নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সন্ধ্যা হয়ে এসেছে । সূর্য ডুবে গেলেও, এখনও পুরোপুরি অন্ধকার নামেনি । রিক্সা নিয়ে যখন মেয়েদের হলটা পার হচ্ছিলাম তখনই চোখটা আটকে গেল গেটের কাছে । বেশ কয়েকজন দাড়িয়ে আছে ব্যাগ নিয়ে । কারো আসার জন্য অপেক্ষা করছে । কেউ কেউ আবার নিজেই রিক্সা ডেকে উঠে চলে যাচ্ছে যে যার গন্তব্যের দিকে ।
আজকে দুপুরের দিকে আমাদের ক্যাম্পাসে তুমুল মারামারি বেঁধে গেছে সরকারিও দলের দুপক্ষের মধ্যে । শোনা যাচ্ছে কয়েকজন নাকি মারাও গেছে । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের আনার জন্য তাই কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্ট কালের জন্য ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষনা করেছে আর সেই সাথে রাত আটটার ভেতরেই হল খালি করার নির্দেশ দিয়েছে । তাই আমরা সবাই যে যার মত বাসার দিকে রওনা দিতেছি ব্যাগ নিয়ে । মেয়ে গুলোও ঠিক সেই উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছে ।
রিক্সাটা হলের সামনে থামাতে বললাম ! সুপ্তি ব্যাগ হাতে নিয়ে দাড়িয়ে আছে গেটের এক পাশে । আমাকে এখনও দেখে নি । আমি রিক্সা থেকে নেমে ওর সামনে যেতেই একটু চমকে উঠলো । আমার দিকে কয়েক পলক তাকিয়ে রইলো কোন কথা না বলে । আমি বললাম
-বাসায় কিভাবে যাবে ?
সুপ্তি কোন কথা না বলে চুপ করে রইলো । মনে ও কিভাবে বাসায় যাবে সেটা নিয়ে ও নিজে খানিকটা চিন্তিত । আমি আবার বললাম
-বাসায় ফোন দিয়েছিলে ?
-হুম !
-কি বলল ?
-আমাদের একখানে এক মামা আছে দুর সম্পর্কের । উনার বাসায় যেতে বলল । ভাইয়ার পক্ষে এখন আসা সম্ভব না । ভাইয়া কাল আসবে !
আমি জানি কেন আসা সম্ভব না । আমার আর সুপ্তির বাসাটা একই জায়গায় । সেখান থেকে শহরে অর্থ্যাৎ যেখান থেকে ঢাকার গাড়ি ছাড়ে সেখানে আস্তেই মোটামুটি ৩/৪ ঘন্টা লেগে যায় । আর ওর ভাইয়া যদি রওনাও দেয় তাহলে ঢাকার দিকে ছেড়ে আসা শেষ বাসটা ধরতে পারবে না । আর ধরতে পারলেও এখানে আস্তে আস্তে আরও ছয় সাত ঘন্টার ব্যাপার । এতো সময় ও কিভাবে এখানে থাকবে সেটা একটা বড় প্রশ্ন !
আমি বললাম
-তা এখানে দাড়িয়ে কেন আছো ? অবস্থা খুব বেশি ভাল লাগছে না । আবার মারামারি বাঁধতে পারে । তোমার ঐ মামার বাসা কোথায় ?
সুপ্তি কোন কথা না বলে চুপ করেি দাড়িয়েই রইলো । আমার কেন জানি মনে হল ও ঠিক ওর মামার বাসায় যেতে রাজি না । কোন একটা সমস্যা নিশ্চয়ই আছে । নয়তো এখনও এখানে দাড়িয়ে থাকার কোন মানে নেই । চাইলেই চলে যেতে পারতো । আমি বললাম
-ঐ মামার বাসায় যেতে চাও ?
কোন কথা না বলে ও কেবল মাথা ঝাকালো । যেতে চায় না ।
-তাহলে ?
কোন কথা না বলে সুপ্তি আবারও চুপ করে দাড়িয়েই রইলো । একবার মনে হল যেতে না চাইলে আমি কি আমি যাই আমার মত কিন্তু কেন জানি চলে আসতে পারলাম না । বললাম
-আমি যাচ্ছি বাসায় । তুমি চাইলে আমার সাথে আসতে পারো । যদি তোমার এবং তোমার পরিবারের কোন সমস্যা না হয় !
সুপ্তি আমার দিকে একটু তাকিয়ে আবার অন্য দিকে তাকালো । সন্ধ্যার এই অম্লাম আলোতে ওর মুখের যেন আমি খানিকটা অভিমান দেখতে পেলাম । কার প্রতি সেটা আমি ঠিক বলতে পারবো না ! আমি আবার বললাম
-যেতে চাও ?
সুপ্তি কোন কথা না বলে কেবল মাথা ঝাকালো । কেবল একটাবার । মেয়েটা যেতে চায় !
আমি বললাম
-তাহলে বাসায় জানানোর দরজার নেই । কারন তোমার বাবা কিংবা ভাই যদি আমাকে আর তোমাকে এক সাথে দেখে তাহলে ঠিক ঠিক ঝামেলা বেঁধে যাবে । আমি কোন ঝামেলা চাই না । আমি তোমাকে বাসা পর্যন্ত দিয়ে আসবো । ঠিক আছে ?
-আচ্ছা !
মুখে হাসি না দেখলেও আমার মনে হল আমার কথা শুনে ও খুশিই হয়েছে ।
আমি ওকে নিয়ে রিক্সা উঠে বসলাম । রিক্সা যখন উঠে বসলো তখনও খানিকটা সন্দেহ জেগে রইলো । আমি বললাম
-আচ্ছা তুমি তোমার ঐ মামার বাসায় যেতে চাইলে না অথচ আমার সাথে যেতে রাজি হলে, ব্যাপারটা কি ?
সুপ্তি বলল
-ঐ লোকটাকে আমার ঠিক পছন্দ না । আর ওনার এখান বাসায় বউ নেই বাপের বাসায় গেছে । ওনার ঠিক.....।
কথাটা বলতে ওর সংকোচ হচ্ছে বুঝতে পারলাম । আমি ওকে বাঁচিয়ে দিয়ে বললাম
-তা আমাকে ঠিকঠাক মত বিশ্বাস হয় তো ! মানে আমি তোমাদের প্রতিপক্ষ বাড়ির ছেলে । যদি কিছু করে বসি !
আমার কথার কোন উত্তর না দিয়ে সুপ্তি আমার দিকে খানিকটা সময় একভাবে তাকিয়েই রইলো । তারপর একটা হেসে বলল
-তাই ? পারবে না !
-কেন ? এতো কনফিডেন্ট হচ্ছো কিভাবে ?
-আমি জানি ! তোমাদের বাসার মানুষ গুলোর মত নও তুমি !
-তার মানে কি আমার বাসার অন্য কেউ হলে তোমার উপর হামলা করতো ?
-আমি সেটা মিন করি নি । তুমি একটু আগে যেমন করে আমার বাসার মানুষদের কে বলল !
-আচ্ছা ! প্রতিশোধ ! হা হা হা !
সুপ্তি বলল
-মনে আছে ঐদিনের কথা ?
-কোন দিন ?
-ঐ যে যেদিন আমাকে টিজ করেছিলে ? আম বাগানটার সামনে ?
আমার বেশ ভাল করেই মনে আছে । আমাদের গ্রামে দুইটা চেয়ারম্যান বাড়ি আছে । একটা মতি চেয়ারম্যান আর আসাদ চেয়ারম্যান । সুপ্তি মতি চেয়ারম্যানের মেয়ে । ওদের সাথে আমার বাড়ির লোকজনের সেই কবে থেকেই শত্রুতা । দুইজন দুই বাড়ির লোকজনদেরকে দেখতে পারে না । একবার ওর বাবা চেয়ারম্যান হয়তো আরেকবার আমার বাবা । ক্ষমতা আর প্রভাব প্রতি-পত্তিতে কেউ কারো থেকে কম না । তাই একটা ঠান্ডা যুদ্ধ লেগেই থাকে সব সময় । আগে অবশ্য মাঝে মাঝে দুই বাড়ির ভেতরে মারামারিও লেগে যেত । তবে এখন সেরকম হয় না । তবুও গ্রামের লোকজন আমাদের দুই বাড়ির মানুষজনদের নিয়ে বেশ ভয়ে ভয়ে থাকে । কখন কি হয়ে যায় কেউ বলতে পারে না । তবে আমার বাবারা দুজনেই বেশ বয়স হয়ে গেছে । আগের মত শত্রুতা না থাকলেও সেই ভাবটা ঠিকই আছে দুজনের মাঝে !
সুপ্তি মতি চেয়ারম্যানের মেয়ে হওয়া সত্ত্বেও মাঝে মাঝে আমার এলাকার কিংবা আমার বাবার কিছু চ্যাংড়া পুলাপাইণ ওকে ওকে টিজ করতো । তখন ও স্কুলে পড়তো । অন্য মেয়ের মত সুপ্তি সেটা কিছুতেই সহ্য করতো না । হাতে কাছে যা পেত সে গুলো ছুড়ে মারতো । ওর ছুড়ে দেওয়া ইটের আঘাতে অনেকের মাথা ফেটে গেছে । তাই আমাদের পুলাপাইণ ওকে নাড়তে আরও বেশি মজা পেত । আমি এই টিজিং এ অংশ না নিলেও দেখতাম । একদিন কি মনে হল আম বাগানের কাছে আসতে সুপ্তিকে টিজ করা শুরু করলাম । তখন সবে স্কুল শেষ করে কলেজে যাওয়া শুরু করেছি । সুপ্তি সামনে এসএসসি দিবে । আমি ভেবে ছিলাম আমাকেও ও কিছু নিয়ে ঠিক ঠিক তাড়া করবে । কিন্তু আমার মুখ থেকে টিজ শুনে সুপ্তি একদম চুপ করে গেল । আমি নিজে অবাক না হয়ে পারলাম না । আরও অবাক হয়ে গেলাম যখন ওর চোকখে পানি দেখলাম ।
পরদিন সকালে যখন আবার ওর স্কুলের যাবার সময় হল আমি একটা কাগজে বড় করে "সরি" লিখে সেই আম বাগানেই টাঙ্গিয়ে রাখলাম । জানতাম যে সুপ্তি এটা নিশ্চিত দেখবে । হলও তাই । ও কিছুটা সময় সেই কাগজটা ডিকে তাকিয়ে তারপর আমার দিকে তাকালো । তারপর মাথা নিচু করে চলে গেল । এরপর থেকে আমি আর কোন দিন ওকে টিজ করি কিংবা আমাদের কোন ছেলেদের কেও সেটা করতে দেই নি । সেগুলো অবশ্য কয়েক বছর আগের কথা ! আমি বুঝলাম না ও হঠাৎ এই কথা কেন বলল !
আমি বললাম
-হ্যা মনে আছে ! কেন ?
-না এমনি ! তুমি চাইলেই আমার সাথে কিছু করবে না আমি জানি ! বুঝেছো !
বাসে উঠে গাড়ি ছাড়তে খুব বেশি সময় লাগলো না । পুরো বাস জুড়েই সুপ্তি আমার সাথে টুকটাক কথা বলতে লাগলো । আমার সত্যি মনে হল না ওর বাবার সাথে আমার বাবা এমন শত্রুতা আছে । মনে হতে লাগলো আমাদের কত দিনের চিন-পরিচয় । অবশ্য চিন-পরিচয় যে অল্প দিনের না, সেটা তো সত্যি । আমার বাবা একটা দিন নাই যে মতি চেয়ারম্যান কে গালি দেন না । অবশ্য মতি চেয়ারম্যানেরও নাকি আমার বাবার মতই অবস্থা । আমার দুটো ভাইও হয়েছে তেমনই । বাবাদের শত্রুতা ছেলেদের ভেতরে প্রবাহিত হয়েছে । কিন্তু মেয়েটা মনে সেরকম নয় বোঝাই যাচ্ছে ।
কথা বলতে বলতে একটা সময়ে আমরা দুজনেই ঘুমিয়ে পড়লাম । যখন জাফরপুর সদরে পৌছালাম তখন রাত প্রায় দুইটা । আমি তাকিয়ে দেখি বাস থেকে গেছে সবাই নামা শুরু করেছে । সুপ্তি আমার কাধে মাথা রেখেই ঘুমিয়েছে । কয়েক মুহুর্ত আমি ওর দিকে তাকিয়ে থেকে ওকে ডাক দিলাম ।
আসার সময় আমি ভাইয়াকে ফোন করে বলে রেখেছিলাম । আমাদের বাসায় রঘু মিয়াকে যেন সদরে পাঠিয়ে দেয় নছিমন নিয়ে । আমাদের এলাকায় যাওয়ার জনপ্রিয় যানবাহন হচ্ছে এই নছিমন । ভ্যানের সাথে স্যালো-মেশিন লাগিয়ে বানানো । অবশ্য বাসও চলে তবে সেটা সন্ধ্যার পরপরই বন্ধ হয়ে যায় । এগুলো মাল আনা নেওয়ার কাজে খুব চলে ।
আমি সুপ্তিকে নিয়ে নামতেই রঘু মিয়াকে দেখতে পেলাম । আমাকে নামতে দেখেই এগিয়ে এল । কিন্তু আমার সাথে সুপ্তি কে দেখে অবাক হয়ে বলল
-ভাইজান আপনের সাথে এইটা কেডা ? মতি চেয়ারম্যানের মাইয়া ?
-হুম !
-আপনার আব্বা জানলে কি হইবো ভাবছেন একবার ?
-আব্বাকে কে বলবে ? তুমি ?
রঘু মিয়া খুব ভাল করেই বুঝে গেল আমি ঠিক কি বোঝাতে চেয়েছি । আর কথা বলল না । আমি আর সুপ্তি উঠে বসলাম নছিমনে ।
সুনশান নিরবতা দিয়ে ভটভট করে রঘু মিয়ার নছিমন এগিয়ে চলছে । সুপ্তি আমার পাশে বসে আছে । একটা ঝাকি লাগতেই আমার হাত চেপে ধরলো । বলল
-এই গাড়িতে করে মানুষ কিভাবে যায় এখনও বুঝলাম না ।
-তুমি চড়ো নাই এটাতে ?
-জীবনেও না । ভাইয়া সব সময় বাইক নিয়ে আসে আমার জন্য ।
-আমার ভাইয়েরও বাইক আছে । চাইলে আমিও বলতে পারতাম । কিন্তু ভাইয়া যদি এখন থাকতো তাহলে বুঝতেই পারছো কি হত !
সুপ্তি কিছু না বলে হাসলো । যদি অন্ধকার চারিপাশে তবে ওর হাসিটা আমার বুঝতে মোটেও কষ্ট হল না । সুপ্তির হাসি বরাবরই চমৎকার ছিল । আমার সেই ছোট থেকেই ভাল লাগতো । মিথ্যে বলবো না ওকে আমার ভাল লাগতো না কিন্তু পরিবারের জন্য কোন দিন বলতে পারি নাই সেই কথা ।
যখন ওকে ওর বাসার কিছু দুরে নামিয়ে দিলাম ও বলল
-আমাকে বাসা পর্যন্ত এগিয়ে দাও !
-তোমার বাবা আমাকে এখানে দেখলে খুন করে ফেলবে !
-আমার বাবা এতোটা খারাপ না । তার ভেতরে কৃতজ্ঞতা বোধ আছে ।
-থাকুক ! আমি কোন রিস্ক নিতে চাই না !
আমি তবুও ওকে একটু এগিয়ে দিলাম । গ্রামের রাত গুলো সব সময় খুব নির্জন হয় । রঘু মিয়াকে রাস্তার উপর দাড় করিয়ে রেখে ওকে নিয়ে হাটতে লাগলাম । এরকম নির্জন কোন রাতে আমি সুপ্তিকে নিয়ে হাটবো কোন দিন চিন্তাও করি নি । মানুষের কল্পনার বাইরে কত কিছু যে হয় সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না । আমরা ওর বাড়ি থেকে একটু দুরে দাড়ালাম । এখান থেকে ওর বাড়ির সদর দরজাটা স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে । একটা ১০০ পাওয়ারের লাইট জ্বলছে । সুপ্তি বলল বলল
-থেঙ্কিউ !
-মেনশন নট ! তবে পাওনা রইলো । কোন দিন শোধ করে দিও !
-আচ্ছা !
তারপর খানিক্ষন দ্বিধা কন্ঠ নিয়ে বলল
-তোমার নাম্বার টা দেওয়া যাবে ?
-লাগবেই ?
-চাইলে আমি ম্যানেজ করে নিতে পারি কিন্তু আমি তোমার কাছ থেকেই চাই ।
আমি হেসে নাম্বার টা দিলাম !
দুই
সেই ঘটনার প্রায় ৬ মাস পার হয়ে গেছে । গ্রাম থেকে এসে সুপ্তির সাথে আমার নিয়মিত যোগাযোগ শুরু হয় এবং সেটা অন্য দিকে বাক নিতেও খুব একটা সময় লাগে নি । বিশেষ করে আমি যখন থেকে জানতে পারি যে ও আমাকে সেই স্কুল থেকেই পছন্দ করে । এই জন্য ঐ দিনের আমার টিজিংয়ের স্বীকার হয়েও কিছু বলে নি । চুপ করে ছিল । আরও একটা কারনও আছে অবশ্য । সুপ্তির এই শত্রুতা মোটেই ভাল লাগে না । ওর ইচ্ছে দুই পরিবারের ভেতরে এই ঝামেলা টা বন্ধ হয়ে যাক !
সেটা কবে হবে আমি জানি না, এও জানি না যে আমাদের এই সম্পর্কের কথা বাড়িতে জানলে কি অবস্থা হবে । তবে ওর সাথে সময় ভাল কাটতে লাগলো । কিন্তু ঝামেলা বেঁধে গেল একদিন সত্যি সত্যি !
আমি আর সুপ্তি সেদিন বসুন্ধরার আট তলায় বসে বসে কথা বলছি । মাঝে মাঝে এখানে আমাদের সময় কাটে । মাঝে মাঝে মুভি দেখি দুজন মিলে । আজকেও মুভি দেখেই বের হয়েছি । এখন খাওয়া দাওয়া করছি । ঠিক সেই সময় সুপ্তির দিকে তাকিয়ে দেখি ওর মুখ শুকিয়ে গেছে । কিছু দেখে ভয় পেয়েছে এবং ও তাকিয়ে আছে আমার পেছনের দিকে । যে জিনিসটা দেখে ভয় পেয়েছে সেটা আমার পেছনেই দাড়িয়ে আছে । পেছনে তাকিয়ে দেখি আমার নিজের বড় ভাই আমার দুজনের দিকে তাকিয়ে গেছে ।
এটা দেখে আমার খাওয়া আটকে গেল । মনে হল তখনই পালিয়ে যাই । দৌড় না দিলে আজকে আমার খবর আছে ।
ব্যবসার কাজে ভাইয়া মাঝে মাঝেই ঢাকায় আসেন । কোন কোন মাসে বেশ কয়েকবারই আসা লাগে । আমাকে প্রতিবার বলেনও না যে উনি এসেছেন । নিজের কাজ শেষ করে চলে যান । আজকে যে এখানে আসবেন সেটা তো আমি জানিই না ! আমার আবারও মনে হল এখন থেকে দৌড় দেওয়া আমার জন্য সব থেকে বুদ্ধিমানের কাজ হবে । কিন্তু ভাইয়াকে আসতে দেখে সেটা আর করতে পারলাম না !
ভাইয়া আস্তে আমাদের দিকে এগিয়ে এসে আমাদের পাশে বসলেন । তারপর ফোন বের করে কাকে যেন আসতে বললেন ।
আমাদের অবাক হওয়ার তখনও বাকি ছিল । ঠিক তার ১০ মিনিট পরে আরেকজন এসে দাড়ালো আমার টেবিলের সামনে । এবং সেটা আর কেউ নয়, সুপ্তির বড় ভাই । আমি আসলে ঠিক মত নিতে পারছিলাম না । কোন ভাবেই মাথায় ঢকছিলো না এই দুজনের যোগাযোগ কিভাবে হল ?
আমাদের দুই ভাই পাশাপাশি বসলো । আমাদের দিকে তাকিয়ে বলল
-এইটা কত দিন থেকে চলছে ?
আমার একবার মনে হল মিথ্যা বলি । বলি যে আমাদের মাঝে কিছু চলছে না । কিন্তু সুপ্তি আামকে অবাক করে দিয়ে বলল
-তোমরা দুইজন বন্ধু ?
ওর ভাই ওকে ধমক দিয়ে বলল
-আমার কথার জবাব দে !
-না দিবো না ! আগে আমার কথার জবাব দাও !
ভাইয়া সুপ্তির ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে বলল
-তোর বোন দেখছি আচ্ছা বেয়াদব । আর ভয়ডর কিচ্ছু পায় না !
-কি করবো বল ! একমাত্র বোন তো কিছু বলতেও পারি না !
দুজন এমন ভাবে কথা বলতে লাগলো যেন কত দিনের চেনা । আমরা দুজনই দুজনের মুখ চাওয়া চাওই করতে লাগলাম । একটু পরে জানতে পারলাম যে তারা আসলেই বন্ধু । এবং আজ থেকে না সেই কলেজ জীবন থেকেই । একবার সুজন ভাই কিভাবে যেন আমার ভাইয়াকে একটা এক্সিডেন্ট থেকে বাঁচিয়েছিলো । তারপর থেকেই দুজনের মধ্যে এই বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছে । ভাবীরাও নাকি একে ওপরের বন্ধু । আমাদের জন্য ব্যাপার টা মনে হল আরও সহজ হয়েগেল । সত্যি সত্যি যে ভয় পেয়েছিালম । সেটা আর বলার মত না ।
আমাদের সম্পর্ক আবারও চলতে শুরু করলো । যদিও বাবারা এখনও জানে না । কোন একদিন জনাবে । তবে সেদিনের চিন্তা নেই । কারন এখন আমরা দলে ভারি । দুই বাবাকে ঠিক ঠিক কাবু করে ফেলবো একদিন !
১১ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:১৫
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ১১ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:০৫
মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: আপনার অন্য গল্পগুলোর তুলনায় বেশ ছোট। কিন্তু ভালো লেগেছে
১১ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:১৬
অপু তানভীর বলেছেন: কই ছোট ? আমি এতো এরকম গল্পই লিখি । অবশ্য মাঝে বেশ কিছু বড় গল্প লিখেছিলাম
৩| ১১ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:০৭
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: একটু যেন সাদা মাটা লাগলো....
আসলেই কি?
আপনার চেনা ফ্লেভারটা পেলাম না কেন.. দেখীতো কপালে হাত দিয়ে জ্বরটর হল নাকি
++++++++++++++++++++++
১১ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:১৭
অপু তানভীর বলেছেন: কদিন থেকে কিছু লিখতে পারতেছি না !
৪| ১১ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:৪৫
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ভালো হইছে। মনে হইল একটা নাটক দেখলাম
১১ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:৫৮
অপু তানভীর বলেছেন: থেঙ্কু
৫| ১১ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ২:১০
মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: মাঝের বড় গল্প গুলো দিয়ে স্বভাব খারাপ করে দিয়েছেন এখন মন আরো বড় কিছু চায়
১১ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ২:২৪
অপু তানভীর বলেছেন: সমস্যা নেই সামনে হয়তো আবারও বড় গল্প নিয়ে হাজির হব !
৬| ১১ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ২:৫২
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: ও আমাকে সেই স্কুল থেকেই পছন্দ করে । এই জন্য ঐ দিনের আমার টিজিংয়ের স্বীকার হয়েও কিছু বলে নি । চুপ করে ছিল ঢিল বাদ দিয়ে শুধু চেয়ে দেখা দেখেই বুঝতে পেরেছিলাম।।
১১ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৩:০২
অপু তানভীর বলেছেন:
৭| ১২ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:২২
মারটিনি টোরিয়েনি বলেছেন: বরাবরের মতই ভাল। আমি আপনার সবগুলো গল্পই পড়েছি। তবে এই প্রথম কমেট করলাম।আপনার কাছে অনুরোধ সবসময় হ্যাপি এন্ডিং দিবেন
১৩ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:৪৪
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ
৮| ২০ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:৫৪
সুজন শাহজাহান বলেছেন: পুরোপুরি গ্রাম্য ফ্লেভার না আসলেও ভালো ছিল। ধন্যবাদ।
২১ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:১৬
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ
৯| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:৫৪
পৃথিলা আফনান বলেছেন: বাহ! বেশ লাগলো
০৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১:৪০
অপু তানভীর বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:০১
কাজী জুনায়েদ বলেছেন: ভাল লাগলো।