নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
বিয়ে যে কোন মানুষের জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক অধ্যায়। বিয়ে কেবলমাত্র দু’জন ব্যক্তির জীবনকেই যোগ করে না বরং দুই পরিবারের মাঝেও মেলবন্ধন তৈরি করে। বিশ্বের যে প্রান্তই হোক না কেন, বিয়ে মানেই উৎসব। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন সমাজে বিয়ের জন্য রয়েছে বিভিন্ন রীতি। কখনো এক সমাজের বিয়ের রীতি অন্য সমাজের বিপরীত। তবে বেশিরভাগ বিয়ে অনুষ্ঠানের শুরুতে হবু বর-কনেকে আংটি পড়ানোর পদ্ধতি চালু রয়েছে। দু’ই পরিবারের প্রধানের উপস্থিতির মাধ্যমেই অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে বিয়ের অনুষ্ঠান। একেক দেশে বিয়ের রীতিনীতি, পোশাক-আশাক তাদের ঐতিহ্য অনুযায়ীই হয়ে থাকে। কোনো সমাজের বিয়ের রীতি আবার আরেক সমাজে হাসির উদ্রেক করে। বেশ মজাও দেয়। বাংলাদেশ, চীন, জাপান, কোরিয়া, ফিলিপাইন, সুইডেন, মঙ্গোলিয়া, ফিজি, পোল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানী, দক্ষিন আফ্রিকা, গুয়েতেমালা- দেশ সমূহের বিয়ের মজার বিয়ের রীতি এখানে তুলে ধরা হলো।
বাংলাদেশঃ
বাংলাদেশে খুবই উৎসবমুখর পরিবেশে বিবাহের উৎসব উদযাপন করা হয়। বাংলাদেশে ঘটক ছেলের পক্ষ থেকে মেয়ের বাড়িতে প্রস্তাব নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি মেয়ের পক্ষ হয়েও ছেলের বাড়িতে প্রস্তাব নিয়ে আসেন। আমাদের দেশে ঘটকদের প্রধান উদ্দেশ্য থাকে ছেলে ও মেয়ে উভয়কে পরস্পরের কাছে আকর্ষণীয়, সুদর্শন ও যোগ্য হিসেবে উপস্থাপন করা। পেশাদার ও শখের- এ দুই শ্রেণীর ঘটক দেখা যায় বাংলাদেশে। পেশাদার ঘটকরা প্রতিটি ঘটকালির জন্য নির্দিষ্ট অর্থ ও দ্রব্যসামগ্রী গ্রহণ করে থাকেন। আর শখের ঘটকালি হচ্ছে আত্মীয়-স্বজনের পক্ষ থেকে বিশেষ প্রয়োজনে ঘটকের দায়িত্ব পালন করা। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে মোটামুটি কম বেশি সব বিয়েতেই তিনটি ভাগ হয়ে থাকে গায়ে হলুদ, বিয়ে আর বৌভাত। তবে সময়ের সঙ্গে এখন নানা পরিবর্তন এসেছে এবং যুক্ত হয়েছে নতুন নতুন বিষয় আর সেই সঙ্গে আরও কয়েকধাপ উদযাপনের বহর। বাংলাদেশের বিয়ের ক্ষেত্রে কিছু মজার রীতি হল বরের জুতা লুকানো, কনের বাড়িতে উপহার পাঠানোর সময় মাছের মুখে পয়সা রাখা, বিয়ের পর কনের বাড়িতে বরের প্রথম বাজার ইত্যাদি। মাঝে মধ্যে মসজিদ মাদ্রাসাতেও স্বল্প খরচে বিয়ের আনুষ্ঠনিকতা সম্পাদন হয়। বাংলাদেশে বিয়ের অতীত রীতিনীতি বিষয়ে চীনের সঙ্গে খুব বেশি অমিল নেই। যেমন একটি ঘটনার কথা বলিঃ
তখন শীতকাল,একদিন এক গ্রামের বাড়িতে মেয়ে দেখার জন্য ছেলের পক্ষের লোকজন আসে। সবাই মেয়ে দেখার অপেক্ষায় আছেন। অবশেষে মেয়েটি শাড়ি পরে ঘোমটা দিয়ে এসে দাঁড়ালো। ছেলেপক্ষ থেকে তাকে হাঁটতে বললেন। মেয়েটি হাঁটলো। ঘোমটা খুলে চুল দেখাতে বলা হলে চুল দেখালো। এরপর ছেলেপক্ষ তাকে হাসতে বললো। কোরান থেকে কিছু সুরা পাঠ করতে বলার পর হাত ও পায়ের নখ দেখাতে বলা হলো। মেয়েটিও একে একে সব করে দেখালো। অবশেষে ছেলেপক্ষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করে মেয়ের হাতে কিছু টাকা গুঁজে দিলো। এই পুরো দৃশ্য পাত্র উপভোগ করলো ও তার আত্মীয়দের কাছে বিয়ের সম্মতি প্রকাশ করলো। পরে কোন এক শুভ দিনক্ষণে বর কনেকে গায়ে হলুদ এবং খানা পিনার মাধ্যমে বিবাহ কার্যাদি সম্পাদন করে।
বর্তমানে বাংলাদেশের মেয়েরা আরো সাহসী হয়ে উঠছে। গায়ে হলুদের দিন কনে নিজে মটর সাইকেল প্যারেড নিয়ে গায়ে হলুদ নিতে আসেন। কনে এখন নিজেরা বিয়ে করার জন্য ছেলেদের বাড়ি কনেযাত্রী নিয়ে বরের বাড়িতে গিয়ে বিয়ে করে বাড়িতে বর নিয়ে আসে। চিরাচরিত নিয়ম ভেঙে এবার যাত্রীসহ কনে বরের বাড়িতে গিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছেন। ব্যতিক্রমী এ ঘটনা ঘটেছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চৌগাছা গ্রামে। বিয়ের কনে যাত্রীদের নিয়ে স্বয়ং বরের বাড়িতে হাজির হয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। সাতটি মাইক্রোবাস ও ৩০টি মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে কনে আসেন বরের বাড়িতে। প্রথানুযায়ী ফুল ও মিষ্টি মুখ করিয়ে কনেকে বরণ করেন বর পক্ষ। এরপর শুরু হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। যৌতুকমুক্ত বিয়ে ও নারী অধিকার নিশ্চিত করতে উভয় পরিবারের আয়োজনে এ বিয়ে বলে জানিয়েছেন তারা। আনুষ্ঠানিকতা সেরে বউ বর নিয়ে বাড়ি ফেরেন।
ভারতঃ
ভারতের মাঙ্গলিক মনে করা হয় এমন সব মেয়েদের প্রথমে কোন একটি গাছের সাথে বিয়ে দেয়া হয়। এবং বিয়ের পর গাছটি কেটে ফেলা হয়। মনে করা হয়ে থাকে যেসব মেয়েরা মাঙ্গলিক হয়, বিয়ের পর পরই তাদের স্বামীর মৃত্যুর হয়। এই অভিশাপ থেকে বাঁচতে প্রথমে তাদের গাছের সাথে বিয়ে দিয়ে তা ধ্বংস করে ফেলা হয়। এর মানে হল তাদের উপর থাকা অভিশাপ কেটে গেল গাছের সাথে এই প্রথম বিবাহের ফলে, এবং তার স্বামীও মারা গেছে। এবার তার দ্বিতীয়, মানে আসল বিয়েতে আর কোন বাধাই থাকল না। শুনতে অবাস্তব লাগছে? ভারতের জনপ্রিয় নায়িকা ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনও কিন্তু মাঙ্গলিক ছিলেন, আর তার প্রথম বিবাহ গাছের সাথেই হয়েছিল!
চীনঃ
বিশাল একটি দেশ চীন। বিস্তীর্ণ তাদের ভূখণ্ড। তাই, চীনের বিভিন্ন জায়গায় বিয়ের আচার ও রীতিনীতিও ভিন্ন। তবে মূল বিষয়গুলো প্রায় একই রকম। প্রাচীন চীনে একটি বিয়ের মোট ৬টি অনুষ্ঠান হতো। এগুলোর মধ্যে আছে মেয়ে পক্ষকে যৌতুক দেওয়া, বিয়ের বাগদান, ভোজ ইত্যাদি। সেসময় একটি ছেলে যদি এক মেয়েকে পছন্দ করতো, তাহলে তিনি মেয়ের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে ঘটককে পাঠাতেন। সেখানকার ঘটক দু’পক্ষের নাম, বয়স, পারিবারিক অবস্থা ইত্যাদি তথ্য দু’পক্ষকে জানিয়ে দিতো। দু’পক্ষ মোটামুটি রাজি হলে ঘটক মেয়েপক্ষের বাড়িতে ছেলেপক্ষকে যাওয়ার দিন নির্ধারণ করে দিতো। ছেলেপক্ষ মেয়ের বাড়িতে গিয়ে মেয়েকে দেখা ছাড়াও মেয়ের পরিবারের আর্থিক অবস্থা ও মেয়ের চরিত্র, মেজাজ-মর্জি যাচাই করে নিতো। তবে বিয়ের আগে মেয়েপক্ষ ছেলের বাড়িতে যেতো না।বিয়ের দিন নিয়ে চীনের আরো কিছু মজার রীতিনীতি আছে। যেমন: বিয়ের দিন কনে লাল পোশাক পরে। বর্তমানে অবশ্য অনেক কনে পাশ্চাত্যের অনুকরণে সাদা রংয়ের লম্বা স্কার্ট পরেন।
শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার সময় কনেকে কাঁদতে হয়। চীনের তুইজা গোষ্ঠীর মেয়েদের এই কাজটা বিয়ের আগের ঠিক এক মাস ধরে করতে হয়। এই একমাস প্রতিদিন নিয়ম করে কনেরা এক ঘণ্টা করে কাঁদে। শুধু তাই নয় বিয়ের দিন যতই ঘনিয়ে আসে কান্নার দলের সদস্য সংখ্যা ততই বাড়তে থাকে। বিয়ের যখন ২০ দিন বাকি থাকে তখন মেয়ের সঙ্গে এসে যোগ দেয় তার মা। বিয়ের যখন ১০ দিন বাকি থাকে তখন এসে যোগ দেয় কনের নানী। আর শেষের বাকি কয়েকটা দিন পরিবারের সবাই এই কান্নার আসরে যোগ দেয়। এটিই তাদের চিরাচরিত ঐতিহ্য। কনের বিদায়ের সময় বাবা-মাও চোখের জলে বুক ভাসায়। চীনের কোনো কোনো অঞ্চলে স্বামীর ঘরে প্রবেশের আগে কনেকে আগুন জ্বালানো একটি গামলা পার হতে হয়। এ রীতির অর্থ হলো, সব অমঙ্গল আগুনে পুড়ে যাক ও নতুন দম্পতির জীবন আগুনের মতো উজ্জ্বল হোক।
বিয়েতে কনের কাপড় খুলে নেয়ার রীতি। শুনতে একটু বাজে শোনালেও এটাই চীনের এক সম্প্রদায় যুগের পর যুগ ধরে করে আসছে। এখানে কোনো মেয়ের বিয়ে হলে বরের বন্ধুরা কনের কাপড় খুলে নেয়ার চেষ্টা করে আর বর চেষ্টা করে তার বন্ধুদের থেকে স্ত্রীকে বাঁচানোর। সবাই জানে যে এসব সমাজে একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয় আর তারাও ঠিক এটাই জানে কিন্তু সেখানকার নারীরা এটা না চাইলেও তাদেরকে তা করতে হয় কারণ এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ না করলে তারা মনে করে তাদের বৈবাহিক জীবন খুব দ্রুতই ধ্বংস হয়ে যাবে।
মঙ্গোলিয়াঃ
চীনের মঙ্গোলিয়ান গোষ্ঠীর কারো বিয়ের তারিখ ঠিক কর তে হলে বর-বধূকে একটি ছুরি নিয়ে একসাথে একটি মুরগির ছানা মারতে হবে। এরপর দেখা হয়, সেই মুরগির ছানার কলিজার রঙ কেমন। যদি তা টাটকা এবং শুদ্ধ মনে না হয়, তবে বিয়ে আর হবে না। অপেক্ষা করতে হবে এভাবে যতদিন না দুজন মিলে একটি মুরগির ছানা মারতে পারে যার কলিজা দেখতে লাগবে টাটকা। তবেই না বিয়ের তারিখ আর বিয়ে।
ইন্দোনেশিয়াঃ
বিয়ের সব অদ্ভুত আর বিদঘুটে নিয়মের ক্ষেত্রে নিজেদের অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে ইন্দোনেশিয়া। শৌচাগার ব্যবহার করা আমাদের প্রাত্যহিক কাজের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং মৌলিক চাহিদা। ভাবতে পারেন টানা ৩দিন আপনি শৌচাগার ব্যবহারের বিন্দুমাত্র সুযোগ পাবেন না! ইন্দোনেশিয়ার ঐতিহ্য অনুযায়ী বিয়ের পর মধুচন্দ্রিমায় বর আর কনেকে টানা তিনদিন-তিনরাত একঘরে বন্দি অবস্থায় কাটাতে হয়। এবং সেই ঘর ছেড়ে তারা কোন অবস্থাতেই কোথাও যেতে পারবে না। ধারণা করা হয় সেই সময়টুকু পার করতে পারলে সেই বিয়ে সুখের হবে। ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপে বিয়ের অদ্ভুত কিছু নিয়ম রয়েছে। এই দ্বীপের ছেলে মেয়েদের বিয়ের আগে দাঁত ঘষা হয়। যাতে তারা কামনা, লোভ, রাগ, ইর্ষা, গর্ব ও সন্দেহ থেকে মুক্তি পায়। অতীতকাল থেকে আজো এই রীতির প্রচলিত হয়ে আসছে। বালিবাসীরা হিন্দু ধর্মাবলাম্বী। তাদের অন্যতম এক অনুষ্ঠান হচ্ছে দাঁত ফাইলিং করা বা দাঁত ঘষা। এটি অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক ও কষ্টকর এক রীতি। প্রথমে হালকা করে বাঁশের টুকরা দিয়ে দাঁতগুলো ঘষে নেয়া হয়। অতঃপর ধাতব বিভিন্ন বস্তুর সাহায্যে দাঁত ঘষে বিভিন্ন আকৃতির দেয়া হয়। এই অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে নারী বা পুরুষের মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন চারপাশে দাঁড়িয়ে থাকেন। এটি তাদের সন্তানের প্রতি পিতামাতার দায়িত্বের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই দাঁত ঘষা অনুষ্ঠানটি বালির প্রতিটি ছেলে মেয়ের জন্য বাধ্যতামূলক।
ফ্রান্সঃ
বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর ও প্রেমময় দেশগুলোর একটি হচ্ছে ফ্রান্স। সাদা রং ফ্রান্সের বিয়ের অনুষ্ঠানের প্রধান রং। সাজগোজের অলংকার, ফুল, কনের কাপড় সবই সেখানে সাদা হয়ে থাকে। এ থেকে বোঝা যায়, ফরাসিদের চোখে বিয়ে হচ্ছে শান্তি ও পবিত্রতার প্রতীক।
সুইডেনঃ
সুইডেনে যখনই নববধূ বা বর বাথরুমে যাবার জন্য তাদের টেবিল থেকে উঠে যায়, বসে থাকা তার সঙ্গিকে বিপরিত লিঙ্গের মেহমানরা এসে চুম্বন করার সুযোগ পায়। মানে নতুন বর যদি অন্যদের মাঝ থেকে উঠে বাথরুমে যায়, তবে তার নববধূকে অন্য লোকেরা এসে চুম্বন করে যাবে। আর নববধু যদি তার বরকে রেখে যায়,তবে অন্য নারীরা এসে তাকে আদর করে রেখে যাবে। বোঝাই যাচ্ছে যে বর বাথরুমে যাবে, এমনটাই সবাই আশা করে।
ফিলিপাইনঃ
দীর্ঘ, শান্তিময় ও ছন্দময় জীবনের উদ্দেশ্যে ফিলিপাইনে বিয়ের দিন বর ও বউ একই সঙ্গে দু’টি কবুতর আকাশে ছেড়ে দেন। তাঁরা মনে করেন, কবুতরের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের জীবনের দুঃখ-কষ্টও দূর হয়ে যাবে।
ব্রিটিশঃ
বিয়ে সর্বদাই পবিত্র হওয়া উচিত। আর তাই পবিত্রতার প্রতীক হিসেবে ঐতিহ্যবাহী ব্রিটিশ-রীতির বিয়ে অনুষ্ঠানে কনে পদ্মফুল হাতে রাখে। ব্রিটিশদের চোখে এই ফুল সৌভাগ্যের প্রতীক। ব্রিটিশদের বিয়ের অনুষ্ঠান সাধারণত দুপুরে আয়োজিত হয়। তাদের বিয়ের কেক তৈরিতে হরেক রকম ফল ব্যবহার করা হয়। এ কেককে তাদের প্রথম সন্তানের জন্ম পর্যন্ত রেখে দেওয়া হয়।
দক্ষিণ আফ্রিকাঃ
নতুন দম্পতির ঘরে বর এবং বউ উভয়ের বাবা-মা তাঁদের বাসা থেকে আগুন নিয়ে আসেন। সেই আগুন দিয়ে তাঁরা তাঁদের নতুন ঘরের ফায়ারপ্লেসের আগুন ধরান। ছোটবেলা থেকে তারা যে আগুনের আঁচে অভ্যস্ত, সে রকম আগুন দিয়েই তারা তাদের নতুন জীবন শুরু করে।
কোরিয়াঃ
কোরিয়ায় বিয়ের সময় বর তাঁর শাশুড়িকে একজোড়া পুতুল হাঁস উপহার দিয়ে থাকেন। এই উপহারটি দিয়ে বর বউয়ের প্রতি তাঁর উদ্দেশ্য এবং আনুগত্য প্রকাশ করেন। বিয়েতে বরের পায়ে মাছের হাড় দিয়ে আঘাত করাঃ
দক্ষিণ কোরিয়ার এই অদ্ভুত নিয়ম মূলত বিয়ের মধ্যেই পালন করা হয়। বিয়ের মধ্যে বর তার জুতা মোজা খুলে শুয়ে পরে আর তার বন্ধুরা তাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে শূন্যে ঝুলিয়ে দেয় তারপর তারা পায়ের পাতায় লাঠি বা হলুদ গরবিনা দিয়ে মারতে থাকে। হলুদ গরবিনা হলো এক প্রজাতির মাছের কাটা আর তারা বিশ্বাস করে যে এটা করলে বিয়ের প্রথম রাতের জন্য বর আরো শক্তিশালী হয়ে উঠবে। প্রকৃতপক্ষে এটা বরের জন্য একটু কষ্টসাধ্য হলেও এখানকার উপস্থিত মানুষ বিষয়টা খুব উপভোগ করে।
জার্মানিঃ
জার্মানিতে বিয়ের আগের দিন রাতে বর-বউয়ের পরিবার ও বন্ধুরা তাদের ঘরের বাইরে কাচের জিনিস ছুড়ে ফেলেন। নতুন দম্পতিরা সেই ভাঙা কাচের টুকরাগুলো ঝাড়ু দিয়ে নতুন ঘরে প্রবেশ করেন। বিয়েতে জার্মানির আরো একটি মজার রীতি হলো, বিয়ের পর নতুন দম্পতি সবার সামনে একটি কাঠের টুকরোকে একসঙ্গে কেটে দেখাবেন। এটি দিয়ে তাঁরা প্রমাণ করেন দুজন সমানভাবে কাজ ভাগাভাগি করে নেবেন এবং তাদের মধ্যে বোঝাপাড়া অনেক ভালো। জার্মানরা খুব শান্ত প্রকৃতির বলে ধারণা করা হলেও বিয়ে নিয়ে তাদেরও উন্মাদনার শেষ নেই। তাদের বিয়েতে বিশেষ পার্টির আয়োজন করা হয়। এই পার্টিতে বর ও কনেকে কেন্দ্র করে নানা মজা করা হয়। সবচেয়ে মজার ব্যাপারটি হচ্ছে, নাচতে নাচতে আনন্দের সঙ্গে থালা-বাসন ছুঁড়ে ফেলা। আবার যদি স্বামী স্ত্রীকে দেখতে চায়, তাহলে স্ত্রীর বন্ধুকে ঘুষ দেওয়ার মতো টাকা দিতে হয়। নইলে স্ত্রীকে দেখার অনুমোদন দেয় না বন্ধুরা। জার্মানিতে বিয়ের ক্ষেত্রে অদ্ভুত একটি খেলা হয়। এখানে অনুষ্ঠানে আগত অতিথিরা তাদের খাওয়ার পাত্রগুলি ব্যবহার করার পর মাটিতে ফেলে দেয়। বর এবং কনে-কে সেই একগাদা বাসন পরিষ্কার করতে দেওয়া হয়। সেখানকার বিশ্বাস এটি করে যে নব দম্পতির উপর থেক সমস্ত কুনজর সরিয়ে দেওয়া হয়।
ফিজিঃ
ফিজির পুরুষদের বিয়ে করতে হলে তিমি মাছের দাঁত সংগ্রহ করতে হবে। কোনো মেয়ের বাবাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে হলে ছেলের কাছে অবশ্যই তিমি মাছের দাঁত থাকতে হয়। সমুদ্রের তলদেশে বসবাস করা তিমি মাছের দাঁত সংগ্রহ করাটা অনেকটাই অসম্ভব কাজ। তাই বাধ্য হয়ে অনেককেই ব্ল্যাক মার্কেটে ধরনা দিতে হয়।
গ্রিসঃ
গ্রিসের বিয়ের রীতিনীতিকে খুব সুস্বাদু একটি মিষ্টি রীতি বলা যেতে পারে। সেখানে কনেরা নিজের হাত মোজার ভেতরে কিছু মিষ্টি ক্যান্ডি রাখে। এ ব্যতিক্রমী কাণ্ডের কারণ, নিজের বিবাহিত জীবনকে আরো মিষ্টিময় করে তোলা। এছাড়া গ্রিকরা ঐতিহ্যবাহী রাউন্ড ডান্সের গোলাকার নৃত্যের মাধ্যমে বিয়ের অনুষ্ঠানে অতিথিদের অভ্যর্থনা জানায়।
রাশিয়াঃ
রাশিয়ার বিয়ের অনুষ্ঠানে যে শব্দ সবচেয়ে বেশি শোনা যায়, তা হলো ‘তিক্ত’। অনুষ্ঠানে যদি কেউ উচ্চস্বরে বলে, “তিক্ত, তিক্ত”, তাহলে সবাই একসঙ্গে তিক্ত বলবে। আর স্বামী ও স্ত্রীকে দাঁড়িয়ে গভীরভাবে চুমু খাবে। এরপর যতবার অতিথিদের মধ্য থেকে উচ্চস্বরে তিক্ত, তিক্ত বলা হবে, ততবার দম্পতিকে মিষ্টি চুমু দিয়ে অতিথিদের প্রতি সাড়া দিতে হবে। অন্তত দশ-বারো বার চুমু খেলে তবেই অতিথিরা সন্তুষ্ট হয়। কারণ, রুশদের ধারণা, স্বামী-স্ত্রীর চুমু মদের তিক্ততাকেও মিষ্টি করতে পারে! (আজ এ পর্যন্ত)
source
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল ফেসবুক
[email protected]
১২ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ২:৩৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ডিজিটাল প্রথা!
২| ১১ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১০:৪৯
প্রতীক মন্ডল বলেছেন: বিয়া যে কত মজা
১২ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ২:৩৮
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
হুম, যে করে সে পস্তায়,
যে না করে সেও পস্তায়!!
৩| ১১ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১১:৪৪
নূর আলম হিরণ বলেছেন: নুরু ভাই আপনি কেমন আছেন?
১২ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ২:৩৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আলহামদুলিল্লাহ ,
হিরণ ভাই,
আমি ভালো আছি
আল্লাহর রহমতে।
৪| ১২ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১২:২৪
বিটপি বলেছেন: একটা ছাগলীর উদাহরণ দিয়ে বাংলাদেশের বিয়ের রীতি আপনি হাস্যকর করে উপস্থাপন করলেন। ঐ ছাগলী যা করেছে, বাঙ্গালদেশের অর্ডিনারী মানুষের কাছে তা একেবারেই গ্রহণযোগ্য না। যৌতুকের প্রতিবাদ করতে হয় ছাগ্লামি দিয়ে? এতে কি যৈতুক বন্ধ হবে?
ঐ ছাগলী তার লেদামী করে কেবল লোক হাসায়নি - করোনা কালীন সময়ে সারা দেশে যখন লকডাউন চলছিল - ঐ ছাগলী আর তার সাঙ্গপাংগরা তখন মাস্ক ছাড়া রাস্তায় বের হয়ে, হেলমেট ছাড়া মটর সাইকেল চালিয়ে দেশের আইন কানুনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়েছে। এসব বিতর্কিত কর্মকান্ডকে কখনোই উৎসাহিত করা উচিত নয়।
১২ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ২:৪৩
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
পুরাতন বিলীন হয়
নতুন আসে!
পুরাতন নতুনকে দেখে
মুচকি মুচকি হাসে!
৫| ১২ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: যার যেটা ভালো লাগে করুক।
১২ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ২:৪৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনি আর একখান
করাইন নাকি!
৬| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ২:৩১
শায়মা বলেছেন: এত রকম বিয়ে!
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:৪৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
জি আপু!
৭| ০৩ রা নভেম্বর, ২০২১ রাত ৯:৩৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: বাহ, বিয়ের মত একটা আনন্দদায়ক অনুষ্ঠানের কত হরেক রকমের প্রথা রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন দেশে! 'তিক্ত' বলে বলে তিক্তকে 'মিষ্ট'তে রূপান্তর করার রাশিয়ান প্রথাটি বেশ চমকপ্রদ।
তবে যে যাই বলুক, আমাদের প্রথাই সবচেয়ে সুন্দর।
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:৪৩
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
কথা সত্য!
৮| ১৭ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:০৬
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আপনি কই ভাইজান?
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:৪২
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আমি অন্ত্ররালে!
আমি অন্ত্ররালে!
৯| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:৫১
চাঁদগাজীর সমর্থকগোষ্ঠী বলেছেন:
এতোগুলো দেশের বিয়ের আচার জেনে নুরু ভাইয়ের কি লাভ!
১৮ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ২:০৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আমার লাভ লোকসানের দিন শেষ,
যাদের কিছুটা লাভের আশা আছে
তাদের জানান দিচ্ছি!
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই অক্টোবর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫৩
কামাল১৮ বলেছেন: বাংলাদেশে বাইকে করে কন্যা যায়,এইটা কি প্রথা?