নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হিংসা, বিদ্বেষ, পরশ্রীকাতরতা,অল্পবিদ্যা, কুশিক্ষা এবং ডাবল স্ট্যান্ডার্ড দৃষ্টিকোণ না থাকলে প্রকৃত বাঙ্গালি হওয়া যায় না।
ব্লগের সবচেয়ে স্বাধীন জিনিস টি হলো এখানে মনের মাধুরী মিশিয়ে লেখা যায়। কারো ভালো না লাগলেও। আমি এই কারণে যাচ্ছেতাই লিখি। বেশীর ভাগ সময়ই পড়ি। বলতে গেলে আমার শিক্ষকতা জীবনের এখন ভোর বেলা চলছে। হাটি হাটি পা করে শিখছি। ব্লগে হয়ত এই লেখাগুলো দেয়ার কারণ হলো কেউ যদি কোন উপায় বাতলে দেন আর আমি তা প্রয়োগ করে আমার শিক্ষকতা জীবন সহজ করতে পারি তাইই। এছাড়া লিখলে নির্ভার হয়ে পড়ি। মনে হয় যেন খুব একটা বোঝা নেমে গেলো অনেকদিনের।
যাই হোক। আমি খুব এলোমেলো লিখব। যেহেতু ভাল লেখক নই। কেউ পড়ে বিরক্ত হলে আমি খুব দুঃখিত। আজকের ঘটনা দিয়ে শুরু করার আগে বলে রাখি আমি একজন সনাতন ধর্মালম্বী। আমার কর্মস্থল একটি গহীন গ্রামের জনপ্রিয় স্কুলে। এখানে হিন্দু-মুসলমান উভয়েরই বাস। সংগত কারনেই আমার ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে প্রায় কাছাকাছি সংখ্যক উভয় ধর্মেরই শিক্ষার্থী রয়েছে। আমি প্রায়ই একমাত্র হিন্দু শিক্ষক হবার কারণে একটা অভিযোগ পাই তা হলো কোন মুসলমান শিক্ষার্থী হিন্দু কোন শিক্ষার্থীকে ধর্ম নিয়ে কটুক্তি করেছে। বেচারিরা খুব মন খারাপ করে এসে আমার কাছে অভিযোগ জানায়। আমি তাদের বলে বলে ক্লান্ত হই যে, ধর্ম হচ্ছে একটি হীরার মতো তাকে যতই নোংরা জল দিয়ে ভিজিয়ে দেয়া হোক না কেন তা হীরাই থাকবে এবং তোমার ধর্ম তোমার কাছে তাইই। থাক, ওরা বুঝে বলেনি। আমি এখন পর্যন্ত কোন মুসলিম শিক্ষার্থীর কাছ থেকে এমন অভিযোগ পাইনি।
আজ একটু ব্যাতিক্রম ঘটনা ঘটে গেলো আমার জীবনে। বিভিন্ন কাজের জটিলতায় চতুর্থ শ্রেণির ক্লাসের ধর্মের ক্লাসটা আমার নিতে হয়েছে। আমি প্রথমে বললাম, যেহেতু সংখ্যায় কম , তাই আগে ওদের টা পড়ে শোনাই। মুসলিম শিক্ষার্থীরা না না বলে চিৎকার করতে লাগলো। আমিও অযোগ্য শিক্ষক হিসেবে কি করব বুঝতে পারছিলাম না। তারপরেও ওদেরকে থামিয়ে একটি অধ্যায় পড়ানো শুরু করতেই একটু পর দেখলাম অন্যেরা কানে হাত দিয়ে বসে আছে। এর মধ্যে আমার প্রিয় একজন মেধাবী ছাত্রী এবং আমারই সিনিয়র শিক্ষিকার মেয়েও রয়েছে। আমার ধর্মের কথা অন্য ধর্মের মানুষ শুনতে চাচ্ছেনা তা আমায় কোনদিনই বিচলিত করেনি। আমায় যা আহত করেছে তা হলো এই কক্ষে আমার কিছু হিন্দু শিক্ষার্থীও রয়েছে। ওদের এই কোমল মনের আঘাতটার ব্যাপারে আমি কি করব বুঝতে পারছিনা। যেহেতু প্রাথমিক শিক্ষায় আলাদা ধর্মের শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়না। সেহেতু তা যেকোন শিক্ষককেই পড়াতে হবে। যেহেতু শিক্ষকতা আমার ধর্ম সেহেতু আমার কোন শিক্ষার্থী কোন ধর্মের তা আমার ধর্তব্যের বিষয় হতেই পারেনা। প্রায় দুদিন পর পর অভিযোগ পাচ্ছি। একমাত্র সনাতন ধর্মালম্বী শিক্ষক বিধায় এবং নবীন বিধায় তা নিয়ে আমি শিক্ষকদের সাথে আলোচনায় আগ্রহী নই। এর আরেকটি কারণ হতে পারে আরো কিছু ঘটনা। যেমন, আমি আসসালামুয়ালাইকুম অর্থ জানি, আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক। তাই সবাইকে অনেক আগে থেকেই সালাম দিতাম। গড ব্লেস ইউ , যেহেতু একই অর্থ বহন করে। আমার প্রধান শিক্ষিকা একদিন ডেকে আমাকে তা দিতে নিষেধ করলেন। এরপর থেকে আদাব দিতে শুরু করলাম। কিছুদিন বাদে খেয়াল করলাম, আমার আদাবের বিপরীতে আমার প্রানপ্রিয় শিক্ষক শিক্ষিকাগণ মাথাও নাড়াচ্ছেন না। এরপর থেকে কি করা উচিত বুঝতে না পেরে ,কেমন আছেন? জিজ্ঞেস করেই ক্ষান্ত হতে শুরু করি। আমি যখন ছাত্র ছিলাম আমার একজন প্রিয় শিক্ষক ছিলেন নুর হোসেন স্যার । যাকে আমি এখনো দেখা হলে পা ধরেই সালাম করি। তিনিও গর্ব করে বলেন যে আমি তার প্রিয় ছাত্র। যাকে দেখেই আমি শিক্ষক হব মাথায় ঢুকে গিয়েছিল।
আমি ঠিক জানিনা গত ১৪ বছরে এদেশে এমন কি হয়েছে যে এত বিদ্বেষের ফেনা বয়স্ক থেকে শুরু করে কচিকাচার ভেতরেও চলে এসেছে? গত ১৪ বছরে ফেসবুক ফুলে ফেঁপে বড় হয়েছে যা ঘৃণা ছড়ানোর অন্যতম মাধ্যম বলে আমি মনে করি। আমি যদি নূর হোসেন স্যারের মতো একজন আদর্শ শিক্ষক হতে পারি তাহলে কি আমার মুসলিম শিক্ষার্থীরা আমার পা ছুতে চাইবে নাকি অন্য ধর্মের বলে এড়িয়ে যাবে? আমি কি আমার ধর্মের ভিন্নতার কারণে ওদের মনে জায়গা করতে পারবনা? প্রশ্নগুলো আমার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। কিন্তু আমাকে তো শিক্ষক হতে হবে, অনুসরণ করতে হবে আমার মন্ত্র খানা।
"একজন সাধারন শিক্ষক পড়ান
একজন ভাল শিক্ষক ব্যাখ্যা দেন
একজন শ্রেষ্ঠ শিক্ষক শিশুদের অনুপ্রাণিত করেন।"
- কারলাইন্স।
থ্যাংক গড। আমার শিক্ষার্থীদের ধর্ম, বর্ণ, অর্থনৈতিক অবস্থা আমাকে তিল পরিমাণ দ্বিধায় ফেলেনা।
১৪ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৫:১১
ৎৎৎঘূৎৎ বলেছেন: ব্লগের আপনাদের লেখা পড়েই দিন কেটে যায়। মাঝে মাঝে লিখতে বসি। আন্তরিক ধন্যবাদ।
২| ০৭ ই জুন, ২০২২ রাত ১০:১১
নীল-দর্পণ বলেছেন: আপনি যে সমস্যায় পড়ছেন সেটা ভালই জটিল। আমি কিছুদিন শিক্ষকতা করেছিলাম সেখানে সনাতন ধর্মের শিক্ষার্থী ছিল ২/৩ জন ফলে ওদের আমি আলাদা করে ক্লাসে অন্যদের পড়া দিয়ে পড়াতাম বা পড়তে দিতাম। কিন্তু আপনার এখানে শিক্ষার্থী বেশি হলে আমার মনে হয় ক্লাসে ঘটে যাওয়া পুরো ঘটনা প্রধান শিক্ষকের সাথে আলোচনা করলে একটা সমাধান পাওয়া যেতে পারে।
আপনার শিক্ষকতার পথ মসৃণ হোক, উপভোগ্য হোক, শুভকামনা আপনার জন্যে।
৩| ০৭ ই জুন, ২০২২ রাত ১০:২০
নীল-দর্পণ বলেছেন: আপনি একটা কাজ করতে পারেন তা হল, একদিন ইসলাম ধর্মের পড়া আগে পড়াবেন একদিন হিন্দু ধর্মের পড়া। সপ্তাহে দু'দিন ক্লাস হলে এই সপ্তাহের প্রথম দিন হিন্দু ধর্মের পড়া পড়াবেন, সামনের সপ্তাহে প্রথম দিন ইসলাম ধর্মের পড়া। এভাবে ট্রাই করে দেখেন। আর স্কুলে না হলেও স্কুলের বাইরে কোন অভিজ্ঞ শিক্ষকের পরামর্শ নেবেন। পিটিআই এর ট্রেইনিং এর জন্যে যতদ্রুত সম্ভব চেষ্টা করবেন।
শুভকামনা আরো একবার জানাচ্ছি।
১৪ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৫:১৩
ৎৎৎঘূৎৎ বলেছেন: পিটি আইয়ের চতুর্থ টার্মে আছি। আপনার জন্যেও শুভকামনা রইল।
৪| ০৭ ই জুন, ২০২২ রাত ১০:৫২
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
শিক্ষকতাকে আগলে রাখুন হীরার মত,কাঁচ যেনো কাছে না আসে।
১৪ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৫:১৪
ৎৎৎঘূৎৎ বলেছেন: প্রাণপণে তাই করার লক্ষ্য। কতটুকু করতে পারব এই নিয়ে ভয়ে আছি। আন্তরিক ধন্যবাদ আপনাকে।
৫| ০৭ ই জুন, ২০২২ রাত ১১:১০
ভার্চুয়াল তাসনিম বলেছেন: সম্মানিত শিক্ষক,
ইসলাম ধর্মে পায়ে ধরে সালাম করার রীতি নেই। তবে ইসলাম কি বলেছে সে বিষয় নিয়ে একটু ধারণা আমি দিতে পারি। ইসলামে অন্য ধর্মাবলম্বীকে অসম্মান তো করা যাবেইনা,একটা আপত্তিকর শব্দ পর্যন্ত ব্যবহার করা যাবেনা। মানবতার মহান শিক্ষক মুহাম্মদ সঃ এর অনুসারীদের এ শিক্ষা দিয়ে গেছেন। পরবর্তীতে ; কালের বিবর্তনে শিষ্টাচার, নম্রতা, প্রাঞ্জলতাগুণ, ভদ্রতজ্ঞান হারিয়ে কিছু মানূষ রূপান্তরিত হয়েছে পশুতে।ইসলামে শিক্ষকের মর্জাদা অনেক। শিক্ষকের পা ধুয়ে দেয়া মানুষকে প্রথম শিখিয়েছে ইসলাম।
বিদ্বেষ ইসলামে নিষিদ্ধ।
১৪ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৫:১৭
ৎৎৎঘূৎৎ বলেছেন: কেউ আমার পা ধরবে এইটা আমি ভাবতেই পারিনা। সনাতন ধর্মে মা বাবার পরে গুরুর স্থান। ধন্যবাদ আপনাকে।
৬| ০৭ ই জুন, ২০২২ রাত ১১:২৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আমাদের সময়ে এমন সমস্যার উদ্ভব
হয় নি কখনো। আমরা সুর করে পড়তাম।,
পাড়ার সকল ছেলে মোরা ভাই ভাই
এক৷ সাথে খেলি আর পাঠশালে যাই।
কে হিন্দু আর কে মুসলমান তা
খুঁজবার সময় ছিলোনা।
তবে নাড়ু মুরি খুঁজতে
সময় লাগতো না।
১৪ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৫:২১
ৎৎৎঘূৎৎ বলেছেন: আমার বেস্ট ফ্রেন্ড একজন মুসলমান। একজন সাচ্চা মুসলমান। মাঝে মাঝে আমি আর ও মন খারাপ করে বসে থাকি। কি এমন হলো এ কয়দিনে যেখানে আমাকে যিনি ষষ্ঠ শ্রেনীতে ভর্তি করিয়ে দিয়েছেন তিনি একজন মুসলমান। যাকে আমি এখনো কাকু বলেই ডাকি। আর তার ছেলে সনাতন ধর্মালম্বীদের এতো ঘৃণা করে।
৭| ০৭ ই জুন, ২০২২ রাত ১১:২৫
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন:
খুবই দুঃখজনক এবং আগামীর জন্য অশনিসংকেত বটে।
ভারতে মোদিজীর উগ্র হিন্দুত্ববাদী এখন খুল্লাম খুল্লা ভাবে মানুষের মুখে কথ্য ভাষার স্থান পেয়েছে। একবিংশ শতকের অবতার।। মাত্র কিছুদিন আগে পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের আগেও মধ্যবিত্ত নিম্নমধ্যবিত্তদের মধ্যে অফিস কাছারি স্কুল-কলেজে জয় শ্রীরাম বলে নিজেদের জাহির করার যে হিড়িক পড়েছিল তা অন্যান্য সম্প্রদায়ের কাছে ছিল বেঁচে থাকার জন্য রীতিমতো চ্যালেঞ্জিং। যদিও ভোটে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি সাফল্য না পাওয়াতে আপাতত কিছুদিন এই বিষবৃক্ষ প্রবেশ করতে পারেনি ঠিকই কিন্তু ভারতের অন্যান্য রাজ্যে মোদীজির কল্যাণে এই বিষ বাষ্প উচ্চ শিখরে পৌঁছে গেছে।
সংখ্যা লঘুর জীবন ও সম্পত্তি রক্ষার দায়িত্ব সংখ্যাগুরুর। উপমহাদেশের বৃহত্তম দেশ হিসেবে বর্তমান ভারতে সংখ্যা লঘুরা যে নিপীড়নের শিকার হচ্ছে তারই ছিটেফোঁটা প্রতিবেশী বাংলাদেশে প্রতিফলিত হওয়াটা অস্বাভাবিকত নয়।
১৪ ই জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:১৫
ৎৎৎঘূৎৎ বলেছেন: আপনার কাছে অস্বাভাবিক লাগবেনা স্বাভাবিক। ভারত আমার সমস্যা না। আমি বাংলাদেশে থাকি। আর যদি বৃহৎ অর্থে বলতে যাই তাহলে পুরো পৃথিবীই আমার সমস্যা। ভারতে হয় বলে বাংলাদেশে এমন হবে এটা যদি এখন আপনি মেনে নেন তাহলে ভারতের কোন হিন্দু, প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে মন্দির পোড়ায় বলে ওখানে নিরীহ মুসলমানদের উপর অত্যাচার হবে এটা মেনে নেবে। আবার সবাইকে স্বাভাবিক বলে বেড়াবে। আপনি তো দেখি আমার অজস্র বন্ধুর মতোই উদাহরণ দিলেন। কেউ কেউ পৈশাচিক আনন্দ নিয়ে চলে যেতে বলে। কিন্তু ওখানে গিয়ে যদি নিরীহ মুসলমানদের উপর অত্যাচার হওয়া দেখি তাহলে কি আর আমি থাকতে পারব? ধর্মীয় কোন্দল রামু থেকে উইঘুর হচ্ছেতো। রামুতে হবে বলে উইঘুরে হওয়াটা স্বাভাবিক? আবার উইঘুরে হবে বলে রামুতে হওয়াটা স্বাভাবিক? সবাই খালি ভারতের উদাহরণ দেয়। তাদের চেয়ে কতো ভালো আছো? তার মানে অত্যাচার হচ্ছেনা কেন তাই নিয়ে ব্যাকুল থাকতে হবে? আফসোস এটাই যে বাচ্চাগুলোকে শেখাতে পারব বলে মনে হয়না। চেস্টা করবো। মানুষের মধ্যকার শুধুমাত্র দুইটা তফাৎ বোঝাতে যা কেবল ভাল ও খারাপের মধ্যেই সীমাবদ্ব। মনে মনে চাইবো সবাই যাতে সত্যটা পড়ে , সত্যিকারের ধর্মে দীক্ষিত হয়। তা যেই ধর্মই হোক না কেন । যাতে খাঁটি মানুষ হয়।
আর এইটা আমার দেশ । সনাতন ধর্মে আছে, মা ও মাতৃভূমি স্বর্গের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। আমি তাই লালন করি। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।
৮| ০৮ ই জুন, ২০২২ রাত ১২:৩৭
অপু তানভীর বলেছেন: আপনি যে বর্ণনা দিলেন সত্যিই বলতে কি সেটা যদি এভাবে বাড়তে থাকে তাহলে সামনে আমাদের অবস্থান আরও খারাপের দিকে যাবে । আমাদের সময়েও আমার স্কুলে আলাদা কোন ধর্মীয় শিক্ষক ছিল । স্যার আমাদের ধর্ম পড়িয়ে তারপর হিন্দু ধর্মের বই দেখে কিছু পড়িয়ে দিতেন । কিন্তু আমাদের মাঝে তো এই রকম মনভাব ছিল না । সত্যিই অবাক হতে হয় যে কি এমন হয়ে গেল এই কবছরে !
১৪ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৫:৫৩
ৎৎৎঘূৎৎ বলেছেন: ঘৃণার জিতে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশী। আমি মনে করি ঘৃণার উৎপত্তি বঞ্চনার থেকে, অভাব থেকে। কোন ব্যাক্তি কোনকিছুর অভাব থেকেই অপরের ক্ষতি দেখার বা করার ইচ্ছে পোষণ করে। এই ক বছরে ফেসবুক কিছু বঞ্চিত মানুষের ইচ্ছেশক্তির মাধ্যমে অনেক ঘৃণা ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। সবচেয়ে স্পর্শকাতর বিষয় হলো ধর্ম। কিছু খারাপ মানুষ তিলে তিলে অপব্যাখ্যায় , নিজের কাটতি বাড়ানোর জন্য ধর্মকে সাধারণ মানুষের মাথায় ভুলভাবে ইঞ্জেক্ট করেছে। এখন যে মানুষ অভাবে আছে তাদের তো ক্ষোভ প্রকাশ করতে হবে। এই ক্ষোভ প্রকাশের সলতেতে আগুন পড়ছে ধর্মের অপব্যাখায়। বাচ্চাদের ও তারা এটাই শেখাচ্ছে। আমার শিক্ষকগণ আমাকে ভালো ও খারাপের পার্থক্যটা বুঝিয়েছেন। ধন্যবাদ তাদেরকে। আন্তরিক ধন্যবাদ আপনাকে প্রিয় লেখক।
৯| ০৮ ই জুন, ২০২২ ভোর ৬:৩৪
ব্যতীপাত বলেছেন: আপনার লেখায় বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িকতার বিষবাস্প কিভাবে সর্বত্র প্রবেশ করেছে তার সম্যক পরিচয় পেয়ে ব্যাথিত হলাম। ধর্মের প্রসার প্রচার সাম্পদায়িকতা বর্তমান কালে আরও বেড়েছে ।আমাদের শিক্ষায় ধর্ম বাধ্যতামূলক করার ফলে শিশুকালেই ধর্ম বিভেদ তাদের মনে ঢোকান হয়।বর্তমানে মাদ্রাসা মক্তব যেভাবে বেড়েছে, গ্রামে গজ্ঞে ওয়াজ মহফিলে যে ভাবে ঘৃণা ছড়ায়।
তবু আপনি যে ব্রত নিয়ে শিক্ষকতা করছেন তা অনেক মহান , নিশ্চয়ই সার্থক হবে।
১৪ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৫:৫৭
ৎৎৎঘূৎৎ বলেছেন: আমি মনে করি ধর্মের সঠিক ব্যাখ্যা ঘৃণা ছড়ায় না। শিক্ষকতার মাধ্যমে যদি একটুও পরিবর্তন আনতে পারি তাতেই আমি গর্ববোধ করব। আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
১০| ০৮ ই জুন, ২০২২ সকাল ৯:০০
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: কান বন্ধ করে রাখা, যাতে ঐ ধর্মের কথা কানে না আসে- ব্যাপারটা খুবই লজ্জাকর ও আপত্তিকর। শিক্ষার অভাবে পরিবারগুলোতেই এই রেওয়াজ চালু আছে, আর এগুলো আজকে নতুন না, আমার ৫৫-৫৬ জীবনের গোড়া থেকেই এগুলো দেখেছি। তবে, শিক্ষার আলো ব্যক্তি-বিশেষে প্রবেশ করার সাথে সাথে এগুলো কমে আসে, কারো একেবারেই থাকে না, কেউ একেবারেই ছাড়ে না।
শিক্ষকদের নিয়ে আলোচনা ও স্মৃতিচারণ করতে গেলে আমরা আমাদের যে-সব শিক্ষকদের আলোচনা করি, বা স্মরণ করি, তারা বেশির ভাগই হিন্দু। স্কুল-জীবনে হিন্দু-মুসলিম এই পার্থক্য আমাদের মনে কোনোদিন আসে নি, তাদের আচরণেও কোনদিন কোনো বিরূপ কিছু দেখি নি। পা ছুঁয়ে সালাম করার রেওয়াজ এখনো আছে, কিন্তু তা ইসলাম-সম্মত না বলেই জানি। আমি পা ছুঁয়ে সালাম করাকে খুবই অপছন্দ করি।
ছোটোবেলায় হিন্দু টিচারকে, এলাকার সম্মানিত হিন্দু ব্যক্তিকে (এখনো) আমরা 'আদাব' বলতাম। তবে, একটা বিষয় আমার সন্দেহ তখনো ছিল, এখনো আছে, আমরা সবাই তাদেরকে 'আদাব' বলি, তাদের মুখে কোনোদিন 'আসসালামু আলাইকুম' শুনি নি। সম্পূর্ণ উলটো ব্যাপার দেখি আমার চাকরি জীবনে কলিগদের মধ্যে- আমরা 'আদাব' ভুলে গেছি, দেখা হলেই সবাই একে-অপরকে আসসালামু আলাইকুম অ্যান্ড গুড মর্নিং বলছি!
আপনার চাকরির ব্যাপারে আমার সরল পরামর্শ হলো - এই অবস্থায় সব ধরনের বিতর্ক এড়িয়ে চলা। আপনি মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কিছু শেখাতে বা করতে গেলে খামাখা একটা বিতর্ক সৃষ্টি হতে পারে। ছাত্রছাত্রীরা কেবল প্রাইমারিতে পড়ে। বাসায় পরিবারের কাছে ধর্ম সম্পর্কে যে ধারণা পেয়েছে, তার বাইরে কিছু অ্যাক্সেপ্ট করবে না এরা, যদ্দিন না এরা নিজেরা বড়ো হয়ে সেলফ স্টাডিতে জ্ঞান লাভ করে নিজের সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
শিক্ষকরা মহান ও সবচাইতে সম্মানিত ব্যক্তি- সবার আগে নিজের মধ্যে এ বিশ্বাসটা আনতে হবে। পরিতাপের বিষয়, আমাদের অনেক শিক্ষক হীনমন্যতায় ভোগেন যে, তাদের চাকরিটা নগণ্য, বেতন কম, সমাজে দাম নাই, ইত্যাদি। এতে কিছুটা সত্যতা হয়ত আছে, কিন্তু নিজেদের কর্মকাণ্ড দ্বারা সমাজের কিছু ভুল ধারণাকে পালটে দেয়ার দায়িত্বও শিক্ষকদেরই। শিক্ষকরা এখন ব্যবসায়ী- এ ধরনের কথা চালু হয়েছে বেশ আগেই। এই অপবাদটাও দূর করার জন্য সচেষ্ট থাকতে হবে।
আপনি সম্মানিত শিক্ষক। আপনার দ্বারা শিক্ষার আলো চারদিকে ছড়িয়ে পড়ুক, শিক্ষার্থীদের মনের কুঠরীতে আপনার একটা চিরস্থায়ী আসন হোক, এই কামনা রইল।
১৪ ই জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:১১
ৎৎৎঘূৎৎ বলেছেন: অন্তত অফিসের আচরণে আমি হীনমন্যতায় ভুগি। বাচ্চাদের চেহারা দেখলে ভূলে যাই। অল্প বেতন আমাকে কখনোই ভুগায় নি। এর চেয়ে বেশি বেতনের চাকরি আমি করিনি। আমি যদি কখনো এ পেশা থেকে সরে যাই তাহলে অপারগতার জন্যেই সরে যাবো। শিক্ষকতা মহৎ কিন্তু জটিল একটি পেশা। আজও বোর্ডের একটি কমা না দেয়ায় প্রায় পনেরো জন শিক্ষার্থীর খাতায় ওভাবেই রয়ে গিয়েছিলো। বোর্ডের যেকোন জায়গায় যেকোন দৈর্ঘ্যের একটা অর্থহীন দাগ ও তাদের খাতায় স্থান পায়। সুতরাং এটা কঠিন পেশা।
আমি খুবই দুঃখিত বাংলাদেশে শিক্ষকের স্থান দেখে। যদি আমার বাচ্চারা আমার থেকে একটুও শিখে থাকে আর বলে যে আমি শিখিয়েছি তাতেই আমার সন্তুষ্টি । মানুষ একে অন্যের মনে জায়গা নিতে চায়। আমিও ব্যাতিক্রম নই। আমি শুধুমাত্র তাদের মনে থাকতে চাই। ওটাই আমার লোভ। আন্তরিক ধন্যবাদ আপনাকে এতো দীর্ঘ এবং সুন্দর মন্তব্যের জন্য। এটা আমার একটা প্রাপ্তি।
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই জুন, ২০২২ রাত ৯:৩৪
রাজীব নুর বলেছেন: প্রথমে ভনিতা করলেন লিখতে পারি না। জানি না। লেখাটা তো ভালোই লিখেছেন।