নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হিংসা, বিদ্বেষ, পরশ্রীকাতরতা,অল্পবিদ্যা, কুশিক্ষা এবং ডাবল স্ট্যান্ডার্ড দৃষ্টিকোণ না থাকলে প্রকৃত বাঙ্গালি হওয়া যায় না।
-- হ্যালো,,,, সহন,,,
-- স্যার ঘুমাচ্ছিলেন?
-- বলো,,,
-- সরি স্যার আপনাকে একবার আসতে হবে।
-- ধুর মিয়া! দু'ঘন্টা শুতে পারলাম না।
-- হাই প্রোফাইল কেস স্যার।
-- তোমার লেভেলে গুটিয়ে ফেলতে পারো না সব আমাকে জানাতে হয় তোমার খালি।
-- সরি স্যার। ৮ দিন আগের যে ভার্সিটির একটা মেয়ের বডি,,,, উপর থেকে প্রেশার পাচ্ছিলেন।
-- আমি আসছি।
ফোনটা রেখেই তাড়াতাড়ি করে উঠলো তাহমিদ। কেসটা ঘুমুতে দিচ্ছে না কদিন যাবত। এত সুন্দর একটা মেয়ে। গলার দাগটা চোখ বন্ধ করলেই দেখতে পাচ্ছে। এমন না যে সে ডেডবডি দেখে না। হুট করে বিছানা ছেড়ে উঠতেই মাথাটা কেমন ঘুরছে বলে মনে হলো। গতকালের সিগারেটগুলো কে গালি দিয়ে ফ্রেশ হয়ে বের হলো। সিগারেট স্যুট করছে না ক্লান্ত করে দিচ্ছে। ছাড়তে হবে ভাবতে ভাবতেই থানায় এলো। দেখলো সহন দ্রুতই এগিয়ে এলো। চোখ দিয়ে ইশারা করে অফিসে ঢুকতে বলে নিজেও ঢুকলো।
-- একটা সিগারেট দাও। প্যাকেট টা ফেলে এসেছি।
-- আপনি ছেড়ে দিবেন বলেছিলেন।
-- হু। কি হয়েছে? আসামী ধরে ফেলেছো।
-- মনে হচ্ছে স্যার ধরে ফেলেছি।
-- কই এখন? ইন্টারেগেশন রুমে?
-- জ্বী স্যার। আরেকটা ব্যাপার স্যার?
-- কী?
-- তার আগে একটা ছেলের ডেডবডি দেখতে হবে। দেখার মতো কারুকাজ স্যার। মনে হলো খুব সময় নিয়ে পিকাসোর মতো করে আকা হয়েছে।
-- তুমি এই প্রফেশনে না এসে লেকচারার হলে মানাতো।বলো কী দেখলে?
-- সাসপেন্স টা ভাংগবো না স্যার।
-- আহ! ধুর মিয়া। এটার সাথে রিলেশন টা বলো।
-- আসামী একজন নারী স্যার। একই ভার্সিটির স্টুডেন্ট ।
-- বাহ! কেস ক্লোজড। তুমি দ্রুতই অনেক দুর যাবা। লাভ ট্রায়াংগেল, মাথামোটা আসামী। বয়ফ্রেন্ড আর মেয়েটার মধ্যে ,,,, আর এখন কী? দুজন কী একজন আরেকজন কে চিনতো?
-- তারা দুজন একই ক্লাসে পড়ে।
-- তার মানে চেনা জানা আছে। এই আর কি।
-- আচ্ছা তোমার না আজকে কোথায় যাওয়ার ছিলো?
-- স্যার, আপনার সাথে থাকি স্যার?
-- আরে বোকা,,, ডেটে যাবা ফুল কিনে, পাঞ্জাবি পড়ে ভালো মতো যাবা আর তুমি ডেডবডি, মার্ডার ফার্ডার নিয়ে,,,যাও যাও। এমন বস পাবা?
-- না স্যার। আমি থাকি স্যার।
-- এমন করে করেই ডিভোর্স টা হয়ে যাচ্ছে বুঝলা। পার্সোনাল লাইফ ভুলে গেলে এর জন্য কিন্তু,,,,,যে চাকরি করি আমরা,,,, আরেকটা দাও, আছে?
-- আরো খাবেন? নেন স্যার।অবশ্য শীত খুব স্যার। স্যার আমার এ রিলেশন এমনিতেও টিকবে না।
-- টিকবে কিভাবে, সময় দাও কই? ধরাও। অর্ধেক খাবো। শেষ করে যাবো। তুমি কাচুমাচু করো না। দেখতে অস্বস্তি লাগে। ইজিলি খাও। বাইরেরটা খেয়াল রেখো আরকি। অন্যদের সামনে,,
-- জ্বী স্যার অবশ্যই। কোনটা দেখবেন স্যার? ডেডবডি না আসামী।
-- মৃতের কোন গল্প নেই। ওখানেই আগে যাবো।
সিগারেট টা পাস করে সহন বের হয়ে গেলো। তাহমিদ ভাবলো সহনের সাথে কথা বলতে ভালোই লাগে। চটপটে ছেলে। দুজনের মধ্যে পেশাগত অবস্থানের কারণে পার্থক্য থাকলেও ও ছায়ার মতো লেগে থাকে। কিছু সম্পর্ক মানুষের এমনি এমনি তৈরি হয় যেগুলো নাম দেয়া যায় বিশ্রাম। বন্ধু,ভাই,আত্মীয় কিছু দিয়ে ব্যাখা দেয়া যায় না কিন্ত একজনের জন্য আরেকজনের প্রতি কেয়ার টা বেশিই থাকে। বোকাটা ডেটে যেতে চাচ্ছে না। সিগারেট টা শেষবার টান দিয়ে বের হলো। ডেডবডিটা দেখতে হবে। ছেলেটা কিছু বললো ও না।
-- একি অবস্থা! Talk to me সহন
-- আমার স্যার দেখার পরে মনে হয়েছে অনেকদিন যাবত খুনি জীবনের একটা শেষ গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার জন্য অপেক্ষা করেছে । সুযোগ পেয়ে যত্ন করে করেছে।
-- হা হা হা। আগে অন্য কাউকে মেরে প্র্যাক্টিস ও করেছে?
-- বডি তারকাটা দিয়ে এভাবে পেচিয়ে টাইট করতে হলে এক প্রান্ত এক জায়গায় বেধেই করতে হবে। এটা নাকি স্যার এতো তাড়াতাড়ি খোলা যাবে না। কেটে কেটে করতে হবে।
-- একটু জায়গা বাকি নেই। রিপোর্ট কবে পাবো অলসদের কাছ থেকে?
-- দেরি হবে স্যার। এমন কিছু ওরা দেখেনি আগে। অনেকের গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে দেখার পর। আমি সিউর নিজের বউকেও ভয় পাবে আজকে থেকে।
-- একটা মেয়ে? জিম টিম করে? কি মনে হলো দেখে?
-- স্যার সাসপেন্স টা,,,
-- ধুর মিয়া! চলো পিকাসোটা কে গিয়ে দেখি।
ইন্টারোগেশন রুমে ঢুকে তাহমিদ অবাক হলো খানিকটা। সাইকোপ্যাথ রা এতো সুন্দর হতে তেমন একটা দেখা যায় না। একে দেখে এমন সাইকো মনে হচ্ছে না। চেহারায় মনের কথাটা পড়া গেলে তার বয়ফ্রেন্ড দৌড়ে পালাতে পারতো। বেচারাকে কাটাতার দিয়ে মুড়িয়ে দিয়ে তিনি বসে আছেন। তাহমিদ চেয়ার নিয়ে বসলো। সহন দাড়িয়েই রইলো। ইশারায় সিগারেটের প্যাকেট টা টেবিলে রাখতে বলল। এইবার মাইন্ডগেমটা শুরু করতে গিয়ে নিজে একটা সিগারেট ধরালো।
-- আপনাদের ভার্সিটির এই অবস্থা কেন? খালি খুন, আত্মহত্যা। Smoke? গুছিয়ে মিথ্যা বলতে সুবিধে হয়।
-- It's not my brand but আবার কখন পাওয়া যায় তাই নিতে হচ্ছে।
-- না না ঠিক আছে। I'm not judging. গল্পটা বলবেন?
-- গল্প নয়। Doesn’t matter. যা করার কথা শুরু করুন। I'm guilty. কোথায় বলতে হবে?
-- আর কাউকে বলেছেন?
-- না। একটা রিকুয়েষ্ট I want to be shot dead. কপালে করলে ৩ সেকেন্ড লাগে। পসিবল?
-- হা হা হা। কেন করলেন? আবার এসেও পড়লেন।
-- জুই আমার ক্লাসমেট ছিলো। কিন্তু কিছু সম্পর্কের কথা আপনাদের মতো পিছিয়ে পড়া মস্তিষ্কে ঢুকবে কিনা এই ব্যাপারে সিউর না।
-- ছেলেটা কে চিনতেন?
-- না। কয়েকদিন আগে চিনতে পেরেছি।
-- মানে সে আপনাদের সাথে পড়তো না?
-- না। সে আমার পরিচিত একজনের সাথে ড্রাগস নিতো।
-- কে সে পরিচিত একজন?
-- যার কারণে আমি ওকে ওভাবে বেধেছি।
-- আপনি কি আমার সাথে মজা করছেন? কে সে?
-- সাইদুল ইসলাম। স্যাডি নামে চিনে অনেকে। জুইয়ের বয়ফ্রেন্ড ছিলো।
-- স্যাডি,,,,স্যাডি,,,, ঐ যে ওডিড হয়ে মারা গেলো যে?
-- ও ওভারডোজে মারা যায়নি। ও এসব ছেড়ে দিয়েছিলো।
-- আমি তো মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝছিনা। সহন ঐ শিল্পপতির কি যেন নাম ছিলো?
সহন খানিকক্ষণ হা হয়ে পুরো ব্যাপারটা হজম করছিলো। তাহমিদ ধমকে উঠলো,
-- এই সহন,,
-- সাজ্জাদুল ইসলাম , স্যার।
-- খবর আছে তোমার। ফাইল টা তুমি বন্ধ করেছিলে না?
-- ইয়ে মানে স্যার কোন আলামত,,,,আবার ওর হিস্ট্রি,,,
-- যাও ফাইল বের করো। Wait,, আচ্ছা না। আমার অফিসে আসো ফাইল টা নিয়ে আগে।
রুম থেকে আগে সহন বের হলো। তারপর তাহমিদ বের হলো। মাথায় চিন্তারা লাগাম ছাড়া দৌড়ে বেড়াচ্ছে। এমন হতে পারে না মেয়েটা কাহিনি সাজাচ্ছে? নিজে এসে সারেন্ডার ও করলো। ঘটনা কী? এত বড় ভুল সহন করবে ব্যাপারটাই বা কিভাবে মানা যায়। ওর মতো চৌকস অফিসার। আর মেয়েটা। রহস্যময়ী মেয়েটা। খুন করে এসে যিনি এমন ভাবে বসে আছেন যেন মাত্র বাজার করে এসেছেন রান্না করবেন। যাকে খুন করলো সে আবার,,,,, হচ্ছে টা কী আজকে? নিজের চেয়ারের হাতল টা না দেখে হাতড়ে বসতে গিয়ে প্রথম বারে পারলো না। জট পাকিয়ে গেছে পুরো ব্যাপারটা। প্রথম থেকে শুরু করে সম্ভাব্য দৃশ্যপটটা গোছানো শুরু করলো সে। এমন সময় সহন ঢুকলো। তাহমিদ ধমকে উঠলো,
-- তোমাকে চাকরি দিয়েছে কে? হ্যা?
-- সরি স্যার।
-- সিগারেট দাও।
-- স্যার,
-- ধরিয়ে দাও। বসো। গুছাই। তারকাটায় জড়ানো ছেলেটার আইডি,,,,
-- জুনায়েদ স্যার। কেস আছে। ড্রাগস।
-- মেয়ের কী হয়? মানে ঐ মেয়ের?
-- আত্মহত্যা করলো যে, স্যার?
-- ধুর মিয়া! আসামীর,,, আসামীর নাম কী?
-- সানজিদা ইসলাম।
-- সানজিদার কী হয়?
-- কিছু না স্যার।
-- তাহলে মারলো কেন?
-- জুইয়ের বয়ফ্রেন্ড কে ঐ ছেলে মেরে ফেলেছে স্যার।
-- তাহলে সানজিদার কী? উফ,,আরে মাথা কাজ করছে না আমার,,ধুর,,,দেখি?
-- স্যার আর খাবেন না আপাতত। আমি একটা থিওরি বলি স্যার? সিউর না স্যার। বলি স্যার। স্যাডি জুইয়ের বয়ফ্রেন্ড স্যার,,,
-- হু
-- জুই মনে হয় সানজিদার ভালো বন্ধু ছিলো।
-- হু,, তাহলে?
-- ডেডবডি জুইয়ের বয়ফ্রেন্ড কে মেরেছে, জুই শোকে আত্মহত্যা করেছে, সানজিদা জুইয়ের আত্মহত্যার ব্যাপার সামলাতে না পেরে ওকে মানে ডেডবডি,,,মানে
-- জুনায়েদ
-- জ্বী স্যার জুনায়েদ কে মেরেছে।
-- তাও, জুইয়ের সাথে ওর কী সম্পর্ক? মানে সানজিদার?
-- লেস,,,
-- শাট আপ। আর তোমাকে কী ও এসে বলেছে? মাথামোটা কোথাকার। কেস বন্ধ করার সময় এমন একটু বেশি ভাবতে পারেন নি? সস্তা ছবি দেখে দেখে,,,, যাও ইন্টারোগেশন রুমে। আমি আসছি।
সহন ভেতর ভেতর দমে গেলো। এইবার চাকরি না গেলেও সাসপেন্ড। ড্রাগস তো নিতো। কেনো যে একটু খতিয়ে দেখলো না। ওডি হতেই পারে। অভিভাবক ও নিয়ে যাবার জন্য এতো প্রেশার দিলে কি করতে পারবে সে। স্যার নিজেই বলেছেন ছেড়ে দিতে। এ লোকটা কী এবার চেনা যাবে। নিজের এমন ভুল না হলে নিজেকেও তো চেনা যেতো না। নাহ, নিজেরো দোষ আছে। মগজের ব্যবহারটা আরেকটু করা উচিৎ ছিলো। (চলবে)
১১ ই মার্চ, ২০২৪ ভোর ৫:০৯
ৎৎৎঘূৎৎ বলেছেন: ধুমপান অবশ্যই ভালো কোনকিছু নয়। তবে মানুষ ধুমপানের চেয়ে মিস্টি জাতীয় দ্রব্য খেয়ে মারা যাচ্ছে বেশি বছর বছর। আসলে রহস্যে কুয়াশা, সিগারেট, পাহাড় এসব দেখতে দেখতে এখানেও এনে ফেলেছি। পুলিশদের খুব কমই ধুমপান ছাড়া থাকেন। খুব স্ট্রেসের জব তাদের। কাছ থেকে দেখা। আপনাকে ধন্যবাদ।
২| ০৭ ই মার্চ, ২০২৪ সকাল ১০:২৮
ধুলো মেঘ বলেছেন: মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, বাংলাদেশের ৫৬% মানুষ ধুমপায়ী। যদি ধরে নেই, বাংলাদেশের ৫০% পুরুষ, আর পুরুষদের ৮০% ধূমপায়ী, তাহলে মহিলাদের মধ্যেও ২০% ধূমপায়ী। আমার ইমেডিয়েট বস একজন মহিলা এবং তিনি চেইন স্মোকার। এরকম একটা দেশের গল্প উপন্যাস নাটকে ধূমপান বাদ কিভাবে দেবেন?
ধূমপান আমাদের কর্পোরেট কালচারেরই অংশ হয়ে গেছে এখন।
১১ ই মার্চ, ২০২৪ ভোর ৫:১১
ৎৎৎঘূৎৎ বলেছেন: তাও ধুমপান অবশ্যই বর্জনীয়। আন্তরিক ধন্যবাদ আপনাকে ডিফেন্ড করার জন্য।হা হা হা। ভালো থাকবেন।
৩| ০৭ ই মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:০৫
রাজীব নুর বলেছেন: সিগারেট খাওয়া ভালো নয়। জেনেও আমি সিগারেট খাই। আসলে সব মানুষের একটা নেশা থাকে। নেশা করলে ভালো নেশা করা উচিৎ। বইয়ের নেশা। ভ্রমনের নেশা।
১১ ই মার্চ, ২০২৪ ভোর ৫:১৪
ৎৎৎঘূৎৎ বলেছেন: আর খাবেন না বলছি না। একদম গ্রামে গিয়ে সিগারেট খেয়ে দেখেছেন? শহরের চেয়ে অপেক্ষাকৃত ভারী লাগে। সবচেয়ে সিগারেট ভালো লাগে ঢাকায়। তার মানে ঢাকায় বিশুদ্ধ বাতাসের অভাব। গ্রামে বেশি। একদমই আমার অবজারভেশন। ছেড়ে দিয়ে দেখুন দশদিন। অনেক কিছু মিস করছেন। ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৯
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: ।
ধূমপান কোন ভালো কাজ নয়।
যে কোনো অবস্থাতে ধূমপান পরিত্যজ্য।
এক সময় বাংলাদেশের নাটকে দেখা যেত কথায় কথায় ধূমপান করছে।
ইভেন হুমায়ূন আহমেদের এই সব দিনরাত্রিতে দেখা যেত বুলবুল আহমেদ ৫ মিনিট পর পর একটা করে বিড়ি ধরছেন।
এইসব এখন বাদ দিতে হবে।
নাটকে গানে সবখানে।