নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্বে শক্তিশালী মাধ্যম টেলিভিশনঃ ২১ বিশ্ব টেলিভিশন দিবস আজ

২১ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১:২৫


আজ ২১ নভেম্বর বিশ্ব টেলিভিশন দিবস। ১৯২৬ সালের এই দিনে বিজ্ঞানী জন লোগি বেয়ার্ড টেলিভিশন আবিষ্কার করেন। এক বোকা বাক্সের হাত ধরে এক অন্যরকম বিস্ময়ের জগতে প্রবেশ করে মানুষ। গোটা পৃথিবীটাই চলে আসে ঘরে থাকা এই চারকোনা যন্ত্রে–যার নাম টেলিভিশন। জন লোগি বেয়ার্ডের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ১৯৯৬ সালে জাতিসংঘ আয়োজিত এক ফোরামে ২১ নভেম্বরকে বিশ্ব টেলিভিশন দিবস হিসেবে পালনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একবিংশ শতাব্দীর শুরুতেই মুদ্রণ মাধ্যমকে ছাপিয়ে জায়গা করে নেয় সম্প্রচার মাধ্যম। প্রবল প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অসহায়ের প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হিসেবে একুশ শতকে গোটাবিশ্বে টেলিভিশনকেই সবচে’ শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। প্রযুক্তির উৎকর্ষে ও সময়ের দাবিতে বাংলাদেশেও গণমাধ্যমে ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে টেলিভিশন। প্রতিদিনের খবরাখবর ও মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে এখন টেলিভিশনের গুরুত্ব অপরিসীম। টেলিভিশনকেই তথ্য-বিনোদনের প্রধান উৎস বলে বিশিষ্টজনরা মনে করেন। বর্তমান সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম একটি বড় জায়গা দখল করলেও টেলিভিশনের আবেদন এখনো অটুট রয়েছে। প্রতিদিনের খবরাখবর ও মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে এখন টেলিভিশন যেনো অত্যাবশ্যকীয় উপকরণ। কম্পিউটার ও স্মার্টফোন এসে বিনোদন ও খবর পরিবেশনের ক্ষেত্রে টেলিভিশনের জায়গা অনেকটাই দখল করে নিলেও এই দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়ে থাকে। প্রযুক্তি বদলের সাথে সাথে টেলিভিশনের সংবাদ ও অনুষ্ঠান পরিবেশনায় এসেছে নতুনত্ব। আর তা সৃজনশীল মানুষের নেশা, ভালোবাসা.আর জনগণের আগ্রহ বাড়িয়েছে। এখানেই টেলিভিশন দিবসের সার্থকতা।

টেলিভিশন এমন একটি যন্ত্র যা থেকে একই সঙ্গে ছবি দেখা যায় এবং শব্দও শোনা যায়। টেলিভিশন শব্দটি ইংরেজি থেকে এসেছে, মূলতঃ প্রাচীন গ্রিক শব্দ "τῆλε" (ত্যালে অর্থাৎ "দূর") এবং লাতিন শব্দ "Vision" (ভিসিওন্‌, অর্থাৎ "দর্শন") মিলিয়ে তৈরি হয়ে। তাই টেলিভিশনকে বাংলায় কখনও দূরদর্শন যন্ত্র বলা হয়। ১৮৬২ সালে তারের মাধ্যমে প্রথম স্থির ছবি পাঠানো সম্ভব হয়। এরপর ১৮৭৩ সালে বিজ্ঞানী মে ও স্মিথ ইলেকট্রনিক সিগনালের মাধ্যমে ছবি পাঠানোর পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। ব্রিটিশবিজ্ঞানী জন লগি বেয়ার্ড ১৯২৬ সালে প্রথম টেলিভিশন আবিষ্কার করেন এবং সাদা কালো ছবি দূরে বৈদ্যুতিক সম্প্রচারে পাঠাতে সক্ষম হন। এর পর রুশ বংশোদ্ভুত প্রকৌশলী আইজাক শোয়েনবারগের কৃতিত্বে ১৯৩৬ সালে প্রথম টিভি সম্প্রচার শুরু করে বিবিসি। টেলিভিশন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চালু হয় ১৯৪০ সালে। অতপর ১৯৪৫ সালে যন্ত্রটি পূর্ণতা লাভ করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর টেলিভিশন উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন সূচিত হয়। গত শতাব্দীর ৫০ এর দশকে টেলিভিশন গনমাধ্যমের ভূমিকায় উঠে আসে। ডিসপ্লে বা প্রদর্শনীর প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে টেলিভিশনকে বিভিন্নভাবে ভাগ করা যায়। যেমনঃ সিআরটি (CRT), প্লাজমা (Plasma), এলসিডি (LCD), এলইডি (LED) ইত্যাদি। সম্প্রচার থেকে প্রদর্শন পর্যন্ত টেলিভিশনের সম্পূর্ণ পদ্ধতিকে আবার তিনভাগে ভাগ করা যায় যেমনঃ এনালগ টেলিভিশন (সনাতন পদ্ধতি), ডিজিটাল টেলিভিশন (DTV) ও এইচডিটিভি (HDTV)। ১৯৬৪ সালে আমাদের দেশে সাদা কালো টেলিভিশনের সম্প্রচার পিটিভি নামে যাত্রা শুরু করে। তখন টেলিভিশনই ছিল মানুষের বিনোদনের মূল উৎস। ঢাকা শহরের ডিআইটি (বর্তমান রাজউক ভবন) থেকে তিনশ ওয়াট ট্রান্সমিটারের সাহায্যে ঢাকা ও এর আশপাশে দশ মাইল এলাকার জন্য প্রতিদিন তিন ঘণ্টার অনুষ্ঠান প্রচার করা হতো। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের পুনর্গঠনে ১৯৭২ সালে টেলিভিশনকে জাতীয়করণ করে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) নামকরণ করা হয়। ১৯৭৫ সালের ৬ মার্চ ডিআইটি থেকে টেলিভিশন কেন্দ্র রামপুরায় স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে ১২টি উপকেন্দ্রের মাধ্যমে সারাদেশে পঁচানববই ভাগেরও বেশি এলাকা টিভি সম্প্রচারের আওতায় এসেছে। বাংলাদেশ টেলিভিশনের অবকাঠামোগত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হচ্ছে ১৯৮০ সালে রঙিন অনুষ্ঠান সম্প্রচার চালু। বিটিভির সম্প্রচার পরিধি বাড়াতে অবকাঠামোগত সম্প্রসারণ অব্যাহত রয়েছে। ঊনিশ আটানব্বুই সালের পনেরো জুলাই এটিএন বাংলার হাত ধরে বেসরকারী উদ্যোগে টেলিভিশন চ্যানেলের যে যাত্রা শুরু হয়, ক্রমেই সংখ্যা বেড়ে বর্তমান অনুমোদিত চ্যানেল সংখ্যা প্রায় অর্ধশত। তবে বর্তমান বিশ্বে টেলিভিশন সব থেকে শক্তিশালী প্রচার মাধ্যম হিসেবে বিবেচেত হলেও বাংলাদেশে এখনো সম্প্রচার স্বাধীনতা পুরোপুরি অর্জিত হয়নি বলে মনে করেন গণমাধ্যম ব্যক্তিরা। তথ্য ও বিনোদনের জন্য সব শ্রেণী-পেশার মানুষের কাছে গত দুই দশক ধরে জনপ্রিয় মাধ্যম টেলিভিশন প্রবল প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অসহায়ের সহায় হিসেবে বিশ্বে শক্তিশালী মাধ্যম টেলিভিশন। এদেশেও তার জুড়ি না থাকলেও নানা কারণেই এখন থমকে পড়েছে এর বিকাশ। তবে সংকট দুর করতে বেসরকারি টেলিভিশনগুলোকে পে-চ্যানেলে পরিণত করাসহ আরও কিছু পরামর্শ দিলেন এ খাতের সঙ্গে জড়িতরা। বিদেশী চ্যানেলের আগ্রাসন মোকাবেলায় সংবাদ পরিবেশন ও অনুষ্ঠান নির্মাণে গুণগত মানের দিকে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোকে বিশেষ নজর দিতে হবে বলেও মত তাদের। বিশ্ব টেলিভিশন্ দিবসে টেলিভিশন সম্প্রচারে তার সকল বাধা দূরিভূত হবে এটাই আমাদের সকলের প্রত্যাশা।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল :-& ফেসবুক
[email protected]

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:৪৩

এমেরিকা বলেছেন: এখন আর টেলিভিশনের যুগ নেই। ইউটিউব টিভির জায়গা অনেকখানিই দখল করে ফেলেছে।

২১ শে নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:২৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

ইউটিউব টিভির জায়গা অনেকখানিই দখল করে
নিলেও টেলিভিশনের আবেদন এখনও বিদ্যমান।
আর টেলিভিশনের গৌরবময় ইতিহাস দখল করা অসম্ভব।

২| ২১ শে নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৩৬

রাজীব নুর বলেছেন: শিরোণামটায় জামেলা আছে।

২১ শে নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:১৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

কি জামেলা জামাই !!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.