নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাঙালী ব্যাপক আবেগঘন জাতি। খালি কান্দে! ক্রিকেটে হারলে বাঙালি কাইন্দ্যা বুক ভাসায়, জিতলেও কান্দে। ভালো একখান রেজাল্ট করলে কান্দে, না করতে পারলে কোন চিপায় হান্দাইয়া গিয়া তারপর কান্দে।
বাঙালি শুধু কান্দে না, হাসে, উৎসবও করে। আবার সেই ক্রিকেট, সাতানব্বুইয়ে আইসিসি চ্যাম্পিয়নশিপে কেনিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ঢাকা শহরে রঙের মচ্ছব যারা দেখেছিল, তারা জানে আবেগী বাঙালি উৎসবও করতে পারে। আমি নিজে দেখেছি, টিএসসিতে এক বীর বাঙালী গাঁটের পয়সা খরচ করে পিকআপ ভর্তি ড্রামে রঙ নিয়ে নিজের বাসার পানি খাওয়ার জগে করে রঙ বিলিয়ে বেড়াচ্ছে উদার হস্তে, বিরামহীন।
এরাম আবেগ বাঙালী বহুত দেখায়।
তবে, কোন কোন সময় বাঙালির এই আবেগ আর আবেগে থেমে থাকেনা। ‘চ্যাত’-এ পরিণত হয়। এই চ্যাত যখন ওঠে, তখন আর হুশ থাকেনা। ‘ওঠ ছেরি তোর বিয়ে’ টাইপ প্রবাদতো আর এমনি এমনি হয়নি!
যদিও সেই কবেকার কোন অনুরোধের আসরে ‘দৃষ্টিপাত’-এ যাযাবর বলেছিলেন, ‘বিজ্ঞান আমাদের দিয়েছে বেগ, কেড়ে নিয়েছে আবেগ’.... কিন্তু আজ প্রযুক্তি আমাদের দিয়েছে সহজেই সেলিব্রেটি হওয়ার সুযোগ। তাই প্রযুক্তির এই রমরমা যুগে বাঙালির এই চ্যাত ইদানিং প্রায়শই চাগায়া ওঠে। আর উপলক্ষটি যদি হয় মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণী, তাইলেতো কথাই নাই।
সামুর ব্লগারদের নিশ্চয় স্মরণে আছে, সম্যককাল আগে নারায়নগঞ্জে একজন স্কুল শিক্ষককে নিজের কুটস্বার্থে অপমানিত করে স্থানীয় এমপি সেলিম ওসমান ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিলেন। ঘটনাচক্রে ওই শিক্ষক ছিলেন সংখ্যালঘূ সম্প্রদায়ের এবং সেলিম ওসমান ঘটনাটার একটা সাম্প্রদায়িক রুপ দিয়ে পার পেতে চাইলেন। ব্যস, আর যায় কোথা! এরাম স্কুপ কিভাবে মিস করবে মিডিয়াগুলো? চেতনাতো এখন পুরোপুরি বাণিজ্যিক।
অমনি, আমরা বাঙালিদেরও চ্যাত উঠে গেল নগদে। সবাই যার যা আছে তাই নিয়ে বের হয়ে আসে রাস্তায়, তারপর কানধরে দাড়িয়ে ক্যামেরার দিকে তাকাতে থাকে গভীর আগ্রহে। সেই সব ছবি প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক মিডিয়াসহ সোশ্যাল মিডিয়াতেও ভাইরাল হয়ে যায়। দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে বিদেশের মিডিয়াতেও জায়গা করে নেয় ছবিগুলো। এরাম একটা উপলক্ষ কেউ ছাড়তে চায়নি। আমাদের সাধারণ, অসাধারণ, বুদ্ধিজীবি, হাবাজীবি, রুপালী পর্দা, ছুডো পর্দার লায়েক নায়ক-নায়িকা, সংস্কৃতি কর্মী, সবাই কান ধরে ছবি উঠাতে থাকে।
সাধু, সাধু। এরাম প্রতিবাদ কে কবে দেখেছে! সেই প্রতিবাদের ধাক্কায় শালা ওসমান সা¤্রাজ্যই টলটলায়মান হয়ে পড়েছিল আলবৎ।
অন্যখবর:
গত ২৭ নভেম্বর ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে সরকারীকরণের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষক-ছাত্রের উপর পুলিশের মৃদু লাঠি চার্জে (২৯তম বিসিএস-এর ভাইভাতে আমার এক বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল মৃদু লাঠিচার্জ এর ইংরেজি কি?) আবুল কালাম আজাদ নামের ৬০ বছর বয়সী একজন শিক্ষকসহ দুজন নিহত হয়েছেন।
শ্রদ্ধেয় শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ, আপনার দুর্ভাগ্য আপনি ঢাকার কাছের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নন, তার উপর আপনি শশ্রুমন্ডিত। তাই নিজের জীবনের বিনিময়েও আপনি মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেননি আলাদা করে। বাঙালির চ্যাতও এবারের মত তাই উঠল না; কোন প্রতিবাদের ছবি আপলোড করে কেউ সেলিব্রেটি হতে পারলনা।
কালেরকন্ঠ:
প্রথম আলো:
২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৩
পদ্মপুকুর বলেছেন: সেটাইতো ঘটনা ভাই, সহজ এবং জনপ্রিয়তা!
২| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:২০
ভ্রমরের ডানা বলেছেন:
একেই বলে হুজুগে বাংগালি, ফাল পাড়ে খালিখালি!
লজ্জাজনক সেই সাথে হৃদয়বিদারক !
২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৩০
পদ্মপুকুর বলেছেন: কিয়ের হুজুগ? বীর বাঙালী!
৩| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৩
ভ্রমরের ডানা বলেছেন:
একটা একটা করে থাবড়ানো দরকার। এখন কই এরা!
৩০ শে নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:২২
পদ্মপুকুর বলেছেন: সে তো দরকারই। জরুরীভাবে দরকার
৪| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৩৬
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: বার বার প্রমাণিত আমাদের দেশের চেতনা একটি বিশেষ গোষ্ঠীর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত...
৫| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৪৪
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আমরা বাঙালীরা আসলেই হুজুগে মাতাল
৬| ১৫ ই মে, ২০১৮ রাত ৩:৪৭
মুহাম্মদ আরিফ হোসেন বলেছেন: বিশেষ গোষ্ঠী বিশেষ ধর্মের মানুষের জন্য চেতনা ফেরি করে । ধিক্কার রইল এই সব ভণ্ডদের প্রতি । খুব ভাল বিশ্লেষণ হইছে ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৮
লোকনাথ বণিক বলেছেন: কানে ধরার প্রতিবাদটি ছিল সহজ এবং জনপ্রিয়তা পাওয়ার উপায় তাই সবাই সেটা করেছে।