নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
মিডওয়াইফ/ধাত্রী সেবা বিশ্বের অন্যতম মানবিক পেশা। তারা যুগ যুগ ধরে সন্তান প্রসবে সেবা প্রদান করে আসছেন। দক্ষ ও পেশাদার মিডওয়াইফ মা ও নবজাতকের মৃত্যুরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। একজন মিডওয়াইফ জানেন অন্তঃসত্ত্বা মা ও নবজাতকের অবস্থার অবনতি হলে কীভাবে তা শনাক্ত করবেন। বলা হয়, মিডওয়াইফ হলেন এমন একজন দক্ষ ও শিক্ষিত সেবিকা, যিনি মা ও শিশুকে নিবিড়ভাবে সেবা দেবেন। যদি কখনো কোনো ধরনের জটিলতা হয়, সেটা বুঝতে পারবেন তাহলে প্রাথমিক সেবা প্রদান করে সঠিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠিয়ে দেবেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, তিনি জানেন, কখন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে মা ও নবজাতককে পাঠাতে হবে। আন্তর্জাতিকভাবে ধাত্রীরা সন্তান প্রসবে মায়েদের যেভাবে যুগ-যুগ ধরে সেবা দিয়ে আসছেন সেই কাজের স্বীকৃতির জন্য ১৯৮০ এর দশক থেকে তারা দাবি করে আসছেন।মিডওয়াইফদের স্বীকৃতি ও সম্মান জানাতে একটি দিন থাকার ধারণাটি ১৯৮ দি নেদারল্যান্ডসে আন্তর্জাতিক মিডওয়াইভস কনফারডেশন সম্মেলন থেকে প্রকাশিত হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ১৯৯২ সালের ৫ মে তারিখটি আন্তর্জাতিক ধাত্রী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ১৯৯২ সাল থেকে প্রতি বছর ৫ মে এ দিবসটি বিশ্বের ৫০টি দেশে পালিত হয়ে আসছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্যঃ "Follow the data Invest in midwives" তথ্য উপাত্ত অনুসরণ করুনঃ মিডওয়াইফারি খাতে বিনিয়োগ করুন। নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতরের তথ্যমতে ২০১০ সালে জাতিসংঘের ৬৫তম সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মিডওয়াইফারি সেবা এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতি দেন। তার সেই প্রতিশ্রুতির আলোকে সারাদেশের গর্ভবতী মা ও নবজাতকের মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করতে ৪২১টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও এক হাজার ৩১২টি ইউনিয়ন সাব সেন্টারে তিন হাজার মিডওয়াইফ পদ সৃষ্টি করা হয়। ৩৪২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ২৯টি ইউনিয়ন সাব সেন্টারে এক হাজার ১৪৯ জন রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত প্রশিক্ষিত মিডওয়াইফ নিয়োগ দেওয়া হয়। পিএসসির আওতায় আরও এক হাজার ৮৫০ জন মিডওয়াইফ নিয়োগের কাজ প্রক্রিয়াধীন। ২০১৩ সালে দেশে প্রথম ২০টি নার্সিং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫২৫ আসনে তিন বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্স চালু করা হয়। বর্তমানে সেখানে সরকারি ৪১টি সরকারি নার্সিং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এক হাজার ৫০টি আসন বাড়ানো হয়েছে। সেই সঙ্গে বেসরকারি আরও ৪১টি প্রতিষ্ঠানে এক হাজার ৮০টি আসনে ভর্তি কার্যক্রম চলছে। সারাদেশে চার হাজার ৪০০ জন রেজিস্ট্রার মিডওয়াইফ রয়েছেন। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে একই কারিকুলামে একই পাঠদানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রণয়ন করা হয়েছে। উচ্চতর ডিগ্রির জন্য বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের উদ্যোগে বিএসসি ইন মিডওয়াইফারি কারিকুলাম অনুমোদিত হয়েছে। চলতি বছর থেকে কার্যক্রম শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে। একই সঙ্গে এমএসসি ইন মিডওয়াইফারি কারিকুলাম প্রণয়নের কাজ অব্যাহত রয়েছে। দক্ষ শিক্ষক তৈরিতেও দেয়া হচ্ছে জোর। এরইমধ্যে সুইডেনের ডালার্না বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১২০ জন মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। আরো ৩০ জন অধ্যয়নরত রয়েছেন। জীবন বাঁচানোর কাজে মিডওয়াইফদের ভূমিকা তুলে ধরতে আজ ৫ মে উদ্যাপিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মিডওয়াইফ দিবস। নিরাপদ মাতৃত্ব ও ঝুঁকিবিহীন প্রসব নিশ্চিত করতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে দিবসটি পালিত হচ্ছে। তবে এ বছর মহামারির প্রাদুর্ভাবের ফলে অনেকটা সীমিত পরিসরে দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে। মিডওয়াইফগণ মা ও নবজাতকের সেবায় নেতৃত্ব দানের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। গুণগত সেবা নিশ্চিত করেন। মা ও শিশু মৃত্যুহার কমাতে ভূমিকা রাখেন। বয়ঃসন্ধিকালের কিশোরীদের পরামর্শ দেন। এছাড়াও নারীর প্রতি সহিংসতা ও বাল্যবিয়ে রোধেও কাজ করছেন তারা। স্বাস্থ্যসেবা খাত সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, এই বছরের প্রতিপাদ্যের মাধ্যমে মিডওয়াইফরা এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে ভূমিকা রাখবেন।
সুন্দর আগামীর জন্য ধাত্রীরা নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিত করতে গর্ভকালীন, প্রসবকালীন এবং প্রসব পরবর্তী সময়ে ধাত্রীরা প্রসূতিদের সেবা দিয়ে থাকেন। গর্ভাবস্থার সময়ে নারীদের তাদের তত্ত্বাবধানে রেখে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সেবা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেন এবং স্বাস্থ্য ও শিশুর পরিচর্যা বিষয়ক উপদেশ দেন। এ ছাড়া মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নবজাতকের পরিচর্যা, নবজাতককে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোসহ প্রসব পরবর্তী পরিবার পরিকল্পনা সেবা দেওয়ার কাজ করে থাকেন ধাত্রীরা। এছাড়াও একজন মিডওয়াইফ মা এবং সন্তান উভয়ের স্বাস্থ্যের জন্য ব্যক্তিগতভাবে দায়বদ্ধ এবং গর্ভাবস্থা বা জন্মকালীন মেডিকেল জটিলতা দেখা দিলে গাইনি চিকিৎসক দেখানোর জন্য পরামর্শ দেন। একজন মিডওয়াইফ হাসপাতাল এবং কমিউনিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবা দিয়ে থাকেন। উদ্বেগের বিষয় শহরে মিডওয়াফারির গুরুত্ব অনুধাবন করলেও গ্রামে ধাত্রী পেশাটি এখনো অবহেলিত। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনো বেশির ভাগ গর্ভবতী মা বাড়িতে সন্তান প্রসব করেন। এঁরা অনিরাপদভাবে অদক্ষ সেবাদানকারীর সাহায্য নেন। বিডিএইচএসের ২০১১ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে এখনও ৫২ শতাংশ প্রসব বাড়িতেই হয়ে থাকে। প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার মাত্র ২৯ শতাংশ। বাড়িতে প্রসব করানো হয় দাইয়ের মাধ্যমে, যাদের বেশিরভাগেরই কোনো প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ নেই। সনাতন পদ্ধতিতে প্রসব করানোর কারণে প্রসূতি ও নবজাতক মৃত্যুর হার এখনও বেশি। এ ছাড়া প্রসবকালীন জটিলতা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে অদক্ষতার কারণে নারীদের ফিস্টুলাসহ দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতার হার বেড়ে যাচ্ছে; যা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করছে। আন্তর্জাতিক মিডওয়াইফ দিবসে দেশের ও বিশ্বের সকল মিডওয়াইফ/ধাত্রীদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। সফল হোক আন্তর্জাতিক মিডওয়াইফ/ধাত্রী দিবস।
সূত্রঃ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
ব্রেকিং নিউজ২৪.কম ফেসবুক-১ ফেসবুক-২
[email protected]
০৫ ই মে, ২০২১ বিকাল ৪:৩৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
অবশ্যই এই খাতে কর্ম সংস্থান বাড়ানে সম্ভব।
তবে তার জন্য চাই সঠিক কর্ম পরিকল্পনা ও
যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
২| ০৫ ই মে, ২০২১ বিকাল ৪:৫১
চাঁদগাজী বলেছেন:
চট্টগ্রামে নিজ ধাত্রীকে মা ডাকার প্রচলন ছিলো।
০৫ ই মে, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৭
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
শুধু চট্টগ্রাম নয় বাংলাদেশের
বহু অঞ্চলে ধাত্রীরে দাইমা বলে
ডাকা হয়।
গাজীসাব আপনার এই মন্তব্যটাকি
প্রসাঙ্গিক !!
৩| ০৫ ই মে, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩৮
কামাল১৮ বলেছেন: বাংলাদেশের গ্রামে গঞ্জে যে ধাত্রী আছে তাদের অভিজ্ঞতা লব্ধ জ্ঞান ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক কোন জ্ঞান না থাকা!য় অনেক সময় মা ও শিশু দুই জনই মারা যেত।বর্তমানে কমিউনিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র হওয়াতে মা ও শিশু মৃত্যু অনেক কমে গেছে।এমন একটি সুন্দর ব্যবস্থা বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে কেন বন্ধ করে দিয়েছিল আজো আমার মাথায় আসে না।
০৫ ই মে, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫৩
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
এটা আমাদের রাজনীতির সংস্কৃতি'
এক দল শুরু করে আর এক দল
তা বাতিল করে। কেউ ইন্টারনেটের
সাথে যুক্ত হয় অপর পক্ষ তা কেটে দেয়।
কেউ পদ্মা ব্রিজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে
বিপক্ষদল তা মুছে দেয় ! চিল্লাইয়া বলেন
ঠিক কিনা ?
৪| ০৬ ই মে, ২০২১ রাত ১:০৬
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে বিষয়টা নিয়ে লেখার জন্য।
৫| ০৬ ই মে, ২০২১ দুপুর ১:১৫
ইনদোজ বলেছেন: এখন মিডওয়াইফ বলতে গাইনী থুক্কু ডাইনি ডাক্তারদের বুঝায়, যাদের একমাত্র ধ্যান জ্ঞান হল কিভাবে পেট কেটে টাকা বের করা যায়। এইসব ডাইনীদের কবল থেকে চিকিৎসা খাতকে মুক্ত করা না গেলে একটা সুস্থ সবল জাতি গঠন আমাদের স্বপ্নেই সীমাবদ্ধ থাকবে।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই মে, ২০২১ বিকাল ৪:২৩
শোভন শামস বলেছেন: এ খাতে অনেক কর্ম সংস্থান সম্ভব।