নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজ বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবসঃ প্রতিরোধে চাই সচেতনতা

০৮ ই মে, ২০২১ রাত ৩:৫৪


৮ মে বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস আজ। রক্তে যদি হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম থাকে তাহলে থ্যালাসেমিয়া হয়। এর ফলে রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে। থ্যালাসেমিয়া ধারণকারী মানুষ সাধারণত রক্তে অক্সিজেন স্বল্পতা বা অ্যানিমিয়াতে ভুগে থাকেন। অ্যানিমিয়ার ফলে অবসাদগ্রস্ততা থেকে শুরু করে অঙ্গহানি পর্যন্ত ঘটতে পারে। শিশু জন্মের এক থেকে দুই বছরের মধ্যে থ্যালাসেমিয়া রোগ ধরা পড়ে। এই রোগের লক্ষণগুলো হলো ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া, দুর্বলতা, ঘন ঘন ইনফেকশন, শিশুর ওজন বৃদ্ধি না হওয়া, জন্ডিস, খিটখিটে মেজাজ ইত্যাদি। থ্যালাসেমিয়া রোগের কোনো সহজলভ্য স্থায়ী চিকিৎসা বা টিকা নেই। এ রোগ থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় হচ্ছে প্রতিরোধ। স্বামী-স্ত্রী দুজনই যদি থ্যালাসেমিয়া বাহক হন, শুধু তখনই সন্তানদের এ রোগ হতে পারে। কিন্তু স্বামী-স্ত্রী দুজনের একজন যদি বাহক হন এবং অন্যজন সুস্থ হন, তাহলে কখনো এ রোগ হবে না। তাই বিয়ের আগে থ্যালাসেমিয়া বাহক কি না, তা সবারই জেনে নেওয়া দরকার। হিমোগ্লোবিন ইলেকট্রোফোরেসিস নামে একটি রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি থ্যালাসেমিয়া বাহক কি না, তা নির্ণয় করা যায়।বিশ্বে প্রতি বছর এক লাখ শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। আফ্রিকা, ভূমধ্যসাগরীয় ও এশিয়ার দেশগুলির বাসিন্দারা সবচেয়ে বেশি থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হন। পুরুষ ও মহিলাদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সমান। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান মতে, বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৭ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ লোক থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক। থ্যালাসেমিয়া বাহকদের পরস্পরের মধ্যে বিয়ের মাধ্যমে প্রতিবছর নতুন করে সাত হাজার থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশু জন্ম নিচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আশঙ্কা করছে, আগামী ৫০ বছরে থ্যালাসেমিয়া পৃথিবীজুড়ে একটি বড় রকমের সমস্যা হয়ে দেখা দেবে। ভয়াবহ এই পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য এবং জনসচেনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা আয়োজনে দিবসটি পালিত হচ্ছে। তবে করোনা মহামারির প্রেক্ষাপটে অনলাইনে জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে। দিবসটির এবারেন প্রতিপাদ্য ‘সারা বিশ্বের থ্যালাসেমিয়া রোগীদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার অর্জনে বাধা দূরীকরণ’। দিবসটি পালন করেছে বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশন, সন্ধানী, মেডিসিন ক্লাব ও প্ল্যাটফর্ম।

থ্যালাসেমিয়া একটি ব্লাড ডিজঅর্ডার যার ফলে শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যায়। প্রধানত তিন ধরনের থ্যালাসেমিয়া হয়। আলফা থ্যালাসেমিয়া, বিটা থ্যালাসেমিয়া ও থ্যালাসেমিয়া মাইনর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশের প্রায় শতকরা ৩ ভাগ মানুষ বিটা থ্যালাসেমিয়ার বাহক এবং প্রায় ৫ ভাগ মানুষ হিমোগ্লোবিন-ই এর বাহক। ভৌগলিক অবস্থানের কারণে আমাদের দেশে অন্যান্য দেশের তুলনায় বিটা থ্যালাসেমিয়া এবং হিমোগ্লোবিন-ই ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হলে রক্তে লোহিত রক্ত কণিকা ও হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ অতিরিক্ত মাত্রায় কমে যায়। যার ফলে রক্তাল্পতার সমস্যা দেখা দেয়। এটি একটি জিনগত রোগ। যদি বাবা ও মায়ের দু’জেনই থ্যালাসেমিয়ার বাহক হন, তা হলে সন্তানের থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রক্তের রোগ। মানবকোষে রক্ত তৈরি করার জন্য দুটি জিন থাকে। কোনো ব্যক্তির রক্ত তৈরির একটি জিনে ত্রুটি থাকলে তাকে থ্যালাসেমিয়া বাহক বলে, আর দুটি জিনেই ত্রুটি থাকলে তাকে থ্যালাসেমিয়া রোগী বলে। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের শরীরে রক্তের লোহিতকণিকা পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈরি হয় না। ফলে এদের মারাত্মক রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। থ্যালাসেমিয়া রোগীরা প্রতি মাসে এক-দুই ব্যাগ রক্ত গ্রহণ করে বেঁচে থাকে। চিকিৎসা না করা হলে এই রোগী রক্তশূন্যতায় মারা যায়। এবার জেনে নেয়া যাক থ্যালাসেমিয়ার লক্ষণঃ
থ্যালাসেমিয়ার প্রধাণ লক্ষণ শারীরিক দুর্বলতা, ক্লান্তি অনুভব করা, হাড় ভঙ্গুর হয়ে যাওয়া, ত্বক ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া. স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়া, সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া, শরীরে আয়রন জমা হওয়া, হার্টের সমস্যা ইত্যাদি। থ্যালাসেমিয়ার ধরন ও প্রকোপের মাত্রার উপর নির্ভর করে এর চিকিৎসা। সাধারণত ব্লাড ট্রান্সফিউশন, বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট, মেডিকেশন ও সাপ্লিমেন্ট-আয়রন সিলেশন (বিশেষ ওষুধের সাহায্যে শরীর থেকে আয়রন বের করে নেওয়া), অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্লীহা ও গল ব্লাডার বাদ দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। বাংলাদেশ সরকার ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিসের পাশাপাশি থ্যালাসেমিয়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা অনুদান প্রদান শুরু করেছে।সরকার স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সাড়ে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। থ্যালাসেমিয়ার মতো মারণ রোগের প্রধান কারণ সচেতনতার অভাব। এটি রোধে ব্যাপক সচেতনতা দরকার। সেই সঙ্গেই প্রয়োজন একটু সতর্কতারও। সরকারি, ব্যক্তিগত, সামাজিক, গণমাধ্যম সব দিক থেকেই এই সচেতনতা তৈরিতে কাজ করতে হবে। ‘আজকের তরুণেরাই আগামী প্রজন্মের রূপকার ও অভিভাবক। এ দেশের তরুণ সমাজ যদি থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে সচেতন হয়, তাহলে আগামী প্রজন্মে আমরা এর সুফল দেখতে পাব।
সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
ব্রেকিং নিউজ২৪.কম :-& ফেসবুক-১ :-& ফেসবুক-২
[email protected]

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই মে, ২০২১ সকাল ৯:২৭

চাঁদগাজী বলেছেন:



তরুণ সমাজ কিভাবে ইহাকে প্রতিরোধ করবে?

০৮ ই মে, ২০২১ দুপুর ১২:১৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আমার ধারণা দিন দিন আপনর বুদ্ধি লোপ পাচ্ছে !!
এই বয়সে বিয়ে কি আপনি করবেন না তরুন রা ?
তরুনরা বিয়ের আগে রক্ত পরিক্ষা করে নিলে এ রোগ
প্রতিরোধ করা সম্ভব। কারণ
স্বামী-স্ত্রী দুজনই যদি থ্যালাসেমিয়া বাহক হন, শুধু তখনই
সন্তানদের এ রোগ হতে পারে। কিন্তু স্বামী-স্ত্রী দুজনের একজন য
দি বাহক হন এবং অন্যজন সুস্থ হন, তাহলে কখনো এ রোগ হবে না।
তাই বিয়ের আগে থ্যালাসেমিয়া বাহক কি না, তা সবারই জেনে নেওয়া
দরকার। হিমোগ্লোবিন ইলেকট্রোফোরেসিস নামে একটি রক্ত পরীক্ষার
মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি থ্যালাসেমিয়া বাহক কি না, তা নির্ণয় করা যায়।

বুঝা গেছে ?? ব্যাপাটা!!!

২| ০৯ ই মে, ২০২১ রাত ১:০৭

রাজীব নুর বলেছেন: রোগ শোক আমি খুব ভয় পাই।

১০ ই মে, ২০২১ রাত ১১:৪৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

শুধু আপনি নন
সবাই ভয় পায়

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.