নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কয়েকদিন আগেও ক্লাস আড্ডা বাদ দিয়ে খুব বেশি সময় থাকা হত না ক্যাম্পাসে । তারপর বাসা আর টিউশনী । সত্যি বলতে কি আমি আমার ঘরে পিসির সামনেই সময় কাটাতে ভালবাসতাম । কিন্তু কয়েকদিন আগেই আমার জীবনে এতো বড় একটা দূর্ঘটনা ঘটে গেছে যে আমার এখন আর বাসায় থাকতে মন বলে না। যতটা সময় বাসা থেকে বাইরে থাকতে পারি ততই ভাল ।
ক্লাস শেষ করে তাই বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম ডিপার্টমেন্টের সামনের মাঠে । সজিব, রুনু, মলি, আকিব রাফি সবাই রয়েছে । আমার মন মরা কেন কদিন ধরে ওরা বার কয়েক জানতেও চেয়েছে । অবশ্য প্রায় সপ্তাহ দুয়েক ধরেই আমার মন মেজাজের অবস্থা খুব বেশি ভাল না । আমি কোন জবাব না দিয়ে কথার প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে দেই । কথা আড্ডা চলতে থাকে ঠিক তখনই আমার চোখ নীষার দিকে যায় ।
বাসা থেকে বের হওয়ার সময় দেখেছিলাম ও টিয়া রংয়ের একটা সেলোয়ার কামিজ পরে রেডি হচ্ছিলো ক্যাম্পাসে আসার জন্য। সেই রংটা দেখেই ওকে দ্রুত চিনে ফেললাম । অবশ্য আরেকটু হলে এমনিতেই চিনতে পারতাম । কারন ও আমাদের দিকেই আসছে ।
কেন ?
এই ঝামেলা এই খানে কেন ?
কাধে ব্যাগ, ওড়না ভাল করে গলায় পেঁচানো । মুখে হালকা মেকাপও দিয়েছে । তবে ঠোটে লিপস্টিক দেয় নি । আমাদের আড্ডার ঠিক সামনে এসেই থামলো । কিছুটা সময় আমাদের দিকে তাকিয়ে রইলো আমার দিকে । আমি না দেখার ভান করে কথা চালিয়ে গেলাম । একবার ইচ্ছে হলে উঠে চলে যাই কিন্তু যাওয়া হল না ।
আস্তে আস্তে আড্ডার সবাই ব্যাপারটা লক্ষ্য করলো যে তাদের মাঝে একজন অপরিচিত মানুষ দাড়িয়ে আছে । রুনুই প্রথমে জানতে চাইলো
-কিছু বলবা ?
রুনু অবশ্য নীষাকে চিনে না । তবুও ওকে তুমি করেই বলল । বলতে গেলে আমরা ক্যাম্পাসের প্রায় সিনিয়ার ব্যাচ । আমাদের থেকে প্রায় সবাই ছোট। তুমি করে বলাই যায় ।
রুনুর দিকে না তাকিয়ে নীষা আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-আমি বাসায় যাবো
রুন যেমন অবাক হল আড্ডার বাকী সবাই অবাক হল মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়ে কথা বলার জন্য । তাও গলায় একটা আবদার মূলক কথা শুনে। আমি নিজেকে যথাসম্ভব শান্ত রেখে বললাম
-আমি এখন বাসায় যেতে পারবো না, একটু পরে আমার ক্লাস আছে ।
নীষা বলল
-মিথ্যা কথা, আমি তোমাদের ডিপার্টমেন্টে খোজ নিয়েছি । সব ক্লাস শেষ হয়ে গেছে।
এতু টুকু একটা মেয়ে আমাকে তুমি করে বলছে এই ঘটনা আসলেই সবাইকে অবাক করলো । মলি বিশ্মিত কন্ঠে বলল
-এই অপু, মেয়েটা কে রে ? তোকে তুমি করে বলছে কেন ? চেনে তোকে ?
সজিব বলল
-আমিও চিনতে পারছি না । আমি যতদুর জানি ওর এই বয়সী কোন কাজিনও নেই । কে ?
পুরো আড্ডার ভেতরে একটা তোড়জোড় শুরু হয়ে গেল, মেয়েটা কে সেটা জানার জন্য। আমার সাথে তার কি বা সম্পর্ক সেটাও জানার আগ্রহ সবার । আমি কোন কথা না বলে চুপ করে আকাশের দিকে তাকিয়ে রইলাম । বুঝলাম আমার ক্যাম্পাসেও আসা বন্ধ করতে হবে । এই মেয়ের জন্য জীবন "ত্যাসপাতা" হইয়া গেল । এই মাইয়া আর এই মাইয়ার বাপের জন্য । সাথে আমার নিজের বাপও কম যায় না ।
রুনু এবার নীষার দিকে তাকিয়ে বলল
-এই মেয়ে তুমি কে বলত ? অপুর সাথে এই ভাবে কেন কথা বলছো কেন ?
নীষা খুব শান্ত কন্ঠে বলল
-আপনাদের বন্ধুকে জিজ্ঞেস করেন। সে কিছু বলে নাই আপনাদের ?
এবার সন্দেহ আরও যেন একটু বেড়ে গেল । রুনু উঠে গিয়ে নীষাকে ওর পাশে বসালো। তারপর ওর চোখের দিকে কিছুক্ষান তাকিয়ে থেকে বলল
-তুমি ......অপুর বউ ?
নীষা কিছু বলল না । কেবল একটু হাসলো । সেই হাসিতে আর কারই বোঝার বাকি রইলো না যে আসলেই সে আমার বউ । বিয়ে করা বউ ।
সবাই আমার দিকে তাকালো এক ভাবে । আমি তাকিয়ে রয়েছি বদ মেয়েটার দিকে । আমার বিয়ের কথা প্রকাশ করে দিয়ে মেয়েটা যেন খুব মজা পাচ্ছে ।
থাপড়ায়া দাঁত ফেলে দেওয়া উচিৎ । বদ মেয়ে কোথাকার ।
এবার ঈদে গ্রামের বাসায় গিয়ে সময় গুলো বেশ ভাল করেই কাটছিল । বাবাও অনেক দিন পরে গ্রামে গিয়ে যেন পুরানো সব বন্ধুরদের সাথে মিলে মিলেশিসে একাকার হয়ে গেল । ঠিক এমন সময় আসল ঘটনা আমার সামনে এল । আমাদের গ্রামে নীষারা থাকতো । বাবার খুবই ভাল বন্ধু ছিলেন নীষার বাবা । আমিও ওকে চিনতাম । আমার থেকে কয়েক বছরের জুনিয়র ।
রাতে খাওয়ার সময় বাবা নীষার কথা বলল । মেয়েটা নাকি এবার আমার ভার্সিটিতে চান্স পেয়েছে, ফার্মেসীতে । মেয়েটাও পড়ালেখায় ভাল খুব কিন্তু মেয়েটার কেবল একটা সমস্যা । মেয়েটা কিছুতেই রাতে একা একা ঘুমাতে পারে না । ভয় পায় । তাও আবার রুমে থাকলে হবে না, তার খাটে কাউকে ঘুমাতে হবে । জন্মের পর থেকে মেয়েটা নাকি এখনও মায়ের সাথে ঘুমায় রাতে ।
মেয়ে এইজন্য ক্লাস করতে পারছে না । কারন ঢাকায় ওদের এমন কোন আত্মীয় নেই যেখানে ও থাকতে পারবে । হলেও থাকতে পারবে না এখন । মেয়েটা কয়েকদিন ঢাকায় ছিল তারপর ফিরে এসেছে । আর ওর বাবার এরকম পরিস্থিতি নেই যে ওরা ঢাকায় গিয়ে থাকবে ।
এই পর্যন্ত ঠিকই ছিল । কিন্তু এরপর বাবা যা বলল তার জন্য আমি মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না । বাবা ঠিক করেছে মেয়েটার ভবিষ্যৎ তিনি এভাবে নষ্ট হতে দিবে না ।
অতি উত্তম কথা । একটা না একটা উপায় বের করতেই হবে । এভাবে একটা মেয়ের জীবন নষ্ট হতে দেওয়া যায় নাকি ।
বাবা বলল
-আমি অনেক দিন থেকেই ঠিক করে রেখেছিলাম রকিবের মেয়ের সাথেই তোর বিয়ে দেব । কদিন পরেই দিতাম । এখন কদিন আগে বিয়ে টা হবে । এই আর কি ।
ঠিক আছে । কোন সমস্যা নেই । বিয়ে যখন হবে তখন কদিন আগে আর পরে কি ।। এ্যা ......
কেবল পানি খুখে নিয়ে ছিলাম । মুখ থেকে ফেলে দিয়ে বললাম
-এ্যা । কি বললে ? কার বিয়ে ?
-কেন তোর । তুমি এখন বড় হয়েছিস । কদিন পরে অনার্স শেষ হবে । বিয়ে করবি না ?
-মানে কি । কেউ একজন রাতে একলা ঘুমাতে পারে না তার জন্য তো আমাকে কুরবানি করার কোন মানে নেই । নাকি আছে ।
বাবা কঠিন চোখে আমার দিকে তাকালো । আমি আর কোন কথা না বলে চুপ করে রইলাম । আমাদের সংসারে এখনও বাবার উপরে কেউ কথা বলবে এখন কেউ নেই । তার উপর তিনি যদি একবার ভেবে নেন যে আমাকে বিয়ে দেবেন তাহলে আমার কিছুই করার নেই । আর এটা বাবার গ্রাম, তার নিজের এলাকা । অবশ্য আমার নিজেরও গ্রাম ।
সপ্তাহ খানেকের ভেতরেই আমার বিয়ে হয়ে গেলে নীষার সাথে । আমার কেবল বারবার মনে হচ্ছিলো যে আমি ভয়ংকর দুঃস্বপ্ন দেখছি এখনই আমার ঘুম ভেঙ্গে যাবে । সব ঠিক হয়ে যাবে ।
নীষার আমাদের সাথে ঢাকায় চলে এল এবং আমাদের বাসায় থাকতে লাগলো । দুদিনের ভেতরেই দেখলাম মা আর বাবাকে পঁটিয়ে ফেলল । কিভাবে ফেলল কে জানে । আমার মনে হতে লাগলো যে আমি আসলে আমার মা বাবা সন্তান না । এই নীষাই এই বাড়ির মেয়ে আমি ঘরজামাই ।
এই মেয়েগুলা এমন চালু হয় কিভাবে ? রাতে অবশ্য নীষা আমার কাছে ভীড়তে পারে না । আমি সারা দিন বাইরে থাকি রাতে বাসায় যাই । খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি দরজা বন্ধ করে । রাতে নীষা মায়ের সাথে ঘুমায় । বাবা ঘুমায় গেস্ট রুমে ।
ঘুমাক । আমি কিছু বলবো না । দেখি কদিন এভাবে চলতে পারে । কাউকে বলি নি আমার এই বিয়ের কথা কিন্তু আজকে এই কথা সবাই জেনে গেল ।
বন্ধুদের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে বাইক নিয়ে বাসার দিকে এলাম । নীষাকে বাসায় না রেখে আসার আসতেই হল । রুনু আর মলি তো পারলে আমাকে চিবিয়ে খায়। সোজা বলে দিল যে নীষা পিছনে নিয়েই আমাকে বাসায় যেতে হবে নয়তো আজ থেকে গ্রুপের কেউ আমার সাথে কথা বলবে না । এতো মিষ্টি একটা বউয়ের কথা লুকিয়ে আমি এমনিতে তাদের কাছে বিরাট অপরাধ করেছি । আর এখন যদি নীষাকে এভাবে রেখে যায় তাহলে আমার খবরই আছে । কি আর করা বাইকের পেছনে ওকে নিয়ে আসতেই হল । বলতে গেলে বিয়ের পরে এই প্রথম ওকে আমার বাইকে তুললাম ।
বাসার সামনে ওকে নামিয়ে দিয়ে আবার যখন বাইক ঘুরাতে লাগলাম, নীষা বলল
-এখন কোথায় যাও ?
-সেটা জেনে তোমার কি দরকার ? তুমি বাসায় যাও ।
-দরকার আছে । এই রোদের ভেতরে কোথায় যাও বল ?
-আজিব তো । তুমি এই কথা কেন জিজ্ঞেস করছো কেন ? আর এই রাইট তোমাকে কে দিয়েছে ? বাসায় যাও ।
-ভাত খাবা না ?
-না । আমার খিদে নাই ।
আমি আর কথা না বাড়িয়ে বাইক ঘুড়ালাম । বেশি প্যাঁচাল ভাল লাগে না ।
টিউশনী থেকে বাসায় আসতে আসতে মোটামুটি রাত আটটা বেজে যায় । আজকে আরও ঘন্টা খানেক পরে এলাম । খাবার টেবিলে দেখি মা বাবার সবার মুখ গম্ভীর । বুঝলাম এই বদ মেয়ে নিশ্চয়ই আমার নামে কিছু বলেছে । অবশ্য নীষার মুখও গম্ভীর ছিল ।
বাবা আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-তুই নীষার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছিস কেন ?
আমি যেন আকাশ থেকে পড়ার ভঙ্গি করলাম । বলল
-কি বলছো তুমি ? আমি ওর সাথে খারাপ ব্যবহার করলাম কই ? আজকে রবং ওকে বাইকে করে ক্যাম্পাস থেকে বাসায় নিয়ে এলাম ।
-আমি এতো কথা শুনতে চাই না । এরপরে যেন ওর সাথে কোন প্রকার খারাপ ব্যবহার না করা হয় । ব্যাপার টা ভাল হবে না ।
আমি কোন কথা না বলে চুপ করে খেতে লাগলাম ।
রাতে ঘুমানোর আগে মা ঘরে এসে বলল
-মেয়েটার সাথে কঠিন করে কথা না বললেই হয় না ? বুঝতে পারছি তোর মনের অবস্থা ।
-মা, যখন বুঝতেই পারছো তাহলে কেন বলছো ?
-তুই মেয়েটার দিক টাও একটু দেখ । এতো মিষ্টি একটা মেয়ের সাথে খারাপ ব্যবহার করিস কিভাবে ?
আমি কোন কথা না বলে পিসির দিকে তাকিয়ে রইলাম ।
মা বলল
-আজ তোর জন্য মেয়েরা সারা দুপুর না খেয়ে আছে । এভাবে কেউ কথা বলে ?
আমি তবুও কোন কথা বললাম না । চুপ করেই রইলাম । তবে একটা বার মনে হল আমার জন্য না খেয়ে থাকার কি হল এমন ?
পরদিন সকালে অবশ্য নীষাকে নিয়েই যেতে হল ক্যাম্পাসে । সেখানে পরিস্থিতি বদেল গেল । আমার বন্ধুদের আড্ডায় নীষা হাজির হতে লাগলো । এবং অবাক হয়ে দেখলাম আমার থেকে আমার বন্ধুরা ওর দিকেও বেশি এটেনশন দিচ্ছে । বুঝতে পারলাম আমার এখানেও থাকা চলবে না । আর দিন দিন নীষার খবরদারী যেন বাড়তে লাগলো । মা আবার বাবাকে এমন ভাবেই এই মেয়ে পটিয়ে ফেলল যে তাকে ছাড়া তারা যেন কিছুই বুঝে না । আর আমি যেন জলের বাঁনে ভেসে এসেছি ।
একদিন মেয়েটার সাহসের চুড়ান্ত করলো । আমি ঘরে বসে ছিলাম । একটু পরে টিউশনীতে বের হব । এমন সময় নীষা আমার ঘরে এসে হাজির । নীষা সব কিছু করলেও আমার ঘরে আসার সাহস পেত না । তবে সেই ভয়ই মনে হয় উঠড়ে গেল । আমার কাছে এসে খুব স্বাভাবিক ভাবে বলল
-এই, এক হাজার টাকা দাও ।
আমি প্রথমে কিছু বুঝতে পারলাম না । বললাম
-কি ?
-বললাম এক হাজার টাকা দাও ।
-তোমাকে আমি টাকা দেব কেন ?
-বারে তুমি টাকা দেবে না তো কে দিবে ? আমি অন্যের কাছে টাকা চাইবো নাকি ?
এরপর খুহব স্বাভাবিক ভাবে আমার মানিব্যাগ থেকে এক হাজার টা বের করে নিল । আমি এতোটাই অবাক হয়ে গেলাম যে কিছু বলার মত ভাষাই খুজে পেলাম না । সে যে আমার বউ, স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিতে লাগলো ।
তবুও মেয়েটাকে একটু দুরে দুরে রাখলাম । নীষা এখনও মায়ের সাথেও ঘুমায় । কিন্তু সেই দিনও শেষ হয়ে এল । সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে বুঝতে পারলাম কিছু একটা সমস্যা হয়েছে । মায়ের কাছে গিয়ে জানতে পারলাম যে নানার শরীর নাকি হঠাৎ করেই খারাপ হয়ে গেছে । এখনই যেতে হবে । আমিও যাওয়ার জন্য তৈরি হতে গেলে মা বলল
-তোর যেতে হবে না ।
-কেন ?
-নীষার কাল পরীক্ষা আছে । ওকে থাকতে হবে । তুইও থাকবি ।
-মানে কি ?
বাবা পেছন থেকে বলল
-মানে কি রে গাধা । আমি আর তোমার মা যাচ্ছি । বউমা আর তুই থাক বাসায় । খুব বেশি সমস্যা হলে তোকে ফোন দিবো তুমি নীষাকে নিয়ে চলে আসবি ।
-কিন্তু মা ...
-কোন কিন্তু না ।
বাবা মা চলে গেল । নীষা দরজা বন্ধ করতে করতে আমার দিকে অদ্ভুদ চোখ তাকালো । দুষ্টামীর একটা ছায়া যেন আমি ওর চোখে দেখতে পেলাম ।
সেদিন ক্যাম্পাসে গেলাম না । আমি রাতের বেলা নিয়ে একটু চিন্তিত হয়ে আছি । মেয়েটা রাতে কোথায় ঘুমাবে ? আমার সাথে নাকি ? মাই গড । এখন ?
তবে নীষাকে যতই কাছে আসতে দেই না কেন মেয়ে হিসাবে সে আসলেই একটা লক্ষ্যি মেয়ে এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই । দুপুরে চমৎকার ভাবে আমার জন্য রান্না করে টেবিলে খেতে দিল । রাতের খাবারের পর সব কিছু গোছাগাছ করে আমার আশে পাশে ঘুরঘুর করতে লাগলো । ওর চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝলাম যে ওর ঘুম আসছে কিন্তু একা একা ঘুমাতে সাহস পাচ্ছে না ।
মা ফোন দিলেন । আমাকে নীষার সাথে ঘুমাতে বললেন । নিজের বউয়ের পাশে ঘুমাতে সমস্যা কোথায় বলে আরও কত কিছু বললেন ।
নীষা আমার ঘরের ভেতরে একবার আসে আবার চলে যায় । একবার বিছানার উপরে বসে আবার জানলার কাছে যায় । তারপর থাকতে না পেরে বলল
-আমি এই এক পাশে ঘুমাই ?
ওর দিকে তাকালাম । তারপর শান্ত কন্ঠে বললাম
-ঘুমাও ।
আমার অনুমুতি পেয়ে মেয়েটা যে কি পরিমান খুশি হল আমি ঠিক বলে বোঝাতে পারবো না । আরও ঘন্টা খানেক পিসি তে বসে থাকার পরে আমি নিজেও বিছানায় গেলাম । সত্যি বলতে কি নিজের কাছে একটু অসস্থি লাগছিল । আমার পাশেই একটা মেয়ে ঘুমিয়ে আছে । যদিও আমারই বউ তবুও অস্বস্থি কাটলো না । লাইট বন্ধ করে চোখ বুঝে রইলাম কিছুটা সময় । ভাবতে লাগলাম সাত-পাঁচ । পাশে নীষা চোখ বন্ধ করে আছে । তবে আমার কেন জানি মনে হল ও ঘুমায় নাই । তারপর কখন যে ঘুমিয়ে গেছি টের পাই নি ।
হঠাৎ করেই আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল ।
অনুভব করলাম নীষা আমার শরীরের খুব কাছে চলে এসেছে । আমাকে বলতে গেলে জড়িয়ে শুয়ে আছে । বাইরে ততক্ষনে জোছনা । জানলা দিয়ে আলো এসে নীষার ঘুমন্ত চেহারার উপরে পরছে । আমি নীষার ঘুমন্ত চেহারা দিকে তাকিয়ে কয়েকটা মুহুর্ত অন্য কোন চিন্তা এল না । এতো মায়াবী মুখ আমি এর আগে কোন দিন দেখেছি বলে মনে হয় না । কিছুতেই ওর দিক থেকে চোখ সরাতে পারলাম না । তাকিয়ে রইলাম । কেবল মনে হতে লাগলো যে এই চেহারার দিকে আমি সারা জীবন তাকিয়ে থাকতে পারবো ।
বুঝতে পারছিলাম আমার নিজের ভেতরে কিছু একটা পরিবর্তন আসছে । অদ্ভুদ সেই অনুভুতির কোন তুলনা নেই । আমি কেবল নীষার দিকে তাকিয়েই রইলাম । নিজের কাছেই বড় বেশি অদ্ভুদ লাগছিলো । ভোর বেলা পর্যন্ত আমি ওর চেহারার দিকে তাকিয়ে রইলাম এক ভাবে । তারপর ওর কপালে একটা ছোট্ট চুম খেয়ে ওর গা ঘেষে শুরু পড়লাম ।
সকাল বেলা ঘুম ভাঙ্গলো বেশ বেলা করে । পাশে দেখি নীষা নেই । ফ্রেস হয়ে নাস্তার টেবিলে আসতে না আসতেই নাস্তা এসে হাজির । নীষার অন্যান্য দিনের মত আজকে সেলোয়ার কামিজ না পরে শাড়ি পড়েছে । চুল ভেজা তার মানে গোসল করেছে । ওকে যেন আরও একটু অন্য রকম লাগছে । গত রাতের ওর দিকে তাকিয়ে থাকাটার কথা মনে পড়ে গেল । আমি পরোটা মুখে দিতে দিতে বললাম
-তোমার পরীক্ষা কখন ?
-পরীক্ষা নেই ।
-মানে কি ?
-মানে আমি মিথ্যা বলেছি ।
-কেন ?
আমার কথা শুনে হেসে ফেলল । আমি ধরে ফেললাম ও কেন মিথ্যা বলেছে । কিছু বা বলে কেবল তাকিয়েই রইলাম ।
এই মেয়ে দেখছি আসলেই বিরাট বদ ।
নীষা পরোটা মুখে দিতে দিতে বলল
-আর থেঙ্কিউ ।
-কেন ?
এর কেনর উত্তর দিলো না । কেবল হাসলো । তারপর মুখ দিয়ে একটা ইশারা করেলো । আমি মোটেই বুঝতে কষ্ট হল না মেয়েটা কি বোঝাতে চাইছে ।
এই মেয়ে আসলেই চালু আছে । সামনের জীবনে আমার খবরই আছে ।
-দুষ্ট হয়েছো তাই না ?
-হুম ।
বলে আবার সেই দুষ্টামীর হাসি ।
-দাড়াও । তোমাকে মজা দেখাচ্ছি ।
-এই খবরদার উঠবে না । খবরদার বলছি কাছে আসবা না ?
আমি নিজের চেয়ার থেকে উঠি পর্যন্ত নাই । নীষা চাচ্ছে যেন আমি উঠি ওর দিকে যাই ।
দাড়াও নাস্তা আগে শেষ হোক । তোমার মজা দেখাচ্ছি ........
-----
তারপর ........ এতো কিছু জানতে হবে না । আমার খবরের কথা আপনাদের জানাবো কেনু শুনি ?
১০ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:৪৩
অপু তানভীর বলেছেন: ছোট ছোটই ভালু !
২| ১০ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:৪৫
আজিজার বলেছেন: খুব ভালো
১০ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:৫৩
অপু তানভীর বলেছেন:
৩| ১০ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:০৩
জে আর শুভ বলেছেন: অনেক ভালো লাগলো
১০ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:১৬
অপু তানভীর বলেছেন:
৪| ১০ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:৪২
বাকি বিল্লাহ বলেছেন: ভাই এরপর কি ঘটিল জানতে মুন চায়..... বলেন না আমরা আমরাইতো
১০ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৩
অপু তানভীর বলেছেন: না না মোটেই না ! এই সব ঘটনা জানতে চাওয়া মোটেই ভালু কথা নহে !
৫| ১০ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৪:০৩
জাহিদ ২০১০ বলেছেন: আরে মিয়া আমরা আমরাইতো। কইয়া হালান
১০ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৪:১৩
অপু তানভীর বলেছেন:
৬| ১০ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:৩২
শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: এইটাও অপু তানভীরীয় গল্প। ভালোলাগা রইলো।
১০ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:৪৭
অপু তানভীর বলেছেন: অনেক দিন পর নিজের মন মত একটা গল্প লিখতে পারলাম
৭| ১০ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:৫৫
মহাকাল333 বলেছেন: রোমান্টিক গল্প। গল্পটা খুব ভাল হয়েছে। পড়ে ভাল লাগল।
১০ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:৪৭
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ
৮| ১০ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:০৭
কোলড বলেছেন: I was kinda bemused! A married boy lives with parents and cant consummate the marriage!
১০ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:৪৮
অপু তানভীর বলেছেন:
৯| ১০ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:৫৫
শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: জনাব কোলড এর সবকিছুতেই কেমন জানি একটা মতামত থাকে, ভালো ব্যাপারই কিন্তু। জনগনের জন্য এইসব মন্তব্য কিঞ্চিত ব্যতিক্রমী বিনোদনের খোরাক হয়।
১০ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:০২
অপু তানভীর বলেছেন:
১০| ১১ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:৩৪
বোকামানুষ বলেছেন: রোমান্টিক গল্প ভাল লাগল।
১১ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৪২
অপু তানভীর বলেছেন:
১১| ১১ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৮:০২
কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: তারপর ........ এতো কিছু জানতে হবে না ! আমার খবরের কথা আপনাদের জানাবো কেনু শুনি ?
কেনো বাপু,গুড় ছিটানোর সময় মনে ছিলনা?আলবাৎ আরো জানতে চাই।থলে খুলুন মশাই।
১১ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৪৩
অপু তানভীর বলেছেন: না মশাই থলে খোলা যাবে না । তাহলে অনেক কিছুই খুলে যাবে
১২| ১১ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৮:১৭
ভিটামিন সি বলেছেন: অপু ভাইয়া, তুমি এই গল্পটা কি দৌড়ের উপর লিখেছো? বানানে যথেষ্ঠ অসংগতি লক্ষ্য করা গেছে। মাঝে মইধ্যে বাক্যে প্রনাউনের অপপ্রয়োগও ঘটিয়েছো তুমি!!! এটা কিন্তু বরদাশত করা যাচ্ছে না কইয়া দিলাম।
আর সবচেয়ে বড় কথা হইলো গিয়া, নিশি নিষা?? এইটা কোন সুত্রে, অনুসিদ্ধান্তে বা অসমতায় পড়ে?? নিশি থেকে পল্টি খাইলে কিন্তু হাইকোর্টে রিট করমু নিশির পক্ষ লইয়া কইয়া দিলাম।
মোট কথা, গল্পের প্লট এবং গল্প সেইরাম ভালো হইছে। ভাল্লাগছে খুব।
১১ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৪৫
অপু তানভীর বলেছেন: আরে আমার গল্পের অন্যতম বৈশিষ্ট্যই হল বানান ভুল থাকবে ! এটা তো সবাই জানে । তবুও যা চোখ বাধলো ঠিক করে দিলাম ! আর মাঝে মাঝে কিছু পছন্দের শব্দ তো ব্যবহার করিই !
যাই যাই হোক নামে কি যায় আসে মানুষ টাই আসল
১৩| ১১ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:১৯
বিদ্রোহী সিপাহী বলেছেন: চরম হইছে ভাই। খুব ভালো লাগলো। আরো লেখেন
১১ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৪৭
অপু তানভীর বলেছেন:
১৪| ১১ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:৩১
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: ''মনমত'' একটা গল্প পড়লাম ।
তবে ভাইজান মনে হয় এখনো দৌড়ের উপরে আছেন ।
লিখায় অনেক গুলো টাইপো দেখে এমনই মনে হল ।
১১ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৪৮
অপু তানভীর বলেছেন: বানান ভুল তো আমার লেখার অন্যতম বৈশিষ্ট্য ! এতো দিন ধরে আমার লেখা পড়েন এইটা জানেন না ?
১৫| ১১ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:৩৮
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: ভালই লাগল। পড়তে মনচাইছিল পড়লাম। আরো লিখবেন।
১১ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৪৯
অপু তানভীর বলেছেন:
১৬| ১১ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৬
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: আপনি বোধহয় আর মনদিয়ে লিখছেন না! এতোগুলো টাইপো!
ভাল লেগেছে। সুখপাঠ্য
১১ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৫০
অপু তানভীর বলেছেন: ঠিক করে দিয়েছি
১৭| ১১ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৪:১৭
অশ্রুত প্রহর বলেছেন: তারপর ........ এতো কিছু জানতে হবে না ! আমার খবরের কথা আপনাদের জানাবো কেনু শুনি ?
বাহ! বেশ লাগিল গল্পটি।
১১ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৫০
অপু তানভীর বলেছেন:
১৮| ১১ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:১৯
বেসিক আলী বলেছেন: "তারপর ........ এতো কিছু জানতে হবে না ! আমার খবরের কথা আপনাদের জানাবো কেনু শুনি ? "
আরে ভাই, ঘরের খবরের প্রতিই তো পরের লোভ......... আরো কিন্চিত লম্বা করিতে পার্তেন তো
১১ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৫০
অপু তানভীর বলেছেন: পারতাম কিন্তু করি নাই
১৯| ১১ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:৪৩
মিজভী বাপ্পা বলেছেন: ভালো হয়েছে
১১ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৫১
অপু তানভীর বলেছেন:
২০| ১১ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:২৯
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: তারপর ........ এতো কিছু জানতে হবে না ! আমার খবরের কথা আপনাদের জানাবো কেনু শুনি ?
না বরলেও আমরা বুঝি!!! কেনু বাংলা সিনেমায় দেখেন নাই-্এ রকম মুহুর্তে ক্যামেরা চলে যায় বাগানে... ফুলে ফুলে ঢলাঢলি আর আকাশে ক্যামেরা প্যান করে ঘুরানো, চখাচখির মিলন.. প্রজাপতির উড়ে বেড়ানো... আহা ... উহু..
আর বলা লাগপে না
১১ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৫২
অপু তানভীর বলেছেন: আপনে তো বস পাব্লিক ! আপনে তো বুঝিবেনই । এই জন্যই তো বিস্তারিত লিখি নাই
২১| ১২ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:১৫
ধলা বিলাই বলেছেন: ভাই আপনি এত ভাল লেখেন কি করে?
১৩ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ২:১২
অপু তানভীর বলেছেন:
২২| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:৫৩
অন্যসময় ঢাবি বলেছেন: sry that i cudn't come up with any complimentary adjective that wud fit for such nyc story. felling envious. btw, is it from ur real life or a made up story ? Thank u
১৪ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:৪৮
অপু তানভীর বলেছেন: কেবলই বানানো গল্প
২৩| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৩:৩৪
শূন্য সুমিত বলেছেন: আমাদের আগের অপু ভাই কই। যে কিনা আগে মাসে ২০-২৫ টা গল্প লিখতেন।
ভালো লাগলো এই গল্পটা
১৪ ই আগস্ট, ২০১৫ ভোর ৪:৩৬
অপু তানভীর বলেছেন: আগে প্রেমিকা ছিল এখন প্রেমিকা নাই তাই !
২৪| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১০:৪৭
কামরুন নাহার বীথি বলেছেন:
১৫ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:৩৮
অপু তানভীর বলেছেন:
২৫| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৫
হতভাগা রাজু বলেছেন: পরবর্তি পর্ব চাইই চাই
১৯ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১০:৩৬
অপু তানভীর বলেছেন: দেখা যাক পরের পর্ব পাওয়া যায় নাকি খুইজ্জা
২৬| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৮:২২
ঘুড়তে থাকা চিল বলেছেন: ভাই এটা কী শুধুই গল্প নাকি আসলেই বিয়ে করছেন??
৩১ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:২১
অপু তানভীর বলেছেন: গল্প
২৭| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৪৭
প্রামানিক বলেছেন: গল্প ভাল লাগল। ধন্যবাদ
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৫৭
অপু তানভীর বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:৩৭
নীল আকাশ বলেছেন: আপনার গল্প গুলো পরতে খুব ভালো লাগে। আরেকটু বড় গল্প লেখা যায় না?