নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
১। আষাঢ়ে গল্প - ১ ! ঘটকালি !!
২। আষাঢ়ে গল্প - ২ ! কাঁঠাল খাওয়ার বাজি !
৩। আষাঢ়ে গল্প - ৩ "তিন বোকার গল্প"
আষাঢ়ে মানে অদ্ভুত, মিথ্যা, অলীক। আষাঢ় মাসের অলস মুহূর্তের গল্পের আসর থেকেই আমাদের দেশে ‘আষাঢ়ে গল্প’ প্রবাদটির সৃষ্টি হয়েছে এমনটা মনে করা হয়। বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষা অভিধানে ‘আজাইড়া’, ‘আজাড়া’ (আজাড়ে অর্থ অবিশ্বাস্য), অদ্ভুত, অমূলক, অহেতুক ইত্যাদি শব্দের ব্যবহার আছে। ফারসি অভিধান অনুসারে ‘আযার’ বা ‘আজার’ শব্দ থেকে ‘আজুরে’ বা আজাড়ে শব্দ এসেছে। আর এই আজাড়ে গল্প থেকেই ‘আষাঢ়ে গল্প’ কথাটির সৃষ্টি। সামুর পাঠকের জন্য আজ আষাঢ়ে গল্প সিরিজের ৪র্থ গল্প । বোকা রাজ্যের বোকা রাজাঃ
বহুদিন আগে ভিন দেশে এক রাজ্য ছিলো। সে রাজ্যের রাজা-প্রজা, পাইক পেয়াদা, সৈন্য-সামন্ত, হাতি-ঘোড়া, কুকুর-বিড়াল, তেলাপোকা, গিরগিটি, ইঁদুর, ফড়িং- সবাই বোকা।
একবার এই বোকা রাজার বোকা ছেলের দাঁতে পোকা লেগেছে।
রাজা মহাক্ষিপ্ত হয়ে হুঙ্কার ছাড়লেন, অ্যাই কে আছিস?’
প্রধান সেনাপতি রাজাকে কুর্নিশ করে বললো, ‘জো হুকুম জাঁহাপনা!’
রাজা বললেন, ‘জলদি বলো, আমার রাজ্যে পোকা প্রবেশ করলো কীভাবে?’
‘পোকা!’- বোকা সেনাপতি বিস্মিত হয়ে বললো, গুস্তাফি মাফ করবেন জাঁহাপনা। আমি তো পোকা বিষয়ে কিছুই জানি না।’
রাজা বললেন, ‘তাহলে মন দিয়ে শোনো। রাজপুত্রের দাঁতে পোকা লেগেছে। তোমার প্রথম কাজ হলো, কীভাবে আমার রাজ্যে পোকা ঢুকলো তা বের করা। আর দ্বিতীয় কাজ হলো…’
রাজার কথা শেষ না হতেই পোকার ভয়ে সেনাপতি মূর্চ্ছা গেলেন। চারজন নওজোয়ান প্রধান সেনাপতিকে পাজাকোলা করে নিয়ে গেলেন রাজকোবরেজের কাছে।
রাজকোবরেজ তার চোখে একটা কাঁচামরিচ ঘষে দেওয়ামাত্র সে উঠে দাঁড়ালো এবং পুনরায় দৌড়ে রাজার কাছে গেলো।
প্রধান সেনাপতির চোখ বেয়ে অঝর ধারায় জল গড়িয়ে পড়তে দেখে রাজা বললেন, ‘আরে তুমি কাঁদছো কেন?’
‘আজ্ঞে কাঁদছি না জাঁহাপনা। কোবরেজজি আমার চোখে কাঁচামরিচ ঘষে দিয়েছেন।’
রাজা বললেন, ‘আচ্ছা বেশ। এবার বলো।’
‘আজ্ঞে জাঁহাপনা। এখন মহামান্য রাজপুত্রের তবিয়ত কেমন?’
‘পোকার অত্যাচারে মাঝে মাঝে সে চিৎকার করে উঠছে।’
‘তাহলে তো আর বরদাশত করা যায় না। পোকার বিরুদ্ধ ব্যবস্থা নিতেই হয়।’
‘কী ব্যবস্থা নিতে চাও রাজা জিজ্ঞেস করলেন?’
‘যুদ্ধ ছাড়া তো আর কোনো ব্যবস্থা নেই জাঁহাপনা। আপনি হুকুম করুন। আমি এন্তেজাম করি।’
রাজা চিন্তা করে বললেন, ‘তার আগে একবার কোবরেজজির সঙ্গে আলাপ করে দেখো।’
‘তবে তাই হোক।’
রাজকোবরেজ আয়েস করে হুকোয় টান দিতে যাবেন এমন সময় সেনাপতি এলেন।
হুকো-মুকো রেখে কাঁচামরিচ নিয়ে সেনাপতির দিকে দ্রুত এগিয়ে গেলেন কোবরেজ।
সেনাপতি বললো, ‘আমি না, আমি না।’
‘তাহলে কে? ঘরে তো আর কাউকে দেখতে পাচ্ছি না।’ বলে সেনাপতির চোখে মরিচটা ঘষে দিলেন।
সেনাপতি বললো, ‘আমার কথা না শুনেই মরিচটা ঘষে দিলেন?’
‘বটে। আমি যা করেছি বুঝে-শুনেই করেছি। রোগীর ইচ্ছেমাফিক চিকিৎসা করলে সেই রোগী কস্মিনকালেও আরোগ্য লাভ করে না জনাব।
‘তা না হয় বুঝলাম কিন্তু রাজপুত্রের কি করবেন?’
কোবরেজ হুকো ফেলে বললেন, ‘কি হয়েছে প্রিয় রাজপুত্রের?’
‘তার দাঁতে পোকা লেগেছে।’
‘সেকি! এতোবড় রোগ! এই রোগের চিকিৎসা তো আমার জানা নেই।’
সেনাপতি বললো, ‘আচ্ছা কাঁচামরিচ ঘষে দেখলে হয় না একবার?’
কোবরেজ ফোঁকলা দাঁতে হো হো হেসে উঠলেন।
রাজা বললেন, ‘পুরো রাজ্যে ঢোল পিটিয়ে রাজপুত্রের দাঁতে পোকা লাগার খবরটি জানিয়ে দাও। যদি কেউ নিরাময় করতে পারে, সে পাবে ১ লক্ষ স্বর্ণ মুদ্রা।’
সেনাপতি বললো, ‘জো হুকুম জাঁহাপনা।’
ঘোষকদল ঘোড়ায় চেপে বেরিয়ে পড়লো ঘোষণা দিতে।
পুরো রাজ্যে সাড়া পড়ে গেলো। বেশ কয়েকজন বৈদ্য পাওয়া গেলো যারা রাজপুত্রকে নিরাময় করতে আগ্রহী।
কিন্তু সমস্যা হলো রাজদরবার কোথায় বা সেখানে কীভাবে যেতে হয় তা তারা জানে না।
ফলে অনেকগুলো ঘোড়া পাঠানো হলো। ঘোড়ায় চড়ে তারা রাজদরবারে পৌঁছালো। তারা যা যা খেতে পছন্দ করে তাদের তাই তাই খাওয়ানো হলো। তারপর তাদের নিয়ে যাওয়া হলো অন্দরমহলে।
কেউ রাজপুত্রের জিহ্বা দেখলো, কেউ নাড়ি দেখলো, কেউ চোখের পাতা উল্টে দেখলো কেউবা টোকা দিয়ে শরীরের কাঠিন্য পরীক্ষা করলো। তারপর একযোগে সবাই শুরু করলো নানারকম গণনা-বাছনা। আর রাজা অস্থিরভাবে পায়চারি করতে লাগলেন।
অবশেষে জানা গেলো, দাঁত ফেলে দিলে এই সমস্যা থেকে মুক্তিলাভ করবে রাজপুত্র।
‘না না!’- আঁতকে উঠলেন রাজা, ‘আমার পুত্র সইতে পারবে না। তোমরা অন্য ব্যবস্থা করো।’
তারা অন্য ব্যবস্থার জন্য চিন্তা শুরু করলো।
ঠিক তখন ভিনদেশেী (সম্ভবত বাংলাদেশী) এক বালক তড়িঘড়ি করে ভেতরে এলো। ৬ কি ৭ বছর বয়স। রোদে পোড়া চেহারা। মাথার চুল বাদামি। চোখের মণি নীল। অপরূপ সুন্দর। নাম জাফরান। রাজা অবাক হয়ে ছেলেটার দিকে তাকালেন। জাফরান রাজাকে উদ্দেশ্য করে বললো, ‘মহাশয় আমার কথা শুনলে পোকা পালাবে।’ রাজা বললেন, ‘বলো, শুনি তোমার কথা!
জাফরান বললো, ‘রাজপুত্রকে প্রতিদিন খাওয়ার পরে দাঁত মাজার করার অভ্যাস করান।
পোকারা পালাতে পালাতে বলবে, ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি।’
জাফরানের পরামর্শে সত্যিই পোকারা পালালো।
আনন্দিত রাজা ভাবলেন এ-রকম একজন বুদ্ধিমান বালক তার বড়ই প্রয়োজন। রাজা জাফরানকে রাজকীয় সম্মানে রাজপুত্রের বন্ধু হিসেবে রাজদরবারেই রেখে দিলেন। নটে গাছটি মড়োলো। বোকা রাজ্যের বোকা রাজার গল্পটি ফুরোলো।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল ফেসবুক
[email protected]
১২ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ তবে গাজীসাবের
এটা গল্পই মনে হয় নি। আরে আষাঢ়ে গল্প
মানেই অলীক অবাস্তব ! গাজীর তা মনেই থাকেনা !
২| ১২ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৩:৪০
চাঁদগাজী বলেছেন:
ইহাকেও গল্প বলতে হবে?
১২ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপননি না বললেও 'চলবে !!
আপনার উপরে আপনার গি্ন্নির কড়া নির্দেশ
সবাই যে দিকে তুমি থাকবে তার অপর দিকে।
সবা্ই যদি চিনি বলে আপনি বলবেন লবন!!
সুতরাং সবাই যেটাকে গল্প ভাবেবে সেটা আপনার
না ভাবলেও চলবে। কারন বেলা শেষে বাসায়তো ফিরতে হবে !!!
এত হাসি দেখেও গাজী গোমড়া মুখে চায়
তাকে দেখে প্যাঁচার মুখে কেবল হাসি পায়।’
৩| ১২ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৪:১৫
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: ভালো লাগলো গল্প
১২ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ আপু এটা গল্প নয়
এটা আষাঢ়ে গল্প !!
ভালো লাগার জন্য ধন্যবাদ।
৪| ১২ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৪:১৮
রাজীব নুর বলেছেন: আষাঢে গল্প গুলোতে আমার হাসি আসে না কেন বলে তো? আজিব!
১২ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
‘রামগরুড়ের ছানা
হাসতে তাদের মানা,
হাসির কথা শুনলে বলে,
“হাসব না না, না না”।’
বলুনতো ছড়াটি কার লেখা !!!
৫| ১২ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৮:৫৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আষাঢ়ে গল্প তো আশ্বিনে শুনিতেছি বোকার রাজ্যে বুদ্ধিমান জাফরান আসলো কই থেকে?
গল্পে ভালো লাগা রেখে গেলাম নূরু ভাই।
১২ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:০১
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আশ্বিন হলেও আষাঢ়ের বর্ষার আমেজ মোটেও
মিলিয়ে যায়নি ভাই। বুদ্ধিমান জাফরান বাংলাদেশ
থেকে ভাগ্যান্বেষে বোকার রাজে আগমন !!
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৩:২৭
কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: হুম - গল্পটা খুবই চমৎকার!