নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
কওমি অঙ্গনে আলোচিত 'জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া' মাদ্রাসাটি দখল মুক্ত হয়েছে। মাদ্রাসাটি গত কয়েক বছর ধরে একটা পক্ষের দখলে ছিলো। মাওলানা আজিজুল হকের চার ভাই যথা মামুনুল ও তার তিন ভাই-মাহফুজুল হক, মাহমুদুল হক ও মাহবুবুল হক এ মাদ্রাসার শিক্ষক। এছাড়া তাদের একাধিক ভাগিনা ও ভাতিজাসহ অন্তত ২০ আত্মীয় এখানে শিক্ষকতা করেছেন। গতকাল সোমবার (১৯ জুলাই) বিকাল সোয়া তিনটার দিকে পুলিশের সহযোগিতায় নতুন কমিটিকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয় ঢাকা জেলা প্রশাসন। ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্টেট মোঃ আব্দুল আউয়াল জানান, মাদ্রাসাটি এতোদিন অবৈধভাবে দখলদারদের কবলে ছিলো। আজকে বৈধভাবে নতুন কমিটিকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসাটি একটি 'মসজিদ ও মাদ্রাসা' ভিত্তিক ওয়াকফ সম্পত্তি। এই ওয়াকফ সম্পত্তির মাদ্রাসাটি গত কয়েক বছর ধরে একটা পক্ষের দখলে ছিলো। দখলদারদের সংগে বিভিন্ন মামলা মোকাদ্দমা চলমান ছিলো। (২০ বছর আগে রাতের আঁধারে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসাটি দখল করেন হেফাজতে ইসলামের নেতা মাওলানা মামুনুল হক ও তার সহযোগীরা। মাদ্রাসাটি দখল করে নেওয়ার জন্য জন্মলগ্ন থেকেই তৎপর ছিলেন তারা। মামুনুল হক একাধিকবার এটি দখল করতে ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়েছিলেন। অবশেষে অরাজকতা সৃষ্টির মাধ্যমে মাদ্রাসা দখল করেন তিনি)। দখলদারদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে মাদ্রাসা থেকে বিতাড়িতরা তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশের কাছে গেলেও পুলিশ তাদের সহযোগিতা করেনি। পুলিশের অবস্থান ছিল প্রকারান্তরে দখলদারদের পক্ষেই। পরে বিতাড়িতরা আদালতে মামলা করেন। এতদিন তা নিস্পত্তির অপেক্ষায় ছিলো।) এরই মধ্যে সর্বশেষ এই মাসে ওয়াকফ প্রশাসন এটি পরিচালনার জন্য নতুন কমিটি গঠন করেছে। আমাদেরকে জেলা প্রশাসন থেকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নতুন কমিটিকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে। আজকে তাদেরকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওয়াকফ প্রশাসনের চিঠি অনুযায়ী এতোদিন এই মাদ্রাসাটি অবৈধ দখলে ছিলো। তবে আমাদেরকে ওয়াকফ প্রশাসন যে ডকুমেন্ট দিয়েছিলো তাতে অবধৈ দখলদার হিসেবে কারো নাম উল্লেখ ছিলো না। কেন অবৈধ দখলদারদের অপসারণ করতে এতোদিন লাগলো এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি আমরা জানি না। এটি ওয়াকফ প্রশাসন ভালো বলতে পারবে। তবে নতুন কমিটিকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে আসা ওয়াকফ প্রশাসনের পরিদর্শক মোঃ মামুনুর রশিদ এসব বিষয়ে সাংবাদিকদের সংগে কোনো কথা বলেননি।
গোড়ার কথাঃ রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার রিয়েলএস্টেট ব্যবসায়ী দুই ভ্রাতা হাজি মোহাম্মদ আলী ও হাজি নূর হোসেনের দান করা সম্পত্তিতে অত্র ঐতিহাসিক সাত মসজিদ এলাকায় ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা। ১৯৯২ সালে মাদ্রাসার তৃতীয় প্রিন্সিপাল হিসাবে মাওলানা আজিজুল হক (মামুনুল হকের বাবা) দায়িত্ব গ্রহণের পর মাদ্রাসার বিভিন্ন কার্যক্রমে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। মাদ্রাসার ছাত্রদের তিনি দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করতে শুরু করেন। অনিয়মের কারণে ১৯৯৯ সালে প্রিন্সিপাল পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি। ছাত্র মজলিস করার কারণে মাওলানা আজিজুল হকের ছেলে মামুনুল হককে ওই প্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপরও বসে থাকেননি পিতা-পুত্র। গোপনে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের রাজনীতিতে সক্রিয় করেন। পাশাপাশি মাদ্রাসা কমিটির বিরুদ্ধে নানা ধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্য দিতে থাকেন। ১৯৯১ সালে মাওলানা আজিজুল হক সমমনা ইসলামি কয়েকটি দল নিয়ে ইসলামি ঐক্যজোট গঠন করেন। তিনি নিজে এর চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করতে থাকেন। ১৯৯৯ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটে যোগ দেন। ২০০০ সালের ৬ মে ও ১ জুলাই তিনি মাদ্রাসাটি দখলে নেওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা চালান। ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার গঠন করলে জোটের শরিক ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আজিজুল হক মাদ্রাসা দখলে চূড়ান্ত রূপরেখা প্রণয়ন করেন। এরই অংশ হিসাবে ২০০১ সালের ৩ নভেম্বর রাতে মাওলানা আজিজুল হকের চার ছেলে-হাফেজ মাহমুদুল হক, হাফেজ মাহবুবুল হক, মাওলানা মাহফুজুল হক ও মাওলানা মামুনুল হক এবং নাতি মাওলানা হাসান আহম্মেদসহ বেশকিছু লোক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মাদ্রাসায় প্রবেশ করে। ওই সময় আরও যারা ছিলেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- মাওলানা আবু তাহের, ইদ্রিস আলী প্রমুখ। তারা ব্যাপক অরাজকতা সৃষ্টি করে মাদ্রাসা দখল করে নেন। মাদ্রাসার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরই তারা মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল, শিক্ষক ও পরিচালনা পরিষদের সদস্যদের বিতাড়িত করেন। পরে নিজেদের লোকজন দিয়ে মাদ্রাসাটি পরিচালনা করতে থাকেন। মাদ্রাসা দখলের পর শায়খুল হাদীস হযরত মাওলানা আজিজুল হকের সহযোগী আব্দুল মালেককে আহ্বায়ক করে মাদ্রাসায় নয় সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।
(শায়খুল হাদীস হযরত মাওলানা আজিজুল হক)
গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী ঘোষিত কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা আব্দুল মালেকের ছেলে হাফেজ মাওলানা আবু তাহের ২০০৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা করেন। তিনি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার অন্যতম আসামি। মালেকের অপর ছেলে ইদ্রিস আলী এবং মেয়ের জামাই মনিরের বিরুদ্ধে হরকাতুল জিহাদের নেতা হিসাবে জঙ্গি তৎপরতা চালানোর অভিযোগ রয়েছে। তারা সবাই জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা দখলের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। অরাজকতার মাধ্যমে ২০০১ সালে মাদ্রাসাটি দখল করে নেওয়া হলেও দখলদারদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উপরন্তু দখলদারদের রাষ্ট্রীয়ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়েছে। অন্য দিকে যাদের মাদ্রাসা থেকে বিতাড়িত করা হয় তারা পুলিশসহ সরকারের দপ্তরের দ্বারস্থ হন। কিন্তু তারা আইনের আশ্রয় লাভের সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হন। তাই বাধ্য হয়ে বঞ্চিতরা আদালতের স্মরণাপন্ন হন। এদিকে আদালত ও ওয়াকফ প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন দফায় মামুনুল হকসহ অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করার নির্দেশনা দিলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। তাই মামলাটির দ্রুত নিষ্পত্তি করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের তাগিদ দেওয়া হয় গোয়েন্দা প্রতিবেদনে। এছাড়া মাদ্রাসাটি যেহেতু ওয়াকফকৃত সম্পত্তিতে প্রতিষ্ঠিত, তাই ওয়াকফ প্রশাসকের কার্যালয় এ বিষয়ে দ্রুত একটি বৈধ আদেশ দিতে পারেন বলেও গোয়েন্দারা পরামর্শ দিয়েছে। অবশেষে ২০ বছর বাদে গতকাল সোমবার (১৯ জুলাই) বিকাল সোয়া তিনটার দিকে পুলিশের সহযোগিতায় নতুন কমিটিকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয় ঢাকা জেলা প্রশাসন।
উল্লেখ্য্ হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে গত ১৮ এপ্রিল ২০২১ তারিখে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদরাসা থেকে দুপুর ১টার দিকে গ্রেফতার করা হয়। গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানাধীন রয়েল রিসোর্টে নারী সঙ্গীসহ স্থানীয় লোকজনের হাতে আটক হওয়ার পর ছাড়া পেয়ে রাতেই ঢাকায় চলে আসেন তিনি। ঢাকার মোহাম্মদপুরের কাদিরাবাদ হাউজিংয়ের নিজ বাসায় না গিয়ে তিনি পাশেই জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় যান মামুনুল হক। সেখানেই অবস্থান করছিলেন। ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় করা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানা ও ঢাকার মতিঝিল থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
সূত্রঃ দেশ রূপান্তর
সম্পাদনাঃ নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
ব্রেকিং নিউজ২৪.কম ফেসবুক-১ ফেসবুক-২
[email protected]
২০ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:২৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য সংযোজন করার
জন্য আপনাকে অসংখ্য ধনৗবাদ
কালবৈশাখী ভাই
২| ২০ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ৭:১১
কামাল১৮ বলেছেন: দখল মুক্ত না কি রাজাকার মুক্ত!
২০ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:২৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনর যা খুশি ভাববার
অধিকার আছে। ভাবুন
আপনার নিজের মতো
করে।
৩| ২০ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ৭:৩৩
সাসুম বলেছেন: বাংগু ল্যান্ড এর ইসলাম ধর্মের আধুনিক নবী, মানবিক বিয়ের প্রবর্তক, হযরতে আসমান, জ্ঞানের হালহকিলত, দিন দুনিয়া ও আখিরাতের বাংগু মুক্তির আশার প্রদীপ, মাদ্রাসার এতিম বাচ্চাদের কে রাতের আধারে সহবত শিক্ষা দেয়া আলেমে কায়েম, ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব হয়েও যাকে প্রেমের মহাপুরুষ বলা যায়, বাঙ্গু ল্যান্ড এর আধুনিক প্রেমিক ইউসুফ, শেখ হাসিনার জালেমি শাসন এর এক্মাত্র প্রতিবাদকারী, আওয়ামী লীগের আতংক, হেজাফতে ইস্লামের মলপাত্র, দেশের কুটি কুটি মানুষের নয়নের মনি, শত শত মাদ্রাসা ছাত্রের রুহানি আব্বু, দেশ অচল্কারী, হযরতে আল্লামা- মুফতি মামুনুনু হক দের এমন পতন দেখতে ভাল লাগেনা।
আল্লাহর খাস বান্দা দের এভাবে অপমানিত হতে দেখলে আল্লাহর আরস কেপে উঠার কথা।
২০ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:২৭
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনার দিলে যা চায় তেমন প্রার্থনা করুন
তার জন্য। আল্লাহ মহান তিনি আপনার
প্রার্থনা কবুল করলেও করতে পারেন।
৪| ২০ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১১:২১
সামিউল ইসলাম বাবু বলেছেন: সময় বড় কঠিন জিনিস, কখন কোথায় গিয়ে হাজির হয় কেও বলতে পারেনা। আবার সময়ের হিসাব অনেক কঠিন কাওকে ক্ষমা করেনা...
২০ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:৩০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সময় এবং স্রোত কারো জন্য্ই অপেক্ষা করেনা।
মহান আল্লাহ সূক্ষ্ম বিচারক। তিনি কারাে প্রতি
জুলুম করেন না।
৫| ২০ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১২:০৩
মাসউদুর রহমান রাজন বলেছেন: একটা ভালো পোস্ট। অন্তত এদের চরিত্রকে উন্মোচন করার জন্য অনেক ইনফরমেশন আছে। ধন্যবাদ।
২০ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:৩০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ আপনাকে রাজন ভাই
লেখাটি গুরুত্বসহকারে পাঠ করার
জন্য।
৬| ২০ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১০:৩৬
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
মাদ্রাসহটডভ দখল এখন যাদের কাছে গেছে তারা এটাকে ভাল করে চালালে্ই হয় ।
আবার ঔল্ড ওয়াইন ইন নিউ বটল না হয়ে যায়।
মাদ্রাশাটির নামকরনের শব্দমালার কি ব্যখ্যা আরবী ভাষা বিশেষজ্ঞগন দিবেন তা ঠিক জানিনা ।
তবে মাদ্রাসার নামটি যথা জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া এই শব্দ তিনটি অর্থ জানার জন্য
একটু কৌতুহলী হয়ে গুগলে সার্চ দিয়ে যা পাওয়া গেল তা নিন্ম রূপ:
জামিয়া- একটি স্ত্রীলিঙ্গবাচক উর্দু শব্দ যার অর্থ সংগ্রাহক বা লেখক ।
রাহমান- শব্দটি আরবী শব্দ যা গুনবাচক তবে শব্দটিকে অর্থ বোধক করতে হলে শব্দটির অগ্র পশ্চাতে
কিছু শব্দ বা হরফ যুক্ত করতে হয় যথা আর রাহমান বা আর রাহমানু ( কোরানে বিশেষ করে সুরা আর রাহমানে
গভীর অর্থবহ এই শব্দটির ব্যবহার দেখা যায় )। রাহমানিয়া নামে কোন একক শব্দের সন্ধান এখনো
পাইনি(এই ধরনেরমাদ্রাসার নামের সাথে যুক্ত থাকা ছাড়া ) । রাহমান শব্দটির অবশ্য বেশ কিছু সুন্দর বাংলা
অর্থ ও প্রতিশব্দ আছে তা হলো দয়ালু, করুণা, মহান ইত্যাদি । তবে রাহমান এর সাথে আকার ইকার লাগিয়ে
দিয়ে তৈরী রাহমানিয়া এখন কোনদেশী শব্দে রূপ নিল বা শব্দটির সঠিক অর্থ তা জানা যায়নি।
এখন বাকি রইল আরাবিয়া
অভিধান ঘেটে দেখা যায় আরাবিয়া শব্দটি লোহিত সাগর এবং পারস্য উপসাগরের মধ্যে একটি
উপদ্বীপ; যার মধ্যে সৌদি আরব, ইয়েমেন, ওমান, বাহরাইন, কাতার, কুয়েত এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের
বর্তমান দেশগুলি অন্তর্ভুক্ত । বাংলা মুলুকের কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে আরাবিয়া যুক্ত হওয়ার বিশেষ কোন
কারণ থাকলেও থাকতে পারে কেননা হয়তবা এমন থাকলে মানুষে মনে করবে ইসলামী কোন বিষয় হবে
কিংবা আরবীয় দেশগুলি হতে কিছু অনুদান মিললেও মিলতে পারে । কারণ দাতারা তাদের স্বার্থের কোন
গন্ধ না পেলে সাহায্যই বা করবে কেন !
যাহোক, কথা হলো ইসলামে স্বদেশপ্রেম ও দেশাত্মবোধকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ইসলামে দেশপ্রেমকে
ঈমানের অংশ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। দেশের স্বাধীনতা অর্জন ও বিজয় উদযাপন উপলক্ষে
আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করা এবং ক্ষমা প্রার্থনা করার নির্দেশও দিয়েছে ইসলাম। তাছাড়া বিশ্বনবি
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘হুব্বুল ওয়াত্বানে মিনাল ঈমান অর্থাৎ দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ।’
নিজ জন্মভূমির প্রতি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যে ভালোবাসা ছিল, তা অসাধারণ।
শুধু তাই নয়, ইসলামের নবি মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হৃদয়ে যেমন ছিল
স্বদেশ প্রেম তেমনি তাঁর সাহাবায়েকেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুম আজমাঈনের মাঝেও বিদ্যমান ছিল এদেশপ্রেম।
হিজরতের পর মদিনায় হজরত আবুবকর রাদিয়াল্লাহু আনহু ও হজরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু জ্বরে আক্রান্ত
হয়েছিলেন। অসুস্থ অবস্থায় তাদের মনে-প্রাণে প্রিয় স্বদেশ মক্কার স্মৃতিচিহ্ন জেগে উঠেছিল। তারা জন্মভূমি মক্কার
কথা স্মরণ করে আবেগে আপ্লুত হয়ে কবিতা আবৃত্তি করতে লাগলেন। এ অবস্থায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম সাহাবিদের মনের এ দুরবস্থা দেখে প্রাণভরে দোয়া করলেন-
‘হে আল্লাহ! আমরা মক্কাকে যেমন ভালোবাসি, তেমনি তার চেয়েও বেশি মদিনার ভালোবাসা আমাদের অন্তরে
দান করুন।’ (বুখারি)।
বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ দোয়া ও ভালোবাসার নির্দশন যুগে যগে সব দেশ
জাতিগোষ্ঠী ও বর্ণের মানুষের জন্য স্বদেশ প্রেমের অনন্য শিক্ষা ও অনুপ্রেরণা।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইসলাম প্রচারের কারণে নিজের মাতৃভূমি ত্যাগ করে হিজরত
করেছিলেন মদিনায়। দীর্ঘ ১০ বছর নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর সফলতার সঙ্গে নিজ জন্মভূমির
স্বাধীনতা অর্জন করেন। তিনি মক্কা থেকে মদীনার পথে হিজরতের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার আগে তার মুখ
ফেরালেন জন্মভূমি মক্কার দিকে। যাত্রাপথে তিনি বার বার ফিরে তাকাচ্ছিলেন মক্কার দিকে। জন্মভূমি ছেড়ে
যাওয়ার ঘটনায় তাঁর চোখ থেকেও ঝরছে অশ্রু।
মক্কার দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে কেঁদে কেঁদে আল্লাহর দরবারে দোয়া করেছিলেন আর বলেছিলেন -
‘হে মক্কা! তুমি আমার কাছে সমস্ত স্থান থেকে অধিক প্রিয়, আমি মক্কাকেই ভালোবাসি। আমার মন মানছে না।
ন্তু তোমার লোকেরা আমাকে এখানে থাকতে দিল না, সব কিছুর মালিক তুমি। মক্কার মানুষদের ঈমানের
আলোয় উজ্জ্বল কর। ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত কর।’
সাবাহায়ে কেরামগনও ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য যেমন আন্তরিক ছিলেন, তেমনি নিবেদিত প্রাণ ছিলেন দেশপ্রেম
ও দেশের স্বাধীনতা রক্ষায়।
সুতরাং মুসলিম উম্মাহসহ সব মানুষের উচিত, নিজ জন্মভূমি ও দেশকে ভালোবাসা। ব্যক্তিগত, পারিবারিক,
সামাজিক, এমনকি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়েও স্বদেশীয় চেতনাকে হৃদয়ে জাগ্রত রাখা। মানুষ হিসেবে
নিজের পরিচয়, সম্মান, আত্মমর্যাদাবোধ প্রতিষ্ঠা, স্বাধীনতা অর্জন ও বিজয় উদযাপনে দুনিয়ার ইতিহাসে
নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
তাই দেশের সকলের হৃদয়ে জাগ্রত থাকুক- ‘হুব্বুল ওয়াত্বানে মিনাল ঈমান অর্থাৎ দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ।’
আল্লাহ পাকের কাছে এ কামনা করি, নিজ দেশের প্রতি, নীজ দেশের ভাষার প্রতি , দেশের সম্পদের প্রতি যেন
আমাদের অনেক বেশি ভালোবাসা সৃষ্টি হয়। আল্লাহপাক আমাদেরকে সেই তাওফিক দান করুন। আমিন।
উপরে বলা কথাগুলি এই লিংক হতে সংকলিত : Click This Link
এ প্রেক্ষাপটেই বলছি দেশের অনেক মসজিদ , মাদ্রাসা , ইয়াতিমখানা প্রভৃতির নামের সাথে এমন কিছু
বিজাতীয় আরবী, উর্দু ও ইংরেজী শব্দ জুরে দেয়া হয় যে গুলির সঠিক অর্থ অভিধান খুঁজেও পাওয়া যায়না ।
অথচ যে পন্ডিত বা জ্ঞানিগুনীজন এগুলির নামকরন করেন ধারনা করি বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি তারাও ভাল
করে জানেন ও বুঝেন । একটু কষ্ট করলে সে সমস্ত বিজাতীয় শব্দগুলির সুন্দর ও আরো বেশী অর্থবহ বাংলা
প্রতিশব্দ তারা বের করতে পারবেন ও প্রতিস্ঠানগুলির সুন্দর বাংলায় নামকরণ করতে পারবেন যা দেশের
সকল জনতা সহজে বুঝতে পারবে । আর উনারাও নবী করীমের প্রদর্শিত পথে স্বদেশ প্রেমের প্রকা দেখাতে
পারবেন আর হাছিল করতে পারবেন দোজাহানের অশেষ ছোয়াব অবশ্য ইচ্ছাকৃতভাবে বিজাতীয় নাম দিয়ে
অন্য কোন ফায়দা হাছিলের খায়েস যদি থাকে তবে বলার আর কিছু নাই।
তাই মাদ্রাশাটিকে শুধু বেদখল মুক্ত করলেই সবশেষ নয়,এর নামটিকেও বিজাতীয় শব্দমালার দখল মুক্ত
করে এর বাঙ্গালী নামকরন করন করা প্রয়োজন । এছাড়া সারা দেশ জুরে আরবী/উর্দু/ইংরেজী তথা
দুর্বোধ্য বিজাতীয় শব্দ পরিহার করে দেশীয় বাংলা প্রতিশব্দে সেগুলির নামকরন করে
বিজাতীয় শব্দের দখল মুক্ত করা প্রয়োজন আছে বলে মনে করি ।
শুভেচ্ছা রইল
২২ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৮
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
মাদ্রাসার নামের উৎপত্তি নিয়ে বিশাল গবেষণা !!
থিসিস আকারে জমা দিলে আরো একটি ডিগ্রি অবধারিত !!
আপনাকে ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্য প্রদানের জন্য। আমরা ইচ্ছা
করলেই পারি বিদেশী শব্দ ব্যবহার না করে আমাদে বাংলা শব্দ
চয়নের মাধ্যমে সব কিছুর নামকরণ করতে। এজন্য চাই দেশপ্রেম ও
ভাষার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে জুলাই, ২০২১ ভোর ৪:০৯
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
মামুনুলের মত ৫ম সারির হেফাজত নেতাকেও এদেশের একদল খচ্চর নবীর পর্যায়ে নিয়ে গেছিল।
শুধুমাত্র বংগবন্ধুর বিরুদ্ধে সরাসরি জঘন্য বাজে কথা বলার পরও ভয়ে তাকে কেউ কিছু বলছে না, এরপরও দীর্ঘ সময় টিকে আছে!
ব্যাস।এটাই সবচেয়ে বড় চালান।
এই মামুনুলই বর্তমানে আমাদের প্রধান নেতা। মামুনুলের বিন্দুমাত্র অবমাননাও আমরা সহ্য করবো না।
পুলিশও তাকে ভয় পেত। একপুলিশ চাকরিও হারাইছিল। 'মামুনুল অবমাননা' কারিকে গ্রেফতার করতে দেরি করায়।
অতচ মামুনুল ছিল ছোটকাল থেকেই চিহ্নিত যৌন অপরাধী।
ছাত্রাবস্থায় শিশু বলৎকারের অভিযোগে গহরডাঙ্গা মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার হয়েছিল। পরে তার প্রভাবশালী বাবার অনুরোধে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ পূণরায় পড়ার সূযোগ দেয় মামুনুল হককে।
১৯৯৪ সালে মামুনুল হকের বিরদ্ধে ঢাকার মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসায় মিশকাত/ফজিলত জামাতে শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় একজন শিশু শিক্ষার্থীর সাথে সমকামিতার অভিযোগ ওঠে। পরবর্তীতে উক্ত মাদ্রাসার ছাত্রের সাথে সমকামিতার অভিযোগটি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রমাণিত হওয়ায় অত্র মাদ্রাসার নায়েবে মুহতামীম (ভাইস প্রিলিপাল) মুফতি মানসুরুল হক মাদ্রাসা থেকে তাকে বহিষ্কার করেন।
এরপর সিরাজগঞ্জে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক হবার পরেও তিনি এই সমকাম যৌনাচার থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন নি।
সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলাস্থ জামিয়া নিজামিয়া বেতুয়া মাদ্রাসায় শিক্ষক থাকা অবস্থায় নুরুল আলম নামক এক শিক্ষার্থীর সাথে সমকামিতার অভিযোগ ওঠে।
পরে এই অভিযোগের সত্যতাও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দ্বারা প্রমাণিত হলে অত্র মাদ্রাসার মুহতামীম (অধ্যক্ষ) মাওলানা মাহমুদুল আলম তার নিজ স্বাক্ষরেই আলোচিত মামুনুল হককে শিক্ষকতা পদ থেকে বর্খাস্ত করেছিলেন।
এরপর ঢাকায় ফিরে এসে মহম্মদপুরে নিজ এলাকায় মাদ্রাসা দখলে মনোযোগ দেয়।