নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৯৭৮ সালের ডিসেম্বর মাসে, সোভিয়েত রাশিয়ার গুশেভকা (Grushevka) নদীর কাছে নয় বছর বয়সী ইলেনা জাকোতনোভার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তাকে ভয়ংকর ভাবে কষ্ট দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। সেই সাথে মেয়েটির মুখে কালে অসংখ্যবার ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। এতো বিভৎস ভাবে হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে চারদিকে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এমন কি তখনকার সোভিয়েত কঠোর আইনের পরেও এই জনরোষ থামানো যায় নি। পুলিশ বাধ্য হয়ে মাঠে নামে। পুলিশ তদন্তের মাধ্যমাএ জানতে পারে যে লেনাকে শেষবারের মত আন্দ্রেই চিকাতিলো নামের একজন শিক্ষকের সাথে দেখা গেছে। পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। খুন হওয়ার সময় কোথায় ছিল এমন প্রশ্নে জানা যায় যে, সে সেই সময়ে তার স্ত্রীর সাথে ছিল। তার স্ত্রীও একই কথা বলে। এলিবাই থাকার কারণে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
(এইখানে ইলোনার মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল)
এদিকে জনরোষ বৃদ্ধি পেতে থাকে । সোভিয়েত পুলিশ তখন দেশের দাগী আসামী এবং ধর্ষকদের ধরতে শুরু করে। এদের ভেতরে একজনের নাম আলেকজান্ডার ক্রাভচেস্কো। পুলিশ সমস্ত খুনের দায় তার উপরে চাপিয়ে দেয়। পুলিশের মারের কাছে সে সব দোষ স্বীকারও করে নেয়। পরে তাকে ফায়ারিং স্কোয়াডে গুলি করে হত্যা করা হয়।
তারপর কিছু কাল সব শান্ত থাকে । কিন্তু ১৯৮১ সাল থেকে আবারও একের পর এক অল্প বয়সী মেয়েদের লাশ পাওয়া যেতে থাকে। সব লাশের আলামত একই রকম। একই ভাবে তাদের উপর নির্যাতন চালানো হয়েছে, একই ভাবে তাদের খুন করা হয়েছে। খুনগুলো যে একই মানুষ করছে সেটা যে কেউ বলে দিতে পারে। কিন্তু সোভিয়েত প্রশাসন এই কথা স্বীকার করতে চাইলো না। তাদের মত দেশে সিরিয়াল কিলার থাকতেই পারে না । এসব আমেরিকার জিনিসপত্র। এসব সোভিয়েতে ঘটে না।
প্রথম দিকে মনে করা হল যে এই সব খুন করছে মানুষের অঙ্গ পাচারকারীরা। কারণ খুজে পাওয়া লাশগুলোর দেহের নানান অঙ্গ খুজে পাওয়া যেত না। আবার, এক সময়ে মনে করা হল যে, খুনগুলো কোন শয়তানের পুজারীরা করছে । আবার শহরে এই গুজবও ছড়িয়ে পড়ল যে রক্তের নেশায় মত্ত কোন ওয়্যারউলফ এই খুনগুলো করছে। এছাড়া সোভিয়েত প্রশাসন বিশ্বাস করতো যে তাদের দেশে অশান্তি এবং আতঙ্ক ছড়াতে আমেরিকার ভাড়াটে খুনীরা এই কাজগুলো করছে।
তবে এক সময়ে খুনের সংখ্যা এতোটাই বৃদ্ধি পেতে থাকে যে প্রশাসনের টনক নড়ে । কেবল ১৯৮৪ সালেই পনেরটি এমন নৃশংস খুনের ঘটনা ঘটে। তারা এটা বুঝতে পারে যে এই ব্লেমগেম দিয়ে কাজ হবে না । মস্কো তখন তদন্তের ভার দেন গোয়েন্দা মেজর মিখাইল ফেটিসভের উপরে। প্রশাসন থেকে নির্দেশ যাই আসুক না কেন মিখাইলের বুঝতে কষ্ট হয় নি যে এই খুনগুলোর পেছনে মূলত একজনেরই হাত রয়েছে। তিনি ফসেন্সিক এনালিস্ট ভিক্টর বুরাকোভের সাহায্য নিলেন। বেশ কয়েকটি মৃত দেহের উপরে পাওয়া বীর্য পরীক্ষা করে এটা নিশ্চিত হওয়া গেল যে এই খুনগুলো একই ব্যক্তি করছে। অর্থ্যাৎ সোভিয়েত প্রশাসন মেনে নিতে বাধ্য হল যে এটা আসলে একটা সিরিয়াল কিলারের কাজ।
পুলিশ প্রশাসন অভিযান শুরু করে এবং অবাক করার ব্যাপার হচ্ছে আমাদের আলোচিত সিরিয়াল কিলার সেই অভিযানে সন্দেহভাজন হিসাবে ধরাও পড়ে । কিন্তু এখানে ভাগ্যের কারণে সে ছাড়া পেয়ে যায়। মৃতদেহের উপরে যে মানুষ্য বীর্য পাওয়া গিয়েছিল সেটা অনুযায়ী খুনীর রক্তের গ্রুপ হওয়ার কথা ছিল এবি পজেটিভ । কিন্তু আমাদের সিরিয়াল কিলার রক্তের গ্রুপ বের হল এ পজেটিভ। এ ব্যাপারটা কিভাবে হল? এখানে খুনীর ভাগ্য সহায় ছিল। আমাদের সিরিয়াল কিলার নিজে ছিল একজন নন-সেক্রেটর। অর্থ্যাৎ তার দেহের অন্যান্য তরলের সাথে রক্তের গ্রুপের মিল থাকবে না। এই ব্যাপারটা তখন সোভিয়েত এক্সপার্টদের নজরে আসে নি। এইজন্য কিলার আবারও পুলিশের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে যায়।
আমাদের এই ভাগ্যবান সিরিয়াল কিলারের নাম ছিল আন্দ্রেি রোমানোবিচ চিকাতিলো, ইলেনা জাকোতনোভা্র সাথে যে লোকের সর্বশেষ দেখা হয়েছিল এবং যার স্ত্রীর শক্ত এলিবাইয়ের কারণে যে ছাড়া পেয়েছিল, ইনি সেই স্কুল শিক্ষক। ইতিহাসে চিকাতিলোকে অনেক নামে ডাকা হয়েছে। দি বুচার অব রুস্তভ, দ্য রেড রিপার, দ্য ফরেস্ট স্ট্রিপ কিলার।
সোভিয়েত ইউনিয়নে দুর্ভিক্ষ শেষ হওয়ার তিন বছর পরে, ১৯৩৬ সালে আন্দ্রে চিকাতিলোর জন্ম হয়। দুর্ভিক্ষ শেষ হলেও তার প্রভাব তখনও বেশ ভালই ছিল। তার বাবা মা ছিলেন কৃষক । তারা ছিলেন স্ট্যানলির সমবায় কৃষিফার্মের শ্রমিক যেখানে তাদের বাধ্য করা হত কাজ করতে এবং তাদের কোন বেতন দেওয়া হত না। আন্দ্রেইর বক্তব্য অনুযায়ী মাঝে মাঝে তাদের ঘাস খেয়ে থাকতে হত ক্ষুধা নিবারণের জন্য।
আন্দ্রেইর মা প্রায়ই নাকি তাকে বলত যে তার আগে এক ভাই ছিল। কিন্তু ক্ষুধার কারণে তাকে তারা রান্না করে খেয়ে ফেলেছে। এমন কথা যে যেকোণ বাচ্চার মনের উপরেই প্রভাব ফেলবে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। সত্যিই আন্দ্রেইর আগে কোন ভাই ছিল কিনা সেটা অবশ্য নিশ্চিত ভাবে বলা যাবে না ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যখন সোভিয়েত যুক্ত হল, আন্দ্রেইর বাবা যুদ্ধে যোগ দিতে বাধ্য হল। এক সময়ে সে জার্মান সৈন্যের কাছে ধরাও পড়ল । এদিকে মায়ের সাথে আন্দ্রেই কোনমতে টিকে ছিল। নিজেদের এক কামরার ঘরে সে মায়ের সাথে বসবাস করতে লাগল। তার মস্তিস্কে তরল জমে থাকার সমস্যা ছিল। এছাড়া তার জেনিটাল ইউরিনারী ট্রাক্টরে সমস্যা ছিল। সে বিছানায় প্রস্রাব প্রায়ই করত। এই কারণে মায়ের হাতে মারও খেত অনেক। সেই সময়ে জার্মান সৈন্যরা চারিদিকে প্রবল অত্যাচার চালায়। ১৯৪৩ সালে আন্দ্রেইর এক বোনের জন্ম হয় । একথা বলে দিতে হয় না এটা তার বাবার সন্তান না। তার বাবা তখন কন্সেন্ট্রেশন ক্যাম্পে বন্দী। ধারণা করা হয় যে এই শিশুটি জার্মান সৈন্যদের দ্বারা ধর্ষণের ফলেই জন্ম হয়েছে এবং যেহেতু আন্দ্রেই এক রুমের ঘরে বসবাস করতো, এটাও ধারণা করে নেওয়া হয় যে এই ঘটনা তার চোখের সামনেই ঘটেছিল।
স্কুলে জীবনটাও তার ভাল ছিল না । আন্দ্রেই চিকাতিলোর বাবা যুদ্ধে জার্মান সৈন্যদের হাতে ধরা পড়েছিল। যুদ্ধ শেষে সে যদিও ফিরে আসে তবে তাকে স্থানীয় ভাবে নানান অপমানের শিকার হতে হয়। সেই সময়ে যুদ্ধে বন্দী হওয়াটাকে কাপুরুষত্ব ভাবা হত। বাবার এই অপমান আন্দ্রেই চিকাতিলোকেও সহ্য করতে হত। স্কুলের সময়টা তাকে তীব্র অপমান অপদস্তের ভেতর দিয়েই পার করতে হয়েছে।
তবে এতোকিছুর পরেও সে পড়াশোনা বাদ দেয় নি। পড়াশোনা শেষ করে সে বিয়ে করে । দুই সন্তানের পিতাও হয়। সেই সময়টা তার জীবন স্বাভাবিক ছিল কিন্তু দৃশ্যপট পরিবর্তন হয় যখন সে শিক্ষক হিসাবে কর্ম জীবন শুরু করে। সেটা ১৯৭১ সালের ঘটনা। শিক্ষকতার শুরু থেকেই তার নামে নানান অভিযোগ আসতে শুরু হয়। বিশেষ করে ছাত্রীদের কাছ থেকে। তাকে বারবার বহিস্কার করা হয়। একপর্যায়ে এসে তাকে স্কুলের চাকরি থেকে পুরোপুরি ভাবে বাদ দেওয়া হয়। তখন সে এক ফ্যাক্টরিতে কেরানীর চাকরি নেয়।
১৯৭৮ সালে যখন সে প্রথম খুনটা করে তখনও সে শিক্ষকই ছিল। এই খুনের দায় গিয়ে পড়েছিল আলেকজান্ডার ক্রাভচেস্কোর উপরে। তারপরের তিন বছর সে কোনো খুন করে নি। তবে ১৯৮১ সালে সে যখন কেরানীর চাকরি নেয় তখন থেকে তার খুনের নেশা পেয়ে বসে। এই সময়ে একটা অন্য রকম ঘটনা ঘটে। অল্প বয়সী লারিসা নামের এক মেয়েকে মদের লোভ দেখিয়ে সে ডন নদীর ধারে নিয়ে যায় । তীরের নির্জন স্থানে এসে সে লারিসাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে কিন্তু তার যৌনাঙ্গ উত্তেজিত হয় না । নিজের পুরুষ্যত্ব আপমান হতে রক্ষা পেতে সে তখন লারিসার মুখে বালি ঢুকিয়ে দিয়ে তারপর গলা টিপে হত্যা করে। তারপর তার দেহের নানান স্থানে কামড়ে ক্ষতবিক্ষত করে ফেলে ।
আন্দ্রেই চিকাতিলোর খুনের ধরণ ছিল আলাদা । সে তার শিকারের দেহ ভয়ংকর ভাবে কাটাছেড়ে করত। মুখে ধাড়ালো ছুরি দিয়ে বারবার পোঁচ দিত। দেহের নানান স্থানে ছুরি চালাত । সে সাথে অঙ্গ কেটে নিত। তার সব থেকে পছন্দের কাজ ছিল চোখ উপড়ে ফেলা, নাক জিহবা কেটে নেওয়া। অনেক ভিক্টিমের এই অঙ্গ পাওয়া যায় নি।
আন্দ্রেই চিকাতিলোকে ধরার চেষ্টা যখন ব্যর্থ হচ্ছিল তখন ভিক্টর বুরাকোভ সিরিয়াল কিলারের প্রোফাইল তৈরির জন্য স্বনামধন্য সাইকিয়াট্রিস্ট ড. বুখানোভস্কির সাহায্য নেন। যদিও এই বুখানোভস্কির সাহায্য নেওয়াটা মস্কো বিশেষ পুলিশ প্রশাসন ভাল ভাবে নিল না । তাদের হাসি ঠোট্টা করতে লাগল । বুখানোভস্কি অবশ্য দমে গেল না। সে নিজের দক্ষতা দিয়ে কাজ চালিয়ে গেল। অপরাধ ঘটার বেশ কয়েকটা স্থান পরিদর্শন এবং পরীক্ষা করে ৬৫ পাতার এক রিপোর্ট তৈরি করল । সেই রিপোর্টে প্রায় নির্ভুল ভাবে আন্দ্রেইর চরিত্র ফুটে ওঠে।
আন্দ্রেই ১৯৮৪ সালটাতে সব থেকে বেশি খুন করে । পনের জন। অন্য দিকে ১৯৮৫ সাল থেকে ১৯৮৭ সালে এই সংখ্যাটা কমে যায় একেবারে । তবে ১৯৮৮ সালে আবারও খুনের সংখ্যা বাড়ে । ১৯৯০ সাল পর্যন্ত আরও ১৫ জনকে মেরে ফেলে সে। তখন পুলিশ আবারও তৎপর হয়ে ওঠে। নারী পুরুষ মিলিয়ে সব মিলিয়ে ৫২/৫৩ জন তার হাতে মারা পড়ে।
ভিক্টিম
১৯৯০ সালের ৬ নভেম্বরের ঘটনা। সেদিন ডনলেসখোজ স্টেশনের কাছে একজন পুলিশ অফিসার রুটিন টহলের কাজে ছিলেন । সেই সময়ে তিনি আন্দ্রেই চিকাতিলোকে রাস্তা দিয়ে হেটে যেতে দেখেন। আন্দ্রেই চিকাতিলোর সম্পূর্ণ শরীরে কাদামাটি লেগেছিল। কানের কাছে একটু রক্তও লেগে থাকতে দেখেন । তবে এছাড়া অপরাধের কোন প্রমান ছিল না পুলিশ অফিসারের কাছে । তাই নাম-ধাম জিজ্ঞেস করে আন্দ্রেই চিকাতিলোকে যেতে দেন । তবে একই সাথে থানায় এই ঘটনার ব্যাপারে রিপোর্ট করে রাখেন। সপ্তাহ খানেক পরে ডনলেসখোজ স্টেশনের কাছের জঙ্গলে এক মহিলার লাশ পাওয়া যায় । লাশ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল যে কয়েক দিন আগে এই মহিলাকে খুন করা হয়েছে। সন্দেহের তালিকায় চলে আসে আন্দ্রেই চিকাতিলো। এছাড়া তারা চিকাতিলোর উপরে আরও ভাল ভাবে খোজ খবর নিয়ে তারা দেখে যে চিকাতিলো যে যে এলাকাতে গিয়েছে এই কয় বছরে সেই সেই এলাকাতে খুণের ঘটনা ঘটেছে। তারা আর খুব বেশি অপেক্ষা করল না। একই মাসের বিশ তারিখে তাকে গ্রেফতার করা হল।
কিন্তু গ্রেফতারের পরে আন্দ্রেই চিকাতিলো নিজের দোষ স্বীকার করল না। বরং এমন একটা ভাব করল যেন সে কিছুই করে নি। ইতিপূর্বে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল এবং সে নন-সেক্রেটর হওয়ার কারণে আদালতে তার দোষ প্রমাণ করা খুবই কঠিন হয়ে যাবে । একমাত্র উপায় হচ্ছে নিজের মুখে দোষের স্বীকারোক্তি। কিন্তু সেটা কিভাবে করানো যায় ! তখনই দৃশ্যপটে আবার হাজির হলেন ড. আলেকজান্ডার বুখানোভস্কি। তিনি ইতিপূর্বে আন্দ্রেই চিকাতিলোকে নিয়ে ৬৫ পাতার প্রোফাইল তৈরি করেছিলেন। তিনি খুব ভাল করে আন্দ্রেই মনের অবস্থা জানতেন। এই প্রোফাইলটাই সে আন্দ্রেই চিকাতিলোকে পড়তে দিলেন। এবং এখানেই সব থেকে অদ্ভুত ব্যাপারটা ঘটলো। নিজের উপর তৈরি করা প্রোফাইল পড়ে আন্দ্রেই চিকাতিলো স্বীকার করে নিল সে এই প্রোফাইলের ব্যক্তিটা সে নিজে। এবং নিজের কৃত সমস্ত দোষ স্বীকার করে নেয়।
বিচার কার্য চলা কালে আন্দ্রেই নিজেকে মানসিক ভাবে অসুস্থ প্রমাণের অনেক চেষ্টা করে তবে এতে বিচারের উপরে কোন প্রভাব পড়ে না । তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ১৯৯৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি মাথার গুলি করে সেটা কার্যকর করা হয়। সোভিয়েত রাশিয়ার প্রথম সিরিয়ালের জীবনের সমাপ্তি এভাবেই হল। ১৯৭৮ সাল থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত আন্দ্রেই চিকাতিলো ৫৩ জন নারী পুরুষকে হত্যা করেছিল। এদের ভেতরে সব থেকে কম বয়সী ছিল ৯ বছরের ইলেনা এবং সব থেকে বেশি বয়সী ছিল ছিল ৪৪ বছর বয়স্ক মারটা রাইয়াবেনকো ।
আন্দ্রেই চিকাতিলোর জীবন নিয়ে মুভি তৈরি হয়েছে কয়েকটা । Citizen X (১৯৯৫) ও Evilenko (২০০৪) অন্যতম । এছাড়া তিনটি ননফিকশন বই লেখা হয়েছে এই আন্দ্রেই চিকাতিলোর ঘটনা নিয়ে । এছাড়া এবশ কয়েকটা টিভি শো তৈরি হয়েছিল সেই সময়ে।
তথ্যসুত্রঃ
Andrei Chikatilo
From Teacher to Perverted Serial Killer
Andrei Chikatilo
বই- দ্য মোস্ট ওয়ান্টেড গেম - অন্বোয় আকিব
ছবিসুত্র
one, two, Three
১৯ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:০৩
অপু তানভীর বলেছেন: এই ব্যাপারটা নিয়ে আমার নিজেরও সন্দেহ ছিল । একটা জায়গাতে পেয়েছিলাম এটা । এডিট করে ঠিক করে দিলাম ।
২| ১৯ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:০৮
আমি সাজিদ বলেছেন: আমারও ভুল হতে পারে।
চমৎকার পোস্ট। বাংলাদেশের একজন আলোচিত সিরিয়াল কিলার ছিল মনে আছে?
১৯ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:১৯
অপু তানভীর বলেছেন: আপনি যেহেতু ডাক্তার আমার থেকে আপনার ভুল হওয়ার সম্ভবনা আমার থেকে কম !
৩| ১৯ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:৫৬
ডার্ক ম্যান বলেছেন: রাশিয়ার সবচেয়ে আলোচিত চরিত্র রাশপুটিন। একে সিরিয়াল কিলারদের চেয়ে বেশি ভয়ংকর মনে হয়
১৯ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:১২
অপু তানভীর বলেছেন: রাশপুটিন ভয়ংকর কেন হবে? আপনি তাকে রহস্যময় বলতে পারেন !! ভয়ংকর তো নয় !
৪| ১৯ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:৫৭
আরইউ বলেছেন:
@সাজিদ,
ব্রেনে সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইডের এবনরমাল বিল্ডআপ, সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইডের ফ্লো-এর সমস্যা এসবের সাথে নিউরোজেনিক ব্লাডার ডিজফাংশনের সম্পর্ক আছে। নিউরোজেনিক ব্লাডার ডিসফাংশন ঘটে যখন নার্ভাস সিস্টেম আর ব্লাডারের মধ্যে স্বাভাবিক যোগাযোগ ব্যাহত হয়। যখন কারো হাইড্রোসেফালাস হয়, ব্রেনে সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড ঠিকঠাক রি-আ্যবজর্ব হয়না বা হতে পারেনা। এরফলে ব্রেনে অ্যাবনরমাল ফ্লুইড বিল্ডআপ হয়, যা ব্রেনের বিভিন্ন পার্টে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি প্রেসার ক্রিয়েট করে। সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইডের ফ্লো-এর সমস্যা হলে তা ব্লাডার কন্ট্রোলে সমস্যা করতে পারে। আপনি অবশ্যই জানেন অতিরিক্ত সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড ব্রেনের ভেতরের চাপ বাড়াতে পারে, এবং এই অতিরিক্ত প্রেসার আমাদের ব্লাডার ফাংশন কন্ট্রোল করে যে নার্ভগুলো তার উপর প্রভাব ফেলতে পারে। আর নার্ভস-এর সিগনালিং সিস্টেমে ডিসরাপশান এর ফলাফল হতে পারে নিউরোজেনিক ব্লাডার ডিজফাংশন (ইনক্লুডিং সিম্পটমস লাইক ইউরিনারি ইনকনটিনেনস্, রিটেনসান, ব্লাডার পুরোপুরি খালি না হওয়া ইত্যাদি)।
৫| ১৯ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১০:০৮
আরইউ বলেছেন:
অপু,
ধন্যবাদ, লেখাটা পড়ছি। ১৯৭৮-সালে ১ম খুন... সোভিয়েত রাশা-র প্রথম সিরিয়াল কিলার? সোভিয়েট রাশার-র শুরু সম্ভবত ১৯২০-এর দিকে (বা একটু আগে)। ১৯২০ ধরে নিলেও ৫৮ বছরে প্রথম সিরিয়াল কিলার পাওয়া গেলো! অবশ্য হতে পারে এই কিলার বেশি পরিচিত। সিটিজেন এক্স চমৎকার একটা ফিল্ম!
ভালো থাকুন।
২২ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:২৫
অপু তানভীর বলেছেন: এই প্রশ্নের উত্তর কিন্তু পোস্টেই আছে। সোভিয়েতের সেই সময়ে প্রশাসন যা বলতো তাই । তাদের দেশে সিরিয়াল কিলার এই ব্যাপারটা তারা নেমেই নেবে না । এই কারণে যদি আগে কোন সিরিয়াল কিলার থাকেও সেটা তারা জোর করে অন্য ভাবে হ্যান্ডেল করেছে । মুভিটা আমিও দেখেছি । চমৎকার একটা মুভি সত্যিই।
৬| ১৯ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১০:৩৫
আমি সাজিদ বলেছেন: আমি আসলে বুঝাতে চেয়েছি, এই শারীরিক সমস্যাই তাকে সিরিয়াল কিলার বানিয়েছে কিনা, সে বিষয়টিতে নিশ্চিত নই।
২২ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮
অপু তানভীর বলেছেন: তবে আপনার মন্তব্য অন্য যে কারো থেকে বেশি যুক্তিযুক্ত। আপনি পেশায় ডাক্তায় যেহেতু...।
৭| ১৯ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১০:৪৭
আরইউ বলেছেন:
@সাজিদ,
ওহ! আমি আপনার উপরের মন্তব্যটা তাহলে ঠিকমতো বুঝতে পারিনি। দুঃখিত।
ওনার ঐ শারীরিক সমস্যাই তাকে সিরিয়াল কিলার বানিয়েছে এটা সম্ভবত শতভাগ নিশ্চয়তার সাথে বলা সম্ভব নয়। তবে আমি যতটুকু বুঝি - নিউরোজেনিক ব্লাডার ডিজফাংশনের সাথে সাইকোলজিকাল ডিসট্রেস, এংজাইটি, ডিপ্রেশান এসবের সম্পর্ক রয়েছে। এরফলে সেল্ফ ইস্টমে সমস্যা, নিজের বডি ইমেজ নিয়ে একধরণের হিনমন্যতা, সোসাল এংজাইটি এসব হতে পারে। এগুলো একটা এডেড ফোর্স হিসেবে কাজ করতে পারে, তবে সিরিয়াল কিলার বলতে আমরা যা বুঝি তার জন্য অন্যান্য জেনেটিক, সোসাল, এনভায়রনমেন্টাল ইলিমেন্টও হয়ত ছিল।
ভাল থাকুন।
৮| ১৯ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১১:৫৮
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- নানান সময়ে নানা যায়গার অনেকগুলি সিরিয়াল কিলারের কথা পড়েছি। প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেখা গেছে সিরিয়াল কিলারের শিশু ও কৈশোর কাল নানান যন্ত্রনায় কেটেছে। এর ক্ষেত্রেও তাই দেখলাম।
- লিখাটা চমৎকার হয়েছে। + রইলো।
২২ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:২৬
অপু তানভীর বলেছেন: হ্যা এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট । শৈশবটা মানুষের জীবনেে খুব গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে ।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ !
৯| ২০ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:৩০
তানজীর আহমেদ সিয়াম বলেছেন: একজন অক্ষম ব্যাক্তি কিভাবে ২ বাচ্চার বাবা হয় ???
২২ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:২৭
অপু তানভীর বলেছেন: না সে অদক্ষ মানে অক্ষম ছিল না । প্রতিটা মেয়ে ভিক্টিমকেই সে ধর্ষণ করতো বা করার চেষ্টা করতো। তবে তার যৌন সমস্যা ছিল ।
১০| ২০ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১:৩১
জুল ভার্ন বলেছেন: অনেক দিন আগে Encyclopædia Britannica তে এমন একটা লেখা পড়েছিলাম। সেখানে আরও একজন আন্দ্রেই চিকাতিলো নামক সিরিয়াল কিলারের কথা উল্লেখ আছে।
২২ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:৩০
অপু তানভীর বলেছেন: সম্ভবতই সেই একই জন । ইতিহাসে আন্দ্রেই চিকাতিলো একজনই আছে ।
১১| ২০ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩
নতুন বলেছেন: ২০২৪ এ পুলিশ এবং সাধারন মানুষের কাজগুলি দেখে অবাক লাগে। আমাদের চারপাশেই অনেক সাইকো আছে।
পুলিশের সাধারন মানুষের উপরে গুলি, দলীয় সন্ত্রাসীদের সাধারন মানুষের উপরে আক্রমন। গনপিটুনি দিয়ে হত্যা, রক্তাক্ত মানুষকে ঝুলিয়ে রাখা, গানগেয়ে পিটিয়ে হত্যা।
এই রকমের সিরিয়াল কিলার অথবা যারা খুনিদের মনস্তত্ব নিয়ে গবেষনা করা উচিত।
২২ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:৩১
অপু তানভীর বলেছেন: আওয়ামী আমলে কিছু পুলিশ সেই সব সিরিয়াল কিলারে থেকে কম ভয়ংকর নন । এদের বিচারের সাথে সাথে মানসিক অবস্থাও পরীক্ষা করা দরকার।
১২| ২২ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৮
আরইউ বলেছেন:
খেয়াল করেছি, অপু। বিষয়টা সম্ভবত "প্রথম সোভিয়েত রাশা স্বীকৃত"!
২ নং এ সাজিদের প্রশ্নের উত্তর সম্ভবত "এরশাদ সিকদার"। বাংলাদেশে একজন গোরখাদক ছিলেন; নাম যতটুকু মনে পরে "খলিল" বা "খলিল উল্লাহ্"।
ভালো থাকুন!
২৩ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৯:৫৯
অপু তানভীর বলেছেন: আমারও মনে হয়েছিল যে এরশাদ শিকদার হবে । এটা নিয়ে আজকে একটা পোস্ট লেখা হয়েছে। এই যে লিংক।
১৩| ২২ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৩
স্প্যানকড বলেছেন: অপু ভাই আপনার একটূ হেল্প দরকার । পুরনো কিছু পোষ্টে এডিট এবং ড্রাফট অপশন খুঁজে পাচ্ছি না । কি করলে এডিট এবং ড্রাফট অপশন পাবো ? আমাকে জানালে খুব উপকৃত হবো । ধন্যবাদ ।
২৩ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৯:৫৯
অপু তানভীর বলেছেন: আপনার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করি বুঝতে পারবেন । না কাজ হলে আবারও জিজ্ঞেস করতে পারেন।
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫
আমি সাজিদ বলেছেন: ইন্টারেস্টিং।
মস্তিষ্কের ভেতরে সিএসফের ( এক ধরনের তরল) সঠিক প্রবাহের সমস্যার কারণে, হাইড্রোকেফালাস হয়ে তা ব্লাডারের ফাংশনকে( নিউরোজেনিক ব্লাডার ডিসফাংশন)
বাধাগ্রস্ত করেছে। কীভাবে? মস্তিষ্কের উপর অতিরিক্ত তরল জমে থাকা জনিত চাপ থেকে এই সমস্যার সূত্রপাত। মজার বিষয় মস্তিষ্কের যে অংশগুলো ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণ করে, তার উপরে চাপের কারণেও পারসোনালিটি ডিস অর্ডার হতে পারে। ধারণা করলাম মাত্র।