নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
প্রতি বছর গোটা বিশ্ব জুড়ে ১৭ই অক্টোবর বিশ্ব ট্রমা দিবস (World Trauma Day) পালন করা হয়। ট্রমা বলতে বোঝায়, শরীরে বা মনে সৃষ্ট কোন আঘাত। যেমন— পথ দুর্ঘটনা, আগুন লাগা, পুড়ে যাওয়া, হিংস্রতা, নারী, শিশু ও বয়স্কদের প্রতি শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন। এরকম বিভিন্ন দুর্ঘটনায় আহত মানুষের চিকিৎসা ও সেবায় সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এই দিবসটি পালন করা হয়। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ১২ লাখ মানুষ দুর্ঘটনায় নিহত হয়। আহত হয় পাঁচ কোটিরও বেশি মানুষ। উন্নয়নশীল দেশে ৫০ শতাংশ মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। এই ট্র্যাজেডির বার্ষিক পরিসংখ্যান হলো প্রায় আট হাজার মৃত্যু। প্রাকৃতিক দুর্যোগও মোকাবিলা করা যায়, কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনা নামক গণমৃত্যুর এই ফাঁদ কি কিছুতেই দূর করা যায় না? যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য দেখায়, ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান এবং মোটরসাইকেল যৌথভাবে ৫০ শতাংশের বেশি দুর্ঘটনার কারণ ও শিকার। এরপর রয়েছে ১৯ শতাংশ বাস দুর্ঘটনা। অধিকাংশ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী যানবাহনের সমস্যা এবং চালকের ত্রুটি। এই দুটি কারণেই সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা হয়। সড়ক-মহাসড়কে অপমৃত্যুর এই স্থায়ী বন্দোবস্তই যেন বাংলাদেশে ‘নতুন স্বাভাবিকতা’। এটাই যেন অলঙ্ঘনীয় নিয়তি। বছর যায়, দশক যায়, কিন্তু সড়কে মৃত্যুর হার কমিয়ে আনায় সত্যিই কিছু করা হয় না। সরকারি বয়ান যত গর্জে তত বর্ষে না। শ্রমিক ও সরকার উভয়ই যেন মালিকপক্ষের কাছে জিম্মি। পরিবহন খাতের মাফিয়াকরণ, সড়কে যান চলাচলের কর্তৃপক্ষ বিআরটিএর দুর্নীতি এবং এসবের সুফলভোগী রাজনৈতিক নেতৃত্বের দায়িত্বহীনতার শিকার আমরা সবাই। তাই আহত মানুষের সেবা নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিশ্ব ট্রমা দিবস পালন করছে। দুঃখের বিষয় হল বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নানা আয়োজনে দিবসটি পালন করা হলেও বাংলাদেশে সরকারি পর্যায়ে এ পর্যন্ত দিবসটি পালিত হয়নি। চিকিৎসকদের কয়েকটি সংগঠন ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজনের মধ্যেই দিবসটি পালন সীমাবদ্ধ রয়েছে।
ট্রমার কারণে রোগের হার এখন আতঙ্কজনকভাবে বাড়ছে। বাংলাদেশে সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও সড়ক দুর্ঘটনা প্রতি বছর কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। যত মানুষ নিহত হয়, তার চেয়ে তিন গুণ বেশি মানুষকে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়; ১০ গুণ মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয় এবং ৩০ গুণ মানুষকে চিকিৎসা নিতে হয়। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ২০০৩ সালের জরিপ প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিবছর প্রায় তিন হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে, ২০১৯ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৭ হাজার ৮৫৫ জন। আর আহত হয়েছে ১৩ হাজার ৩৩০ জন। এই সংখ্যা আগের বছরের চেয়ে ৮ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ বেশি। অবস্থা যা, তাতে ২০২০ সালের হিসাব ২০১৯ সালের চেয়ে বেশি হওয়াই স্বাভাবিক। সড়ক-মহাসড়কে অপমৃত্যুর এই স্থায়ী বন্দোবস্তই যেন বাংলাদেশে ‘নতুন স্বাভাবিকতা’। এটাই যেন অলঙ্ঘনীয় নিয়তি। বছর যায়, দশক যায়, কিন্তু সড়কে মৃত্যুর হার কমিয়ে আনায় সত্যিই কিছু করা হয় না। ধারণা করা হয়, বর্তমানে এ সংখ্যা এর কয়েক গুণ বেশি। বাংলাদেশের সড়কে এমন সব করুণ কঠিন ট্র্যাজেডির জন্ম হচ্ছে প্রতিদিন। নিহত সংখ্যার চেয়ে তিন গুণ বেশি মানুষকে সড়ক দুর্ঘটনার কারণে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়। এতে শুধু অসুস্থতা ও মৃত্যুর হার বাড়ছে তা নয়, বরং জাতীয় উৎপাদনে বিপর্যয় আনছে বিশেষ করে সড়ক দুর্ঘটনায় তরুণদের মৃত্যুর কারণে। সুতরাং, আঘাত কমাতে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বনের প্রয়োজন।রোড ডিজাইনিং ট্রমা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে, শুধুমাত্র রোড ডিজাইনিং দিয়ে ট্রমা কমানো সম্ভব নয়। প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য কিছু দায়িত্ব পালন করা। প্রত্যেক দেশের প্রত্যেক নাগরিকের প্রয়োজন দায়িত্ব পালনের। মনে রাখবেন, প্রতিরোধ আরোগ্যের চেয়ে সব সময় উত্তম। ট্রমা কোনো দুর্ঘটনা নয়। সতর্কতা অবলম্বনের মাধ্যমে এর প্রতিরোধ সম্ভব।
ট্রমা প্রতিরোধে মনে রাখার বিষয়ঃ কি কি করবেন
১। রাস্তা নিরাপত্তার নিয়মবিধি যত্নের সঙ্গে অনুসরণ করুন
২। গাড়ি চালানোর সময় সতর্কতা সংকেত এবং ট্রাফিক সিগন্যালে নজর রাখুন
৩। দু-চাকা বিশিষ্ট গাড়ি চালানোর সময় হেলমেট পরে গাড়ি চালান
৪। মোবাইল ফোন বা উচ্চ বাজনায় মন বিক্ষিপ্ত করে রাস্তা চলাচল করবেন না
৫। একটানা ড্রাইভিংয়ে মাঝেমধ্যে স্বল্প বিরতি নিন
৬। বৈদ্যুতিন তার ও স্যুইচ থেকে আপনার বাচ্চাকে দূরে রাখুন
৭। বাড়িতে বা গাড়িতে থাকাকালীন সবসময় ফার্স্ট এইড নিরাপত্তা কিট সঙ্গে রাখুন
৮। আপনার বাড়ির সিঁড়ি, জানলা, ব্যালকনি ও ছাদ থেকে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হোন।
৯। সাধারণ জীবন রক্ষাকারী কৌশল শিখুন ও আহতদের সাহায্য করুন।
ট্রমা প্রতিরোধে মনে রাখার বিষয়ঃ কি কি করবেন না
১। ক্লান্ত থাকলে বা ঘুম পেলে বা মদ্যপান করলে গাড়ি চালাবেন না
২। তাড়াহুড়ো থাকলে গাড়ি চালানোর সময় কোনো ঝুঁকি নেবেন না
৩। গাড়ির খারাপ যন্ত্রপাতি ভালোভাবে মেরামত করে রাখুন
৪। সড়ক দুর্ঘটনায় মাথা বা সুষুম্নায় কেউ আঘাত পেলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া ঐ ব্যক্তিকে নাড়াচড়া করাবেন না
৫। অসচেতন বা অবচেতন কাউকে তরল পান করাবেন না
দুর্ঘটনায় কি করবেন ?
১। আপদকালীন হেল্পলাইনে সত্বর ফোন করুন ও যত দ্রুত সম্ভব যথাযথ সাহায্যের সুযোগ নিন। গোল্ডেন আওয়ারের মধ্যে আহত ব্যক্তির চিকিৎসা হওয়া প্রয়োজন। (আপদকালীন ফোন নম্বর)
২। দুর্ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ জানাতে পুলিশ ডাকুন
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল ফেসবুক
[email protected]
১৭ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৪:৩৩
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ আল ইকরাম ভাই
এখন সবাই জ্ঞানী মানুষ, সচেতন মানুষ!
সাধারণ বিষয়গুলো সবারই জানা তাই
কেউই খুব একটা কেয়ার করেনা।
সবাই ভালো থাকুক, সুস্থ্য থাকুক
সেই প্রত্যাশায় আমার নিত্যদিনের
পথচলা।
২| ১৮ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১:১১
রাজীব নুর বলেছেন: ট্রমা সম্পর্কে জানতাম। তবে আজ আরো বেশি কিছু জানলাম।
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:১৯
আল-ইকরাম বলেছেন: খুবই জরুরী কিছু বিষয়ে অবগত করানোর জন্য অনেক কৃতজ্ঞতা নূরু ভাইকে। এগিয়ে চলুক আপনার এই পথ চলা। শুভেচ্ছা নিরন্তর।