নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

www.oputanvir.com

অপু তানভীর

আমার চোখে ঠোঁটে মুখে তুমি লেগে আছো

অপু তানভীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনুগল্পঃ আমাদের গল্পটা

১৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১৩



-এই দেখো তো এটা কেমন ?

রেশমী লাল রংয়ের একটা শাড়ি গায়ে অর্ধেক টা জড়িয়ে নিয়েছে । আমার দিকে তাকিয়ে আমার পছন্দের কথা জানতে চাইছে ! এমন একটা ভাব যেন বিয়েটা ওর নিজের হচ্ছে !

আমি বললাম
-সুন্দর !
রেশমী কপট রাগ দেখিয়ে বলল
-কি ব্যাপার যেইটাই বলি সেইটাই বল সুন্দর ! তাহলে নেব কোন টা ?
-আরে, ওরা এমনিতে আছে দৌড়ের ভিতর ! কোনটা সুন্দর কোন টা সুন্দর এটা চিন্তার করার সময় কোথায় ?
রেশমী আমার দিকে চোখ গরম করে বলল
-ইভান, তুমি এমন কেন বল তো ? বিয়ে মানুষের জীবনে কয় বার হয় আর বিয়ের শাড়িইবা কবার কেনে ? একবার কিনবে একটু দেখে শুনে কিনবে না ?

রেশমীর রাগের কারন টা আমি ঠিকই ধরতে পারি । আসলে ওর জীবনে এমন একটা মুহুর্ত আসার কথা ছিল কিন্তু ঠিক মত আসেনি তাই এই কষ্টটা ও ঠিকই বুঝতে পারে ! আমি তাড়াতাড়ি বললাম
-আচ্ছা বাদ দাও ! আমি কি এসব বুঝি ? এগুলো মেয়েদের ব্যাপার এই জন্য তো তোমাকে নিয়ে এলাম !
-হুম !


আমাকে চুপ করে বসে থাকতে বলে রেশমী আবারও বিয়ের শাড়ির বাছতে শুরু করে দিল । আমি চুপচাপ রেশমীর মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম । ওর সাড়া মুখ জুড়ে একটা চাপা উত্তেজনা স্পষ্টই ধরা পরছে ! নিশি আর আরমানের বিয়ে বিয়ে ও যথেষ্ঠ উত্তেজিত বোঝা যাচ্ছে !

দুপুরের অফিসে ছিলাম, আমিন ভাই ফোন দিয়ে বলল নিশি নাকি ওর বাসা থেকে চলে আসছে, এখন গাড়িতে । নিশির আব্বা নাকি নিশির বিয়ে দিয়ে দিচ্ছিলো কার সাথে । এদিকে আরমান একটু চিন্তিত হয়ে আছে । ও বাচ্চা মানুষ একা আর কত দিকে সামাল দিবে ! আর তা ছাড়া নিশি যখন ঢাকায় আসবে তখন বিয়ের জন্য কিছু মেয়েদের ব্যাপার আছে । সেগুলোর জন্য রেশমীকে দরকার ! একটু পরে আরমান নিজে ফোন করেও একই কথা বলল । সেই সাথে নিশির কেনা কাটার দায়িত্বটা নিতে অনুরোধ করলো ।
রেশমী কে বলতে রেশকী যেন একলাফে রাজি হয়ে গেলে । তাছাড়া রশমীর সাথে অনেক দিন বাইরে বের হওয়া হয় না । এই সুবাধে ওর সাথে ঘোরাঘুরিটাও হল একটু ! তাই আমিও বিশেষ আপত্তি করলাম না !


-আচ্ছা এবার চল কিছু কসমেটিক্স কিনি !
-আরও !
-শুনো মুখে বিরক্তি নিয়ে তাকাবা না খবরদার ! একটা বিয়ের জন্য কত কেনা কাটা আছে জানো ? কত রকমের জিনিস দরকার হয় একটা বউসাজাতে গেলে? কত ঝামেলা সহ্য করতে জানো ? নিজের বিয়ের সময় তো এসব কিছু করা লাগে নি তাই জানো না !

আসলেই আমার আর রেশমীর বিয়ের সময় এসব কিছুই করা লাগে নি । কিন্তু ঝামেলা হয়েছিল অন্য দিক দিয়ে ! নিজেদের বাসার অমতেই আমাদের বিয়েটা হয়েছিল । ভেবেছিলাম যখন একবার বিয়েটা হয়ে যাবে তখন মনে হয় আর কোন ঝামেলা হবে না । কিন্তু আমাদের ভুল ধারনা ভুল প্রমানিত হল যখন দেখা গেল দুই বাড়ির কেউই আমাদের কে মেনে নিল না । মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো ।
বিয়ের দিন যেখানে মানুষ কত রকম আচার অনুষ্ঠানে ব্যস্ত থাকে সেখানে আমি ওকে নিয়ে এদিকও ওদিক ঘোরাঘোরি করে ঘর খুজতেছিলাম থাকার জন্য ! একটা টিন-সেডের বাসা ঠিক করে ফেললাম ! এক রুমের বাসা । সারি সারি আট টা রুম পরপর । আট রুমে আরও আট টা পরিবার থাকে । কমন বাধরুম সাথে কমন কিচেন !
হোক ! সামর্থ্যের ভিতর এর থেকে ভাল কিছু তখন কল্পনাই করা যেত না !
যখন ওকে নিয়ে প্রথম ঘরে ঢুকতে যাবো রেশমী নিজের মাথায় কাপড় টেনে একা একাই ঘরে ঢুকলো ! এই সময়ে ওকে বরন করার কেউ ছিল না !
একটু যেন ওর মুখ টা মলিন দেখলাম ! একবার মনে হয়েছিল নিস্পাপ এই মেয়েটার জীবনটা নিজের অনিশ্চিয়তার সাথে জড়িয়ে ফেললাম বুঝি ! মোটামুটি সব মেয়েই ভালবাসলেও নিশ্চয়তা ছাড়া ভালোবাসার মানুষটির সাথে ঘর বাঁধতে প্রস্তুত থাকে না ! কিন্তু রেশমী আমার অনিশ্চিত জীবনের সাথে নিজের জীবনকে মিশাতে বিন্দু মাত্র দ্বিধা বোধ করে নি ! আমার ভরশা করে আমার হাত ধরে বাসা থেকে বের হয়ে এসেছে । তখন কেবল মনে হয়েছিল আমি কি পারবো ওর ভরশাটাকে রক্ষা করতে !



-এই আরমানের জন্য কি পাঞ্জাবী কিনবা ? সাথে ওর নাগরা ?
-এদিক কার কেনা কাটা শেষ ?
-হুম মোটামুটি !
-আরেকবার ভেবে দেখো ! পরে কিন্তু বলতে পারবে না এটা কেনা হয় নাই । যা কিনবা একবারে কিনে ফেলো !
আমি আররও কিছু বলতে যাচ্ছিলাম তখন দেখি নিশির মোবাইলে ফোন এসে হাজির ! কিছুক্ষন হু হা করে ও ফোন রেখে দিল ! আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-বাসা থেকে ফোন ! বাবু ঘুম ভেঙ্গেছে !
-কোন সমস্যা ?
-না ! কোন সমস্যা নেই ! এমনি ফোন দিয়েছে !

ফোন রেখে রেশমী নিজের কেনা ব্যাগ গুলো আরেক বার চেক করে নিতে লাগলো । আরও কিছু লাগবে কি না সেইটাও দেখে নিচ্ছে !


বলতে গেলে প্রথম ধাক্কাটা আমরা দুজন মিলে ঠিকই সামলে উঠলাম ! ছোট একটা ঘরে দুজনের টোনাটুনির সংসার ! সাারা দিন আমি বাইরে থাকি । টাকা উপার্জন করতে হবে !
সন্ধ্যার বাসায় আসলে দুজন মিলে রান্না করতে যাই ! অন্যান্য ঘরের মানুষ গুলো আমাদের ভালোবাসা দেখে হাসে ! রাতের বেলা একটা সিঙ্গেল তোষকের উপরে দিজন ঘুমাই । গরমে একটু কষ্টই হত ! প্রথম দিকে কোন ফ্যান ছিল না ! হাত পাখা দিয়ে বাতাস করতে করতে মাঝে মাঝে আমার হাত টা লেগে আসতো ! আমার বুকে মাথা রেখে তখন রেশমী ঘুমিয়ে !
আমি পাখা হাত বদল করতেও ও কেমন করে জানি উঠে যেত ! আমার বুকে মাথা রেখেই বলল
-আমার গরম লাগছে না ! তুমি ঘুমাও তো ! না হলে আমাকে দাও পাখাটা !
-ঠিক আছে ! ত

যেদিন আমি প্রথম ফ্যান কিনে আনলাম রেশমীর আনন্দ দেখে আমার নিজের চোখে পানি এল ! বাচ্চা মেয়েদের মত সুইচ টা বারবার টিপে দেখছিল ফ্যানের পাখাটা ঠিক মোত ঘরে কি না ! ফ্যান কিনে আনার আনার চেয়ে রাতে আমার যে আর কষ্ট করে বাতাস করতে হবে না এই আনন্দ টাই যেন ওর কাছে বড় ছিল !

আমরা মাঝে মাঝেই রাতের বেলা হাটতে বের হতাম ! ফাঁকা রাস্তায় রেশমী আমার হাত জড়িয়ে ধরে হাটতো ! মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতো ! হয়তো কষ্ট সংসার ছিল আমাদের কিন্তু সেই মূহর্ত গুলোতে পৃথিবীর সব থেকে সুখী মানুষ মনে হত নিজেকে ! সকল কষ্ট তখন অতি তুচ্ছ মনে হত !

তারপর চাকরিটা হওয়ার পরে আমাদের কেবল সুখের দিন ! এদিকে দিন যাওয়ার সাথে সাথে দুজনের পরিবার থেকেও আমাদেরকে মেনে নিল ! তবুও ঐ দিন গুলোর কথা প্রায়ই মনে পড়তো আমার । আমি জানি রশমীও তেমন টাই হত !



কেনা শেষ করে আমিন ভাইয়ের বাসায় পৌছে দেখি সেখানে হুলস্থুল ব্যাপার । পরিচিত অনেকেই চলে এসেছে । নিশিও চলে এসেছে । ঘরের ভিতর বসে আছে ! রেশমী চলে গেল নিশির কাছে । আমি আরমানের বিয়ের আয়জন দেখতে লাগলাম ! একটু হলেও আমার নিজের বিয়ের কথা বারবারই মনে হচ্ছিল ! এতোটা ভাগ্যবান কি ছিলাম আমি ?
কে জানে ?

বিয়ের ঝামেলা যখন শেষ হল তখন রাত হয়ে গেছে । সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাইরে বের হয়ে এলাম ! এখানে রাতে থাকতে পারলে হয় আড্ডা টা ভাল তো হত তবে বাবু ওর মাকে ছাড়া কিছু বুঝে না ! আমি আবার বাবুর মাকে ছাড়া কিছু বুঝি না ! তাই থাকা হল না !

আমি রেশমীকে নিয়ে রিক্সায় উঠলাম ! আমার বাসা কাছেই তবুও রিক্সাওয়ালেকে একটু ঘুরে যেতে বললাম ! একটু রিক্সা ভ্রমন দেওয়া যাক !

-ওদের বিয়ে টা ভালই ভাল হয়ে গেল তাই না ?
-হুম !
-ভাগ্য ভালো আমরা ছিলাম ! বিয়ের সময় কাছের মানুষ গুলোর থাকাটা একটা অনেক বড় একটা ব্যাপার ! তাই না ?

রেশমীর দিকে তাকিয়ে মনে হল ওর মুখ টা মনে হয় একটু বিষন্ন । আমি ওর হাত ধরে বললাম
-হুম ! অনেক বড় একটা ব্যাপার !

রেশমী আমার দিকে যখন তাকালো তখন দেখি ওর চোখে পানি ! পুরানো সেই কষ্টের কথা গুলো মনে পড়লো ওর চোখে প্রায়ই পানি আসে । একটা মেয়ের জীবনের সব থেকে বিশেষ মুহুর্ত হচ্ছে তার বিয়ের সময় টা । এই সময়ে নিজের পরিবার আত্মীয় সজনের কাছে থাকা টা অনেক বেশি জরুরী ! ও এই বিষয়টা নিয়ে মাঝে মাঝে মন খারাপ করে ! আমি তখন ওর কথা ভাবি । ওকে মনে করিয়ে দেই আমরা কেবল কষ্টই করি নি অসম্ভব কিছু সুন্দর সময় কাটিয়েছি ! কেবল সুখের সময় না কষ্টের সময় গুলোতেও আমরা একে অন্যের হাতে হাত রেখে পার করেছি !

আমি বললাম
-তুমি কেন মন খারাপ কর ! আমরা এক সময়ে কষ্ট করেছি কিন্তু এখন তো আমরা ভাল আছি ! অন্তত জীবনে আফসোস তো নেই ! নাকি আছে ?
রেশমী বলল
-আফসোস কেন থাকবে ?
আমি কথার মোড় ঘুড়ানোর জন্য বললাম
-না মানে, আমার থেকেই কোন হ্যান্ডসাম ছেলে যদি .....।
-হুম ! আচ্ছা !
রেশমী একটু চিন্তা করার ভান করে ! তারপর বলল
-এটা একটু চিন্তা করে দেখার বিষয় অবশ্য !
-কি ? শুনে আমার থেকে হ্যান্ডসাম ছেলে তুমি আর কোথাও খুজে পাবে বুঝছো !
-জি বুঝলাম ! আপনি কত হ্যান্ডসাম আমার জানা আছে !

আমাদের কথা চলতে থাকে ! এদিকে রিক্সা ফাঁকা রাস্তায় টুংটাং করে এগিয়ে এল ! যেমন ভাবে আমাদের গল্প টা এগিয়ে চলেছে... এক সাথে....





প্রিয় মানুষ গুলো জন্মদিনের কথা আমি সাধারনত খুব একটা ভুলি না ! আজকে তেমনই একজন প্রিয় মানুষের জন্মদিন !
প্রিয় কান্ডারি ভাই শুভ জন্মদিন !

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:২৩

নিয়ামুল ইসলাম বলেছেন: :)

১৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৩৫

অপু তানভীর বলেছেন: :) :)

২| ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৩১

আমিনুর রহমান বলেছেন:




:)

১৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৩৫

অপু তানভীর বলেছেন: :) :)

৩| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:০৫

ডি মুন বলেছেন: ++++++

:)

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:১৪

অপু তানভীর বলেছেন: :) :)

৪| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:২৬

তাশমিন নূর বলেছেন: মিষ্টি প্রেমের গল্প। ভালোই লাগল।

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৪২

অপু তানভীর বলেছেন: :) :) :)

৫| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৩৪

সুমাইয়া আলো বলেছেন: Not bad

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১:০৯

অপু তানভীর বলেছেন: :) :)

৬| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:১৪

তুষার কাব্য বলেছেন: ভালো প্রেমের গল্প। :)

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:০৮

অপু তানভীর বলেছেন: :) :)

৭| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:১৫

জেরিফ বলেছেন: অনবদ্য প্রেম এর গল্প ।


ইভান ভাইয়ের জন্য প্রত্যহ শুভ কামনা ।

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:০৮

অপু তানভীর বলেছেন: ইভান ভাইয়ের জন্য প্রত্যহ শুভকামনা ।

৮| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৩

সুমন কর বলেছেন: কান্ডারি ভাইকে ফেবুতেই জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছি। !:#P

অাপনি উনাকে মনে রেখে অামাদের গল্প উপহার দিয়েছেন। ধন্যবাদ।

বাস্তব কাহিনী এবং সত্যি নাম রেখে (কিছু) গল্প লিখেছেন। :P

ভাল লাগল।

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:২৩

অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ ! :):)

৯| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৩৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: :) :D B-)

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৪৮

অপু তানভীর বলেছেন: :D :D :D

১০| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ ভোর ৪:০৪

শূন্য সুমিত বলেছেন: ভালো লাগলো.....। ++++

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:২৫

অপু তানভীর বলেছেন: :) :) :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.