নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
কান্না হল মানবজীবনের অতীব কার্যকরী এক অনুচ্চারিত ভাষা। মানুষের জীবনের এক অনিবার্য অনুষঙ্গ। জন্মের দিন থেকে কান্না আমাদের সঙ্গী হয়ে আছে। একজন বিশেষজ্ঞের মতে, শিশু অবস্থায় আমরা আমাদের কান্নার মাধ্যমে আমাদের কী দরকার, তা বোঝাতে চাই কারণ আমরা আমাদের আবেগগত ও শারীরিক প্রয়োজনীয়তা পূরণ করার জন্য কাঁদি। এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না যে কাঁদে না। কেউ হয়তো একটু বেশি কাঁদে, কেউ কম। কান্না হচ্ছে আবেগের বহিঃপ্রকাশ। অনেকে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। অনেকে পারেন না। অভিনয় শিল্পীরা অভিনয়ের স্বার্থে কাঁদেন। অর্থাৎ কান্নার অভিনয় করেন। আবার ভারতের রাজস্থানে ‘রুদালি’ নামে একটা সম্প্রদায়ের কথা শোনা যায় যারা নাকি ‘ভাড়ায়’ কান্না করেন! কারও মৃত্যুর পর মাতম করার জন্য, কাঁদার জন্য এই ‘রুদালি’ নারীদের ভাড়া পাওয়া যায়। কিছু কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করে যে, কান্না আমাদের আবেগের বহিঃপ্রকাশের এক কার্যকরী উপায় আর সেই কান্নাকে বার বার চেপে রাখলে, তা হয়তো আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে। আবার অন্যেরা যুক্তি দেখায়, কান্না যে শারীরিক অথবা মানসিকভাবে উপকার করে, তা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয়। তবুও সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, ৮৫ শতাংশ মহিলা ও ৭৩ শতাংশ পুরুষ কাঁদার পর নিজেকে হালকা মনে করে থাকে। নোয়িমি নামে একজন মহিলা বলেন, “কখনো কখনো আমি বুঝতে পারি যে, আমার কাঁদা উচিত। আর কাঁদার পর আমার নিজেকে হালকা লাগে আর আমি বিষয়গুলোকে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখতে পাই।” কান্না নিয়ে এত কথা বলার কারণ কা্ন্নায় আছে বিশেষ উপকারিতা। শোকে-দুঃখে সবার চোখ দিয়ে নিজের অজান্তেই জল বেরিয়ে আসে। কথায় আছে 'কান্নায় নাকি কষ্ট দূরীভূত হয়।' এটি শুধু জনমানুষের কথা নয়, বৈজ্ঞানিকভাবেও প্রমাণিত। বিভিন্ন গভেষণায় বলা হয়েছে, কাঁদার নাকি নানা রকম শারীরিক ও মানসিক উপকারিতা রয়েছে। কান্না প্রধানত তিন রকমের হয় যথাঃ
১। বেসাল টিয়ার বা প্রতিবর্তী চোখের জলঃ যেটা আপনার চোখকে পরিষ্কার রাখে এবং চোখের লুব্রিকেশনের মাত্রা ঠিক রাখে। এই ধরনের চোখের জল তখনই আসে, যখন আমাদের চোখে কোনো কিছু পড়ে। আবার অন্যান্য কারণেও যেমন, হাই তুললে ও হাসলে চোখে যে-জল আসে, সেটাও প্রতিবর্তী চোখের জল।
২। রিফ্লেক্স টিয়ারঃ অশ্রু গ্রন্থি ক্রমাগত এই ধরনের স্বচ্ছ তরল পদার্থ উৎপন্ন করে, যা চোখকে রক্ষা করে এবং চোখের ভেতরের অংশকে পিচ্ছিল রাখে। এ ছাড়া, এটা আমাদের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। যখন আমরা চোখের পাতা ফেলি, তখন এই তরল পদার্থ পুরো চোখে ছড়িয়ে পড়ে। পেঁয়াজ কাটার সময় বা চোখে কিছু একটা হঠাৎ ঢুকলে এই কান্না বের হয়।
৩। ইমোশনাল টিয়ারঃ এই ধরনের চোখের জল তখনই দেখা যায়, যখন আমরা প্রচণ্ড আবেগ অনুভব করার সময় কেঁদে ফেলি আর এটা একমাত্র মানুষের ক্ষেত্রেই দেখা যায়। প্রতিবর্তী চোখের জলের চেয়ে এতে ২৪ শতাংশ বেশি প্রোটিন থাকে।
গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু মানুষ স্বাভাবিক কারণেই অন্যদের তুলনায় বেশি কাঁদেন। কিন্তু অনেকেই কান্না দমাতে বা লুকাতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েন। এমনটি করা মোটেও উচিত নয়। মনোচিকিৎসকেরা বলছেন, কান্নায় লজ্জার কিছু নেই, কান্না এলে কাঁদতে হবে। কারণ কান্নার অর্থাৎ চোখের জলের রয়েছে বিশেষ কয়েকটি উপকারিতা। মানসিক চাপ দূর করা থেকে শুরু করে মানুষের মনোভাবে পরিবর্তন আনতেও কান্না ভূমিকা রাখে। নিচে কান্নার নানা উপকারি দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলোঃ
কান্না চোখ পরিষ্কার করেঃ
কাঁদতে কাঁদতে চোখ ঝাপসা হয়ে আসে! কিন্তু আসলে কান্না আমাদের ভালো করে দেখতে সহায়তা করে। চোখের পানি চোখের মণি আর চোখের পাতা ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে দিয়ে। চোখের ভেতরে এই পানির সঞ্চালন আমাদের চোখকে পানিশূন্যতা থেকেও বাঁচায়। ফলে চোখ পরিষ্কার রাখতে আর ভালো করে দেখতে সাহায্য করে কান্না।
কান্না ব্যাকটেরিয়া তাড়ায়ঃ
চোখের পানি অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়া ও অ্যান্টি-ভাইরাস হিসেবে কাজ করে থাকে। রাস্তা-ঘাটে, বাসে-ট্রামের ধুলো-বালি থেকে সারা দিনে চোখের ভেতর কত ময়লাই না জমা হয়। এগুলো থেকে নানা জীবাণু আমাদের চোখের বাসা বাঁধতে পারে। কিন্তু চোখের পানি এসব ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের জীবাণু ধ্বংসে খুবই কার্যকর। চোখের পানিতে আইসোজাইম বলে একটা উপাদান থাকে, যা মাত্র ৫-১০ মিনিটেই চোখের প্রায় ৯০-৯৫ ভাগ ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলতে পারে।
কান্না মানসিক চাপ দূর করেঃ অশ্রুর সঙ্গে প্রচুর পরিমাণ ম্যাঙ্গানিজ বেরিয়ে যায়। এর ফলে মানসিক চাপ কমে আসে। গবেষকরা বলছেন, যদি কান্না আসে, তবে সেটা হতে দেওয়া উচিত। এতে মানসিক চাপ কমে।
কান্না সম্পর্ক জোরদার করেঃ এক গবেষণায় দেখা গেছে, কান্নার ফলে সামাজিক সম্পর্কগুলো আরও জোরদার হয়। বিশেষ করে সান্ত্বনা এবং সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে যারা এগিয়ে আসে তাদের সঙ্গে। কেননা সব আবেগের মধ্যে কান্নাই সবচেয়ে বেশি সংক্রামক এবং শক্তিশালী।
মনোভাব পরিবর্তনঃ কান্নার পর মনে এবং শরীরে এক ধরনের প্রশান্তি চলে আসে। কারণ কাঁদলে স্ট্রেস হরমোন শরীর থেকে বেরিয়ে যায় এবং এন্ডরফিন বা যেটাকে ‘ফিল গুড’ হরমোন বলা হয় তা শরীরে নির্গত হয়। এ জন্যই বোধ হয় বলে, কাঁদলে মন হাল্কা হয়। গবেষকরা জানান, চোখের জলের সঙ্গে সঙ্গে শরীর থেকে ক্ষতিকারক পদার্থ বেরিয়ে যায়। এতে মনে এক ধরনের পরিচ্ছন্ন ভাব তৈরি হয়, যার ফলেই ভালো লাগা তৈরি হয়। তাহলে বোঝা যাচ্ছে যে , কান্না শুধু আমাদের অনুভূতি প্রকাশ বাদেও নিরবে আমাদের অনেক উপকার করে . তাই কান্না আসলে তা জোড় করে আটকে রাখা ঠিক নয় । কারণ এতে মানুষিক ভাবে আমরা দুর্বল হয়ে পড়ি , কাজ করার শক্তি হাড়িয়ে ফেলি। এছাড়াও উপরে উল্লেখিত সুবিধাগুলো থেকেও বঞ্চিত হই।
এটা ঠিক যে, চোখের জল সম্পর্কে রহস্য অধরাই থেকে গিয়েছে। তবে আমরা যা জানি তা হল, চোখের জল আমাদের আবেগকে প্রকাশ করার এক অন্যতম উপায়, যা মহান আল্লাহ আমাদেরকে দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলার ভয়ে কান্নাকাটি করা ব্যক্তি মর্যাদা অনেক উঁচু মানের। যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার ভয়ে কান্নাকাটি করে হাদিসের ঘোষণায় তার জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম হয়ে যায়। হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি; তিনি বলেছেন, ‘দুটি চোখকে দোজখের আগুন স্পর্শ করবে না; প্রথম হলো সেই চোখ যা আল্লাহর ভয়ে কাঁদে। আর দ্বিতীয় হলো সেই চোখ; যা আল্লাহর পথে (জিহাদে) পাহারায় রাতযাপন করে। (তিরমিজি)। অপর এক হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট শুনেছি, তিনি বলেছেন, ‘সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা সেদিন তাঁর (আরশের) ছায়া দান করবেন; যেদিন তার ছায়া ব্যতীত অন্য কোনো ছায়া থাকবে না। তন্মধ্যে ওই ব্যক্তি একজন, যে নির্জনে আল্লাহ তাআলাকে স্মরণ করে; আর তার চোখ থেকে পানি ঝরে।’ (বুখারি ও মুসলিম)। মানুষের চোখের পানির মর্যাদা আল্লাহ তাআলার নিকট অনেক বেশি। তাই মানুষের উচিত তাঁর ভয়ে বেশি বেশি কান্নাকাটি করা। আল্লাহ তাআলা দুনিয়াতে মানুষকে তাঁর সব বিধিবিধান মেনে চলার পাশাপাশি তাঁর ভয়ে বেশি বেশি কান্নাকাটির করার তাওফিক দান করুন। মানুষের মনে তাঁর ভয় ও মহব্বত সৃষ্টি করে দিন। আমিন।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
ব্রেকিং নিউজ২৪.কম ফেসবুক-১ ফেসবুক-২
[email protected]
০৬ ই জুন, ২০২১ দুপুর ১২:৪৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
গাজীসাব উল্টা পথ ছেড়ে এবার
সরল পথ ধরুন!
তা নাহলে বিকেল বেলা
অবস্থা হবে করুণ !!
২| ০৬ ই জুন, ২০২১ সকাল ১১:৩৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
সাঁকো পার হওয়া যাবে?
০৬ ই জুন, ২০২১ দুপুর ১২:৪৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
কথা গ্রাহ্য করলেন না!
বাকা রাস্তা ছাড়লেন না!!
সম্ভবত আজ আপনার সাঁকো
পার হওয়াটা কঠিনই হবে!
অপেক্ষায় থাকুন বিকেল পর্যন্ত!!
দেখুন সাঁকো পার হতে পারেন কিনা !!
৩| ০৬ ই জুন, ২০২১ সকাল ১১:৫৩
রবিন.হুড বলেছেন: চোখ যে মনের কথা বলে, চোখের সে ভাষা বুঝতে হলে বুঝার মতো মন থাকতে হবে যা আমাদের চাঁদগাজীর নেই।
ধন্যবাদ নুরুভাইকে তথ্যবহুল সুন্দর লেখার মাধ্যমে ব্লগার তথা অবুঝ বাঙ্গালদের বোঝানোর চেষ্টা করার জন্য।
০৬ ই জুন, ২০২১ দুপুর ১২:৪৮
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
গাজীসাবের চোখ যথাযথ কাজ করছে না।
তবে একসময় তা ছিলো তুখোড় !! শকুনের
চোঁখ যাকে বলে !! তখন খালি গোপীদের
দেখতেন শয়নে স্বপনে !!
বুঝাইয়া লাভ নাই এরা
ম্যাওপাও করবেই !!
৪| ০৬ ই জুন, ২০২১ দুপুর ২:১৪
রাজীব নুর বলেছেন: পেট ভরে গেলেও উপকার আছে। আবার না খেয়ে থাকলেও উপকার আছে।
০৬ ই জুন, ২০২১ বিকাল ৩:৪৮
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সব কিছুরই উপকারী ও ক্ষতিকারক দিক রয়েছে।
মানুুষ সৃষ্টির সেরা জীব; আবার এই মানুষই পশুর
চেয়েও নিকৃষ্ট হয়। কান্নার যেমন উপকার আছে
তেমনি হাসারও উপকার আছে। তবে লিমিট ক্রস
করা যাবেনা।
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই জুন, ২০২১ সকাল ১১:৩৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
ব্লগের হুজুরেরা এখন থেকে ব্লগ ভাসায়ে দেবেন; এমনিতেই ওয়াজের সময় জোর করে কাঁদেন।