নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
-উফ ! কুফা একটা !
একবার মনে হল কিছু না বলি । চুপ চাপ সিড়ি দিয়ে নিচে নেমে যাই । কিন্তু মনটা বিদ্রোহী হয়ে উঠলো ! মেয়েটা এর আগেও দুদিন আমাকে দেখে এমন করেছে ।
আমি নিহিনের দিকে তাকিয়ে বললাম
-কি বললেন ?
নিহিন বিন্দু মাত্র বিচলিত না হয়ে সঙ্গে সঙ্গে বলল
-কেন শুনতে পান নি ?
-না ঠিক শুনিনি !
-কানের ডাক্তার দেখান ! বলেছি কুফা একটা !
-কাকে বললেন ? আমাকে ?
-জি না ! আপনাকে কেন বলবো ! ঐ যে দারোয়ান দাড়িয়ে রয়েছে ওকে বলেছি !
-কুফা কেন বললেন শুনি ?
-আপনার সাথে যতবার আমার দেখা হয়েছে কিছু না কিছু একটা অঘটন ঘটেই !
নিহিন অবশ্য কথা খানিকটা সত্য বলেছে । সিড়ি দিয়ে নিচে নামছিলাম ! নিচ তলায় নামতে আর এক তলা বাকি ! তখনই দেখি নিহিন সিড়িয়ে উপরে উঠে আসছে । আমার দিকে চোখ পড়তেই সিড়ির সাথে পা বেঁধে গেল । কোন রকমে পড়তে পড়তে বেচে গেল ! এর আগেও এই ঘটনা ঘটেছে কয়েক বার ! আমাকে দেখেই মেয়েটা এমন কেন করে ? এমন করে কেন পড়ে যায় কে জানে !
আমি বললাম
-বারে ! আপনি নিজে অসাবধানতার কারনে পড়ে গেলেন আর দোষ আমার ?
-জি আপনারই !
-তাই ?
-জি ! ঐ দিন রিক্সা থেকে নামার সময় আপনি গেট দিয়ে বের হচ্ছিলেন ! নামতে গিয়ে আমার ওড়না রিক্সায় বেঁধে ছিড়ে গেল ! আমার এতো সাধের ওড়না টা !
-আহা ! এটাও আমার দোষ ?
-অবশ্যই আপনার দোষ ! আপনি খবরদার আমার সামনে আসবেন না !
-ইস আমার যেন শখ আপনার সামনে আসা !
আরও কিছু বলার ইচ্ছা ছিল কিন্তু নিহিন উপরে উঠে গেল ! আমিও বাইরে বের হয়ে এলাম ! এই মেয়েটা সব সময়ে আমার সাথে এমন করে কেন কে জানে ? আচ্ছা আমি কি সত্যি সত্যি মেয়েটার জন্য দুর্ভাগ্য ?
আমি অন্য সবার জন্য কুফা কি না এই টা পরীক্ষা করার জন্য সারা দিন সিড়ির উপরে বসে রইলাম ! যেই কেউ সিড়ি দিয়ে উঠতে যায় আমি নামার ভান করি ! সে সামনে দিয়ে কোন রকম বিপত্তি ছাড়াই উঠে চলে যায় !
এরকম পরীক্ষা করতে করতে বাড়িওয়ালার সামনে তিনবার পড়লাম ! বাড়িওয়ালা আমার দিকে সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকাতে তাকাতে চলে গেল প্রতিবার ! না জানি কত কি ভাবছে কে জানে !
সারাটা দিন নিহিনের কথা ভাবতে লাগলাম ! মেয়েটার প্রতিবার আমার সাথে দেখা হয় আর কিছু একটা ঝামেলা হয় ! সেদিন সত্যি সত্যিই রিক্সা থেকে নামতে গিয়ে নিহিনের ওড়না ছিড়ে গেল রিক্সার হুডে লেগে !
পরের দিন একটা কাজ করে ফেললাম ! নিউমার্কেটে গিয়ে নিহিনের জন্য একটা ওড়না কিনে আনলাম ! মেয়েটা যেহেতু মনে করছে আমার জন্য ওর ওড়না ছিড়েছে আমার দায়িত্ব ওটার ক্ষতি পূরন দেওয়া !
অবশ্য নিহিন বাদ রেখে অন্য কেউ হলে এই ইচ্ছা আমার মনে জাগতো না ! নিহিন বলে কথা !
-এই যে শুনুন !
-আবার আপনি ?
-দেখুন আজকে আপনি সিড়িতে নেই ! রিক্সা থেকেও নামছেন না ! সুতরাং সমস্যা নেই !
-আপনাকে বলেছে !
-আচ্ছা ঠিক আছে ! আমি মেনে নিচ্ছি ! আমি আমি চেষ্টা করব আপনার সামনে আর না আসার ! আমি এই কদিন ধরে লক্ষ্য করেছি আপনি কোন কোন সময়ে বাইরে যান কোন সময়ে ফিরে আসেন !
নিহিন আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-আচ্ছা ! তাহলে আপনি এখন আমার পিছেও লেগেছেন ?
-আরে প্লিজ একটু শুনুন ! আসলে আমি সরি যে আমার জন্য আপনার বারবার ঝামেলায় পড়তে হয় !
নিহিন কোন কথা না বলে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষন ! আমি প্যাকটে টা নিহিনের দিকে বাড়িয়ে দিতে নিহিন বলল
-এটা কি ?
-ঐ যে আমার কারনে আপনার ওড়না ছিড়ে গিয়েছিল না ?
-তো ?
-এখানে একটা ওড়না আছে ! জানি না আপনার পছন্দ হহবে কি না !
-আমি কেন নিবো এটা ?
-নিলে আমার ভাল লাগবে ! যদি না নিতে চান তাহলে নিজের কাছে আমি খানিকটা অপরাধী হয়ে থাকবো !
আমি ভেবেছিলাম যে নিহিন হয়তো নেবে না কিন্তু আমাকে খানিকটা অবাক করে দিয়ে ওড়নার প্যাকেট হাতে তুলে নিল ! আমি আর দাড়ালমা না !
তারপরের কদিন একটু সাবধানে বের হলাম বাসা থেকে ! মানে কখন নিহিন বের হয় সেইটা খোজ রেখে বের হতে লাগলাম । সপ্তাহ খানেক দেখাই হল না নিহিনের সাথে । নিহিন আমাকে দেখতে পেল না তবে আমি ওকে দেখতে পেতাম আড়াল থেকেই !
কিন্তু একদিন দেখা হয়েই গেল । ছাদে সন্ধ্যার পরে বসে হাওয়া খাচ্ছি ! এমন সময় নিহিন এসে ছাদে এসে হাজির ! আমি নিহিন কে দেখে জলদি জলদি নেমে যেতে পা বাড়ালাম । কিন্তু আমাকে খাননিকটা অবাক করে দিয়েই নিহিন আমার পথ আটকে দাড়ালো !
-কোথায় যাচ্ছেন ?
-নিচে !
-কেন ?
-আমি আপনার জন্য কুফা না ?
-তাই ! এই জন্য নিচে যাচ্ছেন ?
-হুম ! কোথা থেকে কি হয়ে যাবে শেষে আমার দোষ হবে ! তাই আগে ভাগে চলে যাই !
-আমি কি সব সময় আপনাকে দোষ দেই ?
নিহিনের গলার সুর শুনে একটু অবাক হলাম ! একটু যেন নমনীয় আর কন্ঠে একটু অপরাধীর সুর ! আমি কিছু বলছি না দেখে নিহিন বলল
-আমি গত কালকেও সিড়ি দিয়ে উঠতে গিয়ে হোচট খেয়েছি !
-তো ?
-তো মানে হল এটা আপনার দোষ না ! আমিই তাড়াহুড়া করতে গিয়ে হোচট খেয়েছি !
-তো আমাকে কেন দোষ দিলেন ?
নিহিন বলল
-বোঝেন নি ?
-নাহ ! কেন ?
-আপনি না আসলেই একটা...।
-আমি কি ?
-কিছু না ! তবে ?
-তবে ?
-তবে......
কিছুটা সময় নিরবতা
-আমি আপনাকে খানিকটা মিস করেছি !
আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম ! নিহিন আমাকে কেন মিস করবে ? আমি কিছু না বুঝতে পেরে বললাম
-সত্যি আপনি আমাকে মিস করেছেন ?
-হুম ! প্রতিদিন উপরে সিড়ি দিয়ে উঠতে গিয়ে মনে হয়েছে কে যেন নেই ! কিছু যেন একটা নেই !
আমি কেবল অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম নিহিনের দিকে ! নিহিনও তাই করলো ! এক ভাবেই তাকিয়ে রইলো আমার দিকে ! কিছু একটা ছিল সেই চোখে !
নিহিন আর কিছু না বলে চলে গেল ! আমি ঠিক বুঝলাম না ! মেয়ে গুলো এতো রহস্য আচরন কেন করে ? কখন চায় তাদের আশে পাশে না থাকি, আবার যখন তাদের আশে পাশে থাকি না তখন চায় যেন তাদের আসেপাশে থাকি !
তবে একটা ভাল দিক হচ্ছে মেয়েটা আমাকে মিস করেছে । দেখা যাক সামনে কিছু হয় নাকি !
১৮ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৩
অপু তানভীর বলেছেন:
কিচ্ছু কওয়া যায় না
২| ১৮ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:৩৪
অঘটনঘটনপটীয়সী বলেছেন:
১৯ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১:০৮
অপু তানভীর বলেছেন:
৩| ১৮ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:৫৬
হাসান মাহবুব বলেছেন: হবে হবে।
১৯ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১:০৮
অপু তানভীর বলেছেন: হবে হবে হবে !
৪| ১৯ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ২:১২
পার্সিয়াস রিবর্ণ বলেছেন: সামনে অনেক কিছুই হবে । কপালে মরন লেখা থাকলে সংসারও হবে ।
১৯ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৩
অপু তানভীর বলেছেন: কথা সত্য ! কপালে দুঃখ থাকলে সংসার হইবে
৫| ১৯ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ১০:২৩
একলা চলো রে বলেছেন: শুরুর গল্পগুলো সবসময় সুন্দর হয়‚ মন্দ হয় শেষের গল্পটা।
১৯ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৮
অপু তানভীর বলেছেন: হুম ! জীবনের গল্প গুলের শুরুটা সুন্দর হয় ! কিন্তু দিন যাওয়ার সাথে সাথে শেষের দিকটা কেমন যনে হয়ে যায়
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৮
নিষ্কর্মা বলেছেন: "মিস" করিলেই কিছু যে হৈবে, তাহা বিশেষজ্ঞগণও বলিবেন না।