নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"খাইছে এই মাইয়া এই খানে কি ?"
মুখ দিয়ে কথাটা বেরই হয়ে যাচ্ছিল । কোন ভাবে মুখের কাছে এসে আটকে গেল !
প্রথমে মনে হল আমি হয় তো ভুল দেখছি কিন্ত আরেকটু ভাল করে দেখলাম নাহ, কোন ভুল নাই ! সেই মেয়েই ! বয়সে একটু বড় হয়েছে কিন্তু চেহারা একদম পরিবর্তন হয় নি । আরও একটু পূর্ণতা পেয়েছে বলতে আরও একটু সুন্দরী হয়েছে ।
আমি আস্তে করে বসের পেছনে চলে গেলাম ! নিজেকে আড়াল করা নিলাম । গত কালই শুনেছিলাম যে কোন মন্ত্রীর মেয়ে নাকি এখানে আসতেছে ছটি কাটাতে । কিন্তু এই মেয়ে যে আসবে কোন ভাবেই মাথায় আসি নি । আর মনে আসবেই বা কি ভাবে এতো পুরোনো কথা কি মনে থাকে ?
নয় বছর ?
হুম ! আট-নয় বছর তো হবেই !
আমি আরেকবার লবির দিকে তাকালাম । মোট আটজন গান ম্যান রয়েছে । হাবভাব দেখেই মনে হচ্ছে এরা সব সরকারী লোক । ভিআইপিদের সিকিউরিটি দেওয়াই এদের কাজ । মুখে সব সময় একটা গাম্ভির্য মুলক ভাব নিয়ে বসে দাড়িয়ে আছে ।
আমাদের বস মানে হোটেলের মালিক নিজে এসেছে এদেরকে স্বাগতম জানানোর জন্য ! বস আর ম্যানেজার সাহেবের সাথে আমারও তাদের সাথে থাকার কথা ছিল কিন্তু আমি পেছনে চলে এলাম ! কথা বলুক ! বস যা বলার বলুক ! এখনই এখন থেকে কেটে পড়া লাগবে । না জানি মেয়েটা আমাকে চিনতে পারবে কি না ? পাড়ার কথা না, তবুও যদি চিনে ফেলে তাহলে তো খবরই আছে ! পেছন দিয়ে কেটে পড়তে যাবো ঠিক তখনই বস আমার নাম ধরে ডাক দিল !
-এই সাফাত !
-জি স্যার !
-এদিকে এসো !
আমি দুরু দুরু পায়ে এগিয়ে গেলাম ! যখনই মেয়েটার দিকে চোখ পড়লো আমার মত মেয়েটাও চমকে গেল কিন্তু নিজেকে সামলে নিল পরক্ষনেই । বস আমাকে দেখিয়ে বলল
-এ হচ্ছে সাফাত হাসান ! আমাদের এই হোটেলের এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার । আপনাদের পুরো টিমের দেখা শুনার দায়িত্বে সাফাত থাকবে ! যে কোন দরকারে সরাসরি সাফাতের সাথে যোগাযোগ করবেন ।
মেয়েটি আমার দিকে এগিয়ে এসে হাত বাড়িয়ে দিল । বলল
-আপনার সাথে পরিচিত হয়ে ভাল লাগলো মিস্টার হাসান ! আমি নিহিতা আহমেদ !
আমিও কোন রকম হাত মিলিয়ে মুখে হাসি আনার চেষ্টা করলাম । কিন্তু খুব বেশি কাজ হল না কি না কে জানে ?
কিন্তু নিহিতার মুখের হাসি আমাকে বেশ চিন্তিত করে ফেলল । না জানি মেয়েটা সামনে আমার সাথে কি করবে ?
নাহ ! এই চাকরি করা যাবে না আর ! জেল জরিমানা হয়ে যেতে পারে যদি নিহিতা এখন পুলিশ ডেকে সব কিছু বলে দেয় ! আমার মুখে ভয়ের চিহ্ন দেখে নাকি অন্য কোন কারনে নিহিতা আমার মুচকি হেসে উঠলো !
বেয়ারা ডেকে ওদের রুম দেখিয়ে দিয়ে চট জলদি কেটে পড়লাম ! রুমে গিয়ে ব্যাগ গুছাতে হবে । এখানে থাকা যাবে না মোটেও ! মোটেও থাকা যাবে না !
বস তো এখন ছুটি দেবে না । না দিক, না দিলে চাকরি ছেড়েই এখান থেকে চলে যেতে হবে !
আমি রুমে আসতে আসতেই আমার ফোন বেজে উঠলো ! অপরিচিত নাম্বার !
-অপু সাহেব !!
-কে ?
বলেই মনে হল কে ফোন করেছে । এখানে আমার ডাক না কেউ জানে না । সবাই সাফাত নামে চিনে । এই মেয়ে কেবল আমার চেহারাই মনে রাখে নি আমার নামটাও মনে রেখেছে । এতো বছর পরেও আমাকে মনে রেখেছে দেখে একটু অবাকই হলাম !
নিহিতার কন্ঠ চিন্তে আমার একটুও কষ্ট হল না ! নিহিতা বলল
-অপু সাহেব, ব্যাগ গোছানোর কথা চিন্তাও করবেন না ! যদি আপনি পালানোর চেষ্টা করেন তাহলে কিন্তু সত্যি সত্যিই পুলিশের কাছে আপনার নাম বলবো ! মনে রাখবেন আমার বাবা কিন্ত এখন মন্ত্রী ! সেই কিডন্যাপারদের একজন কিন্তু এখনও ধরা পরে নি !
ভয়ের একটা শীতল স্রোত আমার মেরুদন্ড দিয়ে বয়ে চলল ! কি করবো ঠিক বুঝতে পারলাম না !
নিহিতা বলল
-বিকেল বেলা সমুদ্রে আমরা হাটতে বের হব ! আপনি আমাদের সাথে যাবে ।
নিহিতার কন্ঠস্বর শুনে মনে হল বিকেল বেলা তারা হাটতে যাবে আমাকেও যেতে হবে, এটা সে আমাকে অনুরোধ করছে না, আমাকে আদেশ দিচ্ছে !
এমন বিপদে জীবনে পড়বো কোন দিন ভাবতেও পারি নি ! এখন কি করি ? ব্যাগ গুছানোর কথা বাদ দিলাম ! আমার সব ঠিকানা চাকরীর সময় জমা দেওয়া আছে । আমাকে খুজে বের করতে একটুও দেরি হবে না ! সারা জীবন ফেরারী হয়ে থাকতে হবে তখন ! আপাতত পালানোর চিন্তা বাদ দিলাম !
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি বিকেল হতে এখনও কিছুটা সময় বাকি আছে । নিজের ঘরে বসে সেই পুরানো কথা ভাবতে লাগলাম !
তখন বয়স খুব বেশ ছিল না ! সবে মাত্র ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছি ! রাজনীতির সাথে সক্রিয় ভাবে জড়িত । একদিন বড় এক ভাই একটা বিশেষ মিশন দিয়ে আমাকে ঢাকা থেকে চুয়াডাঙ্গায় পাঠালো ! কাজ হল এখানকার বিরোধী দলীয় এমপীর মেয়ে কিডন্যাপ করতে হবে ! এবং কাজটা করতে হবে বেশ সাবধানে । এলাকার কেউ যাতে চিনতে না পরে এই জন্য অন্য নতুন লোক হিসাবে আমাকে যেতে হচ্ছে । সম্পুর্ন দায়িত্ব আমার উপর থাকবে ।
কয়েকদিন কেবল লক্ষ্য রাখলাম মেয়েটা কখন কখন স্কুলে যায় আর কখন কখন প্রাইভেট পড়তে যায় ! শহরের একেবারে শেষ মাথায় মেয়েটা রিক্সা করে যায় পড়তে । সন্ধ্যার কিছু আগে ফেরৎ আসে । খুব বেশি কষ্ট হল না কাজ সারতে ।
মেয়েটাকে ক্লোরোফম শুকিয়ে গাড়িতে উঠিয়ে ফেলতে সর্বমোট দুই মনিটের মত সময় লাগলো ! তারপর গাড়ি দ্রুত এগিয়ে চলল যশোরের দিকে । জায়গা আগে থেকেই ঠিক করা ছিল ! আমাদেরকে বলা ছিল কোন ভাবেই সেফ হাউজ থেকে বের হওয়া যাবে না । একেবারে মেয়েটাকে নিয়ে গায়েব হয়ে যেতে হবে ! এরই সাথে এটাও নির্দেশ ছিল যে মেয়ের যাতে কোন প্রকার ক্ষতি না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখে হবে !
আমার সাথে পিন্টু নামের একটা ছেলে ছিল ! স্থানীয় আমাদের দলের একজন ! পিন্টুর হাবভাব আমার কাছে শুরু থেকেই খুব বেশি ভাল লাগছিল না ! একদিন সেফ হাউজের অন্য রুমে শুয়ে আছি হঠাৎই মেয়েটার গোঙ্গানির শব্দ কানে এল । তাড়াতাড়ি রুমে গিয়ে দেখি পিন্টু মেয়েটার সাথে জোর জবরদস্তি করার চেষ্টা করছে । ওকে দেখেই বোঝা যাচ্ছিল যে নেশা করেছে ।
কোন কিছু না ভেবে পিন্টুর কোমড় বরাবর একটা জোড়ে লাথি মারলাম ! এমনিতেও শরীরে কিছু ছিল না, তার উপর নেশা করে শরীরে উপর ব্যালেন্স একদম নেই ! উপরে গিয়ে পড়লো দুরে ! মেয়েটা ততক্ষনে আমার পিছনে এসে দাড়িয়ে । চোখ ফেটে জল বেড়িয়ে পড়েছে । পিন্টু তখনও উঠতে পারি নি ! কাছে গিয়ে আরও দুটো লাথি মারলাম ! আর উঠলো না ।
মেয়েটার দিকে তাকিয়ে দেখি তখনও তার কান্না থামে নি ! বেশির ভাগ সময় মেয়েটা অজ্ঞানই ছিল । প্রথমে যখন জ্ঞান ফিরে তখন একটু চিৎকার চেঁচামিচি করলেও সামলে নিয়েছিল ।
মেয়েটার হাট ধরে গাড়ির কাছে নিয়ে এলাম ! তারপর গাড়িতে করে শহরের শেষ মাথায় পৌছে দিলাম ! যখন আমি ওকে নামিয়ে দিলাম তখন মেয়েটা ঠিক মত বিশ্বাসই করতে পারছিল না যে আমি ওকে ছেড়ে দিচ্ছি ! আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-চলে যাবো ?
-হুম ! যাও !
-পেছন থেকে এসে আর ধরবেন না তো ?
-যদি ধরবো তাহলে ছেড়ে দিচ্ছি কেন ? সামনে ঐ যে দোকান আছে ওখান থেকে ফোন কর ! কেমন ? ভাল থাকো ! আর পারো তো তোমার আব্বার কাছে চলে যেও ! এখানে থাকা টা তোমার জন্য নিরাপদ না !
-হুম !
আমি যখন গাড়ির গেট বন্ধ করলাম তখন মেয়েটা জানলা দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-আপনি মানুষ হিসাবে খারাপ না ! এসব কাজ কেন করেন ?
বললাম
-টাকা অনেক দরকারী একটা জিনিস ! এখন বুঝবে না আরেকটু বড় হও তখন বুঝবে !
তারপর গাড়ি ঘুরিয়ে চলে আসি ! মেয়েটার সাথে আর হয় নি । পরে শুনেছি যে পিন্টু নাকি ধরা পরেছে । সাথে সাথে আরও অনেকেই ধরা পরেছে । কিন্তু আমি স্থানীয় ছিলাম না বলে কেউ আমাকে আইডেন্টিফাই করতে পারি নাই ! তারপর সরকার বদলেছে । অনেক কিছুই বদলেছে । পড়ালেখা শেষ করে আমি অন্য দিকে হেটেছিল ! সব কিছু ভালই চলছিল কিন্তু এতো দিন পরে আবার কোন বিপদ এসে হাজির হল !
নিহিতা সমুদ্রের পানি ঘেষে হাটছে আমার পাশাপাশি ! ওর বন্ধুরা সবাই আরও সামনে ! আমি কোন কথা বলছি না ! কি বলবো খুজেই পাচ্ছি না ! কি বলবো !
নিহিতাই প্রথম মুখ খুলল ।
-এখানে কত দিন ?
-এই তো বছর দুয়েক !
-আগের কাজ ছেড়ে দিয়েছেন !
-এখন তো আমাদের সরকার নেই !
-তারমানে আপনাদের সরকার আসলে আবার শুরু করবেন ?
-আরে কি বলেন ! আবার শুরু করবো কেন ? ওসব ছেড়ে দিয়েছি ! অনেক আগেই !
-আমি কোন দিন ভাবি আপনার সাথে এখানে এভাবে দেখা হয়ে যাবে ! তবে আবার যে দেখা হবে এটা আমি জানতাম !
-জানতেন ?
নিহিতা আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো ! বলল
-আগে তো আমাকে তুমি করে বলেছিলেন ! এখন আপনি ?
-ঐ টা একটা অস্বাভাবিক ঘটনা ছিল ! সেটা দিয়ে কোন কিছু বিচার করা ঠিক হবে না ! এটা এখন স্বাভাবিক ঘটনা ! বললেন না কিভাবে জানতেন ?
-কারন আমি আল্লাহর কাছে প্রে করেছিলাম ! এমন কি যখন আমার কিডন্যাপাদের খোজা হচ্ছিল, আমার কাছে বিভিন্ন তথ্য চাওয়া হচ্ছিল তখন আমি চাচ্ছিলাম আপনি যাতে ধরা না পরেন !
-টিনএজ ইমোশন !
আমি হাসলাম !
নিহিতা বলল
-হয়তো ! কিন্তু সেই আবেগটা এখনও আমার ভিতরে রয়েছে ! বিন্দু মাত্র মরে যায় নি !
আমি কিছু না বলে চুপ করে রইলাম ! নিহিতা আরও কিছু বলতে যাচ্ছিল তার আগেও ওর এক বন্ধ এসে ওকে নিয়ে গেল ! আমি ওদের পেছন পেছন হাটতে লাগলাম !
নিহিতার ভাব ভঙ্গি কিছুই বুঝতে পারলাম না । এই মেয়ে আমার কাছে কি চায় কে জানে । এখানে বেড়াতে এসেছে অথচ সারা দিন হোটেলেই বসে থাকে । ওর বন্ধুরা এখানে ওখানে যায় গাড়ি করে কিন্তু ম্যাডাম কোথায় যায় না । সারা দিন এটা দরকার ওটা দরকার ! এবং সব দরকার সব সমাধানের জন্য আমি ছাড়া আর কেউ নেই ।
একদিন বিকেল বেলা নিহিতা আমার আমার রুমে এসে হাসির ! আমি তখন ডিউটি দেওয়ার জন্য রেডি হচ্ছিলাম ।
-আপনি ?
-কোথায় যাচ্ছেন ?
-কোথায় আর ? কাজে !
-তাহলে চলুন ?
-কোথায় ?
-হিমছড়ি যাবো !
-এখন ?
-হুম ! এখন ! আপনিও আমার সাথে যাবেন !
-গত পরশুদিন না আপনাদের সবাই গেল ! তখন তো গেলেন না ?
-যাই নি ভাল লাগে নি তাই । এখন যাবো ।
-যেতে যেতে অনেক দেরি হয়ে যাবে তো ।
নিহিতা হেসে বলল
-আপনি সাথে থাকলে সমস্যা নেই ! আপনি সাথে থাকলে ভয় পাবার কোন কারন নেই !
নিহিতার চোখের দিকে তাকিয়ে আমি খানিকটা কনফিউশনে পড়ে গেলাম ! মেয়েটা এমন কেন করছে ?
ঐ দিন বেশ রাত পর্যন্ত নিহিতার সাথে এদিক ওদিক ঘোরা-ফেরা করলাম ।
ফেরার পথে হোটেল থেকে কিছু দুরে নেমে পড়ে সমুদ্রের পাড়ে হাটতে লাগলাম ! হাটাহাটি করে যখন একটু ক্লান্ত, একটা জায়গা দেখে বসে পড়লাম দুজনে !
একটা পর্যায়ে যখন সমুদ্র পাড়ে বসে আছি তখন নিহিতা বলল
-কাল চলে যাবো !
-জানি !
-আমি চলে গেলেই তো আপনি বাঁচেন তাই না ? এতো দিন তো আমার সাথে বাধ্য হয়ে থেকেছেন তাই না ? যদি না থাকেন তাহলে আমি যদি পুলিশকে বলে দেই ?
আমি কি বলবো ঠিক বুঝতে পারলাম না !
নিহিতা বলল
-আপনি কি এখনও আমাকে ঠিক বুঝতে পারেন নি । এখানে হঠাৎ করে এসে আপনার সাথে দেখা হওয়া তারপর.... সব কিছু কেমন যেন ওলট পালট হয়ে গেছে !
আমিও আবারও চুপ । সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে আছি ।
-আসলে ঐ ক্লাস টেন এ পড়ার সময়ই আমার সব কিছু ওলট পালট হয়ে গেছে আমার ।
-ওলট পালট ?
নিহিতা আমার দিকে তাকিয়ে রইলো অদ্ভুদ ভাবে , সেই অদ্ভুদ চাহনীতে কিছু একটা ছিল যেটা আমার মনের ভেতরে খুব জোরে একটা ধাক্কা মারলো ! মনে হল কিছু একটা অঘটন ঘটিয়ে ফেলি । কিন্তু নিজেকে সামলে নিলাম ।
নিহিতা নিজের চোখের দৃষ্টি অন্য দিকে সরিয়ে নিল ! তাকিয়ে রইলো দুরে !
আরও রাত করে হোটেলে ফিরলাম । ওকে রুমে পৌছে দিয়ে নিজের রুমে আসতেই কেমন জানি লাগছিল ! মনে হচ্ছিল মেয়েটার প্রতি কি কোন প্রকার অনুভুতি কি জন্মেছে ?
কি জানি !
কিন্তু সকাল বেলা যখন নিহিতারা চলে গেল কেমন জানি লাগতে শুরু করলো নিজের কাছেই ! এমন তো স্বাধারনত হয় না ! বিদায় নেওয়ার সময় আবারও বস হাজির ছিল দেখলাম নিহিতা কেবল আমার দিকে হাত নাড়লো ! আর কিছু বলল না !
যখন চোখের আড়াল চলে গেল তখনই কেমন জানি একটা ফাঁকা ফাঁকা লাগতে শুরু করলো ! নিজেকে ধমক দিয়ে বোঝালাম ! এসব প্রশ্রয় দেওয়ার সময় এখন না ! একবার মনে এখান থেকে চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে যাই ! যদি নিহিতা যদি পুলিশে খবর দেয় ! পরক্ষনেই নিজের মনেই হেসে উঠলাম । নাহ ! এই মেয়ে আমার কোন ক্ষতি হোক সেইটা কোন দিন চাইবে না !
বিকেল বেলা ছুটি নিয়ে একা একাই সমুদ্রের পাড়ে হাটতে বের হলাম ! গতদিন নিহিতা কে নিয়ে যেখানে বসে ছিলাম সেখানেই বসলাম আবার ! কেন জানি একটু শূন্য শূন্য লাগছিল ! মেয়েটা কি সত্যি সত্যিই আমাকে ভালবেসেছিল নাকি অন্য কোন মোহ ছিল !
নিশ্চিত ভাবেই আমি তার চোখে অন্য কিছু ছিলাম যে কি ভাবে এক বিপদের হাত থেকে তাকে বাঁচিয়েছিল ! ঐ বয়সের কোন ঘটনা মনের মাঝে ছাপ বসে রাখতে পারে অজীবন ! এমন হয়তো আমি তার মনে ছিলাম ! এর বেশ কিছু না !
আজকেও রাতেও ফিরতে অনেক রাত হয়ে গেল ! যখন হোটেলের কাছে এলাম দেখি উপরে ওঠার সিড়ি কাছে একটা ছায়া মূর্তি বসে আছে । নতুন গেস্ট হবে হয় তো ! আমাকে আসতে দেখেই উঠে দাড়ালো ! এতো রাতে স্বাধারনত কেউ এখানে বসে থাকে না !
যাক আমার দেখার বিষয় না ! কিন্তু যখন ছায়া মুর্তিটি আরও কাছে চলে তখন আমি খানিকটা অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখলাম ছায়া মুর্তিটা নিহিতা ! আমি কাছে আসতেই আমাকে জড়িয়ে ধরলো শক্ত করে, যেন কোন ভাবেই আমাকে ছাড়বে না ! আমি কেবল বোকার মত দাড়িয়ে রইলাম !
তবে একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম যে একটু আগে যে বিষন্ন লাগছিল সেটা আর লাগছে না ! অদ্ভুদ ব্যাপার !
(অনেক দিনের জমানো গল্প । খানিকটা সিনেমা টাইপ হয়ে গেল মনে হয়)
২৫ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:১৩
অপু তানভীর বলেছেন: এতো লম্বা সময় নিঃশ্বাস আটকে রাখলেন কিভাবে
২| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ২:১৩
উপপাদ্য বলেছেন: সুন্দর গল্প, চমৎকার, এবং অবশ্যই সিনেমাটিক।
চিত্রনাট্য হিসেবে ভালোই হবে। সিনেমা টিনেমা বানাবেন নাকি
এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেকার মতোই
২৫ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:১৪
অপু তানভীর বলেছেন: সিনেমা যে বানানো টেকা পামু কই কন ? টেকা দিবো কেডায় ? আমি গরীব পুলা !
৩| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:২৯
ঢাকাবাসী বলেছেন: চমৎকার গল্প, বেশ ভাল লাগল।
২৫ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:১৫
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ
৪| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:৩৬
নিষ্কর্মা বলেছেন: শিরাম হইসে!
২৫ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:১৭
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ
৫| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:২২
অঘটনঘটনপটীয়সী বলেছেন: আসলেই খানিকটা সিনেমা টাইপ।
২৬ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ২:১৫
অপু তানভীর বলেছেন: হোক না একটু
৬| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৭
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: জীবনে সিনেমা ভাল বাসে সবাই কেনু?
এইরকম কারণেইতো নাকি
আহা সব সিনেমা কেন আপনের জীবনেই ঘটে
২৭ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৩৩
অপু তানভীর বলেছেন: না রে ভাই আমার জীবনে এমন ঘটনা ঘটে না । আমার জীবনর যদি হইতো তাইলে তাহলে তো আর গল্প লিখতাম না । হয় না বইলাই তো এমন করে গফ লিখি !
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:০৪
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেললাম ।
চমৎকার লিখেছেন ।