নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন অসুস্থ,ছন্নছাড়া ও বিকারগ্রস্ত প্রেমিক!

রিয়াজ হান্নান

So I believe, someday I will be happy.

রিয়াজ হান্নান › বিস্তারিত পোস্টঃ

হাসিনা যেভাবে স্বৈরাচার কায়েম করলো

০৩ রা আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৫:২৮


স্বৈরাচার বলতে আমরা বাঙালিরা যা বুঝতাম তা হল নূর হোসেন হত্যাকারী এরশাদ বা তাফ শাসনামল। তাছাড়া স্বৈরাচারের কোন গালগল্প আমাদের তেমন জানাশোনার মধ্যে ছিলোনা। পাঠ্যপুস্তক কিংবা এদিকে সেদিক করে যা আমরা জেনেছিলাম,শিখেছিলাম তা কেবলই শিখার জন্য জানার জন্য,কিন্তু আমল করার জন্য ছিলোনা। অথচ আমরা ষোলো বছর ধরে স্বৈরাচারের অধীনস্থ৷ কিভাবে শেখ হাসিনা এই স্বৈরাচার কায়েম করলো?

শুরুতেই বলে নেই যে,শেখ হাসিনা কখনোই আওয়ামীলীগের মত প্রাচীন কিংবা আভিজাত্যপূর্ণ কোন দলের লিগ্যাসি ক্যারি করার মত মানুষ ছিলেন না,কখনই না। আপনারা দেখবেন অতীতে সে কথায় কথায় বলতো,এই দেশ থেকে নেয়ার কিছু নাই,শুধু দেয়ার আছে,আমার বিরুদ্ধে কিছু বললে সব বন্ধ করে দিব ইত্যাদি টাইপ কথাবার্তা। যা আজকের এই আওয়ামিলীগের মত একটা দলকে চিরতরে মুছে দিলো। আমার অনেক পোস্ট,ব্লগ পোস্ট ছিলো আছে ঠিক এইরকম যে,আওয়ামিলীগ বাংলাদেশের ইতিহাসে জঘন্য একটা দলে পরিণত হবে এবং এমন একটা সময় আসবে জাতীয় পার্টির চেয়েও অধঃপতন হয়ে যাবে। আজকের দিনটা দেখুন।

লগি বৈঠার নৃশংসতার মধ্যে দিয়ে আওয়ামিলীগ ক্ষমতায় আসলেও সাথে সাথে ইন্ডিয়ান 'র' দিয়ে পিলখানা হত্যাযজ্ঞের মত ঘটনা ঘটায়। এর একমাত্র কারণ ছিলো প্রশাসনকে নিজের অধীনস্হ করা। সোহেল তাজের মত বাটপারদের দ্বারা (স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ছিলেন সোহেল তাজ) খুনিদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করা। চারজন হত্যাকারী লন্ডন ফ্লাইট বিলম্বিত হওয়ার কারণে সোহেল তাজ তাদেরকে হেলিকপ্টারে সিলেট নিয়ে যায়,সেখান থেকে দুবাই। কোনপ্রকার জবাবদিহিতা ছাড়াই ৫৭ জন মেধাবী অফিসারকে হত্যা করার মত জঘন্য ঘটনা করেছে শেখ হাসিনা। মদদ ইন্ডিয়া,ভূমির জন্য? নাহ,দেশে বিএনপি জামায়াত যদি পরবর্তীতে ক্ষমতায় আসে তাহলে এই দেশকে পাকিস্তান বানিয়ে ফেলবে এই ভয় দেখিয়ে ইন্ডিয়ার সাহায্য এই ঘটনা ঘটায়। প্রতিটা গনহত্যায় ঠিক এই একটাই কারণ,দেশ পাকিস্তান হয়ে যাবে,ইন্ডিয়া আর বাংলাদেশের ভৌগলীক অবস্থানের কারণে,একদিকে কাশ্মীর ইস্যু,চীন ইস্যু,আবার যদি বাংলাদেশ পাকিস্তানের মত হয়ে যায় তবে ইন্ডিয়া কয়টা দিকে খেয়াল রাখবে? ঠিক যে কারণে একাত্তরে ইন্ডিয়া আমাদেরকে সাহায্য করেছিলো সশস্ত্র ভাবে। যাতে একটা দিক অন্তত ঠিক থাকে,দুশ্চিন্তা করতে না হয়। এভাবেই শেখ হাসিনা ইন্ডিয়াকে বাংলাদেশে আধিপত্য বিস্তার করতে সাহায্য করে সম্পূর্ণ নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থে।

ঠিক একি কারণে এই উপমহাদেশের অন্যতম বা সবচেয়ে প্রাচীন রাজনৈতিক ইসলামিক দল জামায়াতে ইসলামির সকল প্রধানদের বিভিন্ন ভাবে মুক্তিযুদ্ধের দোহাই,মানবিতাবিরোধী অপরাধ ইত্যাদিতে সাব্যস্ত করে তাদেরকেও মেরে ফেলা হয়। এই ব্যাপারে আপনার অনুভূতি না ও থাকতে পারে,কিন্তু আপনি বিচারব্যবস্থার দিকে তাকান,যে সমস্ত জামায়াতের নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়েছে তাদের সাক্ষী যারা ছিলো তাদের সম্পর্কে জানুন। আপনার জন্য সব উন্মুক্ত আছে। আর আমরা তো দেখেছি সাবেক বিচারপতি জাস্টিস মানিক নামক আওয়ামী দলীয় ক্যাডারদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত বিচারব্যবস্থা। যাই হোক,মতপার্থক্যের থাকতে পারে সেসব ভিন্ন আলোচনা। কিন্তু এই হত্যাযজ্ঞের কারণ কি? জামায়াত কে এই দেশ থেকে নিশ্চিহ্ন করা,এবং মুক্তিযুদ্ধের নামে মানবিতাবিরোধী অপরাধের দোহাই দিয়ে গোটা জাতিকে বেকুব বানিয়ে নিজের স্বৈরাচার কায়েম করা। (নেক্সট পার্ট গুলো তে পাবেন) ইন্ডিয়া খুশি হল,যাক জামায়াতে ইসলামি নাই। বলে রাখা ভালো জামায়াতে ইসলামি কোন লোকাল পলিটিকাল পার্টি নয়,সারা দুনিয়ায় এর অবস্থান,ভারতবর্ষে উৎপত্তি,পাকিস্তানে আসা এরপর বাংলাদেশে,বিভিন্ন উইং হওয়া নাম দিয়ে দুনিয়ার অনেক দেশেই অবস্থান সাংগঠনিক নীতি আদর্শ দিয়ে৷ মালয়েশিয়ার ক্ষমতাশীন সরকার,তুরস্কের এরদোয়ান ও তার দল,আদর্শ একটা,নাম ভিন্ন,আমরা অনেকেই ব্রাদারহুডের ব্যাপারে জানি,সেম ব্যাপারস্যাপার। আর ঠিক এই ইসলামিক ব্যাপারস্যাপার এবং সারাবিশ্বে থাকা শক্তপোক্ত একটা দলকে ভারত অলওয়েজ নিজেদের হুমকি মনে করবে তাও আবার বাংলাদেশের মত জায়গায় এটা খুব স্বাভাবিক ঘটনা। হাসিনার লাভ কি ছিলো? তার চেয়ে বড় কথা হল এই দেশের মানুষ তখনো হাসিনার এই ব্যাপারগুলো ধরতে পারেনাই।

এরপর ধরা হল বিএনপি কে,নানান রকম ভাবে হামলা মামলা দিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে দূর্নীতিবাজ,তার পূত্রকে দূর্নীতিবাজ,খাম্বা তারেক,লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীদের গুম খুন হত্যা চালিয়ে রাজনৈতিক মাঠ থেকে সরিয়ে দিয়ে একচ্ছত্র রাজনৈতিক রাষ্ট্র কায়েম করার লক্ষ্য।

দাড়ি টুপি বা মাদ্রাসার হুজুরদের দেখিয়ে গোটা দুনিয়াকে বলতো এই দেখ জঙ্গি জঙ্গি,গোটা দুনিয়া সেটাই খাইছে। এক রাতে শাপলা চত্বরের লাশ গায়েব করে আরেকটা গনহত্যা চালায়,রাতের অন্ধকারে৷ ভারতকে দেখিয়েছে এই দেশ আর তোমার জন্য হুমকি হবেনা,যতক্ষণ তুমি আমার সঙ্গে থাকবা,আমি রাষ্ট্রের প্রধান থাকবো। যেভাবে রাশিয়া কখনোই চায়না আমেরিকা বা ইইউ ইক্রেনে তাদের নিজস্ব সরকার বসিয়ে রাশিয়ার জন্য হুমকি হোক।

আর এই সকল কার্যক্রম করার ফাঁকেফাঁকে সংবিধান পরিবর্তন,আইন পরিবর্তন,কোটা সিস্টেমে প্রশাসনের (সকল ধরনের ডিফেন্সে) নিজস্ব ক্যাডারবাহীনিকে নিয়োগ দেয়া,সরকারি দপ্তরের পিয়ন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় অব্দি। ফলাফল কি? আজকের এই বাংলাদেশ,গনহত্যা ও পুলিশ বিজিবি র‍্যাবের হাতে এই দেশের সাধারণ মানুষের হত্যা।

বিরোধীদলগুলোকে নিশ্চিহ্ন করার(বিভিন্ন ট্যাগ দিয়ে) যে পায়তারা করেছে সেটার ফলাফল স্বরূপ মানুষের ভোটাধিকার হরণ করা,রাষ্ট্রকে রাজনীতি শূন্য বানিয়ে ফেলা যাতে একচ্ছত্র রাষ্ট্র ব্যবস্থা কায়েম করা যায়। আজকে আপনারা যেসব গুজব দেখতেছেন,পাকিস্তানি কনস্যুলেট এর কাছে সাহায্য চাওয়া,ঢাকায় ছাত্রলীগের পশু দ্বারা ছাত্রীর গায়ে হাত দেয়া গলা চেপে ধরা কে চিটাগং এর ভিডিও বলে চালানো,মিথ্যা প্যাড দিয়ে আন্দোলন সহ ইত্যাদি যে গুজব গুলা ছড়াচ্ছে ঠিক একি কায়দায় অতীতে বিভিন্ন দলের উপর প্রোপাগাণ্ডা যেমন,রাজাকার,আলবদর আল শামস,খাম্বা তারেক,আইভ্রু,দুর্নীতিতে বিএনপি চ্যাম্পিয়ন ইত্যাদি ছড়িয়ে মানুষের মনে নেগেটিভিটি ছড়িয়ে দেয়া। এরপর মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেয় উন্নয়নের বিলবোর্ড দিয়ে বিকল্প দেখান।

তো স্বৈরাচার তো স্বৈরাচারই,নিরাপদ সড়ক আন্দোলনেও স্কুলের বাচ্চাদের উপর গুলি চালানো,যেটা তার নেশা হয়ে গেছে,গনহত্যা বা রক্তপান করা একটা কালচারে পরিণত হয়ে গিয়েছিলো,হয়ে গেছে। যত ভালো কথাই,ভালো জিনিসই সামনে আসুক না কেন সেখান থেকে তার রক্ত নিতে হবেই। আর এই কাজে ইন্ডিয়া কেন এত ইন্টারেস্টেড ছিলো তা এখন স্পষ্ট,পাকিস্তান। অথচ এই রাষ্ট্রের পাকিস্তানের সাথে কোন সম্পর্কই নাই,কোন মানুষেরই নাই,যা ছিলো দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তার পিতা শেখ মুজিবেরই ছিলো সেসব ভিডিও ফুটেজ এখনো সোশ্যাল মিডিয়াতে ঘুরে,আর তার মেয়ে তার বাবার নামে কেচ্চা কাহিনি বলে এই দেশের এই জেন-জেড কে ষোলো বছর এইসব খাওয়াইছে,হাগতেও গেলেও পোলাপান এইসব শুনেছে।

এই যে এবার কোটা আন্দোলন কে ঘিরে যে গনহত্যা চালানো হইছে এইটা শ্রেফ 'র' দিয়ে ঘটানো একটা ঘটনা। যে ভাবেই হোক হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। এত এত বছর পরে ভারতের সমস্যা কেবল পাকিস্তান ছিলোনা,বরং রাষ্ট্রের হিডেন নিয়ন্ত্রণ ও তাদের একমাত্র লক্ষ্য বস্তুতে পরিণত হয়। আর যখনই ২৬/২৭/২৮ জুলাই এর বাংলাদেশকে 'র' দেখতে পায় তখনই পিছু হটা শুরু করে। কারণ ভারত নিজেও এই অভ্যুত্থান তাদের ইতিহাসে দেখেনাই,অতএব কাশ্মীরি কায়দায় গনহত্যা আর কাশ্মীরি কায়দায় এরেস্ট করাটা কেবল কাশ্মীরেই মানায়,বাংলাদেশ কাশ্মীর নয়।

ঠিক এই ভাবেই হাসিনা স্বৈরাচার হয়ে উঠে,আর হারিয়ে যায় আওয়ামীলীগের মত প্রাচীন দল(বাংলাদেশে) তাহলে হাসিনা কি আওয়ামিলীগ কে রিপ্রেজেন্ট করেনাই? মোটেই না,মোটেই করেনাই। হাসিনা কেবল এই রাষ্ট্রের একক আধিপত্যের বিস্তার চেয়েছে,তার পেটোয়া বাহিনী,আর টাকা দিয়ে কেনা ছাত্রলীগ নামক কুলাঙ্গার সংগঠনের ব্যানারে টোকায় দিয়ে ছাত্ররাজনীতি ও তৃণমূলের রাজনৈতিক দখল করেছে। আওয়ামিলীগের এম্পি মন্ত্রীরা কখনো তাদের নিজ থেকে একটা কথা বলেনি,বলতে পারেনাই,হাসিনা শুধু বলেছে লোকে যাই বলুক,তোমরা শুধু অস্বীকার করে যাবা,যা বুঝার আমি বুঝব,লোকে হাসবে তোমাদের উপর? কি হইছে,হাসুক। তাতে কান দিবানা। আমার পক্ষে কথা বললে থাকবস না বললে অন্য কাউকে নিয়ে আসব। বিনিময় কি? বিনিময় হচ্ছে এই যে রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা পাচার,রাজনীতি অথবা এম্পি মন্ত্রীত্ব দিয়ে টাকা লুটপাট করার স্বাধীনতা।

এই যে একটা গনজোয়ার এই গনজোয়ার কে উপেক্ষা করার সময় কি হাসিনা পাবে? কোনভাবেই পাবে? মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের পরিবার,অধিকার,মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি এইসমস্ত গালগল্প দিয়ে যে দেশকে ষোলোবৎসর যাবত দমন পীড়ন করলো কখনো কি দেখেছেন এরা আসলেই কি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে? গনতন্ত্র মানে কি? গনতন্ত্রের পক্ষের শক্তির কাজ কি? স্বাধীনতার ডাক কেন এসেছিলো? আর গালগল্পের সময় নাই। এখন শুধু মিথ্যার ধ্বংস হবে সত্যর জয় হবে,স্বৈরাচারের পতন হবে মজলুমের বিজয় হবে। এই বিজয় হবে গ্রাম বাংলার কৃষকের,গলির মোড়ের মুচির,ইউনিভার্সিটির তরুণ শিক্ষার্থীদের,ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ দ্বারা লাঞ্চিত হওয়া নারীদের,রাস্তায় প্রকাশ্যে পেটোয়া বাহিনী দ্বারা লাঞ্চিত হওয়া সেই নারীর,ছাত্রলীগ নামক পশুর হাতে হত্যা হওয়া বিশ্বজিৎ এর,শিশু রিয়া'দের,মুগ্ধ,আবু সাইদ সহ সকল শহীদের৷ এই বিজয় কোন পশুর বিজয় নয়,এই বিজয় ফোনকলে থাকা কোন বড় ভাইয়ের নিয়,বন্দুক তাক করে নিরীহ মানুষকে হত্যা করা কোন পেটোয়া বাহিনীর নয়। এই বিজয় বাংলাদেশের,রক্তে ভিজে থাকা বাঙালির,কোন স্বৈরাচের নয়,কারোর বাপের নয়।

পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে...

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা আগস্ট, ২০২৪ রাত ৮:৫৭

ঋষি ভৃগু বলেছেন: ১৫ বছর ধরে গড়ে তোলা হাসিনার স্বৈরশাসন ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে রেজিমের পরিবর্তন হতে চলেছে এবার হয়তো অন্য কেউ ক্ষমতায় আসবে কিন্তু আমরা এক স্বৈরাশাসক থেকে অন্য স্বৈরাশাসক এর অধীনে চলে যাচ্ছি না তো? আমি মনে করি এই আন্দোলন শুধু রেজিম চেঞ্জের বিরুদ্ধে না হয়ে পুরো সিস্টেম চেঞ্জের বিরুদ্ধে হওয়া।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.