নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
আজ ১৪ অক্টোবর বুধবার ৫১তম বিশ্ব মান দিবস। বিশ্বায়নের যুগে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন ও উন্নত সেবার বিকল্প নেই। ১৯৪৬ সালের ১৪ অক্টোবর তারিখে লন্ডনে বিশ্বের ২৫টি দেশের প্রতিনিধিরা বিশ্বব্যাপী পণ্য-সেবার মান বজায় রাখার জন্য একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মান নির্ধারক সংস্থার বিষয়ে ঐকমত্য পোষন করেন যা পরের বছর থেকে তাদের কার্যক্রম শুরু করে। এর পর থেকে প্রতি বছর ১৪ অক্টোবর তারিখে আন্তর্জাতিকভাবে উদযাপিত হয়ে আসছে। পণ্য এবং সেবার মানের বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী এ দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। বিশ্বের তিনটি আন্তর্জাতিক মান সংস্থা আইএসও, আইইসি, আইটিইউর উদ্যোগে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর এ দিবস পালিত হয়। পণ্যসেবা প্রভৃতির মান উন্নয়ন ও বজায় রাখার প্রতি কর্তৃপক্ষ, উদ্যোক্তা এবং ভোক্তাদের সচেতন করার উদ্দেশ্যেই পালন করা হয়। দিবসটি পালনের পেছনে একটি প্রেক্ষিত আছে। ঐদিনকে স্মরণীয় করে রাখতেই এ দিবস বৈশ্বিকভাবে পালন করা হয়। প্রত্যেক বছরই দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় চলমান বিষয়াদিকে ঘিরে নির্ধারণ করা হয়। এ বছরের বিশ্ব মান দিবসের প্রতিপাদ্য ‘পৃথিবী সুরক্ষায় মান’। এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হচ্ছে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই) বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এরই অংশ হিসেবে বিএসটিআই’র প্রধান কার্যালয়ের পাশাপাশি বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়সমূহে আলোচনা সভাসহ প্রচার-প্রচারণামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। বিশ্ব মান দিবসে‘পৃথিবী সুরক্ষায় মান’ নিশ্চিত হবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা
আইএসও, আইইসি এবং আইটিইউ নামের তিনটি মান নিরূপণকারী সংস্থা প্রতিবছর ১৪ অক্টোবর আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্ব মান দিবস পালন করে আসছে। আইএসও এই দিনটি পালন করে আসছে ১৯৭০ সাল থেকে। বিশ্বায়নের যুগে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য বা সেবা উৎপাদনের বিকল্প নেই। যে কোনো পণ্য বা সেবা ক্রয়-বিক্রয়, বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে মান আস্থার প্রতীক হিসেবে কাজ করে। পণ্যের মান ভালো হলে জনগণের আস্থা বাড়ে। পণ্যটির চাহিদাও বৃদ্ধি পায়। পণ্য বা সেবার বাজার সম্প্রসারণে মানের গুরুত্ব সর্বাধিক। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও একটি মান সংস্থা আছে। রতিষ্ঠানটির নাম বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)। আন্তর্জাতিক তিনটি সংস্থার পাশাপাশি বিএসটিআইও দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে থাকে। প্রতিষ্ঠানটি দেশীয় ও আমদানীকৃত পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে ১৯৬৯ সাল থেকে কাজ করে আসছে। সে হিসেবে বাংলাদেশ আজ ৪৪তম বিশ্ব মান দিবস পালন করবে।দিবসটি উপলক্ষে প্রতিষ্ঠানটি বর্ধিত কর্মসূচি হাতে নেয় এবং জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে। তবে পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে প্রতিষ্ঠানটি এখনো বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারছে না। দেশে উৎপাদিত পণ্য ও সেবা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে সম্প্রসারণে উদ্যোক্তাদের মান বজায় রাখার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটিকে আরো শক্তিশালী করতে হবে।
খদ্দের চান পণ্যের মান। তাই পণ্যের মান ঠিক রাখতে হবে গুরুত্বের সাথে। পণ্যের মান ঠিক রাখার জন্য যে চারটি বিষয়ের দিকে নজর দিতে হয় সেগুলো হলো-
১। কোয়ালিটির পরিকল্পনাঃ
পণ্যের কোয়ালিটি পরিকল্পনা মূলত পণ্যটি যাতে ক্রেতার সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে সেটা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় কাজগুলোকে একটা কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসার একটা প্রক্রিয়া।এই কাজগুলোর সাথে সম্পৃক্ত সকলে যাতে তার কাজ সময়মতো শেষ করতে পারে সে জন্য তাদের মধ্যে আন্তঃযোগাযোগটাকে আরো কার্যকর করাই এই পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য। আর কার্যকর পণ্য পরিকল্পনা নির্ভর করে ঐ প্রতিষ্ঠানের টপ ম্যানেজমেন্ট ক্রেতার সন্তুষ্টি অর্জনে কতটুকু আন্তরিক, বদ্ধপরিকর তার উপর।
২। মান নিয়ন্ত্রনঃ
পণ্যের মান নিয়ন্ত্রন বলতে উৎপাদক পণ্য উৎপাদনের আগে যে মান নির্দিষ্ট করেছেন উৎপাদনের প্রিতিটি পর্যায়ে সেই মান বজায় রাখা হচ্ছে কিনা সেটা পর্যবেক্ষণ করাকে বুঝায়।যদি কোনো জায়গায় কোন বিচ্যুতি হয় সেটা কিভাবে ধরা পড়বে এবং সেই বিচ্যুতি কিভাবে নিরসন করা হবে সেটাও আগে থেকেই ঠিক করে রাখতে হবে। এখন অবশ্য অনেক সেক্টরেই অটোমেটেড মেশিনারিজ ব্যবহৃত হচ্ছে যেখানে ন্যূনতম বিচ্যুতি ছাড়াই পণ্য উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে।
৩। গুনগত মানের নিশ্চয়তাঃ
অনেক সময় পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ আর মানের নিশ্চয়তা একই অর্থে ব্যবহার করা হয়।তবে একটু সুনির্দিষ্ট করে বলতে গেলে পণ্যের গুণগত মান নিশ্চিত করতে হলে পণ্যের মানের সিস্টেমেটিক পরিমাপ,স্ট্যান্ডার্ডের সাথে উৎপাদিত পণ্যের মান মিলিয়ে দেখা এবং পুরো প্রক্রিয়াটা মনিটর করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। গুণগত মান নিশ্চিতকরণে দুটি নীতি খুব মনোযোগের সাথে পালন করতে হয়। একটি হলো “ফিট ফর পারপাস”, মানে যে উদ্দেশ্যে পণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে উৎপাদিত পণ্যের মান সেই উদ্দেশ্য সাধন করবে। আর দ্বিতীয়টি হলো “রাইট ফার্স্ট টাইম”, মানে পণ্য উৎপাদনের সময় প্রথমবারেই যাতে সুনির্দিষ্ট স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী পণ্যের মান বজায় রাখা যায় সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া। কারণ দ্বিতীয়বার কোনো পরিবর্তন আনতে গেলে অতিরিক্ত খরচ হবে যা পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেবে।
৪। গুণগতমানের উন্নয়নঃ
প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে গেলে ক্রেতার কাঙ্ক্ষিত মানের পণ্য উৎপাদন করতে হয়। ক্রেতার সবসময় আরো ভালো মানের পণ্য চায়। সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে ক্রেতার কাঙ্ক্ষিত মানে পরিবর্তন আসে। এই পরিবর্তনের সাথে খাপ খেয়ে চলার জন্য প্রয়োজন পণ্যের গুণগত মান উন্নয়নের একটা ডাইনামিক ব্যবস্থা রাখা। পণ্য উৎপাদনে ভুলগুলো ট্র্যাক রাখা, উৎপাদনের সাথে জড়িত কর্মীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এগুলো পণ্যের গুণগত মান উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। তাছাড়া একটা কোয়ালিটি সার্কেলের ব্যবস্থা করা যায় যেখানে কর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ থাকবে এবং তাদের পণ্যের এবং পণ্য তৈরির পদ্ধতির ডিফেক্ট খুঁজে বের করবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানে এডওয়ার্ড ডেমিং এই পদ্ধতি ডেভেলপ করেন। এটা পণ্যের গুণগত মান উন্নয়নে বেশ কাজে দিত।তবে নিজের প্রতিষ্ঠানের প্রকৃতি বিশ্লেষণ করে তার সাথে যায় এমন কোনো মান উন্নয়নের পদ্ধতি নির্বাচন করা উচিত।
খাদ্য ও ভোগ্যপণ্য, সেবা কার্যক্রম এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকাণ্ড মানুষের চাহিদা অনুযায়ী লাভ করার ক্ষেত্রে মান এর ভূমিকা যেমন গুরুত্বপূর্ণ। তেমনি ‘নান্দনিক নগরায়নে মান’ এর ব্যবহার নিশ্চত করন জরুরী। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক মান সংস্থাগুলো তাদের গবেষণালব্ধ জ্ঞান কাজে লাগিয়ে যথাযথ মানের পণ্য উৎপাদন এবং সেবা প্রদানের সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করে থাকে। এসব মানের যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমেই মানুষের চাহিদা প্রত্যাশা অনুযায়ী পূরণ হতে পারে। বাংলাদেশের জাতীয় মান সংস্থা বিএসটিআই সব ক্ষেত্রে জাতীয় মান প্রণয়ন করে পণ্যের গুণগতমান বজায় রেখে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অন্যদিকে ভোক্তাদের সচেতনতা বৃদ্ধি করাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্য ভোক্তার দায়ও কম নয়। ভোক্তারা যদি সচেতন হন, তাহলে কোনো পণ্য কেনার আগে অবশ্যই এর গায়ে বিএসটিআইয়ের লোগো আছে কিনা তা দেখে নিতে হবে।
ভোক্তারা যে পণ্য ভোগ করছে সে সম্পর্কে সচেতন এবং কোম্পানির দিক থেকে উদ্যোক্তাও পণ্য মান বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর হলে তবেই দিবসটি পালনের যথার্থতা রক্ষিত হয়। ভোক্তা-কোম্পানি নির্বিশেষে সবাইকে দিবসটির গুরুত্ব বুঝতে হবে। বাংলাদেশের জাতীয় মান সংস্থা বিএসটিআই সকল ক্ষেত্রে জাতীয় মান প্রণয়ন করে পণ্যের গুণগত মানের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে তার সেবা দেশের জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেবে এবং বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আরও আধুনিক, কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন ও দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে দেশের জাতীয় মান সংস্থা বিএসটিআই সকল ক্ষেত্রে বিশেষ করে ‘পৃথিবী সুরক্ষায় মান’ নিশ্চত হবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল ফেসবুক
[email protected]
১৪ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৪:৩৮
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধর্মের কথা শোনে কে !!
যেটা নিষেধ করা হয় মানুষ
সেটা্ই বেশী করে। মিথ্যা বলা
বারণ মানুষ তাই বেশী বলে।
সত্য বলতে আদেশ, মানুষ তা
এড়িয়ে চলে।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১:১২
রাজীব নুর বলেছেন: সত্য কথা বলতে মানুষেরই তো মান নেই।