নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
বাঙালি কথাসাহিত্যিক নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়। ছাত্রজীবনে কাব্য রচনার মধ্য দিয়ে তাঁর সাহিত্যচর্চা শুরু। কালক্রমে তিনি গল্প, উপন্যাস, নাটক প্রভৃতি রচনা করে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। তার উপন্যাস-গল্প রচনার অনুপ্রেরণা যোগান উপেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়, পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায়, সুধাংশুকুমার রায় চৌধুরী, বিজয় লাল চট্টোপাধ্যায়, মন্মথসান্ন্যাল, সজনীকান্ত দাস ও ফনীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়।সাহিত্যে ছোটগল্প, কথাকোবিদ রবীন্দ্রনাথ, সুনন্দর জার্নাল ও টেনিদা সিরিজ তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ। তিনি শনিবারের চিঠির নিয়মিত লেখক ছিলেন। জীবনের শেষ সময়ে তিনি সাপ্তাহিক দেশ পত্রিকায় ‘সুনন্দ’ ছদ্মনামে লিখতেন। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের অমর খ্যাতি বড়দের জন্য রচিত উপন্যাস ও গল্পের জন্য। কিন্তু শিশু-কিশোর সাহিত্য রচনায় তার খ্যাতি বড়দের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। টেনিদা তার অনন্য সৃষ্টি। এছাড়াও শিশুদের জন্যে অজস্র ছোটগল্প লিখেছেন। তার রচিত পদ্মপাতার দিন, পঞ্চাননের হাতি, লালমাটি, তারা ফোটার সময়, ক্যাম্বের আকাশ, বাংলা গল্প বিচিত্রা, ঘন্টাদার কাবলু কাকা, খুশির হাওয়া, কম্বল নিরুদ্দেশ, চারমূর্তির অভিযান, ঝাউবাংলার রহস্য ও ছোটদের শ্রেষ্ঠ গল্প বাংলা শিশু-কিশোর সাহিত্যে নতুন সংযোজন। তিনি আনন্দ পুরস্কারসহ নানা পুরস্কারে তিনি ভূষিত হয়েছেন। ১৯৭০ সালের ৬ নভেম্বর তিনি কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৭০ সালের আাজকের দিনে কলকাতায় মৃত্যবরণ করেন এই সাহিত্যিক। আজ তার ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী। কথাসাহিত্যিক নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
১৯১৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি দিনাজপুরের বালিয়াডিঙ্গিতে জন্ম নেওয়া নারায়ণের প্রকৃত নাম তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়। ‘নারায়ণ’ তার সাহিত্যিক ছদ্মনাম। তাঁর বাবা প্রমথনাথ গঙ্গোপাধ্যায় ছিলেন দারোগা। তার পৈতৃক নিবাস ছিল বরিশাল জেলার বাসুদেবপুরের নলচিরায়। ১৯৩৩ সালে দিনাজপুর জিলা স্কুল থেকে প্রবেশিকা পাস করে ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে ভর্তি হলেও রাজনৈতিক কারণে ১৯৩৫ সালে তাঁকে ফরিদপুর ত্যাগ করতে হয়। পরে তিনি বরিশালের বিএম কলেজে ভর্তি হন এবং নন-কলেজিয়েট ছাত্র হিসেবে ১৯৩৬ সালে আইএ এবং ১৯৩৮ সালে ডিস্টিংকশনসহ বিএ পাস করেন। ১৯৪১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পরীক্ষায় অসাধারণ ফলাফল করায় তিনি ব্রহ্মময়ী স্বর্ণপদক লাভ করেন। পরবর্তী সময়ে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘সাহিত্যে ছোটগল্প’ বিষয়ে অভিসন্দর্ভ রচনা করে লাভ করেন পিএইচডি উপাধি। আনন্দচন্দ্র কলেজে অধ্যাপনার মাধ্যমে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়। পরে জলপাইগুড়িতে কিছুদিন এবং কলকাতার সিটি কলেজে ১৯৪৫ থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত অধ্যাপনা করার পর ১৯৫৬ সাল থেকে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ছেলেবেলা থেকেই লেখালেখি শুরু করেন। তার প্রথম লেখা ছাপা হয় মাস পয়লা শিশু মাসিকে। সন্দেশ, মুকুল, পাঠশালা, শুকতারা প্রভৃতি পত্রিকায় তিনি নিয়মিত লিখেছেন। সাপ্তাহিক দেশ পত্রিকায় সুনন্দর জার্নাল লিখে সুখ্যাতি অর্জন করেন। বাঙালির জীবনযাত্রা, সংস্কৃতি, রোজকার সমস্যা ও রাজনীতি নিয়ে লেখা নিয়মিত এই জার্নাল অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল বাঙালি পাঠকের কাছে। ড়দের জন্য রচিত তার উলেস্নখযোগ্য বইগুলো হলো: একতলা, কালা বদর, কৃষ্ণপক্ষ, গন্ধরাজ, পন্নন্তর, ট্রফি, তিমির তীর্থ, দুঃশাসন, গদসঞ্চার, বনজ্যোৎন্সা, বিদিশা, বীতংস, বৈতালিক, ভাঙাবন্দর, চন্দ্রমুখর, মহানন্দা, রামমোহন, শিলালিপি, শ্বেতকমল, সাগরিকা, স্বর্ণ সীতা, সূর্যসারথী, সঞ্চারিণী, সম্রাট ও শ্রেষ্ঠী, সাপের মাথায় মণি, আশিধারা, ভাটিয়ালী, আগন্তুক, অমাবস্যার গান, বিদুষক, সাহিত্যে ছোটগল্প, বাংলা সাহিত্য পরিচয়, ছোটগল্পের সীমারেখা ও কথাকোবিদ রবীন্দ্রনাথ।
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের রচনার উপজীব্য ইতিহাসবোধ ও স্বাদেশিকতা । বাংলার নিসর্গ ও নদ-নদীর তরঙ্গমালা, বাঙালির আদিম ও আরণ্যক জীবন তাঁর উপন্যাসে চিত্রিত হয়েছে।তার উল্লেখযোগ্য রচনাগুলো হলো- উপন্যাস উপনিবেশ (৩ খণ্ড), সম্রাট ও শ্রেষ্ঠী, মন্দ্রমুখর, শিলালিপি, লালমাটি, কৃষ্ণপক্ষ, কথাকোবিদ রবীন্দ্রনাথ, ছুটির আকাশ, খুশির হাওয়া ইত্যাদি। তার রচিত নাটক ভাড়াটে চাই এবং আগন্তুক সে সময় বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। তিনি কয়েকটি চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্যও রচনা করেন। তার রচিত বহু গান, চলচ্চিত্র ও রেকর্ডে গৃহীত হয়েছে। ১৯৭০ সালের ৬ নভেম্বর প্রয়াণ ঘটে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের। মৃত্যকালে তার বয়স হয়েছিলো ৫৩ বছর। আজ তার ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী। কথাসাহিত্যিক নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল ফেসবুক
[email protected]
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৫৩
রাজীব নুর বলেছেন: নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা আমি পড়েছি। তার লেখা ভালো লাগে।