নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাল বৈশাখে বজ্রপাতঃ বজ্রপাতে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচার কৌশল

২৫ শে এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৪:০৬


বাংলা সালের প্রথম মাস বৈশাখ। বৈশাখ আসে নববর্ষের বার্ত নিয়ে সবার জীবনে আবার এই বৈশাখই কখনো হয়ে ওঠে কাল বৈশাখী। কাল বৈশাখী মানে ঝড় আর বজ্রপাত। ভৌগলিক কারণে বাংলাদেশ বিশ্বের ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, টর্নেডো, ভূমিকম্প, বন্যা, খরা, তাপপ্রবাহ বৃদ্ধি, নদী ভাঙন, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক ও মরুকরণ প্রক্রিয়া বাংলাদেশের নিত্যদিনের সঙ্গী। হালে যোগ হয়েছে মাত্রাতিরিক্ত বজ্রপাত। যদিও বজ্রপাত দেশে সব সময়ই ঘটেছে, তবে সম্প্রতি সেই সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে। বাংলাদেশে যে দুটি মৌসুমে বজ্রপাত বেশি হয়, এর একটি হলো প্রাইমারি সামার (এপ্রিল থেকে মে)। এ সময় ভার্টিক্যাল ক্লাউড বা স্তম্ভ মেঘ থাকে বলে বজ্রপাত আর কালবৈশাখী হয়। বৈশাখ-হজ্যৈষ্ঠ-আষাঢ়ে প্রাকৃতিক চক্রের কারণে বজ্রসহ ঝড়-বৃষ্টিপাত এবং বজ্রপাতে অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু বাংলাদেশে বিরল নয়। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশে প্রতিবছর বজ্রপাতে মারা যাচ্ছে দেড় থেকে দুইশ মানুষ। তবে এর সুনির্দিষ্ট তথ্য দুর্যোগ-ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরসহ সরকারের কোনো সংস্থার কাছে নেই। বজ্রপাত সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষণায় জানা যায়, বিশ্বে বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয় বাংলাদেশে। দুঃখের বিষয়, বজ্রপাতে প্রতি বছর গড়ে দুই-তিনশ' মানুষের প্রাণহানি হলেও আবহাওয়া অধিদফতরের বজ্রপাতের পূর্বাভাস পাওয়ার কোনো সরঞ্জাম বা যন্ত্রপাতি নেই। এমনকি বজ্রপাত সংক্রান্ত কোনো গবেষণাও আবহাওয়া অধিদফতরের কাছে নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ গবেষণা, প্রশিক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রেও বজ্রপাত নিয়ে কোনো গবেষণা নেই। তারা শুধু বজ্রপাতে মৃত্যুর পরিসংখ্যান সংগ্রহ করে থাকে। একই অবস্থা আবহওয়া অধিদফতরেরও। এ বিষয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের যেমন কোনো গবেষণা নেই তেমনি নেই সচেতনতামূলক কর্মসূচি। শুধু মৃতের সংখ্যা হিসাব রাখার মধ্যেই সীমাবদ্ধ আবহাওয়া অধিদফতরের কার্যক্রম। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর ও দুর্যোগ নিয়ে কাজ করে এমন সংস্থাগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, ২০১৩ সালে দেশে বজ্রপাতে মোট মৃত্যু হয় ২৮৫ জনের, ২০১২ সালে ২০১ জনের এবং ২০১১ সালে ১৭৯ জনের। সাধারণত বছরের কালবৈশাখীর সময় বজ্রপাত বেশি হয় এবং এ সময় বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যুর হারও স্বাভাবিক কারণে বেশি। তবে বজ্রপাত বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বায়ুদূষণ, আবহাওয়ার পরিবর্তন, মোবাইল-ফোনের ব্যবহার বৃদ্ধি ও টিনের তৈরি স্থাপনাকে চিহ্নিত করেছেন। একদিকে বড় বড় গাছের সংখ্যা কমে যাওয়া, অন্যদিকে মোবাইল ফোনসহ যান্ত্রিক ব্যবহার বৃদ্ধি মানুষকে বজ্রপাতের নিশানা করে তুলছে। এক সমীক্ষায় জানা যায়, এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত ঘটছে বাংলাদেশে। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা নাসা ও মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ বছরের এক গবেষণায় এ তথ্য পাওয়া যায়। গবেষক দলের প্রধান নাসার বিজ্ঞানী স্টিভ গডম্যান-এর গবেষণা মতে, এশিয়ার বজ্রপাতপ্রবণ এলাকার মধ্যে বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলার অবস্থান পঞ্চম। অপরদিকে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশের মধ্যে সুনামগঞ্জে বেশি বজ্রপাত হয়। অতিরিক্ত বজ্রপাত ঘটার জন্য জলবায়ুর পরিবর্তনকেও দায়ী করা হচ্ছে। যে হারে বৃক্ষনিধন এবং কার্বন নিঃসরণের মাত্রা বাড়ছে তাতে বায়ুমণ্ডলে এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। ফলে পারিপার্শ্বিক আবহাওয়া বজ্রপাতের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করছে। তবে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে কোনো গাছের নিচে আশ্রয় না নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব কোনো ঘরের ভেতরে ঢুকে যাওয়ার মতো ছোটখাটো বিষয়গুলো খেয়াল রাখলে বজ্রপাতে মৃত্যু কমিয়ে আনা সম্ভব।

বজ্রপাত কী ও কেনঃ মহাভারতের দেবরাজ ইন্দ্রের অব্যর্থ অস্ত্রের নাম ছিল 'বজ্র'। অসুরদের পরাস্ত করতে দধীচি মুনির বুকের অস্থিতে বানানো হয়েছিল এই অস্ত্র। সেসব পুরাণের কথা। জলবায়ু পরিবর্তন আর দুর্যোগের এই যুগে বজ্রের সংজ্ঞা 'ঝড়বৃষ্টির সময় আকাশে বিদ্যুতের ঝলকানির সঙ্গে সৃষ্ট প্রচ শব্দ'। প্রশ্ন ওঠে- কীভাবে হয় এই বজ্রপাত?
প্রাকৃতিকভাবেই বায়ুমণ্ডলে বিদ্যুৎ সৃষ্টি হয়ে মেঘে জমা থাকে। এই বিদ্যুৎ মেঘে দুটি চার্জ ধনাত্মক ও ঋণাত্মক হিসেবে থাকে। বিপরীত বিদ্যুৎশক্তির দুটো মেঘ কাছাকাছি এলেই পারস্পরিক আকর্ষণে চার্জ বিনিময় হয়। ফলে বিদ্যুৎ চমকায়। মেঘের নিচের অংশ ঋণাত্মক চার্জ বহন করে। আবার ভূপৃষ্ঠে থাকে ধনাত্মক চার্জ। দুই চার্জ মিলিত হয়ে তৈরি করে একটি ঊর্ধ্বমুখী বিদ্যুৎপ্রবাহ রেখা, যা প্রচণ্ড বেগে উপরের দিকে উঠে যায়। ঊর্ধ্বমুখী এই বিদ্যুৎপ্রবাহ উজ্জ্বল আলোর যে বিদ্যুৎপ্রবাহের সৃষ্টি করে তা-ই বজ্রপাত। বজ্রপাতের তাপ ৩০ থেকে ৬০ হাজার ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হয়। বিজ্ঞানীদের মতে, আকাশে যে মেঘ তৈরি হয়, তার ২৫ থেকে ৭৫ হাজার ফুটের মধ্যে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে বেশি। বজ্রপাতের গতি প্রতি সেকেন্ডে ৬০ হাজার মিটার বেগে নিচে নেমে যায়। এই বিপুল পরিমাণ তাপসহ বজ্র মানুষের দেহের ওপর পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই তার মৃত্যু হয়। বজ্রপাতের স্থায়িত্বকাল এক সেকেন্ডের দশ ভাগের এক ভাগ। ঠিক এই সময়েই বজ্রপাতের প্রভাবে বাতাস সূর্যপৃষ্ঠের পাঁচ গুণ বেশি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। প্রচণ্ড শব্দে কেঁপে ওঠে চারপাশ। শব্দের গতি আলোর গতির থেকে কম হওয়ায় বজ্রপাতের পরই শব্দ শোনা যায়। বজ্রপাত ভূমিকম্পের চেয়েও অনেক বেশি শক্তিশালী। একটি বজ্রপাতে প্রায় ৫০ হাজার অ্যাম্পিয়ার বিদ্যুৎশক্তি থাকে। অথচ বাসাবাড়ির বিদ্যুৎ চলে গড়ে ১৫ অ্যাম্পিয়ারে। একটি বজ্র কখনও কখনও ৩০ মিলিয়ন ভোল্ট বিদ্যুৎ নিয়েও আকাশে জ্বলে ওঠে। বাংলাদেশে বছরের দুটি মৌসুমে বজ্রপাত বেশি হয়। জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি হওয়ায় বাংলাদেশে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে। আবহাওয়া অধিদফতরের সাপ্তাহিক ও দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস তালিকায় নতুন যুক্ত হয়েছে বজ্রঝড়। কাল বৈশাখীর বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা দুনিয়ার বুকে বাংলাদেশেই বেশি। দুর্যোগের বলয়ে বন্দি বাংলাদেশের বুকে এই বজ্রদুর্যোগ দীর্ঘ করছে মৃত্যুর মিছিল। বাংলাদেশে বজ্রপাতের ওপর তেমন কোনো গবেষণা না হলেও ইউরোপ, জাপান ও আমেরিকায় চলছে বিস্তর গবেষণা। ২০০৮ সালে সুইডেনের উপসালায় অনুষ্ঠিত ২৯তম 'ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন লাইটিং প্রটেকশন' শীর্ষক সম্মেলনে তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের জিওফিজিক্স বিভাগের গবেষক কলিন প্রাইস তার 'থান্ডারস্টর্ম, লাইটিং অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ' শীর্ষক গবেষণাপত্রে দেখান, বায়ুদূষণ তথা পরিবেশ দূষণের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে বজ্রপাতের। এ নিবন্ধে বলা হয়, বজ্রপাতে একদিকে যেমন বায়ুদূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনি বায়ুদূষণের ফলে বেড়েছে পরিবেশে বজ্রপাতের হার ও এর তীব্রতা

বজ্রপাতের ভয়াবহতা ও প্রতিকারের উপায় নিয়ে সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে গবেষণার জন্য ঢাকায় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে সার্ক মিটিওরোলজিক্যাল রিসার্চ সেন্টার (এসএমআরসি)। এসএমআরসির গবেষণা কর্মকর্তা আবদুল মান্নান সমকালকে বলেন, 'বজ্রপাতের হার ও মৃত্যুর সংখ্যা দুটোই উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের বজ্রপাতের প্রবণতা নিয়ে সার্ক স্টর্ম প্রজেক্ট নামে আমাদের গবেষণা চলছে।' তিনি বলেন, বাংলাদেশ বজ্রপাত-ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। বাংলাদেশে বছরে গড়ে ৮০ থেকে ১২০ দিন বজ্রপাত হচ্ছে বলে গবেষণায় প্রকাশ। বজ্রপাতের কারণে একদিকে যেমন পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, তেমনি পরিবেশ দূষণের কারণেও বজ্রপাতের হার বেড়ে গেছে। হঠাৎ এই বজ্রপাত বৃদ্ধি এবং এতে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে কেন? আবহাওয়াবিদদের কাছে বজ্রপাতের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা থাকলেও নেই কোনো প্রস্তুতি। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের মাথাব্যথা না থাকলেও বজ্রপাত গবেষণায় বিশ্ব থেমে নেই। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বজ্রপাতের পেছনে বায়ুদূষণ অন্যতম কারণ। বজ্রপাতকে আবহাওয়া সম্পর্কিত দ্বিতীয় বৃহত্তম ঘাতক হিসেবে চিহ্নিত করেছেন কেউ কেউ। বজ্রপাত নিয়ে এক গবেষণায় জানা গেছে বজ্রপাতে সর্বাধিক লোকের মৃত্যুহয় বাংলাদেশে। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিপার্টমেন্ট অব জিওগ্রাফির অধ্যাপক ড. টমাস ডবি্লউ স্মিডলিনের 'রিস্ক ফ্যাক্টরস অ্যান্ড সোশ্যাল ভালনারেবেলিটি' শীর্ষক গবেষণা থেকে দেখা যায়, প্রতি বছর মার্চ থেকে মে পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশে প্রতি বর্গকিলোমিটার এলাকায় ৪০টি বজ্রপাত হয়। গবেষণায় তিনি বলেন, বজ্রপাতে বছরে মাত্র দেড়শ'র মতো লোকের মৃত্যুর খবর বাংলাদেশের পত্রিকায় ছাপা হলেও আসলে এ সংখ্যা ৫০০ থেকে এক হাজার। গবেষণায় টমাস দেখান যে, ঝড় ও বজ্রঝড়ে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটছে বাংলাদেশে। ন্যাশনাল সেন্টার ফর অ্যাটমস্টেম্ফরিক রিসার্র্চের (এনসিএআর) বিজ্ঞানী ডেভিড এডওয়ার্ডস গবেষণায় খুঁজে পান, বায়ুমতা বাড়ছে। ইউরোপের কয়েকটি শহরে এ গবেষণা করা হয়। ২০০৪ সালে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক নিউজ বজ্রপাতকে আবহাওয়া সম্পর্কিত দ্বিতীয় বৃহত্তম ঘাতক হিসেবে চিহ্নিত করে। বিশ্বখ্যাত সায়েন্স ডেইলিতে প্রকাশিত 'গ্গ্নোবাল ওয়ার্মিং লাইকলি টু ইনক্রিস স্টর্মি ওয়েদার, স্পেশালি ইন সার্টেন ইউএস লোকেশন' শীর্ষক পারডু বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে আবহাওয়া অনুকূল হবে, না তীব্র ঝড়বৃষ্টির মধ্যে প্রতিকূল হবে, তা বজ্রপাতের ধরনের ওপর নির্ভর করে।

বাংলাদেশে বজ্রপাতে সাম্প্রতিককালে মৃত্যুর ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান। এক সেমিনারে তিনি বলেছিলেন, 'রাজনীতিবিদরা মানুষকে মানুষ নয়, ভোটার মনে করি। রাজনীতিবিদরা যদি মনে করেন, আমার ভোটার মারা যাচ্ছে তখন হয়তো বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যুর ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে।' তবে ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল হক বলেন, প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মেই বজ্রপাত হয়। এটা নিয়ে ঘাবড়ে যাওয়ার মতো কিছু নেই। তিনি জানান, বজ্রপাত নিয়ে অধিদফতরে কোনো গবেষণা বা প্রকল্প নেই। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বজ্রপাতের কারণ ও ফলাফল সংক্রান্ত কোনো গবেষণা হয়নি। তবে সম্প্রতি বজ্রপাতে মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, 'মোবাইল ফোন ব্যবহার মানুষের ওপর বজ্রপাতের আশঙ্কা বাড়ায়। বজ্রপাতের সময় মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রনিক্স ব্যবহার খুবই বিপজ্জনক। একজন মানুষের সঙ্গে যখন সচল মোবাইল বা ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি থাকে, তখন তা একটি সার্কিট হয়ে যায়। ওই সার্কিটের মধ্য দিয়ে বজ্রপাতের বিদ্যুৎ প্রবাহ ভেতরে প্রবেশ করে।' বজ্রপাত বিষয়ে কোনো গবেষণা নেই বলে জানিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ এবং ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ। পরিবেশ অধিদফতরের হিসাব :বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর বাতাসে কার্বনের পরিমাণ চার শতাংশের বেশি বেড়েছে গত কয়েক বছরে। বাতাসে ধূলিকণার মাত্রা প্রতি ঘনমিটারে ২০০ মাইক্রোগ্রামকে সহনীয় পর্যায়ে ধরা হলেও সেখানে রাজধানীর এলাকাভেদে বাতাসে এ ধরনের উপাদান প্রতি ঘনমিটারে ৬৬৫ থেকে দুই হাজার ৪৫৬ মাইক্রোগ্রাম বা তারও বেশি পরিমাণ পাওয়া গেছে। বজ্রপাতের পরপরই ট্রপোস্টিম্ফয়ার বা বায়ুমণ্ডলে সবচেয়ে নিচের স্তরে নাইট্রোজেন অক্সাইডের পরিমাণ বাড়ে। কার্বন ডাইঅক্সাইড বা কার্বন মনো-অক্সাইডের চেয়ে বেশি বিষাক্ত নাইট্রোজেন অক্সাইড রূপান্তরিত হয়ে তা রীতিমতো পরিণত হয় ওজোন গ্যাসে। এ গ্যাস বাতাসের এমন একটি স্থানে ভেসে বেড়ায়, যার ফলে দিন দিন বেড়েই চলেছে বায়ুদূষণের মাত্রা।

বজ্রপাতে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচার কৌশলঃ
বজ্রপাতে প্রতিবছর শতাধিক তাজা প্রাণ ঝরে যাচ্ছে। এ ছাড়া মূল্যবান ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেকে বুঝতেই পারছেন না এর কারণ, এমন মত দিয়ে তিনি বলেন, ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোডে একটি শর্ত রাখা হলেও তা স্পষ্ট বা জোরালো নয়। বজ্রপাতে হতাহতের সবচেয়ে বড় কারণ সচেতনতার অভাব, স্রেফ সচেতনতাই পারে সুরক্ষা দিতে। বজ্রপাত থেকে বাঁচার বিভিন্ন উপায় আছে। এসব উপায় অবলম্বন করলে বজ্রপাতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এর একটি উপায় হলো ধাতব স্যুট পরিধান। কেননা এ স্যুট বিদ্যুৎ চমক প্রতিরোধ করতে সক্ষম৷ এই স্যুটের নীতি হচ্ছে ‘ফ্যারাডে কেজ’৷ধাতু বিদ্যুৎ চমক থেকে সৃষ্ট বিদ্যুতের প্রবাহ প্রতিরোধ করতে পারে ৷ তাই বিমান কিংবা গাড়িও ‘লাইটনিং বোল্ট’ বা বিদ্যুৎ চমকের আঘাত থেকে নিরাপদ ৷
মাটিতে ফিরিয়ে নেয়াঃ
সাধারণত উঁচু জায়গায় বজ্রপাত ঘটে৷ যে কারণে প্রায় সব বড় গির্জা বা বহুতল ভবনে ‘লাইটনিং রড’ রয়েছে, যা আর্থিং হিসেবেও পরিচিত৷ এই ব্যবস্থার ফলে বজ্রপাতের কারণে ভবনের ক্ষতি হয় না ৷ বরং বিদ্যুৎ সরাসরি ভূমিতে চলে যায়৷ ১৭৫২ সালে বেনজামিন ফ্রাঙ্কলিন ‘লাইটনিং রড’ আবিষ্কার করেন৷মাটি বা ছনের ঘরকে বজ্রপাত থেকে রক্ষা করতে ঘরের উপর দিয়ে একটি রড টেনে তার সঙ্গে দুই দিকে দুটি রড খুটি হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে বজ্রপাতের বিদ্যুৎ ঘরকে আক্রান্ত না করে রডের ভেতর দিয়ে মাটিতে চলে যাবে। ইটের তৈরি অট্টালিকাকেও নিরাপদ করা যায়। তবে এখানে কিছুটা ভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হয়। এতে ভবন ও ভেতরে থাকা ইলেট্রনিক পণ্য নিরাপদ করা সম্ভব। এখানে ভবনের উপরে লৌহদণ্ড বসিয়ে দিয়ে পাশ দিয়ে মাটির সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে।
প্রযুক্তিগত ভুলের কারণে পুরোপুরি নিরাপদ হচ্ছে না ভবনগুলো এমন মত দিয়ে বিশেজ্ঞরা জানান, অনেক ভবনেই উপরে লৌহদণ্ড বসানো হচ্ছে কিন্তু এর সঙ্গে একটি তার দিয়ে মাটির সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়, যা উচিত নয়।
সাধারণ বিদ্যুৎ কোন পরিবাহীর ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়। কিন্তু বেঞ্জমিন ফ্রাঙ্কলিংয়ের তত্বমতে বজ্রপাত কেন্দ্রস্থল দিয়ে প্রবাহিত না হয়ে ত্বক দিয়ে পরিবাহিত হয়। তাই দেয়ালের ভেতর দিয়ে বজ্রপাত নিরোধক স্থাপন খুব কার্যকর হয় না, মত বিশেষজ্ঞদের। যারা মনে করেন ভবনের ভেতরে অবস্থান করলে বজ্রপাত থেকে নিরাপদ থাকা যায়, তাদের ধারণাও ভূল বলে জানালেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, প্রত্যেকটি ভবনের ছাদে পানির ট্যাংক বসানো থাকে। এই ট্যাংকের ওপর বজ্রপাত হলে সে সময় কেউ কলে পরিবাহিত পানি ব্যবহার করতে থাকলে তার আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কারণ বজ্রপাতের বিদ্যুৎ পানির মাধ্যমে পরিবাহিত হয়। ভবনের গা বেয়ে যদি বজ্রপাত চলে যায় সেক্ষেত্রে গ্রিলের সংস্পর্শে কেউ থাকলে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ ছাড়া ডিসের ক্যাবলসহ অন্যান্য ক্যাবলের মাধ্যমেও ঘরের ভেতরে থাকা যে কেউ এর শিকার হতে পারেন। তবে ঘরে নয়, ঘরের বাইরে খোলা মাঠেই বজ্রপাতে হতাহতের ঘটনা বেশি ঘটে। বজ্রপাতের সময় কেউ খোলা মাঠে থাকলে কোন গাছের নীচে আশ্রয় না নিতে পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশিষ্ট আবহাওয়াবিদ ড. সমরেন্দ্র কর্মকার জানান, বজ্রপাতের হাত থেকে বাঁচার কৌশল বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে মৃত্যুর সংখ্যা কমানো সম্ভব। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশে প্রবেশের আগে কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়। সাধারণত মার্চ থেকে শুরু করে মে পর্যন্ত চলে এ ঝড়। আগেরদিনে গ্রামের মানুষ বলত বৈশাখ মাসের ১২ তারিখ থেকে জ্যৈষ্ঠ মাসের ১৩ তারিখের মধ্যে বেশি কালবৈশাখী ঝড় হয়ে থাকে। কালবৈশাখী ঝড়ের সময় বেশি বজ্রপাত ঘটে এবং মানুষ বেশি মারা যায়। আবহাওয়া বিজ্ঞানে বলা হয়, গ্রীষ্মকালে দিনের তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে বাতাস গরম হয়ে উপরে উঠতে থাকে। জলীয়বাষ্পও উপরে উঠে আর মেঘের ভিতর যত বেশি পরিমাণে জলীয়বাষ্প ঢুকবে তত বেশি উলম্ব মেঘের সৃষ্টি হবে। এ সময় ‘আপ ড্রাফ’ এবং ‘ডাউন ড্রাফ’ বাতাসে চলতে থাকে। একে বলা হয় বজ্রমেঘ। মেঘের উপরের অংশে পজেটিভ এবং নিচের ও মধ্য অংশে নেগেটিভ বিদ্যুত্ তৈরি হয়। পজেটিভ ও নেগেটিভ মেঘের ভিতরের বিদ্যুত্ আধারে দূরত্ব বেড়ে গেলে প্রকৃতির নিয়মে ভারসাম্য আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়। পজেটিভ ও নেগেটিভ মেঘ থেকে বিদ্যুত্ আদান-প্রদান শুরু হয়। পজেটিভ ও নেগেটিভ বিদ্যুত্ সঞ্চালন শুরু হলে বজ্রের সৃষ্টি হয়। আর তখনই বজ্রপাত হতে থাকে। পজেটিভ ও নেগেটিভ মেঘ একত্র হলে বিদ্যুত্ সঞ্চালনের ফলে বাতাসের তাপমাত্রা ২০ হাজার ডিগ্রি থেকে ৩০ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হয়ে থাকে। মেঘের ভিতর থাকা নাইট্রোজেন ও অক্সিজেন গ্যাসের সমপ্রসারণ ঘটে। গ্যাসের কম্পনের ফলে মেঘের গর্জন সৃষ্টি হয়। বজ্র সৃষ্টি হয়ে তা পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়ার প্রক্রিয়াটিও বেশ জটিল বলে জানান ড. সমন্দ্রে কর্মকার। বজ্রপাতে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাও খুবই কঠিন। তবে সতর্ক হলে মৃত্যুর সংখ্যা কমানো যেতে পারে বলে তিনি জানান।

মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশে প্রবেশের আগ মুহূর্তে বজ্রপাতের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষার জন্য বিশেষজ্ঞরা মানুষকে পশ্চিম, দক্ষিণ-পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম ও উত্তর আকাশে মেঘের গুড়গুড়ি ডাক শুনলেই নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেন। তবে কোনোভাবেই এ সময় ফাঁকা মাঠে থাকা যাবে না। দুর্ঘটনা এড়াতে সরকার ও গণমাধ্যমে বজ্রপাতের সময় করণীয় সম্পর্কে প্রচারণা চালাতে হবে। এ ছাড়া এ সময় মোবাইলফোন কম ব্যবহার করা ও বজ্রপাতের সময় পানির সংস্পর্শে না থাকার পরামর্শ দেন তারা। ঘন কালো মেঘ দেখলেই সাবধান হতে হবে। গুরগুর মেঘের ডাক শুনলেই নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে হবে। পাকা বাড়িতে আশ্রয় বেশি নিরাপদ। গাড়ির ভিতরও আশ্রয় নেয়া যেতে পারে। গাছের নিচে, টেলিফোনের খুঁটির পাশে বা বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের খাম্বার পাশে দাঁড়ানো মোটেই নিরাপদ নয়। ফাঁকা মাঠের মধ্যে অবস্থান সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক বলে তিনি জানান। পানির সংস্পর্শে মোটেই যাওয়া যাবে না। মার্চ থেকে এপ্রিল মাসে কালবৈশাখী দুপুরের পরে হয়ে থাকে। এরপর মে’র শেষ পর্যন্ত সকালেও হয়ে থাকে। পশ্চিম, দক্ষিণ-পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম এবং উত্তর আকাশে মেঘের গুরগুর গর্জন শুরু হলে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে হবে। পূর্ব, উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব আকাশে বিদ্যুত্ চমকালে বজ্রপাতে মৃত্যুর আশংকা কম থাকে। আর বৃষ্টি ও মেঘের গর্জন না থামা পর্যন্ত নিরাপদে থাকা বাঞ্ছনীয় বলে জানান ড. কর্মকার। বজ্রপাতের আওয়াজ শোনার আগেই তা মাটি স্পর্শ করে। সোজাসুজি মানুষের গায়ে পড়লে মৃত্যু অবধারিত। বজ্রপাতে আহত ব্যক্তিকে স্পর্শ করাও বিপজ্জনক। শুকনা কাঠ দিয়ে ধাক্কা দিতে হবে। বজ্রপাতের সম্ভাবনা আবহাওয়া বিভাগের রাডারে ধরা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ‘নাউকাস্টনিং’ পদ্ধতিতে মিডিয়াতে প্রচার করতে হবে, যাতে মানুষ নিরাপদ স্থানে যেতে পারে। এতে বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যুহার কমানো সম্ভব। ঝড়ের পূর্বাভাস দেখলে কখনো খোলা মাঠ, পাহাড়ের চূড়া, সমুদ্রসৈকতে অবস্থান করবেন না। গাছের নিচে, বিদ্যুতের খুঁটি বা তারের নিচে, পুরনো-জীর্ণ বাড়ির নিচে অবস্থান করবেন না। চলন্ত অবস্থায় রাস্তার পাশে গাড়ি থামিয়ে গাড়িতে অবস্থান করুন। কোনো কর্ডযুক্ত ফোন ব্যবহার করবেন না। মাটির সঙ্গে সংযু্ক্ত ধাতব পদার্থে হাত বা হেলান দিয়ে দাঁড়াবেন না। বৈদ্যুতিক সংযোগযুক্ত পানির ফোয়ারায় গোসল করবেন না। মরা কিংবা পচন ধরা গাছ ও খুঁটি কেটে ফেলুন। বাসা, অফিস কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বের হলে বিদ্যুতে সব সুইচ বন্ধ রাখুন, রজা-জানালা ভালোমতো বন্ধ রাখুন। এ সময় সর্তক করার অন্যতম কারণ হচ্ছে, এপ্রিল, মে, জুন, এ তিন মাস আমাদের দেশে হঠাৎ ঝড়-বৃষ্টির সাথে বজ্রপাতের আশঙ্কা বেশি থাকে। বজ্রপাতে সবাই সচেতন হই, নিরাপদ থাকি, এটিই প্রত্যাশা।

সূত্রঃ ইণ্টারন্যাশনাল ফোরাম অন টনর্নেডো ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন ফর বাংলাদেশ
বিঃদ্রঃ লেখাটি পূনঃপ্রকাশিত।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
ব্রেকিং নিউজ২৪.কম :-& ফেসবুক-১ :-& ফেসবুক-২
[email protected]

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৫:১১

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:


সরকার মনে হয় এখনও বজ্রপাত প্রতিরোধের জন্য তালগাছের উপর ভরসা করে।

২৫ শে এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
অবস্থা দৃষ্টে তাই প্রতিয়মান হচ্ছে।
কিন্তু দিনে দিনে তাল গাছও উজাড়
হয়ে যাচ্ছে।

২| ২৫ শে এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৫:১২

মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: ভাগ্যিস সূত্র উল্লেখ করেছেন।

২৫ শে এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
হুম! সাথে দৈনিক আমাদের সময়ে
প্রকাশিত আমার সংক্ষেপিত লেখাটির
ছায়া চিত্র সংযোজন করলাম যাতে
সূত্রমুত্র নিয়া কাড়াকাড়ি না লাগে।

৩| ২৫ শে এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৫:৫৩

সোনাগাজী বলেছেন:



বজ্রপাত কি ঘরের উপর পরে?

২৫ শে এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
বজ্রপাত কারো দোস্ত বা শত্রু না।
তার যখন যার উপর ইচ্ছা তার
উপর পড়ে। শনিতে টানলে মাথায়
না পড়ে পশ্চাত দেশেও পড়ে।

৪| ২৫ শে এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩১

নতুন বলেছেন: হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে—হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, তোমাদের প্রবল পরাক্রমশালী প্রভু বলেছেন, যদি আমার বান্দারা আমার বিধান মেনে চলত, তবে আমি তাদের রাতের বেলায় বৃষ্টি দিতাম, সকালবেলায় সূর্য দিতাম এবং কখনো তাদের বজ্রপাতের আওয়াজ শুনাতাম না। (মুসনাদে আহমদ : ৮৭০৮)

বজ্রপাত অবস্থায় করণীয়

বজ্রপাত খোদায়ি দুর্যোগ, এর থেকে বেঁচে থাকার কিছু বাহ্যিক করণীয়ও রয়েছে, যা ইদানীংকালে বিভিন্ন পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। তবে হাদিসের পাতায় চোখ বুলালে দেখা যায়, বজ্রপাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রিয় নবী (সা.) তাঁর উম্মতদের বিভিন্ন দোয়া শিখিয়েছেন। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) তাঁর বাবা থেকে বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) যখন বজ্রের শব্দ শুনতেন তখন বলতেন, ‘আল্লাহুম্মা লা তাকতুলনা বিগজাবিকা ওয়ালা তুহলিকনা বিআজাবিকা ওয়া আ-ফিনা কবলা জালিকা। ’ (তিরমিজি : ৩৪৫০)

অন্য রেওয়ায়েতে আছে, হজরত ইবনে আবি জাকারিয়া থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি বজ্রের আওয়াজ শুনে এ দোয়া পড়বে, ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’, সে বজ্রে আঘাতপ্রাপ্ত হবে না। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ২৯২১৩)

সবাইকে এই দোয়া শিখিয়ে দিতে হবে।

২৫ শে এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ নকিব। তবে এই
দোয়া শুধু যারা আল্লায় ও নবী রসুল(সঃ)
গনের উপর ঈমান এনেছে তাদের জন্য।
যারা সন্ধেহ করে তাদের জিন্য নয়।

৫| ২৬ শে এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১:৫৩

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: মরণ যে দিন হবে সে আর রক্ষা থাকবেনা।

২৬ শে এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ২:১৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
কথা সত্য। তার পরেও কথা থাকে।
আগুনে হাত দিলে আগুন খাতির
করবেনা। তাই বুদ্ধিমানেরা আগুনে
হাত দিবে না।

৬| ২৬ শে এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১:৫৭

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: জনগুরুত্বপূর্ণ পোস্ট ।

আশা করি সবারই উপকারে লাগবে এবং দরকারীও বটে ।

তবে ভয়ে আছি , কোন কোন মহামহিমরা আবার কিনা বলে বসে ঠাডা যে আসলেই পড়ে তার সূত্র কই বা কোথা থেকে পাইছেন এই কথা।

আর খবরের কাগজের যে রেফারেন্স দিচেন -ইডাও নকল কইরে আপনি লিকেছেন । এ বিষয়ে দৈনিক মহা সমুদ্রে গত বং বং তারিখে হুবুহ একই লেকা ;) বেরিয়েছিল।

ফলাফল , ইহা একটি নকলবাজি (কপি-পেস্ট) পোস্ট

২৬ শে এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ২:২৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আমার মনে হয় না যে এই লেখা
সবার উপকারে লাগবে। তাদের
পড়ার সময় কই! তারা ব্যস্ত আছেন
কার পিছে কয়ট ছ্যাঁদা তার হিসাব
কষতে। কপি পেষ্টের ক্যাচাল তাদের
ঘুম হারাম করছে। তবে আমার মতে
দাগই ভালো যদি তাতে কিছু শিখবার
থাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.