নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
আজ ২০শে রমজান ১৪৪২ হিজরী ৩ মে ২০২১ ইং সোমবার। রমজানের দ্বিতীয় দশক অর্থাৎ মাগফেরাতের দশকের শেষ দিবস। মাহে রমজান অফুরন্ত রহমত, বরকত, কল্যাণ ও মঙ্গল পূর্ণ মাস। মাহে রমজানে যেসব আমল দ্বারা বান্দা আল্লাহর নৈকট্যলাভে ধন্য হয়, তার মধ্যে এর শেষ দশকের ইতেকাফ অন্যতম। রমজানের শেষ দশকের ইতেকাফ রাসুলুল্লাহর (সঃ) গুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নত আমল। ফরজ ইবাদত ব্যতিত আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য যেসব ইবাদত করা হয় তার মধ্যে ইতেকাফ একটি অন্যতম ইবাদত। ইতেকাফ একটি আরবি শব্দ। এটি আরিব ‘আকফ’ ধাতু থেকে উদ্গত। আকফ শব্দের অর্থ হচ্ছে অবস্থান করা। ইতেকাফ মানে মসজিদে নিজেকে আটকে রাখা। যার ইংরেজী প্রতিশব্দ হল - Abide, Bide, Impound, Coted, Shut ইত্যাদি। শরীয়তের পরিভাষায় ইতিকাফ বলা হয়-নিয়ত সহ পুরুষের জন্য এমন মসজিদে অবস্থান করা যেখানে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জামায়াত হয়। এ বছর পবিত্র রমজানুল মোবারকের দ্বিতীয় দশক মাগফিরাতের শেষ দিন সোমবার। এদিন থেকে ইতেকাফ শুরু। ২০ রমজানের সূর্য ডোবার আগ মুহূর্ত থেকে শাওয়াল মাসের চাঁদ ওঠা পর্যন্ত মসজিদে ইতিকাফ করতে হয়। বিশেষ নিয়্যতে বিশেষ অবস্থায় আল্লাহ তা'আলার আনুগত্যের উদ্দেশ্যে মসজিদে অবস্থান করাকে ইতিকাফ বলে। এতেকাফের জন্য ২০ রমজান সূর্যাস্তের পূর্বেই মসজিদে প্রবেশ করতে হবে। ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখার পর মসজিদ থেকে বের হবে। মহল্লার জামে মসজিদে ইতেকাফ করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা কিফায়া। সুন্নতে মুয়াক্কাদা কিফায়ার মানে হলো, সবার পক্ষ থেকে কমপক্ষে একজন হলেও আদায় করতে হবে। অন্যথায় পুরো এলাকাবাসী গুনাহগার হবে। রমজানের রহমত, বরকত ও নাজাত লাভের অশায় মাহে রমজানের মর্যাদাকে কাজে লাগিয়ে হাজার বছরেরর শ্রেষ্ঠ রজনী পবিত্র লাইলাতুল কদর প্রাপ্তির সুনিশ্চিত প্রত্যাশায় সর্বোপরি মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য রমজানের শেষ দশকের ইতিকাফ অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত রমজানের শেষ দশকের ইতেকাফ সুন্নতে মোয়াক্কাদা আলাল কেফায়া। অর্থাৎ মহল্লার জামে মসজিদে কোনো রোজাদার মুসলিম ইতেকাফ করলে সবার তরফ থেকে এ ধরনের সুন্নত আদায় হবে। কুরআন কারীমে এরশ্দা হয়েছে-আল্লাহর ‘ওয়ানতুম আকিফুনা ফিল মাসজিদ’- আর তোমরা সালাতের নির্দিষ্ট স্থানগুলোয় অবস্থানরত ’। (সূরা বাকারা: ১৮৭)। মহানবী (সঃ) স্বয়ং ইতিকাফ করেছেন এবং ইতিকাফ করার জন্য সাহাবাদেরকে উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘মসজিদ মুত্তাকিদের ঘর। যে ব্যক্তি ইবাদতের উদ্দেশ্যে মসজিদে অবস্থান করবে আল্লাহ তাঁর প্রতি শান্তি ও রহমত নাজিল করবেন এবং পুলসিরাত পার-পূর্বক বেহেশতেপৌঁছানোর জিম্মাদার হবেন। রমজান মাসের শেষ দশ দিন ইতেকাফ করলে সাতাশ রমজান যদি শবে কদর না-ও হয়, তবু এ দশ দিনের মধ্যে নির্দিষ্ট শবে কদরের ইবাদত ইতেকাফে আদায় হয়ে যায় এবং এর ফলে কদরের রাতের ফজিলতও লাভ করা যায়। হজরত ইবনে ওমর (রা.) বর্ণিত হজরত মুহাম্মদ (সঃ) রমজানের শেষ দশ দিন ইতেকাফ করতেন।-বুখারি ও মুসলিম। হজরত আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সঃ) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসের শেষ দশ দিন ইতেকাফ করবে সে দুটি ওমরাহ ও দুটি হজ আদায় করার সওয়াব পাবে’। (বুখারি শরিফ) হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলে পাক (সঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে ইতেকাফ করবে, আল্লাহ তায়ালা তার এবং জাহান্নামের আগুনের মধ্যে তিনটি পরিখার দূরত্ব সৃষ্টি করবেন, প্রত্যেক পরিখার প্রশস্ততা দুই দিগন্তের চেয়েও বেশি। (বায়হাকি) হজরত আয়েশা (রা.) আরো বলেন, ‘নবী করিম (সা.) রমজানের শেষ দশ দিন ইতেকাফ পালন করতেন। তাঁর ওফাতের আগ পর্যন্ত তিনি ইতেকাফ পালন করে গেছেন। তারপর তাঁর পত্নীরাও তা পালন করেছেন’। ইতেকাফের ফযিলত সম্পর্কে মহানবী মুহাম্মদ (সঃ) বলেন, যে ব্যক্তি রমজানের শেষ দশদিন ইতেকাফ করবে, সে ব্যক্তি দু’টি হজ ও দু’টি ওমরার সমপরিমাণ সাওয়াব পাবে। হযরত আয়েশা (রা) বলেন, রাসূল (সঃ) দুনিয়াতে যতদিন জীবিত ছিলেন, তিনি ততদিন রমজানের শেষ দশকে মসজিদে ইতেকাফ করেছেন। জীবিত থাকাকালীন কোনো রমজানে তিনি ইতেকাফ বাদ দেননি। যে বছর নবীজী জগত্ থেকে চলে গেলেন, সে বছর বিশদিন ইতেকাফ করেছেন। (বুখারী ও মুসলিম)
হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ইতেকাফকারী নিজেকে পাপ থেকে মুক্ত রাখে এবং তাঁর জন্য পুণ্যসমূহ জারি রাখা হয়।-(মিশকাত) আলী বিন হোসাইন রা: নিজ পিতা থেকে বর্ণনা করেন, মহানবী সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানে ১০ দিন ইতিকাফ করে, তা দুই হজ ও দুই ওমরার সমান’ (বায়হাকি)। ইবনে আব্বাস রা: থেকে বর্ণিত, মহানবী সা: বলেছেন, ‘ইতিকাফকারী গোনাহ থেকে বিরত থাকে। তাকে সব নেক কাজের কর্মী বিবেচনা করে বহু সওয়াব দেয়া হবে’ (ইবনে মাজাহ)। রমজানের শেষ দশ দিনের এই ইতেকাফ সুন্নতে মুয়াক্কাদায়ে কেফায়া। অর্থাৎ কোনো বস্তি বা মহল্লার একজনকে হলেও এই ইতেকাফ অবশ্যই করতে হবে। যদি অন্তত কোনো এক ব্যক্তি এই ইতেকাফ করে নেন, তাহলে সারা মহল্লবাসীর প থেকে ইতেকাফ আদায় হবে; কিন্তু মহল্লাবাসীর মধ্যে থেকে কেউ যদি ইতেকাফ আদায় না করেন, তবে এই দায়িত্বের প্রতি অবহেলার কারণে মহল্লাবাসী গোনাহগার হবেন। এ স্মরণ রাখতে হবে, উজরত অর্থাৎ বিনিময় বা পারিশ্রমিক দিয়ে কাউকে ইতেকাফে বসানো জায়েজ নয়। কেননা ইবাদতের উজরত দেওয়া ও নেওয়া উভয়ই শরিয়তের দৃষ্টিতে নাজায়েজ (ফাতওয়ায়ে শামী)। নারীরা ঘরের যে স্থান ইতেকাফের জন্য নির্দিষ্ট করবেন,সে স্থানটি ইতেকাফকালীন তার জন্য মসজিদের হুকুমের অন্তর্ভুক্ত হবে। ইসলামী শরিয়তের কোনো প্রয়োজন ছাড়া সেখান থেকে সরে যাওয়া জায়েজ হবে না। সে স্থানটির নির্দিষ্ট সীমার বাইরে, ঘরের অন্য অংশেও যেতে পারবেন না। নির্দিষ্ট সীমার বাইরে চলে গেলে ইতেকাফ ভঙ্গ হয়ে যাবে। ইতেকাফে নবীয়ে করিম (সা.)-এর বিশেষ আকর্ষণ ছিল। তিনি প্রতি বছর রমজান মাসের ইতেকাফের প্রতি অত্যন্ত গুরুত্বারোপ করতেন। তিনি কখনো পুরো রমজান মাস ইতেকাফ করেছেন। দশ দিনের ইতেকাফ তো তিনি প্রতি বছর অবশ্যই করতেন। একবার বিশেষ কারণে রমজান শরিফে ইতেকাফ করতে পারেননি, তাই শাওয়াল মাসে দশ দিন রোজা রেখে তিনি ইতেকাফ করেছেন (বুখারি শরিফ)। ইতিকাফ অবস্থায় স্ত্রীদের সাথে কি আচরণ হবে তা বলতে গিয়ে আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ ‘‘আর তোমরা মসজিদে ইতিকাফকালে স্ত্রীদের সাথে মেলামেশা করো না।’’ (সূরা বাকারাঃ ১৮৭)। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অসংখ্য হাদিস ইতিকাফ সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে, তার মধ্য হতে ফজিলত সম্পর্কিত কিছু হাদীস নিম্নে উল্লেখ করা হল। ইতেকাফকালীন অবস্থায় বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত করার পাশাপাশি নফল নামাজ, তাসবিহ-তাহলিল, জিকির-আজকার, দোয়া-দরূদ, দান-সদকা ইত্যাদি নফল আমলের প্রতি মনোযোগী হওয়া উচিত। ইতেকাফকারীদের জন্যএগুলো করণীয় কারো সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদ ও অনর্থক গল্প-গুজব বা বেহুদা কথাবার্তা বলে সময় নষ্ট করা উচিত নয়। দুনিয়াবি কোনো লেনদেন না করার পাশপাশি বিনা প্রয়াজনে মসজিদ থেকে বের হওয়া অনুচিত। ইতেকাফকারীদের জন্য এগুলো বর্জনীয়। ইতেকাফের শর্তগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
১. ইতেকাফের নিয়ত করা।
২. জামাত অনুষ্ঠিত হয় এমন মসজিদে এতেকাফ হতে হবে।
৩. ইতেকাফকারী রোজাদার হবে।
৪. জ্ঞানসম্পন্ন মুসলমান স্ত্রী-পুরুষের জানাবাত ও মহিলারা হায়েজ-নেফাস হতে পাক হওয়া।
৫. পুরুষ লোক জামে মসজিদে ইতেকাফ করবে।
৬. সর্বদা হদসে আকবর থেকে পাক-পবিত্র থাকতে হবে।
ইতেকাফ ৩ প্রকার। সুন্নাত ইতিকাফঃ রমজানের শেষ দশকের ইতিকাফ। অর্থাৎ ২০ রমজানের সূর্য ডোবার আগ মুহূর্ত থেকে শাওয়াল মাসের চাঁদ ওঠা পর্যন্ত মসজিদে ইতিকাফ করা। এ ধরনের ইতিকাফকে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা কিফায়া বলা হয়। গ্রাম বা মহল্লাবাসীর পক্ষে কোনো এক বা একাধিক ব্যক্তি এই ইতিকাফ করলে সবার পক্ষ থেকে তা আদায় হয়ে যাবে।
ওয়াজিব ইতিকাফঃ নজর বা মানতের ইতিকাফ ওয়াজিব। যেমন কেউ বলল যে, আমার অমুক কাজ সমাধা হলে আমি এত দিন ইতিকাফ করব অথবা কোনো কাজের শর্ত উল্লেখ না করেই বলল, আমি এত দিন অবশ্যই ইতিকাফ করব। যত দিন শর্ত করা হবে তত দিন ইতিকাফ করা ওয়াজিব। ওয়াজিব ইতিকাফের জন্য রোজা রাখা শর্ত। সুন্নাত ইতিকাফ ভঙ্গ করলে তা পালন করা ওয়াজিব হয়ে যায়।
নফল ইতিকাফঃ সাধারণভাবে যেকোনো সময় ইতিকাফ করা নফল। এর কোনো দিন কিংবা সময়ের পরিমাপ নেই। অল্প সময়ের জন্যও ইতিকাফ করা যেতে পারে। এ জন্য মসজিদে প্রবেশের আগে ইতিকাফের নিয়ত করে প্রবেশ করা ভালো। ইতিকাফকারী তার প্রয়োজনীয় জিনিস-পত্র সঙ্গে নেবেন যাতে নিজের প্রয়োজনে তাকে বার বার মসজিদের বাইরে যেতে না হয়। যেমনঃ এলার্ম ক্লক, বালিশ, চাদর, বিছানোর কম্বল, তেল, সাবান, শ্যম্পু, লোশন, টুথ ব্রাশ-পেস্ট, মিসওয়াক, ওষুধ-পত্র, টাউয়াল, দশদিন ব্যবহারের কাপড়-চোপড়, পড়াশোনার জন্য কুরআনের অর্থসহ তাফসীর এবং অন্যান্য ইসলামী বই-পত্র। এছাড়া কোন জিনিস প্রয়োজন হলে পবিরারের লোকজন তা দিয়ে যেতে পারবে। খাবারের ব্যবস্থা সাধারণত মসজিদ ম্যানেজমেন্টই করে থাকে।
ইতিকাফকারীর জন্য যা অনুমোদিতঃ
ইতিকাফকারীর জন্য মসজিদে পানাহার ও ঘুমানোর অনুমতি আছে। এ ব্যাপারে সকল ইমামদের ঐকমত্য রয়েছে। তবে এ ব্যাপারে সতর্ক হওয়া উচিত; কেননা আল্লাহর প্রতি একাগ্রচিত্ত এবং একনিষ্ঠভাবে মনোনিবেশের জন্য কম খাওয়া কম ঘুমানো সহায়ক বলে বিবেচিত। এছাড়াও ইহিকফকারীর জন্য গোসল করা, চুল আঁচড়ানো, তেল ও সুগন্ধি ব্যবহার, ভাল পোশাক পরা, এসবের অনুমতি আছে। ইতিকাফকারীর পরিবার তার সাথে সাক্ষাৎ করতে পারবে, কথা বলতে পারবে, কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্ত্রীগণ ইতিকাফকালীন তার সাথে সাক্ষাৎ করতেন। কিন্তু সাক্ষাৎ দীর্ঘ না হওয়া বাঞ্ছনীয়।
ইতিকাফকারী যা থেকে বিরত থাকবেনঃ
ওজর ছাড়া ইতিকাফকারী এমন কোন কাজ করবে না যা ইতিকাফকে ভঙ্গ করে দেয়। ঐ সকল কাজ যা ইতিকাফের উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করে, যেমন বেশি কথা বলা, বেশি মেলামেশা করা, অধিক ঘুমানো, ইবাদতের সময়কে কাজে না লাগানো, টেলিফোনে গল্পগুজব করা, বিনা কারণে ইন্টারনেট ব্রাউজ করা, চ্যাটিং করা, মসজিদে অবস্থানরত অন্যান্যদের সাথে হাসি-ঠাট্টা করা, ঝগড়া- ঝাটি করা, অন্যের গীবত করা ইত্যাদি।
হযরত আয়িশা রাদিআল্লাহু আনহা কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন রমাদানের শেষ দশ রাত আসত, তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোমরে কাপড় বেঁধে নামতেন (অর্থাৎ বেশি বেশি ইবাদতের প্রস্তুতি নিতেন) এবং রাত জেগে থাকতেন ও পরিবার-পরিজনকে জাগিয়ে দিতেন। (সহীহ বুখারী) ইতিকাফ একটি মহান ইবাদত, মদিনায় অবস্থানকালীন সময়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি বছরই ইতিকাফ পালন করেছেন। দাওয়াত, ট্রেনিং, শিক্ষা এবং জিহাদে ব্যস্ত থাকা সত্ত্বেও রমজানে তিনি ইতিকাফ ছাড়েননি। ইতিকাফ ঈমানী ট্রেনিং এর একটি ইনস্টিটিউশন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হিদায়েতি আলোর একটি প্রতীক। ইতিকাফরত অবস্থায় বান্দা নিজেকে আল্লাহর ইবাদতের জন্য দুনিয়ার অন্যান্য সকল বিষয় থেকে আলাদা করে নেয়। ঐকান্তিকভাবে মশগুল হয়ে পড়ে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের নিরন্তর সাধনায়। ইতিকাফ ঈমান বৃদ্ধির একটি মূখ্য সুযোগ। সকলের উচিত এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজের ঈমানী চেতনাকে প্রাণিত করে তোলা ও উন্নততর পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করা। ইতেকাফের উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহ তাআলার সামনে অন্তরের একাগ্রতা নিবেদন করা। তাই ঐ সকল কাজ যা ইতেকাফের উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করে যেমন, বেশি কথা বলা, মানুষের সাথে বেশি মেলামেশা করা, অধিক ঘুমানো এগুলো নিষিদ্ধ। ইতেকাফকারী অন্যকে সচরাচর সালাম দিবেন না, তবে কেউ তাকে সালাম দিলে তিনি তার উত্তর দিতে পারবেন। ইতেকাফকারী ইতেকাফরত অবস্থায় ইল্ম ও কুরআন শিক্ষা দিতে পারবেন। শরীয়তের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও দিতে পারবেন। তবে এগুলো যেন এতো বেশি না হয় যে এতে ইতেকাফের উদ্দেশ্য ছুটে যায়। উত্তম হল নফল ইবাদত বেশী বেশী করা। যেমন সলাত আদায়, কুরআন তিলাওয়াত, যিকির-আযকার, তাসবীহ-তাহলীল তথা সুবহানাল্লাহ, আল-হামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার, তাওবাহ-ইস্তেগফার, দু‘আ, দুরূদ ইত্যাদি ইবাদতে সর্বাধিক সময় মশগুল থাকা। তাছাড়া শরীয়া বিষয়ক ইলম চর্চা করা।
আসুন আমরা ইসলামের বিধানমতো খোদার প্রেমে মগ্ন থাকে যথাযথভাবে ইতেকাফ পালন করে আল্লাহর নৈকট্য লাভের সিঁড়ির অনুসন্ধান করি।
সূত্রঃপূনঃপ্রকাশ
মাহে রমজানের আগের পর্বঃ
১। খোশ আমদেদ মাহে রমজা্ন- ১ম পর্ব
২। খোশ আমদেদ মাহে রমজান- দ্বিতীয় পর্বঃ
৩। খোশ আমদেদ মাহে রমজান- তৃতীয় পর্বঃ
৪। খোশ আমদেদ মাহে রমজান- ৪র্থ পর্বঃ
৫। খোশ আমদেদ মাহে রমজান- ৫ম পর্বঃ
৬। খোশ আমদেদ মাহে রমজান- ৬ষ্ঠ পর্বঃ
৭। খোশ আমদেদ মাহে রমজান-৭ম পর্বঃ
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
ব্রেকিং নিউজ২৪.কম ফেসবুক-১ ফেসবুক-২
[email protected]
০৩ রা মে, ২০২১ দুপুর ১২:০৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকেও ধন্যবাদ জটিল ভাই
শুভেচ্ছা জানবেন।
২| ০৩ রা মে, ২০২১ বিকাল ৪:০০
চাঁদগাজী বলেছেন:
দেশের ১৮ কোটী মানুষের কল্যাণের জন্য শেখ হাসিনার উচিত ইতিকাফে যোগদান করা; হুজুরেরা উনাকে আহবান জানায়েছেন?
০৪ ঠা মে, ২০২১ রাত ১২:৩১
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ইতিকাফে সবা্ইকে বসতে হয়না। মহল্লার সবার পক্ষ থেকে একজন
ইতেকাফে বসলেই চলে। বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত রমজানের শেষ
দশকের ইতেকাফ সুন্নতে মোয়াক্কাদা আলাল কেফায়া। অর্থাৎ মহল্লার
জামে মসজিদে কোনো রোজাদার মুসলিম ইতেকাফ করলে সবার তরফ
থেকে এ ধরনের সুন্নত আদায় হবে।
৩| ০৪ ঠা মে, ২০২১ রাত ২:১৩
কামাল১৮ বলেছেন: আমাদের মহল্লায় কোন মসজিদ নাই।আমাদের উপায় বলে দিলে উপকৃত হবো।
৪| ০৪ ঠা মে, ২০২১ বিকাল ৪:৫১
রাজীব নুর বলেছেন: ফজিলত পেলাম না জীবনে। অবশ্য জীবনে কোনো আমলও করি নাই। এসবের জন্য আমার কোনো আফসোসও নেই।
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা মে, ২০২১ দুপুর ১২:০১
জটিল ভাই বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। অনেক ধন্যবাদ।