নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

...............

শ্রাবণধারা

" আমাদের মতো প্রতিভাহীন লোক ঘরে বসিয়া নানারূপ কল্পনা করে, অবশেষে কার্যক্ষেত্রে নামিয়া ঘাড়ে লাঙল বহিয়া পশ্চাৎ হইতে ল্যাজমলা খাইয়া নতশিরে সহিষ্ণুভাবে প্রাত্যহিক মাটি-ভাঙার কাজ করিয়া সন্ধ্যাবেলায় এক-পেট জাবনা খাইতে পাইলেই সন্তুষ্ট থাকে......."

শ্রাবণধারা › বিস্তারিত পোস্টঃ

চাকুরি জীবন - যখন দেয়ালে পিঠ

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:৩৮



ছাত্রজীবনে জীবনের দুঃখ কষ্ট সম্পর্কে তেমন ধারণা ছিল না। সমাজ বদলে ফেলার সূক্ষ বৈজ্ঞানিক ও গভীর দার্শনিক তত্ত্ব নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম, জীবিকা অর্জনের মত মোটাদাগের বিষয়গুলো নিয়ে ভাববার সময় ছিল না। আমাদের ছাপোষা সংসারে প্রতিদিনের জীবনযুদ্ধ, দেনাপাওনার হিসাব, ছোটখাট সুখ দুঃখ আর ভবিষ্যতের ভাবনা, মার্ক্সের বস্তুবাদ থেকে হেইজেনবা্র্গের অনিশ্চয়তাবাদ পর্যন্ত কঠিন সব তত্ত্ব দিয়ে একরকম মাটি চাপা দিয়েছিলাম। বস্তুবাদের বস্তুটা নিজের জীবনে কোথাও খুঁজে না পেলেও এবং আমার ভবিষৎ অনিশ্চয়তাবাদের বড় উদাহরণ হয়ে দাঁড়ালেও, শুধুমাত্র "বাদ" গুলোকে পুঁজি করে আজিজ মার্কেট থেকে সাহিত্যকেন্দ্রের ছাঁদ গরম করে রেখেছিলাম। উঠতি চিন্তাবিদ ও দেশ সেবকদের সাথে গভীর জ্ঞান আলোচনায় অংশ নিয়ে নিজেকে নব্য আঁতেলদের জায়গায় মোটামুটি প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ভিত্তিক ক্ষুদ্র পড়ালেখা অনেক আগেই ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছিলাম। পরীক্ষার হলে গিয়ে সময় নষ্ট করার মত সময় আমার বেশি ছিলনা। যতটুকু সময় পেতাম পাবলিক লাইব্রেরী বা ব্রিটিশ কাউন্সিলে গিয়ে মনীষীদের লেখা পড়ে জ্ঞান সাধনায় নিজেকে ব্যস্ত রাখতাম। মনে মনে নিশ্চিত ছিলাম পৃথিবীতে বড় কোন কাজের জন্য এসেছি, বিশ্ববিদ্যালয় পাশ দিয়ে কেরানীগিরি করা আমার কর্ম নয়।

দার্শনিক তত্ত্বের সাথে সংসার তত্ত্বের বড় পার্থক্য এই, সংসার তত্ত্ব আদ্যোপান্ত খুব স্থূল এবং নিরস একটা বিষয়। ওটা বোঝার জন্য তেমন বুদ্ধির দরকার হয়না, বরং বুদ্ধি থাকলেই তা বুঝতে দেরি হবার সম্ভাবনা। দেখবেন, যাদের বুদ্ধি বিত্ত নেই, তারা খুব তাড়াতাড়ি সংসারের নিয়মগুলো বুঝে নিয়ে অল্প বয়সে সংসারের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে। আপনার যদি উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া অনেক ধন-সম্পদ বা ব্যাংকে জমানো টাকা না থাকে, তাহলে খুব সম্ভব জীবনধারণের জন্য আপনাকে শ্রম বিক্রি করতে হবে। আপনাকে একটা কিছু দিতে হবে, যার বিনিময়ে মাস শেষে আপনি কিছু টাকা পাবেন। সেই টাকায় আপনি বাড়িভাড়া শোধ করবেন, সপ্তাহের বাজার করবেন, বাচ্চার দুধ ও ডায়পার কিনবেন, মাকে ডাক্তার দেখাবেন, বিবাহ বার্ষিকীতে বা জন্মদিনে বউকে কোন একটা উপহার কিনে দেবেন, তবে এর চেয়ে বেশী কিছু নয়। আপনার যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই একটা পাশ দেওয়া থাকে, তাহলে জীবিকার বিনিময়টা হবে আপনার সময়ের সাথে। নিজের পুরো সময়টাকেই দিয়ে দিতে হবে বেচেঁ থাকার নিতান্ত প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো জোগাড় করবার বিনিময়ে।

চাকুরীতে ঢোকার আগে আমার সময়গুলো ছিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, পাবলিক লাইব্রেরী, বন্ধুদের আড্ডা, কবিতার খাতা, সাহিত্য আর দর্শনের পাতায় পাতায় ছড়ানো। শীতের শেষে শাহবাগ মোড়ে অশ্বথ গাছের জেগে ওঠা নতুন পাতায় বাতাসের আন্দোলন তখনও মনকে গভীর ভাবে ছুঁয়ে যেত। ক্যাম্পাসের বুড়ো আমগাছের পাতার ফাঁক দিয়ে ঝড়ে পরা সূর্যের আলোয় জীবনকে যতটুকু দেখতে পেতাম, সেটা নিয়ে সুখী ছিলাম। হয়ত বিরক্তিকর আঁতেল আঁতেল দুর্গন্ধ একটু ছিল, কিন্তু মোটের উপর জীবনকে ভালোবাসতাম। চাকুরিতে ঢোকার পর জীবনের ছকটা পাল্টে গেল। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই অফিস, অফিস থেকে বাসায় ফিরে ঘুম, পরদিন আবার অফিস। দিনের পর দিন একই একঘেয়ে রুটিন। ছাত্র জীবনে নিজের পরিচয়টা ঠুনকো ছিল না। চাকুরিতে ঢোকার পর আসল পরিচয় টের পেলাম। বুঝলাম, আমার আগের পরিচয়গুলো ক্ষণস্থায়ী ছিল, আমার আসল পরিচয়- আমি মুরগির খামারের কর্মচারী। অনেকদিন অসাধারণ হওয়ার মিথ্যা ভান করেছি। যতদিন জীবিকা অর্জনের মত কঠোর বিষয়গুলো নিয়ে ভাবনা ছিলনা, ততদিন শখের থিয়েটারে উঠতি বুদ্ধিজীবীর চরিত্রে অভিনয়টা মোটামুটি ভালই করছিলাম। মুরগির খামারের কর্মচারী হয়ে যেদিন থেকে জীবিকা শুরু করলাম, সেদিন বুঝলাম পৃথিবীটা ঠিক যেমন খুশি তেমন সাজার জায়গা নয়। আর আমার জন্য নব্য আঁতেলের পার্ট নয়, ভাগ্য বিধাতা অতি তুচ্ছ চাকরিজীবীর চরিত্রে অভিনয়ের পাট ঠিক করে রেখেছিলেন। ছাপোষা বেতনভুক্তদের দলে নিজেকে আবিস্কার করে দেখলাম, আমাদের ভাগ্য দার্শনিক তত্ত্বের উপর ততটা নয়, নির্ভর করে মুরগির ডিম পাড়ার মত সামান্য সব বিষয়ের উপরে।

এখানে থাকতেই জেনেছিলাম মুরগির সব ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানো যায় না, শুধুমাত্র যে ডিমগুলো সুদৃশ্য ও সুআকৃতির, সেগুলো থেকেই বাচ্চা হয়। যেসব মাসে খামারের মুরগিরা বেঢপ আকৃতির ডিম বেশি পাড়ত সেই মাসগুলোতে আমাদের মালিকদের মেজাজ খুব খারাপ থাকতো। আমরা তখন চেষ্টা করতাম তাদের সামনে না পড়তে বা তাদের সাথে কোন রকম কথা না বলতে। আমাদের দিনগুলো শুধু নয়, আমাদের বেতন বোনাসও নির্ভর করতো মুরগীর ডিম পাড়ার উপরে। প্রত্যেক ঈদের আগে আগে আমরা প্রার্থনা করতাম, অন্তত এই মাসটা যেন মুরগিরা সুআকৃতির ডিম বেশী পাড়ে। তবে সবসময় মুরগিদের নিয়মমাফিক ডিমপাড়া আমাদের ভাগ্যকে সমূহ বিপদের হাত থেকে রক্ষা করতে পারতো না। ক্ষুদ্র মানুষের জীবন ছোট বড় বহু দেবতার হাতে বাঁধা। কোন দিক থেকে কখন যে কোন দেবতার বিষ নিশ্বাসে নিশ্চিহ্ন হবো সেটা আগে থেকে ধারণা করা অসম্ভব। সে বছর আমাদের জন্য বার্ড ফ্লু নামক নতুন এক অভিশাপ অপেক্ষা করছিল। মুরগীর খামারগুলো একটার পর একটা এই রোগের জীবাণুতে ছেয়ে গিয়েছিল। বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়লে রাতারাতি অনেক মানুষের ভাগ্যে বিপর্যয় নেমে এল। সবরকমের চেষ্টা সত্ত্বেও আমাদের খামারের একটা অংশে বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়ল। মালিক পক্ষ থেকে কারখানার শ্রমিক সকলে ঝাঁপিয়ে পরলো আক্রান্ত না হওয়া মুরগিগুলো রক্ষা করতে। সকলের নিরলস চেষ্টায় কমাস পরে একটা সময়ে বার্ড ফ্লু নিয়ন্ত্রণে এল, কিন্তু ঠিক তখনই আমাদের জীবনে সত্যিকারের মহামারী দেখা দিল। মালিক পক্ষ থেকে নোটিশ এল, অনিবার্য কারণ বশত তারা লোক ছাটাই করতে বাধ্য হচ্ছে। সাথে সাথে কাউকে ছাটাই করা হল না, তবে আমাদের ছাত্র এমডি জানালেন, ধাপে ধাপে কাজটা করা হবে, আমরা যেন প্রস্তুত থাকি। বার্ড ফ্লু শুরু হবার পর থেকে আমাদের বেতন বোনাস বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। নেহায়েত হিসাব বিভাগে কাজ করতাম বলে ম্যানেজারকে বলে কয়ে কিছুদিন পরপর বেতনের টাকা অল্প অল্প করে তুলতে পারতাম।

সপ্তাহখানেক পরে একদিন অফিসে এসে শুনতে পেলাম আমাদের এইচ আর বিভাগের দুজনকে বিদায় করে দেওয়া হয়েছে। এইচ আর বিভাগে দুজন লোকই কাজ করতেন - একজন ম্যানেজার আর একজন তার সহকারী। এই সহকারীর সাথে আমার সুসম্পর্ক ছিল। আমরা প্রায়ই একসাথে বাজারের দিকটায় একটা খুব ছোট হোটেলে দুপুরে ডিম পরাটা খেতে যেতাম। মিয়া উদ্দিন আমাকে ডেকে বললেন, এবার আমাদের দুইজনের পালা, আমি কোন ব্যাবস্থা করেছি কি না। আমি তখনও কোন ব্যাবস্থা করতে পারিনি। বন্ধু বান্ধবকে চাকুরীর কথা বলে রেখেছিলাম। কিন্তু কারও কাছ থেকে কোন খবর পাচ্ছিলাম না, বরং কেউ কেউ তখন আমার ফোন ধরা বন্ধ করে দিয়েছিল। এখানে চাকরিতে ঢোকার পর থেকে সুযোগ পেলেই বিভিন্ন জায়গায় চাকুরির দরখাস্ত করতাম। ফলাফল এই ছিল যে, প্রায় প্রতি শুক্রবারই সকালে আমাকে ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায়, ব্যাংকের বা অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে চাকুরির লিখিত পরীক্ষা দিতে যেতে হত। এর ফলে সদরঘাট থেকে মিরপুর পর্যন্ত বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও তাদের শিক্ষকদের সম্পর্কে আমার সাধারণ জ্ঞান অসাধারণ ভাবে বেড়ে গিয়েছিল।

একদিন আমার এক বন্ধু ফোন করে জানালো, তার এক পরিচিত ভাই হিসাব বিজ্ঞানের একটা বিষয় পড়ার জন্য শিক্ষক খুঁজছেন, আমি তাকে সময় দিতে পারবো কি না। ছাত্র জীবনের পুরোটা সময় গৃহশিক্ষকের কাজ করেছি। নিরুপায় হয়ে আবার শুরু করতে হল। আমার এই ছাত্র মারুফ ভাই আমার চেয়ে বছর পাঁচেকের বড় ছিলেন। ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ দিয়ে ভাল একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করতেন, পাশাপাশি রাতের ক্লাসে এমবিএ করছিলেন। তার এমবিএ তখন প্রায় শেষের দিকে। কিন্তু হিসাব বিজ্ঞানের একটা বিষয়ে ফেল করায় তিনি কোন একভাবে এ যাত্রায় তাকে উদ্ধারের জন্য মাস্টার রেখেছিলেন। মারুফ ভাইয়ের বাসা আমাদের এলাকাতেই ছিল। শুক্র, শনিবার দুটো দিন সন্ধ্যায় তাকে পড়াতে যেতাম। আমাকে প্রথম দিন তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, হিসাব বিজ্ঞানের ঐ বিষয়ে কোন একভাবে একটা "সি" পেলেই তার চলবে। আমার কাজ তাকে শুধু "সি" পাওয়াতে সাহায্য করা। জীবনে বহু মাস্টারি করেছি, সবখানেই ছাত্র ছাত্রী থেকে অভিভাবক সবাই ছিল এ প্লাসের দাবীদার। জীবনে সেই প্রথম একজন ছাত্র পেয়েছিলাম যার চাওয়া নেহায়েত একটা "সি"। তবে মারুফ ভাইকে পড়ানো শুরু করার কিছুদিনের মধ্যেই বুঝলাম, তার লক্ষ্যটা বেশ বিবেচনাপ্রসূত হলেও ঠিক বাস্তবসম্মত নয়। বাস্তবে দেখা গেল আমার ছাত্র শিক্ষকের চেয়ে হাজারগুন বেশি ব্যস্ত। আমার পড়ানোর সময় থাকলেও তার পড়া বোঝার সময় নেই। মারুফ ভাই তখনো বিয়ে করেননি, তবে সুযোগ্য পাত্রীর সন্ধানে ছিলেন। প্রতিদিনই পড়া শুরু করার পনের বিশ মিনিট পরেই পাশের ড্রইং রুম থেকে ল্যান্ডফোন বেজে উঠত। মারুফ ভাই পাশের রুমে গিয়ে ফোন ধরে কিছুক্ষণ পরে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠতেন, আমার একটু দেরি হবে তুমি নেট ব্রাউজ করতে থাকো, আমি আসছি। আমি বসে বসে বিডি জবসের সাইটে ঢুকে চাকুরির দরখাস্ত করতাম অথবা সিভি পাঠাবার ঠিকানা কাগজে লিখে নিতাম। অনেকক্ষণ পরে কথা শেষ করে মারুফ ভাই ফিরে এসেই বলতেন:

- হ্যা বল, এই অংকটা যেন কিভাবে করতে হয়?

আমি তাকে নতুন করে বুঝাতে শুরু করলে প্রথম চার পাঁচ মিনিট তিনি অত্যন্ত মনযোগ দিয়ে শুনতেন, তারপর বলে উঠতেন:

-নাহ, আজকে বাদ দাও, আজকে আর ভাল লাগছে না। কাল থেকে ভাল করে শুরু করতে হবে। চল বের হই, তোমাকে এগিয়ে দেই..

মারুফ ভাই বাসায় সিগারেট খেতেন না, আমাকে এগিয়ে দেয়ার অর্থ বাইরে গিয়ে হাঁটাহাটি করতে করতে সিগারেট খাওয়া।

ওদিকে আমার অফিসের পরিস্থিতি দিনকে দিন আরও বেশী খারাপ হতে শুরু করেছিল। একদিন অফিসে গিয়ে দেখতে পেলাম আমাদের মিয়া উদ্দিন, যে অত্যন্ত পরিপাটি হয়ে অফিসে আসেন এবং চামড়ার স্যান্ডেল পড়ে শার্ট ইন করে রাখেন, তার মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি আর শার্ট ইন ছাড়া। হঠাৎ তাকে দেখে মনে হল, হয়ত কোন কারণে তার প্যান্টের জিপার নষ্ট হয়ে গেছে, আর এ কারণেই তাকে নার্ভাস দেখাচ্ছে। ডেস্কে বসে অনেক রকম কানাঘুষা শুনতে পেলাম, কিন্তু কেউ পরিষ্কার করে কিছু বললো না। দুপুরের পর আমাদের ছাত্র এমডি তার অফিসে আমাকে ডাকলেন। সেদিন থেকেই আমাকে তিনি মিয়া উদ্দিনের কাজগুলো বুঝে নিতে বললেন। একাজে আমাকে এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হল। জানিয়ে দিলেন, এই সময়ের মধ্যে কাজ বুঝে নিতে না পারলে আমাকে বিদায় করে দেওয়া হবে, ব্যাপারটা আমি যেন সিরিয়াসলি নেই। মিয়া উদ্দিনকে কবে নাগাত বিদায় করে দেওয়া হবে এই প্রশ্ন করার সাহস পেলাম না, মাথা নিচু করে ডেস্কে ফিরে এলাম। সেদিন মিয়া উদ্দিনের সাথে কোন কথা হল না, চুপচাপ ডেস্কে বসে থেকে দিনটা কাটিয়ে দিলাম। চাকুরি-জীবনে সেদিনই প্রথম, সন্ধ্যায় মিয়া উদ্দিন আমার আগে অফিস থেকে বের হলেন। আমার মনে পড়ল, একদিন কি একটা কাজে মিয়া উদ্দিনের মোবাইলে ফোন করলে তার স্ত্রী ফোন ধরেছিলেন। পরিচয় দিতেই ফোনের অপর প্রান্ত থেকে শান্ত সুমিষ্ট গলায় তিনি বলছিলেন যে আমার কথা তিনি অনেক শুনেছেন। মিয়া উদ্দিন তার বাসায় আমার গল্প করতে পারেন এটা ভাবিনি, খুব আবাক হয়েছিলাম। ফোনে কথা বলার সময় থেমে থেমে এক ধরণের চিৎকার শুনতে পেয়েছিলাম। পরে বুঝেছিলাম, মিয়া উদ্দিনের ছেলে চিৎকার করে পড়া মুখস্ত করছে। ক্লাস সিক্স বা সেভেনে পড়ত তখন তার ছেলেটা। পরদিন সকালে মিয়া উদ্দিন আমাকে ডাকলেন। জানালেন, ম্যানেজমেন্ট তাকে এক মাসের নোটিস দিয়েছে, আমি যেন তার কাছ থেকে সব কাজ বুঝে নেই। তার কাছে কি কাজ বুঝে নিয়েছিলাম আজ আর তা মনে নেই। তবে মনে আছে, মিয়া উদ্দিনের ডেস্কের উপরে পড়ে থাকা রাশি রাশি ফাইল একটার পর একটা আমার ডেস্কের উপরে জড় হয়েছিল। এইসব স্তূপাকৃত ফাইলের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আমি নিজেকে ঘৃণা করতে শিখেছিলাম।

মিয়া উদ্দিন ওখান থেকে চলে যাবার পর আমার মন ঐ অফিস থেকে উঠে গিয়েছিল। আরেকটা কোন চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছিলাম, কিন্তু কোথাও সুবিধা করতে পারছিলাম না। একদিন পত্রিকার পাতায় ওয়াক-ইন ইন্টারভিউয়ের বিজ্ঞপ্তি দেখে সিভি নিয়ে ভুতের গলির একটা অফিসে গেলাম। ওটা যে মিষ্টির দোকানের অফিস সেটা জানা ছিল না, ভেবেছিলাম হয়ত ভাল কিছু হবে। ওয়েটিং রুমে আরও প্রায় জনাবিশেক চাকরি প্রার্থীর সাথে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বসে ছিলাম। বিকেলের দিকে কেউ একজন এসে জানালেন, সেদিন আর ইন্টারভিউ হবে না, পরেরদিন আসতে বললেন। উপায় না দেখে একদিন আমাদের এলাকায় যে গার্মেন্টস গুলো আছে সেখানে খোঁজ নিয়ে তাদের হেড অফিসে দেখা করে এলাম। কেউ খুব একটা আশা দিল না, তবে সিভি রেখে যেতে বলল। একদিন ফোনে যোগাযোগ করে পল্টনের এক হোটেলে গেলাম কানাডিয়ান এক ইমিগ্রেশন ল-ইয়ারের সাথে দেখা করতে। তার সাথে দেখা করে ফটফট করে ভুল ইংরেজীতে অনেক কথা বলে এসেছিলাম, যদি কোন একভাবে কানাডা যাওয়ার ব্যাবস্থা হয়।



একদিন মারুফ ভাইকে পড়াতে গিয়েছি, তিনি বললেন তাদের অফিসে একটা জব সার্কুলার হয়েছে, ফাইন্যান্সে লোক নেয়া হবে, আমি আগ্রহী হলে যেন সিভি পাঠাই। তখন আমি যে কোন সুযোগ পেলেই সর্বশক্তি নিয়ে লাফিয়ে পড়তাম। সুযোগটা আমার যোগ্যতায় কুলোবে কিনা সেটা বোঝার ক্ষমতা ছিলনা। আমার দ্বারা ঠিক কোন কাজটা হবে আর কোনটা হবেনা বুঝতে পারতাম না। বন্ধুবান্ধব, সহপাঠীদের সাথে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ে নিজের উপর বিশ্বাসটা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, নিজের অজান্তেই হীনমন্যতায় ভুগতাম। ভাল কোন কোম্পানিতে চাকরির চেষ্টা আগে কখনো করিনি। আসলে সাহস করেই উঠতে পারিনি। আমার এক বিশেষজ্ঞ সহপাঠির কাছে শুনেছিলাম, মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করতে হলে নাকি অনেক স্মার্ট হতে হয়। আজিজ মার্কেট আর সাহিত্য কেন্দ্রে ঘোরাঘুরি করে আমার চেহারা হয়ে উঠেছিল গ্রামের কলেজের বাংলা বা দর্শনের শিক্ষকদের মত, অতএব স্মার্ট ও সুদর্শনাদের সাথে প্রতিযোগিতায় দাঁড়াতে পারবো ভাবিনি। মারুফ ভাই আমাকে সাহস জোগালেন, আমার সিভিও দেখে দিলেন।

কিছুদিন পরে একদিন সত্যি সত্যি মারুফ ভাইয়ের কাছ থেকে ধার করা টাই গলায় চাপিয়ে আমি সেই অফিসে ইন্টারভিউ দিতে গেলাম। স্মার্ট এবং সুদর্শনাদের সাথে চাকরির পরীক্ষায় অংশ নেয়া উপলক্ষে এলিফেন্ট রোডের দোকান থেকে নতুন জামা জুতো কিনেছিলাম। তবে নিজের পছন্দ অনুসারে নয়। মনে ভয় ছিল নিজের পছন্দের জামা কাপড়ে যদি আমাকে গ্রামের কলেজের মাস্টারের মত দেখায়। তাই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ফ্যাশন সচেতন পাড়ার এক ছোট ভাইকে সঙ্গে করে দোকানে গিয়েছিলাম। অনেক খোঁজাখুঁজি আর দামদস্তুর শেষে তার পছন্দ মত এক্সিকিউটিভ সাজের পোষাক কিনেছিলাম। সময়টা ছিল বর্ষাকাল- ঢাকা শহরের রাস্তা কাদা পানিতে একাকার। নতুন জুতো পায়ে দিয়েছিলাম ঠিকই, কিন্তু রাস্তার কাদা আমার আসন্ন অভিসারের খবর জানতো না বলে, জুতো জোড়াকে কোনভাবেই বাঁচাতে পারছিলাম না। পকেটে পর্যাপ্ত টিস্যু পেপার নিয়েছিলাম। কিছুক্ষণ পরপর লোকচক্ষুর আড়ালে টিস্যু পেপার ঘসে ঘসে জুতো সাফ করছিলাম। গুলশানে সেই অফিসে ঢোকার আগে ফুটপাতের চায়ের দোকানে দাড়িয়ে আরও একবার পানি দিয়ে ভাল করে জুতো জোড়া পরিষ্কার করে নিলাম। সিকিউরিটি ডেস্ক পার হয়ে বুকে ব্যাচ ঝুলিয়ে অফিসের রিসিপশনে ঢুকলাম। জমকালো সুসজ্জিত অফিস। দেয়ালে কারুকার্যময় নকশিকাঁথা ঝুলছে। আমার আগে থেকেই কয়েকজন খুব সপ্রতিভ ছেলে মেয়ে রিসিপশনের সোফায় বসে নিজেদের মধ্যে কথা বলছিল। তাদের চেহারায় প্রবল আত্মবিশ্বাসের ছাপ, চোখ মুখ থেকে ঠিক মেধার দ্যুতি বের না হলেও হাবে ভাবে চৌকষ ভঙ্গি। তাদেরকে দেখে আমি একটু ভয়ই পেয়ে গেলাম। রিসিপশন ডেস্কের পুতুল চেহারার, মাখন শরীরের মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে ঈষৎ তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বললেন, "কি? ইন্টারভিউ ?" কথা শুনে মনে হল বাংলায় কথা বলে তিনি অভ্যস্ত নন, নেহায়েত আমার মত খাস বাংলা চেহারার কাউকে দেখে ইংরেজিতে প্রশ্ন করাটা সমীচীন মনে করলেন না। তার কাছে আগে থেকেই প্রার্থীদের নামের তালিকা ছিল। মনে ভয় ছিল আমার নামটা যদি লিস্টে না থাকে, তারা যদি ইতিমধ্যে জেনে যায় আমি একটা গেঁয়ো ভুত, ইংরেজিতে ভাল করে কথা বলতে পারিনা পর্যন্ত। কিন্তু দু তিনটা নামের পরেই আমার নাম খুঁজে পাওয়া গেলে স্বস্থি বোধ করলাম। সৌখিন কেতাদুরস্ত পরিবেশ এখানে, সব কিছু উজ্জ্ব্বল, পরিপাটি আর গুছানো। অনেকদিন এধরনের পরিবেশের সাথে আমার সম্বন্ধ নেই। সেকারনেই বোধহয় মনের মধ্যে কেমন অস্বস্তি বোধ করছিলাম। রিসিপশন ডেস্কের এক কোনায় সুন্দর করে সাজানো ফুলের তোড়া - আমাদের দেশী নয়, সবই বিদেশী ফুল। আমি অনেকক্ষণ তাকিয়ে থেকেও বুঝলাম না, ফুলগুলো আসল নাকি নকল। এখান থেকে কয়েক হাত দূরেই ময়লা কাদার আবর্জনাময় ঢাকা শহর- সেখানে মানুষের প্রচণ্ড ভিড়ে, গাড়ির হর্ণের বিকট শব্দে, কর্কশতায় সকাল থেকেই শুরু হয়েছে লক্ষ মানুষের বেঁচে থাকার আর্তনাদ। এই কাচে ঘেরা অফিসে মানুষের আর্তনাদ নেই। বাইরের নিষ্প্রভ পৃথিবীর সাথে তুলনা করলে এখানে সব কিছু বড় বেশী রকমের উজ্জ্বল, সৌখিন, প্রাণবন্ত। স্বচ্ছ দরজার ওপারে এই অফিসে চাকরি করা লোকদের দেখতে পাচ্ছিলাম। তাদের আত্মবিশ্বাসী আচরণ, নির্ভার কথা বলার ভঙ্গি, উচ্চস্বর হাসি, পোষাকে চেহারায় সাচ্ছন্দ্যের ছাপ দেখে আমার খুব লোভ হল। মনে পরলো, সেমাসে তখনও বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারিনি। মাসের অর্ধেকেরও বেশী পার হয়ে গেছে কিন্তু তখনও বেতন পাইনি, কবে পাব তাও জানিনা। ছোট বোনের এইচএসসি পরীক্ষার ফর্ম ফিলাপের তারিখ দিয়েছে। পরীক্ষা শেষ হলে বোনটাকে ঢাকায় এনে কোচিংএ ভর্ত্তি করাতে হবে, সেও অনেকগুলো টাকার ব্যাপার। এই চাকুরিটা যদি কোনভাবে পেতাম তাহলে ভাবনা ছিলনা। আম্মাকে নিয়ে আমরা তিন ভাইবোন ঢাকায় একসাথে কোথাও বাসা ভাড়া নিয়ে বেশ থাকতে পারতাম। মনে পড়লো, আমি অনেকদিন প্রাণ খুলে হাসি না, অন্যকেও হাসাতে পারিনা। আমার শুঁকনো মুখের দিকে তাকিয়ে আমার মায়ের চোখে শুধু জল আসে, হাসি ফোটে না। বোনদের সাথে আমি শুধুই বেঁচে থাকার কঠিন বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলি। রসিকতা করে কিছু একটা বলতে গেলে তা ঠিক পুরনো দিনগুলোর মত জমে না। মাস গেলে পাওয়া বেতনের অংকটা এত বেশী ব্যাবধান তৈরি করে জীবনে, আশ্চর্য.........!

(দ্বিতীয় পর্ব সমাপ্ত)

প্রথম পর্ব: চাকুরি জীবন- বিষণ্ণ ছোলা ভাজা পর্ব

মন্তব্য ৭১ টি রেটিং +১৬/-০

মন্তব্য (৭১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:৪৯

জেনো বলেছেন: অসাধারন। প্লাস।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:০১

শ্রাবণধারা বলেছেন: ধন্যবাদ জেনো ভাই..। আমার সামান্য লেখা আপনার ভাল লেগেছে জেনে আপ্লুত..

২| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:৫৪

বাজপাখি বলেছেন: জটিল লেখা। লেখাটি কি মৌলিক মানে আপনার নিজের ?

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:০৪

শ্রাবণধারা বলেছেন: বাজপাখি ভাই, লেখাটা আমারি..। অনেক ধন্যবাদ আর শুভকামনা রইলো..।

৩| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ২:১৫

অরুনোদয় বলেছেন: অসাধারন+++

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:০৯

শ্রাবণধারা বলেছেন: ধন্যবাদ অরুনোদয়, সূর্যোদয়ের স্পর্শ পেলো আমার লেখা..। শুভকামনা রইলো..।

৪| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৩:২৫

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:

অসাধারণ !!!


পোস্টে +++++++

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:১১

শ্রাবণধারা বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ আর শুভকামনা স্নিগ্ধ শোভন...।

৫| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ ভোর ৪:০৬

অপ্রিয় সত্য বলেছেন: চমৎকার লাগলো।চলুক...+++

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:১২

শ্রাবণধারা বলেছেন: ভাল লেগেছে জেনে আনন্দিত...শুভকামনা...।

৬| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:১০

আরমিন বলেছেন: জীবন এমনই ! শুভেচ্ছা আপনার জন্য! + +

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:১৪

শ্রাবণধারা বলেছেন: আসলেই তাই... জীবন এমনই..। আপনার জন্যও অনেক শুভকামনা.।

৭| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:৪২

আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেছেন: ভাই এইটা কোন সাধারন লেখা না................অসাধারন!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

অনেকদিন পর একটা লেখা এক নি:শ্বাসে পড়লাম, ধন্যবাদ!!!! তাড়াতাড়ি দ্বিতীয় পর্বটা দেন....তর সইতাছেনা!!

আর একটা অনুরোধ...যদি রাখতে পারেন আরকি....ফিনিশিংটা পজিটিভ রাখার চেষ্টা কইরেন.. :P(বাস্তবতা যতই নিষ্ঠুর হোক না কেন) কারন আপনি এখন অনেকর জন্যই প্রেরণা......আশা করি আমার পয়েন্টা ধরতে পারছেন আমি কি বলতে চাচ্ছি!!
আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন!!

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:২০

শ্রাবণধারা বলেছেন: সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ..। হয়ত বাস্তবতা নিষ্ঠুর, তবে আমরা যতদিন পর্যন্ত পজিটিভ অনুপ্রেরণা নিয়ে কাজ করতে পারি ততদিন পর্যন্ত পৃথিবী অনুভুতিময়, ভালবাসাময়, আনন্দময়..।
আপনার জন্য অনেক শুভকামনা...।

৮| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৭

েবনিটগ বলেছেন: +++

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:৩৯

শ্রাবণধারা বলেছেন: ধন্যবাদ..........।

৯| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:১৫

নিস্প্রভ নীল বলেছেন: শুধু আপ্নার এই লেখায় কমেন্ট করার জন্যই লগইন করলাম। অসাধারন, চেস্টা করবেন শেষটা যেন ভালো হয়। ভালো থাকবেন।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:৪৩

শ্রাবণধারা বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ নিস্প্রভ নীল...। চেষ্টা করছি নিজের জীবনের ঘটনা গুলোকেই লিখে ফেলতে..। শুভকামনা...

১০| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৮

এসএমফারুক৮৮ বলেছেন: চমৎকার +++++

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩১

শ্রাবণধারা বলেছেন: ধন্যবাদ..........।

১১| ১৩ ই মে, ২০১৩ সকাল ১১:২১

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: চাকরিটা হয়েছিল ভাই??

++++++++

১৩ ই মে, ২০১৩ দুপুর ২:৪২

শ্রাবণধারা বলেছেন: পরের পর্বে বলব সেকথা...। ধন্যবাদ লেখা পড়ার জন্য...।

১২| ২৩ শে মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১২

বোকামন বলেছেন:





চলার পথে হাটতে হাটতে পাশেই একজন পথিক পেয়ে গেলাম। দু’জন হাটতে হাটতে কথা বলতে বলতে সময়টা খুব সুন্দর হয়ে উঠছিল। পথ দুদিকে চলে গেল ও পথে আপনি, এ পথে আপনি। আবার দেখা কোন একদিন :-)

জ্বী আপনার লেখা আমার সাথে কথা বলছিল।
আশাকরি আবারো কথা হবে .........

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

২৪ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৫:২৪

শ্রাবণধারা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ বোকামন, এর চেয়ে ভাল কথা আর কি বা হতে পারে? আমার লেখা আপনার সাথে কথা বলেছে জেনে খুব ভালো লাগলো।
মনে হয়, আমাদের প্রত্যেকের জীবনের রাস্তা খুব বেশী রকমের আলাদা আর নির্জন, মাঝে মাঝে কিছু কিছু মানুষের সাথে শুধু রাস্তার সিগন্যালে আর গোলচত্ত্বরে দেখা হয়ে যায়। জানিনা পরের পর্বগুলোতে আপনার সাথে দেখা হবে কী না...।
ভালো থাকবেন..।

১৩| ৩০ শে মে, ২০১৩ রাত ৮:২৯

দেহঘড়ির মিস্তিরি বলেছেন: যতদিন জীবিকা অর্জনের মত কঠোর বিষয়গুলো নিয়ে ভাবনা ছিলনা, ততদিন শখের থিয়েটারে উঠতি বুদ্ধিজীবীর চরিত্রে অভিনয়টা মোটামুটি ভালই করছিলাম

অসাধারণ , লেখাটার মাঝে মাঝে ওরহান পামুকের ছাপ খুজে

পাচ্ছিলাম , বিশেষ করে বর্ণনা ভঙ্গির সাথে :)
ভালো থাকবেন :)

০১ লা জুন, ২০১৩ ভোর ৪:৫২

শ্রাবণধারা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ দেহঘড়ির মিস্তিরি আমার এই সামান্য লেখা পড়বার জন্য এবং মন্তব্যের জন্য অবশ্যই। পামুকের লেখা আমার তেমন পড়া হয়ে ওঠেনি, কবির চৌধুরীর কি একটা অনুবাদ অনেককাল আগে কিছুটা পড়েছিলাম মনে পড়ে, কিন্তু এ পর্যন্তই । তার কোন বিশেষ লেখার সাথে বর্ণনার ভঙ্গি মিলে গেলে সেই বইয়ের নাম জানাতে পারেন, সাগ্রহে পড়ে দেখব..।
লেখাটার আগের পর্ব পড়বার আমন্ত্রন রইল, যার লিঙ্ক এ লেখার শেষে দিয়েছি..।
শুভকামনা রইলো......।

১৪| ০১ লা জুন, ২০১৩ ভোর ৫:৩০

ফারজুল আরেফিন বলেছেন: এক নিঃশ্বাসে পড়ে শেষ....।

++++++++++++++++++

০১ লা জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:০৫

শ্রাবণধারা বলেছেন: লেখাটি পড়বার এবং মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই ফারজুল আরেফিন...। শুভকামনা রইলো...।

১৫| ০১ লা জুন, ২০১৩ ভোর ৫:৫৩

মাহবু১৫৪ বলেছেন: খুব সুন্দর লেখা

ভাল লাগলো অনেক

+++++

পরে কি হল তা জানার অপেক্ষায় রইলাম

০১ লা জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:০৮

শ্রাবণধারা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই। পরের পর্ব প্রসবের অপেক্ষায়। লেখাটার আগের পর্ব পড়ার আমন্ত্রন রইল, যার লিঙ্ক এ লেখার শেষে দিয়েছি।
অনেক অনেক শুভকামনা...........

১৬| ২২ শে জুন, ২০১৩ রাত ৩:০৯

খেয়া ঘাট বলেছেন: কী অসাধারণ এক লিখারে ভাই।
পড়তে পড়তে কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছিলাম। আপনি আমার সশ্রদ্ধ সালাম গ্রহণ করুন।
++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
একগুচ্ছ প্লাস।

২২ শে জুন, ২০১৩ রাত ৩:৩৭

শ্রাবণধারা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ খেয়া ঘাট আমার এই সামান্য লেখা পড়ে মন্তব্যের জন্য। আপনার লেখাগুলোও কিন্তু বেশ..........। অনেক শুভকামনা........।

১৭| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৩২

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: কি অসাধারন একটা লেখা! কি দুর্দান্ত একটা লেখা!
এটা যদি জীবনের গল্প হয়, আপনি ভবিষ্যতের একজন সফল মানুষ। এই জীবন দর্শন শুধু মাত্র সফলদের।

অনেকদিন পর একটা লেখা আমি একটানে পড়ে গেলাম, এত বড় একটা লেখা কোন কষ্ট নেই, বরং প্রতিটি লাইনের জন্য আমার দূর্দান্ত অপেক্ষা। শেষে গলার কাছে আটকে থাকা খানিকটা নাম না জানা আবেগ!!

বড্ড ভালো লিখেছেন ভাই। শুভেচ্ছা নিন।

লেখাটা শেয়ার করলাম।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ২:২৩

শ্রাবণধারা বলেছেন: কাল্পনিক_ভালোবাস, সত্যি বলতে কি আপনার মন্তব্যটা আমার এই লেখার চেয়ে অনেক বেশি ভাল হয়ে গেছে। লেখাটা পোস্ট করে আমি আর এটা পড়িনি, আজ আপনার মন্তব্য দেখার পরে এখন আবার পড়লাম। পড়ে কিন্তু সত্যি মনে হচ্ছে আপনার মন্তব্যটাই বেশি চমৎকার লেখার চেয়ে।

গল্পটা জীবনের, একেবারে নিখাদ জীবনেরই, কিন্তু তার দর্শনধারী ঠিক সফলদের অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে কি, জীবনে ব্যর্থ হতে খুব বেশি খেদ নেই আমার। কি হবে সফল হয়ে যদি অনুভুতি গুলোই হারিয়ে যায়।

আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা.............।

১৮| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৪২

রেজওয়ান তানিম বলেছেন: ভালো লাগল

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ২:১৭

শ্রাবণধারা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য।

আগের পর্ব পড়ার আমন্ত্রন রইল:
Click This Link

১৯| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৫০

অচিন.... বলেছেন: darun lekha vai

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ২:২১

শ্রাবণধারা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই, আমার এই সামান্য লেখা পড়ে মন্তব্যের জন্য। আগের পর্ব পড়ার আমন্ত্রন।

Click This Link

শুভকামনা......।

২০| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৫২

মেঘেরদেশ বলেছেন: অনেক দিন পর সামুতে ভালো কিছু পড়লাম তাও কাল্পনিক_ভালোবাসা ভাইয়া ফেবুতে শেয়ার করেছিল বলে। ধন্যবাদ আপনাকে এত গুছিয়ে লিখার জন্য,জীবন টা যেন চোখের সামনে চলে এসেছিল :( ধন্যবাদ কাল্পনিক_ভালোবাসা ভাইয়েকেও :)

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ২:৩৭

শ্রাবণধারা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ মেঘের দেশ চমৎকার মন্তব্যের জন্য। জীবনকে যদি একটু হলেও চোখের সামনে নিয়ে আসতে পারি, যদি মূহুর্তের জন্যেও অনুভূতিকে ছুয়ে দিতে পারি, তাহলে সত্যি সেটা আমার জন্য খুব খুশির একটা ব্যাপার হবে...।
কাল্পনিক_ভালোবাসাকে ধন্যবাদ ফেবুতে শেয়ার করার জন্য। মজার ব্যাপার কি আমি কিন্তু আমার লেখা কখনও ফেবুতে শেয়ার করিনি। ফেবুতে আমি অনেকটা বাস্তববাদী টাইপের হবার ভড়ং ধরি :), কেউ জানেই না যে আমি আবার অল্প সল্প বলগিংও করি......।:)

শুভকামনা রইলো.....।

২১| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ২:২৯

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: অনেক +++++++ দিলাম

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ৩:২৬

শ্রাবণধারা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আর শুভকামনা...। আগামী পর্বগুলো পড়ার আমন্ত্রন রইলো......।

২২| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ২:৩৯

আবদুল্লাহ্‌ আল্‌ মামুন বলেছেন: অসাধারণ। খুবই ভাল লাগলো। আপনার লেখার হাত দারুন। চাকরি'র পাশাপাশি লেখালেখি'টাও শুরু করে দিন পুরোদমে।

বাকি পর্ব দিন, তাড়াতাড়ি.......

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ৩:৩৯

শ্রাবণধারা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আবদুল্লাহ্‌ আল্‌ মামুন ভাই, আমার সামান্য লেখা পড়ে উৎসাহ দেবার জন্য। পরের পর্বটা আর সপ্তাহখানেকের মধ্যেই দিতে পারব আশা করি।
শুভকামনা রইলো........।

২৩| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ২:৪১

মুগ্ধ মাহি বলেছেন: সাহিত্যগুণে গুণান্নিত ।আপনি দারুন লিখেন ।

ভুক্তভোগীরাই শুধু এই কঠিন বাস্তবতা উপলব্ধি করতে পারে , সমব্যাথি

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ৩:৪৮

শ্রাবণধারা বলেছেন: ধন্যবাদ মুগ্ধ মাহি। জীবন আমাদের অনেকের জন্যই এমনই কঠিন, কারও কারও জন্য আরও অনেক বেশী কঠিন। সেগুলো যখন সামনে দেখতে পাই, শুধু ভিতরে ভিতর ব্যথিত হওয়া ছাড়া আর কিছুই করতে পারিনা...।

শুভকামনা ......।

২৪| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ২:৫৪

একজন ঘূণপোকা বলেছেন: প্লাস




প্লাস।



প্লাস।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ৩:৫০

শ্রাবণধারা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আর শুভকামনা..............।

২৫| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ৩:৩৪

তন্ময় ফেরদৌস বলেছেন: সুন্দর করে লিখেছেন ।

শুভকামনা...

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ৩:৫৪

শ্রাবণধারা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ লেখা পড়ে মন্তব্যের জন্য। আগের পর্ব পড়ার আমন্ত্রন, এবং পরের পর্বগুলোও। আগের পর্বের লিঙ্ক......।

Click This Link

ভালো থাকবেন......।

২৬| ০৫ ই জুলাই, ২০১৩ ভোর ৪:৪১

শিপন মোল্লা বলেছেন: কি অসাধারন একটা লেখা! কি দুর্দান্ত একটা লেখা!
এটা যদি জীবনের গল্প হয়, আপনি ভবিষ্যতের একজন সফল মানুষ। এই জীবন দর্শন শুধু মাত্র সফলদের।

অনেকদিন পর একটা লেখা আমি একটানে পড়ে গেলাম, এত বড় একটা লেখা কোন কষ্ট নেই, বরং প্রতিটি লাইনের জন্য আমার দূর্দান্ত অপেক্ষা। শেষে গলার কাছে আটকে থাকা খানিকটা নাম না জানা আবেগ!!

বড্ড ভালো লিখেছেন ভাই। শুভেচ্ছা নিন।

এই মন্তব্যকারির শিয়ার করা দেখেই পড়তে আসছিলাম। আজ কাল আর সামুতে আসা হয়না। আসলে এই মন্তব্যর পর আর কোন মন্তব্য হয় না।

০৫ ই জুলাই, ২০১৩ ভোর ৫:০৯

শ্রাবণধারা বলেছেন: ধন্যবাদ আবুশিথি ভাই, ব্লগে এসে আমার এই সামান্য লেখা পড়ার জন্য।
জানিনা কেন আর আজকাল ব্লগে আসছেন না। যদি নিজের ব্যস্ততা কারণ হয়ে থাকে তবে ঠিক আছে, যদি আমার মত অলেখক বা অন্য অনেকের মত দলকানা লোকদের দেখে বিরক্ত হন তাহলে বললো জাতি বা মানুষ হিসেবে আমরা তো বরাবরই এমনি, এ আর নতুন কি।

শেষ কথাটা কিঞ্চিত বোরিং বেকুব-দার্শনিক টাইপের হয়ে গেল বলে লজ্জিত.........।

শুভকামনা রইলো.........।

২৭| ০৬ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:৩২

আমি ইহতিব বলেছেন: আপনাকে অনুসরণে না নিয়ে পারছিনা, প্রথমত আপনার অসাধারণ লেখনীর জন্য আর দ্বীতিয়ত আপনার জীবনের বাকি গল্পটা জানার জন্য। আর কাল্পনিক ভালোবাসা ভাইকে আবারও ধন্যবাদ আরেকটি ভালো গল্প পড়ার সুযোগ করে দেয়ার জন্য।

০৭ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ২:১৬

শ্রাবণধারা বলেছেন: আমার সামান্য লেখা ভাল লেগেছে জেনে আনন্দিত। নিঃসন্দেহে অনুসরণে রাখার মত মানসম্পন্ন লেখা আমার নয়, তারপরও অতি সাধারণ এই আমার চাকরি জীবনের গল্প জানার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন দেখে ভিষণ আপ্লুত হলাম ভাই।

অনেক অনেক শুভকামনা......।

২৮| ০৮ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:০১

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:

প্লাস রইল +++++ সাথেই আছি চলুক

০৮ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৩৭

শ্রাবণধারা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আর শুভকামনা কান্ডারী অথর্ব ভাই, আমার এই সিরিজের সবগুলো লেখাতেই আপনার মন্তব্য দেখে সত্যিই খুব আনন্দিত...।

২৯| ০৮ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৩০

পাকাচুল বলেছেন: অসাধারণ।

আমার নিজের প্রথম চাকুরী জীবনের কথা মনে পড়ে গেল।

খিলগাঁও থেকে সকাল ৭.৩০ এ বের হয়ে গুলশানে অফিস যেতাম। তারপর অফিসের কাজে এদিক ওদিক ছুটাছুটি। সন্ধ্যা ছটায় অফিস ছুটি হলে ফার্মগেটে যেতাম টিউশনিতে, ওটা শেষ করে যেতাম মোহাম্মদপুরে আর একটা টিউশনি করাতে। তারপর বাসে করে যখন মতিঝিল নামতাম তখন রাত ১০.৩০। গোড়ানে পৌঁছাতাম রাত ১১.১৫ তে। কখনো আরো দেরী তে।

শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।

০৮ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২০

শ্রাবণধারা বলেছেন: আপনার মন্তব্য ছুঁয়ে গেল পাকাচুল ভাই। চাকরিজীবনের প্রথম কয়টা বছর আমাকেও একটা বাধা টিউশনি করতে হয়েছিল। এখানে যে টিউশনিটার কথা লিখেছি সেটা আসলে দ্বিতীয় টিউশনি, খুব বেশী দিন নয়, মাস দুয়েক পড়িয়েছিলাম।

শ্রদ্ধা এবং সালাম রইলো.........।

৩০| ০৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৩৫

ময়ূখ বলেছেন: আমি মোবাইলে কখোনই লগ ইন করি নাই...আজকে করলাম...অসাধারণ লেখার স্টাইল...নিজের জীবণের কথা এত সুন্দর করে খুব কম মানুষ লিখতে পারে...পরের পর্ব পড়লাম...সুপার্ব...

০৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৪৩

শ্রাবণধারা বলেছেন: কিছু কিছু মন্তব্য পড়লে মনে হয় সেটা আমার সামান্য এই লেখার চেয়েও অনেক বেশী সুন্দর, ছোঁয়াচে। আপনার মন্তব্যটাও তাই।

অনেক অনেক ধন্যবাদ আর শুভকামনা......।

৩১| ১৪ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:১৪

আদম_ বলেছেন: যেন প্রতিটা শদ্ব আমি গিলে গিলে খেলাম। আসলে আপনার হওয়া উচিত ছিলো একজন সাহিত্যিক। অথচ বাংলাদেশ আপনাকে বানিয়েছে একজন হীনমন্য চাকরি সন্ধানী। আমাদের দেশে মেধার মূল্যায়ন কোন কালে ছিলো কিনা জানিনা। র‌াষ্ট্র আপনাদের পরিচর্যা করতে পারলে আরেকটা নোবেলের দু:সাহস দেখা নিশ্চয়ই বাড়াবাড়ি হতোনা।

১৪ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:৫১

শ্রাবণধারা বলেছেন: :) :) :) নাহ, এত বড় লেখক আমি নই। সত্যি বলতে আমার লেখাপড়া, চিন্তাশক্তি অথবা দেখার বা অনুভবের ক্ষমতা অতি সীমিত।

লেখা ভাল লেগেছে জেনে আপ্লুত। নোবেল নয়, আপনাদের চমৎকার সব মন্তব্যই আমাকে উৎসাহ দেবার জন্য যথেষ্ট। :)

অনেক অনেক ধন্যবাদ আর শুভকামনা......।

৩২| ১৫ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ২:৫৫

এহসান সাবির বলেছেন: বছর ঘুরে গেল, এবার একটা পোস্ট দেওয়া যেতে পারে।

১৫ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৫:৫১

শ্রাবণধারা বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই এহসান সাবির। অনেকদিন থেকেই লিখব লিখব করেও কেন যেন লিখতে বসতে পারছি না। কেরানীগিরিতে এত বেশি মনোযোগ আর শক্তি ব্যয় হয় যে লেখালেখীর জগৎটাকে ভুলেই থাকি। লেখা শুরু করলে কিন্তু আর শেষ করতে সময় লাগে না। আশাকরি শীঘ্রই পরের পর্বটা লিখে ফেলতে পারব।

ভাল থাকবেন।

৩৩| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৪:২৫

দ্য ইলিউশনিস্ট বলেছেন: অত্যন্ত চমৎকার লিখেছেন। ভাই লেখাটি আমার হৃদয়ের খুব খুব গভীরে স্পর্শ করেছে। প্রিয়তে নিলাম। পরে আবার পড়তে আসবো। এত অসাধারণ লেখা টানা ১০ বার পড়লেও, ১১ ববার পড়ার সময় আবার নতুন করে মুগ্ধ হতে হবে।

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৫:০১

শ্রাবণধারা বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই দ্য ইলিউশনিস্ট, আপনার মন্তব্যও আমার মন ছুঁয়ে গেল।

আমার এই সামান্য লেখা যদি কারও অনুভুতিকে স্পর্শ করে, এর চেয়ে ভাল কথা একজন লেখকের জন্য আর কি হতে পারে?

অনেক অনেক শুভকামনা........।

৩৪| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:৫৬

খেলাঘর বলেছেন:

বাংলাদেশে মানষ ইন্টারভিউ দিয়ে কি করে প্রফেশানেল চাকুরী পায়? এটা অনেকটা ফুলসরাতের পুল পার হওয়ার মত ব্যাপার।

৩৫| ০৫ ই জুন, ২০২২ সকাল ১০:৫০

খায়রুল আহসান বলেছেন: "ওটা বোঝার জন্য কোন বুদ্ধির দরকার হয়না, বরং বুদ্ধি থাকলেই তা বুঝতে দেরি হবার সম্ভাবনা" - সংসার তত্ত্ব সম্পর্কে আপনার এ চমৎকার পর্যবেক্ষণটি এবং এর পরবর্তী ব্যাখ্যাটি মনে রাখার মত।

"ছাত্রজীবনে নিজের পরিচয়টা ঠুনকো ছিল না" - লেখা পড়ে বেশ বোঝা যায়, আপনার পরিচয়টা সেরকমই হবার কথা। কিন্তু ব্লগে আপনার পরিসংখ্যান দেখে বোঝা যায়, লেখালেখিটা বোধহয় তেমন আগ্রহ নিয়ে চালিয়ে যান নি, বা যাচ্ছেন না। অবশ্য এখানেই যে সবকিছু লেখালেখি সকলের চোখের সামনে রাখতে হতে হবে, তেমন কোন কথাও নেই।

"আমাদের দিনগুলো শুধু নয়, আমাদের বেতন বোনাসও নির্ভর করতো মুরগির সুআকৃতির ডিম পাড়ার উপরে" - এই কথাগুলোর ভেতরে একটি নির্মম প্রহসন লুকিয়ে আছে বটে, তবে সেটার প্রকাশ এই ছোট্ট বাক্যটিতে যতটা নান্দনিক এবং স্পষ্টভাবে ঘটেছে, অন্য কোনভাবে হয়তো সেটা বলা যেত না।

"সদরঘাট থেকে মিরপুর পর্যন্ত" বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও তাদের শিক্ষকদের সম্পর্কে আপনার সাধারণ জ্ঞান অসাধারণভাবে বেড়ে যাবার তথ্যটা চমকপ্রদ, কিন্তু অভিজ্ঞতাটা হৃদয়বিদারক!

"জীবনে সেই প্রথম একজন ছাত্র পেয়েছিলাম, যার চাওয়া নেহায়েৎ একটা "সি" - ছাত্র পড়ানোর বহু অভিজ্ঞতার কথা এখানে ওখানে পড়ি। কিন্তু এমন কথা আমিও কখনো শুনিনি! :)

"তাই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ফ্যাশন সচেতন পাড়ার এক ছোটভাইকে সঙ্গে নিয়ে দোকানে গিয়েছিলাম" - আহা, আহা! মানুষের জীবনে এমন কত শত ছোট ছোট গল্প থাকে, যা সার্বজনীন!

আব্দুল্লাহ আল নোমান, বোকামন, খেয়াঘাট, কাল্পনিক_ভালবাসা, দ্য ইলিউশনিস্ট প্রমুখের মন্তব্যগুলো খুব ভালো লেগেছে। আপনার প্রতিমন্তব্যগুলোও, এদের মন্তব্যের এবং এর বাইরেও কয়েকটার। সেগুলোতে 'লাইক'।

আমার একটা সাম্প্রতিক পোস্টে আপনি মন্তব্য করেছেন, সেটা দেখেই কৌতুহলী হ'লাম আপনার লেখালেখির সাথে কিছুটা পরিচিত হতে। এখনকার তালিকা অনুযায়ী একেবারে প্রথম পোস্টটা দিয়েই শুরু করলাম। পোস্ট পড়ে আপনার অন্যান্য লেখা পড়ার আগ্রহ বেড়ে গেল। সামনের দিনগুলোতে হয়তো সেগুলো পড়বো।

দীর্ঘদিন ধরে ব্লগিং করছেন, আপনার পোস্ট সংখ্যা এত কম হবার কথা নয়। হয়তো অনেক লেখা ড্রাফটে নিয়েছেন। তাই যদি হয়ে থাকে, কিছু কিছু পোস্ট আগ্রহী পাঠকদের স্বার্থে অবমুক্ত করা যায় কিনা, তা ভেবে দেখতে পারেন।

গত ৫/৬ বছর ধরে ব্লগে নোটিফিকেশন বিভ্রান্তি চলছে। জানিনা, আমার এ দীর্ঘ মন্তব্যটা আপনার দৃষ্টি্গোচর হবে কিনা। হলে, জবাব দিয়ে বাধিত করবেন।

আপনার জন্যে, একজন সুলেখকের জন্যে, আন্তরিক শুভকামনা---

০৬ ই জুন, ২০২২ সকাল ৮:৩৩

শ্রাবণধারা বলেছেন: পুরাতন এই লেখাটি পড়ে চমৎকার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ খায়রুল ভাই। আপনার পাঠ-পর্যবেক্ষণ এত সুগভীর যে আমি একটু চিন্তায় পড়ে গেলা বিচক্ষণ এই মন্তব্যের প্রত্যুত্তর লিখতে গিয়ে। আজ থেকে প্রায় ১৫ বছর আগে নিজের জীবনের কিছু ঘটনার সাদামাটা স্মৃতিচারণ করেছি লেখাটায়। খুব বেশি কিছু দেখবার বা বলবার যোগ্যতাও আমার নেই। তবে মধ্যবয়সে এসে জীবনের প্রবাহমানতা অনকেটাই বিস্মিত করে বটে।

কেরানীর কাজ করে যেহেতু জীবিকা নির্বাহ করি তাই নিজেকে দেবার জন্য খুব বেশি সময় পাইনা। মাঝখানে বেশ কয়েকটা বছর ব্লগে ছিলামও না। এখন একটু সময় পাই বলে ব্লগের ভাল লেখাগুলো পড়ার চেষ্টা করি।

সে যাক, আপনার এবং আপনার পরিবারের সকলের জন্য শুভকামনা।

৩৬| ০৬ ই জুন, ২০২২ সকাল ১০:৩০

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার আরও একটা পোস্টে গতকাল মন্তব্য রেখে এসেছিলামঃ চাকুরি জীবন- বিষণ্ণ ছোলা ভাজা পর্ব

৩৭| ২১ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:২৬

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: লেখায় নিজেকে খুঁজে ফিরছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.