নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন গৃহিণীর কাজের মূল্য কত?

২৫ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৩১


গৃহ ব্যবস্থাপনার সব দায়িত্ব পালন করেও পিতৃতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি আর যুগ যুগ ধরে প্রচলিত সমাজব্যবস্থার কারণে আজও নারী ঘরের কাজের স্বীকৃতি পায়নি। আর এই স্বীকৃতি না থাকায় নারীরা অধিকার বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি নির্যাতিত হচ্ছে। গৃহিণীরা সারাদিন কী করেন? প্রশ্ন উঠতেই পারে৷ উত্তরে যদি বলা হয়, তাঁরা কেবল টেলিভিশন সিরিয়াল দেখে সময় কাটান, তাহলে একে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের ‘রটনা' ছাড়া আর কী বলা যায়? তবে‘মনে না নিলেও, মেনে নেয়া' – ঠিক কত ক্ষেত্রে যে নারীরা এভাবে ‘মেনে নেন' তা বলা সত্যি দুরূহ৷ ‘আজীবন হেঁসেল ঠেলেও কোনো মূল্য পাওয়া গেলো না' – এই ভাবনা প্রতিনিয়ত তাড়িত করে তাঁদের৷ কারণ অমূল্যায়িত সেবা খাতে পুরুষদের তুলনায় নারী অন্তত ৪০ভাগ সময় বেশি ব্যয় করেন৷ কিন্তু তাঁদের এই কাজের কোনো স্বীকৃতি নেই৷ সাধারণ যে কোনো কাজের একটা পারিশ্রমিক থাকে৷ কিন্তু গৃহের কাজের কোনো মূল্য নির্ধারণ করা নেই, তাই এটাকে মূল্যায়ন করা হয় না – বলা হয় এটা নিজের গৃহের কাজ, ফলে এটাকে মূল্য দেয়া হয় না৷বাংলাদেশে কোনো পুরুষকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় আপনার স্ত্রী কী করেন আর তাঁর জবাব যদি হয়, ‘কিছু করেন না'৷ তাহলে কী বুঝবেন? সাধারণত এর মানে, তিনি ঘর-গেরস্থালির কাজ করেন৷ কিন্তু এ দেশে ঘর-গেরস্থালির কাজকে কাজ বলে ধরা হয় না! বাসা-বাড়িতে কাজের সহযোগীতায় যে গৃহকর্মীরা থাকেন, তাঁরা কাজের জন্য নির্দিষ্ট অংকের মজুরি পান৷ কিন্তু একজন গৃহিণী কোনো মজুরি ছাড়াই সারাদিন কাজ করছেন এবং শুনছেন যে ‘তিনি কিছু করেন না'৷ গৃহিণীদের কাজের কোনো স্বীকৃতি নেই। তবে ধারণা পাল্টাচ্ছে তাই নারীর গৃহস্থালির কাজকে শ্রমের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছে। আমাদের দেশের অধিকাংশ নারীই পারিবারিক শ্রমিক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে কিন্তু সেটিকে কাজ এর মর্যদা দেওয়া হচ্ছে না। চাকরিজীবী নারীরা সকালে অফিসের যাওয়ার আগে সংসারের কাজ করেন৷ তারপর অফিস করে বাসায় এসে আবারো নানা কাজ থাকে৷ গৃহিণী নারীর সংসারের কাজে সামান্য ভুল-ত্রুটিতেই শুনতে হয় ‘কী এমন করো'! এই যে রান্না-বান্না, সন্তান লালন-পালনসহ পরিবারের যত কাজ, এর সবই অবমূল্যায়িত খাত৷একাধক প্রতিষ্ঠানের গবেষণা বলছে, একজন নারী পুরুষের চেয়ে বেশি কাজ করে, অথচ তাঁদের স্বীকৃতি কম৷ সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ বলছে, একজন নারী প্রতিদিন গড়ে ১২ দশমিক ১টি কাজ করেন৷ পুরুষদের ক্ষেত্রে এ কাজের গড় সংখ্যা ২ দশমিক ৭৷ এক সপ্তাহে একজন চিকিৎসক ৫৬ ঘণ্টা কাজ করলে মাসে পান ১ লাখ ৫৩ হাজার মার্কিন ডলার৷ সেই অনুযায়ী গৃহিণীদের সপ্তাহে ৯৪ ঘণ্টা কাজের হিসেবে বছরে কত বেতন হওয়া উচিত? স্যালারি ডট কম বলছে, গৃহিণীরা ৯টা থেকে ৫টা কাজের বাইরে সপ্তাহে যে অতিরিক্ত ৫৮ ঘণ্টা খাটেন, সেটা হিসেব করলে তাদের বাড়তি বেতন হওয়া উচিত বছরে ৬৭,৪৩৬ মার্কিন ডলার৷জাতীয় আয়ে নারীর যে পরিমাণ কাজের স্বীকৃতি আছে, তার চেয়ে ২ দশমিক ৫ থেকে ২ দশমিক ৯ গুণ কাজের স্বীকৃতি নেই৷বাংলাদেশের নারীদের বার্ষিক মজুরিবিহীন গৃহকাজের অর্থনৈতিক মূল্য এক লাখ ১১ হাজার ৫৯১ দশমিক ৪৮ কোটি টাকা৷ বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘উন্নয়ন অন্বেষণ’ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে৷

ঘরের কাজকে নারীর স্বাভাবিক দায়িত্ব এটিই আমাদের সমাজের সাধারণ ধারণা। তাই এ কাজে নারীর কোনো স্বীকৃতি যেমন নেই, তেমনই আর্থিক কোনো মূল্যায়নও নেই। তাই নারীরা অধিকার বঞ্চিত হচ্ছেন। তারা তাদের কাজের সম্মানও পাচ্ছেন না। নারী শুধু গৃহে কাজ করেন না, অনেক উৎপাদনশীল কাজও তাঁরা করেন৷ কিন্তু সবগুলো কাজকেই ধরা হয় সংসারের কাজ৷ সমাজও ঠিক সেইভাবেই দেখে৷ সমাজ মনে করে, নারী সংসার দেখেন, সন্তান সামলান – এটাই তাঁর কাজ৷ এর বাইরেও গ্রামের নারীরা কিন্তু গবাদি পশু দেখেন, বীজ সংরক্ষণ করেন – এমন হাজারো কাজ করেন তাঁরা৷ যেহেতু এ সব কাজেরও মূল্য নির্ধারণ করা নেই, তাই সমাজও মনে করে যে, এগুলো মূল্যহীন কাজ৷ এ সবের ফলে সমাজ তাঁদের কাজকে মর্যাদার চোখে দেখে না৷‘পরিবার থেকে যদি বুঝতো নারীর মূল্য কত, তাহলে তারা সম্মান দেখাতো’ বাংলাদেশে নারীরা বাইরে কাজ করে যে মূল্য পান আর গৃহে কাজ করে যে নারীরা মূল্য পান না তা তুলনা করে ঘরের কাজের জন্য বাইরের কাজের সম পরিমাণ মূল্য দেয়া হলে তিনগুণ মূল্য পেতেন নারীরা। মনে রাখতে হবে ‘যারা গৃহের রানি, তারাই হচ্ছে গৃহিণী'। ‘‘এটাই চিরকালের সত্য৷ মা, বোন, স্ত্রী ও কন্যা ছাড়া দুনিয়া তাই অচল৷'' নারীর কাজের যথাযথ মূল্যায়ন হলে, স্বীকৃতি দিলে নির্যাতন কমবে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন অনেক পরিবারেই বিশেষ করে যেখানে নারীরা বাইরে কর্মরত, সেখানে অনেক পুরুষ ঘরের কাজে অংশগ্রহণ করেন। যদিও গৃহিণীকে তার প্রাপ্য মূল্য দেওয়া কখনই সম্ভব নয়৷ তবে তাঁকে যা দেয়া যায় তা হচ্ছে সম্মান, শুধুই ‘সম্মান'৷সুতরাং তাদের কাজের মুল্যায়ন করতে হবে। ভুলে গেলে চলবেনা যে, ‘‘সংসার সুখের হয় রমনীর গুণে৷''

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল :-& ফেসবুক
[email protected]

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: গৃহিণী নিজের ঘরের কাজ নিজে করবে। ব্যস। এটাই নিয়ম।

২| ২৬ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:১২

এমেরিকা বলেছেন: বাংলা হিসাব দেইঃ
কাজের বুয়া হিসেবে প্রতি কাজ ১০০০ টাকা। ১০ টা কাজ ১০০০০ টাকা
সন্তানের গৃহশিক্ষক (এলিমেন্টারি লেভেলে) মাসিক ৫০০০ টাকা।
বাবুর্চির বেতন মাসিক ৫০০০ টাকা।
সন্তানের দেখাশোনা (গভার্নেস) ৫০০০ টাকা।
সেক্স ওয়ার্কার জানা নেই, তবে প্রতি রাত মিনিমাম ১০০০ টাকা হওয়া উচিত। ২০ রাতে ২০০০০ টাকা।
ড্রাইভিং জানলে কেবল ছেলেমেয়েদের স্কুলে আনা নেওয়ার বেতন ৫০০০ টাকা।
ওভারটাইম এখানে কার্যকর না, কারণ কোন কাজই একটানা করতে হয়না। নিজের পছন্দমত করার সুযোগ ও পর্যাপ্ত বিশ্রামের ব্যবস্থা আছে। যদি ধরিও, তাহলে ১৫০০০ হাজার টাকার বেশি হবেনা।

বর্তমান বাজারে তাই গৃহকর্মের দাম কোন বিচারেই ৬০,০০০ টাকার বেশি হবেনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.