নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হিংসা, বিদ্বেষ, পরশ্রীকাতরতা,অল্পবিদ্যা, কুশিক্ষা এবং ডাবল স্ট্যান্ডার্ড দৃষ্টিকোণ না থাকলে প্রকৃত বাঙ্গালি হওয়া যায় না।
বগুড়া নামলাম যখন তখনো ভোরের আলো ফোটে নি। রাতে চাদের আলোয় চারদিক এতটা সেজে গুজে ছিলো যে তার রেশ অনেকক্ষণ কাটেনি। চন্দ্রাহত হয়ে বসেছিলাম দুজনেই। পুর্ণিমাতেই মনে হয় ঘর সংসার ছাড়ার ভুত ভর করে সবার। আবার দুর দুরান্তে কোন ঘরবাড়ির আলো জ্বলছে না বিধায় তৃপ্তি নিয়ে চারপাশ দেখার সৌভাগ্য হয়ে ছিলো। এখনতো বৈদ্যুতিক বাতির কল্যাণে জোনাকীদের মিতালিও দেখা যায় না মন ভরে। অনুজ খুবই খুশি। বললাম ক্যামেরা আনি ঠিকই ছবি তুলতে ভুলে যাই। বাদ দে এসব। কার্পে ডিয়েম থিওরি ফলো কর। সিজ দ্য মোমেন্ট। প্রাণভরে গিলতে থাক। ওর মুগ্ধতা আমাকেও স্পর্শ করলো খুব। একা বেরোতে উৎসাহিত করলাম। একা বের হলে প্রকৃতি এবজর্ব করতে সহজ হয়।
অন্ধকারে মহাস্থানে বাস থেকে নেমে প্রথম ভুল। হোটেল ভেবে শুধু ভোর টা কাটানোর জন্য নিম্নমানের বোর্ডিং এ ঢুকে গেছি। তারপরেও অনুজকে কিছুক্ষণ গা এলিয়ে নিতে বলে বই নিয়ে বসলাম। আমার দিনে ঘুম হয় না। রাতে না ঘুমানোয় দুজনেই খুব ক্লান্ত। রিচার্জের দরকার ছিলো। বেচারার জন্য খুব মায়া হলো। কোথায় এসে উঠে গেলাম। যাই হোক। সকাল হতেই তাকে জাগিয়ে নিয়ে বের হয়ে পড়লাম। ভেতরে তখন উত্তেজনা। কারণ ততক্ষনে শহরটাই আমার ভেতরে ভালোলাগার বীজ বপণ করে ফেলেছে। একটা সিএনজি ভাড়া করলাম। যতটুকু দেখা যায়। জায়গা তো কম নয়।
মানকালীর কুন্ডের গাছটা দেখে তারানাথের তন্ত্র সাধনার জায়গার কথা মনে হলো। আমার আর্কিটেক্ট অনুজ বলল, ভেবে এসেছিলেন নাকি? কিন্তু বইটা কেনার সময় আমি জানিও না এই বন্ধে এমন জায়গা ঘুরতে আসবো। মাঝে মাঝে আমার অনেক কিছু এমন কাকতালীয়ভাবে মিলে যায়। ছেলেটা মোবাইলে অনেক ভালো ছুবি তোলে। নিয়ে নেয়ার লোভ হলো। একটু ঈর্ষাও। কারণ আমার ছবি তুলতে ইচ্ছে করেনা কোথাও গেলে। স্রেফ বিরক্ত লাগে। এসবে একজন আনাড়ি মানুষ আবার অলসতায় ডুবে আছি। আর ঘুরতে এলে পুরাতন সব কিছু আমার ভেতর ভ্রম তৈরি। মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকি। সাথের মাজারেও ঢুকে পড়লাম। এখানে একজন বসে বসে অনেক সুন্দর বাক্য লিখছেন। একটা গভীর কুয়া দেখতে পেলাম। পরিত্যাক্ত মনে হলো। মাজার আর কুন্ডের পাশেই অনেক বড় খালি জায়গা। বিশাল মেলা হয় বোঝাই যায়। অদ্ভুত ব্যাপার হলো সবজায়গায় 'কটকটি'র দোকান। ব্যাপার টা চেখে দেখতে হবে।
প্রাচীন পুরাকীর্তি গুলো প্রায়ই একই রকম মনে হলো । এতো জায়গা অল্প সময়ে ঘুরার কারণে কোনটা কী ঘুলিয়ে ফেলেছি। প্রত্যেকটি অসাধারণ এবং অদ্বিতীয় সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ। আমাকে সাজিয়ে লিখতে গেলে এই গোল্ডফিসের মগজ একদম সাহায্য করবে না। লেখা গুলো কে পরে সংযোজন - বিয়োজন অবশ্যই করতে হবে বুঝতে পেরেছিলাম তখনই। যেহেতু লিখতে জানিনা আর অন্তর্জালে সব সাজিয়ে গুছিয়ে দেয়া আছে বলে নির্ভার ও লাগছে। আমি বরং আমার অনুভুতিতে মনযোগ দেই।
এই প্রাচীরগুলো আমার কাছে হিংসার এবং ভয়ের পরিচায়ক বলে মনে হলো। মানবসম্পদের কি বিপুল অপচয়। একজন কর্মকর্তার খামখেয়ালিতে কেমন ভুগতে হয় তা বোধ করি সবাই জানে। বেড়া ব্যপারটি আমার কখনোই ভালো লাগে নি। গুড ফেঞ্চস মেইক গুড নেইবারস। কথাটা আমায় সবসময় আহত করে। আগে এমন ছিলো না। মানুষ এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় চলে যেতো। বসবাস করতো। কোন বাধা নেই। আর এখন এই প্রকৃতি দেখতে প্রকৃতির সন্তানদের টিকিট লাগে। এই বিশাল প্রাচীরগুলো ভয় আর হিংসার প্রতীক। যেমনটি এখন কাটাতারের বেড়াও। আমার সারাক্ষণ এটাই মনে হয়েছে যে, একজন অধিকর্তার জন্য ঠিক কতজন মানুষ ঠিক কতটুকু পরিশ্রমের আর ত্যাগের বিনিময়ে এমন বিশালতার জন্ম দিয়েছে? এই বিশাল প্রাচুর্য দেখে যতটা অবাক হয়েছি তার চেয়ে ঐ মানুষগুলোর হৃদয়ের বিশালতা অনুভব করতে পেরে খুব আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিলাম। তারা তাদের অধিকর্তাদের প্রতি ভালবাসা ও শ্রদ্বার বিশালতা দেখিয়েছেন। নাকি ভয়ের একটা কারণ ছিলো? বেচে থাকার তাগিদেও হতে পারে না কী?
দুশো বছর আগে যদি আসতে পারতাম তাহলে এগুলো দেখতে কেমন হতো? এই সিড়ি বেয়ে যখন একজন সাধারণ মানুষ উঠতেন কি ভাবতেন? দুশো বছর আগের ঠিক ১১ টা বেজে ৯ মিনিট সময়ে এই সিড়িতে আমার জায়গায় কে ছিলো? এই ৭ এপ্রিলে ঐ সাধারণ ভা অসাধারণ ব্যাক্তির মনের চিন্তাগুলো কেমন ছিলো? মাঝে মাঝে অবাস্তবকে খুব কাছ থেকে দেখতে ইচ্ছে করে। হয়তো সম্ভব নয় বলে কল্পনায় তা খুব সুন্দর। এই ম্যাট্রিক্সে কি একটি গ্লিচ হতে পারে না? যাতে করে ঐ ব্যাক্তি আর আমি একই সাথে কিছুক্ষণের জন্য হলেও এই সিড়িটা বেয়ে উঠতে পারি? আর একে অপরের দিকে চেয়ে হাসতে পারি?
দুশো বছর আগে এই গাছের নিচে হয়তো অনেক প্রদীপ জ্বলতো। ধ্যান মগ্ন হয়ে পড়ে থাকতেন কোন সাধু। কিংবা কোন ব্যাক্তির অনিষ্ট করার প্রয়াসে হাকিনী যোগিনী ডাকিনীদের ডেকে বেড়াতেন কোন বখে যাওয়া ভয়ংকর দর্শন কোন তান্ত্রিক। উপরে কাক ডাকতো। ভয়ালস্বরে পেচা ডাকতো। নিচে থাকতো মড়ার খুলি কিংবা অর্ধগলা পচে যাওয়া মৃত কোন লাশ। নাহ! আমি ভ্রমনে নেই। ভ্রমেই আছি এখনো।
০৯ ই এপ্রিল, ২০২৩ ভোর ৫:৩৭
ৎৎৎঘূৎৎ বলেছেন: এইটা ইন্সটা৩৬০ ডিগ্রি একশন ক্যামেরা। এতে অনেক ফিচার আছে যা অন করলেই আশেপাশের সব ছবি ক্যাপচার হয়ে যায়। পরে এডিট করার সময় যেটা ভালো লাগে নিয়ে নেয়া যায়। ছবি তোলায় অনাগ্রহীদের জন্য অসাধারণ একটা গ্যাজেট। ধন্যবাদ আপনাকে।
২| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৩:১৯
রাজীব নুর বলেছেন: প্রতিটা ছবিতে আপনি আছেন। অথচ আপনাকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না।
০৯ ই এপ্রিল, ২০২৩ ভোর ৫:৩৯
ৎৎৎঘূৎৎ বলেছেন: তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয় বলেই দেখা যাচ্ছে না। ধন্যবাদ আপনাকে।
৩| ১১ ই এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ৮:১৭
আমি সাজিদ বলেছেন: আমিও লেখাটি পড়ে ভ্রমেই ছিলাম। বিশুদ্ধ বর্ণনা। সিজ দ্যা মোমেন্টে আমিও বিশ্বাসী।
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ১১:৫৩
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: এমন অদ্ভুত স্ট্যাইলের ছবি কিভাবে তুললেন? ড্রোন শট?
আমিও গত শীতে উত্তরে গিয়েছিলাম।
পোস্ট ভালো হয়েছে।