নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
বাংলার লোকসংস্কৃতির অঙ্গনে এক অত্যজ্জ্বল প্রতিভা মহাত্মা লালন ফকির। লালন ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী একজন বাঙালি; যিনি ফকির লালন, লালন সাঁই, লালন শাহ, মহাত্মা লালন ইত্যাদি নামেও পরিচিত। তিনি একাধারে একজন আধ্যাত্মিক বাউল সাধক, মানবতাবাদী, সমাজ সংস্কারক এবং দার্শনিক। তিনি অসংখ্য গানের গীতিকার, সুরকার ও গায়ক ছিলেন। লালনকে বাউল গানের অগ্রদূতদের অন্যতম একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং ‘বাউল-সম্রাট’ হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। তাঁর গানের মাধ্যমেই উনিশ শতকে বাউল গান বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করে। তাঁর সঙ্গীতের সুরলহরিতে হিল্লোলিত হয় লোকমানসের হৃদয়-কানন। শৈল্পিক সত্তায় অনুরণিত হয় অনিন্দ্য ব্যঞ্জন। লালন গীতির কথনসৌকার্য, অভিব্যক্তির অভিনবত্ব, ছান্দসিকতার নৃত্য-চপল গতিশীলতায় পাঠক হৃদয় হয় বিমুদ্ধ-বিমোহিত। লালনের সুপরিছন্ন মানস-গঠন, সত্য-সন্ধ আলোকোজ্জ্বল জীবনায়ন, সুগভীর বিশ্বাত্মবোধে উজ্জ্বীবন, চিরসুন্দরের সাধনায় নিমজ্জন, লোকোত্তর প্রতিভার জাদুস্পর্শের উদ্ভাসন, প্রাণোচ্ছল অনুভূতির অভূতপূর্ব আলোড়ন, সুবচন ও সুভাষণের বহুমাত্রিক গুণেও লালন চরিত্রের মাধুর্য হয়ে উঠে অনন্যসাধারণ। গান্ধীরজির ২৫ বছর আগে, ভারত উপমহাদেশে সর্বপ্রথম, লালনকে ‘মহাত্মা’ উপাধি দেয়া হয়েছিল। লালনের ধর্মবিশ্বাস সম্পর্কে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘লালন ধার্মিক ছিলেন, সব ধর্মের বন্ধন ছিন্ন করে মানবতাকে সর্বোচ্চ স্থান দিয়েছিলেন জীবনে।’’ লালন হিন্দু কী মুসলমান, এ নিয়েও বিস্তর মতামত পাওয়া যায়। কারও মতে, লালন কায়স্থ পরিবারের সন্তান যার পিতা মাধব এবং মাতা পদ্মাবতী; পরে লালন ধর্মান্তরিত হন। গবেষকদের মতে, বেশিরভাগই মনে করেন লালন মুসলিম তন্তুবায়ী পরিবারের সন্তান। তবে লালন কোনোও বিশেষ ধর্মের রীতিনীতি পালনে আগ্রহী ছিলেন না। সকল জাতপাতের ঊর্ধ্বে উঠে লালন নিজেকে শুধুই মানুষ হিসেবে পরিচয় দিয়ে গেছেন। তবে সাম্প্রদায়িক ধর্মবাদীরা লালনের অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তার সর্বাধিক সমালোচনা করে থাকে। লালন তার জীবদ্দশায় নিজের ধর্ম পরিচয় কারও কাছে প্রকাশ করেন নি। তার ধর্ম বিশ্বাস আজও একটি বিতর্কিত বিষয়। লালনের অসাম্প্রদায়িকতা, লিঙ্গ বৈষম্যের বিরোধিতা ইত্যাদির কারণে তাকে তার জীবদ্দশায় ধর্মান্ধ এবং মৌলবাদী হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের ঘৃণা, বঞ্চনার এবং আক্রমণের শিকার হতে হয়।এছাড়া তার ধর্মনিরপেক্ষ মানবতাবাদী দর্শন এবং ঈশ্বর, ধর্ম ইত্যাদি বিষয়ে তার উত্থাপিত নানান প্রশ্নের কারণে অনেক ধর্মবাদী তাকে নাস্তিক হিসেবে আখ্যা দিয়ে থাকেন। আজ মানবতাবাদী এই বাউলের ২৪৬তম জন্ম এবং ১৩০তম মৃত্যুবার্ষিকী। বাউল সম্রাট মহাত্মা লালন ফকিরের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁকে স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় ।
লালনের জন্ম তারিখ নিয়ে সুনিদৃষ্ট কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে অসমর্থিত সূত্রে জানা যায় ১৭৭৪ খ্রষ্টাব্দের ১৭ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। লালনের জন্ম কোথায় তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। লালন নিজে কখনো তা প্রকাশ করেননি। কিছু সূত্রে পাওয়া যায় লালন ১৭৭৪ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার (বর্তমান বাংলাদেশের) ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলার হারিশপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কোনো কোনো লালন গবেষক মনে করেন, লালন কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানার চাপড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত ভাড়ারা গ্রামে জন্মেছিলেন। এই মতের সাথেও অনেকে দ্বিমত পোষণ করেন। বাংলা ১৩৪৮ সালের আষাঢ় মাসে প্রকাশিত মাসিক মোহম্মদী পত্রিকায় এক প্রবন্ধে লালনের জন্ম যশোর জেলার ফুলবাড়ি গ্রামে বলে উল্লেখ করা হয়। লালনের জীবন সম্পর্কে সবচেয়ে অবিকৃত তথ্যসুত্র তার নিজের রচিত অসংখ্য গান। কিন্তু লালনের কোন গানে তার জীবন সম্পর্কে কোন তথ্য রেখে যাননি, তবে কয়েকটি গানে তিনি নিজেকে "লালন ফকির" হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর মৃত্যুর পনেরো দিন পর কুষ্টিয়া থেকে প্রকাশিত হিতকরী পত্রিকার সম্পাদকীয় নিবন্ধে বলা হয়, “ইহার জীবনী লিখিবার কোন উপকরণ পাওয়া কঠিন। নিজে কিছু বলিতেন না। শিষ্যরা তাহার নিষেধক্রমে বা অজ্ঞতাবশতঃ কিছুই বলিতে পারে না।" হিতকরী পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ নিবন্ধে বলা হয়েছে, লালন তরুন বয়সে একবার তীর্থভ্রমণে বের হয়ে পথিমধ্যে গুটিবসন্ত রোগে আক্রান্ত হন। তখন তার সাথীরা তাকে মৃত ভেবে পরিত্যাগ করে যার যার গন্তব্যে চলে যায়। কালিগঙ্গা নদীতে ভেসে আসা মুমূর্ষু লালনকে উদ্ধার করেন মলম শাহ। মলম শাহ ও তার স্ত্রী মতিজান তাকে বাড়িতে নিয়ে সেবা-শুশ্রষা দিয়ে সুস্থ করে তোলেন। এরপর লালন তার কাছে দীক্ষিত হন এবং কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়াতে স্ত্রী ও শিষ্যসহ বসবাস শুরু করেন। গুটিবসন্ত রোগে একটি চোখ হারান লালন। ছেঊরিয়াতে তিনি দার্শনিক গায়ক সিরাজ সাঁইয়ের সাক্ষাতে আসেন এবং তার দ্বারা প্রভাবিত হন। এছাড়া লালন সংসারী ছিলেন বলে জানা যায়। তার সামান্য কিছু জমি ও ঘরবাড়ি ছিল। লালন অশ্বারোহনে দক্ষ ছিলেন এবং বৃদ্ধ বয়সে অশ্বারোহনের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে যেতেন।লালনের সময়কালে যাবতীয় নিপীড়ন, মানুষের প্রতিবাদহীনতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি-কুসংস্কার, লোভ, আত্মকেন্দ্রিকতা সেদিনের সমাজ ও সমাজ বিকাশের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সমাজের নানান কুসংস্কারকে তিনি তার গানের মাধ্যমে করেছেন প্রশ্নবিদ্ধ। আর সে কারণেই লালনের সেই সংগ্রামে আকৃষ্ট হয়েছিলেন বহু শিষ্ট ভূস্বামী, ঐতিহাসিক, সম্পাদক, বুদ্ধিজীবী, লেখক এমনকি গ্রামের নিরক্ষর সাধারণ মানুষও। আধ্যাত্মিক ভাবধারায় তিনি প্রায় দুই হাজার গান রচনা করেছিলেন। তার সহজ-সরল শব্দময় এই গানে মানবজীবনের রহস্য, মানবতা ও অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ পেয়েছে। লালনের বেশ কিছু রচনা থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে তিনি ধর্ম-গোত্র-বর্ণ-সম্প্রদায় সম্পর্কে অতীব সংবেদনশীল ছিলেন। ব্রিটিশ আমলে যখন হিন্দু ও মুসলিম মধ্যে জাতিগত বিভেদ-সংঘাত বাড়ছিল তখন লালন ছিলেন এর বিরূদ্ধে প্রতিবাদী কন্ঠস্বর। তিনি মানুষে-মানুষে কোনও ভেদাভেদে বিশ্বাস করতেন না। মানবতাবাদী লালন দর্শনের মূল কথা হচ্ছে মানুষ। আর এই দর্শন প্রচারের জন্য তিনি শিল্পকে বেছে নিয়েছিলেন। লালনকে অনেকে পরিচয় করিয়ে দেবার চেষ্টা করেছেন সাম্প্রদায়িক পরিচয় দিয়ে। কেউ তাকে হিন্দু, কেউ মুসলমান হিসেবে পরিচয় করাবার চেষ্টা করেছেন। লালনের প্রতিটি গানে তিনি নিজেকে ফকির ( আরবি "সাধু") হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। আসল কথা, লালন আছে সকলের মাঝে, তার বাণী সবার জন্য প্রযোজ্য। “Know thyself” এবং “সবার উপর মানুষ সত্য”এটাই লালনের মূলমন্ত্র।
“সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে
লালন ভাবে জাতের কী রূপ দেখলেম না এই নজরে।”
তাই লালন কে কোন ধর্ম দিয়ে বিচার করলে তাকে ছোট করা হবে। নিজেকে উনি মানুষ হিসেবে দেখিয়েছেন । উনি জাত পাত এ সবের অনেক উর্দ্ধে ।
সমগ্র বিশ্বে, বিশেষ করে বাংলাদেশসহ সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশে লালনের গান বেশ জনপ্রিয়। লালনের গান লালগীতি বা লালন সংগীত হিসেবে পরিচিত। লালন মুখে মুখে গান রচনা করতেন এবং সুর করে পরিবেশন করতেন। এ ভাবেই তার বিশাল গান রচনার ভান্ডার গড়ে উঠে। তিনি সহস্রাধিক গান রচনা করেছেন বলে ধারনা করা হয়। তবে তিনি নিজে তা লিপি বদ্ধ করেন নি। তার শিষ্যরা গান মনে রাখতো আর পরবর্তিতে লিপিকার তা লিপিবদ্ধ করতেন। আর এতে করে তার অনেক গানই লিপিবদ্ধ করা হয়নি বলে ধারনা করা হয়। আত্মতত্ত্ব, দেহতত্ত্ব, গুরু বা মুর্শিদতত্ত্ব, প্রেম-ভক্তিতত্ত্ব, সাধনতত্ত্ব, মানুষ-পরমতত্ত্ব, আল্লা-নবীতত্ত্ব, কৃষ্ণ-গৌরতত্ত্ব এবং আরও বিভিন্ন বিষয়ে লালনের গান রয়েছে। লালন তার সমকালীন সমাজের নানান কুসংস্কার, সাম্প্রদায়িকতা, সামাজিক বিভেদ ইত্যাদির বিরুদ্ধে তার রচিত গানে তিনি একই সাথে প্রশ্ন ও উত্তর করার একটি বিশেষ শৈলি অনুসরন করেছেন। এছাড়া তার অনেক গানে তিনি রুপকের আড়ালেও তার নানান দর্শন উপস্থাপন করেছেন। বাউলদের জন্য তিনি যেসব গান রচনা করেন, তা কালে-কালে এত জনপ্রিয়তা লাভ করে যে মানুষ এর মুখে মুখে তা পুরো বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে। কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লালনের গানে প্রভাবিত হয়ে, প্রবাসী পত্রিকার ‘হারামনি’ বিভাগে লালনের কুড়িটি গান প্রকাশ করেন। স্রোতার পছন্দ অনুসারে বিবিসি বাংলার করা সর্বকালের সেরা ২০টি বাংলা গানের তালিকায় লালনের খাঁচার ভিতর অচিন পাখি কেমনে আসে যায় গানটির অবস্থান ১৪তম। ১৮৯০ সালের আশ্বিণ মাস, লালন ফকির একদিন তিনি শিষ্যদের ডেকে বললেন, এই আশ্বিন মাসের শেষের দিকে তোমরা কোথাও যেও না কারণ পহেলা কার্তিকে গজব হবে। গজবের বিষয়টি শিষ্যরা কেউ সঠিকভাবে অনুমান করতে না পারলেও আসন্ন বিপদের আশঙ্কা করতে লাগল। পরবর্তীতে ১৮৯০ সালের ১৭ই অক্টোবর মোতাবেক ১ কার্তিক ১২৯৭ বঙ্গাব্দে ১১৬ বছর বয়সে কুষ্টিয়ার কুমারখালির ছেউড়িয়াতে নিজ আখড়ায় মৃত্যুবরণ করেন লালন ফকির। মৃত্যুর প্রায় একমাস পূর্ব থেকে তিনি পেটের সমস্যা ও হাত পায়ের গ্রন্থির সমস্যায় ভুগছিলেন। অসুস্থ অবস্থায় দুধ ছাড়া অন্য কিছু খেতেন না। এসময় তিনি মাছ খেতে চাইতেন। মৃত্যুর দিন ভোর ৫টা পর্যন্ত তিনি গানবাজনা করেন। লালন চাদর মুড়ি দিয়ে বিশ্রাম নিলেন, শিষ্যরা মেঝেতে বসে থাকলেন। এক সময় লালন কপালের চাদর সরিয়ে বললেন, তোমাদের আমি শেষ গান শোনাব। লালন গান ধরলেন, গভীর অপরূপ সুন্দর গান—‘পার কর হে দয়াল চাঁদ আমারে/ক্ষম হে অপরাধ আমার/এই ভব কারাগারে।’এক সময় গান শেষ হলো, তার শিষ্যদের কে বলেন : “আমি চলিলাম’’ এবং এর কিছু সময় পরই চাদর মুড়ি দিয়ে চিরদিনের জন্য নীরব হয়ে গেলেন ফকির লালন। আমৃত্যু ফকির লালন ছেঁউড়িয়াতেই ছিলেন, মৃত্যুর পর ছেঁউড়িয়ার আখড়া বাড়িতেই তার সমাধি নির্মিত হয়। তাঁর মৃত্যুর ১২ দিন পর তৎকালীন পাক্ষিক পত্রিকা মীর মশাররফ হোসেন সম্পাদিত 'হিতকরী'তে প্রকাশিত একটি রচনায় সর্বপ্রথম তাঁকে "মহাত্মা" হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।ছেঁউড়িয়াতে ফকির লালনের সঙ্গে তার পালিত মা মতিজান ফকিরানী, পালিত বাবা মলম শাহ, ফকির মণ্ডিত মানিক শাহ, শীতল শাহ, ভোলাই শাহ, বিশখা ফকিরানী এবং ফকির মনিরুদ্দিন শাহসহ অন্য আরও অনেক ভাবশিষ্যের সমাধি আছে। আজও সারা বাংলাদেশ থেকে বাউলেরা অক্টোবর মাসে দেশ-বিদেশের হাজার হাজার বাউল ছেউড়িয়ায় সমবেত হয়ে লালনের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করে। আজ মানবতাবাদী এই বাউলের ২৪৬তম জন্ম এবং ১৩০তম মৃত্যুবার্ষিকী। বাউল সম্রাট মহাত্মা লালন ফকিরের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁকে স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় ।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল ফেসবুক
[email protected]
১৭ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১১:২৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সোনাবীজ ভাই
আপনার লেখা চিত্রা ও জগজিৎএর গানের
পোস্টে আমাকে স্মরণ করার জন্য।
কৃতজ্ঞতা একটি প্রেমের গান
সংযোজন করার জন্য।
২| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১১:৩৬
কবীর হুমায়ূন বলেছেন: এমন সমাজ কবে গো সৃজন হবে।
যেদিন হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিস্টান
জাতি গোত্র নাহি রবে।
লালন দর্শনে সমাজ সংস্কারের একটি চেতনবিদ্ধ কালামের অংশ। লালনের কাছে মানুষই বড়ো। বর্তমানে সহিংস সমাজ কাঠামোর মাঝে লালন দর্শনের বিস্তার প্রয়োজন। মানুষকে ভালোবাসার মাঝেই মোক্ষলাভের পথ পাওয়া যায়। ধন্যবাদ লালনের জন্ম ও ওফাত দিবসকে উপলক্ষ করে একটি পোস্ট আনার জন্য। শুভ কামনা।
১৮ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ হুমায়ূন ভাই
শোন হে মানুষ ভা্ই
সবার উপরে মানুষ সত্য
তার উপরে নাই
বাংলার মধ্যযুগের এক কবি বড়ু চণ্ডীদাস উচ্চারণ
করেছিলেন মানব-ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ মানবিক বাণী।
আর তারই প্রতিধ্বনি পাই আমরার লালনের সব গানে।
৩| ১৮ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১২:১৩
জাফরুল মবীন বলেছেন: জীবন ও পরকাল নিয়ে লালন ফকিরের গভীর ভাবনা ও তার প্রকাশ বিস্মিত ও বিমোহিত করে।
১৮ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ মবীন ভাই
আমাদের এক সমৃদ্ধ অতীত আছে। এক বর্ণাঢ্য ইতিহাস-ঐতিহ্য রয়েছে।
সকল ধর্ম-বর্ণ-জাতিনির্বিশেষে বিশ্বমানব হওয়ার আকাঙ্ক্ষা রয়েছে।
আমাদের লালন, রবীন্দ্র, নজরুল আছে। আমরা নূরলদীন আর সূর্যসেন-প্রীতিলতার
উত্তরাধিকার। আমরা মাওলানা ভাসানী, মণি সিং ও বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকার।
আমাদের হাতেই তো সকল শক্তি ন্যস্ত করেছে মহাকাল। তাই জ্বলে ওঠি।
ছিন্নভিন্ন করি বাঙালি সংস্কৃতিবিরোধী মৌলবাদের হিংস্র থাবা।
৪| ১৮ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১২:৩৩
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: লালন হিন্দু না মুসলমান?নাকি হিন্দু মুসলমানের উর্ধে কোন মানুষ।
১৮ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: নুরুল ইসলাম ভাই
লালনের ধর্মবিশ্বাস সম্পর্কে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন,
‘‘লালন ধার্মিক ছিলেন, সব ধর্মের বন্ধন ছিন্ন করে মানবতাকে
সর্বোচ্চ স্থান দিয়েছিলেন জীবনে।’’ লালন হিন্দু কী মুসলমান,
এ নিয়েও বিস্তর মতামত পাওয়া যায়। কারও মতে, লালন কায়স্থ
পরিবারের সন্তান যার পিতা মাধব এবং মাতা পদ্মাবতী; পরে লালন
ধর্মান্তরিত হন। গবেষকদের মতে, বেশিরভাগই মনে করেন লালন
মুসলিম তন্তুবায়ী পরিবারের সন্তান। তবে লালন কোনোও বিশেষ
ধর্মের রীতিনীতি পালনে আগ্রহী ছিলেন না। সকল জাতপাতের
ঊর্ধ্বে উঠে লালন নিজেকে শুধুই মানুষ হিসেবে পরিচয় দিয়ে গেছেন।
তবে সাম্প্রদায়িক ধর্মবাদীরা লালনের অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে
তার সর্বাধিক সমালোচনা করে থাকে। লালন তার জীবদ্দশায় নিজের
ধর্ম পরিচয় কারও কাছে প্রকাশ করেন নি। তার ধর্ম বিশ্বাস আজও
একটি বিতর্কিত বিষয়।
এ কথাগুলো আমার লেখায় উদ্ধৃত করেছি।
৫| ১৮ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১২:৪৯
রাজীব নুর বলেছেন: ঠিক করে বলুন,
১। লালন হিন্দু না মুসলিম?
২। রবীন্দ্রনাথের সাথে লালনের কখনও দেখা সাক্ষাৎ হয়েছিলো?
১৮ ই অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:৫৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
প্রশ্বগুলো যখন আপনার মনে উদিত হয়েছে
তখন তার উত্তর খোঁজা আপনারই কর্তব্য।
প্রশ্নফাস জেনারেশন প্রশ্ন জানে উত্তর খোঁজনা।
৬| ১৮ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ২:০৮
কালো যাদুকর বলেছেন: অনেকদিন পর্যন্ত্ জানতামই না লালন মুসলীম না। তাতে অবশ্য লালেনের গান কম ভাল লাগে না। আমার প্রিয় মানুষের একজন লালন। মৃত্যুর বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। অনেক আশ্চ্যর্য ব্যাপার।
১৮ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৭
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
লালনের জাত পাত হিসেব না করে
তার গানের মাঝে তাকে বুঝবার
চেষ্ট করি।
৭| ১৮ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৩:২০
চাঁদগাজী বলেছেন:
লালন ফকির ততকালীন মানুষের দারিদ্রতা, অশিক্ষা ও অসহায়তাকে গানের মধ্য দিয়ে প্রকাশ করেছিলেন, মানুষের জন্য উনার দরদ ছিলো।
উনি দার্শনিক ছিলেন না।
১৮ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৮
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
তার কথায় গানে দার্শনিকতার ছাপ আছে
দর্শন শাস্ত্রে পড়া শুনা করলেই তাকে দার্শনিক
বলতে হবে আর কেউ দার্শনিক হতে পারেন না !
৮| ১৮ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:২৩
কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: চাঁদগাজী বলেছেন:
লালন ফকির ততকালীন মানুষের দারিদ্রতা, অশিক্ষা ও অসহায়তাকে গানের মধ্য দিয়ে প্রকাশ করেছিলেন, মানুষের জন্য উনার দরদ ছিলো।
উনি দার্শনিক ছিলেন না। ---সহমত !
---তাঁর নামে এখন যে বিকৃত আচার চলছে তা কতটা গ্রহণ যোগ্য।
৯| ১৮ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:৩১
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: বর্তমানে লালনের আখড়া হোল নেশাখোরদের স্বর্গরাজ্য। লালনের এই ধরণের অভ্যাস ছিল না কি? লালনের অনুসারীদের ধর্মীয় দর্শনও ভয়ংকর রকমের।
১০| ২০ শে অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:৩৫
মিরোরডডল বলেছেন:
প্রিয় লালনের জন্য শ্রদ্ধা ।
আত্নতত্ত্ব যে জেনেছে
দিব্যজ্ঞানী সেই হয়েছে
কুবৃক্ষে সুফল পেয়েছে
আমার মনের ঘোর গেল না
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১১:১৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আমার সর্বশেষ পোস্টেও আপনার কথা উল্লেখ করতে হলো। আপনার পোস্ট থেকেই জানলাম আজ লালনের মৃত্যুদিবস। চ্যানেল আইতে দেখালো 'মনের মানুষ'।
মানবতার না, একটা প্রেমের গানই শেয়ার করে গেলাম। প্রেমই সর্বোচ্চ মানবতা।