নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অশান্ত বাশিওলা

raselabe

তাই মনে হয় আমি বড় স্বার্থপর।

raselabe › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের টিকে থাকার গল্প

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০১

আমরা কি টিকে থাকবো, নাকি ধংস হয়ে যাবো? - এমন একটা শীতল সন্দেহ অনেক দিন্ ধ'রে ঘুরপাকা খাচ্ছে আমাদের মনে ;- ঠিক জানি না কতো কাল ধ'রে আমাদের মনে এ প্রশ্ন জেকে বসে আছে।সন্দেহটা যখন তখন আমার সরল বাবার মুখে উচ্চারিত হয়। এবং বাবার কাছে শুনেছি বাবার বাবা চাচা ও মুরবিরা মাঝেমধ্যে এই সন্দেহটা প্রকাশ করতেন। আমি যে সন্দেহটা শুধু বাবার মুখেই শুনি তা নয়। যে নাপিতে কাছে ছেলেবেলায় হাটুর ভেতর মাথা গুজে চুল কেটেছিলাম তার কাছেইও শুনেছি। শুনেছি প্রাইমারি স্কুলের হেডমাস্টারের মুখে। মাসে একবার তিনি থানায় শিক্ষা অফিসারের কাছে একটা বড় রুই মাছ নিয়ে যেতেন, ফিরে কয়েক দিন ধ'রে সন্দেহটা প্রকাশ করতেন। এমনকি জলকান্দা কিবা দই বিক্রি করতে আসাতো যে কালিপদ, তার মুখেও শুনেছি- এ জাতিটি আর টিকবে না। কোন সন্দেহ যখন ধারাবাহিক ওপ্রাগৈতিহাসিক হয়ে উঠে, তখন সেটা সম্পর্ক সন্দেহ করার কিছুই থাকে না, আমিও করি নি।
বাবা কোন কাজে গেলে ফিরে, রাগে ফেটে পরতেন। আর বলতেন এই শালার জাত আর টিকবে না; কোন জায়গায় টাকা ছাড়া কাজ হয় না। টাকা দিয়েও কাজ হয় না, শালার জাতের উপর গজব পড়বো। পারলে বাবা শালা সারাটি জাতের পাছায় বাশ ঢুকায়ে দিতেন। কিন্তু পারতেন না বলে ক'দিন একা একাই বলতে থাকতেন, এই শালার জাত আরর টিকবে না, এই শালার জাতটা শ্যাষ হইয়া গ্যাছে।
ছেলেবেলা থেকেই আমিও ভয়ের মধ্য্র ছিলাম- এ জাত আর টিকবে না, আমিও টিকবো না; স্কুল যাইতে পথেও ভয় হতো, নদীতে সাঁতার কাটতে কাটতে ভয় হতো; মনে প্রশ্ন জাগতো _যদি টিকেই না থাকি, যদি ধংস হয়েই যাই, তাহলে এতো পরিশ্রম করে কী লাভ ? আমি তাই গাছপালা পাখি মানুষ যাই দেখতাম তার দিকে তাকায়ে থাকতাম, আজো থাকি; দেখার চেস্টা করতাম, আজও করি, ধংস চারিদিক ছড়িয়ে পড়ছে কি না; আয়নায় নিজের মুখটিও আমমি মন দিয়ে দেখতাম- আমার মুখে ধংস কিভাবে কাজ করছে ।
টিকে থাকার বিভিন্ন আভাস ও অভ্যাসও দেখতে পাছিলাম। বাবার মুখে শুনেছি, গ্রামের পাশের নদীটি দুইমাইল ছিল,আজ তা নালা, বৃষ্টির পানিতে চাষাঃআদ হতো; আজ হয় না। তাহলে কি নদী বা আকাশে আগেই ধংস সশুরু হয়েছে?
একটা কথা কোথায় যেন শুনেছিলাম, সেটাই শেষ আশাটুকু জাগিয়ে রেখেছিল আমার মনে; কথাটি হচ্ছে প্রাণ টিকে থাকতে চায়, প্রাণ দুর্মর, সহজে হার মানে না, চারপাশ যেমন হয় প্রাণ তার সাথে নিজে কে টিকে রাখে। প্রাণ ধংস হ'তে চায় না, তার টিকে থাকার অদম্য শক্তি। এটাই বাঁচিয়ে রেখেছে আমাদের শেষ টিকে থাকার আশাটুকু। তা না হলে; এই অসভ্য, নোংরা পরিবেশে আমি টিকতাম না।আমাদের চার পাশ আজ নোংরা রাজনীতি,, প্রবাহমান ঘুষ চালানো, খুন, গুম, নারী কেলেংকারি; এক কথায় নষ্ট পরিবেশে টিকতাম না।
আমার বাবা চাচাবা তআদের বাবারা যে জাতের ধংস হওয়ার কথা বলেছিলেন, তা অনেক আগেই শেষ হয়ে হারিয়ে গেছে অনেক আগেই। আমি চার পাশে তাকিয়ে থেকেও হয়তো বুঝতেই পারি নি। নয়তো আমি নষ্ট হয়ে গেছি, ধংস হয়ে গেছি, হারিয়ে গেছি, এই নোংরা সমাজের অতল গহরে।
শুধু আমিই একা একা হারিয়ে যাইনি; আমার মত গগোটা জাতি হারিয়ে গেছে, গোটা সমাজ হারিয়ে গেছে। আমরা অনেক আগেই আমাদের মনশত্ব, মূন্যবীধ, বিবেগ, সব কিছু হারিয়ে ফেলেছি। তাই নয় কি ?

আমাদের চাতেপাশে টিকে থাকার আভাস পাওয়া যাচ্ছে খুব ভাল ভাবেই। ধান বা সরষে থেকে গাছ হতে দশ দিনের মত লাগে। আমারা ছোটবেলায় সেই সরষের হলুদ ফুল দেখে খুশি হতাম। কিন্তু একবার এক কান্ড হলো ;মাস খানেক কেটে গেল গাছার গজাচ্ছিল না, আমি আর আমার বাবা তো হত্যাশহয়ে পড়ি, কিন্তু মাস দুয়েক পর গাছ গজালো অবশেষে। কিন্তু সেই গাছে দেখলাম কাটা যুক্ত।কালো, কাটায় ভরা সরিষা গাছ আগে কখনো দেখিনি;সেবার দেখে অবাক হলাম, কিন্তু সুখি হলাম যে গাছ তো গজিয়েছে। প্রাণের টিকে থাকার অসীম শক্তি, প্রাণ অপ্রতিরোধ্য। কালো কাটায় ভরা গাছে কালো ফুলে অন্ধকার হয়ে গেল মাঠ, অপেক্ষায় থাকি কবে ফুল গুলো হলুদ হয়; কিন্তু সে আশা আর পূর্ণ হলো না।আমরা গোলাপ দেখি কিন্তু পরের প্রজন্মকে দেখায়ে পারবো কিনা জানি না। হয়তো তারা সরষে ফুল দেখেই হয়তো খুশি হতো কিন্তু তারা তো আর হলুদ ফুল পাবে না, তারা যানবে কালো সরষে ফুল।
এভাবেই আমরা ধান বুনে ভয়ে থাকি চারা গজায় কিনা। কিন্তু অবশেষে ধান থেকে চারা গজালো। আর আমরা আমরা ভয় পাই ও সুখি হই, যে ধান তো গজিয়েছে।
কয়েক দিন আগে ঘরে ফিরে দেখি আমার পোষা বিড়ালটাকে দেখিতে পাই না;দেখি সামনে দাড়িয়ে আছে একটা হায়েনা। ইদুর গুলো বেশ হিংস্র হয়ে উঠেছিল।আমি ভয়ে ঘর থেকে বাহিরে যাই,কিন্তু অবাক করার মত সেই হায়েনা,;তারিয়ে আসছে না, সে আমার কাছে এসে মিউ মিউ করে ডাকার চেস্টা করছে। মিউ কর ডালতে পারে না সে। আমি বলি বিড়াল তুমি টিকে আছো?
ভিড়াল হা হা হা করে উঠে, আমি সুখি হই,আমার বিড়াল টিকে আছে।
আমাদের দ্রশ জুরে এভাবেই চলছে টিকে থাকার উতসব। তেলাপোকা গুলো কচ্ছপ আর কেঁচোরা সাপ হয়ে উঠেছে,তারা হনা তুলতে পারে।
সৃষ্টির সেরা জীব মানুষের মাঝেও চলছে টিকে থাকার উতসব। সবাই যখন টিকে আছে শুধু তাদের রুপ বদল করে; আর আমরা কি ধংস হতে পারি?? দু'একটি উদাহরণ দিলেই বুঝতে পারবেন, জানতে পারবেন আমাদের টিকে থাকার পরিচয়।
আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী টিকে আছে জৈব অস্ত্র ব্যাবহার করে। সমাজ বিরোধীদের সাথে তারা পেরে উঠছেন না, তাই বলে কি তারা টিকে থাকবে না? তা হতে পারে না;প্রাণ অপ্রতিরোধ্য, টিকে থাকতেই হবে। তারা বদলে যেতে লাগলো।তাদের মুখের দুই দিকে দুটি বাকানো দাত বেরিয়ে গেল; আর কাদা দেখলেই তারা মোটর সাইকেল নিয়েই গরাগরি খেয়ে নিচ্ছে। টিকে তাদের হবেই। তবে তাদের বড় পরিবর্তন হলো তাদের দু'উরুর মাঝখানে। যে প্রল্পম্বিত বস্তু,যা বংশ বিস্তারের কাজে আসে। একদিন এক শৃঙ্খলাবাহিনীর নেতা দেখলা তা অই বস্তু দিয়ে আর তরল বের হচ্ছে না। ট্রেনগানের মত গুলি ট্র ট্র করে বের হচ্ছে। কিন্তু সেই বস্তু স্থির তাহতে চায় না। সেই অস্ত্রটি তারা মেয়েদের দুই উরুর মধ্যে চালবা করে গুলি করতে থাকে। কিন্তু আমাদের রাস্ট্র নায়রা খুশি হয়। যে তাদের শৃঙ্খল বাহিনী তো টিকে আছে আর দেশে শান্তি ফিরে এসেছে।
আমাদের জাতীয় সম্পদ কেরানীমন্ডলী, মনে হয় ধংসের মুখমুখি এসে দাঁড়িয়েছিলেন; আমরা ভয় পাছিলাম,তারা আর মবে হয় টিকবে না, লুপ্ত হয়ে যাবে। কিন্তু না প্রাণের অদম্য প্রাণ শক্তি। তারা নিজেদের কে পরিবেশের সাথে খাপখাইয়ে নিয়েছেন। তারা বিরাট বিরাট গিরগিটি রুপ ধারন করেছে। তাদের মস্তবড় জিব গজিয়েছে। তারা অফিসে চেয়ারে বসে ঝিনাতে থাকে, আর যেই না আমরা অফিসে পা দেই। অমনি তাদের জিভ কলকল করে উঠে;আমাদের পকেটে যা কিছু আছে সব তারা শুসে নায়। এভাবেই এও কেরানীমন্ডলী টিকে আছে পরিবেশের সাথে খাপখাইয়ে।প্রান যে অদম্য তার প্রমাণ এটি।
নদী আর সুমুদ্রের কুমির শ্রেণী আজ লুপ্ত হয়ে ড়াঙায় জন্ম নিয়েছে। আমাদের রাজনীতি নেতারা আজ কুমির শ্রেণী ভুক্ত। সামনে যা পায় তাই গোগ্রাসে গিলে ফেলে। কিন্তু তারা গিলে খাওয়ার আগে পরে কিছুটা অশ্রু বিসর্জন করে। এরা আজ মস্তবড় গিরিগিটি রুপী কুমির যখন যে অবস্তা দেখে সে ভাবে তাদের রং বদল করে। এভাবেই তারা টিকে আছে।
আরও আছে আমাদের আগের দিনের পন্ডিত শ্রেনী। আমরা ভয়ে ছিলাম তারা মনে পরিবেশেরর সাথে মানিয়ে নিতে পারবে না; কিন্তু নআ তাদেরব আছে প্রাণ শক্তি, টিকে আছে তারা। তারা শুধু তাদের নাম বদল করেছে। তারা আজ বুদ্ধিজীবী নামে আমাদের সমাজে টিকে আছে। তাদের আর আগের মত মস্তিষ্ক নাই আছে শুধু গলা আর সুউচ্চ কন্ঠ। তারা সে কন্ঠ দিয়ে আজ সমাজে টিকে আছে, মস্তিকের তাদের আর দরকার হয় না।

আর বেশি কিছু বল্লাম না। অনেক বলেছি। এথেকেই আপনারা আরও অনেক উদাহরন খুজে নিতে পারবেন যে; কোন প্রজাতি বা আজ কি ভাবে পরিবেশের সাথে খাপখাইয়ে, তাদের টিকিয়ে রেখেছে।
আমি ভেবেছিলাম নারী জাতি হয়তো টিকবে না কিন্তু তারাও আজ টিকে আছে।; তাদের আর সেই কমলতা নেই। তারাও পরিবেশের সাথে মানিয়্র নিয়েছে।

আজ আমরা খাপখাইয়ে নেয়া জাতিতে পরিনত হয়ে পড়েছি আমাদের নিজেদের বলে আর কিছু নেই। আমারা বেচে থাকার জন্যে যেকোন রুপ ধারন করতে সক্ষম।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:০২

দেবজ্যোতিকাজল বলেছেন: র্পথিবীটা এভাবেই চলবে ,কেননা পৃথিবীর অনেক বয়স হয়েছে তো:D:D:D

২| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:০১

raselabe বলেছেন: দারুন বলেছেন,,,,,

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.