নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
অল্প বিদ্যা ভয়ংকরী। ⇨A little learning is a dangerous thing.
পঞ্চাশের দশকের গ্রীষ্মের এক ঝিমধরা দুপুরে গ্রামের পাঠশালায় ছেলেরা সুর করে কবিতা মুখস্থ করছে, 'কপোল ভাসিয়া গেল নয়নের জলে', আর গুরুমহাশয় নিজ আসনে বসে অর্ধনিমীলিত নেত্রে দিবানিদ্রা উপভোগ করার প্রয়াস পাচ্ছেন। এমন সময় হঠাৎ শিক্ষার্থীদের কলরব থেমে গেল এবং একজন পড়ুয়াকে বলতে শোনা গেল, পণ্ডিতমশায়, কপোল অর্থ কী? শুনে শিক্ষক মহোদয়ের চটকা ভেঙে গেল। কারণ এমন বিদঘুটে শব্দ তিনি জীবনে শোনেননি। মনে মনে বললেন, মর জ্বালা, কপোল? সেটা আবার কী? তিনি প্রশ্নকর্তা ছাত্রটিকে বললেন, বইটি নিয়ে আয় তো মানকে, দেখি কী লিখেছে। তিনি দেখলেন, কপোলই লেখা আছে বটে। কিন্তু কপোল বলে কোনো শব্দ তিনি কস্মিনকালেও শুনেছেন বলে মনে পড়ল না। হঠাৎ কী মনে হওয়ায় তাঁর চোখেমুখে খুশির ঝিলিক খেলে গেল। তিনি বললেন, আরে, শব্দটা তো ভুল ছাপা হয়েছে রে। ওটা কপোল নয়, ওটা হবে কপাল। কপোল বলে আবার কোনো শব্দ আছে নাকি, এ্যাঁ? নে, পড়, কপাল ভাসিয়া গেল নয়নের জলে। ছেলেরা এবার ধুয়া ধরল : কপাল ভাসিয়া গেল নয়নের জলে, আর তাদের গুরুমহাশয় আবার দিবানিদ্রায় নিমগ্ন হওয়ার চেষ্টায় নিয়োজিত হলেন।
কিন্তু সেদিন যেন ওই দুষ্টুগুলো ষড়যন্ত্র করে এসেছিল, কিছুতেই তাঁকে ঘুমুতে দেবে না। ওই মানকে ছোঁড়াটি সবাইকে চুপ করতে বলে আবার শিক্ষক মহোদয়ের মনোযোগ আকর্ষণ করল, মহাশয়, নয়নের জল, মানে চোখের জল তো নিচের দিকে গড়িয়ে পড়ে, ওতে কপাল ভেসে যাবে কী করে, কপাল তো আছে চোখের ওপরে। এবার ভারি ফাঁপরে পড়লেন পণ্ডিতমহাশয়। তাই তো, নয়নের জল কপাল ভাসায় কী করে। এবার বইটি হাতে নিয়ে রীতিমত গবেষণা শুরু করলেন তিনি। তারপর হঠাৎ 'ইউরেকা' ধ্বনি তোলার ভঙ্গিতে বলে উঠলেন, ও রে, এখানে তো দেখছি একটা লাইনই বাদ পড়ে গেছে। ছাপাখানার ভূতগুলোর কী যে কাণ্ড। 'কপাল ভাসিয়া গেল' লাইনটার আগে যে লাইনটা বাদ পড়েছে তা হবে, 'দুই ঠ্যাং বাঁধিয়া দিল কদম্বেরই ডালে'। তাহলে কী দাঁড়াল? 'দুই ঠ্যাং বাঁধিয়া দিল কদম্বেরই ডালে/কপাল ভাসিয়া গেল নয়নের জলে'। এরপর মানকে বা অন্য ছেলেদের মনে আর কোনো সংশয় রইল না, তারা তারস্বরে চিৎকার দিয়ে মুখস্থ করতে লাগল 'দুই ঠ্যাং বাঁধিয়া দিল ...'। আর শিক্ষক মহোদয় সুখে দিবানিদ্রা যেতে লাগলেন।
ছাত্রটি কবিতার মানে বুঝলো, হয় ধমকের জন্য নয়তো মূর্খতার জন্য। মোটামুটি সেই ট্র্যাডিশন এখনো চলছ। আমরা আমাদের ভুলকে সহজে স্বীকার করতে চাইনা। গায়ের জোরেই ভুলকে প্রতিাষ্ঠত করতে চাই। যেমন এক ডিজিটাল ছাত্র পিছনের বেঞ্চে বসে সেলফোনেআঙ্গুলের স্পর্শ বুলিয়ে যাচ্ছে। এটি নজরে আসলো এক ডিজিটাল
শিক্ষকের। তিনি ছাত্রটিকে দাঁড় করিয়ে প্রশ্ন করলেন, তুমি বুঝেছ?
ছাত্রটির নির্বিকার জবাব, হ্যাঁ স্যার বুঝেছি!!
ডিজিটাল যুগের ছাত্রদের সায়েস্তা করতে ডিজিটাল শিক্ষক বললেন,
তুমি যে বুঝনাই, তা যে আামি বুঝেছি তাও তুমি বোঝ নাই!!
আমার অদ্যকার ছবির ফিরোজ পাটোয়ারী শহীদ দিবস কি তা যে বোঝেনাই
সেই কথাযে পাবলিক বুঝে ফেলেছে, তাও তিনি বুঝেন নাই। লজ্জা শুধু
ফিরোজ পাটোয়ারীর নয়, লজ্জা আমাদের, লজ্জা বাঙ্গালী জাতির যে জাতি
বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন।
ভনূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
ব্রেকিং নিউজ২৪.কম ফেসবুক-১ ফেসবুক-২
[email protected]
০৬ ই জুন, ২০২১ দুপুর ১২:০৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
গায়ের জোরেই না হয় বললাম
সব ঠিক আছে। হারবোনা
হাজারো মা বোনের ইজ্জতের
বিনিময়ে যদি শহীদ দিবস হতে
পারে তা হলে আমি কি দোষ করলাম!!
২| ০৬ ই জুন, ২০২১ রাত ১:২১
রাজীব নুর বলেছেন: হকিছু কিছু ভুল অত্যাধিক দুঃখজনক।
০৬ ই জুন, ২০২১ দুপুর ১২:০৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনার গুরুও মাঝে মাঝে মারাত্মক ভুল করে
ক্যাচাল বাধায় । ভুল স্বীকার করতেই চায়না।
৩| ০৬ ই জুন, ২০২১ সকাল ৮:০৮
শেরজা তপন বলেছেন: এমন মুর্খতা ভীষন কষ্টের!
*পন্ডিত মশায়ের ওই গল্পের রেফারেন্সটা দিলে ভাল হোত। মুল লেখক কৃতিত্ব পেত!
০৬ ই জুন, ২০২১ দুপুর ১২:১০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
পঞ্চাশ দশকের একটা ঘটনা মুখে মুখে
বহু বছর পাড়ি দিয়েছে। এর ইতিহাস
বের করতে হলে গবেষণা করতে হবে!
তাছাড়া মূূল গল্পের পরিবর্তনও হয়েছে
বেশ খানিকটা। এটা এখন সংগৃহীত
তালিকায় পড়ে আছে। ধন্যবাদ
আপনাকে তপন দাদা
৪| ০৬ ই জুন, ২০২১ সকাল ১০:৩০
নয়া পাঠক বলেছেন: পন্ডিত মশায়ের গল্পটা আমি সম্ভবত ক্লাস ৭ কি ৮ এ থাকতে শুনেছিলাম আমাদের এক শ্রেণী শিক্ষকের কাছে! অসাম ! নূরু ভাইয়ের বিশ্লেষণ! সত্যিই আমরা ভুল স্বীকার করে তা সংশোধন করব কি, উল্টো সেই ভুলকে সত্যে পরিণত করার জন্য যা যা করা প্রয়োজন তা করতেও কুণ্ঠাবোধ করি না।
ধন্য জনাব আপনার দৃষ্টি ও বিশ্লেষণ।
০৬ ই জুন, ২০২১ দুপুর ১২:৩৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
গল্পটা পঞ্চাশ দশকের তবে
তা আজও সমান গুরুত্ববহন করে।
আমরা কখনোই নিজের ভুলকে স্বীকার
করার সহস দেখাইনা, তবে ভুলকে প্রতিষ্ঠিত
করার জন্য কারো মাথা ভাঙতেও দ্বিধা করি না।
ধন্যবাদ নয়া পাঠক আপনার মন্তব্যের জন্য।
৫| ০৬ ই জুন, ২০২১ সকাল ১১:৪৮
বিদ্রোহী সিপাহী বলেছেন: আগের পণ্ডিত মশায়দের চেয়ে ছাত্ররা জানতে বেশি ইচ্ছুক ছিল আর এখন ছাত্রদের চেয়ে শিক্ষকরা জানতে বেশি ইচ্ছুক!
গল্পের মূল লেখকের নামটিও যুক্ত করে দিলে ভালই হয়। ধন্যবাদ আপনাকে।
০৬ ই জুন, ২০২১ দুপুর ১২:৩০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
কথা সত্য। এখনকার ডিজিটাল পোলাপান
জানার চেয়ে ভাব নেয় বেশী। সারাদিন মজে
থাকে নানারকম গ্যাজেট নিয়ে।
এটা পঞ্চাশ দশকের একটা গল্প,
যা সংগৃহীত তালিকায় আছে।
মূল লেখকের নাম আপনি যদি
জানতে পারেন তবে আমাকে
জ্ঞাতকরবেন। লেখকের নাম
সংযুক্ত করে দেবো।
৬| ০৬ ই জুন, ২০২১ সকাল ১১:৫২
বিদ্রোহী সিপাহী বলেছেন: দুঃখিত, ছবির বিষয়টি যদি এডিট না হয় তবে জাতির জাতীয় চেতনার প্রমাণ কি এটাই? তা নয় মোটেই। তবে এদের তেলবাজির জন্য দলের প্রধান হিসেবে শেখ হাসিনার একশনে যাওয়া উচিত।
০৬ ই জুন, ২০২১ দুপুর ১২:৪১
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ছবিটি এডিট করা হলে দুঃখ পাবার
চেয়ে খুশিই হতাম বেশী। কিন্তু ছবিটি
এডিট করা হয়নি। এটাই আমাদের দুঃখ।
নিশ্চিত হতে এখানে দেখুন
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই জুন, ২০২১ রাত ১২:৫০
জটিল ভাই বলেছেন:
গোয়ের জোরেই লাইনটি কি ঠিক রহিয়াছে জনাব নুরু ভাই?