০-৪,৫০০ টাকা। বছরে যা গিয়ে দাঁড়ায় ২৫,২০০ - ৫৪,০০০ টাকা। সেই হিসেবে, বাংলাদেশে প্রতি বছরে ১৮ লক্ষ বস্তিবাসীদের আয় ৪৫৩৬ কোটি থেকে ৯৭২০ কোটি টাকা! অন্যদিকে, নিম্ন আয়ের এই মানুষগুলো অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দিন যাপন করছে প্রতি স্কোয়ার ফিটে ৩৬ টাকা খরচ করে। অথচ, আমাদের বিলাসবহুল এপার্টমেন্টে খরচ হয় ২৩ টাকা করে!


বস্তিবাসীদের জীবনঃ
যেসব মানুষ বস্তিতে বসবাস করে তাদের আবাসন ব্যবস্থা মান-সম্মত নয়। প্রতি বর্গফুটে বস্তিবাসীরা বাংলাদেশের উচ্চ মধ্যবিত্ত মানুষগুলোর সমান হারে বাসা ভাড়া দিয়ে থাকে। এই বস্তিগুলোতে পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা খুবই খারাপ। বসবাসকারীদের ৭৩.৭৫% অস্বাস্থ্যকর টয়লেট ব্যবহার করে থাকেন। এছাড়া, রান্নার ব্যবস্থাও খুবই অপ্রতুল। প্রতি ৮টি পরিবারের জন্যে রয়েছে ২টি ওভেন।

রান্না এবং টয়লেটের ক্ষেত্রে কষ্ট করতে হলেও বস্তিবাসীদের ৪৮%-এর ঘরে রয়েছে টেলিভিশন, ৭%-এর ঘরে আছে ফ্রিজ। এছাড়া ৮৪ শতাংশ বস্তিবাসীর ঘরে মোবাইলফোন রয়েছে। এ থেকে বুঝা যায়, দেশের বস্তিবাসীদের আয় কম থাকলেও ব্যয়ও ভালো ভালোই হয়ে থাকে। হয়তো মাস শেষ হলে পকেটে কোন টাকা থাকে না। কিন্তু, নিজেদের চাহিদা পূরণে পিছু পা নয় তারা।


আমার একটি স্বপ্নঃ

পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, বস্তির অধিবাসীরা আবাসনের জন্যে প্রতি স্কোয়ার ফিটে ৩৬ টাকা দিয়ে থাকেন। সেই ছোট্ট ঘরেই বসবাস করে একেকটি পরিবার। অথচ, এই একই পরিমাণ টাকা এই মানুষগুলোর কাছ থেকে নিয়ে তাদেরকে একটি ৬০০ বর্গফুটের বাসা করে দিতে পারে সরকার যাতে ৫ জন সদস্যের একটি পরিবার থাকতে পারবে। যদি তাঁদের কাছ থেকে ঘর ভাড়া হিসেবে সর্বোচ্চ ২০০০ টাকা ভাড়া ধরে নেওয়া যায়, তাহলে ৭০ বছরে একেকটি পরিবারকে ১৬ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা খরচ করতে হবে। সেজন্যে, সরকারকে ১৮ লক্ষ বস্তিবাসী'র জন্যে ৩ লক্ষ ৬০ হাজারটি ৬০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট করে দিতে হবে।





কিভাবে সম্ভব এই স্বপনকে বাস্তবায়ন?

প্রথমেই একেকটি ফ্ল্যাট বানাতে কত খরচ করতে হবে তা হিসেব করে নেওয়া যাক । বর্তমানে একেকটি ফ্ল্যাট তৈরী করতে প্রতি বর্গফুটে গড়ে ২৮০০ টাকা খরচ হয়। সেই মোতাবেক, ৬০০ বর্গফুটের জন্যে খরচ হবে ১৬ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। এখন, এই ফ্ল্যাট যদি হায়ার পার্চেজ বা ৯৯ বছরের লিজের ভিত্তিতে মাসিক ২০০০ টাকা করে বস্তিবাসীদের কাছে ভাড়া দিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে ৭০ বছরের মধ্যে এই টাকা পরিশোধ হয়ে যাবে। আর তা বস্তিবাসীদের আবাসনের জন্যে বর্তমান ব্যয় সীমার মাঝেই পড়ে। কারণ, ৭০ বছরে বস্তিতে থাকার জন্যে ঐ একই পরিমাণ টাকাই খরচ করতে হবে।

এখানে মনে রাখা প্রয়োজন যে, দেশে সরকারের মালিকানায় থাকা অব্যবহৃত খাস জমির পরিমাণ ১২,০০০ একর। এই সরকারী জমিতে প্রতি ২০ কাঠায় একেকটি ফ্লোরে ফ্ল্যাট করার জন্যে কমপক্ষে ১০,৪০০ স্কোয়ার ফুট জায়গা বের করে নেওয়া যাবে। একেকটি ফ্লোরের ১০,৪০০ স্কোয়ার ফুট জায়গায় ৬০০ স্কোয়ার ফিটের কমপক্ষে ১৬টি ফ্ল্যাট বানানো যাবে। এখন ২০ কাঠায় ২০ তলার ভবন বানানো হলে, একেকটি ভবনে ৩২০টি ৬০০ স্কোয়ার ফুটের ফ্ল্যাট বানানো সম্ভব। তাহলে, একেকটি ২০-তলা ভবনে একেকটি পরিবারের ৫-জন করে মোট ১৬০০ মানুষের বাসস্থান হবে। এভাবে, ১৮-লক্ষ বস্তিবাসীর জন্যে ১১২৫টি ২০-তলা ভবন দরকার হবে, যাতে ৩ লক্ষ ৬০ হাজার ফ্ল্যাট থাকবে।

এই হিসেবে, ১১২৫-টি ভবনের জন্যে দরকার হবে ২২৫০০ কাঠা। এখন, ১ একর সমান ৬০.৬ কাঠা হলে, এই ভবনগুলো বানাতে প্রায় ৩৭২ একর জমির দরকার হবে।


খরচের হিসাবঃ

একটি ৬০০ স্কোয়ার ফুটের ফ্ল্যাট করতে ১৬ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়, তাহলে, একেকটি ২০ তলার ভবন বানাতে খরচ হবে ৫৩ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা। অর্থাৎ, ১১২৫টি ভবনের জন্যে দরকার ৬০৪৮০ কোটি টাকা।


কোথা থেকে আসবে এতো টাকা?

এই ফ্ল্যাটগুলো'র জন্যে সরকারকে ৬০৪৮০ কোটি টাকা খরচ করতে হবে যা ৭০ বছরে উঠে আসবে। সরকার পারবে কি এই পরিমাণ টাকা খরচ করতে? এখানে উল্লেখ্য যে, বিশ্বব্যাংক ৩৫ বছরের জন্যে লং টার্ম লোন দিয়ে থাকে।

এক্ষেত্রে, ফোর্ড ফাউন্ডেশনের মতো সংস্থাগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হলে, তাঁরা নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন। ফোর্ড ফাউন্ডেশন এক সময়ে স্বল্প উন্নত দেশগুলোর জন্যে আবাসন শিল্পে অনেক বিনিয়োগ করেছিলো। ঢাকার আসাদগেট নিউকলোনি এলাকার এক সময়ের বাসভবনগুলো এর প্রমাণ।



ছবিসূত্রঃ
ছবি ১ঃ hosny salah
ছবি ২ঃ ekidin

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:৩৬

শাওন আহমাদ বলেছেন: আপনার স্বপ্ন সুন্দর! এই সুন্দর স্বপ্ন বাস্তবায়ন হলে আরও সুন্দর হবে।

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:০৮

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:



আমার মনে হয়, বেসরকারি আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের আওতায় এই কাজগুলো করতে পারে। এক্ষেত্রে, ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থা বা ক্রাউড ফান্ডিং কোম্পানিগুলো এগিয়ে আসতে পারে।

শুভেচ্ছ নিরন্তর।

২| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:৫২

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: ভালো এনালাইসিস, তবে এর আরও বিস্তার গবেষণার দরকার। তাছাড়া কিছু ফ্যাক্টও ভাবতে হবেঃ

১. ধনীরা কখনোই চাইবেনা বস্তিবাসি ফ্লাটে থাকুক। তাদের চাওয়া-না-চাওয়া কিন্তু একটা বড় ফ্যাক্ট। সরকার তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যেতে চাইবে না।
২. বস্তিবাসিরাও অনেকাংশেই ভালো থাকতে চায় না। এই সাইকোলজিটা নিয়ে পড়া লেখা করতে পারেন। আম্রিকার হোমলেসদের নিয়ে পড়ুন, বুঝতে পারবেন।
৩. বস্তিবাসিরা অধিক লাভের আশায় মধ্যবিত্তের কাছে ঐ ঘর ভাড়া দিয়ে দিবে। কোন আইন-কানুন করেও ঠেকাতে পারবেন না।
৪. ৩৫ বছর মেয়াদী লোন নিয়েও লাভ নাই। টাকার সৎ ব্যবহার হওয়ার সম্ভাবনা নাই বললেই চলে! ৩৫ বছর পর বিপদে পড়তে হতে পারে।

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২৭

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:


গবেষণা অবশ্যই দরকার।

আমি একজন ধনী ব্যক্তি।

আমি চাই দরিদ্ররা ভালো থাকুক।

শুভেচ্ছা।

৩| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:২১

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




বস্তিবাসী এই দেশের মানুষ। তারা রিফিউজি নন। তাদেরও নাগরিক ও মৌলিক অধিকার আছে। আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে বস্তি দূর করতে না পারলে এই দেশ হতে রোগ মহামারী কোনোদিন যাবে না। বস্তিবাসীদের আবাসন ব্যবস্থা করা খুবই জরুরী বিষয়। বাংলাদেশ সরকারের কাছে ৬০,০০০ কোটি টাকা খুব বড় অংক না।

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২৯

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:



সহমত।

বস্তিবাসীদের উন্নয়ন দরকার। নাহলে আমাদের অগ্রগতি বৃথা হয়ে যাবে।

শুভেচ্ছা নিরন্তর।

৪| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৪১

সোনাগাজী বলেছেন:



আমাদের জাতির কাছে মৌলিক অধিকারগুলো পুরণ করার মতো সম্পদ আছে; অভাব হচ্ছে ভাবনা ও দক্ষতার।

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩০

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:


ভাবনা ও দক্ষতার উন্নয়ন করতেই হবে।

ওয়েলকাম ব্যাক!

শুভেচ্ছা নিরন্তর।

৫| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:১০

নীলসাধু বলেছেন: স্বপ্ন সফল হলে ভালো হতো।
এই শহরে বস্তিবাসী বলে কেউ থাকতো না।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ভোর ৫:১৭

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:


ধন্যবাদ, নীলসাধু ভাই।

আপনাকে ব্লগে আবারো সক্রিয় দেখে ভালো লাগছে।

লেইট হ্যাপি বার্থ ডে।

শুভেচ্ছা নিরন্তর।


৬| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: চমৎকার একটা আইডিয়া দিয়েছেন।
এই আইডিয়া কাজে লাগালে বস্তিবাসী উপকার পাবে।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ভোর ৫:১৭

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:


ভালো লেগেছে জেনে উৎসাহ পেলাম। শুভেচ্ছা নিরন্তর।

৭| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:৪৯

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: মিরপুর কালসী এবং ভাষনটেকে কিন্তু ইতিমধ্যে বিস্তিবাসীদের জন্য এপার্টমেন্ট করা হয়েছে, ভাড়া মাত্র ৪ হাজার টাকা। আর আমি মনে করি বস্তিবাসীদের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে হবে, তাহলে ওরা নিজের পথ নিজেরাই খুঁজে নিতে পারবে।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ভোর ৫:১৭

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:



সেগুলোর কি অবস্থা?

ধন্যবাদ।

৮| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: দেশের সকল মানুষ যদি আপনার মতো করে ভাবতো তাহলে দেশ অনেক বদলে যেত।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ভোর ৫:১৮

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:




আমি চেষ্টা করি।

ধন্যবাদ নিরন্তর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.