নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
আধুনিক সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতা ও সৌদি আরবের প্রথম বাদশাহ আবদুল আজিজ ইবন সৌদ। পুরো নাম আবদুল আজিজ ইবনে আবদুর রহমান ইবনে ফয়সাল ইবনে তুর্কি ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ আল সৌদ। আরব বিশ্বে তিনি আবদুল আজিজ বা ইবনে সৌদ নামে সমধিক পরিচিত। সৌদি আরব প্রতিষ্ঠার আগে ১৯২২ সালে নজদ ও ১৯২৫ সালে হেজাজের (সৌদি আরবের পশ্চিম অংশ-মক্কা, মদিনা, জেদ্দা, তায়েফ) জয় করেন এবং সেখানে নিয়ন্ত্রণ পাকাপোক্ত করেন । তার বিজিত অঞ্চলগুলো নিয়ে ১৯৩২ সালে সৌদি আরব রাষ্ট্র গঠন করা হয়। তাঁর সময়কালেই দেশটিতে তেল আবিষ্কার হয় এবং উন্নতির সূচনা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সৌদি আরব সর্ববৃহৎ তেল উৎপাদনকারী দেশ হয়ে উঠে। ইবনে সৌদ ১৯০২ সালে রিয়াদে তার পূর্বপুরুষদের অঞ্চল জয় করতে সক্ষম হন। ১৯২২ সালে তিনি নজদে নিজের নিয়ন্ত্রণ সুপ্রতিষ্ঠিত করেন এবন ১৯২৫ সালে হেজাজ জয় অরেন। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তিনি সুসম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন। ইবনে সৌদ ১৯৩৫ সালে অর্ডার অব দ্য বাথ, ১৯৪৭ সালে লিজিওন অব মেরিট ও ১৯৫২ সালে অর্ডার অব মিলিটারি মেরিট (হোয়াইট ডেকোরেশনসহ) লাভ করেন। আবদুল আজিজ ইবন সৌদ এর অনেক সন্তান ছিল। তার পরবর্তী সৌদি বাদশাহ সকলেই তার সন্তানদের মধ্য থেকে মনোনীত হয়েছেন। ইবনে সৌদ ১৯৩৫ সালে আততায়ীর হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে যান। ১৯৫৩ সালের আজকের দিনে তিনি তাইফে প্রিন্স ফয়সালের প্রাসাদে মৃত্যুবরণ করেন। আজ তার ৬৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। সৌদি বাদশাহ আবদুল আজিজ ইবন সৌদ এর মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
ইবনে সৌদ ১৮৭৬ সালের ১৫ জানুয়ারি মধ্য আরবের নজদ অঞ্চলের রিয়াদে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আবদুর রহমান বিন ফয়সাল ছিলেন দ্বিতীয় সৌদি রাষ্ট্রের শেষ শাসক। তারা ওয়াহাবি মতাদর্শের সমর্থক ছিলেন। তার মা সারাহ আল সুদাইরি ছিলেন সুদাইরি গোত্রের সদস্য। সৌদিরা আরব উপদ্বীপের অনেকাংশ জয় করে প্রথম সৌদি রাষ্ট্র গঠন করেছিল। পরে ১৯ শতকের প্রথমদিকে উসমানীয় শাসনাধীন মিশরের হাতে তা ধ্বংস হয়ে যায়। ইবনে সৌদ তথা তার পরিবার মধ্য আরবে পূর্বের ১৩০ বছর ধরে শক্তিশালী ছিল। ১৮৯০ সালে আল সৌদের দীর্ঘদিনের প্রতিপক্ষ আল রশিদ রিয়াদ জয় করে নেয়। এসময় ইবনে সৌদ ১৫ বছর বয়স্ক ছিলেন। তিনি ও তার পরিবার বেদুইন গোত্র আল মুরাহর কাছে আশ্রয় নেন। পরে আল সৌদের সদস্যরা কাতার চলে যান এবং সেখানে দুই মাস অবস্থান করেন। তাদের পরবর্তী গন্তব্য বাহরাইনে তারা সংক্ষিপ্ত সময় ছিলেন। শেষপর্যন্ত তারা কুয়েতে অবস্থান নেন এবং এক দশকের মত সেখানে অবস্থান করেন। ১৯০১ সালের বসন্তে ইবনে সৌদ ও তার সৎ ভাইসহ কিছু আত্মীয় নজদে অভিযানে বের হন। আল রশিদের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন গোত্র তাদের লক্ষ্য ছিল। এসব অভিযান লাভজনক দেখা দেয়ার পর এতে আরো অনেকেই অংশ নেয়। অভিযানকারীদের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে যায়। তবে পরের মাসগুলোতে তা কমে গিয়েছিল। হেমন্তে দলটি ইয়াবরিন মরূদ্যানে শিবির স্থাপন করে। রমজান চলার সময় তারা রিয়াদ আক্রমণ করে তা রশিদিদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯০২ সালের ১৫ জানুয়ারি ইবনে সৌদ চল্লিশ জনের একটি দল নিয়ে দুর্গ আক্রমণ করে তা দখল করে নেন। শহরের রশিদি গভর্নর আজানকে হত্যা করা হয়। সৌদিদের দুর্গ দখলের এই ঘটনা তৃতীয় সৌদি রাষ্ট্রের সূচনা করে। ১৯৩২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ইবনে সৌদ তার শাসনাধীন অঞ্চলগুলোকে সৌদি আরব হিসেবে একীভূত করেন এবং নিজেকে এর বাদশাহ ঘোষণা করেন। ১৯৩৮ সালে মাসমাক দুর্গ থেকে মুরাব্বা প্রাসাদে তার দরবার স্থানান্তর করা হয়। ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত এই প্রাসাদ তার বাসস্থান ও সরকারি দপ্তর হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে।
১৯৩৮ সালে স্ট্যান্ডার্ড অয়েল অব নিউইয়র্কের আমেরিকান ভূতাত্ত্বিকরা সৌদি আরবে তেলের সন্ধান পায়। নতুন পাওয়া তেলসম্পদ ইবনে সৌদের জন্য ব্যাপক প্রভাব ও ক্ষমতা বয়ে আনে। তিনি অনেক যাযাবর গোত্রকে পারস্পরিক লড়াই বন্ধ করে স্থায়ী বসতি স্থাপন করত বাধ্য করেন। তিনি ওয়াহাবিবাদের ভিত্তিতে রাষ্ট্রের ভিত্তি মজবুত করেছেন। পূর্বে থাকা উত্তম অনেক ধর্মীয় প্রথা বাদ দেয়া হয়। ১৯২৬ সালে মক্কাগামী মিশরীয়দের একটি দল শিঙা বাজানোর কারণে সৌদি বাহিনী তাদের মারধর করলে ইবনে সৌদ মিশর সরকারের কাছে তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। ১৯২৭ সালে ইবনে সৌদ শুরা কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করেন। পরে এর সদস্য বৃদ্ধি করে ২০জন করা হয় এবং বাদশাহর ছেলে ফয়সাল বিন আবদুল আজিজকে এর সভাপতি করা হয়। ১৯৩৮ সালে স্ট্যান্ডার্ড অয়েল অব নিউইয়র্কের আমেরিকান ভূতাত্ত্বিকরা সৌদি আরবে তেলের সন্ধান পায়। নতুন পাওয়া তেলসম্পদ ইবনে সৌদের জন্য ব্যাপক প্রভাব ও ক্ষমতা বয়ে আনে। তিনি অনেক যাযাবর গোত্রকে পারস্পরিক লড়াই বন্ধ করে স্থায়ী বসতি স্থাপন করত বাধ্য করেন। তিনি ওয়াহাবিবাদের ভিত্তিতে রাষ্ট্রের ভিত্তি মজবুত করেছেন। পূর্বে থাকা উত্তম অনেক ধর্মীয় প্রথা বাদ দেয়া হয়। ১৯২৬ সালে মক্কাগামী মিশরীয়দের একটি দল শিঙা বাজানোর কারণে সৌদি বাহিনী তাদের মারধর করলে ইবনে সৌদ মিশর সরকারের কাছে তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। ইবনে সৌদ সৌদি আরবের কাছাকাছি গোত্রগুলোর কাছ থেকে আনুগত্য আদায়ে সফল ছিলেন। উসমানীয় সাম্রাজ্যের সময়কার সবচেয়ে প্রভাবশালী ও রাজকীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত আল ফারাইহাতের প্রিন্স শেখ রশিদ আল খুজাইয়ের সাথে তিনি মজবুত সম্পর্ক গড়ে তোলেন। শরিফ হুসাইনের আগমনের আগে শেখ রশিদ ও তার গোত্র পূর্ব জর্ডান নিয়ন্ত্রণ করত। ইবনে সৌদ প্রিন্স রশিদ ও তার অনুসারীদেরকে হুসাইনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে সমর্থন দেন।
ব্যক্তিগত জীবনে ইবনে সৌদ বেশ কয়েকবার বিয়ে করেছেন। তার সন্তান সংখ্যা প্রায় একশত এবং তাদের মধ্যে ৪৫ জন ছেলে রয়েছে। ইবনে সৌদ তার ফুফু জাওহারা বিনতে ফয়সালের খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তিনি ইবনে সৌদের গুরুত্বপূর্ণ প্রেরণাদাতা ছিলেন এবং তাকে তাদের পারিবারিক ভূখন্ড পুনরুদ্ধারের জন্য ইবনে সৌদকে কুয়েত থেকে নজদ ফেরার উৎসাহ যুগিয়েছেন। জাওহারা ইসলামের উপর অনেক বেশি শিক্ষিত ছিলেন এবং ইবনে সৌদের সবচেয়ে বিশ্বস্ত উপদেষ্টাদের অন্যতমও ছিলেন। ইবনে সৌদ তার কাছ থেকে সাবেক শাসকদের অভিজ্ঞতা এবং গোত্র ও ব্যক্তির ঐতিহাসিক ভূমিকা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। বাদশাহ ইবনে সৌদের সন্তানরাও জাওহারাকে খুব শ্রদ্ধা করতেন। ইবনে সৌদ তার বড় বোন নুরা বিনতে আবদুর রহমানের খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ইবনে সৌদের মৃত্যুর কয়েক বছর পূর্বে নুরা মারা যান। ১৯ ৩৫ সালের ১৫ মার্চ হজ পালনের সময় কয়েকজন সশস্ত্র লোক বাদশাহ ইবনে সৌদকে হত্যার চেষ্টা করে। তবে তিনি হামলায় অক্ষত ছিলেন। ১৯৫৩ সালের অক্টোবর বাদশাহ ইবনে সৌদ হৃদযন্ত্রের সমস্যায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। সে বছরের ৯ নভেম্বর (২ রবিউল আওয়াল ১৩৭৩ হিজরি) তাইফে প্রিন্স ফয়সালের প্রাসাদে তিনি মারা যান। তাইফের আল হাওয়িয়ায় তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর রিয়াদের আল আউদ কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তার মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট জন ফস্টার ডুলাস বলেছেন যে একজন মুখপাত্র হিসেবে তিনি তার অর্জনের জন্য আবদুল আজিজ ইবন সৌদ স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। আজ তার ৬৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। সৌদি বাদশাহ আবদুল আজিজ ইবন সৌদ এর মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল ফেসবুক
[email protected]
২| ০৯ ই নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৪৩
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ওনার মৃত্যু কি পঁচাশি বছর আগে হয়েছিলো? হিসাব ঠিক আছে কি?
৩| ০৯ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:১৮
রাজীব নুর বলেছেন: বিরাট কামিলদার লোক।
৪| ১০ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:১৩
রাকু হাসান বলেছেন:
সৌদ বংশের বর্বরতার ইতিহাসকে এড়িয়ে গেলেন!!
©somewhere in net ltd.
১| ০৯ ই নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৩৩
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: তার জন্য বিন্দু মাত্র শ্রদ্ধা নেই।
লানত হোক তার উপর! যারা ইসলামী মৌলিক চেতনা ধ্বংস করে ইহুদী, ইঙ্গ মার্কিন তাবেদারী করে
ইসলামের প্রাণকেন্দ্রকে দুর্বল করে রেখেছে!
ব্যাক্তি স্বার্থ এবং রাজতন্ত্র যেখানে ইসলামে নিষিদ্ধ, তারা তা কায়েম রাখতে গিয়ে পুরো বিশ্ব মুসলিমের সাথে
প্রতারণা করছে। ইসরাইল এর সাতে সম্পর্কতো এখন খুল্লম খুল্লা!
তার জন্য ধিক্কার!