নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এক
নিশির ফোন পেয়ে বেশ কিছুটা সময় কি করবো ঠিক বুঝতে পারলাম না । রিসিভ করবো কি করবো না এই চিন্তাতেই প্রথমবার লাইনটা কেটে গেল । তবুও দ্বিধা কাটলো না । ওপাশ থেকে কি শুনবো কিংবা আমি কি শোনার জন্য অপেক্ষা করছি সেটা যদি না হয় তাহলে ?
মন চাইছে যেন আমার ধারনা মোটেই সত্য না হয় । কিন্তু যদি সত্য হয়ে যায় তখন ?
আমি অনুভব করলাম যে আমার সারা শরীরে একটা অন্য রকম উত্তেজনা কাজ করছে । আমার কি করা উচিৎ আমি কিছুতেই বুঝতে পারছি না । যা ধারনা করেছি সেটা যদি সত্যিই হয় তাহলে ব্যাপার টা আসলেই অন্য রকম হয়ে দাড়াবে ! কিন্তু সত্যটা আমার জানা জরুরী !
আমি নিজেই ফোন টা হাতে নিলাম নিশিকে ফোন দেওয়ার জন্য তার আগেই নিশির ফোন এসে হাজির !
কাঁপা কন্ঠে ফোনটা ধরলাম । ফোনটা কানের ধরার সাথে সাথেই ওপাশ থেকে নিশির কান্নার আওয়াজ পেলাম ! আমার আর কিছু বুঝতে বাকি রইলো না ! আমি যেটা ধারনা করেছিলাম সেইটা সত্য হতে চলেছে । সত্যি কি হতে চলেছে ?
আমি কোন মতে বললাম
-কি হয়েছে ?
কন্ঠটা যে কাঁপছে আমি বেশ ভালো করেই বুঝতে পারছি ! আমি আবারও বললাম
-এই বাবু কি হয়েছে ?
-পুটি মারা গেছে !
পুটি নিশির আদরের বিড়ালটার নাম ! আমি গলায় অবাক হওয়ার ভান এনে বললাম
-কিভাবে ?
-জানি না ! বিকেল বেলা তুমি যখন ওর ছবি তুলে বাসায় গেলে তখনও ভালই ছিল । কিন্তু একটু আগে দেখি ও বারান্দায় উপর মরে পরে আছে !
-আশ্চর্য ! এমন ভাবে কেউ মরে নাকি ? কোন কারন থাকবে না ?
-আমি জানি না !
নিশি ঠিক মত কথা বলতে পারছিলো না । ফোনের আমি বললাম
-দেখো আমরা মানুষের মৃত্যুটাকেই ঠিক মত ঠেকাতে পারি না । পশু পাখির মৃত্যুটা ঠেকানো তো প্রায় অসম্ভব !
-কিন্তু তাই বলে এভাবে মারা যাবে ? কেন ? কোন কারন ছাড়া !!
আমি কি বলবো ঠিক খুজে পেলাম না । পুটি নিশির বেশ পছন্দের একটা বিড়াল ছিল ! একটু খারাপই লাগলো ! বিশেষ করে যখন ওর মৃত্যুর পেছনে আমার নিজের হাত রয়েছে !
আমি প্রথমে কিছুটা সময় কিছুই ভাবতে পারলাম না । কেমন একটা অপরাধবোধ আমাকে ঘিরে ধরলো । নিজের অজান্তে আমি কি ভয়ংকর কাজ করে ফেলেছি ! মানুষ মারার মত ভয়ংকর কাজ !
আমি টেবিলের উপরে রাখা ক্যামেরাটা নিজের কাছে নিয়ে এলাম । কোলের উপর নিয়ে খানিকক্ষন এক ভাবেই তাকিয়েই রইলাম ক্যামেরা দিকে । যে কেউ দেখলে এটাকে একটা সাধারন ক্যামেরাই মনে করবে । কিন্তু কেউ জানে না কি অসম্ভব একটা ক্ষমতা রয়েছে এই ক্যামেরাটার ভিতর ! কি অসম্ভব একটা ক্ষমতা !
দুই
সপ্তাহ খানেক আগের কথা । সন্ধ্যার দিকে বাসায় ফিরছিলাম ! বাসায় আসার জন্য আমি ছোট একটা অন্ধকার গলির ভিতর দিয়ে আসি মাঝে মাঝে ! যদিও এটা প্রধান রাস্তা নয় । তবে মাঝে মাঝে আমি এই শর্টকার্ট টা বেছে নেই তাড়াতাড়ি বাসায় যাওয়ার জন্য ! যদিও এলাকাটা ছিনতাইয়ের কোন ভয় নেই তবুও এই অন্ধকার গলির ভিতর দিয়ে আসতে কেমন যেন লাগে । তবে বেশি তাড়াহুড়া থাকলে এটা দিয়েই যাই আমি !
ঐ দিন সবে মাত্র গলির ভিতর ঢুকেছি তখনই কেউ একজন যেন আমার গায়ের উপর এসে পড়লো ! আমার বুকটা ধক করে উঠলো মুহুর্তেই ! কিন্তু সামলে নিলাম । আবছায়া আলোতে তাকিয়ে দেখি একজন মাঝ বয়সী লোক সামনে দাড়িয়ে ! ভাল করে চেহারা না দেখা গেলেও লোকটি যে বেশ সুদর্শন বেশ ভালই বোঝা যাচ্ছিল । অন্তত ছিনতাইকারি না এটা বেশ বুঝতে পারছিলাম !
আমার সামনে কিছুক্ষন চুপচাপ দাড়িয়ে থেকে লোকটি বলল
-আমি একটা ক্যামেরা বিক্রি করবো !
বলা নেই কওয়া একজন সামনে এসে বলল আমি একটা ক্যামেরা বিক্রি করবো আর হয়ে গেল নাকি ! আমি ততক্ষনে নিজেকে পুরোপুরি সামলে নিয়েছি । বললাম
-তো !
-আপনি নিতে পারেন !
-আমার লাগবে না !
-ভাল ক্যামেরা !
-ভাই আমার লাগবে না ! আমার বাসায় ডিএসএলআর আছে ! ঠিক আছে !
-আপনার জন্য নিয়ে এসেছি !
-আমার জন্য নিয়ে এসেছেন মানে ?
আমার এই প্রশ্নের জবার না লোকটা কিছু সময় দাড়িয়ে চুপচাপ ! আমি যে লোকটা কে পাশ কাটিয়ে চলে যাবো সেটাও পারছি না । কেন পারছি না সেটাও আমার কাছে ঠিক স্পষ্ট না !
লোকটা নিজের ব্যাগ থেকে আরও ছোট কালো রংয়ের একটা ব্যাগ বের করে আমার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল
-এটা আপনি নিয়ে যান ?
-মানে কি ? আপনি আমার কাছে জোর করে দিবেন নাকি ? আমি তো বললাম আমার লাগবে না !
লোকটা আরও কিছুক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বলল
-টাকা দেওয়া লাগবে না ! এটা নিয়ে যান যদি পছন্দ হয় তাহলে পরে দিয়েন । আর ভাল না লাগলে আমাকে ফেরৎ দিয়ে দিয়েন !
এই বলে লোকটি একটা অদ্ভুদ কাজ করলো । ক্যামেরার কালো ব্যাগটা আমার হাতে দিয়ে সোজা পেছন ঘুরে হাটা দিল ! আমি কিছু বলার আগেই গলির শেষ মাথায় গিয়ে হারিয়ে গেল !
বাসা এসে ক্যামেরাটা বের করে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলাম । মানুষ এমন কাজ করতে পারে ঠিক ভাবি নি । খুব বেশি আগ্রহ জন্মালো না । কারন বের করে দেখি ডিজিটাল ক্যামেরা না, এনালগ ক্যামেরা । ফিল্ম ভরতে হয় সেই ক্যামেরা !
এই ক্যামেরা দিন কি এখন আছে ! আমি ডিএসএলআর দিয়ে ছবি তুলি আর আমাকে দিয়ে গেছে এই আদিম যুগের ক্যামেরা ! আরও কিছুক্ষন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখলাম । চালু করে দেখলাম চালুও হল । এমন কি ভিতরে ক্যামেরার ফিল্মও আছে । আমি এমনি কোন দিকে ফোকাস না করে সাটার দেওয়ার জন্য পাওয়ার বাটন চাপ দিলাম । কিন্তু লাইট জ্বললো না ।
আগের এনালগ ক্যামেরা গুলোতে মেইন সাটার টেপার আগে লাইট জ্বলার জন্য অপেক্ষা করতে হয় । তা না হলে ছবি ওঠে না ! কিন্তু দেখলাম আলো জ্বলল না ! বিরক্ত হয়ে আমি ক্যামেরাটা আবার ব্যাগে রেগে দিলাম ।
থাকুক ! পয়সা তো দিতে হয় নি । আর যদি আবার দেখা হয় তাহলে দিয়ে দেব !
তিন
দুদিন ক্যামেরাটার কথা আমার মনেই পড়লো না । তৃতীয় দিন কি মনে হল এনালগ ক্যামেরা টা ব্যাগের ভিতর ভরে নিলাম । বাসা থেকে বের হয়ে গলির মাথায় এসে দিল সগীর পাগলা পথ আগলে দাড়িয়ে আছে ।
-এই ! আমার একটা ফটো তুল ! তুল না !
সগির পাগলার এই এক সমস্যা ! একদিন আমাকে দেখেছিল ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলতে । তারপর থেকেই আমাকে দেখলেই বলে একটা ছবি তুলে দিতে । আজকে এমন ভাবে সগীর পাগলা দাড়িয়ে রয়েছে ওকে পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়া সম্ভবও না । আর কোন উপায় না দেখে আমি ব্যাগ থেকে ক্যামেরা বের করতে গিয়ে সেদিনের এনালগ ক্যামেরার দিকে চোখ পড়লো । কি মনে হল আমি ডিজিটালটা না বের করে এনালগ ক্যামেরা টা বের করি । দেখা যাক ক্যামেরা টা কাজ করে কি না !
ক্যামেরার পাওয়ার চালু করে লাইট জ্বালানোর জন্য অপেক্ষা করলাম । আগেরকার ক্যামেরায় ছবি তোলার জন্য একটা সিগনালের জন্য অপেক্ষা করতে হত ।
কয়েক মুহর্ত পরেইলো লাল রংয়ের আলো জ্বলে উঠলো ! আমি সাটার চেপে দিলাম । কেবল ক্লিক করে আওয়াজ হল । আর কিছু না ! ছবি কি রকম উঠেছে !! পাগলা খুশি হয়ে চলে গেল । শব্স শুনে নিশ্চই বুঝতে পেরেছে ওর ছবি তোলা শেষ !
কি মনে চায়ের দোকানের কুকুরের ছবি তুললাম ! আরও কয়েকটা কাকের ছবি তুললাম ! মনে হল বেশ ভালই ছবি উঠলো । প্রত্যেকবার ছবি তোলার পরে কেমন একটা অনুভুতি হচ্ছিল । মনে হচ্ছে যেন কিছু একটা যেন ঠিক হচ্ছে না !
সব কিছু স্বাভাবিকই ছিল কিন্তু পরদিন যখন আবার বাইরে বের হলাম তখন আর সগীর পাগলা কে দেখলাম না । এমনটা হয় না । পাগলা সব সময় মোড়ের মাথায়ই বসে থাকে । চায়ের দোকানে গিয়ে দোকানীর মুখ শুকনা ! জানতে চাইলে বলল তার আদরের কুকুরটা নাকি রাতে মারা গেছে । আরও একটা খবর দিল সগীর পাগলাও গত কাল রাতে কিভাবে যেন মারা । আমার প্রথমে কিছু মনে না হলে রাতের বেলা কেমন যেন সন্দেহ হল ! গত কাল আমি কুকুর আর সগীর পাগলার ছবি তুললাম আর দুজনেই মারা গেল ! কিছু কাকের ছবিও অবশ্য তুলেছিলাম !
এমন কোন গুরুত্ব দেওয়ার মত বিষয় না । কিন্তু ব্যাপারটা আমার মনে শান্তি দিচ্ছিলো না । বারবার মনে হচ্ছিল কিছু একটা যেন ঠিক হয় নি । বারবার মনটা মৃত্যু দুইটাকে জোড়া লাগানির চেষ্টা করছিল ।
বাসায় আম্মার কয়েকটা পোষা মুরগি ছিল সেগুলোর ছবি তুললাম সেই ক্যামেরা দিয়ে । একটাকে রেখে বাকী সব কয়টার ছবি তুললাম !
এবং পরদিন সকালে আম্মার চিৎকারে ঘুম ভাঙ্গে । তার মুরগীর খাঁচার ভিতর তার সব গুলো মুরগি মারা গেছে । কেবল সেই একটা মুরগি বাদ দিয়ে ।
তবুও মনে শান্তি পাচ্ছিলাম না কিছুতেই । শেষে নিশির বাসায় গিয়ে পুটির ছবি তুলে নিয়ে আসলাম । এবং যথারীতি যা আশা করেছিলাম তাই হল ! আমার মনে শান্তি লাগছিল না । বারবার মনে হচ্ছিলো এই অশুভ জিনিস টা আমার কাছে রাখা উচিৎ হবে না । কোন ভাবেই উচিৎ হবে না !
কি যেন মনে আমি তখনই সেই অন্ধকার গলির দিকে রওনা দিলাম । আমার কেন জানি মনে হল আজকে সেই আগন্তকের সাথে আমার দেখা হবে । আমার জন্য সে অপেক্ষা করছে সেখানে ।
চার
-আমি জানতাম তুমি আসবে !
আমি কোন কথা না বলে কেবল চুপ করে দাড়িয়ে রইলাম । গলির ভিতরে ঢুকতেই সেদিনের সেই সুদর্শন লোককে দেখতে পেলাম দাড়িয়ে আছে । এমন একটা ভাব যেন আমার জন্যই সে অপেক্ষা করছিল !
লোকটা বলল
-তো আমার ক্যামেরা কি আপনার পছন্দ হয়েছে ?
-জি না । আমি ক্যামেরা ফেরৎ দিতে এসেছি !
-নিতে চাও না ?
-জি না !
আমার কথা শুনে লোকটা যেন খুব মজা পেল । হাহা করে হেসে উঠলো । হাসতে হাসতে বলল
-আমি কোন টাকা চাই না ! ক্যামেরাটার বদলে তোমাকে কোন টাকা দিতে হবে না !
আমি ক্যামেরা নিতে চাই না বললাম তবুও লোকটা বলল সে কোন টাকা নিতে চায় না ! আমি খানিকটা জিজ্ঞাসু চোখ বললাম
-তাহলে ? কি চান আপনি ?
-ক্যামেরার বিপরীতে আমার কিছু কাজ করে দিতে হবে আপনাকে ?
-কাজ !
লোকটা নিজের পকেট থেকে একটা কাগজ বের করে আমার দিকে বাড়িয়ে দিল । হাতে নিয়ে দেখাল সেখানে কিছু মানুষের নাম লেখা আছে । আমার বুঝতেও বাকি রইলো না যে আসলে লোকটা কি বলতে চাইছে । আমি বললাম
-এই কাজ আমার দ্বারা হবে না !
কয়েক মুহুর্ত কেটে গেল । আমি কিছু ভাবছি, লোকটাও নিশ্চই কিছু একটা ভাবছে । আর একটা বিষয় আমি একটু আগে লক্ষ্য করলাম লোকটা প্রথম দিন আমাকে আপনি করে কথা বলছিল কিন্তু আজকে বলছে তুমি করে ! আমার মনের কথা মনেই রইলো লোকটা বলল
-আসলে তুমি যেটা ভাবছো সেটা কিন্তু না !
লোকটার কন্ঠে একটু যেন কর্তৃত্বের সুর পেলাম । কিছুটা যেন আমার উপর প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে ।
আমি বললাম
-আমি তেমন কিছুই মনে করছি না !
-না, তোমার মনে কি কিছু প্রশ্ন জাগছে না ?
-কি রকম ?
-না এই যে এমন একটা ক্যামেরা আমি তোমাকে কেন দিলাম । আবার এই ক্যামেরা টা আমি কোথায় পেলাম । এতো লোক থাকতে তোমাকেই কেন ?
হ্যা । এই কৌতুহল টা আমার অবশ্য ছিল অনেক কিন্তু আমি কোন কথা বললাম না । আরও ভাল করে বললে আমার মনে কোথায় যেন একটা ভয় কাজ করছে । যেন খুব একটা অশুভ কিছু একটার সামনে আমি দাড়িয়ে আছি । আমি কোন রকমে বললাম
-আপনার ক্যামেরা আমি চাই না !
-সত্যি চাও না ?
-আমার তো মনে হয় ক্যামেরা টা তোমার বিশেষ দরকার !
-আমাকেই কেন ?
-কেন তোমাকেই নয় ?
লোকটা কিছুক্ষন চুপ করে থেকে পকেটে হাত দিয়ে একটা চুরুট বের করে নিজের মুখে নিয়ে আগুন ধরালো । হঠাৎ জ্বলে ওঠা আগুনে আমি লোকটার চেহারা দেখতে পেলাম । কেমন মায়াময় একটা চেহারা । সেদিন কিছু আবছায়া চেহারা দেখে কেমন ভদ্রলোক মনে হয়েছিল আজকে কেমন মায়াময় মনে হল !
হাস্যকর লাগলো নিজের কাছেই !
আমি বললাম
-দেখুন আমি এমনিতেই একটু মানষিক কষ্টে আছি । আমার কারনে একটা মানুষ মারা গেছে । দুইটা পোষা প্রানী মারা গেছে । শুধু মাত্র মাত্র আমার কারনে !
-না ঠিক তোমার কারনে না ! আসলে সগীর এমনিতেও মারা যেত ! জানোই তো জন্ম মৃত্যুর কথা কেউ কথা নিশ্চিত হয়ে বলতে পারে না !
-তাহলে আপনি কিভাবে বলছেন ?
আমার কথা শুনে ভদ্রলোক নিরবে হাসলেন ! আবছায়া আলোতে আমার কেন জানি সেই হাসি দেখে বুকের রক্ত হিম হয়ে গেল ! একটু আগে যে চেহারাটা মায়াময় মনে হচ্ছিল সেই চেহারার হাসি এতো ভয়ংকর হতে পারে আমি ভাবতে পারি নি ! আমার আবার এখান থেকে চলে যাওয়া প্রবনতাটা বেড়ে গেল । কিন্তু লোকটা ইচ্ছের বিরুদ্ধে আমার যাওয়ার যেন কোন উপায় নেই । আমি কেমন যেন মাটির সাথে আটকে গেছি মনে হচ্ছে !
লোকটা বলল
-দেখো আমার মাঝে মাঝে কিছু ভলান্টিয়ার দরকার পরে !
-ভলান্টিয়ার ?
-আরে তুমি দেখো নি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কলেজ ভার্সিটির কিছু ছেলে মেয়েকে নিয়োগ দেওয়া হয় কিছু দায়িত্ব দিয়ে ! সেরকম আর কি !
-আমি কি করতে পারি !
-কিছু করতে হবে না ! তোমাকে কিছু মানুষের নামের লিস্ট দিয়ে যাবো সেই লোক গুলোর ছবি কেবল তুলতে হবে তোমাকে !
-ছবি ? তার মানে তারা সবাই মারা যাবে !
-টেকলিক্যালি বলতে গেলে, হ্যা !
-আমার কারনে তারা মারা যাবে তারা !
-তোমার কারনে না ! এটা তাদের নিয়তি ! আর কিছু না !
-দেখুন এভাবে কারো ছবি তোলা যায় না ! নিয়তি হলেও যে কেউ অজানা অচেনা কাউকে ছবি তুলতে দিবে না আমাকে !
-ও ছবি তোলায় সমস্যা ? সমস্যা নেই ! তুমি চাইলে অন্য কিছু দিতে পারি !
-মানে ?
অবুঝ ছাত্রকে যেমন করে বোঝায় ঠিক তেমন করে লোকটি বলল
-দেখো প্রত্যেক টা মানুষের একটা নিয়তি আছে । একটা নির্দিষ্ট সময়ের পরে তাকে এই পৃথিবী থেকে চলে যেতে হয় । এবং এই কাজে কিছু একটা নিয়জিত থাকে । যারা সেই লোক গুলোকে মানে তাদের আত্মাকে এই পৃথিবী থেকে নিয়ে যায় । তাদেরকে নিয়ে যায় বিশেষ চিহ্ন দেখে ! সেই মানুষটার শরীরে সেই চিহ্নটা বসানোর ব্যাপারটা দেখার দায়িত্ব হচ্ছে আমার ! বুঝেছো ?
-তার মানে এই ক্যামেরা হচ্ছে সেই বিশেষ চিহ্ন বসানোর মেসিন ! সিল স্টেমের মত !
-এই তো বুঝেছো !
-এখন তুমি ফটোগ্রাফার বলে তোমাকে ক্যামেরা দিয়েছিলাম । চাইলে অন্য কিছু দিতে পারি । এর আগে একজনকে কলম দিয়েছিলাম সে নাম লিখতো ! একজনকে দিয়েছিলাম চশমা, একজন কে হাত মোজা ! আরও কত কিছু !! তুমি চাইলে বদলে দিতে পারি !
-আমার দরকার নেই ! আপনি আপনার ক্যামেরা নিয়ে যান ! আমি এই কাজ পারবে না !
-সত্যি পারবে না ?
-জি না ! পারবো না !
-আরেকবার ভেবে দেখো !
-অনেক ভেবেছি । আর না !
আমি আর দেরি করলাম না ! লোকটা কাছে ক্যামেরা দিয়ে তাকে পাশ কাটিয়ে চলে এলাম। যদিও নিজের হাতে চলে আসা অনেক ক্ষমতাকে দুরে ঠেলে দিলাম । কিন্তু তবুও নিজের কাছে কেমন একটা শান্তি শান্তি লাগছিল !
পাঁচ
বাসায় পৌছানোর ঠিক আগ মুহুর্তে নিশির ফোন এসে হাজির !
-কি হল ?
-তুমি কোথায় ?
-এই তো বাসার সামনে !
-এখনই ছাদে আসো !
-কি হয়েছে ?
-তুমি এখনই আসো !
আমি তাড়াতাড়ি ছাদের দিকে উঠে গেলাম । নিশিরা আমাদের ঠিক উপরের তলায় থাকে । তাই কোন কিছু দরকার হলে কিংবা দেখা করতে ইচ্চা হলে ছাদে চলে যাই আমরা !
আমি ছাদে গিয়ে দেখি নিশি একটি চিন্তিত হয়ে দাড়িয়ে আছে ।
আমি কাছে যেতেই নিশি আমাকে কিছু না বলেই জড়িয়ে ধরলো ! আমি কিছু বুঝতে পারলাম না গত দিনের পুটির মৃত্যুর কথা কি ওকে এখনও খুব বেশি শোকাহত করে তুলেছে ?
দেখি আগামীকালকেই ওর জন্য একটা বিড়াল কিনে আনতে হবে ! নতুন একটা বিড়াল পেলে নিশ্চই ওর মন ভাল হবে ।
কিন্তু আমাকে বেশ অবাক করে দিয়ে নিশি বলল
-কালকে আমাকে দেখতে আসবে !
আমি আকাশ থেকে পড়ার ভঙ্গিতে বললাম
-দেখতে আসবে মানে কি ?
-মানে বোঝো না ! কালকে দেখতে আসবে । যদি পছন্দ হয় তাহলে মনে এক সপ্তাহের ভিতরেই বিয়ে করে নিয়ে যাবে লন্ডন ! তুমি কিছু একটা কর !
-কি করবো !
-আমি কি জানি ! দেখো যদি তোমাকে ছেড়ে আমার অন্য কাউকে বিয়ে করতে হয় তাহলে আমি কিন্তু এই ছাদ থেকে লাফ দিবো !
আমি ওকে আবার জড়িয়ে ধরলাম ! বললাম
-ছি এসব কি বল ! আমি আছি না ! এক কাজ কর ! তুমি রেডি থাকো ! আমরা না কাল পরশু কোঠায় চলে যাই !
নিশি আমাকে জড়িয়ে ধরা অবস্থায় বলল
-তাই ! দেখো কিন্তু ! আমি কিন্তু সত্যি ছাদ থেকে লাফ দিবো ! বলে দিলাম !
-আচ্ছা বাবা ! লাফ দিতে হবে না ! আমি আসি না !
আমার মনে তখন অন্য চিন্তা কাজ করছে । কিছু একটা করতেই হবে আমার !
ছয়
-কি হয়েছে ? তোমার মন বিষন্ন কেন ?
-আর বল না ! আমাকে সেদিন দেখতে এসেছিলো না ?
-হুম ! কি হয়েছে ?
-আমাদের এখানে যাওয়ার সময় ওদের কারটা না এক্সিডেন্ট করেছে । তিন জনই মারা গেছে !
-সত্যি ? তাহলে তো .....
নিশি আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-ঠিক আছে । কিন্তু এভাবে তিন জন মারা যাবে আমার ভালো লাগছে না ! মানুষের মৃত্যু আমার ভালো লাগে না !
আমি বলল
-মৃত্যুর উপর তো কারো হাত নেই ! তুমি ভেবো না !
নিশির সাথে কথা বলে যখন নিচে এলাম তখনও নিজের কাছে সেদিনের মত অপরাধবোধ কাজ করছিল । এভাবে তিনজনকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে আমার একটুও বাঁধলো না ?
নিজের কাছে প্রশ্নটা বারবার জিজ্ঞেস করলাম !
কোন উত্তর পেলাম না !
সেদিন নিশির কথা শোনার পরে আমার মাথায় আর কোন কাজ করে নি । আমি আবারও সেই গলির ভিতর চলে গেছি ! দেখি লোকটাও গলির ওপর প্রান্ত থেকে হেটে আসছে । যেন ঠিকই জানতো আমার আবার ফিরে আসবো ! কোন কথা না বলে ক্যামেরার কালো ব্যাগ টা আমার দিকে ফিরিয়ে দিতে দিতে বলল
-তুমি যখন নিজের প্রয়োজনে ক্যামরা টা নিচ্ছি তখন মনে রেখো আমার কাজটা কিন্তু তোমাকে করতেই হবে ! যদি ঠিক সময় মত কাজ টা না কর তাহলে কন্তু তোমার একটু সমস্যা হতে পারে !
-করে দেবো !
লোকটা একটা কাজের লিস্টও দিল আমার হাতে ! আমি ক্যামেরা আর লিস্ট নিয়ে চলে এলাম !
সাত
টিনের একটা এক তলা বাড়ি ! সামনেই একটা চটের বেড়া দেওয়া । তার থেকে প্রায় শখানেক গজ দুরে একটা বড় আম গাছ ! আমি এই আম গাছের তলেই দাড়িয়ে । আমার অবস্থান এমন একটা জায়গায় যে চটের বেড়া পার হয়ে যে বেরুবে সে চাইলেই আমাকে চট করে দেখতে পারবে না ! কিন্তু আমি তাকে দেখতে পাবো ঠিকই !
অনেকক্ষন ধরে অপেক্ষা করছি । আমি জানি জানি জহির মিয়া ঠিক এই সময়টাতেই বাইরে বের হবে । ক্যামেরা রেডি করে নিয়ে বসে আছি । বের হলেই তার ছবি তুলে ফেলবো ।
গত কালকে তার ব্যাপারের খোজ খবর বের করেছি । জহির মিয়া কোথায় থাকে কখন কাজে বের হয় এই সব ! আমি ক্যামেরাটা আরেকবার চেক করি । এখনও ক্যামেরায় লাইট জ্বলে ওঠে নি । যখনই টার্গেট সামনে আসবে তার আগেই লাইট জ্বলে উঠবে । অন্তত গত তিন বারে তো এমনই হয়েছে । জহির মিয়াকে নিয়ে এটা আমার চতুর্থ টার্গেট । এটা হয়ে গেলে আর দুই টা । তাপরর আমি ঝামেলা মুক্ত হই !
প্রথম প্রথম ভেবেছিলাম হয়তো ছবি তুলতে গিয়ে আমার হাত কেঁপে উঠবে । কারন আমার একটা ক্লিকের কারনে লোকটা নাম মৃত্যু তালিকায় উঠে যাবে । ছবি তোলার পরে খুব বেশি হলে এক দিনের মাথায় সে মারা যাবে । যে কোন স্বাভাবিক মানুষের জন্য এটা একটু মেনে নেওয়া কঠিন !
নিশিকে যখন হারানোর প্রশ্ন আসলো তখন আমি ঠিক স্বাভাবিক ছিলাম না । মাথার ভিতর কেবল ওকে হারানোর ভয় কাজ করছিল । তাই ঝোকের বসেই কাজটা করেছি । কিন্তু যখন মাথটা ঠান্ডা হল তখন একটা অপরাধ বোধ আমাকে পেয়ে বসেছিল । বারবার মনে হচ্ছিলো যে আমি ঐ তিনটা মানুষ কে মেরে ফেলেছি । কেবল মাত্র আমার জন্যই মানুষ গুলো মারা গেছে । এই অপরাধ বোধে কি পরিমান যে অশান্তিতে আছি আমি কিছুতেই বলে বোঝাতে পারবো না !
একবার মনে হল লোকটা কে ক্যামেরা ফেরৎ দিয়ে বলি আমি তার কাজ পারবো না । কিন্তু লোকটা দ্বিতীয়বার আমাকে ক্যামেরা দেওয়ার সময় শর্ত দিয়েছিল তার হয়ে আমাকে কিছু কাজ করে দিতে হবেই ।
তবে প্রথম যে মানুষটা ছবি তুলেছিলাম তার ছবি তুলে কেমন যেন শান্তি শান্তি লাগছিল । মানুষ টা পুরান ঢাকার একজন বিখ্যাত মাস্তান । আমি যখন তার খোজ নিতে যাই , চায়ের দোকানে বসে তার জন্য অপেক্ষা করছিলাম, চোখের সামনে তার কীর্তি কলাম দেখলাম ! পথে চলতে থাকা একটা গার্মেন্স কর্মীর ওড়না ধরে টান দিল ! মেয়েটা অসহায়ের মত এদিক ওদিক তাকালো সাহায্যের জন্য কিন্তু ভাল মানুষ গুলো যেন কিছু দেখেই এমন একটা ভাব করেই চলে গেল !
আমি ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে দেখি ক্যামেরার লাইট জ্বলে উঠেছে ! আমি আর দেরি না করে ছবি তুলে ফেললাম ! এর পরে একজন রাজনৈতিক আর একজন ভদ্র চেহারার খুনি ! এদের জন্য ক্যামেরা সাটার চাপতে আমার একটুও দেরি হয় নি । একটুও হাত কাঁপে নি !
জহির মিরা ব্যাপারেও হাত কাঁপার কথা না । আমি অপেক্ষা করতে থাকি জহির মিয়ার জন্য !
মিনিট পাঁচেকের ভিতরেই লক্ষ্য করলাম আমার ক্যামেরার লাইট জ্বলে উঠেছে । এখনই নিশ্চই বের হয়ে আসবে । আমি প্রস্তুত হয়ে অপেক্ষা করি । ঠিক তার পরপরই চটের দরজা দিয়ে একজন বেড়িয়ে আসে । আমি ক্যামেরা সাটার টিপতে যাবো ঠিক তখন চটের দরজাটা আবার নড়ে উঠলো ! জহির মিয়াকে দেখলাম আবারও পেছন ফিরে তাকালো !
খুব বেশি ৪/৫ বয়স হবে মেয়েটার ! পিচ্চি মেয়েটি বাবা বাবা বলে জহির মিয়াকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো ! জহির মিয়া পরম মমতায় মেয়েটাকে কোলে তুলে নিল ! তারপর আদর করতে লাগলো ! একটু পরে দেখলাম আরও একটা নারী মূর্তি চটের দরজা বেদ করে বাইরে বের হয়ে এল । জহির মিয়া পিচ্চি মেয়েটিকে নারী মূর্তির কোলে দিয়ে আবার সামনের দিকে হাটা দিল । ফিরে তাকালো আবারও কয়েক বার !
আমি কেন জানি ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও ক্যামেরার সাটার চাপতে পারলাম না ! আগের তিন জনের বেলায় এমন টা হয় নি কিছুতেই ! এমন কি আগের কোন জনাে বেলাও এমন টা হয় নাই !
আমার চোখের সামনে কেবল পিচ্চি মেয়েটির চেহারা ভেসে উঠতে লাগলো ! পুরো দিনে আরও বেশ কয়েকবার চেষ্টা নিলাম ! কিন্তু কিছুতেই কাজ হল না । শেষে বাড়ির পথ ধরলাম ! বুঝলাম এ কাজ আবার দ্বারা হবে না !
-তুমি তাহলে ফেরৎ দিতে চাও ক্যামেরা টা ?
-জি !
-কিন্তু এমন তো কথা ছিল না !
-আমি দুঃখিত ! আমি পারবো না ! আমাকে ক্ষমা করুন প্লিজ !
আমি জানি আমি ডিল ভংগ করেছি ! কিন্তু তবুও পিচ্চি মেয়েটাকে কিছুতেই পিতৃহারা করা আমার পক্ষে সম্ভব হবে না ! আমাকে খানিকটা অবাক করে দিয়ে লোকটা পেছন দিকে হাটা দিল ! আমি বললাম
-ক্যামেরা টা নিবেন না ?
আমার দিকে না তাকিয়ে লোকটা বলল
-তোমার কাছ থেকে আরও তিন দিন পরে আমার ক্যামেরা নেওয়ার কথা ! আমি সেদিন এসে তোমার কাছ থেকে ক্যামেরা নিয়ে যাবো ! এর আগে না !
-তাহলে আমি কি করবো !
-যা ইচ্ছা কর ! তোমাকে যা করতে বলা হয়েছিল তা করতে পারো আবার নাও করতে পারো ! তবে পরে আমাকে কোন কথা কিন্তু পরে বলতে পারবে না !
পরিশিষ্টঃ
-মা আমার ক্যামেরা টা কোথায় ?
-কোন টা ?
-আরে আমার ড্রায়ারের ভেতরে ছিল ! পুরানো ক্যামেরাটা ! কে হাত দিল !
-ও মনে হয় সাবিহা নিয়েছে । তোকে খুজছিল একটু আগে ! ছবি তোলার জন্য ! তাহলে মনে ঐ নিয়েছে !
-কোথায় গেছে ? কোন দিন ?
-আরে ক্যামেরাই তো ! এমন করছিস কেন ? ও কি ছবি তুলতে পারে না নাকি ?
-মা কোথায় ও ! জলদি বল প্লিজ !
-আরে তোর বড় আপা আর রিনুর ছবি তুলতে গেছে মনে হয় ছাদে !
আমার মাথার ভিতর চক্কর দিয়ে উঠলো ! কখন গেছে ? এতোক্ষনে কি ছবি তুলে ফেলেছে !
আমি ছাদের দিকে দৌড় দিলাম ! আমার মাথায় তখন আর কোন কিছু কাজ করছে না !
যা বলা প্রয়োজনঃ গল্পটার কিছু অংশ লিখে প্রথমে ফেসবুকে দিয়েছিলাম । অনেকে সেখানে মন্তব্য করলো গল্পটা ওমুক গল্প ওমুক মুভির সাথে মিল আছে । থাকতে পারে কিন্তু কি যায় আসে । আমার গল্প আমার মত করে লেখা ! তারপর যদি কোন গল্প কিংবা মুভির সাথে মিলে যায় কি আর করা বলেন !
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৩৭
অপু তানভীর বলেছেন: কিতা হইলো ?
২| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৩৮
অপ্রতীয়মান বলেছেন: প্রথমটুকুও ফেসবুকের পাতায় পড়েছিলাম। বাকিটুকুও পড়লাম।
দুর্দান্ত হয়েছে। তবে আমার দেখা এমন কোন মুভির সাথে মিল পাইনি।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৫৪
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ !!
দেখি আরও কয়েকটা গল্প লেখা যায় নাকি এরকম !
৩| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:২৭
অঘটনঘটনপটীয়সী বলেছেন:
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:০৬
অপু তানভীর বলেছেন: কিতা হইলো ?
৪| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৩১
বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: মানুষ মরণশীল। তারপরও আমরা কেউ জানি না কবে কার মৃত্যু হবে। কিন্তু প্রতিটা মৃত্যুর পিছনেই কোন না কোন কারণ থেকে যায়। অপ্রত্যাশিত কারণে সাথে কিছু প্রতাশিত কারণও দেখা যায়। এনালগ ক্যামেরাটা এখানে রূপক হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে। ক্যামেরাটার কারণে কিছু অবুঝ প্রাণী এবং পাগলের মৃত্যু হয়েছে। তবে গল্পের নায়ক এই রহস্যের সমাধান করতে যেয়ে নিশির বিড়ালটারও মৃত্যু হয়। এটা জানার পর নায়কের মনে অপরাধ বোধ জেগে উঠে। সামনে এসে হাজির হয় আবার ক্যামেরার মালিক। তার লিস্ট ধরে পরে খুন করতে বলা হয়। শর্ত মেনে নিশিকে দেখতে আসা হবু বরকে খুন করার একটা প্লান ছিল মনে হয়। নতুবা শর্ত কেন মিনে নিয়েছিল প্রশ্নটা থেকে যাবে। তারপর আবারও ক্যামেরাটা দিয়ে খুন করা সমাজের কয়েকটা কীট। কিন্তু জহিরকে খুন করতে যেয়ে নিষ্পাপ শিশুর কারণে গল্পের নায়কের মনে মানবতা জেগে উঠে। বাসায় এসে ক্যামেরাটা তুলে রাখে। ভালো কাজের জন্যই হোক আর মন্দ কাজের জন্যই হোক খুন একটা অপরাধ। আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া ঠিক না। শেষ পর্যন্ত সাবিহা যখন বড় আপা আর রিনুর ছবি তুলতে ক্যামেরাটা নিয়ে যায়, তখন জেনো গল্পকার গল্পের নায়কের পাপের প্রায়শ্চিত্তটা নিশ্চিত করে দিলেন। নায়ক বেঁচে থেকেও সারাজীবন একটা নিষ্ঠুর যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করবে।
গল্পের ব্যাখ্যাটা দাঁড়া করানো বেশ কষ্টকর মনে হল। আমার মতো একটা ব্যাখ্যা আপনার সাথে শেয়ার করলাম। নাও হতে পারে। গল্পের ব্যাখ্যা হোক বা না হোক, ভিন্নধর্মী গল্পটা উপভোগ করেছি আমি। নিরন্তর শুভ কামনা রইলো অপু তানভীর।
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:১৭
অপু তানভীর বলেছেন: চমৎকার ব্যাখ্যা ! আপনার চিন্তা মত করেই আমি গল্পটা লিখেছি ! নিরন্তর শুভ কামনা রইলো আপনার জন্যই !!
৫| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৪৭
অপ্রতীয়মান বলেছেন: দ্রুত লিখে ফেলুন। আমরা তো অপেক্ষাতেই থাকি....
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:১৮
অপু তানভীর বলেছেন: দেখা যাক !! কত গুলো লিখতে পারি !!
৬| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:১৬
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: চমৎকার গল্প ভ্রাতা ++++++++
এরকম আরও চাই। কারও কথায় কান না দিয়ে লিখতে থাকুন।
অনেক শুভকামনা
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:২৫
অপু তানভীর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ !
দেখি এবার এরকম গল্প লিখতে হবে । কদিন থেকে ভালুবাসার গল্প কেনু জানি লিখতে পারছি না !
৭| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৫২
বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন:
দারুণ গল্প++++
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:২৫
অপু তানভীর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ !!
৮| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:০৫
তাহসিনুল ইসলাম বলেছেন: ভালো লাগলো। শুভকামনা অশেষ !
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:২৬
অপু তানভীর বলেছেন: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ
৯| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:০৯
জলমেঘ বলেছেন: বাহ! দারুন তো। আমি কোনকিছুর সাথে মিল পেলাম না। আমার মুভি ভান্ডার অবশ্য খুবই সীমিত
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:২৭
অপু তানভীর বলেছেন: আমিও অবশ্য মিল পাই নি । কিন্তু লোকে বলল তাই বলার প্রয়োজন মনে হল ! যাই হোক অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য !
দেখি এরকম গল্প আরও কিছু লেখা যায় নাকি !
১০| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৪৯
স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: অপু তানভীরের গল্প মানে জানতাম প্রেমে ভরপুর , প্রেমিক পুরুষ বলে কথা !
নিজের শেকল ছেড়া গল্পে ভালোলাগা
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৩২
অপু তানভীর বলেছেন: হেহেহে ! আমি কিন্তু এর আগেও ভৌতিক এমন কি থ্রিলার গল্পও লিখেছি !
আর মূল সমস্যা হচ্ছে কদিন থেকে কেমন যেন ভালবাসার গল্প লিখতে পারতেছি না ! কি জানি হইছে !
১১| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:১৭
কলমের কালি শেষ বলেছেন: চমৎকার ভৌতিক গল্প । +++
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৩৩
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ
১২| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৩৬
স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: আমি বুঝছি আপনার এই সমস্যাটা ! কিছু একটা হইছে , একটা পার্ট টাইম প্রেমে যোগ দেন আশা করি ঠিক হয়ে যাবে , আমরা তো আছিই সাথে নাকি ?
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৪৫
অপু তানভীর বলেছেন: এখন পার্ট টাইম প্রেমিকা কই পামু ?
একটা খুইজা দাও !
১৩| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৪৬
স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: আপনি অনুমতি পত্র সত্তায়িত করে এনে দেন , আমি বাকীটা দেখতেছি
০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:১৯
অপু তানভীর বলেছেন: সত্যায়িত আবার কার কারে করা লাগবে ? আমি ফাইনাল অনুমুতি দিয়ে দিলাম !
১৪| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:৪১
ডি মুন বলেছেন:
++++
গল্পটা ভালো লাগল।
০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:১৩
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ অনেক !
১৫| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৩৮
হাসান মাহবুব বলেছেন: শীতের রাতে গরম পোষাকের ভেতর থেকে ভৌতিক গল্প পড়ার মজাই আলাদা। ভালো লাগলো।
০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৩৬
অপু তানভীর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ হামা ভাই !
১৬| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৪১
দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: ভালো লাগলো।
+++
১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৪
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ
১৭| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৩২
তুষার কাব্য বলেছেন: দুর্দান্ত হয়েছে গল্প টা....
ভালো থাকুন...শুভকামনা....।
১১ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৪৩
অপু তানভীর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ !
ভাল থাকুন আপনিও সব সময় !!
১৮| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৯
এনামুল রেজা বলেছেন: একটা অসাধারণ প্লট। টানটান উত্তেজনা ধরে রেখেছে।
কিন্তু নিজের মতামতের ক্ষেত্রে বলবো, গল্প শেষের দিকে নেওয়ার তীব্র একটা ঝোঁক পুরো গল্পের ছিলো। আরেকটু গুছিয়ে, আরেকটু ধিরে সুস্থে গল্পটা বলা গেলে অনেক চমৎকার একটা রহস্য গল্প হত।
তারপরেও বলবো, অসাধারণ লিখেছেন।
শুভকামনা রইলো।
অঃটঃ লেখকের উচিত সবসময় নিজের গল্পটা নিজের মত করে লেখা। দুনিয়াটা গোল, মিলে যেতেও পারে অন্য কারও সাথে। ওতে কিছু যায় আসেনা।
১১ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:২৮
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য ! আপনার জন্যও শুভকামনা রইলো !!
১৯| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৬:২০
হান্টার১ বলেছেন:
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:০০
অপু তানভীর বলেছেন: কি সমস্যা ?
২০| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৪:৫৪
মহান অতন্দ্র বলেছেন: ভালো লাগলো। শেষ পর্যন্ত টেনেছে। উত্তেজনায় ছিলাম শেষটা কি হয়।
২৮ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:৩৫
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ার জন্য !
২১| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:০০
শান্তির বার্তা বলেছেন: দুর্দান্ত হয়েছে।
২৮ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:১৩
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:২০
নিয়ামুল ইসলাম বলেছেন: