নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

রসনা তৃপ্ত করা বরিশালের কিছু পরিচিত ফল (৩য় পর্ব)

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:১০


ফলগাছ মানুষের সভ্যতা খাদ্যফসল ও ফলজ বৃক্ষের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে মিশে আছে। প্রথাগতভাবে বসতবাড়ির পিছনের আঙিনার ফসল হিসেবে পরিবারের চাহিদা পূরণের জন্য ফলজ উদ্ভিদ রোপণ করা হয়। বাংলাদেশে বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসে দেশের মোট ফল উৎপাদনের শতকরা ৫৪ ভাগই উৎপাদিত হয় ও বাজারজাত করা হয়। বাকি শতকরা ৪৬ ভাগ ফলের উৎপাদন হয় অবশিষ্ট ৮ মাসে্। অঞ্চলভিত্তিক কিছু কিছু ফল খুবই ভালো হয়; যেমন বরিশালে আমড়া, পেয়ারা, কাউয়া, সফেদা, বিলাতিগাব, কদবেল ইত্যাদি। এছাড়া অন্যান্য সব দেশী ফলও পাওয়া যায় বরিশালে। আমার স্বাদ নেওয়া বরিশালের কিছু ফলের পরিচিতি নিয়ে
আমার তৃতীয় পর্ব।

১ম পর্বের র্লিংক
২য় পর্বের লিাংক
ডেউয়াঃ

ডেউয়া বা ঢেউয়া এক ধরনের অপ্রচলিত টক-মিষ্টি ফল যা বন্য ও চাষকৃত উভয়রূপে পাওয়া যায়।। এর সংস্কৃত নাম 'লকুচ' ও হিন্দী নাম 'ডেহুয়া'। গ্রামাঞ্চলে এটি অত্যন্ত পরিচিত একটি ফল হলেও শহরাঞ্চলে এটি একটি অপ্রচলিত ফল। দিন দিন দেশে অপ্রচলিত ফলের চাহিদা বেড়েই চলেছে। কারণ মানুষ বুঝতে পেরেছে এসব ফলের পুষ্টি ও ভেষজ গুণের কথা। বিদেশেও এসব ফল রফতানি হচ্ছে। মার্চ মাসে ডেউয়ার প্রায় পাতাহীন ডালপালায় ফুল আসে আর আগস্ট মাসে ফল পাকে।ডেউয়া ফলে কাঁঠালের মতো ছোট ছোট কোষ থাকে। পাকা ফলের কোষের রং হয় লালচে হলুদ বা লালচে কালো। এই ফল পুরোপুরি গোলাকার হয় না। ফলটির গা উঁচু-নিচু হয়। কাঁচা টক টক স্বাদ। কিন্তু পাকলে সেটা তখন অন্য স্বাদ। ডেউয়া সাধারণত ফল হিসেবে খাওয়া হলেও এর চমৎকার ঔষধিগুণ রয়েছে। পাশাপাশি এর রয়েছে বেশ কিছু ভেষজ গুণও। অনিয়ন্ত্রিত ওজন এ সময়ের একটা বড় সমস্যা। অথচ ঠাণ্ডা পানিতে ডেউয়া ফলের রস মিশিয়ে নিয়মিত পান করলেই আমরা আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি। এমনকি ডেউয়া ফল রোদে শুকিয়ে নিয়ে অফ সিজনেও খাওয়া যায়। মুখের রুচি ফেরাতে খেতে পারেন এই ফল। ডেউয়া ফলের রসের সঙ্গে সামান্য লবণ ও গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে খাওয়ার আগে খেতে হবে। সপ্তাহ না পেরুতেই মুখে রুচি ফিরে আসবে। পেট পরিষ্কার না থাকলে সারাদিন কাটে অস্বস্তিতে।
পেটের গণ্ডগোল থেকে রেহাই পেতে সকালে খালি পেটে খান কাঁচা ডেউয়া। এজন্য গরম পানির সঙ্গে কাঁচা ডেউয়া বাটা মিশিয়ে নিবেন।

বেতফলঃ

বেতফল একটি পুষ্টিকর, সুস্বাদু এবং উপাদেয় জাতীয় ফল। বেতফল এক প্রকার সপুষ্পক উদ্ভিদ এটি। গ্রামগঞ্জে বেত গাছ দেখা যায়। তবে এখন এসব হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম। কংক্রিট সভ্যতার দাপটে কমে যাচ্ছে বেতগাছ, সেই সঙ্গে বেতফলও। এটি জঙ্গলাকীর্ণ কাঁটাঝোপ আকারে জন্মে।বেত গাছে এই ফল ধরে বলে তাকে বেতফল বলে। বেত ফল ও মূল ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ছয় প্রজাতির বেতফল পাওয়া যায়। একটি থোকায় ২০০টি পর্যন্ত ফল ধরে। ফলের খোসা পাতলা ডিমের খোসার মতো। পাকা ফলের শাঁস নরম, খেতে টক-মিষ্টি।

জামরুলঃ

জামরুল আমাদের দেশে অত্যন্ত সুপরিচিত একটি ফল। বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গায় এই ফল পাওয়া যায়। জামরুল হালকা মিষ্টি স্বাদযুক্ত একটি রসালো গ্রীষ্মকালীন ফল। আমাদের এলাকায় অনেকের বাড়ির আঙিনার আশপাশে ঘন পাতার সন্নিবেশে চিরসবুজ গাছটি চোখে পরে। বাংলাদেশের কোথায় কোথায় জামরুলের বাগান রয়েছে তা নিয়ে আমার সুনির্দিষ্ট ধারণা নেই তবে আমাদের বরিশাল অঞ্চলে বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জ থেকে পাইকাররা গাছ সহ কিনে নেয় সেখান থেকে বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করে। গ্রীষ্মের মৌসুমি ফলের মধ্যে জামরুলই বাজারে আসে প্রথম। প্রতিবছর মাঘ-চৈত্র (March-April) মাসে জামরুলগাছে ফুল আসতে থাকে আর বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ (May-June) মাসে পাকা ফলগুলো সংগ্রহ করা এবং বর্ষার মাঝামাঝি পর্যন্ত জামরুল বাজারে পাওয়া যায়। এক একটি গাছ থেকে ২০-৩০ কেজি জামরুল এবং গাছ একটু বড় হলে ১ মনের বেশি জামরুল সংগ্রহ করতে পারে। আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের জামরুল পাওয়া যায় তার মধ্যে যে জামরুল গুলো সবচাইতে জনপ্রিয় সেগুলোর নাম উল্লেখ করা হলোঃ দেশি সাদা , চায়না লাল. চায়না সবুজ, রেশমি লাল. রেশমি গোলাপি এবং দুধ মালাই । এগুলো আমাদেরে পরিচিত। বাজারে এখন দেখা মিলছে হালকা সবুজ বা লাল রঙের এ ফলটি। গবেষণা বলছে, জামরুলে আছে পেঁপে ও কাঁঠালের চেয়ে দিগুণ আয়রন এবং কমলা ও আঙুরের চেয়ে বেশি পরিমাণে ফসফরাস।

জলপাইঃ

জলপাই একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় টক ফল। এটি সিলন অলিভ (Ceylon olive) নামেও পরিচিত। ভারতীয় উপমহাদেশ, ইন্দোচীন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে এই ফল উৎপাদিত হয়। সাধারণত ডালের সঙ্গে কিংবা আচার করেই জলপাই খায় সবাই। কিন্তু কাঁচা জলপাইয়ের পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। জলপাই প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে। সর্দি, জ্বর ইত্যাদি দূরে থাকে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। প্রতিদিন জলপাই খাওয়ার অভ্যাস করলে আপনার স্বাস্থ্য ভালো থাকবে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে। জলপাইয়ের খোসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আঁশ। এই আঁশ নিয়মিত খাবার হজমে সাহায্য করে। পাশাপাশি পাকস্থলী, ক্ষুদ্রান্ত, বৃহদন্ত্র ও কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে এই ফল। গবেষণায় দেখা গেছে, এর তেলও খুব স্বাস্থ্যকর। জলপাই রক্তের চিনি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ফলে ডায়াবেটিসও নিয়ন্ত্রণে থাকে।

বরই/কুলঃ

কুল, বরই বা বড়ই দক্ষিণ এশিয়ায় বহুল প্রচলিত, কন্টকপূর্ণ গাছের ফল।বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্র, সর্বপ্রকার মাটিতেই বরই গাছ জন্মে। যদিও এর আদি নিবাস আফ্রিকা, তবু বাংলাদেশে তো বটেই এটি পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় বহুল পরিচিত একটি ফল। মজার ব্যাপার হলো বরই-এর সরাসরি কোনো ইংরেজি নাম নেই! তবে সাধারণত একে Jujube বা Chinese date নামে ডাকা হয়। একটু ডিম্বাকৃতির বরইকে সচরাচর "কুল" বলে অভিহিত করা হয়। বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই, সব ধরনের মাটিতে বরই গাছ জন্মে। বরই গাছ ছোট থেকে মাঝারি আকারের ঝাঁকড়া ধরনের বৃক্ষ। বরই গাছ সাধারণত ১২-১৩ মিটার লম্বা হয়। এই গাছ পত্রঝরা স্বভাবের অর্থাত্‍ শীতকালে পাতা ঝরে এবং বসন্তকালে নতুন পাতা গজায়। সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে গাছে ফুল আসে এবং ফল ধরে শীতকালে। কাঁচা ফল সবুজ। তবে পাকলে হলুদ থেকে লাল রং ধারণ করে। কাঁচা ও পাকা দু ধরনের বরই-ই খাওয়া যায়। স্বাদ টক ও টক-মিষ্টি ধরনের। তবে কুল বরই মিষ্টি হয়। বরই শুকিয়ে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়। কাঁচা ও শুকনো বরই দিয়ে চমত্‍কার চাটনি ও আচার তৈরি করা যায়। বরইয়ের রয়েছে ব্যাপক পুষ্টিগুণ। বরইয়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। বরইয়ের ভিটামিন সি ইনফেকশনজনিত রোগ যেমন টনসিলাইটিস, ঠোঁটের কোণে ঘা, জিহ্বাতে ঘা, ঠোঁটের চামড়া উঠে যাওয়া ইত্যাদি দূর করে। *বরইয়ের রসকে অ্যান্টি-ক্যান্সার হিসেবে গণ্য করা হয়। এই ফলের রয়েছে ক্যান্সার কোষ, টিউমার কোষ ও লিউকেমিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করার অসাধারণ ক্ষমতা। *যকৃতের নানা রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে বরই। এই ফল যকৃতের কাজ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। *বরই অত্যন্ত চমত্‍কার একটি রক্ত বিশুদ্ধকারক। উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বরই খুবই উপকারী ফল। ডায়রিয়া, ক্রমাগত মোটা হয়ে যাওয়া, রক্তশূন্যতা, ব্রঙ্কাইটিস ইত্যাদি রোগ খুব দ্রুত সারিয়ে তোলে এই ফল। *মৌসুমি জ্বর, সর্দি-কাশিও প্রতিরোধ করে বরই।

সফেদাঃ

সফেদা গরমকালের ফল। সফেদা সারা বছর সারা দেশে পাওয়া গেলেও ফলটি দূর দেশ থেকেই এসেছে। এর আদি বাস মেক্সিকোর দক্ষিণাংশ, মধ্য আমেরিকা এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলে। দেশে দেশে নাম তার ভিন্ন। জ্যামাইকা ও ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে নেসবেরি, ইন্দোনেশিয়ায় সাও, ভারতে চিক্কু আর ইংরেজিতে সফেদা হলো সাপোডিলা। ফরিদপুর, বরিশাল ও ঢাকা অঞ্চলে ব্যাপকভাবে সফেদার চাষ হয়। ফলটি খেতে যেমন ভালো, পুষ্টিও আছে ষোলো আনা। প্রতিটি সফেদায় শক্তি আছে ৮৩ কিলোক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট ১৯.৯ গ্রাম, ডায়াটরি ফাইবার ৫.৩ গ্রাম। প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ও খনিজে সমৃদ্ধ ফলটি। সফেদায় চর্বি থাকে না। তাই আয়েশ করে বেশি খেলেও শরীরে মেদ বাড়ার আশঙ্কা থাকে না। ফলটিতে আছে প্রচুর পরিমাণ আঁশ। এই পাচক আঁশ হজমে সহায়তা করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। ফলটি ফুসফুস ও কিডনি ভালো রাখতে সাহায্য করে আবার কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে হৃৎস্বাস্থ্যের জন্যও ভালো সফেদা।

আতা ফলঃ

মিষ্টি স্বাদের দেশি ফল আতা। সুগন্ধযুক্ত এই ফলটি শুধু দেখতে কিংবা খেতেই সুন্দর নয়, এটি আমাদের শরীরের জন্যও বেশ উপকারী। পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ আতা ফলে প্রতি ১০০ গ্রামে পাওয়া যায় শর্করা ২৫ গ্রাম, পানি ৭২ গ্রাম, প্রোটিন ১.৭ গ্রাম, ভিটামিন এ ৩৩ আইইউ, ভিটামিন সি ১৯২ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩০ মিলিগ্রাম, আয়রন ০.৭ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ১৮ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ২১ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম ৩৮২ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ৪ মিলিগ্রাম। আতাফলে প্রচুর ভিটামিন এ আছে। আর ভিটামিন এ এর উপস্থিতির কারণে দৃষ্টিশক্তি বাড়ে। তাই যাদের চোখের সমস্যা তারা আতা ফল খাবেন, এতে চোখের উপকার হবে। তা ছাড়া আতায় প্রচুর ক্যালসিয়াম থাকে যা শরীরের হাড় গঠন ও মজবুত রাখার জন্য কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই হাড় মজবুত করতে আতা ফল খাওয়া উচিত।

শরিফা ফলঃ

শরিফা ফল অ্যানোনেসি পরিবারভুক্ত এক ধরনের যৌগিক ফল। শরিফা অত্যন্ত সুস্বাদু ও উপাদেয় ফল। গ্রামগঞ্জে এই ফল বেশি দেখা যায় তবে শহর অঞ্চলে এর চাহিদা কম। এই ফলটি দেখতে অতি সুন্দর। কাঁচা অবস্থায় সবুজ এবং পাকলে সবুজাভ হলদে রংঙের হয়ে থাকে। আম কাঁঠালের মৌসুম শেষ হলেই বাজারে দেখা যায় শরিফা। খাবারযোগ্য শাঁস বা পাল্পের পরিমাণ ফলের ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পাওয়া যায়। শাঁসের রং সাদা ও ক্রিম সাদা হয়ে থাকে, শাঁস মিষ্টি ও সুস্বাদু হয়। শরিফার শাঁসের প্রতি ১০০ গ্রামের মধ্যে ৭০.৫ থেকে ৭৩.৩ গ্রাম পানি, ১.৬ গ্রাম আমিষ, ২৩.৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৩.১ গ্রাম আঁশ, ১৭ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১.০- ৪.৩১ মিলিগ্রাম লৌহ, ৮৪ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম, ৪৭ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ০.৮ মিলিগ্রাম জিংক ও ০.৬৪ মিলিগ্রাম ম্যাঙ্গানিজ এবং ১০৪ কিলোক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও এতে অল্প পরিমাণে থায়ামিন, রাইবোফ্লাবিন, নায়াসিন, ভিটামিন সি পাওয়া যায়। শরিফা দেহে রক্ত ও মাংস বৃদ্ধি করে এবং বাত ও পিত্তনাশক রোগে উপকারে আসে। আয়ুর্বেদী চিকিৎসা শাস্ত্রে ওষুধ হিসেবে এর মূল্য অনেক।

ডালিমঃ

ডালিম মোটামুটি সবারই পছন্দের ফল। স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা ভেবে অনেকেই নিয়মিত ডালিম খান। ডালিমদানা খাওয়ার পাশাপাশি এর জুসও খেতে পারেন। কারণ, ডালিমের জুসও অনেক উপকারী। জেনে নিন এর উপকারিতা সম্পর্কে: রক্তে চিনির মাত্রা ঠিক রাখে: ডালিম রসে ফ্রুক্টোজ থাকলেও এটি অন্য ফলের রসের মতো রক্তে চিনির মাত্রা বাড়ায় না। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে নিয়মিত ডালিম রস খেলে রক্তে চিনির মাত্রা ঠিক থাকে।
ডালিম ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়: শরীর থেকে মুক্ত ক্ষতিকর উপাদান কমিয়ে ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এই মুক্ত উপাদান অন্যান্য রোগ সৃষ্টি করে। তাই রোগব্যাধি দূর করতে ডালিম রস উপকারী।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী গুণাগুণ আছে ডালিমে। শরীরের ক্ষতিকর ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়ার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ডালিমের রস।
ডালিমহজমশক্তি বাড়ায়: ডালিমে আছে ডায়াটারি ফাইবার বা আঁশ। দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় দুই ধরনের আঁশ থাকায় এটি হজমশক্তি বাড়ায় এবং অন্ত্রের নড়াচড়া নিয়মিত করে।
ডালিমহিমোগ্লোবিন বাড়ায়: আয়রন, ক্যালসিয়াম, শর্করা ও আঁশ (ফাইবার) সমৃদ্ধ ডালিম রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করে দেহে রক্ত চলাচল সচল রাখে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হচ্ছে, প্রতিদিন মাঝারি আকৃতির একটি ডালিম খাওয়ার চেষ্টা করুন। অথবা এক গ্লাস ডালিমের রস খান।

তরমুজঃ

গ্রীষ্মকালে যেসব ফল আমাদের স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে তার মধ্যে তরমুজ একটি উল্লেখযোগ্য ফল। এ ফলটি একটি মৌসুমী ফল। ফলটির বাহিরে সবুজ, ভেতরে লাল আর বীজগুলি কালো চ্যাপ্টা। তরমুজ বাংলাদেশের প্রায় সব জেলাতেই প্রচুর পরিমাণে জন্মে চৈত্র ও বৈশাখ মাসে খুব বেশী পাওয়া যায়। তরমুজের মন কাড়া রং আর রসাল মিষ্টি স্বাদের জন্য সবার কাছে এ ফলটি অত্যান্ত প্রিয়। গরমের সময় তরমুজ আহারে দেহমনে প্রশান্তি আনে। শুধু তাই নয় পুষ্টি গুনে ভরা তরমুজ দেহের পুষ্টি চাহিদা দ্রæত পূরণ করে নেয়। তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। যা আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলে। গরমে যারা বেশী ঘামেন তারা প্রচুর পরিমাণে তরমুজ খান। শরীর ঠান্ডা হবে শরীরে পানির অভাব পূরণ হবে এবং শরীর দুর্বল হবে না। * যাদের পায়খানা কম হয় বা শক্ত হয় তারা নিয়মিত তরমুজ খান বেশ উপকার পাবেন। * যারা ঘন ঘন সর্দি বা ঠান্ডায় আক্রান্ত হন তারা তরমুজ খান উপকার পাবেন। * যাদের টাইফয়েড জ্বর তারা তরমুজ বা তরমুজের রস বা তরমুজের শরবত খান জ্বরের তীব্রতা কমে আসবে। * যাদের প্র¯্রাবে জ্বালা পোড়া করে বা প্রস্রাব কম হয় তারা নিয়মিত তরমুজ খান উপকার পাবেন। * যারা রোগা রোগা শরীরে রক্ত কম, সামান্য কাজ করলে শরীর হাফিয়ে উঠে তারা নিয়মিত তরমুজ খান বেশ উপকার পাবেন। * যেসব মহিলার মাসিকের পর শরীর বেশী দুর্বল হয়ে যায় তারা সকাল বিকাল তরমুজ খান শরীরে রক্ত তৈরি হবে দুর্বলতা কমে আসবে। * যাদের মুখে মেসতা বা ছোপ ছোপ কালছে দাগ আছে তাদের লিবারে সমস্যায় এমন দেখা দেয়। তারা নিয়মিত তরমুজ খান সমস্যা কমে আসবে। * যারা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন তারা নিয়মিত তরমুজ খান রক্তের চাপ কমে আসবে। কারণ তরমুজের পটাশিয়াম উচ্চ রক্ত চাপ কমিয়ে দেয়। * যাদের হৃদপিন্ডে সমস্যা বা হৃদরোগ আছে বা যাদের বুক দড়ফড় করে তারা নিয়মিত তরমুজ খান উপকার পাবেন। তরমুজের সাইট্রলিন হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। * চামড়ার সৌন্দর্য এবং তারুণ্য ধরে রাখতে তরমুজ বেশ উপকারী।তাই সকলে মৌসুমী এ ফলটি খাওয়া উচিত।

ফুটি বা বাংগিঃ

ফুটি, বাঙ্গী বা বাঙ্গি বা কাঁকুড় এক রকমের শশা জাতীয় ফল । ছোট এবং লম্বাটে জাতকে চিনাল বলা হয়। ফুটি বেশ বড় আকারের হয়, কাঁচা ফল সবুজ, পাকলে হলুদ রঙের হয় এবং ফেটে যায়। ফুটির বৈজ্ঞানিক নাম Cucumis melo এবং ইংরেজি নাম melon। ফুটি বেশ বড় আকারের হয়, কাঁচা ফল সবুজ, পাকলে হলুদ রঙের হয় এবং ফেটে যায়। ... ফুটির বৈজ্ঞানিক নাম Cucumis melo এবং ইংরেজি নাম melon। বাঙ্গিতে প্রচুর পরিমাণ ভিটমিন-বি থাকে, যা মাথার চুল পড়া বন্ধ এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। গরমকালে বাঙ্গি অনেকগুলো রোগ থেকে সুরক্ষা দিয়ে থাকে। সূর্য়ের তাপে চামড়া পুড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। গরমের কারণে হওয়া হিটস্ট্রক, উচ্চ রক্তচাপ, পানিশূন্যতা থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করে ফলটি। বাঙ্গিতে প্রচুর পরিমাণে জলীয় অংশ এবং খাদ্য আঁশ থাকে। খাদ্য আঁশ হজম শক্তি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। অবসাদ বা বিষন্নতা কমাতে সহায়তা করে। এছাড়া মাংসপেশীতে হওয়া বিভিন্ন সমস্যা থেকেও সুরক্ষা দেয় বাঙ্গি। আমাদের দেশে কয়েক ধরনের বাঙ্গি পাওয়া যায়। সব বাঙ্গিতেই প্রায়ই একই ধরনের উপাদান রয়েছে। শিশুদেরও বাঙ্গির শরবত খাওয়ানো যেতে পারে। অনেক তৈরি খাবার বা বিদেশি ফলের চেয়ে দেশীয় সহজলভ্য ফল হিসেবে বাঙ্গি শরীরের জন্য অনেক উপকারি।
সূত্রঃ বরিশাল পিডিয়া

সম্পাদনাঃ নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
ব্রেকিং নিউজ২৪.কম :-& ফেসবুক-১ :-& ফেসবুক-২
[email protected]

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:২২

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: সফেদা আর বাংগি ছাড়া সব ফলই পছন্দ

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:১২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপু আমার কিন্তু সব ফলই পছন্দের !
কলা থেকে আম
রসালো কালো জাম!
সবই লাগে মিঠা
দারুন তালের পিঠা !

২| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:৩৭

চাঁদগাজী বলেছেন:



বরিশালে পতিত জমি আছে, যার মালিক নেই?

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:৩৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

নাহ, বরিশালে সুচাগ্র মেদিনিও
পতিত নাই। নদীর বা বিলের পানির

্উপরেও ধাপ করে ফসল ফলানো হয়।

৩| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:২৫

জুন বলেছেন: নুরু ভাই আপনি যাকে শরিফা বলছেন তাকে আমরা আতাফল বলি আর যারে আতা বলেছেন তাকে নোনা ফল বলি। পেয়ারাকে অনেক জায়গায় শরিফা বলে। আতা আমার অনেক প্রিয় ফলের একটি, নোনা না।
আমনেগো বরিশাল লঞ্চ ঘাটের হোমকে একটা চর আছে হের নাম কাউয়ার চর। মুই কি এয়া ঠিক কইছি :-*
+

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:৩৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আতা ফলটা একটু বাদামী রঙের
আর শরিফা সবুজ রঙের হঢ।
যাউগ্যা নাম দিয়ে কি হবে
মতিঝিলে কি মতি মিলে?
হয় হয় একছের হাচা কইছেন
ওডাই কাউয়ার চর !!

৪| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:৩০

হাবিব বলেছেন: বাংগি ফলটি আমার খুবই পছন্দের

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:৪০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আমার সবই পছন্দের
তবে শিয়ালের আরও
বেশী পছন্দের !! =p~

৫| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩৫

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমার সবচেয়ে প্রিয় ফল সফেদা। অনেক তথ্যবহুল পোস্ট।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১০:১৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপনাকে ধন্যবাদ।
আপনার প্রিয় ফলের
নাম জানলাম।

৬| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৩

কামাল১৮ বলেছেন: বরিশালের আঞ্চলিক ভাষার কি কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে?বিশেষ করে শহরের লোকদের মাঝে।

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:০৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আমার ধারনা আমুল পরির্তন হয়েছে।
শিক্ষিত জনেরা বইয়ের ভাষা ব্যবহার করে।
তবে আমনা আমাদের স্বকিয়তা হারাতে
দিতে চা্ইনা। বরিশালের আঞ্চলিক ভাষা
আমাদের গর্ব

৭| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ৯:৪৬

সোহানী বলেছেন: আমিতো সারা জীবন শুনে আসছি বরিশালের আমরা হলো বিখ্যাত। আপনি দেখি সেটাই দিলেন না। এইগুলাতো শুধু বরিশালই না সবখানেই পাওয়া যায়, তাই না!

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১০:১১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

সোহানী আপু এটা তৃতীয় পর্ব !!
আগের দুই পর্ব দেখুুন !! আশা করি
আপনার প্রত্যাশিত আমড়ার দেখা
পেয়ে যাবেন।

৮| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১:০২

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: শরিফা আর আতা কি একই ফল নয়!

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১০:১২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

চেহারা, রং ও স্বাদে ভিন্ন হলে'
এক্বই ফল কি করে বলি ভাইজান!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.